Logo
শিরোনাম
নওগাঁর সীমান্তে গুলিতে নিহত যুবকের মৃতদেহ ফেরত দিলো বিএসএফ মোরেলগঞ্জে প্রকাশ্যে ফিল্মি স্টাইলে গৃহিনীকে রাস্তায় ফেলে মারপিট: ইমাম আটক সুনামগঞ্জে বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক সাংসদ নজির হোসেনের দাফন সম্পন্ন উত্তরায় মাভাবিপ্রবি টেক্সটাইল অ্যালামনাই এসোসিয়েশন এর ইফতার মাহফিল নওগাঁয় গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগে স্বামী, শাশুড়ী ও দেবরকে আটক করেছে র‌্যাব নওগাঁয় হত্যার দায়ে যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ধামরাইয়ে অগ্নিকাণ্ডে এক পরিবারের ৪ জন অগ্নিদগ্ধ নড়িয়ায় জমিজমা সংক্রান্ত জের ধরে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ ভেনিস বাংলাদেশ প্রেস ক্লাবের ইফতার মাহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত রামগড়ে বিজিবি'র উদ্যোগে ইফতার ও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ

বদর যুদ্ধে ইসলামের বিজয়

প্রকাশিত:রবিবার ০৯ এপ্রিল ২০২৩ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ |

Image

মাওলানা আমিন আশরাফ :১৭ রমজান। ইসলামের একটি ঐতিহাসিক দিন। এ দিনে মুসলমানরা বদরের ময়দানের যুদ্ধে বিজয়ী হন। হিজরতের দ্বিতীয় বছর বদরের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এ বছরই মুসলমানদের দুটি ঈদ ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা প্রথম উদযাপিত হয়।

বদর যুদ্ধে বিজয়ের ১৩ দিন পর হিজরির দ্বিতীয় বর্ষে দশম মাসের প্রথম তারিখ (১ শাওয়াল) ঈদুল ফিতর বা রোজার ঈদ পালন করা হয়। এরপর মদিনার সুদের কারবার করা ইহুদি বনুকাইনুকাকে পরাজিত করার পর সে বছর প্রথমবারের মতো পালিত হয় ঈদুল আজহা তথা কোরবানির ঈদও।

রমজান মাসেই নাজিল হয় পবিত্র কোরআন। এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয় বিশ্বমানবতার মুক্তিদূত হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর নবুওয়ত।

প্রিয় নবীজি (সা.) সব সময় সত্য, সুন্দর ও ন্যায়ের দাওয়াত দিয়েছেন অহিংস পন্থায়। তার পরও কুফর-শক্তি শান্তির বাণী প্রচারে বিঘ্ন সৃষ্টি করে। মুশরিক সম্প্রদায় আল্লাহর হাবিব (সা.)-কে প্রায় তিন বছর শিআবে আবুতালেব নামের স্থানে সপরিবার বন্দি করে রাখে। প্রিয়নবী (সা.) দাওয়াতি কাজে তায়েফে গমন করলে তাকে পাশবিক নির্যাতনে জর্জরিত করা হয়। মক্কায় ফিরে আসতে চাইলে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়।

দারুন নাদওয়ায় তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করে। এসব বাধাবিপত্তির মুখে ৬২৩ খ্রিস্টাব্দে রবিউল আউয়ালে নবুয়তের ১৩তম বছরে আল্লাহর নির্দেশে মহানবী (সা.) প্রিয় জন্মভূমি মক্কা শরিফ থেকে হিজরত করে মদিনায় চলে যান।

বদর যুদ্ধের মানবিকতার দৃষ্টান্ত যুদ্ধের ইতিহাসে অনন্য উদাহরণ। বদরের বন্দিদের প্রতি হজরত মুহাম্মদ (সা.) যে আদর্শ ব্যবহার দেখালেন, জগতের ইতিহাসে তার তুলনা মেলে না। তার আদেশে মদিনায় আনসার ও মুহাজিররা সাধ্যানুসারে বন্দিদের নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিয়ে আপন আপন গৃহে স্থান দিলেন এবং আত্মীয়-কুটুমের মতোই তাদের সঙ্গে ব্যবহার করলেন।

নিরীহ ও শান্তিকামী মদিনাবাসী এতে খুবই প্রীত হয়। খাজরাজ বংশীয় পৌত্তলিক নেতা আবদুল্লাহ ইবনে উবায় ইবনে সলুলের জন্য নবনির্মিত স্বর্ণমুকুটটি নবীজি (সা.)-এর পদপ্রান্তে উৎসর্গ করে তারা। নবীজি (সা.) সে মুকুট মস্তকে ধারণ না করে, তা বিক্রি করে দুস্থদের মধ্যে বিলিয়ে দেন। মুকুট হারানোর বেদনায় প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে ওঠে মুনাফিক নেতা আবদুল্লাহ ইবনে উবায়। তারই প্ররোচনায় মুনাফিক চক্রের ষড়যন্ত্রে এবং মদিনার মৈত্রী চুক্তি ভঙ্গকারী ইহুদি ও খ্রিস্টানদের গোপন মদদে মক্কার কুরাইশরা হিজরতের দ্বিতীয় বছর ৬২৪ খ্রিস্টাব্দে রমজান মাসেই মদিনায় আক্রমণ করে।

এ যুদ্ধে কুরাইশ বাহিনীর ছিল ১ হাজার সশস্ত্র সেনা, ১০০টি ঘোড়া, ৭০০টি উট। নেতৃত্বে ছিল উতবা, শায়বা ও ওয়ালিদ। কুরাইশরা ৪৫০ কিলোমিটার দূরে মদিনার উপকণ্ঠে এসে আক্রমণ করল। নবীজি (সা.) মদিনার পবিত্রতা এবং নারী ও শিশুদের হেফাজত করতে মুহাজির ও আনসার সাহাবিদের সঙ্গে পরামর্শক্রমে মদিনা থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরত্বে বদর নামক জায়গায় এসে প্রতিরোধ গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিলেন। এ আত্মরক্ষামূলক প্রতিরোধযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সাহাবি ছিলেন মাত্র ৩১৩ জন। তাদের সঙ্গে ছিল মাত্র দুটি ঘোড়া ও ৭০টি উট। সাহাবিরা মদিনা থেকে তিন দিনে বদর পাহাড়ের পাদদেশে পৌঁছালেন। নেতৃত্বে ছিলেন নবীজি (সা.)-এর চাচা আবুল ফজল (রা.) ও আরেক চাচা আমির হামজা (রা.)।

মুসলিমরা বদর যুদ্ধে আল্লাহর গায়েবি মদদে অলৌকিকভাবে বিজয় লাভ করেন এবং কাফেররা শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়। এতে কুরাইশদের ৭০ জন নিহত হয় ও ৭০ জন বন্দি হয়। মুসলিমদের ১৪ জন শহীদ হন। যখন যুদ্ধ শেষ হলো, নবীজি (সা.) প্রথমে ঘোষণা করলেন, তাদের হত্যা করো না। বদরের বন্দিদের সহজশর্তে মুক্তিও দেওয়া হলো। তাদের অনেকেই ইসলামের অনুপম আদর্শে মুগ্ধ হয়ে মুসলমান হলেন। মুক্তিপণের মূল্য ছিল ২ হাজার দিরহাম থেকে ১২ হাজার দিরহাম। গরিবদের বিনা পণেই মুক্তি দেওয়া হয়। শিক্ষিত বন্দিদের শিক্ষার বিনিময়ে মুক্তি দেওয়া হয়। একজন বন্দি ১০ জন শিশুকে লেখাপড়া শেখালে তাকে মুক্তি দিলেন।

বদর যুদ্ধের মানবিকতার দৃষ্টান্ত যুদ্ধের ইতিহাসে অনন্য উদাহরণ। বদরের বন্দিদের প্রতি হজরত মুহাম্মদ (সা.) যে আদর্শ ব্যবহার দেখালেন, জগতের ইতিহাসে তার তুলনা মেলে না। তার আদেশে মদিনায় আনসার ও মুহাজিররা সাধ্যানুসারে বন্দিদের নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিয়ে আপন আপন গৃহে স্থান দিলেন এবং আত্মীয়-কুটুমের মতোই তাদের সঙ্গে ব্যবহার করলেন। বন্দিদের স্বগতোক্তি ছিল, মদিনাবাসীর ওপর আল্লাহর রহমত নাজিল হোক। তারা আমাদের উটে চড়তে দিয়ে নিজেরা হেঁটে গেছে, নিজেরা শুকনো খেজুর খেয়ে আমাদের রুটি খেতে দিয়েছে। (বিশ্বনবী, গোলাম মুস্তফা, পৃষ্ঠা ১৬০)

বদরের চেতনা আমাদের প্রেরণা। বদর থেকে আমরা নিই মানবিকতার প্রথম সবক। মহান আল্লাহ আমদের সে তওফিক দিন। আমিন।

লেখক : আলেম, শিক্ষক ও অনুবাদক

 


আরও খবর



রমজানে যুদ্ধবিরতি হলো না গাজায়

প্রকাশিত:সোমবার ১১ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ |

Image

গতকাল রোববার চাঁদ দেখা যাওয়ার পর সোমবার থেকে রোজা শুরু হয়েছে ফিলিস্তিনসহ গোটা মধ্যপ্রাচ্যে; কিন্তু রমজানের চাঁদ রাতেও ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় বোমাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছিল ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।

গত অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে এখন অবধি পেরিয়েছে ৬ মাস। এ ছয় মাসে গাজায় ব্যাপক বোমা বর্ষণের পাশাপাশি ত্রাণ ও মানবিক সহায়তা পণ্যের সরবরাহেও বাধা দিচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, বিশেষ করে খাদ্য ও চিকিৎসা পণ্যের অভাবে মৃত্যুর মিছিল শুরু হয়েছে গাজায়।

গাজার ভৌগলিক আয়তন ৩৬৫ বর্গকিলোমিটার। এ উপত্যকার উত্তর ও পশ্চিমে ইসরায়েল সীমান্ত, দক্ষিণে মিসর সীমান্ত এবং পূর্বদিকে ভূমধ্যসাগর অবস্থিত। ২০০৫ সালে হামাস ক্ষমতা দখলের পর থেকে উপত্যকার উত্তর ও পশ্চিম সীমান্ত সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ইসরায়েলের হাতে। এতদিন পর্যন্ত উপত্যকায় খাদ্য-ত্রাণ ও মানবিক সহায়তার সরবরাহ দক্ষিণে মিসরীয় সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করতো; কিন্তু এখন সেই সীমান্তপথটিও কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে ইসরায়েলি বাহিনী।

ওপেন আর্মস নামের স্পেনভিত্তিক একটি দাতব্য সংস্থা ভূমধ্যসাগর পথে সম্প্রতি ২০০ টন খাদ্য ও ওষুধবাহী একটি জাহাজ গাজা উপত্যকার উদ্দেশে পাঠিয়েছে। গতকাল এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানিয়েছে, ত্রাণবাহী জাহাজটি বর্তমানে ভূমধ্যসাগরীয় দেশ সাইপ্রাসের দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দরশহর লারাঙ্কায় রয়েছে, সোমবারের মধ্যে সেটি গাজার উপকূলের কাছাকাছি থাকবে। গাজার উপকূলে পৌঁছানোর পর যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক দাতব্য সংস্থা ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনের কর্মীদের তত্ত্বাবধানে এসব ত্রাণপণ্য খালাস করা হবে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে ওপেন আর্মস।

খাদ্যের অভাবে মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়া গাজা উপত্যকায় সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র, জর্ডান, কানাডা ও অন্যান্য দেশ বিমান থেকে ত্রাণের বস্তা ফেলা শুরু করেছিল, কিন্তু জাতিসংঘের ত্রাণ ও মানবিক সহায়তা বিভাগ জানিয়েছে, উপত্যকায় বসবাসকারী প্রায় ২৪ লাখ ফিলিস্তিনি জনগণের সবার কাছে ত্রাণ পৌছানোর জন্য বিমানের চেয়ে সড়ক পথ বেশি উপযোগী।

গাজায় সাম্প্রতিক যুদ্ধের শুরু থেকে উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস এবং ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার মধ্যে মধ্যস্থতার ভূমিকায় রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিসর। চলতি মার্চের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ঘোষণা দিয়েছিলেন যে আসন্ন রমজানে ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি হতে যাচ্ছে গাজায়। এই বিরতির সময় উপত্যকায় ত্রাণ সরবরাহে কোনো বাধা দেবে না ইসরায়েলি বাহিনী এবং তার পরিবর্তে নিজেদের হাতে থাকা জিম্মিদের মধ্যে থেকে ১০০ জনকে মুক্তি দেবে হামাস।

কিন্তু বহু আকাঙিক্ষত সেই যুদ্ধবিরতি চুক্তি আর হয়নি; আর চুক্তি না হওয়ার জন্য ইসরায়েলের এবং হামাস উভয়ই পরস্পরকে দায়ী করছে। হামাসের দাবি ছিল যে যুদ্ধবিরতির সময় ইসরায়েলকে অবশ্যই গাজা উপত্যকা থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। এই দাবির প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা বলেছে, হামাস যুদ্ধবিরতির সুযোগ নিয়ে ইসরায়েলের ভূখণ্ডে পুনরায় হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।

গতকাল চাঁদরাতে ইসরায়েলি বাহিনীর স্থল ও বিমান অভিযানে গাজার মধ্যাঞ্চল গাজা সিটিতে ১৩ জন এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসে গাজা উপত্যকায় ১৭ জন নিহত হয়েছেন। রোববার এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, মধ্যস্থতাকারীরা যুদ্ধবিরতির যেসব শর্ত দিয়েছিল, হামাস সেসবের বিপক্ষে। তাই বর্তমানে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর যে সর্বাত্মক অভিযান চলছে, তা রমজানেও অব্যাহত থাকবে।

এদিকে শনিবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম এমএসএনবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, হামাসকে নির্মূল করার অধিকার ইসরায়েলের রয়েছে, তবে গাজায় যে হারে বেসমারিক লোকজন হতাহত হচ্ছেন তাতে দিন দিন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর ওপর অধৈর্য হয়ে উঠছেন তিনি।

তিনি বলেন, ইসরায়েলি বাহিনী যেভাবে অভিযান পরিচালনা করছে, তা ইসরায়েলকে সহায়তার পরিবর্তে ক্ষতি করছে বেশি। গাজার বেসামরিক লোকজনের প্রাণহানি ঠেকাতে ইসরায়েলি বাহিনীর আরও মনযোগ দেওয়া প্রয়োজন।

সাক্ষাৎকারে বাইডেন আরও জানান, ইসরায়েলি পার্লামেন্ট নেসেটে বক্তব্য দেওয়ার মাধ্যমে ইসরালের জনগণের সঙ্গে এ ইস্যুতে তিনি সরাসরি মতবিনিময় করতে আগ্রহী।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা এএফপিকে জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতির চুক্তি স্বাক্ষর না হলেও সব পক্ষের মধ্যে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে এবং চুক্তিতে স্বাক্ষরের জন্য ইসরায়েল ও হামাসের ওপর কূটনৈতিক চাপ অব্যাহ রয়েছে।

আমরা আশা করছি রমজানের মাঝামাঝি এ ইস্যুতে একটি মীমাংসায় পৌঁছানো সম্ভব হবে, এএফপিকে বলেন ওই কর্মকর্তা।

সূত্র : এএফপি


আরও খবর



সাংবাদিকরা যাতে হয়রানির শিকার না হন

প্রকাশিত:সোমবার ১৮ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ |

Image

তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেছেন, তথ্য চাইতে গিয়ে কোনো সাংবাদিক যাতে হেনস্তা বা হয়রানির শিকার না হয়, সেটা নিশ্চিত করা হবে।

সোমবার (১৮ মার্চ) রাজধানীর সার্কিট হাউজ রোডে তথ্য ভবন মিলনায়তনে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দ্বিতীয় পর্যায়ের কল্যাণ অনুদানের চেক বিতরণের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এ কথা জানান।

মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, বাংলাদেশের কোথাও একজন সাংবাদিক তথ্য চাওয়ার জন্য কোনোভাবে যাতে হেনস্তা বা হয়রানির শিকার না হয়, সেই সুরক্ষা আমরা নিশ্চিত করতে চাই।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা এটা নিশ্চিত করতে চাই, বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে সাংবাদিকতা করতে গিয়ে কোনো সাংবাদিক যেন কোনো ধরনের হয়রানি বা ঝুঁকির মুখে না পড়ে। তাদের সুরক্ষা ও কল্যাণ নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনভাবে গণমাধ্যম তাদের কাজ করবে। কর্তৃপক্ষকে, সরকারকে প্রশ্ন করবে, সমালোচনা করবে, এরকম একটি সমাজব্যবস্থা আমরা তৈরি করতে চাই। এর বাইরে বঙ্গবন্ধু কন্যার সরকার চিন্তা করে না।

ঢাকার বাইরে গণমাধ্যমের একজন সাংবাদিককে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কারাদণ্ড দিয়ে জেলে নেওয়ার ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ খবরটি জানার সঙ্গে সঙ্গে আমি খোঁজ নিয়েছি। তথ্য কমিশন অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে এ বিষয়টি আমলে নেয়। ইতোমধ্যে তারা বিষয়টির তদন্ত করেছে। আমি কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করে বলেছি, আমরা সঠিক তথ্য জানতে চাই।

মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, সাংবাদিকদের সুরক্ষা বলয় তৈরির জন্য বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার প্রয়াসের অংশ হিসেবে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে কল্যাণ অনুদান দেওয়া হচ্ছে। এখানে বঙ্গবন্ধুর কন্যা রাজনৈতিক বিশ্বাস বা অন্য কোনো কিছু দেখেননি, শুধু প্রয়োজন দেখেছেন, মানুষ দেখেছেন, সাংবাদিককে দেখেছেন। কে কোন দলের, কার পক্ষে ছিলেন, বিপক্ষে ছিলেন এগুলো চিন্তা করেননি এবং তার ভিত্তিতে পেশাদারিত্বের সঙ্গে সাংবাদিকদের অনুদানের কাজটি করা হয়েছে। রাজনৈতিক চিন্তার ঊর্ধ্বে উঠে প্রয়োজন এবং পেশা বিবেচনায় সরকার সাংবাদিকদের পাশে এসে দাঁড়াচ্ছে।

নবম ওয়েজ বোর্ডের বকেয়া পাওনা দ্রুততার সঙ্গে মিটিয়ে দেওয়ার জন্য সব গণমাধ্যমের মালিকপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সরকার সাংবাদিকবান্ধব ও গণমাধ্যমবান্ধব। আমরা গণমাধ্যমের পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে চাই এবং পেশাদার সাংবাদিকদের পূর্ণাঙ্গ সুরক্ষা নিশ্চিত করতে চাই। সেই নিরিখে সাংবাদিকদের কল্যাণের স্বার্থে সরকার কাজ করছে। বেসরকারি খাতকেও অনুরোধ করতে চাই, তারাও বিশেষ করে মালিকপক্ষ যেন সহানুভূতি ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে তাদের দায়িত্ব পালন করে।

মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে এ সরকার দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির পক্ষে কাজ করতে চায় এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করতে চায়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের একটি বড় জায়গা হচ্ছে গণতন্ত্র। গণতন্ত্র, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম পাশাপাশি হাতে হাত ধরে চলে, সে পরিবেশ আমরা নিশ্চিত করতে চাই।

প্রতিমন্ত্রী ব‌লেন, যারা সমাজে অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে অপতথ্য ছড়ায়, তাদের আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করব। কারণ অপতথ্য গণতন্ত্রের জন্য হুমকি, সুস্থ সাংবাদিকতা ও সুস্থ গণমাধ্যমের জন্য হুমকি। সাংবাদিকদের সুরক্ষা ও কল্যাণে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সরকার সবসময় পাশে থাকবে।

বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুভাষ চন্দ্র বাদলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ট্রাস্টের ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য ও তথ্য অধিদপ্তরের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. শাহেনুর মিয়া, ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য ও প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ, ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ওমর ফারুক, ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য ও দৈনিক সংবাদের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক কাশেম হুমায়ুন, ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন প্রমুখ এসময় উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী ঢাকার ৪২ জন সাংবাদিককে কল্যাণ অনুদানের চেক বিতরণ করেন।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দ্বিতীয় পর্যায়ে ২৬৩ জন সাংবাদিক ও সাংবাদিক পরিবারের অনুকূলে বিতরণের জন্য ২ কোটি ৩ লাখ টাকা অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এর আগে একই অর্থবছরে প্রথম পর্যায়ে ২৩৬ জন সাংবাদিক ও সাংবাদিক পরিবারের অনুকূলে ১ কোটি ৮৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা অনুদান প্রদান করা হয়।

প্রতিষ্ঠার পর ২০১৫-১৬ অর্থবছর থেকে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে দুস্থ, অসচ্ছল, দুর্ঘটনায় আহত সাংবাদিকদের এবং মৃত সাংবাদিকদের পরিবারের অনুকূলে আর্থিক সহায়তা/কল্যাণ অনুদান প্রদান করা হয়ে থাকে। এ পর্যন্ত ট্রাস্ট থেকে ৩ হাজার ৯৩২ জন সাংবাদিক ও সাংবাদিক পরিবারের অনুকূলে ৩৩ কোটি ৭৪ লাখ টাকা আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়েছে।


আরও খবর



বুড়িগঙ্গার পানি জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি

প্রকাশিত:শনিবার ২৩ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ |

Image

ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীতে জলজ প্রাণী বেঁচে থাকার সুযোগ নেই। জলজ প্রাণী বেঁচে থাকার জন্য দ্রবীভূত অক্সিজেন (ডিও) ৪ মিলিগ্রাম/লিটার থাকা প্রয়োজন। কিন্তু বুড়িগঙ্গা নদীতে সদরঘাট টার্মিনাল থেকে শ্যামপুর বিআইডব্লিউটিএ টার্মিনাল পর্যন্ত দ্রবীভূত অক্সিজেন (ডিও) মাত্র ০.১৪ থেকে ০.৭২ মিলিগ্রাম/লিটার বলে জানিয়েছে পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন আন্দোলন (পরিজা) ও মানবাধিকার উন্নয়ন কেন্দ্র।

বিশ্ব পানি দিবস উপলক্ষে শুক্রবার (২২ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবে পরিজা ও মানবাধিকার উন্নয়ন কেন্দ্রের যৌথ উদ্যোগে প্রতিবেদন প্রকাশ ও গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে জানানে হয়, পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি মিঠা পানি নদীবেষ্টিত শহর ঢাকা। এই বিশাল মিঠা পানির জলাধার ইতোমধ্যে ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়েছে। তাছাড়া অভিন্ন নদীর পানি উজান থেকে প্রত্যাহার করায় ধীরে ধীরে উত্তরাঞ্চল মরুকরণের দিকে যাচ্ছে এবং দক্ষিণাঞ্চলের নদীগুলোতে লবণাক্ততা বাড়ছে। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে ২০৫০ সাল নাগাদ পানির কারণে মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয় নেমে আসবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বুড়িগঙ্গা নদীর পরিবেশ জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ। এতে কোনো জলজ প্রাণী বেঁচে থাকার সুযোগ নেই। অপরিশোধিত শিল্পকারখানায় বর্জ্য ও পয়:বর্জ্য, নৌযানের বর্জ্য, কঠিন বর্জ্য নদীতে ফেলার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

পরিজার সভাপতি প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস আহমেদ উজ্জলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও ডাকসুর সাবেক জিএস ডা. মোস্তাক হোসেন।

বক্তারা বলেন, জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী বিশ্বে বর্তমানে ২.২ বিলিয়ন মানুষ বিশুদ্ধ পানীয় জল থেকে বঞ্চিত এবং এদের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। ২০৫০ সাল নাগাদ বিশ্ব জনসংখ্যা ২ বিলিয়ন বৃদ্ধি পাবে এবং বিশ্বব্যাপী পানির চাহিদা ৩০ শতাংশ বেড়ে যাবে। বর্তমানে বিশ্বে কৃষি খাতে ৭০ শতাংশ (যার বেশির ভাগই সেচ কাজে), শিল্প খাতে ২০ শতাংশ (বিশেষ করে জ্বালানি ও উৎপাদনে), গৃহস্থালি কাজে ১০ শতাংশ (যার এক শতাংশেরও কম সুপেয় পানি) হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

এদেশে ছোট বড় ৪০৫টি নদী রয়েছে। এরমধ্যে অভিন্ন নদীর সংখ্যা ৫৭টি। ৫৪টি ভারতের এবং ৩টি মিয়ানমারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। দেশের নদীগুলোর ৪৮টি সীমান্ত নদী, ১৫৭টি বারোমাসি নদী, ২৪৮টি মৌসুমী নদী। মানুষের অত্যাচারে নদীগুলো আজ মৃতপ্রায়। উজানে পানি প্রত্যাহারের কারণে উত্তরাঞ্চলের নদীগুলো শুল্ক বালুচরে পরিণত হয়েছে এবং দক্ষিণাঞ্চলের নদীগুলোতে লবণাক্ততা বেড়েই চলেছে। দখল, ভরাট, আর বর্জ্যে নদীগুলো এখন নিস্তব্ধ স্রোতহীন এবং দূষণের ভারে পানি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে জীববৈচিত্র শূন্য হয়ে পড়ছে। ফলে পরিবেশ, প্রতিবেশ, অর্থনীতি, জনস্বাস্থ্য ও জীবন-জীবিকা মারাত্মক হুমকির সম্মুখীন।

ডা. মোস্তাক হোসেন বলেন, নিরাপদ পানি অভাবে মানব শরীরের কিডনি, লিভার, হার্টসহ নানান অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে যেতে পারে। নিরাপদ পানির অভাবে ঢাকা শহরের অধিকাংশ মানুষ পেটের সমস্যাসহ নানান সমস্যায় ভুগে থাকেন।

ঢাকা শহরের লক্ষ লক্ষ প্রান্তিক মানুষ পানির ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত দাবি করে পরিজার সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস আহমেদ উজ্জল বলেন, সকালবেলায় বস্তির মানুষেরা এক কলসি পানির জন্য এই শহরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে; যা তাদের জীবন জীবিকাকে চ্যালেঞ্জের মধ্যে ফেলছে। সরকারকে এই প্রান্তিক মানুষের কথা ভেবে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

একটি রোডম্যাপ করে দেশব্যাপী পানির অধিকারের জন্য আন্দোলন গড়ে তুলতে আহ্বান জানান মানবাধিকার উন্নয়ন কেন্দ্রের সদস্য সচিব মাহবুল হক।

 


আরও খবর



নোবিপ্রবিতে পরীক্ষার হলে বিশৃঙ্খলা,জড়িতদের শাস্তির দাবি

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৪ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ |

Image

মোঃ সিনান তালুকদার নোবিপ্রবি প্রতিনিধি :

পরীক্ষার হলে বিশ্ববিদ্যালয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজে বাঁধা দেওয়ায় শিক্ষার্থী কর্তৃক হল পর্যবেক্ষক শিক্ষকদের সাথে চরম ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের প্রতিবাদ জানান নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) শিক্ষক সমিতি। 

বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. বিপ্লব মল্লিক এবং সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ মোহাইমিনুল ইসলাম সেলিম সংবাদ সম্মেলনে এক যৌথ বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানান।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষক নেতৃবৃন্দ বলেন, গত বুধবার (১৩ মার্চ) তারিখের পরীক্ষার হলে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের জনৈক ছাত্রনেতার শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজে বাঁধা দেওয়ায় ঐ শিক্ষার্থী হল পর্যবেক্ষক শিক্ষকদের সাথে চরম ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করে। পরীক্ষার সময় শেষ হওয়ার পর, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের উপস্থিতিতে কতিপয় ছাত্রনেতা হল-পর্যবেক্ষক একজন শিক্ষককে রুমে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরবর্তী সময়ে, ঐ শিক্ষক, পরিচালক (ছাত্র-পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগ), প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) এবং উপস্থিত অন্যান্য শিক্ষকদেরকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ ও কুরুচিপূর্ণ ইঙ্গিত দিয়ে কথা বলতে থাকে, যা কোনভাবেই কাম্য নয়। 

বিবৃতিতে শিক্ষক নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে ছাত্রলীগের পদধারী কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল শিক্ষার্থী পরীক্ষার হলসমূহে নিয়মবহির্ভূত হস্তক্ষেপ করছে এবং কর্তব্যরত শিক্ষকদের সাথে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করে আসছে।

প্রতিবাদ জানিয়ে তারা বলেন, ক্যাম্পাসে শিক্ষা ও গবেষণার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে শিক্ষক সমিতি বদ্ধ পরিকর। কিন্তু মুষ্ঠিমেয় শিক্ষার্থীদের এরূপ অছাত্রসুলভ আচরণের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের দৈনন্দিন শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সুস্থ পরিবেশ বজায় রাখতে এবং পরীক্ষার হলসমূহে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে এরূপ কার্যক্রম বন্ধের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।


পাশাপাশি উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে আগামী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ঘটনার সাথে জড়িত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে। অন্যথায় শিক্ষক সমিতি কঠোর কর্মসূচী দিতে বাধ্য হবে।

ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে নোবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি নাঈম রহমান বলেন,  শিক্ষককে রুমে অবরুদ্ধ করার ঘটনা ঘটেনি। বিপ্লব মল্লিক স্যার নিজেই দায়িত্বরত ম্যাডামকে স্যারের রুমে নিয়ে বসিয়ে আমাদের সাথে কথা বলতে  এসেছিলেন। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তার ফোন ও অফ ছিলো কিন্তু দায়িত্বরত ম্যাডামের ফোন এবং ল্যাপটপ দুটোই চালু ছিল। আমার প্রশ্ন হচ্ছে শিক্ষকরা পরীক্ষার হলে ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ইউজ করতে পারবে এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন কি বলে? আমি দোষীদের পক্ষ নিচ্ছি না। শিক্ষার্থী যদি দোষী হয় তাহলে এ ক্ষেত্রে ম্যাডাম ও দোষী। শাস্তি ২ জনেরই হওয়া উচিত। নকল করলে তাকে শাস্তি দিবে এটাতে আমার কোনো দ্বিমত নাই। কিন্তু বিনা অপরাধে কাউকে দোষী সাভ্যস্ত করার তো দরকার নেই।


আরও খবর



শেহবাজ শরিফ আবারও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত:সোমবার ০৪ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ |

Image

দক্ষিণ এশিয়ার পরমাণু শক্তিধর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলেন শরিফ-জারদারি জোটের শেহবাজ শরিফ। ৩ মার্চ দেশটির জাতীয় পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের ভোটে এই পদে নির্বাচিত হন তিনি। এ নিয়ে তিনি দ্বিতীয়বারের মতো এই দেশটির প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলেন।

পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন এবং দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল।

ডন বলছে, পিএমএল-এন সভাপতি শেহবাজ শরিফ ২০১ ভোট পেয়ে পাকিস্তানের ২৪তম প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন বলে জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ঘোষণা করেছেন। অন্যদিকে পিটিআইয়ের প্রধানমন্ত্রী পদে প্রার্থী ওমর আইয়ুব খান পেয়েছেন ৯২ ভোট।

এরপর আয়াজ সাদিক শেহবাজকে সংসদ নেতার আসনে ডেকে নেন। নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী শিগগিরই সংসদে ভাষণ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ঘোষণার পর বড় ভাই নওয়াজকে জড়িয়ে ধরেন শেহবাজ।

এর আগে কয়েকদিনের টানা আলোচনার পর গত ফেব্রুয়ারি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে পাকিস্তানে সরকার গঠনে ঐকমত্যে পৌঁছায় নওয়াজ শরিফের পাকিস্তান মুসলিম লীগ (পিএমএল-এন) এবং বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)।

পরে দলীয়ভাবে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদের জন্য শেহবাজ শরিফকে মনোনয়ন দেয় পিএমএল-এন। পিএমএল-এন ছাড়াও শেহবাজের পেছনে পিপিপি, এমকিউএম-পি, পিএমএল-কিউ, বিএপি, পিএমএল-জেড, আইপিপি এবং এনপির মোট ২০৫ সদস্যের সমর্থন ছিল বলে জানানো হয়েছিল।

এছাড়া পার্লামেন্টে ভোটাভুটিতে শেহবাজ শরিফের বিপরীতে ছিলেন পিটিআই-মনোনীত ওমর আইয়ুব খান। তিনি নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে শেহবাজ শরিফের প্রার্থিতার বিরুদ্ধে আপত্তি জানালেও পরে তা খারিজ হয়ে যায়।

উল্লেখ্য, ১৯৫০ সালে লাহোরে জন্ম নেওয়া শেহবাজ শরিফ পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) নেতা এবং তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ছোট ভাই। তিনি পাকিস্তানের বৃহত্তম প্রদেশ পাঞ্জাবের তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন।

রাজনীতি শুরুর পর উত্থান-পতনের ৩৪ বছরে এসে ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করার মাধ্যমে মিয়া মোহাম্মদ শেহবাজ শরিফ ২০২২ সালের এপ্রিলে পাকিস্তানের ২৩তম প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছিলেন। সেবারই প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন তিনি।

এছাড়া পাকিস্তানের সাবেক সামরিক শাসক পারভেজ মুশাররফ শরিফ ভাইদের সৌদি আরবে নির্বাসিত করার আগে ১৯৯৭-১৯৯৯ সাল পর্যন্ত পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন শেহবাজ শরিফ। পরে আরও দুই দফায় ২০০৮-২০১৩ এবং ২০১৩ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্তও পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

প্রসঙ্গত, শেহবাজ ১৯৮৮ সালে প্রথমবারের মতো পাঞ্জাবের প্রাদেশিক পরিষদের এমপিএ নির্বাচিত হন। ১৯৯০ সালে জাতীয় পরিষদের আসনে লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নেন তিনি এবং এমএনএ নির্বাচিত হন। তবে ১৯৯৩ সালে তিনি আবারও প্রাদেশিক পরিষদের আসনে নির্বাচন করেন এবং পাঞ্জাবের প্রাদেশিক পরিষদের বিরোধী দলীয় নেতা হন। পরবর্তীতে ১৯৯৬ সালে প্রাদেশিক পরিষদ ভেঙে দেওয়া হলে তার মেয়াদ শেষ হয়।

১৯৯৭ সালের নির্বাচনে জয় পাওয়ার পর শেহবাজ পাকিস্তানের বৃহত্তম প্রদেশটির শাসনকার্য পরিচালনার দায়িত্ব পান। ১৯৯৯ সালে পারভেজ মুশাররফের সামরিক অভ্যুত্থানের আগ পর্যন্ত তিনি পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন।

২০০৮ সালের নির্বাচনে পাঞ্জাব প্রদেশে পিএমএল-এন সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয় পায়। প্রায় এক দশকের নির্বাসন থেকে ফিরে সেই নির্বাচনে অংশ নিয়ে শেহবাজ দ্বিতীয়বারের মতো পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হন।

২০০৮ সালে পাঞ্জাবের প্রাদেশিক পরিষদের তিনটি আসন (পিপি-১৫৯, পিপি-১৬১ এবং পিপি-২৪৭) এবং জাতীয় পরিষদের একটি আসনে (এনএ-১২৯) জয় পান শেহবাজ শরিফ। তবে সব আসন ছেড়ে দিয়ে ১৫৯ নম্বর আসন ধরে রাখেন তিনি। শেহবাজের ৩৪ বছরের রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন হিসেবে দেখা হয় মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন পাঞ্জাবে মেট্রো বাস প্রকল্প বাস্তবায়ন।

পাকিস্তানের মিয়া পরিবারের মিয়া মোহাম্মদ শরিফের দ্বিতীয় ছেলে শেহবাজ শরিফ। দেশটির প্রভাবশালী ব্যবসায়ী এবং ইত্তেফাক গ্রুপ অব কোম্পানির যৌথ মালিক ছিলেন তিনি। তিনি ১৯৮৫ সালে লাহোর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ছিলেন।

কাজপাগল হিসেবে পরিচিত শেহবাজ শরিফ মুখ্যমন্ত্রীর পরিবর্তে নিজেকে খাদিম-ই-আলা (প্রধান কর্মচারী) বলতেই বেশি পছন্দ করতেন।

 


আরও খবর