Logo
শিরোনাম

বাংলাদেশী নাগরিকত্ব পরিত্যাগ বেড়েছে

প্রকাশিত:সোমবার ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৭ মার্চ ২০২৫ |

Image

গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পরিত্যাগের প্রবণতা বেড়েছে অভিজাত ধনীদের। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষাসেবা বিভাগের অধীন বহিরাগমন অনুবিভাগের হিসাবে, অভ্যুত্থান-পরবর্তী চার মাসে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পরিত্যাগের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে আগের চার মাসের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশিতে। এ নাগরিকত্ব পরিত্যাগকারীদের ৭০ শতাংশই নতুন নাগরিকত্ব নিয়েছেন ইউরোপের কয়েকটি দেশে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বহিরাগমন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত চার মাসে ৯৯ ব্যক্তি তাদের বাংলাদেশী নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করেছেন। আর আগস্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্ত চার মাসে নাগরিকত্ব পরিত্যাগকারীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে দ্বিগুণেরও বেশিতে, ২০৭ জনে। এর মধ্যে অভ্যুত্থানের পর প্রথম মাস অর্থাৎ আগস্টে বাংলাদেশী নাগরিকত্ব ছেড়ে দেন ৩৬ জন। সেপ্টেম্বরে এ সংখ্যা কমে দাঁড়ায় দুজনে। পরের দুই মাসে এ সংখ্যা ব্যাপক মাত্রায় বেড়ে যায়। অক্টোবরে বাংলাদেশী নাগরিকত্ব ত্যাগ করেন ১১২ জন। আর নভেম্বরে ত্যাগ করেছেন ৫৭ জন বাংলাদেশী।

অভ্যুত্থানের পরের চার মাসে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ছেড়ে ইউরোপের শীর্ষ অর্থনীতি জার্মানির নাগরিকত্ব নেয়া হয়েছে সবচেয়ে বেশি। যদিও দেশটিতে দ্বৈত নাগরিকত্বের সুযোগ আছে। এ তালিকায় পরের অবস্থানে আছে জার্মানির প্রতিবেশী অস্ট্রিয়া এবং পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ সিঙ্গাপুর। গত বছরের আগস্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ১৩২ জন জার্মান নাগরিকত্বের অনুকূলে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছেন। এ দেশের নাগরিকত্ব ছেড়ে অস্ট্রিয়ার নাগরিকত্ব নিয়েছেন ৪৫ জন। এছাড়া ১৪ জন চীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হংকংয়ের, চারজন সিঙ্গাপুরের ও দুজন ভারতের নাগরিকত্বের অনুকূলে বাংলাদেশী নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করেছেন।

বিধান অনুযায়ী বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করতে হলে দেশে অবস্থান করে বা যে দেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করা হয়, সেখানে থেকেই বাংলাদেশী দূতাবাসের মাধ্যমে এজন্য আবেদন করা যায়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সরকার নাগরিকত্ব পরিত্যাগের বিষয়টি মঞ্জুর করে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষাসেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব (বহিরাগমন-২ অধিশাখা) নাসরিন জাহান বলেন, মূলত নাগরিকত্ব পরিত্যাগের আবেদনগুলো আসে বিভিন্ন দেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে। তাদের সুপারিশের ভিত্তিতেই নাগরিকত্ব পরিত্যাগের আবেদন গ্রহণ করা হয়। যারা নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করেন, তাদের পুরো বিষয়টিই দূতাবাস থেকে যাচাই-বাছাই করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়ার জন্য আমাদের কাছে পাঠানো হয়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত এক বছরে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পরিত্যাগকারীদের মধ্যে সিংহভাগই অভিজাত ধনী। তাদের মধ্যে বিগত সরকারের আমলের কয়েকজন অলিগার্কও রয়েছেন। শেখ হাসিনার পতনের পর দেশ থেকে অর্থ পাচারসহ নানা আর্থিক অপরাধের দায়ে শাস্তি এড়াতেও কেউ কেউ বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছেন বলে কথিত আছে। আবার দক্ষ কর্মীর ক্যাটাগরিতে বিদেশে অভিবাসন গ্রহণকারীরা সংশ্লিষ্ট দেশের শ্রমবাজারে একক নাগরিকত্বের সুবিধা নিতে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগের নজিরও আছে অনেক। আবার নিরাপত্তাহীনতা ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমাবনতিও অনেকের নাগরিকত্ব পরিত্যাগের সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলতে পারে বলে অভিমত রয়েছে।

বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগকারীদের অন্যতম সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান আজিজ খান। বিগত সরকারের আমলে ক্ষমতাঘনিষ্ঠ অলিগার্ক হিসেবে পরিচিত তিনি। দীর্ঘদিন ধরেই সিঙ্গাপুরে স্থায়ী নিবাসী (পারমানেন্ট রেসিডেন্ট) হিসেবে বসবাস করে আসছিলেন তিনি। তবে তার নাগরিকত্ব ছিল বাংলাদেশের। কিছুদিন আগেই তিনি সিঙ্গাপুরের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন। দেশটির আইনে দ্বৈত নাগরিকত্বের কোনো সুযোগ নেই। এজন্য গত বছর বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছেন আজিজ খান।

সিঙ্গাপুরের নাগরিকত্ব গ্রহণকারী অলিগার্কদের আরেকজন এস আলম গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা সাইফুল আলম মাসুদ, যিনি এস আলম হিসেবেও পরিচিত। গত নভেম্বরে এস আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের পক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংকে তাদের আইনজীবীদের পাঠানো একটি চিঠির তথ্য দেশী-বিদেশী গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়। চিঠিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করার হুমকি দিয়ে বলা হয়, ১৯৮০ সালে বাংলাদেশের বিদেশী বেসরকারি আইন অনুসারে সিঙ্গাপুরের নাগরিক হিসেবে এস আলম ও তার পরিবারের অধিকার ও সুরক্ষা আছে। বিনিয়োগকারী হিসেবে নিজেদের অধিকার রক্ষা করতে এস আলমের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। শুধু আন্তর্জাতিক সালিশি মামলা নয়, প্রয়োজনে অন্যান্য ব্যবস্থাও নেয়া হবে।

তবে এস আলম সিঙ্গাপুরের নাগরিকত্ব কবে গ্রহণ করেছেন, সে বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনো তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, কেউ সিঙ্গাপুরের নাগরিকত্ব পেতে চাইলে তাকে আগে বর্তমান নাগরিকত্ব ত্যাগ করে এর তথ্যপ্রমাণ স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে হয়। এর পরই তিনি দেশটির নাগরিক হওয়ার সুযোগ পান। সিঙ্গাপুরের আইনে দ্বৈত নাগরিকত্ব রাখার সুযোগ না থাকায় ওই ব্যক্তিকে আগে বাংলাদেশের পাসপোর্ট হস্তান্তর করতে হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একটি অনুমোদন নিতে হবে যে তিনি সিঙ্গাপুরের নাগরিকত্ব নেবেন এবং তিনি আর বাংলাদেশের নাগরিক নন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের আর্থসামাজিক পরিস্থিতি, নিরন্তর রাজনৈতিক অস্থিরতা, দুর্নীতির কারণে আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান ও উচ্চদক্ষতার ব্যক্তিদের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদে বা স্থায়ীভাবে বিদেশে যাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। আবার বিচার এড়াতেও বিগত সরকারের আমলে সুবিধাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের নাগরিকত্ব ত্যাগের প্রবণতা বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‌তারা কেন নাগরিকত্ব ত্যাগ করছে সেটি তো অনুমান করে বলা যাচ্ছে না। একেকজনের কারণটা একেক রকম হতে পারে হয়তো। তবে মোটা দাগে আমার যেটা মনে হয়, বিগত সরকারের আমলের অলিগার্করা বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাদের অনেকেরই বিচার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। অনেকেই বিদেশে পালিয়েছেন। ফলে বিচার থেকে রেহাই পাওয়ার জন্যও অনেকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করতে পারেন। কারণ বাংলাদেশের নাগরিক না হলে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনা বা বিচারের মুখোমুখি করা একটু কঠিন এবং লম্বা প্রক্রিয়া।

অনেকটা একই বক্তব্য অভিবাসন ও শরণার্থীবিষয়ক বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনীরেরও। তিনি বলেন, যখন রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হয়, বিশেষ করে সে সময় যদি নিরাপত্তার ইস্যু থাকে তখন এ ধরনের ঘটনা ঘটতে দেখা যায়। এখনকার সময়ে বিষয়টি প্রায় একই। প্রথমত, যারা নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছে, তারা মনে করছে বাংলাদেশে থাকা নিরাপদ না। যেহেতু একটা আইনি প্রক্রিয়া আছে, সুযোগও আছে, সে সুযোগটা তারা নিচ্ছে। এখন এ সুযোগ অনেকেই নিতে পারবে না। আমরা এ-ও দেখেছি যে অনেকেই বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন, তারা পারেননি। কিন্তু ব্যবসায়ীসহ অনেকের ক্ষেত্রে সে সুযোগটা আছে। কেননা তাদের পরিবারের অনেকেই বিদেশে থাকে। যেটা আমরা শুনেছি বিভিন্ন সময়ে তারা বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করেছে, সেখানে ব্যাংকে তাদের প্রচুর অর্থ আছে। যেকোনো সময়ের জন্য এমন সুযোগ তারা একটা ট্রাম্প কার্ডের মতো হাতে রাখেন। যাতে যেকোনো সংকটের সময় সেখানে থেকে যেতে পারেন এবং বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করতে পারেন। নাগরিকত্ব ত্যাগ করার আরেকটি কারণ হতে পারে যে দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী বা রাজনৈতিক দলের শীর্ষ সন্ত্রাসীদের দেশে ফেরত আনার প্রক্রিয়াটি বাধাগ্রস্ত হয়। হয়তো রাজনৈতিক পটপরিবর্তন না ঘটলে তারা থেকেই যেত। তারা যে দেশেই থাকুক না কেন, সংশ্লিষ্ট দেশে নিয়োজিত বাংলাদেশ দূতাবাস তাদের কিছুই করতে পারবে না। কারণ তারা পুরোপুরি ওই দেশেরই নাগরিক।

অভিযোগ রয়েছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অনেক দুর্নীতিবাজ ও নব্য ধনীর বিদেশে অর্থ পাচারের পাশাপাশি পরিবারের সদস্যরা বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। ওই সরকারের শেষ দিকে বাংলাদেশীদের আরো বেশি দেশের দ্বৈত নাগরিকত্ব নেয়ার সুযোগ তৈরি করে দেয়া হয়। আর কয়েকটি শীর্ষ ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর কর্ণধার ও তাদের পরিবারের সদস্যরা বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করে অন্য দেশের নাগরিকত্ব নিয়েছেন। বর্তমান আইন অনুযায়ী, কোনো বাংলাদেশী অন্য দেশের পাসপোর্ট (অর্থাৎ নাগরিকত্ব) গ্রহণের পর বাংলাদেশের দ্বৈত নাগরিকত্ব রাখতে না চাইলেও এ দেশে ৭৫ হাজার ডলার স্থায়ী বিনিয়োগ করে সহজেই স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ পান।

বাংলাদেশী নাগরিকত্ব পরিত্যাগের পাশাপাশি গ্রহণের ঘটনাও রয়েছে। যদিও সেটি সংখ্যায় খুবই কম। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ১৯৮৮ সালে প্রথম চারজন বিদেশীকে নাগরিকত্ব দেয় বাংলাদেশ। ১৯৮৯ সালে নাগরিকত্ব পান ৩৩ বিদেশী। এরপর ২০০৩ ও ২০১০ সাল ছাড়া প্রতি বছরই কিছু না কিছু বিদেশীকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত মোট ৪৫২ জন বিদেশী নাগরিক বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পেয়েছেন। তাদের বেশির ভাগই নাগরিকত্ব পেয়েছেন বৈবাহিক সূত্রে। দীর্ঘদিন ধরে বসবাসের কারণেও বেশ কয়েকজনকে নাগরিকত্ব দেয়া হয়েছে।

বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পরিত্যাগকারীরা কোনো অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত হলে তাদের দেশে ফিরিয়ে বিচারের মুখোমুখি করার প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে আইনজীবী শিশির মনির বলেন, কোনো অপরাধে অভিযুক্ত হলে সেই অপরাধ সংঘটনের পর নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করলেও তাদের নামে ফৌজদারি মামলা চালাতে কোনো বাধা নেই। তবে যেসব দেশে মৃত্যুদণ্ড নেই, কিন্তু বাংলাদেশে এ ধরনের শাস্তিযোগ্য অপরাধের দায়ে বিচারের জন্য বন্দি প্রত্যর্পণ করা যায় না। কেবল যেসব দেশের সঙ্গে বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তি আছে, সেসব দেশের সঙ্গে বন্দি প্রত্যর্পণ করা যায়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ভারতের সঙ্গে বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তি থাকায় ওইসব দেশ থেকে বন্দি আনতে পারি। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুরের সঙ্গে আমাদের বন্দি বিনিময় চুক্তি না থাকায় বিষয়টি জটিল। যদি কেউ দেশে অভিযুক্ত হওয়ার ভয়ে নাগরিকত্ব ত্যাগ করে, তাহলে নিশ্চয়ই আন্তর্জাতিক আইনজীবীদের পরামর্শ নিয়েই কাজটি করবে। বিষয়টি নিয়ে আন্তঃদেশীয় বিবাদ দেখা দিলে তা আইনের জটিল অংশ। এক্ষেত্রে দক্ষ লোকবল ও দক্ষ কূটনীতিক লাগবে। এমনও হতে পারে, আন্তর্জাতিক আদালতে গিয়েও লড়তে হতে পারে। এটি বেশ জটিল একটি প্রক্রিয়া।

 


আরও খবর



রকেট ডিস্ট্রিবিউটার পয়েন্টের ১৭ লাখ টাকা নিয়ে উধাও সুপারভাইজার

প্রকাশিত:বুধবার ০৫ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:রবিবার ২৩ মার্চ ২০২৫ |

Image

রিফাত আহমেদ রাসেল :

নেত্রকোনার দুর্গাপুরে ডাচ-বাংলার মোবাইল ব্যাংকিং সেবা রকেট ডিস্ট্রিবিউটর পয়েন্টের ১৭ লাখ টাকা নিয়ে উধাও হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি সুপারভাইজার শিহাব উদ্দিন। এই ঘটনায় দুর্গাপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। 

বুধবার রাতে এই ঘটনা নিশ্চিত করেন দুর্গাপুর থানার ওসি বাচ্চু মিয়া। 

এর আগে গত সোমবার (৩ মার্চ) ব্যবসায়িক কাজের কথা বলে দুর্গাপুর থেকে জারিয়া-ঝানজাইল বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দেন সুপারভাইজার শিহাব। এরপর থেকেই ব্যক্তিগত মোবাইল নাম্বার সহ কোম্পানির মুল সিমকার্ড (মাদার সিম) বন্ধ করে গা ঢাকা দেন তিনি।

এ ঘটনায় দুর্গাপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন ডাচ-বাংলার মোবাইল ব্যাংকিং সেবা রকেট ডিস্ট্রিবিউটর ও দুর্গাপুর পৌর শহরের কথা টেলিকমের স্বত্বাধিকারী মোঃ মোক্তার হোসেন শামীম। 

অভিযুক্ত শিহাব উদ্দিন দুর্গাপুর সদর ইউনিয়নের ফারাংপাড়া গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শিহাব ওই প্রতিষ্ঠানের একজন বিশ্বস্ত কর্মচারী হওয়ায় রকেট ব্যবসার সকল  দিক নিজেই পরিচালনা করতেন। ব্যবসার মূল (মাদার সিম) সিমকার্ড নং- ০১৮৬৫ ----- ৩১ সহ মোবাইল সেট তার কাছেই ছিলো। উক্ত সিমকার্ডে দুই ধাপে দেয়া মোট ১৭ লক্ষ টাকা লোড করা অবস্থায় ছিলো। এ অবস্থায় গত ৩ মার্চ দুপুরে ব্যবসার মূল সিমকার্ড সহ মোবাইল সেট নিয়ে ঝানজাইল বাজারে যাওয়ার কথা বলে প্রতিষ্ঠান থেকে বের হয়ে যান শিহাব উদ্দিন। 

ওইদিন সন্ধ্যায় শিহাবের ব্যক্তিগত নম্বরে ফোন করলে, সে পূর্বধলা এলাকায় আছেন এবং কিছুক্ষন পরেই রওনা দিবেন বলে জানান। পরবর্তিতে তারাবির নামাজ শেষে রাতে শিহাব উদ্দিনের চাচা আজগর আলী প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারীকে মুঠোফোনে জানায়, শিহাব উদ্দিন এখনো বাড়ী ফিরেনি। সাথে সাথে প্রতিষ্ঠান থেকে শিহাব উদ্দিনের ব্যক্তিগত নাম্বার সহ কোম্পানীর মাদার সিমকার্ডে ফোন দিলে সকল ফোনই বন্ধ পাওয়া যায়। পরবর্তিতে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি ও তার পরিবারের সদস্যদের কাছে খোঁজ নিলেও তার কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। 


এ ব্যপারে প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মো. মোক্তার হোসেন শামীম জানান, শিহাবের কাছে থাকা সকল ফোন নাম্বার বন্ধ পেয়ে রকেট অফিসের ১৬২১৬ হট লাইন নম্বরে ফোন করে জানতে পারি, আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মাদার সিমকার্ডে ১৫,৫০০/- টাকা ছাড়া আর কোন টাকা নাই। ওইদিন সহ বিভিন্ন সময়ে মাদার সিম থেকে প্রায় ১৭ লক্ষ টাকা উঠিয়েছে। কোম্পানী সুত্রে জেনেছি, দীর্ঘদিন ধরেই জালিয়াতি মাধ্যমে টাকা গুলো অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছিল যা আমার নজরে আসেনি কারন প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় হিসাব তার কাছেই থাকতো। 

এ ব্যপারে দুর্গাপুর থানার ওসি বাচ্চু মিয়া বলেন, এ ঘটনা নিয়ে প্রতিষ্ঠানের মালিক একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। যাহা মামলার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। 



আরও খবর



এনসিপি’র ২১৭ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন

প্রকাশিত:রবিবার ০২ মার্চ 2০২5 | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৭ মার্চ ২০২৫ |

Image

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ২১৭ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদিত হয়েছে। দলটির সদস্যসচিব আখতার হোসেনের সই করা এক পত্রে কমিটির তালিকা প্রকাশ করা হয়।

এতে বলা হয়ে, ২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে একটি ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে বাংলাদেশের নাগরিকরা মুক্ত হয়েছে। তবে শহীদ মিনারে ঘোষিত অভ্যুত্থানের এক দফা তথা ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। একটি রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী হিসেবে এই জনপদের মানুষ ইতিহাসের নানান সময়ে নিজেদের হাজির করেছে। প্রায় ২০০ বছরের উপনিবেশবিরোধী লড়াইয়ের অংশ হিসেবে পাকিস্তান আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমরা ১৯৪৭ সালে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র অর্জন করি। কিন্তু পাকিস্তান রাষ্ট্র এই জনপদের মানুষের সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক মুক্তির আকাঙ্ক্ষকে ধারণ ও বাস্তবায়ন করতে ব্যর্থ হয়েছে।

মুক্তির আকাঙ্ক্ষা থেকে এই জনপদের মানুষ ১৯৭১ সালে একটি রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী থেকে স্বাধীনতা অর্জন করে। কিন্তু স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ১৯৭২ সালে প্রণীত মুজিববাদী সংবিধানের মধ্য দিয়ে নির্মিত বাংলাদেশের রাষ্ট্রকাঠামো অগণতান্ত্রিক স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিবাদী শাসন প্রতিষ্ঠার পথ খুলে দিয়েছে। যার ফলে এ দেশের নাগরিকরা ইতিহাসের বিভিন্ন পরিক্রমায় বাকশাল, স্বৈরতন্ত্র এবং সর্বশেষ ফ্যাসিবাদের শিকার হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের রাষ্ট্রকাঠামো থেকে ফ্যাসিবাদের সকল উপাদান ও কাঠামোকে বিলোপ করতে এবং এই জনপদের মানুষের মুক্তির আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবে রূপদানে একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বাস্তবায়নে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে ও জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে আমরা, বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা, ২০২৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি রাজধানী ঢাকার মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি নামে নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘোষণা করেছি।

জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম বীর যোদ্ধা শহীদ ইসমাঈলের বোন মিম আক্তার জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক হিসেবে নাহিদ ইসলাম এবং সদস্য সচিব হিসেবে আখতার হোসেনের নাম ঘোষণা করেন। উক্ত আহ্বায়ক কমিটি (আংশিক) আগামী এক বছরের মধ্যে এই রাজনৈতিক দলের গঠনতন্ত্র ও ইশতেহার প্রণয়ন, কর্মসূচি বাস্তবায়ন ও সাংগঠনিক বিস্তার কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

কমিটির আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন ও আরিফুল ইসলাম আদীব, যুগ্ম আহ্বায়ক নুসরাত তাবাসসুম, মনিরা শারমিন, মাহবুব আলম, সারোয়ার তুষার, অ্যাডভোকেট মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন, তাজনূভা জাবীন, সুলতান মুহাম্মদ জাকারিয়া, ড. আতিক মুজাহিদ, আশরাফ উদ্দীন মাহাদী, অর্পিতা শ্যামা দেব, তানজিল মাহমুদ, অনিক রায়, খালেদ সাইফুল্লাহ, জাবেদ রাসিন, এহতেশাম হক ও হাসান আলী।

সদস্যসচিব আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা ও নাহিদা সারওয়ার নিভা, যুগ্ম সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল আমিন, আরিফ সোহেল, মো. রশিদুল ইসলাম (রিফাত রশিদ), মো. মাহিন সরকার, মো. নিজাম উদ্দিন, আকরাম হুসেইন, এস এম সাইফ মোস্তাফিজ, সালেহ উদ্দিন সিফাত (দপ্তর), আলাউদ্দীন মোহাম্মদ, ফরিদুল হক, মো: ফারহাদ আলম ভূঁইয়া, মোহাম্মদ মিরাজ মিয়া, লুৎফর রহমান, মো. মঈনুল ইসলাম (তুহিন), মুশফিক উস সালেহীন, ডা. জাহেদুল ইসলাম, জহিরুল ইসলাম মুসা, অ্যাডভোকেট হুমায়রা নূর, মোশফিকুর রহমান জোহান, মোল্লা মোহাম্মদ ফারুক এহসান, সাগুফতা বুশরা মিশমা, আফসানা ছপা, আহনাফ সাইদ খান, আবু সাঈদ মোহাম্মদ সুজা উদ্দিন, মীর আরশাদুল হক, ফয়সাল মাহমুদ শান্ত, তারেকুল ইসলাম (তারেক রেজা), মশিউর রহমান, জয়নাল আবেদীন শিশির, গাজী সালাউদ্দীন তানভীর, তামিম আহমেদ, তাহসীন রিয়াজ ও প্রীতম দাশ।

উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক- সাইফুল্লাহ হায়দার, আলী নাছের খান, সাকিব মাহদী, মেজর (অব.) আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, সাদিয়া ফারজানা দিনা, অলিক মৃ, আসাদুল্লাহ আল গালিব, হানিফ খান সজীব, আবু সাঈদ লিয়ন। সংগঠক: রাসেল আহমেদ, ইমরান ইমন, ফরহাদ সোহেল, রফিকুল ইসলাম আইনী, মোস্তাক আহমেদ শিশির, আজাদ খান ভাসানী, প্রীতম সোহাগ, দ্যুতি অরণ্য চৌধুরী, এম এম শোয়াইব, নাহিদ উদ্দিন তারেক, আব্দুল্লাহ আল মনসুর, মিয়াজ মেহরাব তালুকদার, অ্যাডভোকেট শিরীন আক্তার শেলী, আবুল বাশার, আব্দুল্লাহ আল মুহিম, নাজমুল হাসান সোহাগ, খায়রুল কবির ও সাঈদ উজ্জ্বল।

দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক- মোহাম্মদ আতাউল্লাহ, ডা. মাহমুদা আলম মিতু, মোল্যা রহমাতুল্লাহ, এস এম শাহরিয়ার, মেজবাহ কামাল মুন্না, জোবাইরুল হাসান আরিফ ও ইমন সৈয়দ। সংগঠক: আকরাম হোসাইন রাজ, হামযা ইবনে মাহবুব, ওয়াহিদুজ্জামান আসাদ বিন রনি, মোহাম্মাদ রাকিব, আরমান হোসাইন, মো. রাসেল আহমেদ, অ্যাডভোকেট মনজিলা ঝুমা, শওকত আলী, ডা. আশরাফুল ইসলাম সুমন, মুনতাসির মাহমুদ, ডা. মিনহাজুল আবেদীন, সাকিব শাহরিয়ার, আজিজুর রহমান রিজভী, আব্দুর রহমান, ফয়সাল আহমেদ, নয়ন আহমেদ, কাউছার হাবিব, আব্দুল্লাহ আল মামুন ফয়সাল, আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জিহান, মাওলানা সানাউল্লাহ খান, আরিফুল ইসলাম, নফিউল ইসলাম, মো. রাকিব হোসেন।

মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ও সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ। যুগ্ম সমন্বয়ক: অ্যাডভোকেট মোঃ তারিকুল ইসলাম (যুব), ডা. মো: আব্দুল আহাদ (চিকিৎসা), মাজহারুল ইসলাম ফকির (শ্রমিক), দিলশানা পারুল, আবু হানিফ, আব্দুজ জাহের, কৃষিবিদ গোলাম মোর্তজা সেলিম, মেহেরাব সিফাত, অ্যাডভোকেট সাকিল আহমাদ, আশেকীন আলম, ডা. জাহিদুল বারী, কৈলাশ চন্দ্র রবিদাস, ভীম্পাল্লী ডেভিড রাজু, শেখ মোহাম্মদ শাহ মঈনুদ্দিন, খান মুহাম্মদ মুরসালীন, সাদ্দাম হোসেন, আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল, নাভিদ নওরোজ শাহ, তুহিন মাহমুদ, মো. আরিফুর রহমান (তুহিন), সাগর বড়ুয়া, রাফিদ এম ভূঁইয়া, মাহবুব আলম।

আহ্বায়ক কমিটির সদস্যরা হলেন:

সানজিদা খান দীপ্তি (শহীদ আনাসের মা), খোকন চন্দ্র বর্মন (আহত), মো. ফাহিম রহমান খান পাঠান, এহসানুল মাহবুব জুবায়ের (সন্দ্বীপ), ঋআজ মোরশেদ, ইমরান নাঈম, মশিউর আমিন শুভ, আল আমিন শুভ, প্লাবন তারিক, ওমর ফারুক, আসাদুল ইসলাম মুকুল, ফিহাদুর রহমান দিবস, মো. তৌহিদ আহমেদ আশিক, মো. আব্দুল মুনঈম, রকিব মাসুদ ইনজামুল হক রামিম, সৈয়দা নীলিমা দোলা, এস আই শাহীন, আসাদুজ্জামান হৃদয়, তানহা শান্তা, ডা. মশিউর রহমান, ইমরান শাহরিয়ার, এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, আব্দুল্লাহিল মামুন নিলয়, আজাদ আহমেদ পাটওয়ারী, জাহিদুল ইসলাম সৈকত, আরজু নায়েম, ডা. মনিরুজ্জামান, তাওহিদ তানজিম, মোহাম্মদ উসামা, মাহবুব-ই-খোদা, তারিক আদনান মুন, নাহিদা বুশরা, তৌহিদ হোসেন মজুমদার, মারজুক আহমেদ, নীলা আফরোজ, নূরতাজ আরা ঐশী, সাইয়েদ জামিল, শেখ খায়রুল কবির আহমেদ, রফিকুল ইসলাম কনক, মীর হাবীব আল মানজুর, মো. ইমরান হোসেন।

আরও রয়েছেন- মো. আরিফুল দাড়িয়া, মো. ইনজামুল হক, আবু সাঈদ মুসা, ডা. আতাউর রহমান রাজিব, সালমান জাভেদ, ইমামুর রশিদ, সাইফুল ইসলাম, ডা. সাবরিনা মনসুর, অ্যাডভোকেট মো. মনিরুজ্জামান, অ্যাডভোকেট ছেফায়েত উল্লাহ, আহমেদুর রহমান তনু, দিদার শাহ, রাদিথ বিন জামান, ফারিবা হায়দার, সাইফুল ইসলাম, ইয়াহিয়া জিসান, সোহেল রানা, রিদওয়ান হাসান, হাসিব আর রহমান, ব্যারিস্টার নুরুল হুদা জুনেদ, জাওয়াদুল করিম, আল আমিন টুটুল, ইসমাইল হোসেন সিরাজি, ইফতেখারুল ইসলাম, হাফসা জাহান, জায়েদ বিন নাসের, মামুন তুষার, ওমর ফারুক, সালাহউদ্দিন জামিল সৌরভ, মো. হিফজুর রহমান বকুল, আসিফ মোস্তফা জামাল, জোবায়ের আলম, মেজর (অব.) মো. সালাউদ্দিন ও খালেদ সাইফুল্লাহ জুয়েল।


আরও খবর



হাসিনার শাসনামল ছিল স্বৈরতন্ত্র,দুর্নীতিতে পরিপূর্ণ

প্রকাশিত:সোমবার ১০ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৭ মার্চ ২০২৫ |

Image

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের পর বাংলাদেশের ক্ষমতায় এসেছে ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সোমবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাক্ষাৎকারভিত্তিক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাবেক আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পুরোপুরি সক্রিয় হতে পারেনি। পুলিশের নীতি-নির্ধারক পর্যায়ের কয়েকজন কর্মকর্তা সরকার পতনের পর থেকে এখনও কাজে যোগ দেননি।

পুলিশের যথাযথ সক্রিয়তার অভাবে বাংলাদেশের সর্বত্র সব সবধরনের অপরাধ বাড়ছে, গোষ্ঠীবদ্ধ অপরাধও (গ্যাং ক্রাইম) বাড়ছে ব্যাপক হারে। এই মুহূর্তে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহম্মদ ইউনূসের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। শিক্ষার্থী-জনতার ব্যাপক অভ্যুত্থানের মুখে টিকতে না পেরে গত বছরের ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা; এখনও সেখানেই আছেন তিনি।

তার বিদায়ের মধ্যে দিয়ে পতন ঘটে বাংলাাদেশে ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের। হাসিনার দেশত্যাগের ৩ দিন পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন বিশ্বখ্যাত বাংলাদেশি অর্থনীতিবিদ ড. মুহম্মদ ইউনূস, যিনি ‘দরিদ্রদের স্বাবলম্বী করতে ক্ষুদ্রঋণ’ প্রকল্পের ধারণা আবিষ্কার ও প্রয়োগের জন্য ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল জয় করেছেন।

৮ আগস্ট যখন তিনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন, তখনও অভ্যুত্থানের ধকলে বিবর্ণ বাংলাদেশ। সড়ক-মহাসড়ক রক্তে ভেজা; হাসপাতালের মর্গে পড়েছিল ১ হাজারের বেশি মানুষের লাশ, যারা শেখ হাসিনার নেত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে জীবন দিয়েছেন।

দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করেছিলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তারপরও বরাবরই তাকে রাজনৈতিক হুমকি বলে মনে করতেন শেখ হাসিনা। এ কারণে বছরের পর বছর ধরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের হয়রানি-অপমান-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তিনি। গত ১৫ বছরের বেশিরভাগ সময়ই অবশ্য বাংলাদেশের বাইরেই কাটিয়েছেন ইউনূস।

কিন্তু বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা যখন তাকে দেশের অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান হওয়ার আর্জি জানান, তিনি তাতে সম্মতি জানান। ব্রিটেনের সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘বিগত ১৫ বছরে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা বিশাল এবং অভূতপূর্ব। বিগত সরকার দেশকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে ফেলেছে। বাংলাদেশ এখন আরেকটি গাজা। বিগত সরকার এই দেশের সমস্ত প্রতিষ্ঠান, নীতি, জনগণ ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ককে ধ্বংস করে ফেলেছে।

প্রসঙ্গত, শেখ হাসিনার গত ১৫ বছরের শাসনামল ছিল স্বৈরতন্ত্র, সহিংসতা এবং দুর্নীতিতে পরিপূর্ণ। বিশেষ করে শিক্ষার্থী-জনতার অভ্যুত্থান দমন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে যে ১ হাজার ৪ শতাধিক নিহতের ঘটনা ঘটেছে, সেজন্য জাতিসংঘও তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত করেছে। হাসিনা অবশ্য সব অভিযোগই অস্বীকার করেছেন।

মুহম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হওয়ার পর অনেকেই আশা করেছিলেন, বাংলাদেশে একটি নতুন যুগের সূচনা ঘটতে চলেছে। কিন্তু আজ ছয় মাস পর আপনি যদি ঢাকার সড়কে হাঁটেন, তাহলে অনুভব করবেন যে দেশটি ফের খাদের দিকে ধাবিত হচ্ছে। বাংলাদেশে যদিও ইউনূসের প্রতি ব্যাপক শ্রদ্ধা ও গ্রহণযোগ্যতা এখন পর্যন্ত রয়েছে, কিন্তু সেই সঙ্গে এও সত্য যে অপরাধ দমন ও শান্তি রক্ষায় তার নেতৃত্বাধীন সরকারের ক্ষমতা নিয়ে ওঠা প্রশ্ন দিন দিন তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে।

এর একটি বড় কারণ, শেখ হাসিনার শাসনামলে যারা বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ ও নীতি নির্ধারক পর্যায়ের কর্মকর্তা ছিলেন, তাদের মধ্যে কয়েকজন ধরা পড়েছেন এবং বাকিরা সবাই আত্মগোপনে আছেন। ফলে সার্বিক চেইন অব কমান্ডে একধরনের ফাঁকা ভাব বা শূন্যতা দেখা দিয়েছে, যা নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতির জন্য দায়ী। ঢাকার রাস্তাঘাটে ব্যাপকভাবে বাড়ছে সংঘবদ্ধ অপরাধ বা গ্যাং তৎপরতা। অপরাধ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার অভিযোগে সোমবার অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর কুশপুত্তলিকা পুড়িয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা।

অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও বর্তমানে নবগঠিত রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টির (এনসিপি) প্রধান নাহিদ ইসলাম দ্য গার্ডিয়ানকে বলেছেন, ‘‘বর্তমানে দেশজুড়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যে অবস্থা, তাতে শিগগিরই একটি অবাধ ও মুক্ত নির্বাচন হওয়া অসম্ভব।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্ক্ষলা রক্ষার দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী। গত সপ্তাহে এক অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধান বলেছেন, ‘‘দেশ নৈরাজ্যের দিকে চলছে’’ এবং যদি এটি অব্যাহত থাকে, তাহলে বাংলাদেশের ‘‘স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব সংকটের মুখে পড়বে।

গার্ডিয়ানকে অবশ্য ইউনূস বলেছেন, সেনাবাহিনীর সঙ্গে তার সম্পর্ক ‘খুবই ভালো’ এবং সেনাপ্রধানের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত তার কাছে ‘কোনো চাপ আসেনি।


আরও খবর



নওগাঁয় সাক্ষর জাল করে চাকুরীচ্যুত করার অভিযোগ

প্রকাশিত:শনিবার ১৫ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৭ মার্চ ২০২৫ |

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টার :

নওগাঁ জেলার বদলগাছী উপজেলার গোয়াল ভিটা আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোঃ আনোয়ার হোসেন এবং সহকারী শিক্ষক মোঃ উজাউল ইসলামের বিরুদ্ধে সাক্ষর জাল করে মোঃ আব্দুল হামিদ নামের এক দপ্তরীকে চাকুরীচ্যুত করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই দপ্তরী গোপনে অব্যহতি পত্র প্রস্তুত করে চাকুরী থেকে ইস্তফা দেখানো ও বেতন থেকে বঞ্চিত করায় মাদ্রাসার সভাপতিসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মাদ্রাসার দপ্তরী পদে আব্দুল হামিদ গত ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দের ১ জুন থেকে নিয়মিতভাবে কর্মরত ছিলেন। তার ৮ম পাশের সনদ ও জাতীয় পরিচয় পত্র অনুযায়ী জন্ম তারিখ ১ জানুয়ারি ১৯৬২। এই মোতাবেক সরকারি বিধি অনুসারে তার চাকুরী থেকে অবসর যাওয়ার কথা ২০২১ খ্রিস্টাব্দের ৩১ ডিসেম্বর। কিন্তু ২০২১ খ্রিস্টাব্দের আগষ্ট মাসে অধ্যক্ষ তাকে জানান যে, তার চাকুরীর বয়স শেষ হয়েছে বিধায় তিনি আমাকে তৎপরবর্তী সময়ের বেতন-ভাতা ও প্রদান করেননি। তিনি সরল বিশ্বাসে তাঁর কথা মেনে নিয়েছেন। বর্তমান কমিটি আয় ব্যয় পর্যালোচনায় দেখতে পান যে, তার চাকুরী থাকা অবস্থায় তার ইস্তফা দেখনো হয়েছে খবরটি শুনে এবং অব্যাহতি পত্র দেখে তিনি বিস্মিত হন। 

অভিযোগে তিনি আরও বলেন, সহকারী শিক্ষক উজাউল ইসলাম নিজ হাতে তার অব্যহতি পত্র প্রস্তুত করে সুকৌশলে তার অজান্তে তাকে চাকুরী হতে ইস্তফা দেখিয়াছেন। উক্ত ইস্তফা পত্র মো. উজাউল ইসলামের নিজ হাতে লেখা যাহাতে আমি স্বাক্ষর করি নাই। অথচ সরকারী বিধান মতে আমার আরো ৪ মাস চাকুরী ছিল। 

ভুক্তভোগী দপ্তরী আব্দুল হামিদ বলেন, অধ্যক্ষ এবং উজাউল আমাকে বিনা বেতনে প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে নতুন দপ্তরী নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত আমাকে প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পালন করতে বলেন। সে মোতাবেক আমার দ্বারা ২০২২ খ্রিস্টাব্দের ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিনা বেতনে মাদ্‌রাসার দায়িত্ব কর্তব্য পালন করে নিয়েছেন। আমার সম্পূর্ণ অজ্ঞাতসারে আমার ইস্তফাপত্র প্রস্তুত করে আমাকে বেতন থেকে বঞ্চিত করায় আমি উক্ত ৪ মাসের বেতন এবং বিধি অনুযায়ী অবসর ও কল্যাণ সুবিধা থেকে আংশিক বঞ্চিত ও প্রতারণার শিকার হয়েছি। আমার এই ইস্তফা পত্রে আমি স্বাক্ষর করিনি। এটা উজাউল ও অধ্যক্ষ মিলে করেছে। আমি এর বিচার চাই।

জানতে চাইলে ইস্তফা পত্র লেখে দেওয়ার কথা শিকার করে শিক্ষক উজাউল বলেন, আমাকে ড্রাফট করে দিয়েছে সেটাই আমি লেখে দিয়েছি। আমি এতে স্বাক্ষর করিনি। তবে ভুক্তভোগীর স্বাক্ষরের সাথে ইস্তফাপত্রের স্বাক্ষরের মিল নেই কেন? এ প্রশ্নের কোন সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।

এ বিষয়ে জানতে অধ্যক্ষ আনোয়ার হোসেনের মুঠোফোনে কল দিলেও সেটা বন্ধ পাওয়ায় তার কোন বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে মাদ্রাসার সভাপতি দেলোয়ার হোসেন বলেন, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে সত্যতা পেলে বিধিমতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


আরও খবর



গণতন্ত্রের পথচলা নিশ্চিত করার সুযোগ এসেছে

প্রকাশিত:বুধবার ২৬ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৭ মার্চ ২০২৫ |

Image

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বললেন, ফ্যাসিবাদের পতনের পর এখন সুযোগ এসেছে বাংলাদেশের সব দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দল, সংগঠন, ব্যক্তি এবং জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথচলা নিশ্চিত করা।দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে সংহত করার প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি।

মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী স্বাক্ষরিত এক বানীতে তিনি এসব কথা বলেন।

বাণীর শুরুতে তারেক রহমান সবাইকে স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস আমাদের জাতীয় জীবনে নবীন সূর্যোদয়ের মধ্য দিয়ে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়। হাজার বছরের সংগ্রাম মূখর এ জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন বাংলাদেশের স্বাধীনতা। আজকের এই দিনে আমি দেশবাসী ও প্রবাসী বাংলাদেশীসহ সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।

তারেক রহমান বলেন, এই স্বাধীনতা দিবসে আনন্দোজ্জল মূহুর্তের মধ্যে প্রথমেই যে কথা মনে পড়ে, তাহলো এ দেশের অগণিত দেশপ্রেমিক শহীদের আত্মদান; আমি এ মহান দিনে তাদের গভীর শ্রদ্ধা জানাই। যাদের অবিস্মরণীয় আত্মদানে অর্জিত হয়েছে দেশমাতৃকার মুক্তি। মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তমসহ সব জাতীয় নেতার স্মৃতির প্রতি আমি জানাই গভীর শ্রদ্ধা। যাদের জীবন মরণ লড়াইয়ে ৯ মাসে আমরা বিজয় লাভ করেছি সেইসব অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অবদানের কথা জাতি কখনোই বিস্মৃত হবে না।

আমি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি সেসব মা-বোনদের কথা, যারা মাতৃভূমির স্বাধীনতার জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন। স্বাধিকার আর স্বাধীনতা সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে রক্তস্নাত পথে বিশ্ব মানচিত্রে উদ্ভাসিত হয় আমাদের মানচিত্র। এ দিনে দেশমাতৃকার শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। তাঁর ঐতিহাসিক ঘোষণায় সেই মূহুর্তে দিশেহারা জাতি পেয়েছিল মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার অভয়মন্ত্র। একটি শোষণ, বঞ্চনাহীন, মানবিক সাম্যের উদার গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে এদেশের মানুষ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে। দুর্ভাগ্যক্রমে গণতন্ত্রবিনাশী শক্তির চক্রান্ত এখনও থেমে নেই।

বারবার ফ্যাসিবাদী, স্বৈরাচারী ও অবৈধ শক্তি আমাদের সে লক্ষ্য পূরণ করতে দেয়নি। দেশি-বিদেশী চক্রান্তের ফলে আমাদের গণতন্ত্র ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি হোঁচট খেয়েছে এবং স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হয়েছে। মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান চক্রান্তমূলকভাবে হত্যার পরে বেগম খালেদা জিয়ার সফল ও সার্থক নেতৃত্বে গণতন্ত্র পুণরুদ্ধারের ধারা সূচিত হলেও গণতন্ত্রের শত্রুদের কারণে স্থায়ী ও মজবুত গণতান্ত্রিক কাঠামো তৈরী করা সম্ভব হয়নি।

তিনি আরও বলেন, একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার হীন লক্ষ্যে পলাতক অবৈধ সরকার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভেঙ্গে ফেলেছে। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরে আজও তাই এদেশের মানুষ স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতে পারেনি। ফ্যাসিবাদের পতনের পর এখন সুযোগ এসেছে বাংলাদেশের সব দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দল, সংগঠন, ব্যক্তি এবং জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথচলা নিশ্চিত করা এবং দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে সংহত করা। এটিই হচ্ছে স্বাধীনতার মূল চেতনা।

তারেক রহমান বাণীতে আরও বলেন, আজকের এই মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে আমি আহবান জানাচ্ছি-জাতির সম্মিলিত ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ‘৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা বহুমত ও পথের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সমুন্নত রাখার জন্য। আমি দেশবাসী সকলের সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দরবারে প্রার্থনা জানাই।


আরও খবর