Logo
শিরোনাম

আইসিসির কাছে নালিশ জানাবে পিসিবি

প্রকাশিত:শনিবার ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

ইয়াশফি রহমান : খেলার মাঠে দুই দলের তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বীতা হলে সেখানে উত্তেজনা ছড়াবেই- এটাই যেন অলিখিত একটি নিয়ম। তবে, যাই ঘটুক, সবই থাকবে সীমার মধ্যে। অখেলোয়াড়োচিত কোনো আচরণ কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়।

মঙ্গলবার আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানের মধ্যকার ম্যাচের উত্তেজনা অনেকটাই সীমা লঙ্ঘণ করে গেছে। আফগান পেসার ফরিদ আহমেদের দিকে তেড়ে গেলেন পাকিস্তানি ব্যাটার আসিফ আলি। শুধু তাই, তাকে ব্যাট দিয়ে পেটাতেও উদ্যোগি হতে দেখা গেছে আসিফ আলিকে।

যদিও শেষ পর্যন্ত কোনো আনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা আর ঘটেনি। অন্য ক্রিকেটাররা এসে মাঝে দাঁড়িয়ে যান এবং দু’জনকে ছাড়িয়ে নেন। মাঠের এই ঘটনার রেশ গিয়ে পড়েছে গ্যালারিতেও। সেখানে আফগান সমর্থকদের বেশ উত্তেজিত হতে দেখা যায় এবং পাকিস্তানি সমর্থকদের ওপর হামলে পড়তেও দেখা যায়।

এসব বিষয় নিয়ে, বিশেষ করে গ্যালারিতে আফগান সমর্থকদের হামলার ঘটনার বিষয়ে আইসিসির কাছে লিখিত অভিযোগ জানাবে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। পিসিবি চেয়ারম্যান রমিজ রাজাই জানিয়েছেন এ তথ্য।

মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে রমিজ রাজা বলেন, ‘আপনি সন্ত্রাসী কার্যকলাপকে ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্ত করতে পারেন না। আর এ ধরনের পরিবেশ আপনাকে অসুস্থ করে তুলবে। আমরা আইসিসিকে লিখিতভাবে জানাব, নিজেদের উদ্বেগের কথা তুলে ধরব। যা করা সম্ভব করব। কারণ, দৃশ্যগুলো ছিল বীভৎস।’

এবারই প্রথম এমন কিছু ঘটেনি জানিয়ে রমিজ বলেন, ‘এমন কিছু এবারই প্রথম ঘটেনি। হার ও জিত খেলারই অংশ। এটা তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ লড়াই ছিল। কিন্তু আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত। পরিবেশ ভালো না থাকলে ক্রিকেট খেলুড়ে দেশ হিসেবে আপনি কখনো এগিয়ে যেতে পারবেন না। 


আরও খবর



কোপা আমেরিকার আগেই মেসির আর্জেন্টিনার নতুন জার্সি

প্রকাশিত:বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

মনির হোসেন : যদি বলি লিয়োনেল মেসি কি কোপা আমেরিকায় খেলবেন?

উত্তর হয়তো হ্যাঁ। কোপার আগে আর্জেন্টিনার নতুন জার্সি প্রকাশের ভিডিও-তে দেখা গিয়েছে মেসিকে। তা দেখেই আশায় বুক বাঁধছেন সমর্থকেরা। আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় জানানোর আগে অন্তত আরও একটি ট্রফি নিজের শোকেসে হয়তো রাখতে চাইছেন মেসি।

আর্জেন্টিনার নতুন জার্সি অ্যাডিডাসের। ভিডিও-তে মেসি ছাড়াও অ্যাঞ্জেলা দি মারিয়া, ইউলিয়ান আলভারেস, অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার, এঞ্জো ফের্নান্দেস, এমিলিয়ানো মার্তিনেস, পারেদেসদের দেখা গিয়েছে। তাঁরা প্রত্যেকে নিজেদের নতুন জার্সি পরে আনন্দিত। আরও এক বার তারা দলকে জেতাতে বদ্ধ পরিকর।

নতুন জার্সিতে কিছু বদল হয়েছে। আকাশি-সাদা জার্সিতে বুকের বাঁ দিকে রয়েছে আর্জেন্টিনা ফুটবল সংস্থার লোগো এবং  সেখানে আরো একটি তারা যুক্ত হয়েছে।২০২২ সালের বিশ্বকাপ জেতায় তিনটি তারা দেখা যাচ্ছে সেখানে। বুকের ডান দিকে রয়েছে অ্যাডিডাসের লোগো। আর মাঝে বিশ্বকাপ জয়ের চিহ্ন।

হোম জার্সির পাশাপাশি অ্যাওয়ে জার্সিও প্রকাশ করা হয়েছে। অ্যাওয়ে জার্সি নীল রঙের। বুকের লোগোগুলি করা হয়েছে হাল্কা নীল রং দিয়ে। ঘাড়ের কাছে হাল্কা নীল রঙের তিনটি স্ট্র্যাপ রয়েছে। এই জার্সিটিও দর্শকদের মনে ধরেছে।

২১ জুন প্রথম ম্যাচে আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে খেলবে যোগ্যতা অর্জনকারী দল। তাদের পরের খেলা ২৬ জুন। প্রতিপক্ষ চিলি। ৩০ জুন গ্রুপের শেষ ম্যাচে পেরুর বিরুদ্ধে খেলতে নামবে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নেরা।


আরও খবর



থামানো যাচ্ছে না কিশোর গ্যাং

প্রকাশিত:সোমবার ১৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

বাংলাদেশ পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বিভিন্ন বাহিনী নানা উদ্যোগ নিলেও কিশোর গ্যাং এর তৎপরতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। বড় শহরগুলোর গণ্ডি ছড়িয়ে এ সমস্যা এখন বিস্তৃত হচ্ছে জেলা ও উপজেলা পর্যায়েও। এমনকি অনেক জায়গায় একাধিক কিশোর গ্যাং একে অন্যের সাথে সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ছে।

গত শুক্রবার চট্টগ্রামে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আহত হওয়া চিকিৎসক কোরবান আলী বুধবার মারা গেছেন। ছেলেকে ওই গ্যাংয়ের হামলা থেকে বাঁচাতে গিয়ে নিজেই হামলার শিকার হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন মি. আলী।

পুলিশ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছে মূলত কিছু রাজনৈতিক নেতার পৃষ্ঠপোষকতাই কিশোর গ্যাং সংস্কৃতি ছড়িয়ে দেয়ার জন্য দায়ী। মাদক বাণিজ্য, চাঁদাবাজি এবং স্থানীয় পর্যায়ে কর্তৃত্ব তৈরির জন্য এলাকার শিশু কিশোরদের নিয়ে গ্যাং তৈরি করে নিজ স্বার্থে ব্যবহার করেন ওই ধরনের নেতারা।

পুলিশ প্রতিনিয়ত ব্যবস্থা নিচ্ছে। বছরে ৪/৫শ আটক হচ্ছে। মামলা হচ্ছে। সংশোধনাগারে দেয়া হচ্ছে অনেককে। কিন্তু শিশু কিশোরদের নিয়ে এ ধরনের কিশোর গ্যাং তারপরও বন্ধ হচ্ছে না মূলত কথিত কিছু বড় ভাই ও কিছু পলিটিক্যাল নেতার কারণে, বলছিলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মুখপাত্র ফারুক হোসেন। অন্যদিকে সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. তৌহিদুল হক বলছেন, রাজনৈতিক প্রক্রিয়া ও সমাজ ব্যবস্থায় ঘাটতির কারণেই কিশোর অপরাধ বা গ্যাংয়ের নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।

বুধবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ চট্টগ্রামেই সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় বলেছেন কিশোর গ্যাংগুলোর পেছনে যাদের মদদ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

দেশে এটি (কিশোর গ্যাং) নতুন সমস্যা, এটিকে দূরীভূত করার জন্য সরকার কাজ করছে। কিশোর গ্যাংয়ের নেপথ্যে যেই থাকুক বা সে যে দলেরই হোক তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং হচ্ছে, বলছিলেন তিনি।

এর আগে মন্ত্রিসভার বৈঠকেও আলোচনায় এসেছে কিশোর গ্যাং ইস্যুটি এবং এ নিয়ে কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

ওই বৈঠকের পর মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, কিশোর অপরাধীদের সংশোধনে প্রয়োজনীয়উদ্যোগ নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন সরকার প্রধান

কিশোর গ্যাংয়ে সংখ্যা কত? কারা জড়িত হচ্ছে?


বাংলাদেশ রাজধানী ঢাকার উত্তরায় ২০১৭ সালে স্কুল শিক্ষার্থী আদনান খুনের ঘটনায় প্রথমবারের মতো ব্যাপকভাবে আলোচনায় এসেছিলো কিশোর গ্যাং সংস্কৃতি। এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে তখন বেশ কয়েকজন কিশোরকে আটক করেছিলো র‍্যাব যারা একই গ্রুপের সদস্য ছিল।

সে সময় আলোচনায় এসেছিলো উত্তরা ডিসকো বয়েজ ও বিগ বস কিশোর গ্যাং নামের দুটো গ্রুপ।

কিন্তু এরপর থেকে নিয়মিতই ঢাকাসহ নানা জায়গায় কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা নিয়ে খবরাখবর প্রকাশ হচ্ছিলো গণমাধ্যমে।

২০১৯ সালে বরগুনায় রিফাত শরীফ নামের এক যুবককে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার পর আলোচনায় আসে 'বন্ড ০০৭' নামের একটি গ্রুপ।

ঢাকার উত্তরার ১২ নম্বরে সেক্টরে বসবাস করেন নাহিদ হোসেন। উত্তরা এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা নিয়ে প্রায়শই খবর আসে গণমাধ্যমে।

মি. হোসেন বলছেন, এরা হুট করে এসে একেকটা ঘটনা ঘটায়। আর তাতে তাৎক্ষণিক কারও ক্ষতি হয়ে যায়। যেমন কারও সাথে এদের আরও একটু কথা কাটাকাটি হলো, কিছুক্ষণের মধ্যে দেখা যাবে ৩০/৪০ জন এসে হামলা শুরু করলো

এলাকায় বস্তিগুলোতে থাকে এমন কিশোরদের পাশাপাশি পড়ালেখা করে এমন কিশোরদেরও দেখতে পাচ্ছি এসব গ্রুপগুলোতে, বলছিলেন মি. হোসেন।

কিন্তু ঢাকাসহ সারাদেশে এমন কিশোর গ্যাংয়ের সংখ্যা কত বা কত কিশোর তরুণ এ ধরনের অপরাধে জড়িত তার সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া কঠিন।

তবে ২০২২ সালে পুলিশের এক প্রতিবেদনে সারাদেশে ১৭৩টি কিশোর গ্যাং সক্রিয় থাকার তথ্য দেয়া হয়েছিলো। এতে বলা হয়েছিলো ঢাকাতেই ৬৬টি কিশোর গ্যাং সক্রিয় আছে। আর এসব দলগুলোতে ১০ থেকে ৪০/৫০ জন পর্যন্ত সদস্য আছে।

গাংচিল, ম্যাক্স পলু, বাট্টু বাহিনী, পটেটো, কবজি কাটা গ্রুপ, লাল বাহিনী- এমন সব বাহারি নামের কিশোর গ্যাংগুলোর সদস্যরা ছিনতাই, নারীদের উত্ত্যক্ত করা, জমি দখলে সহায়তাসহ নানা ধরনের অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ার তথ্য এসেছে গণমাধ্যমে।

তবে চলতি বছর জানুয়ারিতে ঢাকার মধুবাগে ব্যাডমিন্টন খেলাকে কেন্দ্র করে দু'দল কিশোরের সংঘর্ষে একজন নিহত হবার পর র‍্যাব জানায় যে ২০১৭ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সময়ে ১ হাজার ১২৬ জনকে শুধুই র‍্যাবই আটক করেছে কিশোর গ্যাংয়ের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে। এর মধ্যে ২০২৩ সালেই আটক হয়েছে প্রায় সাড়ে তিনশ।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি নানা ধরনের সচেতনতামূলক কর্মসূচিও হাতে নেয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ ও র‍্যাব।

কিন্তু তারপরও কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা বেড়েই চলেছে কেন এমন প্রশ্নের উত্তরে ডিএমপির মুখপাত্র ফারুক হোসেন বলছেন, কিছু রাজনৈতিক নেতা এ জন্য দায়ী।

তারাই কিশোর তরুণদের বিপথগামী করছে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহারের জন্য। আমরা রাজনৈতিক নেতা বিশেষ করে কাউন্সিলর ও অন্যদের সাথে নিয়মিত মতবিনিময় করছি এবং উৎসাহিত করছি যাতে কিশোর গ্যাংকে কেউ প্রশ্রয় না দেয়, বলছিলেন তিনি।

আবার অনেক মামলায় কিশোর গ্যাংয়ের বড় ভাই বা মদদদাতা হিসেবে অনুসন্ধানে যাদের নাম উঠে এসেছে তাদেরকেও আসামি করা হয়েছে, বলছিলেন তিনি।

এর আগে, পুলিশের প্রতিবেদনেও ঢাকার একুশ জন কাউন্সিলের নাম উঠে এসেছিলো কিশোর গ্যাংয়ের প্রশ্রয়দাতা হিসেবে। যদিও তাদের কারও বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো আইনি ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।

পুলিশ বলছে মূলত পাড়া মহল্লার কিশোরদের দলবদ্ধ হয়ে চলাফেরা করার যে প্রবণতা সেটিকেই ব্যবহার করে কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তি এসব গ্যাং তৈরি করেন।

১৫/১৬ বছর বা কাছাকাছি বয়সের কিশোরদের মধ্যে একটা হিরোইজম কাজ করে। সেটাকেই ব্যবহার করে কিছু ব্যক্তি তাদের ভুল পথে ঠেলে দেয়। এভাবেই তারা জড়িয়ে পড়ে নানা অপরাধমূলক কার্যক্রমে, বলছিলেন মি. হোসেন।

যদিও সমাজ ও অপরাধ বিশ্লেষক তৌহিদুল হক বলছেন কিশোর অপরাধীরা যেসব অপরাধ করে এবং এর মাধ্যমে যে অর্থ সংগ্রহ হয় তার ভাগবাটোয়ারা অনেক দূর পর্যন্ত যায় এবং এমনকি যাদের প্রতিরোধ করার কথা তারাও কেউ কেউ সুবিধা নিয়ে এসব কিশোর গ্যাংকে সুযোগ করে দেয়।

থামানো যাচ্ছে না কেন


তৌহিদুল হক বলছেন কিশোর অপরাধের ক্ষেত্রে 
বাংলাদেশ যে ব্যবস্থা নেয়া হয় সেটি একপক্ষীয় এবং সংশোধনাগারগুলোও মানসম্মত নয়, অর্থাৎ কিশোর অপরাধীদের সংশোধন করে ভালো নাগরিক করার জন্য সক্ষম নয়।

এখানে যে অপরাধ করছে শুধু তাকেই ধরা হচ্ছে। যারা কিশোরদের সংঘবদ্ধ করে অপরাধ করাচ্ছে তারা ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাচ্ছে। অর্থাৎ মদদদাতা বড় ভাই বা রাজনৈতিক নেতারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে, বলছিলেন তিনি।

যদিও পুলিশের মুখপাত্র ফারুক হোসেন বলছেন যে এর আগের মামলাগুলোর তদন্ত পর্যায়ে মদদদাতা হিসেবে যাদের নাম উঠে এসেছে তাদের মামলার আসামি করা হয়েছে।

তবে পুলিশ ও সমাজ অপরাধ গবেষকরা সবসময়ই বলে আসছেন যে পরিবারের তরুণ সদস্যদের সঠিক নির্দেশনা দেয়ার ক্ষেত্রে সব পিতা মাতা কিংবা পরিবার সবসময় ভূমিকা রাখতে পারছে না।

বিশেষ করে দরিদ্র অর্থাৎ প্রান্তিক পরিবারগুলোতে সঠিক অভিভাবকত্ব দেখা যায় না বলে সেসব পরিবারের কিশোররা সহজে ভুল পথে যায়, এমন অনেক উদাহরণের কথা জানাচ্ছেন তারা।

অনেক ক্ষেত্রে অভিভাবকের সাথে সন্তানের দূরত্ব, সঠিক নির্দেশনা বা সঠিক প্যারেন্টিং না থাকার সুযোগে অপরাধের সাথে কিশোর বয়সেই অনেকের পরিচয় ঘটে যায়। আবার অপরাধে জড়িয়ে পড়ে ধরা পড়লে যেসব সংশোধনাগারে পাঠানো হয় সেগুলো খুবই সেকেলে। পাশাপাশি সামাজিক অনুশাসন একেবারেই ঢিলেঢালা পর্যায়ে চলে যাওয়ার কারণেই কিশোর গ্যাংয়ের বিস্তার থামানো যাচ্ছে না,

ফারুক হোসেন বলে শুধু কয়েকজনকে শাস্তি দিয়ে বা আইনের প্রয়োগ করেই কিশোর গ্যাং সংস্কৃতি বন্ধ করা অসম্ভব, বরং এজন্য সবার সহযোগিতা জরুরি।

সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। কিশোর তরুণরা যেন ভুল পথে না যায় সেজন্য তাদের উদ্বুদ্ধ করার দায়িত্ব পরিবার থেকে শুরু করে জনপ্রতিনিধি সবার। পুলিশ আপ্রাণ চেষ্টা করছে সবাইকে মোটিভেট করার যাতে অল্প বয়সী বাচ্চারা ব্যবহৃত না হয়, বলছিলেন তিনি।

ছড়িয়ে পড়ছে ঢাকার বাইরেও


গত ত্রিশে মার্চ দক্ষিণাঞ্চলীয় পিরোজপুর জেলায় তরুণীকে জিম্মি করে টাকা আদায়ের ঘটনায় ১৮ জনকে আটক করে সেখানকার পুলিশ সংবাদ সম্মেলন করে বলেছে, আটককৃতরা কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য, যাদের বয়স ১৫ থেকে সতের বছরের মধ্যে।

ওই সংবাদ সম্মেলনে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুকিত হাসান খান জানান পিরোজপুর শহর ও এর আশেপাশে কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত বেড়েই চলেছে।

এর আগে, পনেরই মার্চ মাদারীপুরে কিশোর গ্যাংয়ের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হয় এবং পুলিশ দুজনকে আটক করতে সক্ষম হয়।

ভোলার দৌলতখান উপজেলায় গত ফেব্রুয়ারিতে কিশোর গ্যাংয়ের হাতে খুন হন এক যুবক।  খেলার সময় কথা কাটাকাটির জের ধরে এ ঘটনা ঘটে।

ওই মাসেই জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলায় কিশোর গ্যাংয়ে ছয় সদস্যকে গ্রেফতার করে র‍্যাব।

ত্রিশে জানুয়ারি কুমিল্লায় কিশোর গ্যাং সদস্যদের অস্ত্রের মহড়া ও গুলি করার ঘটনা বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছিলো।

গত কয়েক বছরে দেশের বিভিন্ন এলাকায় এ ধরনের অনেক ঘটনায় উঠে এসেছে কিশোর গ্যাংয়ের নাম।


আরও খবর

সাত ধরনের মোটরযানের কর মওকুফ

বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪




গজারিয়ায় বিদ্যুৎ এর টাওয়ার নির্মাণ বন্ধে মানববন্ধন

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৬ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

গজারিয়া প্রতিনিধি:

২৫ শে মার্চ সোমবার মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় টেংগারচর ইউনিয়নের মীরের গাঁও গ্রামে বেলা ৪ ঘটিকার সময় কয়েকশত নারী পুরুষের উপস্থিতিতে অপরিকল্পিত বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন বন্ধের প্রতিবাদে সভা ও মানববন্ধন করা হয়।

উক্ত প্রতিবাদ সভায় মানববন্ধনের আয়োজককারীরা জানান আমাদের গ্রামের উপর দিয়ে অপরিকল্পিতভাবে মানা-বে ওয়াটার পার্কের জন্য প্রস্তাবিত বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন নির্মাণ জন্য ৩ ফসলী জমির উপর টাওয়ার নির্মাণের প্রস্তাবনা গ্রহণ করে বিদ্যুৎ বিভাগ।

আমাদের এই জমিই শেষ সম্বল টাওয়ার নির্মাণ হলে আমাদের কৃষিকাজার করার মত কোন জমি  থাকবে না।

ভাটের চর হতে মীরের গাওয়ের প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকার উপর দিয়ে লাইনটি নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

ইতিপূর্বে আমাদের গ্রামের উপর দিয়ে মেঘনা গ্রুপের একটি বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করা হয়েছে। যার ফলে আমাদের কৃষি জমি ও এলাকার বেশ কয়েকটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একই এলাকার উপর দিয়ে আরও একটি লাইন নির্মাণ করলে কৃষি জমি সহ বাড়িঘর ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

গ্রামবাসীরা আরও জানান এই লাইন বন্ধের বিষয়ে আমরা স্থানীয় কয়েক শত কৃষকের গণস্বাক্ষর দিয়ে সম্মানিত জেলা প্রশাসকের নিকট বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণ বন্ধের আবেদন জানাই।

উক্ত মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন ৭ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নাসিম, মহিলা ইউপি সদস্য স্বপ্না আক্তার, নাজমুল হাসান, হাজী জাহাঙ্গীর নক্তি, মামুন নক্তি, আখতার হোসেন, হাজী নাসির উদ্দিন, ইসমাইল প্রধান, হাবিবুর রহমান, বিল্লাল হোসেন, সাদ্দাম হোসেন, আবুল মাস্টার, আব্দুল গাফফার ,দেলোয়ার হোসেন, মুজিবুর রহমান ,নজরুল ইসলাম, নুরুল আমিন, হান্নান ফরাজী সহ ব্যক্তিবর্গ।


আরও খবর



বান্দরবানে থমথমে পরিস্থিতি

প্রকাশিত:রবিবার ০৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

বান্দরবানে সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী কেএনএফের সন্ত্রাসী হামলা, ব্যাংক লুটের পর সেনা-পুলিশের যৌথ চেকপোস্টে আক্রমণের ঘটনায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। জেলার রুমা ও থানচি উপজেলায় দুটি ব্যাংকের তিনটি শাখায় হামলা অস্ত্র ও টাকা লুটের ঘটনায় চারটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে রুমায় তিনটি ও থানচিতে একটি। এ মামলাগুলোতে পুলিশ বাদি হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে এই মামলাগুলো দায়ের করা হয়। থানচি বাজারে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। দোকানপাট ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান সব বন্ধ রয়েছে। রুমার পরিস্থিতি আগের চেয়ে কিছুটা ভালো হলেও জনমনে আতঙ্ক এখনো কাটছে না।

বান্দরবানের পুলিশ সুপার মো: সৈকত শাহীন জানিয়েছেন, রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলায় পুলিশ সেনাবাহিনী ও বিজিবি টহল বাড়িয়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। জনসাধারণের নিরাপত্তার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তবে মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে রুমার সোনালী ব্যাংকে হামলা অস্ত্র ও গোলাবারুদ লুট, সেই সাথে ব্যাংক ম্যানেজার নেজামউদ্দিনকে অপহরণ এবং পরপর থানচি উপজেলায় আরো বেশ কয়েকটি হামলা হলেও এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা যায়নি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় র্যাব-সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে রুমা উপজেলার ব্যাথেলপাড়া থেকে অপহৃত ম্যানেজার নেজামউদ্দিনকে উদ্ধার করা হয়। গতকাল শুক্রবার সকালে তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।


গত মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট-কেএনএফের একটি সশস্ত্র দল রুমা উপজেলার সোনালী ব্যাংকে হামলা করে। সেখান থেকে ১৪টি অস্ত্র গোলাবারুদ লুটের পর ম্যানেজার নেজামউদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এ ঘটনার পরদিন সকালে থানচি উপজেলায় হানা দিয়ে সোনালী ও কৃষি ব্যাংকের প্রায় ১৮ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায় কেএনএফ। এরপর গত বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে থানচি বাজারে ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকায় আবার হামলা করে কেএনএফ। এ সময় পুলিশ ও বিজিবির সাথে সন্ত্রাসীদের গুলিবিনিময় হয়। এছাড়া গভীর রাতে থানচি-আলীকদম ডিম পাহাড় সড়কে সেনা-পুলিশের একটি যৌথ চেকপোস্টে গুলিবর্ষণ করে তারা। তবে এসব হামলার ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। আবার হামলা হতে পারে এ আশঙ্কায় অনেকেই এলাকা ছেড়ে নিরাপদ জায়গায় সরে গেছে।


যৌথ অভিযান শুরু : এদিকে গতকাল বেলা ১১টায় বান্দরবান জেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার নেজামউদ্দিনের উদ্ধার নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে র্যাব। এ সময় পাহাড়ের নতুন সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) বিরুদ্ধে গতকাল শুক্রবার থেকেই যৌথ সাঁড়াশি অভিযান শুরুর কথা জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সেনাবাহিনী, র্যাব, বিজিবি ও পুলিশের যৌথ এই অভিযান কেএনএফ নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত চলবে। সন্ত্রাসীদের দমনে পাহাড়ে জঙ্গিবিরোধী অভিযানের মতো সব ধরনের কৌশল অবলম্বন করা হবে। সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন সাংবাদিকদের জানান, র্যাবের কৌশল ও নিরাপত্তা বাহিনীর যৌথ অভিযানের কারণে অপহৃত ম্যানেজার নেজামউদ্দিনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তবে কেএনএফ আগামীতে আরো বড় ধরনের হামলার ঘটনা ঘটাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সন্ত্রাসীরা অপহৃত ম্যানেজারের ল্যাপটপ ব্যবহার করে সাইবার হামলা চালাতে চেয়েছিল বলেও জানান তারা। যারা ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের কোনোভাবেই ছাড় দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন র্যাবের এ কর্মকর্তা। এ সময় পরিচালক জানান, ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণের পর পাহাড় ও ঝিরি পথে দীর্ঘক্ষণ পায়ে হেঁটে তাদের আস্তানায় নিয়ে যায় কেএনএফ সন্ত্রাসীরা। এরপর থেকে ব্যাংক ম্যানেজারকে উদ্ধারে বিভিন্ন সংস্থার সহযোগিতায় অভিযানে নামে র্যাব।

 

একটানা ৩০ ঘণ্টা অভিযানের পর কেএনএফ সন্ত্রাসীরা র্যাবের পাতা ফাঁদে পা দেয় এবং অপহৃত ব্যাংক ম্যানেজারকে মোটরসাইকেলে করে রুমার একটি জায়গায় রেখে চলে যায়। সেখান থেকে র্যাব তাকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। এসময় তিনি আরো বলেন ব্যাংক ম্যানেজারকে জীবিত উদ্ধারের কারণে আমরা হার্ডলাইনে যাইনি তবে আজ থেকে আমরা সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করব বিভিন্ন বাহিনীর সহযোগিতায়। কারণ কেএনএফ সন্ত্রাসীরা নিজেদের অবস্থান জানান দিতে নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে, ভবিষ্যতে হয়তো তারা আরো বড় ধরনের হামলা করতে পারে। সন্ত্রাসীদের ছাড় দেয়া হবে না সিসিটিভি ফুটেজ শনাক্ত করে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।


যৌথ তল্লাশি চৌকিতে আক্রমণ, থানচিতে গোলাগুলি : আলীকদম থেকে আমাদের সংবাদদাতা মমতাজ উদ্দিন আহমদ জানিয়েছেন, গত বৃহস্পতিবার দিবাগত গভীর রাতে আলীকদম-থানচি সড়কের ২৬ কিলোমিটার এলাকায় আলীকদম জোনের আওতাধীন একটি তল্লাশি চৌকিতে হামলা চালিয়েছে কেএনএফ সন্ত্রাসীরা। এতে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। রাত পৌনে ১টার দিকে ২৬ কিলোমিটার এলাকার এ যৌথ তল্লাশি চৌকিতে হামলা চালানো হয়। সন্ত্রাসীরা গাড়িতে করে এসে চৌকি ভেঙে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। বাধা দিলে তারা গুলি চালায়। এ সময় চৌকিতে থাকা পুলিশ সদস্যরা পাল্টা গুলিবর্ষণ করেন। পরে হামলাকারীরা পিছু হটে।

এছাড়া যৌথ চেকপোস্টে হামলার আগে থানচি বাজার ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকায় পুলিশ ও বিজিবির সাথে সন্ত্রাসীদের ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টায় থানচি বাজার ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকায় প্রায় এক ঘণ্টার বেশি এ গোলাগুলি চলে। স্থানীয় সাংবাদিক অনুপম মার্মা ও শহিদুল ইসলাম জানান, আমরা ভালো নেই। স্থানীয়রা চরম আতঙ্কে অনেকটা গৃহবন্দীর মতো অবস্থায় রয়েছেন।


অস্ত্রধারীরা এখনো দেড় কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থান করছে : বান্দরবানের থানচি থানার এক থেকে দেড় কিলোমিটারে মধ্যে এখনো বিভিন্ন পাড়ায় কেনএনএফ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা অবস্থান করছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার দুপুরে এ কথা জানান থানচি থানার ওসি জসীম উদ্দিন।

গতকাল দুপুরে সরেজমিন থানচি থানা ঘুরে দেখা গেছে সেখানে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। থানার প্রবেশমুখে ভারী অস্ত্র নিয়ে অবস্থান করছেন পুলিশ সদস্যরা। জানতে চাইলে ওসি জসীম উদ্দিন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, বৃহস্পতিবারের হামলার পর সন্ত্রাসীরা থানার এক থেকে দেড় কিলোমিটার এলাকার মধ্যে অবস্থান করছে। আমরা সতর্ক অবস্থানে আছি। আমাদের ধারণা, পুলিশের ওপর হামলা করে তারা নিজেদের শক্তির জানান দিচ্ছে ও অস্ত্র লুটের পরিকল্পনা করছে। থানার জন্য বাড়তি ফোর্স আনা হয়েছে এবং আরো ফোর্স আনা হচ্ছে। সবাই অস্ত্র নিয়ে থানায় চার পাশে সতর্ক অবস্থানে আছে।


আরও খবর

সাত ধরনের মোটরযানের কর মওকুফ

বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪




ঈদে সেমাই খাওয়ার প্রচলন শুরুর অজানা তথ্য!

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

দেশে সেমাই ছাড়া ঈদ উদযাপন কল্পনা করা যায় না তবে মজার বিষয় হচ্ছে, ঈদের সাথে সেমাইয়ের এই যোগসূত্র কিন্তু খুব পুরনো নয় তবে ইতিহাস বলে সেমাইয়ের প্রচল নিয়ে আছে ভিন্ন রকম মত

ঈদুল ফিতরের সঙ্গে সেমাইয়ের সম্পর্কটা কীভাবে তৈরি হলো তার হদিস পাওয়াটাও একটু কঠিন বাঙালির সামাজিক-সাংস্কৃতিক ইতিহাসে গ্রন্থে যেটুকু পাওয়া যায় তার মধ্যে সেমাইয়ের কথা কোথাও উল্লেখ নেই তবে ফিরনির কথা আছে নবাব আলিবর্দী খাঁর খাদ্য তালিকায় খিচুড়ির উল্লেখযোগ্য অবস্থান ছিল সেমাইয়ের বিষয়ে উল্লেখ পাওয়া যায় না মোগল রসুইঘরেও সুতরাং সেমাই মোগলাই খাবারের মধ্যে পড়ে না 

মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যেও বেশ কিছু খাবারের নাম পাওয়া যায় কিন্তু সেমাইয়ের কথা কোথাও নেই হিন্দু কবিদের রচনাতে তো নেই মুসলমান কবির রচনাতেও নেই সেমাইয়ের দেখা পাওয়া যায় না মোগলদের রন্ধনশালাতেও অর্থাৎ সেমাই মোগলাই খানার মধ্যে পড়ে না অথচ সম্রাট বাবর এসেছিলেন যে আফগানিস্তান থেকে সেই আফগানিস্তানে এখনো সেমাই চলে তবে ভিন্ন নামে আগেও নিশ্চয় চলতো সেখানে সেমাইকে বলেসেমিরা

ভারতের অনেক অঞ্চলে অবশ্য সেমাই রান্নার প্রকরণ দুই রকম এক হলো নামকিন সেমিয়া অর্থাৎ তা নোনতা স্বাদের অন্যটা হলো সেভিয়া ক্ষির বা দুধ সেমাই নামকিন সেমিয়া নিয়ে আমার কোনো কথা নেই কথা বলতে গেলে নুডল্, স্প্যাগেটি, চাওমিন ইত্যাদি খাদ্য চলে আসবে আমার কথার বিষয় খাওয়া শেষে মুখ মিষ্টি করার মিষ্টান্ন নিয়ে মিষ্টান্ন হিসেবে সেমাইয়ের ব্যাপারটা কিন্তু বহুজাতিক মিষ্টি স্বাদ চেহারার সেমাই পাওয়া যাবে গ্রিসে নাম কাতাইফি বাংলাদেশে ঘি দিয়ে ভেজে যে দমের সেমাই তৈরি হয়, প্রায় সেরকমই সেমাইয়ের দেখা পাওয়া যাবে আফ্রিকার সোমালিয়াতে নাম কাদ্রিয়াদ 

প্রচলিত বাংলা অভিধানে সেমাই শব্দটাকে কোথাও বলা হয়েছে হিন্দি, কোথাও দেশি তবে ভাষাতত্ত্বের পণ্ডিত সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় বলেছেন গ্রিক শব্দ সেমিদালিস থেকে বাংলা সেমাই শব্দের উৎপত্তি আমরা যে সেমাই খাই তার রন্ধন-প্রণালী স্বাদ গ্রিস না অন্য কোনো দেশের তার সুলুকসন্ধান কেউ দিতে পারেননি তাই অনেক পণ্ডিত আবার সেমাই শব্দের উৎস সন্ধানে অন্য পথ ধরেছেন

জানার আগ্রহ নিয়ে শব্দের পথ ধরে ইতিহাসের দিকে এগোনো যায় বহু পথ আর শব্দের অর্থ দিয়ে খোলা যায় অতীতের অনেক ইতিহাসের দরজা এদিকে সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় সেমাই শব্দের বুৎপত্তি নির্দেশ করে দেখিয়ে দিয়েছেন, সেমাই শব্দের গায়ে গ্রিসের গন্ধ থাকলেও সেমাই দ্রব্যটা আসলে ভারতীয় ভারতের অনেক রাজ্যেই সেমাই নানাভাবে খাওয়া হয় এছাড়া উপমহাদেশের মুসলমান-মাত্রই ঈদের দিনে সেমাই খায় অন্যদিকে পাকিস্তানেও সেমাই ছাড়া ঈদ কল্পনা করা যায় না

বাংলাদেশে এখন প্যাকেটজাত সেমাইয়ের ছড়াছড়ি মেশিনে বানানো এই সেমাই বাহারি সব প্যাকেটে পাওয়া যায় মজার কথা হলো, এই যে প্যাকেটজাত কিংবা বোতলজাত ইত্যাদি শব্দের যে (জাত) তার অর্থ হলো রক্ষিত, সঞ্চিত ইত্যাদি প্যাকেটজাত মানে প্যাকেটে রক্ষিত শব্দটা আরবি থেকে আসা শব্দের জাত চেনা সত্যিই মুশকিল কারণ এই জাত শব্দটার আবার বাংলা অর্থ সম্পূর্ণ আলাদা

৮০ থেকে ৯৫ বছর আগে সুদূর মফঃস্বল বা গ্রামে প্যাকেটজাত রেডিমডে সেমাই পাওয়া যেতো না শহরে পাওয়া যেতো কিনা তা জানা নেই ঈদের বেশ দিন আগে থেকেই গ্রামের নারীদের হাতে তখন তৈরি হতো আদি অকৃত্রিম ঈদের সেমাই বাড়িতে বাড়িতে সেমাই তৈরির ধুম পড়ে যেতো মা-খালা-চাচি-ফুপিরা মাটির কলসি উপুড় করে হাতের অপূর্ব সৃজন ক্ষমতা দক্ষতায় আটা-ময়দার লেই ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে নতুন কেনা কুলোয় নামাতেন নরম সুতো ক্রমাগত সুতো নেমে তৈরি হতো সেমাইয়ের স্তূপ আর এভাবেই তৈরি হতো হাতে বানানো সেমাই তবে বর্তমানে সেমাই দুই প্রকারের খিল সেমাই বা তার সেমাই আরেকটা হলো লাচ্চা বা লাচ্চি সেমাই


আরও খবর

বিভিন্ন দেশে ঈদের জনপ্রিয় খাবার

শুক্রবার ০৫ এপ্রিল ২০২৪