
বুলবুল আহমেদ সোহেল :
বিএনপির সঙ্গে গণতন্ত্র চর্চা করার মতো মানসিকতা নেই মন্তব্য করে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের আলোচিত সংসদ সদস্য একে এম শামীম ওসমান বলেছেন, নারায়ণগঞ্জকে অশান্ত করার চেষ্টা করলে এখানে থাকতে দেব না।‘নেতৃবৃন্দ বলছেন গণতন্ত্রের কথা, ভোট নিরপেক্ষ হওয়ার কথা। বিএনপির ভাইয়েরা যারা আছেন, ২০০১ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত কী করেছেন? পঁচাত্তর সালের পর আপনারা যখন ক্ষমতায় ছিলেন, তখন কী করেছিলেন? এই আদালত থেকে আওয়ামী লীগের নেতাদের মার খেয়ে চলে যেতে হয়েছে। এগুলো কি সামান্য অত্যাচার? নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্যানেলে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিয়ে বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরের দিকে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরে বলেন, ‘আপনারা দেখবেন লিংকরোডে পাপ্পু ও মনিরের কবর রয়েছে। তাদেরকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল, এমনকি তাদের লাশের উপরও গুলি করা হয়েছিল। আমাদের বাড়ি ঘরেও হামলা করা হয়েছিল, ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় এক খুনির নির্দেশে নয়জন নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছিল। বিএনপির আমলে নারায়ণগঞ্জের ৪৯ জন লোককে আমাদের হাত দিয়ে দাফন করতে হয়েছে।’
বিএনপি বলেছিল ১০ ডিসেম্বর হ্যান হবে, ত্যান হবে; আমি বলেছিলাম ঘোড়ার ডিম হবে। এখনও বলছি ঘোড়ার ডিম না, বিএনপির কোনো ডিমই হবে না। ঘোড়াও ওদের জন্য ডিম পাড়বে না। ওদের দিন শেষ। বিএনপি এখন আম্মা গ্রুপ, ভাইয়া গ্রুপে ভাগ হয়ে গেছে।’
বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘আপনারা অনেক বড় বড় কথা বলছেন, শান্ত থাকুন, নারায়ণগঞ্জের পরিবশে শান্ত থাকতে দেন। আমরা সবাইকে ক্ষমা করে দিয়েছি। আমাদের ওপর অনেক নির্যাতন করা হয়েছিল। সেগুলো যদি একবার আমাদের মাথায় মনে পড়ে যায়, তাহলে কিন্তু আপনাদের নারায়ণগঞ্জে বাস করা কঠিন হয়ে যাবে।‘আমরা ধৈর্য ধরেছি, কিন্তু আমরা দুর্বল না। আপনারা যে অপরাধ করেছেন তার জন্য বিচার হয়েছে। জনগণ আপনাদের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে সব জায়গায় এবং নারায়ণগঞ্জ বারেও রায় দেওয়া হয়েছে।’
নির্বাচনের বছরে বিরোধী শক্তি নানা ধরনের অপকর্মে লিপ্ত হতে পারে বলেও সতর্ক করেন শামীম ওসমান। তিনি বলেন, ‘এই বছরটা হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে সংকটের বছর। সব অশুভ শক্তি, সব ষড়যন্ত্রকারী এক হয়েছে। এরা কামড় দেওয়ার চেষ্টা করলে আমরাও যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী, যারা জাতির পিতার সৈনিক, আমরাও প্রস্তুত আছি, ওই সমস্ত অশুভ শক্তির বিষদাঁত ভেঙে দেওয়ার জন্য। আমরা প্রস্তুত থাকব, ছিলাম, আছি এবং নারাণগঞ্জে আগামীতে নেতৃত্ব দেব।’
আইনজীবীদের নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, ‘আইনজীবী প্যানেলের এই বার একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। এবারের প্রার্থী সভাপতি জুয়েল ও সাধারণ সম্পাদক মোহসিনসহ প্রতিটা সদস্য যেন সমান ভোট পান। এই বিষয়টা আপনাদের দৃষ্টি রাখার জন্য বলছি। ব্যক্তিগত দ্বন্ধে যাবেন না। সবাই একত্রিত হয়ে বারের আওয়ামী লীগের প্যানেলকে জয়যুক্ত করবেন।’
সভায় উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা, মনিরুজ্জামান বুলবুল, এক্স পিপি ও সিনিয়র আইনজীবী ওয়াজেদ আলী খোকন, আইনজীবী সমিতি নির্বাচনের সভাপতি প্রার্থী হাসান ফেরদৌস জুয়েল ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মোহসিন মিয়াসহ আওয়ামী লীগপন্থি বারের আইনজীবীরা।
নারায়ণগঞ্জ আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত জুয়েল-মোহসিন প্যানেলে ১৭ প্রার্থী প্রতিদ্ধন্ধিতা করছেন। আগামী ৩০ জানুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।