মাসুদ উল হাসান, জামালপুর :
জামালপুর সদর উপজেলার ১নং কেন্দুয়া ইউনিয়নে ঐতিহ্যবাহী কেন্দুয়া বাজার রেলওয়ে স্টেশন। ১৮৯৯ সালে এই রেলওয়ে স্টেশনটি স্থাপিত হয়। কিন্তু এক সপ্তাহের বেশি সময় হঠাৎ এই রেলওয়ে স্টেশনটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে এতে সর্বস্থরের জনতা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। এই এলাকার জনগণের দাবী থাকা স্বত্বেও বন্ধ থাকা কেন্দুয়া বাজার রেলওয়ে স্টেশন চালু করার উদ্যোগ গ্রহণ করেনি কর্তৃপক্ষ।
অবশেষে আজ (১৫ মে) সোমবার দুপুরে কেন্দুয়া বাজার রেলওয়ে স্টেশনে কেন্দুয়া এলাকাবাসী ও সর্বস্তরের জনগণের আয়োজনে কয়েক শতাধিক মানুষের অংশগ্রহণে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মানববন্ধনে একাত্মতা প্রকাশ করেন, কেন্দুয়া ইউনিয়নের আশপাশের আরও বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের নাগরিকবৃন্দ। সকলের দাবি অবিলম্বে কেন্দুয়া বাজার রেলওয়ে স্টেশন চালু করতে হবে এবং আন্তঃনগর ট্রেনের স্টপেজ দিতে হবে।
জামালপুর টু তারাকান্দি রেল সড়কের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলে কেন্দুয়া বাজার রেলওয়ে স্টেশন অবস্থিত। জামালপুর জংশন এর পরের স্টেশনটিই পড়ে কেন্দুয়া রেলওয়ে স্টেশনের অবস্থান। ৩৭নং মেইল ট্রেন, ৭৫ নং মেইল ট্রেন, ২৫৩ নং লোকাল ট্রেনে যাত্রীরা যাতায়াত করেছেন। সেই সাথে যমুনা,অগ্নিবীণা ও জামালপুর এক্সপ্রেস ট্রেন ক্রসিং হতো এই স্টেশনটিতে৷ কিন্তু বেশকিছু দিন থেকেই বন্ধ এই রেলওয়ে স্টেশনটি।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, কেন্দুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম খান সোহেল, বিএনপি নেতা রুহুল আমিন মিলন, ফখরুল আলম লিটু, আরিফুর রহমান আরিফ প্রমূখ।
মানববন্ধন শেষে ঘন্টাব্যাপী জামালপুর এক্সপ্রেস ট্রেনটিকে কেন্দুয়া বাজার রেলওয়ে স্টেশনের সামনে অবরোধ করেন এলাকাবাসী।
১ ঘন্টা পর সদর আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব ইঞ্জিনিয়ার মো: মোজাফফর হোসেন সিআইপি বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত হয়ে উপস্থিত সকলকেই আশ্বস্ত করে বলেন, যৌক্তিক দাবীতে এই মানববন্ধন তিনি সমর্থন করেন। তবে জনগণের দুর্ভোগ হয় এমনটি না করে ট্রেন যাত্রা সচল করার আহবান জানান।
তিনি আরও বলেন, আমি ইতিমধ্যে মানববন্ধনের কথা শুনে রেলওয়ে বিভাগের ডিজি'র সাথে কথা বলেছি। দ্রুত সময়ের মধ্যেই এই দাবী বাস্তবায়ন করা হবে তিনি আন্দোলনকারীদের আশ্বস্ত করেন। কেন্দুয়া বাজার রেলওয়ে স্টেশন থাকবে৷ টিকিট বিক্রিসহ যাত্রীরা এইখান থেকে বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করতে পারবেন। এছাড়াও আন্ত:নগর ট্রেনের স্টপেজ ও টিকিট বিক্রির সুযোগসহ একাধিক দাবী বাস্তবায়ন করা হবে। প্রয়োজন হলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবগত করে হলেও দাবী পূরণ করা হবে ইনশাল্লাহ ।
অতপর সদর আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব ইঞ্জিনিয়ার মোঃ মোজাফফর হোসেন সিআইপির কথায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ সমাপ্ত ঘোষণা করেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন- এই এলাকার মানুষ হতদরিদ্র ও নিম্ন আয়ের। এই এলাকার বেশিরভাগ মানুষ ঢাকায় জীবিকার জন্য কাজ করেন। কেন্দুয়া ইউনিয়ন সহ আশপাশের ৪ টি ইউনিয়নের মানুষ এখান থেকে বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করে। দীর্ঘদিন যাবত এটি বন্ধ হওয়ার ফলে সাধারণ মানুষ ভোগান্তির মধ্যে পরেছে।
মানববন্ধনে ১ নং কেন্দুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম খান সোহেল বলেন,কেন্দুয়া রেলওয়ে স্টেশন চালু এখন সময়ের দাবি। আমরা চাই অতি সত্ত্বর এটি চালু করা হোক। সাধারণ মানুষের দাবি অতিসত্ত্বর কেন্দুয়া রেলওয়ে স্টেশন চালু করতে হবে। অন্যথায় আমরা কঠিন কর্মসূচির ডাক দিতে বাধ্য হব। আমাদের যৌক্তিক দাবী মানতেই হবে। এই দাবী আমাদের অধিকার আদায়ের। তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাসহ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।