অবরুদ্ধ গাজায় ত্রাণ চাইতে আসা মানুষের ওপরও গুলি করেছে
ইসরায়েলের সেনারা। ইসরায়েল বলছে, বেশির ভাগই ভিড়ের মধ্যে পদলিত হয়ে মারা
গেছেন। কিন্তু ওই ঘটনায় আহতদের নিরীক্ষা করে দেখা গেছে- তাদের মধ্যে ৮০ ভাগই
গুলিতে জখম হয়েছেন। গতকাল এ খবর জানিয়েছে বিবিসি।
শরণার্থী শিবির, হাসপাতাল, স্কুল-কলেজ সর্বত্রই হামলা চালিয়েছে
ইসরায়েল। এবার ত্রাণের আশায় যেসব মানুষ এসেছিল, তাদেরও গুলি করে হত্যা করেছে
ইসরায়েলি সেনারা। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের বিচার চেয়েছে জাতিসংঘ।
বিভিন্ন দেশের নেতৃবৃন্দ ওই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে ‘যুদ্ধাপরাধের’
তদন্তের দাবি জানিয়েছে।
ত্রাণপ্রত্যাশীদের ওপর গুলির ঘটনায় আহত হয়েছেন প্রায় ৭৫০ জন।
আল-আওদা হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. মোহাম্মদ সালহা এপিকে বলেছেন, ১৭৬ জন
আহতের মধ্যে ১৪২ জনেরই গুলি লেগেছে। এর মধ্যে বাকি ৩৪ জন পদদলিত হয়ে আহত হয়েছেন।
তবে নিহতদের মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি তিনি। কেননা,
মরদেহগুলো গণনার জন্য সরকার পরিচালিত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
রমজানের আগেই যুদ্ধবিরতি : আসন্ন রমজান মাস শুরু হওয়ার আগেই
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি হতে পারে। ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের অন্যতম
মধ্যস্থতাকারী দেশ মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সামেহ শৌকরি শুক্রবার এই আশাবাদ
জানিয়েছেন। একই প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
আন্তর্জাতিক জোট আনতালিয়া ডিপ্লোমেসি ফোরামের সম্মেলনে যোগ দিতে
বর্তমানে তুরস্কে রয়েছেন শৌকরি। সেখানে এক ভাষণে তিনি বলেন, ‘আমি
আপনাদের বলতে পারি যে এই যুদ্ধের সব পক্ষ, অর্থাৎ আমরা সবাই ইতোমধ্যে সমঝোতার একটি
পয়েন্টে পৌঁছাতে পেরেছি। আশা করছি, রমজানের আগেই গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি হস্তান্তর
শুরু হবে।’
ইসরায়েলের হামলায় ৭ জিম্মি নিহত : গাজা উপত্যকায় অভিযানরত
ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা হামলায় উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের কব্জায়
থাকা জিম্মিদের মধ্যে ৭ জন নিহত হয়েছেন। এই নিহতদের মধ্যে ৪ জন ইসরায়েলি এবং ৩
জন বিদেশি নাগরিক। শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে এক পোস্টে এ তথ্য
নিশ্চিত করেছেন হামাসের সামরিক বিভাগ আল কাসেম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু উবাইদা
উবাইদা। কিন্তু উপত্যকার কোন এলাকায় এই ৭ জিম্মি নিহত হয়েছেন, তা বলেননি তিনি।
গাজায় বিমান থেকে ত্রাণ ফেলবে যুক্তরাষ্ট্র : ইসরায়েলের
নির্বিচার চলমান গণহত্যার মধ্যে দুর্ভিক্ষের মুখে থাকা গাজাবাসীর জন্য বিমান থেকে
ত্রাণসামগ্রী ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো
বাইডেন এ কথা জানিয়েছেন।
গত বৃহস্পতিবার গাজা সিটির কাছে ত্রাণের জন্য ভিড় করা শতাধিক
ফিলিস্তিনির মৃত্যুর পরদিন শুক্রবার বাইডেন এ পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। বাইডেন জানান,
যুক্তরাষ্ট্র আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আকাশ থেকে ত্রাণ ফেলা শুরু করবে। এদিকে
ত্রাণ সংস্থা অক্সফাম বলেছে, “গাজায় যুক্তরাষ্ট্রের ত্রাণ ফেলার
বিষয়টি অক্সফাম সমর্থন করে না, এটি মূলত যুক্তরাষ্ট্রের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের তাদের
বিবেকের দায় থেকে মুক্তি দিতে কাজ করবে, যাদের নীতি গাজায় চলমান নৃশংসতা এবং দুর্ভিক্ষের
ঝুঁকিতে অবদান রাখছে। এর পরিবর্তে ইসরায়েলে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ
করা উচিত বলে মনে করে সংস্থাটি।