Logo
শিরোনাম

ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত’র বাড়িটি অবহেলায় পড়ে আছে

প্রকাশিত:রবিবার ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ | হালনাগাদ:বুধবার ৩০ এপ্রিল ২০২৫ |

Image
বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার দাবি উত্থাপনকারী

কুমিল্লা ব্যুরো :

১৯৪৮ সনের ২৫ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন কংগ্রেস দলের প্রতিনিধি ও পূর্ব বাংলার গণপরিষদ সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব করেন। ওই প্রস্তাবের পর ঝড় বয়ে যায় গণপরিষদে। যার ফল হল : রাষ্ট্রভাষা বাংলার আন্দোলন।

একুশ মানে আমাদের জাতীয় মননের প্রতীক। একুশের চেতনা মিশে আছে আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সাথে। অবিচার, অন্যায় আর অত্যাচারের বিরুদ্ধে দূর্জেয় প্রতিরোধ গড়ে তুলার নাম একুশ। একুশ মানে মাথা নত না করা। একুশ আমাদের জাতি সত্ত¡ার শ্রেষ্ঠতম পরিচয় বহন করে। এই একুশের গোড়ায় যিনি, তিনি বৃহত্তর কুমিল্লার কৃতিসন্তান, আমাদের রাষ্ট্র ভাষা বাংলার স্থপতি শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি উত্থাপনকারী ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত’র কুমিল্লার বাড়িটি অযত্ন অবহেলায়,একপাশে টিনের ঘরে চা দোকানআর সেই সময়ের ঘরটি ময়লা আর্বজনায় চা দোকানীর পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করছে। যথাযথভাবে সংরক্ষণ, তত্ত্বাবধান ও একটি আন্তজার্তিক মানের ভাষা যাদুঘর স্থাপনের দাবী কুমিল্লার মানুষের দীর্ঘদিনের। 

  লেখক,সাংবাদিক আবুল কাশে, হৃদয় বলেন-বাংলা ভাষার কলকাকলীতে মুখরিত অঞ্চল ঢাকা কিংবা কলকাতায় নয়, খোদ পাকিস্তানের তৎকালীন রাজধানী করাচিতে গিয়ে যিনি সর্বপ্রথম পাকিস্তান গণপরিষদে ১৯৪৮ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারী গণপরিষদের সদস্য হিসেবে বাংলাকে পাকিস্থানের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি উত্থাপন করেন। শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত তার বক্তব্যে বলেছিলেন, এই প্রস্তাব প্রাদেশিকতা মনোভাব প্রসূত নয়। পাকিস্তানের জনসংখ্যা ছয় কোটি ৯০ লাখ, তার মধ্যে চার কোটি ৪০ লাখই বাংলা ভাষাভাষী। সে যৌক্তিক ভিত্তির উপরই তিনি তার প্রস্তাবটি উত্থাপন করেছিলেন। তখন তিনি আরও বলেছিলেন, সংখ্যাগরিষ্ঠতার কথিত বা ব্যবহৃত ভাষাই রাষ্ট্রের ভাষা হওয়া বাঞ্ছনীয়। সে বিবেচনায় বাংলাই পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হওয়া উচিত।’‘পাকিস্তানের গণপরিষদের প্রথম অধিবেশনে (২৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৮) তৎকালীন কংগ্রেস দলের প্রতিনিধি ও পূর্ব বাংলার গণপরিষদ সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত (১৮৮৬-১৯৭১) উর্দু এবং ইংরেজির সঙ্গে বাংলা ভাষাকে গণপরিষদের অন্যতম ভাষা হিসেবে স্বীকৃতির দাবি পেশ করেন। 


ধীন্দ্রেনাথ দত্ত নিয়মিত কার্যবিধির ২৮ ধারার উপর একটি সংশোধনী প্রস্তাব এনে ২৯ নং বিধির ১ নং উপ-বিধিতে উর্দু ও ইংরেজীর পর ‘অথবা বাংলা’ শব্দটি যুক্ত করার দাবি জানান। তাই তিনি গণপরিষদে উর্দু ও ইংরেজীর পাশাপাশি বাংলা ভাষাকেও রাষ্ট্রভাষা হিসেবে অর্ন্তভূক্ত করার যৌক্তিক দাবী করেন।


গণপরিষদে শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত যে বক্তব্য রেখেছিলেন তার কিয়দংশ এখানে উদ্ধৃত করা হলো : I know, sir, that bengali is a provincial language, but, so far our state is concerned, it is the language of the majority of the people of the state and it stands on a different footing. Out of six crores and ninety lakhs of people inhabiting this state, four crores and forty lakhs of people speak the bengali language. So, sir what should be the state language of the state Pakistan? The state language of the state should be the state language which is used by the majority of the people of the state, and for that, sir, I consider that bengali language is lingo franca of our state.... So we are to consider that in our state it is found that the majority of the people of the state do speak the bengali language then bengali should have an honored place even in the central government.

লেখক মোতাহের হোসেন মাহাবুব বলেন- শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত এর পরিবারের পক্ষ থেকে ইতিবাচক সাড়া না পাওয়ায় স্মৃতি রক্ষায় বাড়িটি সংরক্ষণ করা যাচ্ছেনা। 


১৯৫০ সালে গনপরিষদে আরবি হরফে বাংলা ভাষার প্রস্তাব উত্থাপিত হলে ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত এরও তীব্র প্রতিবাদ করেন।

শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত এই বাংলাদেশের একজন শ্রেষ্ঠ সন্তান।১৯৫২ সালের ২১ ফেব্র“য়ারী সারা পৃথিবীর মানুষকে স্তম্ভিত করে দিয়ে মাতৃভাষার জন্য চরম ত্যাগের মুহুর্তটিতে বাঙলার দামাল ছেলেরা অকাতরে বুকের তাজা রক্ত দিয়ে সৃষ্টিকরে মাতৃভাষা রক্ষার ইতিহাস। আন্তজার্তিক পরিমন্ডলে বাঙালীর মাথা উচুঁ করে দাড়াবার ইতিহাস সৃষ্টি হয় তখন থেকেই। ১৯৫২ সালের ২২ ফেব্রæয়ারী এ হত্যাকান্ডের  প্রতিবাদে তৎকালীন গণ পরিষদ সদস্য শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত গণপরিষদের অধিবেশন বয়কট করেন এবং এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।


৫২’র সেই ভাষা আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৯৭১’এ আমাদের মহান মুক্তিয্দ্ধু ও স্বাধীনতা অর্জিত হয়। এ অর্জনের জন্যে ধীরেন্দ্রনাথ দত্তকে শুধু গণপরিষদে কিংবা রাজপথে আন্দোলন নয়: একাধিকবার কারা বরণ সহ  ১৯৭১’এ যুদ্ধ চলাকালে কনিষ্ঠপুত্র শহীদ দীলিপ দত্ত সহ কুমিল্লা নগরের ঝাউতলা বাসা থেকে ২৯ মার্চ রাত দু’টোয় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হাতে বন্দি এবং পরে কুমিল্লা সেনানিবাসের  নির্মম বর্বরতার শিকার হয়ে হানাদারদের হাতে শহীদ হতে হয়। 

 ইতিহাসবিদ প্রফেসর আহসানুল কবীর বলেন- শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের নাতনি আরমা দত্ত সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য। তিনি আরমা দত্ত হয়েছেন ধীরেন্দ্রনাথের কারণেই। যেহেতু তিনি সরকারের একটি দায়িত্ব শীল পদে আছেন,আপনি চাইলে সরকারের মাধ্যমে বাড়ির জায়গাটি দান করে দিতেপারেন। যদি অওের্থর সমস্যা থেকে থাকে তাহলে সরকারের কাছে বিক্রি করে দিতে পারেন।আরমা দত্তকে উদ্যোগ নেয়ার অনুরোধ জানান। নতুন প্রজন্মের কাছে একটি শিক্ষনীয় কিছু রেখে যাওয়ার আহবান জানান। স্বাধীনতার সুর্বণ জয়ন্তী হলো। কিন্তু শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত এ বাড়িটি অবহেলা, অযত্ন আর ময়লা- আবর্জনার স্তুপে পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। এর সবকিছুর পেছনেই রয়েছে আমাদের মানসিক দৈন্যতা ও গুণীজনকে কদর করতে না পারার মানসিকতা।


 শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্মৃতি রক্ষা পরিষদ,কুমিল্লার সম্বনয়ক বীরমুক্তিযোদ্ধাএড. গোলাম ফারুক বলেন- সরকার ন্যায্য মুল্যে বাড়ির জায়গাটি শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের পরিবারের কাছথেকে কিনে নিয়ে ,মামলার জটিলতা নিরসনও হয়। এবং বাড়িতে একটি ভাষা যাদুঘর করতে পারে।

  কুমিল্লা সিটিকর্পোরেশনের মেয়র আরফানুল হক রিফাত বলেন-শহীদ ধীরেন্দ্র নাথ দত্তের পরিবারের কাছে আবেদন করছি। জায়গাটি হস্তান্তর করার জন্য। সিটিকর্পোরেশনও চায় বাড়িটি সংস্কার করে ভাষা ইন্সটিটিউন করতে। 

এদিকে স্থানীয়রা নাম না প্রকাশে বলছে- কুমিল্লার মনোহরপুরের আফতাফ ব্রাদাসের মালিকের কাছে জায়গাটি বায়না সূত্রে বিক্রি করে দেয়ায় জায়গাটির মালিকানা নিয়ে মামলা চলছে হাইকোটে।  এবিষয়ে আফতাফ ব্রাদার্সের মালিক বলেন- জায়গাটি নিয়ে হাইকোর্টে মামলা চলমান থাকায় এ বিষয়ে কোন প্রকার বক্তব্য দিতে নারাজ তিনি।

কুমিল্লা নজরুল পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অশোক বড়ুয়া বলেন- ভাষা সৈনিক শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের পূত্র সঞ্জিব দত্তের কন্যা আরমা দত্ত সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য। শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত কুমিল্লা শহরের ধর্ম সাগর পাড়ের নিজ বাড়ীতে শেষ কর্মময় জীবন কাটান। ২০১১ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর তথ্য মন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের পরিত্যাক্ত বাড়িটিও পরিদর্শন করে ভাষা ইন্সিটিটিউট করার উদ্যোগ গ্রহণ করলেও আইনী জটিলতায় তা আর হয়নি।


১২ বছরেও হয়নি সে জাদুঘর। ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের নাতনী কুমিল্লার নারী সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য আরমা দত্ত  বলেন, এটি আমার দাদু ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের পৈতৃক সম্পত্তি। আসলে আমি তার সম্পত্তি নিয়ে কথা বলতে চাচ্ছি না।

 তাঁর বাড়িটি  একজন ব্যাবসায়ীর কাছে বিক্রির জন্য বায়না করেছেন নাকি? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,না এটি বিক্রি করিনি। বাড়িটি সংরক্ষণের ব্যাপারে আপনার কোন পরিকল্পনা আছে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, অবশ্যই আমার দাদুর বাড়িটিকে নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে। তার স্মৃতি রক্ষা করব আমরা। 

কুমিল্লা-৬ সদর আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী আ.ক.ম বাহাউদ্দিন বাহার বলেন, ভাষা সৈনিক এড ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত কুমিল্লার শ্রেষ্ঠ মানুষ । বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রথম বীজবপন তিনি করেছেন। বাংলা ভাষার জন্য প্রথম দাবি উত্থাপনকারী বাবু ধীরেন্দ্রনাথ দত্তকে আমরা স্মরণীয় করে রেখেছি। একসময়কার কুমিল্লা স্টেডিয়ামকে শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়াম নামে নামকরণ করেছি।

ইতিহাসের এ মহানায়ক শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত আজ নেই। কিন্তু তাঁর বাংলা ভাষা আজ শুধু রাষ্ট্র ভাষাই নয় আন্তাজার্তিক মাতৃভাষাও বটে। শহীদ  ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের এই বাড়িটি যথাযথভাবে সংরক্ষণ, তত্ত্বাবধান ও এখানে একটি আন্তজার্তিক মানের ভাষা যাদুঘর স্থাপনের দাবী কুমিল্লার মানুষের দীর্ঘদিনের। ভাষা আন্দোলন ও ভাষা শহীদদের প্রতি সম্মান পরিদর্শনের মধ্য দিয়ে এ দাবী বাস্তবে রুপ নিবে বলে মনে করেন কুমিল্লাবাসী।


আরও খবর

আত্মহননের সাংবাদিকতা

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০24




ঝালকাঠির রাজাপুরে গুম-খুনের ঘটনায় তদন্ত শুরু করলো গুম-খুন কমিশন

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৯ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ৩০ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

হাসিবুর রহমান ,ঝালকাঠি প্রতিনিধি:

ঝালকাঠির রাজাপুর থেকে ২০১০ সালে গুম হওয়া একাধিক ব্যক্তির পরিবারের সঙ্গে কথা বললেন গুম-খুন কমিশনের সদস্যরা বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর দ্বারা গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান এবং তাদের ভাগ্য নির্ধারণে গঠিত পাঁচ সদস্যের গুম-খুন তদন্ত কমিশন। 

কমিশনের সদস্যরা হলেন হাইকোর্টের দুই অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত বিচারক মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী ও মানবাধিকারকর্মী নূর খান।

রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া এলাকার আলোচিত বেলায়েত জমাদ্দারের দুই ছেলে মিজান ও মোর্শেদ জমাদ্দার, ইন্দ্রপাশা এলাকার আঃ ছালাম হাওলাদারের ছেলে মোঃ অসীম (৩৫) ও মোঃ রাজীব হাওলাদার (২৫), দক্ষিণ সাউদপুর এলাকার ফোরকান এবং পার্শ্ববর্তী কাউখালী উপজেলার পার সাতুরিয়া এলাকার মোঃ মুরাদের পরিবারের বাড়িতে গিয়ে সরেজমিন তদন্ত করেন তদন্ত কমিটি। 

তদন্তকালে উপস্থিত ছিলেন রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাহুল চন্দ্র, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (রাজাপুর সার্কেল) মো. শাহ আলম, রাজাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ইসমাইল হোসেন এবং কাউখালী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।

উল্লেখ্য, ২০১০ সালে উল্লেখিত ব্যক্তিরা রহস্যজনকভাবে গুম-খুনের শিকার হন। এর আগে প্রশাসন বিভিন্নভাবে তদন্ত পরিচালনা করলেও কোনো চূড়ান্ত ফলাফল পাওয়া যায়নি। বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গঠিত গুম-খুন কমিশন এসব চাঞ্চল্যকর ঘটনার পুনঃতদন্ত শুরু করায় ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর মধ্যে নতুন করে আশার আলো জেগেছে।

এ ঘটনায় কমিশনের সদস্যরা সাতুরিয়া, ইন্দ্রপাশা এবং পার সাতুরিয়া এলাকার গুম-খুনের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের কাছ থেকে ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করেন।

তবে তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো তথ্য প্রকাশ করেননি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রশাসনিক কর্মকর্তা জানান, “আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো তথ্য পাইনি। তবে শুনেছি, ৭টি গুম-খুনের ঘটনার তদন্তের জন্য কমিশনের সদস্যরা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে। আমরা তাদের সাথে ছিলাম, তবে কোন কোন ঘটনা নিয়ে তদন্ত চলছে তা নিশ্চিত করে বলতে পারবো না।


আরও খবর



সংস্কার সংস্কারের মতো, নির্বাচন নির্বাচনের মতো চলবে

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০১ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ৩০ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সংস্কার আর নির্বাচন আলাদা জিনিস নয়। সংস্কার সংস্কারের মতো চলবে। নির্বাচন নির্বাচনের মতো চলবে। এ ছাড়া সংস্কার প্রস্তাব যথাযথভাবে পর্যালোচনা করেই বিএনপি মতামত দিয়েছে বলেও জানান তিনি। ঠাকুরগাঁওয়ে নিজ বাসভবনে নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।

প্রধান উপদেষ্টার সদ্য সমাপ্ত চীন সফর প্রসঙ্গ তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের আমলে চীন একতরফাভাবে একটা দলের সঙ্গে সম্পর্ক রেখেছে। তবে এখন তারা চিন্তা-ভাবনা পরিবর্তন করে সব দলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ছে। চীন বাংলাদেশে উৎপাদনে ও উন্নয়নে বিনিয়োগের জন্য যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, সেটা দেশের জন্য আশাবাদের কথা। ’ বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘যে বিষয়ে মতের ঐক্য হবে, সেগুলো মেনেই নির্বাচন হবে। যারাই নির্বাচিত হবে, সে-ই সংস্কার করবে’।

পরে বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কুশল ও ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন তিনি। এ সময় জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ জাফরুল্লাহ, যুবদলের সদস্যসচিব জাহিদ হাসান, ছাত্রদলের সভাপতি মোহাম্মদ কায়েসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন


আরও খবর



এশিয়ার তিন দেশ সফর করবেন শি জিনপিং

প্রকাশিত:শনিবার ১২ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:রবিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

এশিয়ার তিন দেশ সফরে যাচ্ছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। দেশগুলো হলো ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া ও কম্বোডিয়া। ১১ এপ্রিল দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।

বার্তায় বলা হয়, ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক তো লামের আমন্ত্রণে ১৪ থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত ভিয়েতনামে রাষ্ট্রীয় সফর করবেন শি জিনপিং।

এছাড়া মালয়েশিয়ার রাজা সুলতান ইব্রাহিম সুলতান ইস্কান্দার এবং কম্বোডিয়ার রাজা নরোদম সিহামোনির আমন্ত্রণে ১৫ থেকে ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত মালয়েশিয়া ও কম্বোডিয়ায় রাষ্ট্রীয় সফর করবেন চীনা প্রেসিডেন্ট।



আরও খবর



বিশ্ববাজারের সঙ্গে দেশে স্বর্ণের দরে হের ফের

প্রকাশিত:রবিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ৩০ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

দেশের বাজারে বেশ ঘন ঘন ওঠানামা করছে স্বর্ণের দাম। তবে যে পরিমাণ কমে, তার চেয়ে বেশি বাড়ে। এভাবে গেল এক বছরে ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেট প্রতি ভরি স্বর্ণের দর বেড়েছে প্রায় ৬০ হাজার টাকা। স্থানীয় বাজারে স্বর্ণের দামের এমন ঊর্ধ্বগতি মূলত বিশ্ববাজারের কারণে ঘটছে বলে দাবি করছেন এ খাতের ব্যবসায়ীরা। তাদের ভাষ্য, দাম বাড়ার কারণে বেচাকেনায় ভাটা পড়েছে। বিক্রি কমে অর্ধেকে নেমেছে।

বিশ্ববাজারের তুলনায় কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভরিতে ৬০ হাজার টাকারও ব্যবধান রয়েছে। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, বাংলাদেশে কোন যুক্তিতে বা মানদণ্ডের ভিত্তিতে স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হয়? অর্থনীতিবিদরাও বলছেন, বিশ্ববাজারের সঙ্গে দেশের বাজারে দাম কীভাবে সমন্বয় করা হয়, তা অস্পষ্ট। এতে মূলত ব্যবসায়ীরা লাভবান হলেও ক্রেতারা ঠকছেন। এই পরিস্থিতিতে দাম নির্ধারণের সুনির্দিষ্ট কাঠামো দাঁড় করানো এবং আমদানির ক্ষেত্রে কার্যকর নীতিমালা প্রণয়নের পরামর্শ দেন তারা।

করোনা অতিমারির পর থেকে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম বাড়তে থাকে। কয়েক বছর ধরে স্বর্ণের দাম বেশ ওঠানামা করছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দর ওঠানামা করছে অস্বাভাবিকভাবে। বিশ্ববাজারে দাম বাড়ার কারণে বাংলাদেশেও অস্থির হয়ে উঠছে মূল্যবান ধাতুটির বাজার। ফলে দাম এত বাড়ছে কেন, আর কত দিন বাড়তে পারে, শেষ পর্যন্ত দাম কোথায় গিয়ে ঠেকবে এমন নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে স্বর্ণপ্রেমীদের মনে। আবার যারা বিনিয়োগ নিয়ে ভাবছেন, তারাও রয়েছেন দোলাচলে। বৈশ্বিক এই পরিস্থিতিতে এখন বিনিয়োগ করার উত্তম সময় কিনা, হঠাৎ আবার দাম পড়ে যাবে কিনা, এমন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তবে দেশে অস্বাভাবিক দাম বাড়া নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।

দেশে এক বছরে দাম কত বাড়ল

গত এক বছরে বেশ কয়েকবার উত্থান-পতন ঘটেছে দামের। তবে যতবার দাম কমেছে, অর্থাৎ যে পরিমাণ কমেছে, তার চেয়ে বেশি বেড়েছে। দেখা গেছে, দুই দফায় পাঁচ হাজার টাকা বাড়ার পর কমেছে এক বা দেড় হাজার টাকা। এভাবে গত এক বছরে দাম বেড়ে এখন ১ লাখ ৭২ হাজার টাকায় উন্নীত হয়েছে। সেই হিসাবে, এক বছরে প্রতি ভরিতে প্রায় ৬০ হাজার টাকা দাম বেড়েছে।

বিশ্ববাজারের চেয়ে দেশে স্বর্ণের দাম বেশি

দেশে ভালো মানের স্বর্ণের দাম ইতিহাসের সর্বোচ্চে উঠেছে গত ২২ এপ্রিল। বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) ওই দিন দুপুরে ২২ ক্যারেট মানের প্রতি ভরি স্বর্ণের (১১.৬৬৪ গ্রাম) দাম ঘোষণা করে ১ লাখ ৭৭ হাজার টাকা। তবে ওই  দিনই সন্ধ্যায় ফের দাম কমে দাঁড়ায় ১ লাখ ৭২ হাজার ৫৪৬ টাকা। এখন পর্যন্ত এই দরে বিক্রি হচ্ছে স্বর্ণের ভরি।

আন্তর্জাতিক বাজারদর পর্যালোচনায় দেখা গেছে, বাজুস নির্ধারিত স্বর্ণের এ দাম শুধু দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ নয়, বর্তমান আন্তর্জাতিক দরকেও ছাড়িয়েছে। এমনকি প্রতিবেশী ভারতের তুলনায়ও স্বর্ণের এ দর অনেক বেশি।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের স্পট মার্কেটে সর্বশেষ প্রতি আউন্স (২৮.৩৪৯৫ গ্রাম) ২২ ক্যারেট স্বর্ণ সর্বনিম্ন ৩ হাজার ৩৩৪ ডলারে কেনাবেচা হয়েছে। ডলারের বিনিময় মূল্য ১২২ টাকা দরে প্রতি ভরি স্বর্ণ ১ লাখ ৬৭ হাজার ৩৫১ টাকা দরে কেনাবেচা হয়েছে। অর্থাৎ দেশে প্রতি ভরি স্বর্ণ অন্তত ৫ হাজার টাকা বেশি দরে কেনাবেচা হচ্ছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনজেলওয়ান বাংলার অনলাইন পোর্টালের খবর অনুযায়ী, সে দেশের জুয়েলার্স সমিতির বেঁধে দেওয়া বাজারদর অনুযায়ী, গতকাল প্রতি গ্রাম ২২ ক্যারেট স্বর্ণ কেনাবেচা হয়েছে ৯ হাজার ৮৯ রুপিতে। রুপির বিনিময় মূল্য ১ টাকা ৪৩ পয়সা হিসাবে প্রতি ভরির দাম ভারতে ১ লাখ ৫২ হাজার ৬৬১ টাকা। এই হিসাবে বাংলাদেশে ভারতের চেয়ে ভরিতে প্রায় ২০ হাজার টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে স্বর্ণ।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের খালিজ টাইমসের তথ্যমতে, দুবাইয়ে বর্তমানে প্রতি গ্রাম ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দর ৩৬৭ দশমিক ৭৫ দিরহাম। প্রতি দিরহামের বিনিময় মূল্য ৩৩ দশমিক ৩৪ টাকা হিসাবে প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম দাঁড়ায় ১ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। অর্থাৎ বিশ্ববাণিজ্য কেন্দ্র দুবাইয়ে বাংলাদেশের চেয়ে প্রতি ভরি স্বর্ণের দর কম প্রায় ২৯ হাজার টাকা। বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, তিনটি দেশেই স্বর্ণের দর বাংলাদেশের চেয়ে অনেক কম। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, বাংলাদেশে কোন মানদণ্ডে স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হচ্ছে? 

ব্যবসায়ীদের একটি সূত্র জানিয়েছে, পুরান ঢাকার তাঁতীবাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা মূলত তেজাবি স্বর্ণের বাজার নিয়ন্ত্রণ করেন। তারা নতুন ও পুরোনো স্বর্ণ কেনেন। নিয়ন্ত্রণ মূলত তাদের হাতে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শীর্ষ স্বর্ণ ব্যবসায়ী বলেন, বর্তমানে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের স্বর্ণের বাজার ওঠানামা করছে। কলকাতার ব্যবসায়ীরা সাধারণত দুপুরের দিকে স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করে থাকেন। এরপর পুরান ঢাকার ব্যবসায়ীরা স্থানীয় দর নির্ধারণ করেন। এই দাম অলংকার ব্যবসায়ীদের জন্য, খুচরা ক্রেতাদের জন্য নয়। ওই দরের ওপর ভিত্তি করেই বাজুস স্বর্ণের দাম ঘোষণা করে। 

বাজুসের সহসভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, বিশ্ববাজারে দাম বাড়লে দেশে এর প্রভাব পড়ে। মূলত তেজাবি স্বর্ণের দাম বাড়লে বাজুস দাম বাড়ায়। এখানে বাজুসের কোনো কৌশল নেই। বরং দাম বাড়ার কারণে গত কয়েক বছরে বিক্রি কমে অর্ধেকে নেমেছে। তবে স্বর্ণ আমদানিতে এলসি জটিলতা, করহারসহ নানা সমস্যা রয়েছে বলেও জানান তিনি।

বিশ্ববাজারে দাম কেন বাড়ছে

অর্থনীতিবিদ এবং অলংকার ব্যবসায়ীদের মতে, বিশ্বব্যাপী ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ, বিভিন্ন দেশের রপ্তানির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি শুল্ক আরোপ, ডলারের দর কমে যাওয়াসহ নানা কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে এক ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। সাধারণত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো ডলার মজুত রাখে। গত তিন বছরের মধ্যে ডলারের দাম এখন সর্বনিম্ন। বৈশ্বিক এই অস্থিরতার কারণে দর আরও পড়ে যেতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো ডলারের পরিবর্তে স্বর্ণের মজুত বাড়াচ্ছে। দাম বাড়ার পেছনে এটি অনুঘটক হিসেবে কাজ করছে। বিশেষ করে চীনের ওপরে যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক বাড়ানোর কারণে চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারের পরিবর্তে ধারাবাহিকভাবে স্বর্ণ কিনছে। 

বিশ্ববাজারে আরও বাড়ার পূর্বাভাস

মার্কিন বিনিয়োগ ব্যাংক গোল্ডম্যান স্যাকস সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে মন্দার আশঙ্কা ৩৫ শতাংশে পৌঁছানোর পূর্বাভাস দিয়েছে, যা আগে ছিল ২০ শতাংশ। সংস্থাটি বলছে, মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ (ফেড) সুদহার কমাতে পারে, যা স্বর্ণের চাহিদা আরও বাড়িয়ে দেবে। 

এই ধারণা থেকে সংস্থাটি স্বর্ণের দাম নিয়ে তাদের আগের পূর্বাভাস আবার সংশোধন করেছে। প্রতিষ্ঠানটি আগে স্বর্ণের দাম আউন্সপ্রতি ৩ হাজার ৩০০ ডলার পর্যন্ত উঠবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছিল। নতুন বিশ্লেষণে তারা বলছে, প্রতি আউন্সের দাম ৩ হাজার ৬৫০ থেকে ৩ হাজার ৯৫০ ডলারের মধ্যে ওঠানামা করতে পারে। বছর শেষে এটি গড়ে ৩ হাজার ৭০০ ডলারে স্থির হতে পারে। 

দেশে স্বর্ণের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে একটি নিয়ম বা কাঠামো প্রণয়ন করা দরকার বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) ও অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ বুঝে না ঠিক কী পদ্ধতিতে দেশে স্বর্ণ বেচাকেনা কিংবা দাম নির্ধারণ করা হয়। অনিয়মতান্ত্রিকভাবে কিছুদিন পরপর দেশে দাম বাড়ানো হচ্ছে। বিশ্ববাজারের কথা বলে দাম বাড়ানো হলেও বিশ্ববাজারের সঙ্গে দামের ব্যাপক ফারাক থাকে। তাহলে কীসের ভিত্তিতে আসলে দেশে স্বর্ণের দাম বাড়ে বা কমে তা স্পষ্ট নয়। 

হঠাৎ দাম বাড়লে ক্রেতা বিপাকে পড়েন বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ। উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, কেউ হয়তো পরিকল্পনা করছেন আগামী সপ্তাহে তিনি এক ভরির গহনা কিনবেন। এক সপ্তাহ পর কিনতে গিয়ে দেখা গেছে ভরিতে চার-পাঁচ হাজার টাকা বেড়ে গেছে। তখন দেখা যায় তাঁর গহনা কেনার পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে। এমনটা নিয়মিতই ঘটছে। তাই কোন কোন যুক্তি বা মানদণ্ডে দেশে স্বর্ণের দাম নির্ধারিত হচ্ছে, বৈশ্বিক দামের সঙ্গে দেশের দর কতটা সংগতিপূর্ণ, সেসব বিষয় খতিয়ে দেখা খুবই জরুরি। 

ড. সায়মা হক বিদিশা বলেন, এখন হয়তো ব্যাগেজ রুলে বা বিভিন্ন উপায়ে বিদেশ থেকে স্বর্ণ আসে। বৈধ পথে আমদানির জন্য নির্দিষ্ট নীতিমালা থাকা দরকার, তাহলে বৈধ চ্যানেলে আমদানি বাড়বে। তখন দর সম্পর্কে সবাই অবগত থাকবে। একই সঙ্গে এতে অবৈধ পথে স্বর্ণ চোরাচালান কমে আসবে। তা ছাড়া দেশে কী পরিমাণ চাহিদা রয়েছে, কী পরিমাণ আমদানি হচ্ছে, সে বিষয়ে হালনাগাদ তথ্য থাকা উচিত বলে মনে করেন তিনি। 

বিশ্ববাজারের সঙ্গে বাংলাদেশের দরে সমন্বয়হীনতা থাকে উল্লেখ করে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, বৈশ্বিক অস্থিরতা, পুঁজিবাজারে মন্দাসহ নানা কারণে স্বর্ণে বিনিয়োগমুখী হন বিনিয়োগকারীরা। এতে স্বর্ণের দাম বাড়ে ঠিক, কিন্তু বাংলাদেশে দাম বাড়ানো কতটা যৌক্তিক, তা বিবেচনা প্রয়োজন। বিশ্ববাজারের দরের সঙ্গে কতটা সমন্বয় হয়েছে, তা দেখতে হবে।


আরও খবর

সবজিতে আর স্বস্তি নেই

মঙ্গলবার ২৯ এপ্রিল ২০২৫




সংসদের আগে স্থানীয় নির্বাচন চাইলেন

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৫ এপ্রিল 20২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ৩০ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।তিনি বলেছেন, ‘বর্তমান নির্বাচন কমিশন বলছে, তারা ইতিহাসে সবচেয়ে ভালো একটা নির্বাচন উপহার দেবে। আমরা তাদের একটি অ্যাসিড টেস্ট দেখতে চাই।

তারা জাতীয় সংসদের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনটা দিক। আমরা দেখি তাদের সদিচ্ছা ও সক্ষমতা কতটুকু। যদি এতে জনগণ সন্তুষ্ট হয়, তাহলে পরবর্তী সময়ে জনগণ আপনাদের পূর্ণ সহযোগিতা দেবে। আর কোনো কিছু ধরা পড়লে জনগণ লালকার্ড দেখাবে। ময়মনসিংহ নগরীর সার্কিট হাউস মাঠে জেলা ও মহানগর জামায়াতের কর্মীসম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘অতীতে যা চলল এখনো যদি তাই চলে, তাহলে এত রক্ত কেন ঝরল। এত জীবন গেল কেন। এ জাতির কাছে আমরা কীভাবে মুখ দেখাব। জঞ্জালমুক্ত, কলুষমুক্ত, দুঃশাসনমুক্ত ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার জন্য প্রয়োজনে আমরা আরেকবার জীবন দিয়ে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত থাকব। আমরা কোনো বিশেষ দল বা গোষ্ঠীকে সুবিধা দেওয়ার সুপারিশ আমরা মানব না। আমরা জনগণের সুবিধা দেওয়ার সব সুপারিশ মেনে নেব।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই, যেখানে দল ও ধর্মের মধ্যে কোনো অধিকারের ব্যবধান থাকবে না। দেশে সবার অধিকার ভোগ করা ন্যায্যতা থাকবে। আমরা একটি বৈষম্যমুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত ও দুঃশাসনমুক্ত মানবিক বাংলাদেশ চাই। সেই বাংলাদেশ অবশ্যই হতে হবে আল্লাহর বিধানের ভিত্তিতে। আল কুরআনের ভিত্তিতে।

ঐক্যের শক্তিতে বিজয় আসবে জানিয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি বা দলকে ক্ষমতায় বসানো আমাদের উদ্দেশ্য নয়। এ বিজয়ের মাধ্যমে মানবতার বিধানকে মানুষের কাছে সামাজিকভাবে উপহার দেওয়া হবে। সোনার মানুষ গড়তে হলে সোনার মানুষ চাই। সমাজে ন্যায়বিচার কায়েম করতে হলে নিজের ওপর ইনসাফ তৈরি করতে হবে। আল্লাহকে ভয় করতে হবে।

নতুন রাজনীতির উত্থানে তরুণদের অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যতদিন পর্যন্ত তোমাদের ন্যায্য দাবি পূরণ না হবে তোমরা এ লড়াই থেকে বিশ্রাম নিও না। তোমরা হবে আমাদের আগামীর নেতা। আমরা হব তোমাদের কর্মী। আমরা তোমাদের দেশ ও জাতির খেদমত করার সুযোগ করে দিতে চাই।

জামায়াতে আমির বলেন, ‘আওয়ামী লীগ, তাদের দোসর ও প্রশাসনে কিছু কর্মকর্তা দেশ থেকে ২৮ লাখ কোটি টাকা লুট করে নিয়ে গেছে। এ টাকা দেশের বাজেটের প্রায় চার থেকে পাঁচ গুণ।

বর্তমান সরকারকে উদ্দেশে করে তিনি বলেন, ‘সরকারে যারা আছে সবার দৃষ্টিভঙ্গি সমান না। এটা কোনো দলীয় আদলের সরকারও না। কেউ কেউ থাকে মক্কার দিকে, আবার কেউ কেউ থাকে মস্কোর দিকে। এই দোটানা অবস্থায় জাতির মাঝে মাঝে অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যায়।

নারী অধিকার সংস্কারের প্রতিবেদনের কথা টেনে ডা. শফিকুর বলেন, ‘সে রিপোর্টের বেশ কিছু জায়গায় কুরআন ও সুন্নাতের সম্পূর্ণ খেলাপ কিছু সুপারিশমালা পেশ করা হয়েছে। আমাদের প্রথম কথা হচ্ছে, যে কয়েকজন এ সুপারিশ পেশ করেছেন তারা এ দেশের সাড়ে ৯ কোটি মায়ের প্রতিনিধিত্ব করে না। তারা সমাজকে যে জায়গায় নিয়ে যেতে চান, আমরা সে জায়গায় তাদের নিতে দেব না ইনশাল্লাহ।


আরও খবর