Logo
শিরোনাম

বাজারের নিয়ন্ত্রণ কার হাতে?

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৯ জুলাই ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ |

Image

কাঁচা মরিচের কেজি ৩২০ টাকা। ৩০ টাকার সবজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। আলুর কেজি ৬৫ টাকা। এ ছাড়া চাল, পিয়াজ ও রসুনের দামও বেড়েছে। বাজার করতে এসে হিসাব মেলাতে পারছেনা ক্রেতা।

 

সবজিতে স্বস্তি নেই: কাঁচা বাজারগুলো ঘুরে দেখা যায়, আড়তভরা সবজি। তারপরও বৃষ্টির কারণ দেখিয়ে প্রায় প্রতিটি সবজির দাম কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। খুচরা বিক্রেতারা জানান, কাঁচা মরিচ ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা, টমেটো ২০০ টাকা, গাঁজর ১০০ টাকা, বেগুন ৮০ থেকে ১২০ টাকা, পটোল, ঝিঙে, ধুন্দুল ৬০ টাকা, করলা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, শসা ৮০ থেকে ১০০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৫০ থেকে ৬০ টাকা, লাউ ও চালকুমড়ার পিস ৭০ থেকে ৯০ টাকা। কচুরলতির কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা কেজি। 

রসুনের কেজি ২৪০, পিয়াজের ১২০ টাকা:  সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে পিয়াজের দাম। রাজধানীর বাজারগুলোতে এখন ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি পিয়াজ। শনিবার তালতলা ও বিএনপি বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়। বিএনপি বাজারে পিয়াজ ও রসুন কিনতে আসেন শিক্ষার্থী জুনায়েদ। তিনি বলেন, এক মাস আগেও পিয়াজ কিনেছি কেজি ৯০ টাকায়। এখন সেই পিয়াজের দাম ১২০ টাকা। আর এক মাসের ব্যবধানে ৫০ থেকে ৬০ টাকা বেড়ে রসুনের দাম হয়েছে ২৪০ টাকা। আধা কেজি পিয়াজ কেনার পরিকল্পনা থাকলেও ২৫০ গ্রাম পিয়াজ কিনতে হচ্ছে বলে জানান এই শিক্ষার্থী। এদিকে পিয়াজের দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা জানান, দেশি পিয়াজের সাপ্লাই কমে যাওয়ায় দাম বাড়ছে। এখন ভারতীয় পিয়াজ বিক্রি করতে হচ্ছে। আপাতত কমার কোনো সম্ভাবনা নেই।

 
আলুর কেজি ৬০ থেকে ৬৫ টাকা: সুখবর নেই আলুতেও। শনিবার বাজারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। ফলে সপ্তাহের ব্যবধানে পণ্যটির দাম ৫ টাকা বেড়েছে। ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)
র তথ্য অনুযায়ী, এক বছরের ব্যবধানে আলুর দাম ৫৫.১৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বছরের এই সময়ে প্রতি কেজি আলুর দাম ছিল ৩৮ থেকে ৪০ টাকায়। 

চালের দাম ঊর্ধ্বমুখী: সম্প্রতি বোরো ধান উঠেছে। তারপরও কমছে না চালের দাম; বরং বর্ষার অজুহাতে সপ্তাহের ব্যবধানে আটাশ ও মোটা চালের খুচরা বাজারে কেজিতে ১ থেকে ৩ টাকা বেড়েছে। তবে আগের মতোই মিনিকেট চালের দাম ৭০ থেকে ৭২ টাকা। খুচরা বিক্রেতা নাসির হোসেন জানান, আগের সপ্তাহে আটাশ চাল ৫২ থেকে ৫৫ টাকা বিক্রি হলেও এখন তা ৫৮ টাকা ও ৫০ থেকে ৫২ টাকার মোটা চাল ৫৫ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ঈদের পরে আটাশ চাল ও মোটা চালের দাম কিছুটা বেড়েছে।

হাত দেয়া যাচ্ছে না কাঁচা মরিচে, কেজি ৩২০ টাকা: কাঁচা মরিচের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। সপ্তাহর ব্যবধানে কেজিতে ১০০ থেকে ১২০ টাকা বেড়ে ৩২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রকারভেদে ২৫০ গ্রাম কাঁচা মরিচ ৭০ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতারা ১০ টাকার মরিচ কিনতে চাইলে বিক্রেতা অপারগতা প্রকাশ করছেন। ব্যবসায়ীরা বলছেন, দামের কারণে ১০ টাকার মরিচ বিক্রি করা যায় না। ১০০ গ্রামের নিচে মরিচ বিক্রি করা ব্যবসার জন্য ক্ষতি। চাহিদার তুলনার বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বাড়ছে বলেও জানান তারা। 

খোলা সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে: এদিকে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে ৮টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে খোলা সয়াবিন তেল। বাজারে খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ টাকা দরে। এর আগে চলতি বছরের ১৮ই এপ্রিল খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটারের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ১৪৭ টাকা নির্ধারণ করে সরকার। তবে বোতলজাত সয়াবিন তেল নির্ধারিত দামেই বিক্রি করতে দেখা গেছে। 

ডিমের দাম চড়া: রাজধানীতে ফার্মের বাদামি ডিম প্রতি ডজন ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর হালি বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকায়। অথচ ডিম উৎপাদক খামারিরা পাইকারদের কাছে এসব ডিম বিক্রি করছেন ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা দরে। অর্থাৎ পাইকারি পর্যায়ে প্রতি ডজনে ২৫ টাকার বেশি দাম বাড়ছে। এমন মূল্যবৃদ্ধিকে অস্বাভাবিক দাবি করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বলেছে, পাইকারি ব্যবসায়ীদের কারসাজির কারণেই ডিমের দাম বাড়ছে। 

মাছের দামও বাড়তি: বাজারে সব ধরনের মাছের দাম বাড়তি। বাজারে প্রতি কেজি পাবদা বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকায়, চিংড়ি প্রতি কেজি ৭০০ টাকা, পাঙাশ মাছ প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা, তেলাপিয়া প্রতি কেজি ২৫০ টাকা, রুই প্রতি কেজি ৩৫০ টাকা, কাতল প্রতি কেজি ৪০০ টাকা, কই প্রতি কেজি ২৫০ টাকা, শিং মাছ প্রতি কেজি ৪০০ টাকা, টেংরা প্রতি কেজি ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা, বড় বোয়াল প্রতি কেজি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, বড় আইড় মাছ প্রতি কেজি ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজার বিশ্লেষকরা যা বলছেন: নিত্যপণ্যের লাগামছাড়া দাম বৃদ্ধি নিয়ে বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, ব্যবসায়ীরা ভোক্তাদের পকেট কাটার প্রতিযোগিতায় নেমেছে। বাজার নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাগুলো যেহেতু সেভাবে তদারকি করতে পারছে না, সেহেতু তারা নিজের ইচ্ছামতো দাম বাড়াচ্ছে। এ বিষয়ে কনজ্যুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন মানবজমিনকে বলেন, এখন ব্যবসায়ীদের মধ্যে একটা প্রতিযোগিতা চলে যে, কে কতো টাকা নিতে পারে। একটা সময় কয়েকটি পণ্যের সংকট হতো, এখন সবগুলো পণ্যেরই সংকট দেখা যায়। এর মূল কারণ হলো কে কতো মুনাফা করতে পারে, কে কতো পকেট কাটতে পারে। তিনি বলেন, সরকারের তদারকির পরিমাণ আগের তুলনায় অনেক কমেছে। এখন ব্যবসায়ীরাই সর্বেসর্বা। তারা যেভাবে ইচ্ছা সেভাবেই ব্যবসা করতে পারছেন। এগুলো আমাদের জন্য খুবই দুঃখজনক। বর্তমানে সীমিত আয়ের মানুষদের জীবিকা নির্বাহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে


আরও খবর

রমজানে দুধ, ডিম ও মাংস বিক্রি করবে সরকার

সোমবার ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

রমজানে টিসিবির ট্রাকসেল চালু থাকবে

বুধবার ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫




২৭শে মাঘ মইন বাবার ৮৮ তম খোজরোজ শরীফ

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ৩০ জানুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ |

Image

ত্বরীকায়ে মাইজভাণ্ডারীয়ার বৈশ্বিক রূপদানকারী,শায়খুল ইসলাম, হুজুর গাউসুল ওয়ারা আলহাজ্ব আল্লামা শাহসূফী সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ আল -হাসানী ওয়াল হোসাইনী আল মাইজভাণ্ডারী কাদ্দাছাল্লাহু ছিররাহুল আজিজ কেবলা কাবার ৮৮ তম খোজরোজ শরীফ এবং 

মাইজভাণ্ডার রহমানিয়া মইনীয়া দরসে নেজামী মাদ্রাসা হেফজখানা ও এতিমখানার সালানা জলসা

৯ ও ১০ ফেব্রুয়ারি -২০২৫

রবিবার ও সোমবার 

➡️ছদারত ও আখেরী মুনাজাত পরিচালনা করবেন:

মুর্শিদ কেবলার স্থলাভিষিক্ত,খেলাফতপ্রাপ্ত আওলাদ,রাহ্বারে শরীয়ত ও ত্বরীকত মাওলানা শাহসূফী সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ

আল -হাসানী ওয়াল হোসাইনী আল মাইজভাণ্ডারী মদ্দাজিল্লহুল আলী

সাজ্জাদানশীল - দরবারে গাউছুল আযম মাইজভাণ্ডারী ফটিকছড়ি চট্টগ্রাম

কেন্দ্রীয় সভাপতি - আঞ্জুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভাণ্ডারীয়া।

➡️এই বরকতময় মহা খোজরোশ শরীফে জাতি -ধর্ম নির্বিশেষে সকলেই আমন্ত্রিত।

যোগাযোগ: গাউছিয়া রহমানিয়া মইনীয়া মঞ্জিল , মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফ, ফটিকছড়ি চট্টগ্রাম।

➡️ব্যবস্থাপনায়: আঞ্জুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভাণ্ডারীয়া।

➡️ সৌজন্যে: হযরত সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী ট্রাস্ট


আরও খবর



নির্বাচন ও রাজনৈতিক হিসাব নিকাশ

প্রকাশিত:রবিবার ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ |

Image

গোলাম মাওলা রনি, সাবেক সংসদ সদস্য:

জামাত ৩০০ আসনে প্রার্থী দিবে । ইতিমধ্যে ১০০ প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে যারা নিজ নিজ এলাকায় নির্বাচনী মহড়া দিচ্ছেন ।

উল্লেখিত কাজটি বিএনপির করা উচিত ছিল ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ! প্রার্থী ঘোষণা করে সংসদীয় আসনের সকল কমিটি বিলুপ্ত করে তা প্রার্থীর অধীন করে দিয়ে নিজ নিজ এলাকার সকল দায় দায়িত্ব প্রার্থীর উপর ছেড়ে দিলে আজকের অবস্থা তৈরি হতোনা । বিএনপি সময় মত সিদ্ধান্ত নিতে পারলে এখন তাদেরকে নির্বাচনের পিছে ঘুরতে হতোনা , উল্টো নির্বাচনই তাদের পিছনে ঘুরতো ! চাঁদাবাজির অভিযোগ অনেক অনেক কম হতো । সারা বাংলাদেশের প্রশাসন তাদের হাতে থাকতো । উল্লেখিত বিষয় নিয়ে আওয়ামী লীগের পতনের দলিল ! বিএনপির ম্যাগনাকার্টা শিরোনামে একটি সম্পাদকীয় লিখেছিলাম ২০২৪ সালের ১৬ই অগাস্ট তারিখে ! সেখানে বিএনপিকে নিয়ে যেসব আশংকা করেছিলাম তার চেয়েও ভয়াবহ অবস্থায় পড়েছে দলটি ! যারা লিখাটি পড়তে চান তাদের জন্য - আ’লীগের পতনের দলিল! বিএনপির ম্যাগনাকার্টা দৈনিক নয়া দিগন্ত, ১৬ই অগাস্ট, ২০২৪ আওয়ামী লীগের পতন কেন হলো- এমন প্রশ্ন করা হলে আমার মতো মোটা মাথার লোকজন গড়গড় করে কয়েক শ’ কারণ বলে দিতে পারি যা হয়তো তেলাপোকা-টিকটিকিরাও বলতে পারবে। কিন্তু দার্শনিক দৃষ্টিকোণ থেকে আওয়ামী লীগের পতনের নেপথ্য কারণ বিশ্লেষণ করার জন্য যে জ্ঞান-গরিমা দরকার তা আমার নেই। আমি একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক, সাদা চোখে যা দেখি বা শুনি তা বলি কিংবা লিখি। কিন্তু দার্শনিক হতে হলে কনফুসিয়াস-প্লেটো-এরিস্টটল-সক্রেটিস-ইবনে খালদুনের মতো প্রজ্ঞা থাকতে হবে। আর সেই প্রজ্ঞাবান যেহেতু দেশে নেই; সুতরাং আমি আমার সীমিত জ্ঞান নিয়ে আজকের শিরোনাম প্রসঙ্গে কিছু বলার চেষ্টা করব। আওয়ামী লীগের পতনের একনম্বর কারণ হলো, দলটি তার রাজনৈতিক দর্শন এবং রাজনৈতিক পথ ও মত ত্যাগ করে আমলা-কামলা-ব্যবসায়ী, দেশী-বিদেশী গোয়েন্দাদের কবলে পড়ে নিজের রাজনীতি থেকে অনেক দূরে সরে গিয়েছিল। যেসব পদ-পদবি রাজনৈতিক ইংরেজিতে যার নাম পলিটিক্যাল অফিস, সেখানে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের দায়িত্ব না দিয়ে কথিত জ্ঞানী-গুণী-পণ্ডিত-সফল ব্যবসায়ী-আমলা প্রমুখদের নিয়োগ দিয়ে রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের অপমানিত ও লাঞ্ছিত করেছে। ফলে পলিটিক্যাল অফিসগুলো প্রাণশূন্য হয়ে পড়েছিল এবং জনগণের সাথে অফিসের কর্তাদের কোনো সংযোগ ছিল না। এইচ টি ইমাম, ড. মশিউর রহমান, আবুল মাল আব্দুল মুহিত প্রমুখের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ যে চমক দেখানোর চেষ্টা করেছে তা বুমেরাং হয়ে ধীরে ধীরে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পরিণতিতে নিয়ে এসেছে। দ্বিতীয় ধাপে এসে আওয়ামী লীগ অসৎ ব্যবসায়ী-অসৎ আমলা, তেলবাজ ও ধড়িবাজ সাংবাদিক-বুদ্ধিজীবী ও পেশাজীবীদের জালে আটকা পড়ে যায়। এদের কারণে আওয়ামী লীগের হিতাহিত জ্ঞান লোপ পেতে থাকে- তাদের হেদায়েতের দরজা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে তারা ভালো-মন্দের পার্থক্য করা, সঠিক পথ অনুসরণ করা, ভালো মানুষদের সম্মান করে যোগ্য পদে পদায়ন করার প্রয়োজন অনুভব করতে পারেনি। মন্দ লোকের আধিক্য এবং মন্দদের দাপটের কারণে ভালোরা ব্যাকফুটে চলে যায়। ফলে আওয়ামী লীগের কাছে মন্দ কাজ-মন্দ চিন্তা-গুনাহ-ব্যাভিচার-অবিচার ও অনাচার ক্রমেই আকর্ষণীয় মনে হতে থাকে। তৃতীয় ধাপে আওয়ামী লীগের মধ্যে প্রতিশোধস্পৃহা-জুলুম-অত্যাচারের মাধ্যমে আনন্দ লাভ, অহমিকা বোধ, দাম্ভিকতা প্রদর্শন এবং দুষ্টের লালন-শিষ্টের দমন-ফ্যাশন বা স্টাইল হয়ে দাঁড়ায়। চোরাকারবারি-লুটেরা-মদ্যপ এবং চরিত্রহীনরা রাষ্ট্রের সম্মান ও মর্যাদাজনক স্থানগুলো দখল করে ফেলে। ফলে পুরো রাষ্ট্রব্যবস্থার ওপর মানুষের অভক্তি ও অশ্রদ্ধা দেখা দেয়। রাষ্ট্র পরিচালকরা দিন-দুপুরে লাখ লাখ মানুষের সামনে মিথ্যা বলতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে এবং জনগণের প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ না পেয়ে ক্রমেই বেপরোয়া হয়ে ওঠে। ফলে অন্যায়-অনিয়ম সরকারি অফিস-আদালত এবং রাষ্ট্র পরিচালক আমলা-কামলাদের ব্যক্তিগত-পারিবারিক ও সামাজিক জীবনের অলঙ্কারে পরিণত হয়। চতুর্থ ধাপে আওয়ামী লীগ বিচার বিভাগ ও পুলিশ বিভাগের ওপর নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে এবং এই দু’টি প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করে নিজেদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নির্মূল শুরু করে এবং ব্যাপক সফলতা লাভের পর নিজেদের ঘরের শ্রেণীশত্রু চিহ্নিত করে তাদের দুর্বল-অসহায় ও অকার্যকর বানানোর মিশন হাতে নেয়। নিজ দলের যোগ্যতম রাজনৈতিক নেতা, রাজনৈতিক জোটের নেতাসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মুক্তবুদ্ধি ও মুক্তচিন্তার লোকদের নিজেদের শ্রেণীশত্রু হিসেবে চিহ্নিত করে নানা উপায়ে তাদের অপমানিত, লাঞ্ছিত ও পদদলিত করে তাদের বাকস্বাধীনতা, চিন্তার স্বাধীনতা ও ভালো কাজের সক্ষমতা নষ্ট করে দেয়। পঞ্চম ধাপে এসে তারা সবাই মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়ে। তাদের মানবিক গুণাবলি রহিত হয়ে যায়। নিলর্জ্জতা, বেহায়াপনা ও অহেতুক রঙ্গরস এবং ভয়ানক রাজনৈতিক খেলাধুলা নিত্যদিনের বিনোদনে পরিণত হয়। মধ্যযুগের রক্তপিপাসু জুলুমবাজদের মতো ক্ষমতার চেয়ারগুলো রক্তপিপাসু হয়ে পড়ে। মানুষের মৃত্যু দেখলে তাদের হৃদয় বিগলিত না হয়ে বরং উল্লসিত হতে শুরু করে। এ অবস্থায় প্রাকৃতিক অভিশাপ তাদের জন্য অনিবার্য হয়ে পড়ে এবং সারা বিশ্বকে অবাক করে বাংলার জমিনে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন হয়। আওয়ামী লীগের পতনের উল্লিখিত সাদামাটা কারণগুলো পর্যালোচনা করে আগামী দিনের কর্মপন্থা অবলম্বন করতে না পারলে বিএনপির কপালে আওয়ামী লীগের চেয়েও বড় দুর্ভোগ-দুর্দশা অনিবার্য হয়ে পড়বে। বিএনপি যদি সতর্ক না হয় এবং অতি দ্রুত ও জরুরিভাবে কার্যকর কিছু উদ্যোগ না নেয় তবে ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের ফসল ঘরে তোলা তো দূরের কথা, উল্টো ৫ আগস্ট তাদের কাছে বিগত ওয়ান-ইলেভেনের চেয়েও ভয়াবহ আজাব হিসেবে হাজির হতে পারে। এ জন্যই শিরোনামে আমি আওয়ামী লীগের পতনের দলিলকে বিএনপির জন্য ম্যাগনাকার্টা বা মুক্তির সনদ হিসেবে উল্লেখ করেছি। চলমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপিকে এক মুহূর্ত সময় ব্যয় না করে নিম্নলিখিত কাজগুলো করতে হবে : ১. বিএনপির সব পর্যায়ে রাজনৈতিক বিরোধ, অন্তর্দ্বন্দ্ব-হানাহানি তুঙ্গে। বেশির ভাগ নির্বাচনী এলাকায় দুই-তিনটি কমিটি রয়েছে। গত নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই গত পাঁচ বছরে এলাকায় যেতে পারেননি প্রথমত, আওয়ামী লীগের মামলা-হামলার কারণে। দ্বিতীয়ত, দলীয় অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণে। এ ক্ষেত্রে পরিস্থিতি এতটা ভয়াবহ যে, এক পক্ষ তার প্রতিপক্ষকে দমন করার জন্য আওয়ামী লীগের গুণ্ডাদের ভাড়া করে অনেক জাতীয় নেতাকে সস্ত্রীক রক্তাক্ত করেছে। চলমান পরিস্থিতিতে অতীতের সেই বিরোধ কয়েক শ’গুণ বেড়েছে। বিশৃঙ্খল নেতাকর্মীরা যা শুরু করেছে, তা যদি আর দুই সপ্তাহ চলে তবে জনগণ বলা শুরু করবে যে, আগের জমানা ভালো ছিল। এ অবস্থায় সেনাবাহিনী অপারেশন ক্লিনহার্টের মতো অভিযান শুরু করলে বিএনপি অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়বে এবং আরেকটি মাইনাস টু ফর্মুলা বাস্তবায়ন হয়ে যাবে। উল্লিখিত অবস্থা মোকাবেলার জন্য বিএনপির উচিত কালবিলম্ব না করে ৩০০ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা। জেলা কমিটিতে জেলার প্রার্থীরা উপদেষ্টা থাকবেন এবং জেলা কমিটি উপদেষ্টাদের পরামর্শে সব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাবেন। নির্বাচনী এলাকার সব কমিটি প্রার্থীর নিয়ন্ত্রণে চলবে। কোনো কমিটি প্রার্থীর কথা না শুনলে সংশ্লিষ্ট প্রার্থী সেই কমিটি ভেঙে নতুন কমিটি গঠন করবেন এবং সেভাবেই নির্বাচন পর্যন্ত চলবে। এ ছাড়া নির্বাচনী এলাকা নিয়ন্ত্রণের বিকল্প নেই। ২. যেসব আমলা-কামলা এবং ব্যবসায়ীর কারণে বিএনপির পতন হয়েছিল এবং যেসব নেতার আর্থিক দুর্নীতি সর্বজনবিদিত, যেসব লোক যেন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দলীয় অফিসগুলোতে ভিড় জমাতে না পারে তা শতভাগ নিশ্চিত না করা গেলে মাইনাস টু থিওরি আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। বিএনপিকে মনে রাখতে হবে, ২০০৭ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত হাজার হাজার আমলা-কামলা যারা বিএনপি জমানায় রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ পেয়েছিল তারা এক দিনের জন্যও নির্যাতিত বিএনপি নেতাকর্মীদের খোঁজ নেয়নি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তারা বিএনপিকে পরিহার করেছে, না চেনার ভান করেছে- আর কেউ কেউ আওয়ামী আমলাদের চেয়েও বেশি মাত্রায় বিএনপিকে নির্যাতন করেছে। তারা সবাই চাকরি বাঁচানোর জন্য আওয়ামী লীগকে সকাল-বিকাল আব্বা ডেকেছে। সুতরাং পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সেসব পুরোনো দলবাজদের তাড়াতে হবে এবং প্রশাসনকে দলীয় প্রভাবমুক্ত রাখার শপথ নিতে হবে। ৩. বিএনপির মূল শক্তি তার কর্মী-সমর্থক এবং ভোটার, যারা কি না সংসদ সদস্য প্রার্থীর মাধ্যমে দলের নিউক্লিয়াসে যুক্ত থাকে। সুতরাং সংসদীয় পদ্ধতি মেনে সব দলীয় সংসদ সদস্য প্রার্র্থীকে সম্মান ও মর্যাদা দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, সংসদ সদস্যদের মর্যাদা সমপর্যায়ের- এই বিশ্বাস ও আস্থা দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে ধারণ করতে হবে এবং সেভাবেই নিজ দলের প্রার্থীদের মূল্যায়ন করা হলে তৃণমূল বিএনপিতে দ্রুত শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। ৪. দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কিছু পদে দ্রুত পরিবর্তন আনা জরুরি। চাটুকার, দুর্নীতিবাজ এবং ইয়েস বস বলা লোকজন দিয়ে বর্তমান পরিস্থিতি সামাল দেয়া যাবে না। ৫. আগামীতে দু’টি সম্ভাবনা মাথায় রেখে এগোতে হবে। প্রথমত আরেকটি ওয়ান-ইলেভেনের প্রেক্ষাপট, মাইনাস টু থিওরি বাস্তবায়ন, বিএনপিকে নতুন ফাঁদে ফেলে ক্র্যাকডাউন ইত্যাদির মতো পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে হতে পারে। দ্বিতীয়ত, যদি নির্বাচন হয় তবে আওয়ামী লীগসহ, কিংস পার্টি এবং কিংস পার্টির অনুগত ছোট পার্টির যন্ত্রণা মোকাবেলা করতে হবে। দলের ভেতরে-বাইরে যারা বিভিন্ন সময়ে গোয়েন্দা সংস্থার হয়ে কাজ করেছে ও তাদের টাকা নিয়ে রাজপথে সরকারবিরোধী লম্ফঝম্প করেছে এবং এখনো সব দরবারে বাতি জ্বালানোর চেষ্টা করছে, এদের কাছ থেকে দলকে ১৩৩ মাইল নিরাপদ দূরত্বে রাখতে হবে। লেখক : সাবেক সংসদ সদস্য

জামাত ৩০০ আসনে প্রার্থী দিবে । ইতিমধ্যে ১০০ প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে যারা নিজ নিজ এলাকায় নির্বাচনী মহড়া দিচ্ছেন । 

উল্লেখিত কাজটি বিএনপির করা উচিত ছিল ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ! প্রার্থী ঘোষণা করে সংসদীয় আসনের সকল কমিটি বিলুপ্ত করে তা প্রার্থীর অধীন করে দিয়ে নিজ নিজ এলাকার সকল দায় দায়িত্ব প্রার্থীর উপর ছেড়ে দিলে আজকের অবস্থা তৈরি হতোনা । 

বিএনপি সময় মত সিদ্ধান্ত নিতে পারলে এখন তাদেরকে নির্বাচনের পিছে ঘুরতে হতোনা , উল্টো নির্বাচনই তাদের পিছনে ঘুরতো ! চাঁদাবাজির অভিযোগ অনেক অনেক কম হতো । সারা বাংলাদেশের প্রশাসন তাদের হাতে থাকতো । 

উল্লেখিত বিষয় নিয়ে আওয়ামী লীগের পতনের দলিল ! বিএনপির ম্যাগনাকার্টা শিরোনামে একটি সম্পাদকীয় লিখেছিলাম ২০২৪ সালের ১৬ই অগাস্ট তারিখে ! সেখানে বিএনপিকে নিয়ে যেসব আশংকা করেছিলাম তার চেয়েও ভয়াবহ অবস্থায় পড়েছে দলটি !

যারা লিখাটি পড়তে চান তাদের জন্য - 

আ’লীগের পতনের দলিল! বিএনপির ম্যাগনাকার্টা

দৈনিক নয়া দিগন্ত, ১৬ই অগাস্ট, ২০২৪ 

আওয়ামী লীগের পতন কেন হলো- এমন প্রশ্ন করা হলে আমার মতো মোটা মাথার লোকজন গড়গড় করে কয়েক শ’ কারণ বলে দিতে পারি যা হয়তো তেলাপোকা-টিকটিকিরাও বলতে পারবে। কিন্তু দার্শনিক দৃষ্টিকোণ থেকে আওয়ামী লীগের পতনের নেপথ্য কারণ বিশ্লেষণ করার জন্য যে জ্ঞান-গরিমা দরকার তা আমার নেই। আমি একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক, সাদা চোখে যা দেখি বা শুনি তা বলি কিংবা লিখি। কিন্তু দার্শনিক হতে হলে কনফুসিয়াস-প্লেটো-এরিস্টটল-সক্রেটিস-ইবনে খালদুনের মতো প্রজ্ঞা থাকতে হবে। আর সেই প্রজ্ঞাবান যেহেতু দেশে নেই; সুতরাং আমি আমার সীমিত জ্ঞান নিয়ে আজকের শিরোনাম প্রসঙ্গে কিছু বলার চেষ্টা করব।


আওয়ামী লীগের পতনের একনম্বর কারণ হলো, দলটি তার রাজনৈতিক দর্শন এবং রাজনৈতিক পথ ও মত ত্যাগ করে আমলা-কামলা-ব্যবসায়ী, দেশী-বিদেশী গোয়েন্দাদের কবলে পড়ে নিজের রাজনীতি থেকে অনেক দূরে সরে গিয়েছিল। যেসব পদ-পদবি রাজনৈতিক ইংরেজিতে যার নাম পলিটিক্যাল অফিস, সেখানে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের দায়িত্ব না দিয়ে কথিত জ্ঞানী-গুণী-পণ্ডিত-সফল ব্যবসায়ী-আমলা প্রমুখদের নিয়োগ দিয়ে রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের অপমানিত ও লাঞ্ছিত করেছে। ফলে পলিটিক্যাল অফিসগুলো প্রাণশূন্য হয়ে পড়েছিল এবং জনগণের সাথে অফিসের কর্তাদের কোনো সংযোগ ছিল না। এইচ টি ইমাম, ড. মশিউর রহমান, আবুল মাল আব্দুল মুহিত প্রমুখের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ যে চমক দেখানোর চেষ্টা করেছে তা বুমেরাং হয়ে ধীরে ধীরে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পরিণতিতে নিয়ে এসেছে।


দ্বিতীয় ধাপে এসে আওয়ামী লীগ অসৎ ব্যবসায়ী-অসৎ আমলা, তেলবাজ ও ধড়িবাজ সাংবাদিক-বুদ্ধিজীবী ও পেশাজীবীদের জালে আটকা পড়ে যায়। এদের কারণে আওয়ামী লীগের হিতাহিত জ্ঞান লোপ পেতে থাকে- তাদের হেদায়েতের দরজা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে তারা ভালো-মন্দের পার্থক্য করা, সঠিক পথ অনুসরণ করা, ভালো মানুষদের সম্মান করে যোগ্য পদে পদায়ন করার প্রয়োজন অনুভব করতে পারেনি। মন্দ লোকের আধিক্য এবং মন্দদের দাপটের কারণে ভালোরা ব্যাকফুটে চলে যায়। ফলে আওয়ামী লীগের কাছে মন্দ কাজ-মন্দ চিন্তা-গুনাহ-ব্যাভিচার-অবিচার ও অনাচার ক্রমেই আকর্ষণীয় মনে হতে থাকে।


তৃতীয় ধাপে আওয়ামী লীগের মধ্যে প্রতিশোধস্পৃহা-জুলুম-অত্যাচারের মাধ্যমে আনন্দ লাভ, অহমিকা বোধ, দাম্ভিকতা প্রদর্শন এবং দুষ্টের লালন-শিষ্টের দমন-ফ্যাশন বা স্টাইল হয়ে দাঁড়ায়। চোরাকারবারি-লুটেরা-মদ্যপ এবং চরিত্রহীনরা রাষ্ট্রের সম্মান ও মর্যাদাজনক স্থানগুলো দখল করে ফেলে। ফলে পুরো রাষ্ট্রব্যবস্থার ওপর মানুষের অভক্তি ও অশ্রদ্ধা দেখা দেয়। রাষ্ট্র পরিচালকরা দিন-দুপুরে লাখ লাখ মানুষের সামনে মিথ্যা বলতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে এবং জনগণের প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ না পেয়ে ক্রমেই বেপরোয়া হয়ে ওঠে। ফলে অন্যায়-অনিয়ম সরকারি অফিস-আদালত এবং রাষ্ট্র পরিচালক আমলা-কামলাদের ব্যক্তিগত-পারিবারিক ও সামাজিক জীবনের অলঙ্কারে পরিণত হয়।


চতুর্থ ধাপে আওয়ামী লীগ বিচার বিভাগ ও পুলিশ বিভাগের ওপর নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে এবং এই দু’টি প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করে নিজেদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নির্মূল শুরু করে এবং ব্যাপক সফলতা লাভের পর নিজেদের ঘরের শ্রেণীশত্রু চিহ্নিত করে তাদের দুর্বল-অসহায় ও অকার্যকর বানানোর মিশন হাতে নেয়। নিজ দলের যোগ্যতম রাজনৈতিক নেতা, রাজনৈতিক জোটের নেতাসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মুক্তবুদ্ধি ও মুক্তচিন্তার লোকদের নিজেদের শ্রেণীশত্রু হিসেবে চিহ্নিত করে নানা উপায়ে তাদের অপমানিত, লাঞ্ছিত ও পদদলিত করে তাদের বাকস্বাধীনতা, চিন্তার স্বাধীনতা ও ভালো কাজের সক্ষমতা নষ্ট করে দেয়।


পঞ্চম ধাপে এসে তারা সবাই মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়ে। তাদের মানবিক গুণাবলি রহিত হয়ে যায়। নিলর্জ্জতা, বেহায়াপনা ও অহেতুক রঙ্গরস এবং ভয়ানক রাজনৈতিক খেলাধুলা নিত্যদিনের বিনোদনে পরিণত হয়। মধ্যযুগের রক্তপিপাসু জুলুমবাজদের মতো ক্ষমতার চেয়ারগুলো রক্তপিপাসু হয়ে পড়ে। মানুষের মৃত্যু দেখলে তাদের হৃদয় বিগলিত না হয়ে বরং উল্লসিত হতে শুরু করে। এ অবস্থায় প্রাকৃতিক অভিশাপ তাদের জন্য অনিবার্য হয়ে পড়ে এবং সারা বিশ্বকে অবাক করে বাংলার জমিনে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন হয়।


আওয়ামী লীগের পতনের উল্লিখিত সাদামাটা কারণগুলো পর্যালোচনা করে আগামী দিনের কর্মপন্থা অবলম্বন করতে না পারলে বিএনপির কপালে আওয়ামী লীগের চেয়েও বড় দুর্ভোগ-দুর্দশা অনিবার্য হয়ে পড়বে। বিএনপি যদি সতর্ক না হয় এবং অতি দ্রুত ও জরুরিভাবে কার্যকর কিছু উদ্যোগ না নেয় তবে ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের ফসল ঘরে তোলা তো দূরের কথা, উল্টো ৫ আগস্ট তাদের কাছে বিগত ওয়ান-ইলেভেনের চেয়েও ভয়াবহ আজাব হিসেবে হাজির হতে পারে। এ জন্যই শিরোনামে আমি আওয়ামী লীগের পতনের দলিলকে বিএনপির জন্য ম্যাগনাকার্টা বা মুক্তির সনদ হিসেবে উল্লেখ করেছি। চলমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপিকে এক মুহূর্ত সময় ব্যয় না করে নিম্নলিখিত কাজগুলো করতে হবে :


১. বিএনপির সব পর্যায়ে রাজনৈতিক বিরোধ, অন্তর্দ্বন্দ্ব-হানাহানি তুঙ্গে। বেশির ভাগ নির্বাচনী এলাকায় দুই-তিনটি কমিটি রয়েছে। গত নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই গত পাঁচ বছরে এলাকায় যেতে পারেননি প্রথমত, আওয়ামী লীগের মামলা-হামলার কারণে। দ্বিতীয়ত, দলীয় অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণে। এ ক্ষেত্রে পরিস্থিতি এতটা ভয়াবহ যে, এক পক্ষ তার প্রতিপক্ষকে দমন করার জন্য আওয়ামী লীগের গুণ্ডাদের ভাড়া করে অনেক জাতীয় নেতাকে সস্ত্রীক রক্তাক্ত করেছে। চলমান পরিস্থিতিতে অতীতের সেই বিরোধ কয়েক শ’গুণ বেড়েছে। বিশৃঙ্খল নেতাকর্মীরা যা শুরু করেছে, তা যদি আর দুই সপ্তাহ চলে তবে জনগণ বলা শুরু করবে যে, আগের জমানা ভালো ছিল। এ অবস্থায় সেনাবাহিনী অপারেশন ক্লিনহার্টের মতো অভিযান শুরু করলে বিএনপি অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়বে এবং আরেকটি মাইনাস টু ফর্মুলা বাস্তবায়ন হয়ে যাবে।

উল্লিখিত অবস্থা মোকাবেলার জন্য বিএনপির উচিত কালবিলম্ব না করে ৩০০ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা। জেলা কমিটিতে জেলার প্রার্থীরা উপদেষ্টা থাকবেন এবং জেলা কমিটি উপদেষ্টাদের পরামর্শে সব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাবেন। নির্বাচনী এলাকার সব কমিটি প্রার্থীর নিয়ন্ত্রণে চলবে। কোনো কমিটি প্রার্থীর কথা না শুনলে সংশ্লিষ্ট প্রার্থী সেই কমিটি ভেঙে নতুন কমিটি গঠন করবেন এবং সেভাবেই নির্বাচন পর্যন্ত চলবে। এ ছাড়া নির্বাচনী এলাকা নিয়ন্ত্রণের বিকল্প নেই।


২. যেসব আমলা-কামলা এবং ব্যবসায়ীর কারণে বিএনপির পতন হয়েছিল এবং যেসব নেতার আর্থিক দুর্নীতি সর্বজনবিদিত, যেসব লোক যেন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দলীয় অফিসগুলোতে ভিড় জমাতে না পারে তা শতভাগ নিশ্চিত না করা গেলে মাইনাস টু থিওরি আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। বিএনপিকে মনে রাখতে হবে, ২০০৭ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত হাজার হাজার আমলা-কামলা যারা বিএনপি জমানায় রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ পেয়েছিল তারা এক দিনের জন্যও নির্যাতিত বিএনপি নেতাকর্মীদের খোঁজ নেয়নি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তারা বিএনপিকে পরিহার করেছে, না চেনার ভান করেছে- আর কেউ কেউ আওয়ামী আমলাদের চেয়েও বেশি মাত্রায় বিএনপিকে নির্যাতন করেছে। তারা সবাই চাকরি বাঁচানোর জন্য আওয়ামী লীগকে সকাল-বিকাল আব্বা ডেকেছে। সুতরাং পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সেসব পুরোনো দলবাজদের তাড়াতে হবে এবং প্রশাসনকে দলীয় প্রভাবমুক্ত রাখার শপথ নিতে হবে।


৩. বিএনপির মূল শক্তি তার কর্মী-সমর্থক এবং ভোটার, যারা কি না সংসদ সদস্য প্রার্থীর মাধ্যমে দলের নিউক্লিয়াসে যুক্ত থাকে। সুতরাং সংসদীয় পদ্ধতি মেনে সব দলীয় সংসদ সদস্য প্রার্র্থীকে সম্মান ও মর্যাদা দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, সংসদ সদস্যদের মর্যাদা সমপর্যায়ের- এই বিশ্বাস ও আস্থা দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে ধারণ করতে হবে এবং সেভাবেই নিজ দলের প্রার্থীদের মূল্যায়ন করা হলে তৃণমূল বিএনপিতে দ্রুত শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।


৪. দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কিছু পদে দ্রুত পরিবর্তন আনা জরুরি। চাটুকার, দুর্নীতিবাজ এবং ইয়েস বস বলা লোকজন দিয়ে বর্তমান পরিস্থিতি সামাল দেয়া যাবে না।


৫. আগামীতে দু’টি সম্ভাবনা মাথায় রেখে এগোতে হবে। প্রথমত আরেকটি ওয়ান-ইলেভেনের প্রেক্ষাপট, মাইনাস টু থিওরি বাস্তবায়ন, বিএনপিকে নতুন ফাঁদে ফেলে ক্র্যাকডাউন ইত্যাদির মতো পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে হতে পারে। দ্বিতীয়ত, যদি নির্বাচন হয় তবে আওয়ামী লীগসহ, কিংস পার্টি এবং কিংস পার্টির অনুগত ছোট পার্টির যন্ত্রণা মোকাবেলা করতে হবে। দলের ভেতরে-বাইরে যারা বিভিন্ন সময়ে গোয়েন্দা সংস্থার হয়ে কাজ করেছে ও তাদের টাকা নিয়ে রাজপথে সরকারবিরোধী লম্ফঝম্প করেছে এবং এখনো সব দরবারে বাতি জ্বালানোর চেষ্টা করছে, এদের কাছ থেকে দলকে ১৩৩ মাইল নিরাপদ দূরত্বে রাখতে হবে।

লেখক : সাবেক সংসদ সদস্য


আরও খবর

মিডিয়ায় ৩০ বছর...

সোমবার ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

আসলে জীবনটা কী? অনেকটা সময় নিয়ে ভাবলাম

মঙ্গলবার ০৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫




ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির আভাস

প্রকাশিত:শুক্রবার ৩১ জানুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:সোমবার ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ |

Image

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হালকা অথবা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির আভাস দিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। সেইসঙ্গে সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থায় বলা হয়েছে, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ বিহার ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।

গতকাল সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় নোয়াখালী ও কুমিল্লা অঞ্চলসহ খুলনা, বরিশাল, ময়মনসিংহ, ঢাকা ও সিলেট বিভাগের দু'এক জায়গায় হালকা অথবা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং তা দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। ঘন কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নদী পরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগ সাময়িকভাবে ব্যাহত হতে পারে।

রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং দেশের অন্যত্র


আরও খবর

বাংলাদেশী নাগরিকত্ব পরিত্যাগ বেড়েছে

সোমবার ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫




ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলা বিএনপি সা: সম্পাদক নাসিমের পদ স্থগিত

প্রকাশিত:রবিবার ২৬ জানুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:রবিবার ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ |

Image

হাসিবুর রহমান, ঝালকাঠি প্রতিনিধি :

 ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক নাসিম আকনের পদ স্থগিত করেছে জেলা বিএনপি। সেই সাথে তাকে বিএনপির সকল কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ঝালকাঠি জেলা বিএনপির ফেসবুক পেইজে বিকেল পৌনে ৪টায় পোস্ট দেয়া আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সৈয়দ হোসেন ও সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট শাহাদাত হোসেন স্বাক্ষরিত এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, "ঝালকাঠি জেলা বিএনপি অধীন রাজাপুর উপজেলা বিএনপি'র সাধারণ সম্পাদক মোঃ নাসিম উদ্দিন আকন এর দলীয় পদ ২৫ জানুয়ারী হইতে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। সাথে সাথে তাকে দলীয় সমস্ত কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদেরকে রাজাপুর উপজেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক (দলীয় পদ স্থগিত) এর সাথে কোন প্রকার যোগাযোগ রক্ষা না করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হলো।"

এব্যাপারে নাসিম আকন জানান, আমাকে শোকজ করা হয়েছিলো। আমি তার জবাব দিয়েছি। এখন যদি আমাকে দলীয় পদ থেকে স্থগিত রাখে তাহলে আলহামদুলিল্লাহ। 


এর আগে গত ৮ জানুয়ারি চাঁদাবাজির অভিযোগে ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নাসিম উদ্দিন আকনকে শোকজ করেছে বিএনপি। নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যের কাছে চাঁদা দাবি ও হুমকির বিষয়টি বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় আপনার (নাসিম আকন) নামে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। ঝালকাঠি জেলা বিএনপির অধীনে উপজেলা বিএনপির দায়িত্বশীল পদে থাকাবস্থায় আপনার বিরুদ্ধে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার অভিযোগ থাকায় শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে আপনাকে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে কেন অব্যাহতি দেওয়া হবে না। তার উপযুক্ত জবাব আগামী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে জেলা বিএনপির নিকট জবাব দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিলো।


আরও খবর

গণতান্ত্রিক বিকেন্দ্রীকরণে আসবে সমতা

শুক্রবার ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫




সবজির দামে স্বস্তি ক্রেতাদের

প্রকাশিত:শুক্রবার ৩১ জানুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:সোমবার ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ |

Image

বাজারে বেড়েছে সবজির সরবরাহ ফলে দাম গত কয়েক সপ্তাহ ধরে কমে যাচ্ছে। দাম কমায় স্বস্তি ফিরেছে ক্রেতাদের। বিক্রেতারা বলছেন, গত দুই মাস আগের তুলনায় বাজারে সবজির সরবরাহ বেড়েছে, সেই সঙ্গে বেড়েছে বিক্রিও।

শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে সবজির দামের এমন চিত্র দেখা গেছে।

আজকের বাজারে প্রতি কেজি মিষ্টি কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকায়, শালগম প্রতি কেজি ৩০ টাকা, মুলা ৩০ টাকা, সাধারণ শিম ৩০ টাকা, আর বিচিসহ শিম ৪০ টাকা, লম্বা আকৃতির ৪০ টাকা, গোল বেগুন ৫০ টাকা, শসা ৫০ টাকা, খিঁড়া ৪০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, করলা (হাইব্রিড) ৬০ টাকা প্রতি কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া ফুলকপি, বাঁধাকপি প্রতি পিস ২০ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, গাজর ৪০ টাকা, ৩০ থেকে ৪০ টাকা, ঝিঙা ৫০ টাকা প্রতি কেজি এবং লাউ প্রতি পিস ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।



আরও খবর

রমজানে দুধ, ডিম ও মাংস বিক্রি করবে সরকার

সোমবার ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

রমজানে টিসিবির ট্রাকসেল চালু থাকবে

বুধবার ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫