
নানা টানাপড়েনের মধ্য দিয়ে চলছে জামায়াত-বিএনপি সম্পর্ক। ১৯৯৯ সাল থেকে শুরু হওয়া এই জোট চলে একাধারে ২৩ বছর। দেশের রাজনীতিতে এত দীর্ঘ সময় ধরে দুটি দলের একসঙ্গে চলার ইতিহাস বিরল। বিএনপি-জামায়াতের দীর্ঘ ২৩ বছরের এ মধু চন্দ্রিমা শেষ হওয়ার গুঞ্জন চলছে বেশ কিছু দিন থেকে।
জোট ছাড়ার ব্যাপারে জামায়াত বরাবর চুপ থাকলেও বিএনপিতে জামায়াতবিরোধী জনমত ছিল তুঙ্গে। এত কিছুর পরও দলটিকে ছাড়ার ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি বিএনপি। বিএনপি জোট ছাড়তে পারে জামায়াত বা জামায়াতকে ছেড়ে দিতে পারে বিএনপি এমন আলোচনার মধ্যে সম্প্রতি এক আলোচনায় বিএনপি জোট ছাড়ার কথা বলেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান।
জামায়াত আমিরের ভার্চুয়াল বক্তব্যের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। পরে এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনেও বেশ আলোচনা হয়। তবে জামায়াতের আমিরের এমন বক্তব্যের বিষয়ে বিএনপির নেতারা এখনো সরাসরি মুখ খুলছেন না। কারণ জামায়াতের এমন সিদ্ধান্ত কোনো বোঝাপড়ার অংশ কি না তা বুঝে উঠার চেষ্টা করছেন নেতারা।
এ বিষয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমরা সময়মতো জানাব। এ ব্যাপারে আমি কোনো কমেন্ট করব না। সময় হলেই সবাই সব কিছু জানতে পারবেন।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক নেতা নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করে বলেন, তাদের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়ে গেছে। শিগগিরই জামায়াতকে তা লিখিত আকারে জানানো হবে। সেখানে ব্যাখ্যাও দেওয়া হবে কী কী কারণে জোট ভাঙা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, ‘বারবার স্থায়ী কমিটি থেকে তাদের সঙ্গে সম্পর্কোচ্ছেদের প্রস্তাব করা হচ্ছিল। সেটা নিয়ে পর্যালোচনা করা হচ্ছিল যে, জামায়াতকে নিয়ে আমরা আর এগোচ্ছি না। তারা তো শুধু ব্যবসা বোঝে, মুনাফা খোঁজে।
জামায়াতের একজন সিনিয়র নেতা নাম প্রকাশ না করে বলেন, এটা অফিশিয়াল বক্তব্য না। বিভিন্ন ব্যক্তি বিভিন্ন সময়ে আলোচনা করে থাকে। দলের রুকন সম্মেলনে আমিরের বক্তব্য যদি আনুষ্ঠানিক না হয় তাহলে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য কবে আসবে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘জামায়াতের আমির তো শত শত বক্তব্য দেন। ব্যক্তি ও অফিশিয়াল বক্তব্য এক নয়।
জামায়াতের সূত্রে জানা গেছে, দলের এক নায়েবে আমিরের সঙ্গে সরকারের এক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীর বৈঠকের গুঞ্জন চাউর হয়েছে বেশ কিছুদিন আগেই। নিবন্ধন ফিরে পেতে লবিং করছে দীর্ঘদিন মাঠ রাজনীতিতে কোণঠাসা হয়ে থাকা দলটি।
বিএনপির সঙ্গে জোট নিয়ে আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে জামায়াতের আমির বলেন, আমরা তাদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করেছি, এর সঙ্গে তারা ঐকমত্য পোষণ করেছে। তারা আর কোনো জোট করবে না। এখন যার যার অবস্থান থেকে সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করব। যদি আল্লাহ আমাদের তৌফিক দান করেন তাহলে আমাদের আগামী দিনগুলোতে কঠিন প্রস্তুতি নিতে হবে এবং অনেক বেশি ত্যাগ স্বীকার করতে হবে।