সরকারের নানা পদক্ষেপের কারণে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। ব্যাংক-ব্যবসায় এবং বাণিজ্য সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, গত জুলাই ও আগস্ট মাসে অর্থনীতির কয়েকটি সূচক ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফিরেছে। বিশেষ করে রেমিট্যান্স প্রবাহ ও রপ্তানি আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। এর সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের আমদানি ব্যয় সংকোচন নীতির সুফল মিলছে অর্থনীতিতে।
বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভের প্রধান উৎস রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স। আর এ দুটির উল্লম্ফনের মধ্য দিয়ে অর্থনীতিতে স্বস্তির আভাস মিলেছে। এখন তৈরি পোশাক রপ্তানির ওপর ভর করেই গত অর্থবছরের মতো রপ্তানি আয়ে সুবাতাস বইতে শুরু করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, চলতি বছরের সদ্যবিদায় হওয়া মাস আগস্টে ২০৩ কোটি ৮০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। গত বছরের আগস্টে এসেছিল ১৮১ কোটি ডলার। সে হিসাবে গত বছরের একই সময়ের ব্যবধানে রেমিট্যান্স বেড়েছে ১২ দশমিক ৬ শতাংশ। চলতি বছরের জুলাই মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ২০৯ কোটি ডলার।
প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের মতো রপ্তানি আয়েও সুবাতাস বইছে। গত আগস্ট মাসে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে ৪৬০ কোটি ৭০ লাখ ডলার আয় করেছেন বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা। এই অঙ্ক গত বছরের আগস্টের চেয়ে ৩৬ দশমিক ১৮ শতাংশ বেশি। আর লক্ষ্যমাত্রার বেশি ৭ দশমিক ১৪ শতাংশ।
সম্প্রতি প্রকাশিত রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, এই অর্থবছরের জুলাই-আগস্ট সময়ে তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে এসেছে ৭১১ কোটি ২৬ লাখ ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২৬ দশমিক ১ শতাংশ বেশি। লক্ষ্যের চেয়ে বেশি আয় হয়েছে ৭ দশমিক ২৪ শতাংশ। দুই বছরের করোনা মহামারির পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় ওলটপালট হয়ে যাওয়া বিশ্ব অর্থনীতিতে রপ্তানি আয় কমবে বলে আশঙ্কা করছিলেন রপ্তানিকারকরা।
আগামী দিনগুলোতেও রপ্তানি বাড়ার আশা করছেন দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাকশিল্প-মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ-এর সাবেক সভাপতি বাংলাদেশ চেম্বারের বর্তমান সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ। তিনি বলেন, নানা ধরনের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যেও দুই মাসে সার্বিক রপ্তানিতে ২৫ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অবশ্যই একটা ভালো দিক। তৈরি পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি ২৬ শতাংশের বেশি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যে এই উল্লম্ফন আমাদের আশান্বিত করেছে। এই সংকটের সময় রেমিট্যান্সের পাশাপাশি রপ্তানি আয় বাড়াটা খুবই দরকার ছিল। এর মধ্য দিয়ে রিজার্ভ বাড়বে। ডলারের বাজারে যে অস্থিরতা চলছে, সেটাও কেটে যাবে বলে আশা করছি।