

শুক্রবার ২১ মার্চ ২০২৫
সোমবার ১৭ মার্চ ২০২৫
শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টার :
জীবিত আছিয়াদের নিরাপত্তা দিবে কে? এ স্লোগানকে সামনে রেখে নওগাঁয় ফাতেমা ছোঁয়া নামের এক শিক্ষার্থী অবস্থান কর্মসূচির মাধ্যমে সারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় শিশু ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের প্রতিবাদ জানিয়েছেন। ধর্ষণের প্রতিবাদ ও ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করার দাবিতে নওগাঁ জেলা শহরের মুক্তির মোড় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন নওগাঁ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী।
সোমবার সন্ধ্যায় শিক্ষার্থী ফাতেমা ছোঁয়া মুখে কালো কাপড় বেধে, হাতে প্রতিবাদী পোস্টার নিয়ে ঘন্টাব্যাপী অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
প্রতিবাদী ফাতেমা ছোঁয়া'র বাবা দেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড "যাযাবর" এর সঙ্গীত শিল্পী ক্যাপ্টেন জানান, বর্তমান সময়ে আমার আপনার বাচ্চা নিরাপদ নয়। প্রতিনিয়ত ভঁয় কাজ করে। মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে আমরা দেখেছি সারা দেশের বিভিন্ন জেলায় অজস্র শিশু ও নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। আর কতো? আমরা আর কতো প্রান হারাতে দেখবো? আর কবেই বা আমার আপনার সন্তানরা ভঁয় মুক্ত সত্যিকারের স্বাধীন দেশ পাবে। স্বাধীন বাংলায় কোন ধর্ষকের স্থান নাই। আমরা আছিয়ার কাছে ক্ষমা প্রার্থী, জীবিত আর কোন আছিয়াকে আমরা হারাতে চাইনা। মৃত আছিয়াসহ সকল ধর্ষণের ও নির্যাতনের শিকারে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দোষিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং ধর্ষকদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হোক। এব্যাপারে স্থানীয় সচেতন ব্যক্তি এনাম হক বলেন, মাগুরায় ধর্ষনের শিকার হওয়া ৮ বছরের শিশু আছিয়ার মর্মান্তিক মৃত্যু অত্যান্ত দুঃখজনক ও লজ্জাজনক। সম্প্রতি সারাদেশে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন যেভাবে বেড়ে চলছে তার প্রতিবাদ হিসেবে আজকের এই অবস্থান কর্মসূচি সত্যিই প্রসংশার দাবিদার। দেশব্যাপী এমন অপকর্মের ধিক্কার জানিয়ে তিনি আরো বলেন, ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনে জড়িত সকল অভিযুক্তদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। ধর্ষকদের চিহ্নিত করে দ্রুত সময়ের মধ্যে ফাঁসি কার্যকর করার জোর দাবী জানান তিনি।
রবিবার ২৩ মার্চ ২০২৫
রবিবার ২৩ মার্চ ২০২৫
মার্কিন জিম্মিদের মুক্তি দিতে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজার জনগণকে হুমকি দিয়েছেন। গত বুধবার রাতে তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, যদি জিাম্মদের আটক রাখে, তবে গাজার সব বাসিন্দা মারা যাবে।
তবে ট্রাম্পের এ হুমকিকে কোনো পাত্তা দিচ্ছেন না গাজাবাসী। তারা বলছেন- আমাদের হারানো আর কিছুই নেই। খবর আল-জাজিরার।
গাজার ৫৯ বছর বয়সি এক ব্যবসায়ী ইয়াসির আল-শারাফা আল জাজিরাকে বলেন, আমি এসব হুমকিকে আর ভয় পাই না। কারণ গাজার অনেক মানুষের মতো আমিও বিশ্বাস করি- আমার হারানোর কিছুই নেই।
তিনি বলেন, আগে পোশাক ব্যবসায়ী ছিলাম। আমার একটি বড় দোকান, ছয়তলা একটি ভবন, একটি গাড়ি এবং গাজা সিটির তেল আল-হাওয়ায় স্টক রাখার জন্য গুদাম ছিল।
বছরের পর বছরের কঠোর পরিশ্রম এসব করেছিলাম। এখন সব কিছু ধ্বংস হয়ে গেছে, যুদ্ধ সবকিছু শেষ করে দিয়েছে। যেদিকেই তাকাই, কেবল ধ্বংস, ধ্বংসাবশেষ আর দুর্দশা। আমাদের শোক করার মতো আর কিছু বাকি আছে কি? আমি এখন শিশুদের জন্য ক্যান্ডি ও স্ন্যাকস বিক্রি করি।
যুদ্ধের সময় দক্ষিণে বাস্তুচ্যুত হওয়ার পর, আল-শারাফা ও তার পরিবার যুদ্ধবিরতি শুরু হলে উত্তরে ফিরে আসেন, কিন্তু সেখানে এসে দেখেন এক বিধ্বস্ত এলাকা, যেখানে জীবনযাপন প্রায় অসম্ভব।
তিনি বলেন, যদি আমরা জিম্মিদের হস্তান্তর করি, তবুও কিছুই বদলাবে না। তারা নতুন অজুহাত তৈরি করে যে কোনো সময় যুদ্ধ আবার শুরু করতে পারে। আমরা পুরো বিশ্ব থেকেই বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছি।
৬২ বছর বয়সি জামিলা মাহমুদ ট্রাম্পের কথাগুলো শোনেননি, তবে বৃহস্পতিবার সকালে তার পরিবারের কয়েকজন সদস্য এ নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, ট্রাম্পের হুমকিগুলো একটি মানসিক যুদ্ধের অংশ, যার উদ্দেশ্য গাজার মানুষকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা।
তিনি আরও বলেন, আপনারা দেখতেই পাচ্ছেন, আমরা পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন। না আছে ইন্টারনেট, না বিদ্যুৎ, না কোনো যোগাযোগের মাধ্যম। প্রতিবারই একটা নতুন পরিকল্পনা আসে– কখনো বলে গাজার মানুষকে জোর করে সরিয়ে দেবে, কখনো বলে ইসরায়েল পুরো গাজা দখল নেবে। আর এখন তারা পুরো গাজার জনগণকে জিম্মিদের কারণে হুমকি দিচ্ছে।
জামিলা মাহমুদ জোর দিয়ে বলেন, যা কিছু ঘটুক না কেন, তিনি কখনোই গাজা ছেড়ে যাবেন না। আমার বাড়ি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হলেও আমাকে সরাতে পারবে না।
পরিবারের জন্য অল্প কিছু খাবার নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে ৬০ বছর বয়সি আইমান আবু দাইয়েহ আল জাজিরাকে বলেন, তিনি শুধু চান 'হামাস এখন জনগণের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিক – একটি চুক্তি গ্রহণ করুক, আলোচনা করুক, এবং বন্দিদের হস্তান্তর করুক, যাতে এই অন্তহীন দুঃস্বপ্ন শেষ হয়।'
এটাই একমাত্র বাস্তবসম্মত পথ... আমাদের অবস্থান দুর্বল, আর কেউ আমাদের পাশে নেই।
তবে তিনি সন্দেহ প্রকাশ করেন যে, শুধুমাত্র জিম্মিদের হস্তান্তর করলেই কি ট্রাম্প ও ইসরায়েলের জন্য যুদ্ধ শেষ হবে? যদিও এটি ভবিষ্যতে যুদ্ধকে কিছুটা কম বিধ্বংসী করতে পারে।
আইমান আবু দাইয়েহ বলেন, আমরা ৫০ হাজার মানুষ হারিয়েছি। আমার দুই ছেলে মারা গেছে– একজন ২০২৩ সালের অক্টোবরে, আরেকজন ডিসেম্বর। তারা দুজনই তরুণ ছিল। আমার বাড়িটিও ধ্বংস হয়েছে। আমরা যথেষ্ট ক্ষতি ও দুর্ভোগ সহ্য করেছি। আমাদের বিষয়ে আরব দেশগুলো নীরব, ইউরোপের দেশগুলোও নীরব।
তিনি বলেন, ট্রাম্পের বক্তব্যের কোনো মূল্য নেই। আমার মনে হয়, সে শুধু হামাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে এসব হুমকি দিচ্ছে। তাদের যা করার বাকি, তা হলো আমাদের সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া।
রবিবার ২৩ মার্চ ২০২৫
রবিবার ২৩ মার্চ ২০২৫
রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে বড় জমায়েতের মধ্য দিয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ ঘটে। এর পরদিন ১ মার্চ গভীর রাতে ২১৭ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। তবে দলটির দর্শন, ইশতেহার, গঠনতন্ত্র সম্পর্কে খুব বেশি ধারণা পাওয়া যায়নি। শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা বলছেন, চলতি মাসের মধ্যেই সবকিছু চূড়ান্ত করা হবে।
এনসিপি সূত্রে জানা যায়, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের চেতনা ধারণ করে নতুন দেশ গড়তে মোটাদাগে ১০ বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে ইশতেহার তৈরির কাজ চলছে। যেখানে থাকবে রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক-অর্থনৈতিকভাবে দেশকে তারা কীভাবে গড়ে তুলতে চান, সেসব বিষয়। থাকবে নতুন রাষ্ট্র বিনির্মাণের পথরেখা। পারিবারিক পরিচয় নয়, যোগ্যতার ভিত্তিতে যেন তৃণমূল থেকে কেন্দ্রে উঠে আসতে পারে—এমন বিষয় প্রাধান্য পাবে দলের গঠনতন্ত্রে। এনসিপির ইশতেহারে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে সেকেন্ড রিপাবলিক, গণপরিষদ নির্বাচন এবং নতুন সংবিধানকে। সেকেন্ডে রিপাবলিক প্রতিষ্ঠা ও গণপরিষদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নতুন সংবিধান রচনার সংকল্প তুলে ধরবেন তারা। যেটি তাদের ঘোষণাপত্রেও উল্লেখ করতে দেখা যায়। এ ছাড়া পরিবারতন্ত্রের অবসান, সিন্ডিকেট ও গোষ্ঠীস্বার্থ নির্মূল, ভেঙে পড়া প্রতিষ্ঠানগুলো পুনর্নির্মাণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অগ্রগতি, শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, জাতীয় অর্থনীতির পুনর্গঠন, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে মূলধারায় অন্তর্ভুক্তি করাকে প্রাধান্য দিচ্ছে দলটি।
এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব মোল্লা মোহাম্মদ ফারুক এহসান বলেন, বাংলাদেশের মানুষ যে স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিল, তা আসলে প্রথম ব্যর্থ হয়েছে মুজিববাদী সংবিধানের মাধ্যমে। তাই সেকেন্ড রিপাবলিক গঠনের মাধ্যমে মুজিববাদী সংবিধানকে ছুড়ে ফেলে নতুন সংবিধান প্রণয়ন করে ব্যক্তিতান্ত্রিক ও পরিবারতন্ত্রবিহীন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত তৈরির জন্যে কাজ করবে এনসিপি।
তিনি বলেন, বর্তমান সংবিধান এবং রাষ্ট্রব্যবস্থাতে সংবিধানে যেভাবে এক ব্যক্তির কাছে সমস্ত ক্ষমতা কুক্ষিগত থাকে তাতে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোও হয় একক ব্যক্তির দাস। যেভাবে মুজিব পরিবারকে দেবতার আসনে বসানো হয়েছিল, ভবিষ্যতেও যেন এরকম কোনো কাল্ট গড়ে না ওঠে এবং প্রাতিষ্ঠানিক গণতন্ত্র গড়ে ওঠে, সে লক্ষ্যে এনসিপির অঙ্গীকার অব্যাহত থাকবে।
পরিবারতন্ত্র বিলোপের কথা জানিয়ে এনসিপির এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, পরিবারতন্ত্র ও গোষ্ঠীতন্ত্রের মাধ্যমে যে ফ্যাসিবাদ তা পূর্ণাঙ্গ বিলোপের লক্ষ্যে প্রচেষ্টার পাশাপাশি একুশ শতকের সময়োপযোগী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে গুরুত্বারোপের মাধ্যমে আধুনিক জাতি গঠনের লড়াইয়ে এনসিপি থাকবে। বাংলাদেশের সমস্ত প্রতিষ্ঠান, অর্থনীতি, পাশাপাশি বহিঃশত্রুর মোকাবিলায় নিজস্ব প্রতিরক্ষার ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার লিডিংয়ে বাংলাদেশকে নিয়ে যাওয়া হবে অন্যতম প্রধান কাজ। বাংলাদেশের সব জনগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য এতে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী তথা পাহাড়ি, তপশিলি এবং চা বাগান শ্রমিকদেরও অন্তর্ভুক্ত করবে এনসিপি।
আরেক যুগ্ম সদস্য সচিব আলাউদ্দিন মোহাম্মদ বলেন, আমরা তাৎক্ষণিকভাবে (ইমিডিয়েট) ১০টি লক্ষ্য ঠিক করেছি। গত সাত মাসের কার্যকলাপে আমরা দেখেছি এখানে রাজনৈতিক ব্যবস্থায় বিদ্যমান যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে, এগুলো অটুট রেখে আমরা বড় ধরনের পরিবর্তন দেখতে পাব না। এরই প্রেক্ষাপটে আমাদের রাজনৈতিক দল তৈরি করা। এখন আমাদের প্রধান কাজ হলো গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে একটি নতুন সংবিধান রচনা করা। সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনেও সেটি আছে। এ ছাড়া স্বাভাবিকভাবে আমরা পরিবারতন্ত্রের অবসান চাই। স্বাধীনতার পর থেকেই এই দেশ একটি গোষ্ঠীর কাছে বন্দি হয়ে আছে। তারাই পুরো রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে। আমরা এর পরিবর্তন চাই। এ ছাড়া বিচার বিভাগ, নির্বাহী বিভাগ, নির্বাচন কমিশনসহ ভেঙে পড়া প্রতিষ্ঠানগুলোর পুনর্নির্মাণ করাই আমাদের লক্ষ্য।
এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব মোহাম্মদ মিরাজ মিয়া বলেন, আমরা কেন বলছি নতুন সংবিধান প্রয়োজন এবং তার জন্য গণপরিষদ নির্বাচন প্রয়োজন। বিএনপির ক্ষেত্রে যদি দেখেন তারা সংবিধান সংস্কার কমিশনে প্রায় ৬২ জায়গায় সংস্কার চায়। সংবিধানে আছেই ১৫৪টি আর্টিকেল, তার মধ্যে তারা ৬২ জায়গায় সংস্কার চায়। তার মানে বিএনপিও চায় সংবিধানের বড় একটি অংশ পরিবর্তন হোক। জামায়াতও ৩০ থেকে ৩৫ জায়গায় সংবিধান সংস্কার চায়। জাতীয় নাগরিক কমিটির যে সংবিধান প্রস্তাবনা দিয়েছে, সেখানে তারা ৭০ জায়গায় সংস্কার চেয়েছে। অর্থাৎ রাজনৈতিক দল কিংবা সংগঠনগুলো বিদ্যমান সংবিধানের কোনো একটি ধারার সংশোধন চায় না, তারা বৃহৎ পরিবর্তন চায়। তাই আমরা বলছি এই পরিবর্তন যেহেতু পার্লামেন্ট করতে পারে না, যে কারণে পার্লামেন্টের সদস্যরাই প্রথম একটা নির্দিষ্ট সময় তারা গণপরিষদ হিসেবে কাজ করবে এবং সংবিধানটা প্রণয়ন করবে।
নতুন সংবিধানের কথা উল্লেখ করে এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমরা বিশ্বাস করি, নতুন একটি সংবিধানের বাস্তবতা রয়েছে। এর ভিত্তিতে আমরা গণপরিষদ নির্বাচনের কথা বলেছি। একই সঙ্গে সেই গণপরিষদ নির্বাচনে যারা জয়ী হবেন, তারা সংসদ সদস্য হিসেবে ভূমিকা পালন করবেন এমন প্রস্তাবও আমাদের আছে।
গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বারবার দীর্ঘায়িত করা হয়েছে জানিয়ে এমসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, পুরোনো সংবিধান এবং পুরোনো শাসনকাঠামো রেখে একটি নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব নয়। কেবল সরকার পরিবর্তন করেই জনগণের কল্যাণ ও প্রকৃত গণতন্ত্র বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। এ জন্য আমরা বলছি, চব্বিশের যে গণঅভ্যুত্থান হয়েছে, ছাত্র-জনতা রক্ত দিয়েছে—তাতে কেবল সরকার পরিবর্তন নয়, বরং শাসনকাঠামো ও সাংবিধানিক পরিবর্তন করে নতুন একটি বাংলাদেশের যাত্রা শুরু করতে চাই, যেখানে প্রকৃত গণতন্ত্র, ইনসাফ ও সাম্য নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
শুক্রবার ২১ মার্চ ২০২৫
সোমবার ১৭ মার্চ ২০২৫
চলতি মাসের মধ্যে ১৫ মিলিয়ন ডলারের অর্থ সহায়তা জোগাড় করতে না পারলে ১ এপ্রিল থেকে রোহিঙ্গাদের জন্য খাবারের বরাদ্দ অর্ধেক কমানো হতে পারে। এমন পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি। এর ফলে আগে প্রত্যেক রোহিঙ্গাকে প্রতি মাসে মাথাপিছু যেখানে সাড়ে ১২ ডলারের খাদ্য সহায়তা দেওয়া হতো, তা কমে দাঁড়াবে ছয় ডলারে।
এতে করে প্রতি বেলার খাবারের জন্য বরাদ্দ বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৬ টাকা থেকে কমে হবে আট টাকা। পরিণতিতে আগে থেকেই বিদ্যমান খাদ্য সংকট এবং অপুষ্টি আরও তীব্র আকার ধারণ করতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সংশ্লিষ্টদের অভিমত, এমন উদ্যোগে কক্সবাজার ও ভাসানচরে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর তাৎক্ষণিকভাবে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
এ বিষয়ে গতকাল বুধবার শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, তারা (রোহিঙ্গা) এখন যা পাচ্ছে, সেটাই যথেষ্ট নয়। নতুন করে বরাদ্দ কমে যাওয়ার পরিণাম কী হবে তা অকল্পনীয়।
রেশন কমানোর বিষয়টি নিশ্চিত করে গতকাল চিঠি দিয়েছে ডব্লিউএফপি। আগের দিন মৌখিকভাবে তা মিজানুর রহমানকে জানানো হয়েছিল। এমন একটি সময়ে ডব্লিউএফপি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যখন যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্প প্রশাসন বিশ্বজুড়ে ইউএসএআইডি’র অর্থায়ন বাতিল করেছে। জানুয়ারিতে এ বিষয়ক প্রাথমিক ঘোষণায় জরুরি খাদ্য ত্রাণকে আওতার বাইরে রাখার কথা বলা হয়েছিল।
মিজানুর রহমান জানান, ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্তের কারণে বরাদ্দ কমেছে কি না, সেটা ডব্লিউএফপি সুনির্দিষ্ট করে জানায়নি। তবে তিনি জানান, রেশন কমে যাওয়ার সম্ভাব্য কারণ এটাই যে শরণার্থীদের সহায়তায় শীর্ষ দাতা দেশ হলো যুক্তরাষ্ট্র।
মিজানুর রহমানকে পাঠানো চিঠিতে ডব্লিউএফপি উল্লেখ করেছে, তারা রেশনের পরিমাণ সাড়ে ১২ ডলার অব্যাহত রাখার জন্য তহবিল জোগাড়ের চেষ্টা করেছে, কিন্তু প্রয়োজন অনুসারে দাতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।
ডব্লিউএফপি বলেছে, আমরা স্বীকার করে নিচ্ছি, শরণার্থীরা মানবিক ত্রাণের ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল। যার ফলে, শরণার্থী পরিবারগুলো তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণে হিমশিম খাবে এবং শিবিরে অস্থিরতা বেড়ে যেতে পারে।
কক্সবাজার ও ভাসানচরে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বসবাস করেন। তাদের বেশিরভাগই ২০১৭ সালে মিয়ানমারে সহিংসতার সময় পালিয়ে আসে।
গত বছরও প্রায় ৭০ হাজার রোহিঙ্গা রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। জাতিসংঘের তথ্য থেকে জানা গেছে, ২০২৩ সালেও মাসিক রেশন কমিয়ে আট ডলার করা হয়েছিল। সে সময় সেখানে ক্ষুধা ও অপুষ্টির মাত্রা অনেক বেড়ে যায়।
কয়েক মাসের মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রে বসবাসকারীরা সুষ্ঠুভাবে বেঁচে থাকার জন্য যথেষ্ট পরিমাণ খাবার জোগাড় করতে হিমশিম খান এবং ১৫ শতাংশেরও বেশি শিশু অপুষ্টিতে ভোগে। পরবর্তীতে রেশনের পরিমাণ আবারও আগের পর্যায়ে ফিরিয়ে আনা হয়।
রোহিঙ্গাদের চাহিদা মেটাতে ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ প্রয়োজন হবে ৮১ মিলিয়ন ডলার। ডব্লিউএফপি’র বাংলাদেশ মুখপাত্র কুন লি বলেন, বর্তমানে রোহিঙ্গাদের জন্য প্রতি মাসে ১৫ মিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হয়। কিন্তু এবার সেই তহবিল জোগাড় না হওয়ায় অর্থ সহায়তা কমানোর সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। তবে এ মাসের মধ্যে ১৫ মিলিয়ন ডলারের তহবিল জোগাড় করা সম্ভব হলে, আগামী মাসেও একই হারে অর্থাৎ জনপ্রতি সাড়ে ১২ ডলার করে অনুদান দেওয়া সম্ভব হবে।
কক্সবাজারের একটি মানবিক প্রকল্পে কাজ করেন এনজিওকর্মী জসিম উদ্দীন। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তার প্রায় ৫০ শতাংশই আসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। এই তহবিল কমানোর অর্থ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর বিপর্যয় নেমে আসা। যার ফলে বাংলাদেশি জনগোষ্ঠীও প্রভাবিত হবে।
রোহিঙ্গারা যেসব খাবার পেয়ে থাকেন, তার মধ্যে আছে চাল, ডাল, পাঙ্গাস মাছ ও হাস-মুরগি প্রভৃতি। চাহিদার বিপরীতে এর পরিমাণ একেবারে ন্যূনতম।
জসিম উদ্দীন বলেন, চাকরির সুযোগ না থাকায় অনেক রোহিঙ্গা তরুণ শিবির থেকে কাজের খোঁজে বের হন। কেউ কেউ মাদক ও মানব পাচারে জড়িয়ে পড়েন। আমার আশঙ্কা, খাদ্য সহায়তা সীমিত হয়ে পড়ায় রোহিঙ্গারা শিবির থেকে বের হয়ে এসে স্থানীয়দের জীবিকার উৎসগুলো দখল করার চেষ্টা করবে।
এ ব্যাপারে সরকারে শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়ের এক কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের উচিত শিগগির আন্তর্জাতিক কমিউনিটির কাছে বিষয়টি উত্থাপন করা।
মঙ্গলবার ২৫ মার্চ 20২৫
সোমবার ২৪ মার্চ ২০২৫
ফাল্গুনের শেষ দিকে এসে বেড়েছে ভ্যাপসা গরমের অনুভূতি, এবং তাপমাত্রার পারদও ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে আবহাওয়া অধিদফতর চলতি মার্চ থেকে মে পর্যন্ত দেশের আবহাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে, যেখানে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি তীব্র কালবৈশাখী ঝড়, শিলাবৃষ্টি এবং তাপপ্রবাহের মতো বিপজ্জনক আবহাওয়া পরিস্থিতির আশঙ্কা রয়েছে।
পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী তিন মাসে অন্তত ৮ দিন বজ্রপাত ও শিলাবৃষ্টি হতে পারে এবং ২ থেকে ৩ দিন তীব্র কালবৈশাখী ঝড়ও দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে, মার্চ থেকে মে মাসে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বজ্রপাত ও শিলাবৃষ্টি হওয়া সাধারণ ঘটনা হবে, তবে এগুলোর তীব্রতা এবং ঘণত্ব কখনও বেশি হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদফতরের মতে, এই সময়ের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে ২ থেকে ৩টি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে, যার মধ্যে একটি নিম্নচাপে এবং পরবর্তীতে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। এটি বিপদের আশঙ্কা সৃষ্টি করতে পারে, বিশেষত উপকূলীয় অঞ্চলের জন্য। ঘূর্ণিঝড়টি যদি বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত হানে, তবে তীব্র ঝড়, বৃষ্টি এবং জলোচ্ছ্বাসের সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, এই তিন মাসে দেশের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, মার্চ থেকে মে পর্যন্ত ৪ থেকে ৭টি তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এই তাপপ্রবাহগুলোর তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকবে, যা মৃদু তাপপ্রবাহ হিসেবে গণ্য হয়। তবে, কয়েকটি অঞ্চলে তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যা মাঝারি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে পরিচিত।
এছাড়া, কালবৈশাখী ঝড়ের সাথে আসা ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বাতাসের গতিবেগও ভয়াবহ হতে পারে, যা স্থানীয়ভাবে বৃক্ষপতন এবং তীব্র বৃষ্টির সৃষ্টি করতে পারে। এসব আবহাওয়ার কারণে কৃষি, সাধারণ জীবনযাত্রা এবং পরিবহন ব্যবস্থায় সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
মঙ্গলবার ২৫ মার্চ 20২৫
সোমবার ২৪ মার্চ ২০২৫