মইনুল ইসলাম মিতুল :আগামী ১৩ জানুয়ারি টঙ্গীর তুরাগতীরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ৫৬
তম বিশ্ব ইজতেমা। এরই মধ্যে বিশ্ব ইজতেমায় সম্পূর্ণ করা হয়েছে অধিকাংশ কর্মকাণ্ড।
এরই মধ্যে ময়দানের ৭৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছে ইজতেমা আয়োজক কমিটি।
প্রস্তুত করা হয়েছে জেলাভিত্তিক খিত্তার তালিকা।
জুবায়েরপন্থির তিন দিনের ইজতেমাকে ঘিরে টঙ্গী ও আশপাশ
এলাকায় ধর্মীয় উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। প্রতি বছর ইজতেমায় তাবলিগ জামাতের ঢাকা
জেলার সাথিরা সবার শেষে তাদের জন্য নির্ধারিত খিত্তার কাজ করে থাকেন এবারও শুধু
ঢাকা জেলার মুসল্লিদের জন্য নির্ধারিত খিত্তার স্থান বাদে অন্যসব কাজ দ্রুত এগিয়ে
চলছে। আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যেই দেশ-বিদেশের লাখ লাখ মুসল্লি ময়দানে এসে তাদের
জন্য নির্ধারিত খিত্তায় অবস্থান নেবেন।
এ বছর প্রথম পর্বের বিশ্ব ইজতেমায় আগত ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা
যেসব খিত্তায় অবস্থান করবেন তা হলো গাজীপুর (খিত্তা-১), টঙ্গী (খিত্তা-২, ৩ ও ৪), ঢাকা (খিত্তা-৫ থেকে ১৮ ও ২১, ২২, ২৫, ২৭, ২৮, ৩০), রাজশাহী (১৯),
চাঁপাইনবাবগঞ্জ (২০), নাটোর (২৩), নওগাঁ (২৪), নড়াইল (২৬), সিরাজগঞ্জ
(২৯), টাঙ্গাইল (৩১), রংপুর (৩২),
গাইবান্ধা (৩৩), লালমনিরহাট (৩৪), মুন্সীগঞ্জ (৩৫), যশোর (৩৬), নীলফামারী
(৩৭), বগুড়া (৩৮), জয়পুরহাট (৩৯),
নারায়ণগঞ্জ (৪০), ফরিদপুর (৪১), ভোলা (৪২), নরসিংদী (৪৩), সাতক্ষীরা
(৪৪), বাগেরহাট (৪৫), কুষ্টিয়া (৪৬),
মেহেরপুর (৪৭), চুয়াডাঙ্গা (৪৮), ময়মনসিংহ (৪৯, ৫১), শেরপুর
(৫০), জামালপুর (৫২), গোপালগঞ্জ (৫৩),
কিশোরগঞ্জ (৫৪), নেত্রকোনা (৫৫), ঝালকাঠি (৫৬), বান্দরবান (৫৭), বরিশাল (৫৮), পিরোজপুর (৫৯), হবিগঞ্জ
(৬০), কক্সবাজার (৬১), সিলেট (৬২),
সুনামগঞ্জ (৬৩), ফেনী (৬৪), নোয়াখালী (৬৫), লক্ষ্মীপুর (৬৬), চাঁদপুর (৬৭), ব্রাহ্মণবাড়িয়া (৬৮), খুলনা (৬৯), পটুয়াখালী (৭০), বরগুনা
(৭১), চট্টগ্রাম (৭৪), কুমিল্লা (৭৫),
তুরাগ নদের পশ্চিমপাড় কাঁচাবাজারে মৌলভীবাজার (৭৬), রাজবাড়ী (৭৭), মাদারীপুর (৭৮), শরীয়তপুর (৭৯), মানিকগঞ্জ (৮০, সাফা টাওয়ার), রাঙ্গামাটি (৮১), খাগড়াছড়ি (৮২), দিনাজপুর (৮৩), পাবনা (৮৪), ঠাকুরগাঁও (৮৫), ঝিনাইদহ
(৮৭, যমুনা প্লট), মাগুরা (৮৮, যমুনা প্লট), কুড়িগ্রাম (৮৯, কামারপাড়া
বেড়িবাঁধ বঙ্গবন্ধু মাঠ) ও পঞ্চগড় (৯০, কামারপাড়া হাইস্কুল
মাঠ-বধির স্কুল ভবন)। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগতরা নির্দিষ্ট খিত্তার আওতাভুক্ত
জায়গায় অবস্থান নিয়ে ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল থাকবেন।
এ ছাড়া ময়দানের চারপাশে ১১ ও ১২ নম্বর খিত্তার কিছু অংশ, ৩২ ও ৩৭ নম্বর খিত্তার
মাঝামাঝি ১২, ৭২, ৭৩, ৮৬ ও ৯১ নম্বর খিত্তা সংরক্ষিত হিসেবে রাখা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন
বিশ্ব ইজতেমা আয়োজক কমিটির শীর্ষ মুরব্বি ডা. খান মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন। টঙ্গী
পশ্চিম থানার ওসি মো. শাহ আলম বলেন, ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের
নিরাপত্তায় পুরো ময়দানে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ ও র্যাবের পক্ষ থেকে তিন
শতাধিক ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা স্থাপন করা হচ্ছে। সিসিটিভির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ
কক্ষ থেকে পুরো ময়দানের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যেবক্ষণ করা হবে।
১৩ জানুয়ারি শুক্রবার শুরু হয়ে ১৫ জানুয়ারি রবিবার আখেরি
মোনাজাতের মধ্য দিয়ে প্রথম পর্বের (জুবায়েরপন্থি) বিশ্ব ইজতেমার সমাপ্তি ঘটবে।
মাঝে ৪ দিন বিরতি দিয়ে ২০ জানুয়ারি দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাযের অনুসারী (মাওলানা
সাথদপন্থি) মুসল্লিরা বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে অংশ নেবেন।
২২ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে এবারের বিশ্ব ইজতেমার
সমাপ্তি ঘটবে। ২০২০ সালে ৫৫তম বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর করোনা-১৯ মহামারির
কারণে গত দুই বছর ২০২১ ও ২০২২ সালে ইজতেমা হয়নি।