২০০৮ সালে মন্দা হতে পারে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন ইরানি বংশোদ্ভূত প্রখ্যাত মার্কিন অর্থনীতিবিদ নুরিয়েল রুবিনি। সেই ভবিষ্যদ্বাণী হুবহু মিলে গিয়েছিল। এবার আবারও বিশ্বব্যাপী আরেকটি ‘দীর্ঘ ও বাজে’ অর্থনৈতিক মন্দার ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন তিনি। তার মতে, এই মন্দা চলতি ২০২২ সালের শেষ থেকে শুরু হয়ে ২০২৩ সাল জুড়েই অব্যাহত থাকতে পারে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ম্যাক্রো অ্যাসোসিয়েটসের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী নুরিয়েল রুবিনি বলেন, ‘সাধারণ ‘প্লেইন ভ্যানিল’ মন্দার ক্ষেত্রেও এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচকের ৩০ শতাংশ পতন হতে পারে। পরিস্থিতি আরও কঠিন হলে এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারে বলেও সতর্ক করেছেন তিনি।
সাধারণত অর্থনীতিতে প্লেইন ভ্যানিলা ঋণ বলতে বোঝানো হয়—একটি নির্দিষ্ট সুদ হারে ঋণ আদান-প্রদান, যেখানে অন্য কোনো শর্ত বা সুবিধা প্রযোজ্য হয় না। ফলে ঋণগ্রহীতা রূপান্তরের অধিকার হারান। এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক হলো—দ্য স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড পুওর নামে পরিচিত একটি পুঁজিবাজার সূচক। যা বিশ্বের বড় বড় ৫০০টি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানের আর্থিক গতিপ্রকৃতি নজরদারি করে থাকে।
পণ্য সরবরাহের ধাক্কা এবং আর্থিক মন্দা কতটা গুরুতর হবে তার ওপর নির্ভর করে যুক্তরাষ্ট্রসহ সমগ্র বিশ্বে মন্দা ২০২৩ সাল পর্যন্ত স্থায়ী হবে। ২০০৮ সালের মন্দার সময়, ব্যাংক ও পরিবারগুলোতে বেশি আঁচ লেগেছিল। তবে এবারের মন্দার ধাক্কা বিভিন্ন কর্পোরেশন এবং হেজ ফান্ড, প্রাইভেট ইক্যুইটি ও ক্রেডিট ফান্ডের মতো সেক্টরগুলোতে বেশি লাগতে পারে বলে সতর্ক করেছেন তিনি।
তিনি বলেছেন, যারা আশা করছেন যুক্তরাষ্ট্র ছোটখাটো মন্দায় আছে। তাদের উচিত সরকার এবং বড় বড় কর্পোরেশনগুলোর ঋণের অনুপাতের দিকে তাকানো। কারণ, সংকট মোকাবিলায় সুদ হার বাড়ানোর ফলে ঋণ পরিশোধ ব্যয় বেড়েছে।
নুরিয়েল রুবিনি এই বিষয়টি এগিয়ে নিয়ে আরও বলেছেন, ‘এর ফলে আমরা দেখতে পাচ্ছি এরই মধ্যে সংকটে আক্রান্ত অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান, করপোরেট হাউস, বিভিন্ন ব্যাংক এমনকি বেশ কিছু দেশও এই সংকটে শেষ হয়ে যাবে। এবং এই বিষয়টি আমরা সবাই স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি।