Logo
শিরোনাম

৬৫ ঘন্টায় ৭২ ধর্ষণ

প্রকাশিত:সোমবার ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ৩০ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

গত ৬৫ ঘন্টায় ৭২টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারণে দেশের বিভিন্ন জায়গায় এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। 

সিংগাইরে দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীকে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ, অটোরিকশা থেকে নামিয়ে গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণ, অবকাশ কেন্দ্রে বেড়াতে গিয়ে ধ'র্ষণের শিকার মাদ্রাসাছাত্রী, চলন্ত বাসে ডাকাতি-ধর্ষণ, শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে ফুল আনতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী, স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া মেটানোর আশ্বাস দিয়ে নারীকে ধর্ষণ, ভিডিও ধারণ, ট্রলারে মাওয়া ঘাট পার হতে গিয়ে গৃহবধূ সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার, বাবা কর্তৃক ধর্ষণের শিকার এ ধরণের শিরোনামে সংবাদের চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। 

দেশের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার মধ্যে নারীদের প্রতি অবমাননাকর ঘটনার প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ধর্ষণের প্রতিবাদে এবং সুরক্ষার জন্য আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মানববন্ধন করা হলেও কমছে নয়া ধর্ষণের সংখ্যা। ফলে দেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করার প্রশ্নও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে।


আরও খবর



হযরত আবু আয়ুব আনসারী (রাযিঃ)'র জীবনী

প্রকাশিত:রবিবার ২০ এপ্রিল ২০25 | হালনাগাদ:বুধবার ৩০ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

সাহাবী হযরত আবু আয়ুব আনসারী (রাযি.)'র জিয়ারতে হযরত শাহসুফি সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল হাসানী ওয়াল হোসাইনী আল মাইজভাণ্ডারী মাদ্দাজিল্লুহুল আলী :

হযরত আবু আইয়ুব আনসারী রাযি. একজন বিশিষ্ট আনসারী সাহাবী। তাঁর মূল নাম খালিদ ইবন যায়দ। আবূ আইয়ূব তাঁর উপনাম। তিনি আনসারদের খাযরাজ গোত্রের শাখা বনূ নাজ্জারের লোক। তিনি আকাবার বায়আতে অংশগ্রহণ করেছিলেন।

নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হিজরত করে যখন মদীনায় আগমন করেন, তখন প্রথম কয়েক মাস তাঁর বাড়িতেই অবস্থান করেছিলেন। প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উটনী আল-কাসওয়া তাঁর বাড়ির সামনে এসে থামলে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এখানেই থাকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। একমাস পর্যন্ত তিনি এ বাড়ির মেহমান হয়ে থাকেন। এটা হযরত আবূ আইয়ূব আনসারী রাযি. -এর এক বিশেষ মর্যাদা। প্রথমদিকে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর ঘরের নিচ তলায় থাকতেন এবং আবূ আইয়ূব রাযি. নিজে উপর তলায়। একদিন উপর তলায় পানি পড়ে গেল। তিনি ও তাঁর স্ত্রী একটা কাপড় দিয়ে সে পানি মুছে ফেলার চেষ্টা করেন, যাতে তা নিচে গড়িয়ে না পড়ে এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কষ্ট না পান। তারপর তার অনুরোধে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উপর তলায় উঠে আসেন। যখন মসজিদে নববী প্রতিষ্ঠিত হয় এবং তার পাশে বাসস্থান নির্মিত হয়, তখন নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখানে চলে আসেন।

এই সৌভাগ্যের কারণে এ উম্মতের দৃষ্টিতে তার এক বিশেষ মর্যাদা রয়েছে। এমনকি সাহাবীগণও তার সে মর্যাদা উপলব্ধি করতেন। বর্ণিত আছে, তিনি একবার বসরায় আগমন করেন। হযরত আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাযি. তখন বসরার গভর্নর। তিনি হযরত আবূ আইয়ূব রাযি.-কে নিজ বাড়িতে আমন্ত্রণ জানান। এজন্য তিনি নিজ বাড়িটি তার জন্য খালি করে দেন। এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, আবৃ আইয়ূব রাযি. নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য যা করেছিলেন, তিনিও তাঁর সঙ্গে সেরূপ ব্যবহার করতে চান। পরে তিনি হযরত আবূ আইয়ূব রাযি.-কে জিজ্ঞেস করেন তাঁর কোনও ঋণ আছে কি না এবং থাকলে তার পরিমাণ কত? হযরত আবূ আইয়ূব রাযি. বললেন তার বিশ হাজার দিরহাম ঋণ আছে। হযরত ইবন আব্বাস রাযি. তাঁকে চল্লিশ হাজার দিরহাম প্রদান করেন, সেইসঙ্গে বিশজন গোলাম এবং ঘরের প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র।

হযরত মুআবিয়া রাযি. যখন আমীরুল মুমিনীন পদে অভিষিক্ত, তখন দামেশকে হযরত আবূ আইয়ূব আনসারী রাযি. তাঁর সঙ্গে দেখা করলে তিনি তাঁকে নিজ আসনে পাশাপাশি বসতে দিয়েছিলেন।হিজরতের পর নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত মুস'আব ইবন উমায়র রাযি. ও আবূ আইয়ূব আনসারী রাযি.-এর মধ্যে ভ্রাতৃবন্ধন স্থাপিত করে দিয়েছিলেন।

বদর, উহুদ, খন্দক ও বায়আতুর রিযওয়ানসহ প্রতিটি জিহাদ ও অভিযানে তিনি অংশগ্রহণ করেছিলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওফাতের পরও তিনি জিহাদে অংশগ্রহণের ধারা অব্যাহত রাখেন। হযরত আবূ বকর সিদ্দীক রাযি., হযরত উমর ফারূক রাযি., হযরত উছমান গনী রাযি. ও হযরত আলী রাযি.- এ চারও খলীফার আমলে তিনি নিয়মিত জিহাদে অংশগ্রহণ করেছেন। হযরত আলী রাযি. যখন ইরাক গমন করেন, তখন মদীনা মুনাউওয়ারায় তাঁকে নিজ স্থলাভিষিক্ত নিযুক্ত করে যান। তিনি হযরত আলী রাযি.-এর সঙ্গে খারিজীদের বিরুদ্ধেও জিহাদে তৎপর ছিলেন। জিহাদে অংশগ্রহণের স্পৃহা তার মধ্যে এত বেশি ছিল যে, শেষ বয়সে তাঁর বার্ধক্যের সময়ও তিনি রোম অভিযানে শরীক হবার আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং স্বীয় পরিবারের তীব্র বিরোধিতা সত্ত্বেও তিনি জিনিসপত্র  গুছিয়ে রওয়ানা হন। উক্ত অভিযানের নেতৃত্বভার ছিল য়াযীদ ইবন মু'আবিয়া (রা)-এর উপর। অন্যান্য বড় বড় সাহাবীর ন্যায় তিনিও একজন সাধারণ সৈনিক হিসেবে রোম তথা কুসতুনতুনিয়া (কন্সটান্টিনোপল) অভিযানে অংশগ্রহণ করেন। এ সফরে মুসলিম বাহিনীর মধ্যে মহামারি ছড়িয়ে পড়ে। এর ফলে বহু মুসলিম মুজাহিদ। ইন্তিকাল করেন। আবূ আয়ূব (রা)ও উক্ত রোগে অসুস্থ হয়ে পড়েন। সেনাপতি য়ায়ীদকে তিনি ওয়াসিয়াত করেন যে, শত্রুভূমির যতদূর তোমরা যেতে পার তার শেষ সীমানায় আমার লাশ দাফন করবে। অতঃপর এ সফরেই ৫২ হি. (মান্তরে ৫০, ৫৫ হি.) তিনি ইন্তিকাল করেন। মুসলিম বাহিনীর সকল সদস্য তাঁর জানাযায় অংশগ্রহণ করেন এবং য়াযীদ তাঁর জানাযায় ইমামতি করেন। অতঃপর ওসিয়ত মুতাবিক সকল সৈন্য অস্ত্র সজ্জিত হয়ে রাতের বেলা কুসতুনতুনিয়া প্রাচীরের পাদদেশে তাঁর লাশ দাফন করেন। দাফন শেষে কাফিরদের বেআদবীর আশঙ্কায় য়াযীদ তাঁর কবর মাটি সমান করে দেন। সকালবেলায় রোমক বাহিনী মুসলমানদেরকে জিজ্ঞেস করল, রাতের বেলা তোমাদেরকে খুব ব্যস্ত দেখলাম, কী ব্যাপার? মুসলমানগণ উত্তর দিলেন আমাদের নবীর এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু ইন্তিকাল করেছেন। তার দাফন-কাফনে 'আমরা ব্যস্ত ছিলাম। তবে তাঁকে 'আমরা কোথায় দাফন করেছি তা তোমরা জান। সাবধান! তাঁর কবরের সাথে কোনরূপ বেআদবী করা হলে জেনে রাখো, ইসলামের এ বিশাল সাম্রাজ্যের কোথাও তোমাদের ঘণ্টাধ্বনি বাজতে পারবে না। (সিয়ারুস সাহাবা, ৩/১খ, ১০৯, ১১০) ইবন সা'দ (রা) বলেন, রোমবাসী আজও উক্ত কবরের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে থাকে এবং তার যথাসাধ্য সংস্কারও তারা করে। অনাবৃষ্টি ও দুর্ভিক্ষের সময় তারা উক্ত কবরের উসীলায় বৃষ্টি কামনা করে থাকে। (তাবাকাত, তখ., পৃ. ৪৮৫)


উল্লেখ্য মুসলিম বাহিনী এর আগের অভিযানে কনস্টান্টিনোপল জয় করতে সক্ষম হননি। দীর্ঘদিন অবরোধ করে রাখার পরও যখন শহরবাসী আত্মসমর্পণ করতে রাজি হলো না, তখন একপর্যায়ে অবরোধ তুলে নিয়ে এ বাহিনী ফিরে আসে। বস্তুত এ সৌভাগ্য লেখা ছিল সুলতান মুহাম্মাদ ফাতিহ'র ভাগ্যে। তিনি হিজরী ৮৫৭ সালে এক মহাবিস্ময়কর সামরিক অভিযানের মাধ্যমে এ নগর জয়ে সক্ষম হন। জয়লাভের পর তিনি হযরত আবূ আইয়ূব আনসারী রাযি.-এর কবর খুঁজে বের করেন এবং এখানে একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। মসজিদটি জামে আবূ আইয়ূব নামে খ্যাত। পুরো মহল্লাটিকেই ‘আবূ আইয়ূব মহল্লা' বলা হয়ে থাকে।

হযরত আবূ আইয়ূব আনসারী রাযি.-এর সূত্রে ১৫০টি হাদীছ বর্ণিত আছে। তার মধ্যে ৭টি আছে বুখারী ও মুসলিম শরীফে। হযরত বারা' ইবন আযিব রাযি. হযরত জাবির ইবন সামুরা রাযি., হযরত আবূ উমামা বাহিলী রাযি., হযরত যায়দ ইবন খালিদ জুহানী রাযি. ও হযরত আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাযি.-এর মত বিশিষ্ট সাহাবীগণও তাঁর থেকে হাদীছ বর্ণনা করেছেন।


আবূ আয়্যূব খালিদ ইব্‌ন যায়দ আন-নাজ্জারী (রা)

প্রকৃত নাম খালিদ ইব্‌ন যায়দ, উপনাম আবূ আয়ূব। এ উপনামেই তিনি সমধিক পরিচিত ছিলেন। মদীনার খাযরাজ গোত্রের শাখা বানু নাজ্জার এ তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বংশলতিকা হল, আবূ আব্বার খালিদ ইবন যায়দ ইবন কুলায়ৰ ইবন ছা'লাবা ইবন আবদ ইবন 'আওফ ইবন পানম ইবন মালিক ইবনিন-নাজ্জার আল-আনসারী আন-নাজ্জারী আল-খাযরাজী। তাঁর মাতার নাম ছিল যাহরা বিনত সা'দ ইবন কায়স। বংশ গৌরবের সাথে সাথে তাঁর পরিবারও ছিল খুবই সম্ভ্রান্ত ও অভিজাত। তিনি ছিলেন স্বীয় গোত্রের নেতা।

আবূ আয়ূব আনসারী (রা) আকাবার শপথে অংশগ্রহণ করেন। শপথ গ্রহণ শেষে মদীনায় ফিরে তিনি জোরে শোরে ইসলাম প্রচারের কাজ শুরু করেন। তিনি স্বীয় পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের ঈমানের দাওয়াত দেন। দাওয়াতের প্রথমদিকে তাঁর স্ত্রীও ইসলাম গ্রহণ করেন। হিজরতের সময় রাসূলুল্লাহ (সা) তাঁকে মুস'আব ইবন 'উমায়র (রা)-এর সাথে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন স্থাপন করে দেন। রাসূলুল্লাহ (সা) মক্কা থেকে হিজরত করে প্রথমত মদীনার অদূরে কুবা পল্লীতে উঠেন। কয়েকদিন সেখানে অবস্থান করার পর তিনি ইয়াছরিব তথা মদীনায় রওয়ানা হন। কাসওয়া নাম্নী এক উষ্ট্রীর পিঠে তিনি সওয়ার ছিলেন। এ সময় সম্ভ্রান্ত লোকজন এবং স্থানীয় নেতৃবৃন্দ সকলেরই আন্তরিক কামনা ছিল যে, রাসূলুল্লাহ (সা) আমার বাড়িতে মেহমান হোন । রাসূলুল্লাহ (সা) সবাইকে লক্ষ্য করে বললেন

خلوا سبيلها فانها مامورة

"উষ্ট্রীর রাস্তা ছেড়ে দাও। সে এ ব্যাপারে আদিষ্ট হয়েছে।” কোথায় থামতে হবে তা সে নিজেই খুঁজে নিবে। অতঃপর উষ্ট্রীটি আবূ আয়ূব আনসারী (রা)-এর বাড়ির সামনে গিয়ে বসে পড়ল। আবূ আয়ূব আনসারী (রা) সামনে এসে বললেন, এখানে আমার ঘর। অনুমতি দিলে মালপত্র নামিয়ে নিই।

রাসূলুল্লাহ (সা)-কে স্বীয় গৃহে মেহমান হিসেবে নেয়ার আরো বহু আগ্রহী সাহাবী যেহেতু সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তাই রাসূলুল্লাহ (সা)-এর নির্দেশে। লটারী করা হল। লটারীতেও আবূ আয়ূব আনসারী (রা) বাড়িতেই মেহমান হলেন। মসজিদে নববী ও তৎসংলগ্ন হুজরাসমূহ নির্মাণের পূর্ব পর্যন্ত ছয়মাস তিনি আবূ আয়ূব আনসারী (রা)-এর বাড়িতে মেহমান হিসেবে ছিলেন। এ সময় প্রাণ ভরে তিনি রাসূলুল্লাহ (সা)-এর সেবা-যত্ন ও মেহমানদারী করেন। তাঁর একটি দ্বিতল গৃহ ছিল। তিনি তার উপরতলা রাসূলুল্লাহ (সা)-এর বসবাসের জন্য দেন। কিন্তু সাক্ষাৎপ্রার্থীদের ভীড় ও যাতায়াতের কথা চিন্তা করে রাসূলুল্লাহ (সা) নিচের তলাটি গ্রহণ করেন। একবার ঘটনাক্রমে উপর তলায় রক্ষিত পানির পত্র ভেঙ্গে পানি পড়ে গেল। ছাদ যেহেতু মামুলি ধরনের ছিল, তাই উক্ত পানি নিচে গড়িয়ে পড়লে রাসূলুল্লাহ (সা)-এর কষ্ট হবে মনে করে তাঁদের একমাত্র কম্বলখানি দিয়ে পানি মুছে ফেললেন এবং কম্বল অভাবে শীতের রাতে আবূ আয়্যব (রা) ও তাঁর স্ত্রী ঘরের এক কোণে বসে বিনিদ্র রজনী যাপন করলেন। সকাল বেলা তিনি রাসূলুল্লাহ (সা)-এর কাছে ঘটনা বর্ণনা করে তাঁকে উপর তলায় তাশরীফ নেয়ার আবেদন করলেন। রাসূলুল্লাহ (সা) সে আবেদন গ্রহণ করে উপরতলায় বসবাস করতে লাগলেন। রাসূলুল্লাহ (সা) যতদিন তাঁর বাড়িতে ছিলেন ততদিন বেশির ভাগ সময়ই আবূ আয়ূব (রা) তাঁর খানার ইনতিজাম করতেন।

অন্যান্য আনসারগণও খানা পাঠাতেন। আহারের পর যে খাবার উদ্বৃত্ত থাকত, রাসূলুল্লাহ (সা) তা আবূ আযব (রা)-এর গৃহে পাঠিয়ে দিতেন। আবূ আয়ূব সে খাবারের যেখানে থেকে রাসূলুল্লাহ (সা) আহার করেছেন, আঙ্গুলের চিহ্ন দেখে দেখে সেখান থেকে আহার করতেন। এভাবেই তিনি রাসূলুল্লাহ (সা)-এর বরকত লাভে ধন্য হন। একদিন আবূ আয়ূব (রা)-এর গৃহে ফেরৎ যাওয়া খাবারে রাসূলুল্লাহ (সা)-এর আঙ্গুলের কোন চিহ্ন ছিল না। আবূ আয়ূব পেরেশান হয়ে রাসূলুল্লাহ (সা)-এর কাছে এসে আহার গ্রহণ না করার কারণ জিজ্ঞেস করলেন। রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন, খাবারের মধ্যে রসুন দেয়া হয়েছে, যা আমি পছন্দ করি না। তখন আবূ আয়ূব (রা) বললেন, আপনি যা অপছন্দ করেন আমিও তা অপছন্দ করি। (মুসলিম, ২খ, ১৯৭)

আবূ আয়ূব আনসারী (রা) ছিলেন একজন সাহসী বীর যোদ্ধা। জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি জিহাদে অংশগ্রহণ করেছেন। রাসূলুল্লাহ (সা)-এর জীবদ্দশায় তিনি বদর, উহুদ, খন্দক, হুদায়বিয়াসহ সকল যুদ্ধেই রাসূলুল্লাহ (সা)-এর সাথে অংশগ্রহণ করেন। আর রাসূলুল্লাহ (সা)-এর ইন্তিকালের পরও তিনি জীবনের অধিকাংশ সময় জিহাদে ব্যয় করেন। 'আলী (রা)-এর খিলাফত আমলে খারিজীদের বিরুদ্ধে পরিচালিত যুদ্ধে তিনি অংশগ্রহণ করেন। ‘আলী (রা)-এর ছিল তাঁর উপর অবিচল আস্থা। তাই তিনি যখন ইসলামী খিলাফতের রাজধানী কুফায় স্থানান্তর করলেন তখন আবূ আয়ূব আনসারী (রা)-কে মদীনার গভর্নর নিযুক্ত করে যান।

রাসূলুল্লাহ (সা)-কে দীর্ঘদিন খিদমত করা এবং তাঁর প্রতি প্রগাঢ় মহব্বত থাকার কারণে সকল সাহাবী ও আহলে বায়তের লোকজন আবূ আয়ূব আনসারী (রা)-কে খুবই সম্মান ও মর্যাদার চোখে দেখতেন। তাঁর প্রতি বিশেষ শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতেন। ইবন 'আব্বাস (রা), 'আলী (রা)-এর পক্ষ থেকে বসরার গভর্নর ছিলেন। এ সময় আবূ আয়ূব (রা) তাঁর সাথে সাক্ষাতের জন্য বসরা গমন করেন। ইবন 'আব্বাস (রা) তাঁকে পেয়ে মহা সমাদর করলেন। তিনি বললেন, আমি চাই আপনি যেমন রাসূলুল্লাহ (সা)-এর অবস্থানের জন্য নিজের ঘর খালি করে দিয়েছিলেন তদ্রূপ আমিও আজ আপনার জন্য আমার ঘর খালি করে দেব। এই বলে তিনি স্বীয় পরিবার পরিজনকে অন্যত্র সরিয়ে নিলেন এবং ঘরের সকল সামানপত্রসহ আবূ আয়ূব আনসারী (রা)-কে সোপর্দ করলেন।

রাসূলুল্লাহ (সা)-এর ইন্তিকালের পর খলীফাগণ বায়তুল মাল থেকে আব্বু আয়ুব আনসারী (রা)-কে মাসিক চার হাজার দিরহাম ভাতা প্রদান করতেন। 'আলী (রা)-এর খিলাফত আমলে তিনি এটা বাড়িয়ে বিশ হাজার দিরহাম করে দেন। রাসূলুল্লাহ (সা)-এর প্রতি যেমন তাঁর অগাধ ভালোবাসা ছিল তেমনি তাঁর হাদীছের প্রতি ছিল তাঁর প্রচণ্ড আকর্ষণ। তাই বৃদ্ধ বয়সেও তিনি একটিমাত্র হাদীছের জন্য মিসর সফর করেন। আমীর মু'আবিয়া (রা)-এর শাসনামলে তাঁর পক্ষ থেকে মিসরের গভর্নর ছিলেন 'উকা ইবন 'আমির আল-জুহানী (রা) । আবূ আযাব (রা) জানতে পারেন যে, উকবা ইবন 'আমির আল-জুহানী (রা) বিশেষ একটি হাদীছ বর্ণনা করেন, যা তাঁর নিজের জানা নেই। অতঃপর তিনি এই একটিমাত্র হাদীছ শোনার জন্য বার্ধক্য সত্ত্বেও মিসর রওয়ানা হন। 'উকবা (রা)- এর বাড়িতে পৌঁছে তিনি 'মুসলমানদের দোষ গোপন' সম্পর্কিত হাদীছটি জিজ্ঞেস করলেন এবং বললেন, বর্তমান সময়ে আপনি ছাড়া এ হাদীছটি আর কেউ জানে না। অতঃপর হাদীছটি শ্রবণের পর তিনি উটের পিঠে আরোহণ করে সোজা মদীনায় চলে আসেন। (মুসনাদে আহমদ, ৪খ., পৃ. ১৫৩)

তাঁর চরিত্রের তিনটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য ছিল ঃ (ক) রাসূলুল্লাহ (সা)-এর প্রতি প্রচণ্ড ভালোবাসা; (খ) ঈমানের জোশ এবং (গ) সত্য ও ন্যায় কথা বলা। প্রথমটির নিদর্শন পাওয়া যায় রাসূলুল্লাহ (সা)-কে মেহমানদারীর ঘটনায়। দ্বিতীয়টির নিদর্শন পাওয়া যায় বার্ধক্যের সময় জিহাদে গমন এবং শত্রু ভূমির সীমান্তে তাঁর লাশ দাফনের ওসিয়াত করায় এবং তৃতীয়টির নিদর্শনও রয়েছে অসংখ্য ঘটনায়। রোম যুদ্ধ চলাকালে জাহাজে বহু বন্দী ছিল। আবূ আয়ূব আনসারী (রা) তাদের কাছ দিয়ে যাবার সময় দেখলেন বন্দীদের মধ্যে এক মহিলা কেঁদে বুক ভাসাচ্ছে তিনি তার কান্নার কারণ জিজ্ঞাসা করায় লোকজন বলল, 'তার সন্তানকে তার থেকে ছিনিয়ে আলাদা করে রাখা হয়েছে। তখন আবূ আয়ূব (রা) তার ছেলের হাত ধরে এনে মহিলাটির হাতে দিয়ে দিলেন। তদারককারী কর্মকর্তা আমীরের নিকট এ ব্যাপারে অভিযোগ পেশ করলে আমীরের জিজ্ঞাসাবাদে আবূ আয়ূব (রা) বললেন, রাসূলুল্লাহ (সা) এ ধরনের নির্যাতন করতে নিষেধ করেছেন। (মুসনাদে আহমদ, ৫খ., পৃ. ৪১৩)


আবূ আযাব আনসারী (রা)-এর চার সন্তানের নাম জানা যায়, যারা তার ইন্তিকালের পরও জীবিত ছিলেন। তারা হলেন, আবূ মানসুর আযাব, এর নাম থেকেই তাঁর উপনাম হয় আবূ আযাব, "উমারা, মুহাম্মদ ও আবদুর রহমান। শেষোক্তজনের মাতার নাম ছিল উম্মু হাসান বিনত যায়দ ইবন ছাবিত (রা)। তিনিও ছিলেন উঁচু পর্যায়ের একজন মহিলা সাহাবী। পুত্রদের ইন্তিকালের পর তার কোন বংশধর ছিল বলে জানা যায় না।তিনি ছিলেন অতিশয় লজ্জাশীল। কূপের পাড়ে গোসল করলে তিনি তারচতুস্পার্শ্বে কাপড় টানিয়ে নিতেন।আবু আয়ূব আনসারী (রা) রাসূলুল্লাহ (সা) থেকে বেশ কিছু হাদীছ রিওয়ায়াত করেছেন। মুসনাদ বাকী ইবন মাখলাদ-এ তাঁর ১৬৫টি হাদীছের কথা উল্লেখ হয়েছে। যার মধ্যে বুখারী ও মুসলিম-এ যৌথভাবে সাতটি, শুধুমাত্র বুখারীতে একটি এবং শুধুমাত্র মুসলিম-এ পাঁচটি হাদীছ রিওয়ায়াত করা হয়েছে। সাহাবায়ে কিরামের মধ্যে তা থেকে হাদীছ বর্ণনা করেছেন : জাবির ইবন সামুরা, আল বারা' ইবন 'আযিব আল- মিকদাম ইবন মা'দী কারিব, 'আবদুল্লাহ ইবন "আব্বাস ও যায়দ ইবন খালিদ আল-জুহানী প্রমুখ (রা)। আর তাবিঈদের মধ্যে 'আবদুল্লাহ ইবন য়াযীদ আল-খাতমী, জুবায়র ইবন নুফায়র, সাঈদ ইবনুল মুসায়্যিব, উরওয়া ইবনুয-যুবায়র, মূসা ইবন তালহা, আতা ইব্‌ন য়াযীদ আল- লায়ছী ও তাঁর আযাদকৃত দাস আফলাহ, আবূ সালামা, ইব্‌ন 'আবদির রাহমান, আবদুর রাহমান আবী লায়লা, মুহাম্মদ ইব্‌ন আবী লায়লা, মুহম্মাদ ইবন কা'ব ও আল-কাসিম আবূ 'আবদির-রাহমান প্রমুখ (র)।


আরও খবর

মাইজভান্ডারির মোনাজাত

বৃহস্পতিবার ২৪ এপ্রিল ২০২৫




নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যাশা প্রধান উপদেষ্টার

প্রকাশিত:সোমবার ৩১ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:সোমবার ২৮ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

দেশের সব জায়গায় ঈদের জামাতে যারা শরীক হয়েছেন ও নারী-প্রবাসী শ্রমিকসহ সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা। ঈদ নৈকট্য ও ভালোবাসার দিন। আমাদের মধ্যে যে ঐক্য তৈরি হয়েছে স্থায়ীভাবে সেই ঐক্য গড়ে তুলতে চাই।

জাতীয় ঈদগাহ ঈদুল ফিতরের নামাজের পর দেওয়া এক বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মাদ ইউনূস।তিনি আরও বলেন, আমাদের মধ্যে যে ঐক্য তৈরি হয়েছে,‌ সব প্রতিকূলতার সত্ত্বেও সেই ঐক্য অটুট রাখতে হবে।

সেই সঙ্গে একটি ঐক্যবদ্ধ জাতি ও বাধা সত্ত্বেও নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যাশা করেন তিনি।

এ সময় জাতীয় ঈদগাহে প্রধান উপদেষ্টা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, রাজনীতিবিদসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

এর আগে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে দুই ঘণ্টা আগে থেকেই মুসল্লিরা রাজধানীর হাইকোর্টসংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে প্রবেশ করেছেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পল্টন মোড়, মৎস্য ভবন এবং হাইকোর্টের সামনে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে মুসল্লিরা ঈদগাহ ময়দানে প্রবেশ করেছেন। একইভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রান্তেও দীর্ঘ লাইন ছিল।

বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মুফতি মোহাম্মদ আবদুল মালেক ইমাম হিসেবে এ জামাতে দায়িত্ব পালন করেন, এবং ক্বারী হিসেবে ছিলেন বায়তুল মোকাররমের মুয়াজ্জিন মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) ব্যবস্থাপনায় জাতীয় ঈদগাহ ময়দান প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রায় ৩ লাখ ২২ হাজার ৮০০ বর্গফুট আয়তনের এই মাঠে একসাথে ৩৫ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন।


আরও খবর



মুন্সিগঞ্জ জেলা মাদকের অভিযানে বিশেষ স্বীকৃতি পেলেন আজাদ

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২২ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ৩০ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

গজারিয়া প্রতিনিধি :

মুন্সিগঞ্জ জেলা মাদকের অভিযানে গোয়েন্দা পুলিশকে শ্রেষ্ঠ স্বীকৃতি হলেন এসআই আবুল কালাম আজাদ সাহেবের চৌকস বাহিনী সোর্স সিরাজদিখান ও শ্রীনগর এবং লৌহজং থানায় এলাকা থেকে মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার ও বিপুল পরিমাণের গাঁজা ও ইয়াবা উদ্ধার করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করায়।

মুন্সিগঞ্জ জেলার সুযোগ্য ও মানবিক পুলিশ সুপার জনাব মুহম্মদ শামসুল আলম সরকার মহোদয় অদ্য ইং ২১/০৪/২০২৫ তারিখ দুপুর ১২.০০ ঘটিকার সময় মুন্সিগঞ্জ পুলিশ লাইন্স শহিদ কনস্টবল বোরহান উদ্দিন খান মিলনায়তন-এ মাসিক কল্যাণ সভার সভাপতি মুন্সিগঞ্জ জেলার সুযোগ ও পুলিশ সুপার মহোদয় বিপুল পরিমাণের মাদকদ্রব্য উদ্ধার এবং মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করায় মাদকদ্রব্য উদ্ধার কাজে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় ভালো কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ মুন্সিগঞ্জ জেলার সুযোগ্য ও মানবিক পুলিশ সুপার মহোদয় আমাকে মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রেষ্ঠ মাদকদ্রব্য উদ্ধারকারী কর্মকর্তা হিসেবে সম্মাননা ক্রেষ্ট প্রদান করেন।

 আমাদের চৌকস পদ্মা সেতু উত্তর টিমকে সম্মাননা স্মারক হিসেবে পুরস্কার প্রদান করেন । উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এ্যান্ড অপস্), মুন্সিগঞ্জ জনাব মোঃ ফিরোজ কবির। মাদকদ্রব্য উদ্ধার উদ্ধার করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা প্রদান সহ অভিযানের সাহস এবং অভিযানের বিষয় সার্বিক সহযোগিতা করেন মুন্সিগঞ্জ জেলার মাননীয় পুলিশ সুপার জনাব মুহাম্মদ শামসুল আলম সরকার মহোদয় ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এ্যান্ড অপস্), মুন্সিগঞ্জ জনাব মোঃ ফিরোজ কবির এবং অফিসার ইনচার্জ জনাব মোঃ ইশতিয়াক আহমেদ রাসেল, জেলা গোয়েন্দা শাখা মুন্সিগঞ্জ মহোদয়।


আরও খবর



ঝালকাঠির খাল থেকে যুবকের মরদেহ উদ্ধার

প্রকাশিত:সোমবার ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ৩০ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

হাসিবুর রহমান ,ঝালকাঠি প্রতিনিধি:

ঝালকাঠিতে মিজান হোসেন (২৮) নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। 

সোমবার (২৮) এপ্রিল সকালে সদরের কলেজ খেয়াঘাট সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় জামে মসজিদ সংলগ্ন খাল থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। 

মিজান শহরের পূর্ব চাঁদকাঠি পূবালী সড়কের জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে।


স্থানীয়রা জানান, খালে কাদায় লেপটানো একটি মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে  পুলিশকে খবর দেই। 

পরে পুলিশ ওই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের পাঠায়। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত চিহ্ন দেখা যায়।

ঝালকাঠি সদর থানার ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, নিহতের পরিবার থেকে কোনো অভিযোগ করা হয়নি, এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরও খবর



তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ১০.৮৪ শতাংশ

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৮ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৯ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

চলতি অর্থবছরের (২৪-২৫) জুলাই-মার্চ মাসে তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ১০ দশমিক ৮৪ শতাংশ। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-মার্চ মাসের দেশভিত্তিক রপ্তানি তথ্য থেকে বিষয়টি জানা গেছে।

জানা গেছে, এই সময়ে ৩০ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার পোশাক রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। যা পোশাক খাতের স্থিতিস্থাপকতা এবং সম্ভাবনা তুলে ধরে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।

তথ্য থেকে জানা যায়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখনো বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার। বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের মোট রপ্তানির ৪৯ দশমিক ৮২ শতাংশই রপ্তানি হয় ইউরোপীয় ইউনিয়নে। যার মোট বাজার মূল্য ১৫ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার।

এরপরেই রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজার। এ বাজারে মোট রপ্তানি হয়েছে ৫ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক। যা মোট রফতানির ১৮ দশমিক ৯৭ শতাংশ। যেখানে কানাডার মোট বাজার অংশ ছিল ৯৬৩ দশমিক ৮৫ মিলিয়ন ডলার। যার বাজার অংশ ৩ দশমিক ১৯ শতাংশ। যুক্তরাজ্যের বাজারও গুরুত্বপূর্ণ ছিল, যার রপ্তানি মূল্য ৩ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার। যা বাংলাদেশের মোট তৈরি পোশাক রপ্তানির ১১ দশমিক ১০ শতাংশ ।

প্রবৃদ্ধির দিক থেকে ইইউতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি বছরের পর বছর ধরে উল্লেখযোগ্যভাবে ১১ দশমিক ৩১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। উল্লেখিত সময়ে যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৭ দশমিক ২৩ শতাংশ এবং কানাডা ১৫ দশমিক ৬৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে, যুক্তরাজ্যে তৈরি পোশাক রপ্তানি ৪ দশমিক ১৪ শতাংশ এর একটি সামান্য প্রবৃদ্ধির হার প্রদর্শন করেছে।

ইইউর মধ্যে, জার্মানি একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার হিসেবে দাঁড়িয়েছে, যেখানে বাংলাদেশের রফতানির পরিমাণ ৩ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার, স্পেন ২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার, ফ্রান্স ১ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার, ইতালি ১ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলার, পোল্যান্ড ১ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলার এবং নেদারল্যান্ডস ১ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার।

প্রবৃদ্ধির হার বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ছিল- জার্মানি (১০ দশমিক ৭২ শতাংশ), ফ্রান্স (১০ দশমিক ৭৫ শতাংশ), নেদারল্যান্ডস (২৩ দশমিক ১৫ শতাংশ), পোল্যান্ড (১০ দশমিক ৩২ শতাংশ), ডেনমার্ক (১২ দশমিক ৮০ শতাংশ) এবং সুইডেন (১৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ) ।

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতেও অপ্রচলিত বাজারে প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে, সামগ্রিকভাবে ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যেখানে মোট রফতানি ৫ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা বাংলাদেশের মোট রফতানির ১৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ দখল করেছে।

এই বাজারগুলোর মধ্যে জাপান মোট ৯৬০ দশমিক ৪৫ মিলিয়ন ডলার আমদানি করে শীর্ষে রয়েছে, তারপরে অস্ট্রেলিয়া ৬৫৩ দশমিক ৬৪ মিলিয়ন ডলার এবং ভারত ৫৩৫ দশমিক ১৫ মিলিয়ন ডলার আমদানি করে।

তুরস্ক এবং মেক্সিকোর মতো দেশগুলোতেও উল্লেখযোগ্য রফতানি হয়েছে। তুরস্কে ৩৫৭ দশমিক ২২ মিলিয়ন ডলার এবং মেক্সিকোতে ২৫১ দশমিক ২২ মিলিয়ন ডলার, যা প্রশংসনীয়। উল্লেখিত সময়ে ভারতে ২০ দশমিক ৪৫ শতাংশ, জাপান ১০ দশমিক ০৬ শতাংশ, মেক্সিকো ২৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ এবং তুরস্কের ৩২ দশমিক ৫৪ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

রিপোর্টে দেখা গেছে, এই সময়কালে জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, তুরস্ক এবং মেক্সিকোতে প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক থাকলেও রাশিয়া, কোরিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং মালয়েশিয়ায় রফতানি হ্রাস পেয়েছে।

সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া এবং কোরিয়ায় নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি এই বাজারগুলোতে আরও গুরুত্বসহকারে রফতানি বাজার দেখা দরকার।

নিটওয়্যার খাত মোট ১১ দশমিক ২২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখিয়েছে। ওভেন সেক্টরেও ১০ দশমিক ৪০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যে প্রবৃদ্ধি ধীর হলেও অপ্রচলিত বাজারে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পয়েছে।

রফতানির চলমান প্রবৃদ্ধি উল্লেখযোগ্যভাবে ইইউ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভরশীল। যা বাংলাদেশের প্রধান বাজার হিসেবে অব্যাহত রয়েছে। যা এই ক্ষেত্রগুলির মধ্যে আরও সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেয়।

বিজিএমইএ’র সাবেক পরিচালক, বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং ডেনিম এক্সপার্ট লিমিটেডের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ‘এটি আমাদের মোট রপ্তানি প্রবৃদ্ধিতে প্রধান ঐতিহ্যবাহী বাজারের তাৎপর্য প্রদর্শন করে।’ তিনি আরও বলেন, অপ্রচলিত বাজারে মাঝারি প্রবৃদ্ধি এই বিভাগে আরও গবেষণা এবং মনোযোগের গুরুত্বকে তুলে ধরে, কারণ এর যথেষ্ট প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে, যা ঐতিহ্যবাহী বাজারের ওপর নির্ভরতা ভারসাম্য বজায় রাখতেও সাহায্য করবে।

রুবেল বলেন, স্থায়ী বৈশ্বিক বাণিজ্য উত্তেজনা ক্রমাগত বৈশ্বিক পরিবেশকে পুনর্গঠন করছে। এমন সুযোগ তৈরি করছে যা বাংলাদেশ সুবিধা নিতে পারে।

সূত্র : বাসস


আরও খবর

সবজিতে আর স্বস্তি নেই

মঙ্গলবার ২৯ এপ্রিল ২০২৫