Logo
শিরোনাম
উত্তরায় মাভাবিপ্রবি টেক্সটাইল অ্যালামনাই এসোসিয়েশন এর ইফতার মাহফিল নওগাঁয় গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগে স্বামী, শাশুড়ী ও দেবরকে আটক করেছে র‌্যাব নওগাঁয় হত্যার দায়ে যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ধামরাইয়ে অগ্নিকাণ্ডে এক পরিবারের ৪ জন অগ্নিদগ্ধ নড়িয়ায় জমিজমা সংক্রান্ত জের ধরে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ ভেনিস বাংলাদেশ প্রেস ক্লাবের ইফতার মাহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত রামগড়ে বিজিবি'র উদ্যোগে ইফতার ও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ নওগাঁয় মাটি ব্যবসায়ীদের নতুন কৌশল, রাতের আধারে কাটছে মাটি মাদক সেবনরত অবস্থায় ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী গ্রেফতার মাভাবিপ্রবিতে দোল পূর্ণিমা উদযাপিত

৮১ বছর পর বন্ধ হলো বিবিসি বাংলা রেডিও

প্রকাশিত:রবিবার ০১ জানুয়ারী ২০২৩ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ |

Image

সংবাদ ও সাময়িক প্রসঙ্গের অনুষ্ঠান ‘প্রবাহ’ আর ‘পরিক্রমা’ শেষবারের মত প্রচারিত হবে আজ বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা এবং রাত সাড়ে দশটায়। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করবেন লন্ডনে মানসী বড়ুয়া আর ঢাকায় আকবর হোসেন।

বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসে ব্যাপক পরিবর্তনের পটভূমিতে বিবিসি বাংলা রেডিও বন্ধের এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসে ওয়ার্ল্ড সার্ভিস কর্তৃপক্ষ বাংলায় রেডিও সম্প্রচার বন্ধ করার পরিকল্পনা ঘোষণা করে।

বিবিসি বাংলার সম্পাদক সাবির মুস্তাফা বলেন,‘বিবিসি বেশ কিছু দিন থেকে ডিজিটাল প্লাটফর্মের ওপর বেশি জোর দিচ্ছে, এখন এই পরিবর্তনের প্রক্রিয়া আরো ত্বরান্বিত করা হবে।

রেডিও শ্রোতাদের আহ্বান জানানো হচ্ছে, তারা যেন সংবাদ এবং সাময়িক প্রসঙ্গ নিয়ে প্রতিবেদন, বিশ্লেষণ, সাক্ষাতকার ইত্যাদির জন্য ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করেন –অর্থাৎ, বিবিসি বাংলার নিজস্ব ওয়েবসাইট

(www.bbcbangla.com), ইউটিউব চ্যানেল (https://www.youtube.com/bbcbangla),

ফেসবুকপেজ (https://www.facebook.com/BBCBengaliService)

এবং টুইটার (https://twitter.com/bbcbangla)

বিবিসি বাংলা রেডিও যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৪১ সালের ১১ই অক্টোবর, একটি সাপ্তাহিক নিউজলেটার দিয়ে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ক্রান্তিকালে মিত্র পক্ষের বক্তব্য ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষের কাছে পৌঁছে দেওবার লক্ষ্য নিয়েই শুরু হয়েছিল বিবিসি বাংলা রেডিওর যাত্রা।

বাংলাদেশের মানুষের মাঝে বিবিসি নামটি সব চেয়ে বেশি পরিচিতি পায় ১৯৭১ সালে, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়।

বিবিসির খবরের ওপর শ্রোতাদের আস্থা আর বিবিসি বাংলা রেডিওর জনপ্রিয়তা ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। মানুষ তখন যুদ্ধের খবরের জন্য পুরোপুরি নির্ভর করত বিবিসি বাংলার ওপর।

বিগত আট দশকে বিবিসি বাংলার রেডিও অনুষ্ঠানমালা এবং ব্যবস্থাপনা বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। রেডিওর চূড়ান্ত সম্প্রসারণ ঘটে ২০০৭ সালের জানুয়ারি মাসে যখন চতুর্থ একটি দৈনিক অধিবেশন শুরু করা হয়।

তার চার বছরের মাথায় সকালের দুটি রেডিও অধিবেশন লন্ডন থেকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়, এবং বাংলাদেশে কর্মরত বিবিসি বাংলার সাংবাদিক সংখ্যায় উল্লেখযোগ্য সম্প্রসারণ ঘটে।

তবে রেডিওর শ্রোতা কমে যাওয়ায় বিবিসি বাংলাদেশকে নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করে। চ্যানেল আই-এর সহযোগিতায় ‘বিবিসি প্রবাহ’ নামক সাপ্তাহিক অনুষ্ঠান নিয়ে ২০১৫ সালে বিবিসি বাংলা বাংলাদেশের টেলিভিশন জগতে প্রবেশ করে।

সাবির মুস্তাফা বলেন, বিবিসি বাংলা রেডিও ঘিরে অনেক স্মৃতি, অনেক আবেগ রয়েছে। কিন্তু যারা সংবাদের প্রতি আগ্রহী, তাদের চাহিদা মেটানোর জন্য বিবিসি রেডিও বন্ধ করার মত কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাস্তবতার আলোকে বিবিসি সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলা রেডিও বন্ধ করে লোকবল ডিজিটাল মাধ্যমে নিয়োজিত করতে।

সূত্র : বিবিসি বাংলা


আরও খবর



ঈদের পর কারওয়ানবাজারের ডিএনসিসি ভবন ভেঙে ফেলা হবে

প্রকাশিত:সোমবার ১৮ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ |

Image

ব্যবসায়ীরা প্রস্তুতি নিতে বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, ঈদের পরে কারওয়ান বাজারের কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ীদের স্থানান্তর শুরু হবে। ব্যবসায়ীরা প্রস্তুতি নিন। কারওয়ান বাজারের ভবন অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে বা আগুন লাগলে বহু মানুষ হতাহত হবে। আমরা আর মৃত্যুর মিছিল দেখতে চাই না। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে কোনো ব্যবসা চলতে দেওয়া যাবে না।

সোমবার (১৮ মার্চ) রাজধানীর গাবতলীতে ডিএনসিসির প্রস্তাবিত কাঁচাবাজারে ডিএনসিসির আওতাধীন কারওয়ান বাজারের কাঁচাবাজার ব্যবসায়ীদের গাবতলীর আমিনবাজার পাইকারি কাঁচাবাজারে স্থানান্তরের আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মেয়র একটি চমৎকার সুযোগ আপনাদের জন্য দিচ্ছেন। আপনাদের অবশ্যই এই সুযোগ গ্রহণ করা উচিত। মেয়র বলেছেন পাশেই নদীর পাশে বিজিবি মার্কেটে মাছের আড়ৎ নির্মাণ করে দেবেন। সব সুবিধাই আপনাদের জন্য নিশ্চিত করা হবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, এখন মেট্রোরেল হয়ে গেছে। কারওয়ান বাজার ধীরে ধীরে সংকীর্ণ হয়ে যাচ্ছে। ট্রাক ঢুকতে অনেক সমস্যা হয়। এছাড়া কারওয়ান বাজারের ট্রাক তেজগাঁওয়ের রাস্তা দখল করে রেখেছে। কারওয়ান বাজার স্থানান্তর করে ওই এলাকার পরিবেশ সুন্দর করতে হবে। গাবতলীতে স্থানান্তর হওয়ার পরে আপনাদের কি কি সুবিধা প্রয়োজন সে বিষয়ে সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে আলাপ করবেন। মেয়র আপনাদেরই প্রতিনিধি তিনি ব্যবস্থা নেবেন।

ডিএনসিসির আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোতাকাব্বীর আহমেদের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগে. জেনা. মো. মঈন উদ্দিন, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ফিদা হাসান প্রমুখ।


আরও খবর



দেশের সব রেস্তোরাঁ বন্ধের হুমকি মালিক সমিতির

প্রকাশিত:সোমবার ১৮ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ |

Image

দেশের রেস্টুরেন্ট খাতের বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানকে রক্ষা করার জন্য সবার সহযোগিতা চেয়েছে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি। অন্যথায় রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষায় আগামী ২০ মার্চ (বুধবার) মানববন্ধন করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়।

এরপরও সমস্যার সমাধান না হলে প্রতীকী হিসেবে ১ দিনের জন্য সারা দেশে সব রেস্তোরাঁ বন্ধের কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। তবে প্রয়োজন হলে পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে অনির্দিষ্টকালের জন্য সব রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেওয়া হবে।

সোমবার (১৮ মার্চ) বেলা ১১টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন সংগঠনটির মহাসচিব ইমরান হাসান।

সম্প্রতি বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডের পর সরকারি বিভিন্ন সংস্থার অভিযানকে নৈরাজ্য আখ্যা দিয়ে এর প্রতিবাদে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

মহাসচিব ইমরান হাসান বলেন, রমজান মাসে সিলগালা নাটক বন্ধ করুন। সরকারি সকল সংস্থার নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে অবহেলার দায় ব্যবসায়ীদের উপর চাপানো হচ্ছে। ঢালাওভাবে রেস্তোরাঁ সেক্টরটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে। সিলিন্ডারের কারণে শ্রমিক কর্মচারীদের গ্রেপ্তার কারা হয়েছে। অনেক কাগজ-ডকুমেন্ট থাকার পরও রাজউক অনধিকার চর্চা করছে। স্বাধীন দেশে এটা কোনোভাবে কাম্য নয়।

সরকারি বিধি অনুযায়ী কোনো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে হলে কমপক্ষে ৬ মাস পূর্বে নোটিশ প্রদান করতে হবে। সময় বেধে দিতে হয় কিন্তু বিনা নোটিশে রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।

সংগঠনটির মহাসচিব বলেন, এই প্রথম আমরা রাজউকের এফ ১ ও এফ ২ বিষয়টি শুনেছি। রাজউক যে নৈরাজ্য চালাচ্ছে তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। রাজউকের এফ ১ ও এফ ২ এর নামে যে নৈরাজ্য চলছে তা সঠিক নয়। রাজউক যে উদ্দেশ্যে ভবন নির্মাণের অনুমতি দিয়েছিল, সেইভাবে যদি ভবনটি ব্যবহার না হয় তাহলেও আইন অনুযায়ী কমপক্ষে ১২ মাসের সময় দিয়ে নোটিশ দিতে হবে।

রেস্তোরাঁ সেক্টরটি ক্ষতিগ্রস্ত সেক্টর উল্লেখ করে তিনি বলেন, করোনাকালীন সময়ে সরকারি কোনো প্রণোদনা বা কোনো রকমের সহায়তা আমরা পাইনি। এর পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির জন্য ব্যবসায়ীকভাবে এই সেক্টরটি পিছিয়ে পরে। অনেক চেষ্টা করে ঘুরে দাড়াতে চাচ্ছে এই সেক্টরটি কিন্তু হঠাৎ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আবার ভয়াবহ সঙ্কটে এই সেক্টর। রমজানের মধ্যেও শ্রমিক কর্মচারীদের গ্রেপ্তার ও রেস্তোরাঁ অভিযান বন্ধ হয়নি। এছাড়া নীতিবাচক প্রচার-প্রচারণার প্রেক্ষিতে রেস্তোরাঁয় গ্রাহক আসা কমে গেছে। রাতারাতি এই সেক্টর গড়ে উঠেনি। নানা ধরনের লাইসেন্স বা অনুমতি নিয়ে এবং সরকারকে ভ্যাট, ট্যাক্স দিয়ে এই সেক্টর গড়ে উঠেছে।

প্রায় ১২টি সংস্থা রেস্তোরাঁ শিল্পটি মনিটরিং করে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা বিজিএমইএ এর আদলে রেস্তোরা সেক্টরকে যুগোপোযুগী ও কর্মমুখী করে এগিয়ে নিতে চাই। এখন সময় এসেছে রোস্তোরাঁয় হয়রানি বন্ধ করে খুলে দেওয়ার। রেস্তোরাঁ যদি বন্ধ থাকে তাহলে রেস্তোরাঁর মালিক কিভাবে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরকে বেতন ভাতা ও বোনাস প্রদান করবে? আইনি নোটিশ, গ্রেপ্তার ও প্রতিষ্ঠান বন্ধের মাধ্যমে রেস্তোরাঁ সেক্টরে যে অবিচার ও জুলুম চলছে তা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। এই পরিস্থিতিতে সঙ্কট উত্তরণের কোনো নির্দেশনা না দিয়ে গ্রেপ্তার ও রেস্তোরাঁ বন্ধের মাধ্যমে কোনো সুফল বয়ে আসবে না। ফায়ার সেফটি ও নিরাপদ খাদ্যের বিষয়ে এসওপি প্রদান করা যেতে পারে।

সঙ্কট সমাধানে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন টাস্কফোর্স গঠন করার প্রস্তাব দিয়ে ইমরান হাসান বলেন, এ সঙ্কট উত্তোরণের রাস্তা বের করতে হবে। মাথা ব্যথা হয়েছে বলে মাথা কাটা যাবে না। ঝুঁকিপূর্ণ ও অতি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো চিহ্নিত করা যেতে পারে। বিশেষজ্ঞদের নিয়ে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন টাস্কফোর্স গঠন করা যেতে পারে। টাস্কফোর্স এর মাধ্যমে অগ্নিকাণ্ডের কারণগুলো চিহ্নিত করতে হবে। সে অনুযায়ী টাস্কফোর্স নির্দিষ্ট একটি এসওপি তৈরি করবে। দেশের সব রেস্টুরেন্ট সেবাকে একটি সংস্থার অধীনে এনে লাইসেন্স প্রদান করা যেতে পারে।

তিনি বলেন, আমরা একই ব্যবসার জন্য একাধিক সংস্থার নিকট যেতে চাই না, এতে আমাদের খরচ ও হয়রানি দুটাই বৃদ্ধি পায়।

একইসঙ্গে সঙ্কট সমাধানে প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা প্রত্যাশার কথাও বলেন তারা।

এর আগে গত ৫ মার্চ এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, রাজধানীতে কয়েকদিনের অভিযানে প্রায় ৪০টির মতো রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার জন্য তার কার্যালয়ে সংগঠনটি চিঠি পাঠিয়েছে বলেও জানানো হয়।

গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানী ঢাকার বেইলি রোডের একটি রেস্টুরেন্ট ভবনে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডে কমপক্ষে ৪৬ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া গুরুতর আহত হয়েছেন আরও অন্তত ২২ জন।

 


আরও খবর



বেপরোয়া হয়ে উঠেছে স্বর্ণ চোরাচালান চক্র

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২৭ মার্চ ২০২৪ |

Image

দেশের সীমান্ত ও বিমানবন্দর ঘিরে ক্রমেই সক্রিয় হয়ে উঠেছে স্বর্ণ চোরাচালান চক্র। মাঝেমধ্যে এসব চক্রের দুয়েকজন পাচারকারী ধরা পড়লেও বরাবরই অধরা রয়ে যাচ্ছে চক্রের সঙ্গে জড়িত হোতারা। অভিযোগ উঠেছে পেশাগত দায়িত্ব পালনের আড়ালে স্বর্ণ পাচার করছেন শাহজালাল বিমানবন্দরে কর্মরত এক শ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারী। তারা সিভিল অ্যাভিয়েশনের নিরাপত্তা পাস গলায় ঝুলিয়ে পেশাদার চোরাকারবারিদের সঙ্গে জড়িত। ফলে মামলা তদন্তে কাস্টমস ও এপিবিএনের দেওয়া আসামির বাইরে জড়িত কাউকে শনাক্ত করতে পারছে না পুলিশ। এতেও বরাবরের মতো আড়ালেই থাকছে হোতারা।

জানা যায়, গত শনিবার বিমানবন্দরে ৫ কোটি টাকা মূল্যের ৪০টি স্বর্ণবারসহ নভোএয়ার এয়ারলাইন্সের কর্মীসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করে এপিবিএনের সদস্যরা। এ ঘটনায় এপিবিএন বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় স্বর্ণ চোরাচালান আইনে মামলা করে। এ ছাড়া একই দিন বিমানবন্দরে চোরাচালান চক্রের আরো ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। চক্রটির হেফাজত থেকে জব্দ করা হয় প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা মূল্যের স্বর্ণের পাউডার, স্বর্ণবার ও স্বর্ণালংকার। এ ঘটনায় ঢাকা কাস্টম হাউসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা শ্যামল কুমার দাস বাদী হয়ে চক্রটির বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় মামলা করেন।

দুই মামলায় গ্রেপ্তার আট আসামি হলো নভোএয়ার এয়ারলাইন্সের গাড়িচালক মো. হেলাল, রিসিভার কামাল হোসেন এবং স্বর্ণ চোরাচালান চক্রের সদস্য কামরুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান, সাইদুল ইসলাম, নাঈম উদ্দিন, রফিকুল ইসলাম ও রাকিবুল ইসলাম। পুলিশ জানায়, গত রবিবার ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আসামিদের আদালতের তোলা হয়। এ সময় শুনানি শেষে প্রত্যেকের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালাত। বিমানবন্দর থানার ওসি ইয়াসির আরাফাত খান বলেন, রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে আসামিদের দেওয়া তথ্য খতিয়ে দেখা হবে। স্বর্ণ পাচারে বিমানবন্দরের কোনো সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীর জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।

এ বিষয়ে এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্বর্ণ চোরাচালান প্রতিরোধে আমরা কাজ করছি। সেই ধারাবাহিকতায় বেসরকারি এয়ারলাইন্স নভোএয়ারের গাড়িচালক মো. হেলালকে নজরদারিতে রেখেছিল বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন ও এনএসআই। নভোএয়ারের গাড়িচালক মো. হেলাল অন্য দিনের মতো ডিউটিতে আসেন। এরপর অভ্যন্তরীণ টার্মিনালের আগমনী গেট দিয়ে বের হন। এপিবিএন ও এনএসআইয়ের গোয়েন্দারা তাকে নজরদারিতে রাখেন। হেলালকে ডমেস্টিক টার্মিনালের ড্রাইভওয়ে থেকে একজন সহযোগীসহ অটোরিকশায় উঠতে দেখা যায়। পরে বিমানবন্দরের বঙ্গবন্ধু ম্যুরালের সামনে তাদের গতিরোধ করেন এপিবিএনের গোয়েন্দা সদস্যরা। এ সময় তল্লাশি করে তাদের কাছ থেকে ৪০টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় মামলা হয়েছে। প্রতি মাসে গড়ে কতটি চালান ধরা পড়ে- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, এটা সঠিকভাবে বলা কঠিন। তবে মাসে গড়ে ৫-৬টি চালান ধরা পড়ার রেকর্ড রয়েছে।

এর আগে ২ ফেব্রুয়ারি বিমানবন্দরে সাড়ে ৩ কেজি স্বর্ণসহ দুবাইফেরত যাত্রী এম মাসুদ ইমামকে আটক করেন শুল্ক গোয়েন্দারা। রাত পৌনে ১১টায় দুবাই থেকে ঢাকায় আসা ওই যাত্রীকে ১০ নম্বর বোর্ডিং ব্রিজে যুক্ত হওয়ার পর বিমান থেকে আটক করা হয়। জব্দ স্বর্ণগুলোর বাজারমূল্য ৩ কোটি ১৪ লাখ ৮২ হাজার টাকা। গত ২০ ডিসেম্বর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক নারী যাত্রীর ব্যাগ থেকে স্বর্ণের ৬৯টি বার ও ১টি স্বর্ণের চেইন জব্দ করেন শুল্ক গোয়েন্দারা। এর আগে ৮ ডিসেম্বর শাহজালালে ৪ কোটি ৪১ লাখ টাকা মূল্যের ৪৯টি স্বর্ণের বারসহ এক যাত্রীকে আটক করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। ওই যাত্রীর নাম ফজলে রাব্বী। তিনি দুবাই থেকে ঢাকায় এসেছিলেন। এর আগে স্বর্ণের বড় একটি চালান ধরা হয় গত বছরের জুলাই মাসে। সেই সময় বিমানের সিটের নিচ থেকে প্রায় ২৬ কেজি স্বর্ণ উদ্ধার করেন শুল্ক গোয়েন্দারা। তারা জানান, একটি গোয়েন্দা সংস্থার গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ফ্লাইটে অভিযান চালানো হয়। ফ্লাইটটির ১১টি আসনের নিচে নীল রঙের স্কচটেপ মোড়ানো অবস্থায় ৯৮টি ডিম্বাকৃতির স্বর্ণের পেস্ট পাওয়া যায়। সেই সময় জব্ধ করা স্বর্ণের মালিক পাওয়া যায়নি।

এদিকে, বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি জানান, যশোর উপশহর এলাকায় একটি প্রাইভেট কার থেকে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম ওজনের ৩২ পিস স্বর্ণের বার উদ্ধার করেছে যশোর জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। উদ্ধারকৃত স্বর্ণের আনুমানিক বাজার মূল্য ৪ কোটি টাকা। গতকাল সোমবার বিকেল ৩টার দিকে ডিবি পুলিশের অভিযানে স্বর্ণের বারসহ আটক পাচারকারী দুই ব্যক্তির নাম শহিদুল্লাহ ও সুমন। তাদের দুজনের বাড়ি শার্শা উপজেলায়। যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসাইন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তারা জানতে পারে ঢাকা থেকে বেনাপোল সীমান্তের উদ্দেশে একটি প্রাইভেট কারে স্বর্ণের চালান নিয়ে আসছে। এমন সংবাদে উপশহর এলাকায় ডিবি পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ওঁত পেতে ছিলেন। সন্দেহজনক প্রাইভেট কার নিউমার্কেট এলাকায় পৌঁছলে পুলিশ গতিরোধ করে। গাড়িতে থাকা দুজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাদের স্বীকারোক্তিতে গাড়িতে লুকিয়ে রাখা বিভিন্ন জায়গা থেকে তিন আকৃতির ৩২ পিস স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়। আটকদের বিরুদ্ধে আগের কোনো মামলা আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, ২০১৩ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সারা দেশে অভিযান চালিয়ে ২ হাজার ৫৮৩ কেজি স্বর্ণ জব্দ করা হয়েছে। এসব অভিযানে অংশ নেয় শুল্ক গোয়েন্দা, কাস্টমস হাউস, বিজিবি ও এয়ারপোর্ট এপিবিএন। গত বছরের ১২ জুন শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ডাস্টবিন থেকে ৭ কেজি স্বর্ণ জব্দ করা হয়। আটক করা হয় এক পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানায়, দক্ষিণ এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে আসা বারগুলো প্রধানত শাহজালাল ও চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে দেশে প্রবেশ করে। যেসব বাংলাদেশি স্বর্ণ বহন করেন দুবাই থেকেই তাদের ও তাদের একজন স্বজনের ফোন নম্বর, পাসপোর্টের কপি, বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা, এনআইডির ফটোকপি রেখে দেওয়া হয়। প্রবাসীরা প্লেন থেকে নামার পর প্রথমে যান কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাউন্টারে। সেখানে গিয়ে বারের ট্যাক্স দিয়ে রসিদ নেন। বার বৈধ করার সঙ্গে সঙ্গেই বাংলাদেশি ডিলারের প্রতিনিধি বিমানবন্দরের আশপাশ থেকে রসিদসহ স্বর্ণ বুঝে নেন।

শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মতে, বিদেশ থেকে স্বর্ণ দেশে আসার পর মূলত দুটি জায়গায় যায়। প্রথমত, বাংলাদেশের স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা এটা কিনে নেন। দ্বিতীয়ত, ভারতে পাচার করা হয়। বিশ্বে স্বর্ণের দ্বিতীয় বৃহত্তম ভোক্তা দেশ ভারত। সূত্র জানায়, ২০১৩ সালের ২৪ জুলাই বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় স্বর্ণের চোরাচালান আটক করেছিলেন শুল্ক গোয়েন্দারা। এদিন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটের কার্গো হোল্ড থেকে ১২৪ কেজি স্বর্ণ জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় মামলা হয়। তদন্ত শেষে ওই বছর বিমানের ১০ কর্মীসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গত ১০ বছরেও এ মামলার বিচার কার্যক্রম শেষ হয়নি। আসামিরাও জামিনে রয়েছেন। ২০১৪ সালেও বিমানের এক ফ্লাইটের টয়লেটে লুকিয়ে রাখা ১০৬ কেজি স্বর্ণ জব্দ করা হয়। এটা ছিল জব্দ হওয়া দ্বিতীয় বৃহত্তম স্বর্ণের চালান। এ ঘটনার ৩ বছর পর আদালতে চার্জশিট জমা দেয় ডিবি। তবে এখনো শাস্তি হয়নি কারো। শুধু এ দুটি নয়, নিম্ন আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ঢাকায় স্বর্ণ জব্দের ঘটনায় ১৮৭ মামলা আদালতে বিচারাধীন।

চলতি বছর ১৩ জানুয়ারি চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে পরিত্যক্ত অবস্থায় স্বর্ণের চোরাচালান ধরা পড়ে। এ চালানে প্রায় ৪ কেজি ৫৪০ গ্রাম স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়েছে, যার বাজারমূল্য ৩ কোটি ৮৯ লাখ ৭১ হাজার ৩৬০ টাকা। জানতে চাইলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ বিভাগের ব্যবস্থাপক মো. আল মাসুদ খান বলেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স শুধু যাত্রী বহন করে। কিন্তু স্বর্ণ চোরাচালানের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে হলে যারা চেকিং করে তাদের ওপর নজরদারি বাড়াতে হবে। এয়ারলাইন্সে কাজ করা কর্মীদের সম্পৃক্ততার বিষয়ে তিনি বলেন, বিমানবন্দরে ২০ থেকে ৩০টি সংস্থা কাজ করে। এখানে যে চুরি করে, সে চুরিই করবে। তাকে তদন্ত করে আইনের আওতায় আনতে হবে।

 


আরও খবর



রূপগঞ্জে প্রাইভেটকার চাপায় গৃহবধু নিহত

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ |

Image

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের পূর্বাচলে কাঞ্চন- কুড়িল বিশ্বরোড সড়কে ( শেখ হাসিনা সরনি) প্রাইভেটকার চাপায় গৃহবধু আমেনা বেগম(৪০) নিহত হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে প্রাইভেটকারের চালককে আটক করেছে। জব্দ করা হয়েছে প্রাইভেটকারটি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সড়কের ব্রাক্ষ্মণখালী এলাকায় এ মর্মান্তিক দূর্ঘটনা ঘটে।

নিহত আমেনা বেগম স্থানীয় ব্রাক্ষ্মণখালী এলাকার কাচাঁমাল ব্যবসায়ী শাহজাহান মিয়ার স্ত্রী।

নিহতের পরিবারের বরাত দিয়ে রূপগঞ্জ থানার ওসি দিপক চন্দ্র সরকার জানান, সন্ধ্যার সময় শাহজাহানের স্ত্রী আমেনা বেগম বাড়ী পাশে  লেকেরপাড় থেকে ছাগল নিয়ে বাড়ী ফিরছিল। এসময় কাঞ্চন- কুড়িল বিশ্বরোড সড়ক পারাপারের সময় কুড়িল থেকে আসা দ্রুতগতির একটি প্রাইভেটকার তাকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলে মারাযান তিনি। খবর পেয়ে  র‍্যাবের সহায়তায় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করেন। জব্দ করেন প্রাইভেটকারটি। আটক করে প্রাইভেটকার চালককে। 


আরও খবর



দেশে ৪.৫ কোটি মানুষ নিরাপদ পানি পায় না

প্রকাশিত:শুক্রবার ২২ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ |

Image

দেশের প্রায় সাড়ে চার কোটি মানুষ এখনও নিরাপদ পানি থেকে বঞ্চিত পানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নদী দূষণের কারণে দেশে পানির সঙ্কট আরও বাড়ছে নদীর পানি ব্যবহৃত না হওয়ায় প্রতি বছর মাটির নিচ থেকে ৮৬ ভাগ পানি তুলতে হচ্ছে তারা জানান, উন্নত দেশ হতে হলে ভূগর্ভস্থ পানির উপর চাপও কমাতে হবে আবার শতভাগ মানুষের পানির সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে

জীবন ধারণের জন্য যে পানি প্রয়োজন, তা ক্রমেই সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। পানি আমাদের জীবনের একটি বিশেষ উপাদান। পানির অপর নাম জীবন। জন্মের পর থেকে পৃথিবীতে টিকে থাকার জন্য আমরা নানাভাবেই পানির ওপর নির্ভরশীল। বর্তমানে আমাদের দেশে সুপেয় পানি পাওয়া অনেকটা চ্যালেঞ্জ হয়ে গেছে। সুপেয় পানি ছাড়া জীবন রক্ষা নয়, তাই পানিই মৃত্যু ঝুঁকির কারণ হয়ে উঠছে।


পৃথিবীর তিন-চতুর্থাংশই পানি। তবুও বিশুদ্ধ ও নিরাপদ পানির জন্য আমাদের অনেক বেগ পেতে হয় তা সকলের জানা। ভূপৃষ্ঠের ৭০.৯% অংশ জুড়ে পানির অস্তিত্ব রয়েছে। পৃথিবীতে প্রাপ্ত পানির ৯৬.৫% পাওয়া যায় মহাসাগরে। তবে পৃথিবীর পানির মাত্র ৩ ভাগ মিস্টি পানি আর ৯৭ ভাগ লবনাক্ত পানি। পানির প্রাচুর্যের কারণে অধিকাংশ মানুষই সচেতন কিংবা অসচেতনভাবেই পানি অপচয় করে থাকে। যদি পানির একটি ট্যাপ থেকে প্রতি সেকেণ্ডে এক ফোটা করে পানি পড়ে তবে বছরে তিন হাজার গ্যালন পানি অপচয় হবে। এক গ্যালন পানির ওজন ৮.৩৪ পাউণ্ড। মাত্র ৫ মিনিটে একটি শাওয়ার থেকে ১০ থেকে ২৫ গ্যালন পানি ব্যবহার করা যায়। আর গোসল করতে প্রায় ৭০ গ্যালন পানির প্রয়োজন হয়।


বিশ্বজুড়েই নিরাপদ পানির সমস্যা রয়েছে। বিশ্বে প্রতি ৪ জন মানুষের একজন নিরাপদ পানির অভাবে ভুগছে। দেশের ৪১ শতাংশ মানুষ এখনো নিরাপদ পানি সুবিধা থেকে বঞ্চিত। বাড়িতে নিরাপদ স্যানিটেশন সুবিধা পায় না ৬১ শতাংশ মানুষ। সারাবিশ্বের ২ বিলিয়ন মানুষ এখনো নিরাপদ পানীয় জলের অভাবে রয়েছেন। ৩ দশমিক ৬ বিলিয়ন মানুষ নিরাপদ স্যানিটেশনের অভাবে আছেন এবং ২ দশমিক ৩ বিলিয়ন মানুষ মৌলিক স্বাস্থ্যবিধি থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের তথ্যমতে, বিশ্বে প্রায় ৭৭ কোটিরও বেশি মানুষ তাদের বাড়ির আশপাশে নিরাপদ পানির সুবিধা থেকে বঞ্চিত। আর প্রতিবছর অনিরাপদ পানি ও দুর্বল পয়োনিষ্কাশনের জন্য প্রায় ১০ লাখেরও বেশি মানুষ মারা যায়।


পানি একটি অত্যন্ত মূল্যবান সম্পদ। পৃথিবীর মধ্যে যে প্রাকৃতিক সম্পদ আছে তার মধ্যে ভূগর্ভস্থ পানি অন্যতম। ভূগর্ভস্থ পানি দৃশ্যমান নয়, কিন্তু এর প্রভাব সর্বত্র বিদ্যমান। ভূগর্ভস্থ পানি আমাদের সুপেয় পানির সবচেয়ে বড় উৎস। ভূগর্ভস্থ পানি পানীয় জল সরবরাহ, স্যানিটেশন ব্যবস্থা, কৃষিকাজ, শিল্প ও বাস্তুতন্ত্র বজায় রাখে। এদিকে, মানুষের পানির চাহিদা প্রতিনিয়ত বাড়ায় ভূগর্ভস্থ পানির অতিরিক্ত ব্যবহার হচ্ছে। পৃথিবীর পানির মাত্র ৩ ভাগ স্বাদু পানি। আর বিশ্বব্যাপী স্বাদু পানির ৭২ শতাংশই ব্যবহৃত হয় কৃষি কাজে।

বাস্তুতন্ত্রের অবক্ষয়, জলবায়ু পরিবর্তন ও অন্যান্য কাজে ব্যাপকভাবে পানি ব্যবহারের কারণে কৃষিকাজে পানির প্রাপ্যতা হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে।বাংলাদেশে কৃষি, শিল্প ও গৃহস্থালি কাজগুলো মূলত ভূগর্ভস্থ পানির ওপর অনেকটা নির্ভরশীল। পানির স্তর নিচে নেমে গেলে নিরাপদ পানীয় জল নাগালের বাইরে চলে যাবে। দেশে ভূগর্ভস্থ পানির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নদী ভাঙন রোধ, ভূমি পুনরুদ্ধার, জলাবদ্ধতা দূরীকরণে আওয়ামী লীগ সরকার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে, যা দেশের জনসাধারণের জীবনমান উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে।


দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে সুপেয় পানির সংকট দীর্ঘদিনের। ঘূর্ণিঝড় সিডর ও আইলা প্রলয়ের পর এই সংকট আরো তীব্র হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে পানির উৎসগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। এখনো পুরোপুরি আগের অবস্থায় ফিরতে পারেনি। দেশের উপকূলীয় এলাকায় টেকসই বেড়িবাঁধের অভাবে লবণাক্ত পানিতে সয়লাব হচ্ছে জনপদ। এতে পরিবেশ ও বসতি ধ্বংসের পাশাপাশি সুপেয় পানির সংকট তীব্র হয়ে উঠছে। উপকূলের মাটি ও পানিতে লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়ায় ক্রমে সংকুচিত হচ্ছে বিশুদ্ধ পানির উৎস। লবণাক্ততার এই আগ্রাসন শুধু ভূ-উপরিস্থ পানি নয়, ভূগর্ভস্থ উৎসেও ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে নানা রোগ-ব্যাধি এ অঞ্চলের জনস্বাস্থ্যকে হুমকিতে ফেলছে। উপকূলে বিশুদ্ধ পানির কষ্ট প্রকট হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এলাকার নলকূপের পানি লবণাক্ত ও আর্সেনিক। নিত্যব্যবহার্য কাজে লবণাক্ত পানি ব্যবহারের কারণে ছড়িয়ে পড়ছে রোগব্যাধি। পেটের পীড়া, অ্যালার্জিসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে নারী, শিশু থেকে বৃদ্ধসহ সব বয়সের মানুষ। বিশুদ্ধ পানির জন্য গ্রামের বাসিন্দাদের ছুটতে হচ্ছে দূরদূরান্তে।


বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে, দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। এর প্রভাবে বিশুদ্ধ পানির উৎসগুলো দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। বনজঙ্গল ধ্বংস করার ফলে প্রকৃতি ও পরিবেশ মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত হচ্ছে। গত অর্ধ শতাব্দী জুড়ে পৃথিবী থেকে কার্বনের উৎক্ষেপন বেড়ে গেছে কয়েকগুণ, বেড়েছে উষ্ণতা। সেই সাথে শিল্প ও রাসায়নিক বর্জ্য দূষণ সৃষ্টি করছে নদী এবং সাগরে। বিশ্বের সকল দেশেই বিশুদ্ধ পানি সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, বেড়িবাঁধ ভাঙন, অধিক বৃষ্টি ও অনিয়মিত বৃষ্টি, খরা ও লবণাক্ততা বৃদ্ধির ফলে দেশের দক্ষিণ উপকূল খাদ্য ও কৃষি উৎপাদনে চরম সংকটে পড়েছে। তাছাড়া অপরিকল্পিত চিংড়ি চাষের কারণে লবণাক্ততার মাত্রা আরও বাড়ছে। অনাবৃষ্টি আর খরায় দেশের প্রাণীকুল, ফসলের ক্ষেতে পড়ছে বিরুপ প্রভাব।


জীবজগতে পানির প্রভাব অপরিসীম। পানি ছাড়া পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব থাকতো না। একজন মানুষ পানি ছাড়া গড়ে মাত্র তিন দিন বেচে থাকতে পারে। মানুষের অপরিহার্য প্রয়োজনীয় পদার্থ হল পানি। তাই পানির আরেক নাম জীবন। তবে পানি হলেই হবে না, সেটা হতে হবে বিশুদ্ধ পানি। বিশুদ্ধ পানির প্রধান উৎস ভূগর্ভস্থ নলকূপের পানিতে  আর্সেনিকের উপস্থিতি বাড়ছে। দেশের ৬১ জেলার নলকূপের পানিতে রয়েছে আর্সেনিক। আর্সেনিক আক্রান্ত পানি ব্যবহার করলে মানবদেহে মারাত্মক রোগ হতে পারে।


ভুগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় বিশুদ্ধ পানির সংকট তীব্র হচ্ছে দিন দিন। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ার এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে মারাত্মক বিপর্যয় সৃষ্টি হবে নিঃসন্দেহে। শুধু তাই নয়, ভূগর্ভস্থ পানির উৎসও দিন দিন সংকোচিত হচ্ছে। এছাড়া, শুষ্ক মওসুমে দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় নলকূপে পানি ওঠে না। বিশুদ্ধ পানীয় জলের অভাব দেখা দেয়। নদ-নদী, পুকুর-ডোবা, জলাশয়, হাওর-বাওর, খাল-বিল শুকিয়ে যায়।

 গত চার দশকে দেশের জলাভূমি কমেছে কমপক্ষে ৬৫ লাখ হেক্টর। স্বাধীনতার পর এ পর্যন্ত দেশের ৭০ ভাগ জলাভূমি কমেছে। শুকিয়ে যাচ্ছে নদ নদীও। সারাদেশে কমপক্ষে আট হাজার কিলোমিটার নদীপথ ইতোমধ্যেই হারিয়ে গেছে। এককালের খরস্রোত নদী এখন অস্তিত্ব সংকটে রয়েছে ।


বাংলাদেশ নদীমাতৃক ও কৃষি নির্ভর। দেশের খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন ও সামগ্রিক উন্নয়নে সঠিক ও পরিকল্পিত পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনার ভূমিকা অপরিসীম। আমাদের জীবন রক্ষায় সকলের জন্য অঙ্গীকার হওয়া উচিত বিশুদ্ধ পানির নিশ্চয়তায় নদ নদী, হাওর,খাল, বিল, জলাশয়, পুকুর-ডোবা  ভরাট হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে হবে। পানি যাতে দূষিত না হয় সেই উদ্যোগ নেওয়ার পাশাপাশি পানিকে আর্সেনিকমুক্ত করার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা রাখতে হবে।

ভূ-গর্ভস্থ পানির উত্তোলন কমিয়ে ভূ-পৃষ্ঠের পানি গৃহস্থালীসহ অন্যান্য কাজে যাতে সর্বাধিক ব্যবহার করা যায়, সেদিকে নজর দিতে হবে। সমুদ্র ও নদ-নদীকেও দূষণের কবল থেকে মুক্ত করতে হবে। শিল্প ও রাসায়নিক বর্জ্য যাতে নদী এবং সাগরে না ফেলা হয়, তার ব্যবস্থা করতে হবে।পানির অপচয় রোধ করতে হবে। এ ব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টি করা প্রয়োজন। যেন সবার জন্য বিশুদ্ধ পানির প্রাপ্তি সহজলভ্য হয়।


আরও খবর