মাসুদ উল হাসান,জামালপুর ঃ
মাংস আর চালের গুড়ো দিয়ে রান্না করা পিঠালী বা মিলেনির কদর সব সময়। তবে এই শীতে এর চাহিদা আরো বেড়েছে। বাজারে ২শ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে রান্না করা পিঠালী। বিশেষ করে সপ্তাহে দুইদিন রোববার ও বৃহস্পতিবার বকশীগঞ্জ মধ্যবাজার,মালিবাগ মোড়,কামারপট্টি মোড় ও বাসস্ট্যান্ডে পিঠালী বিক্রি করতে দেখা যায়। এছাড়াও বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলের ছোট ছোট হাটবাজারেও বিক্রি হয় পিঠালী। সব শ্রেণীর মানুষ বাড়িতে কিনে নিয়ে যান মুখরোচর এই পিঠালী তরকারি।
জানা যায়, জামালপুরের শতবছরের ঐতিহ্যবাহী সুস্বাধু খাবারের নাম পিঠালী। অনেকেই এটাকে ম্যান্দা,মেলানী বা মিল্লি হিসেবে চিনে। খাসি,গরু বা মহিষের মাংস,চালের গুঁড়া,পেঁয়াজ, রসুন, আদা, জিরাসহ নানা উপকরণ দিয়ে রান্না হয় পিঠালী। পিঠালী প্রতিদিনের খাবার নয়। এটা অত্যান্ত মুখরোচক খাবার। কোনও বিশেষ অনুষ্টান বিশেষ করে মানুষ মারা গেলে ৭ দিন বা ৪০ দিনের দোয়ার আয়োজন করা হয়। তখন সারারাত ধরে সারিবদ্ধ পাতিলে পিঠালী রান্না হয়। ভোর হতেই পিঠালী ভাত খাওয়ার জন্য দুরদুরান্ত থেকে ছুটে আসে মানুষ। সারিবদ্ধ হয়ে মাটিতে বসে কলাপাতায় উৎসব মুখর পরিবেশে চলে খাওয়া দাওয়া। সব স্তরের মানুষ পিঠালীর দাওয়াতে আসে। অনেকেই আবার দাওয়াত ছাড়াই চলে আসে পিঠালী খেতে। গ্রামাঞ্চলের মানুষ শখের বসেও অনেক সময় পিঠালীর আয়োজন করে। বিয়ে, আকিকা, খতনাসহ নানা উৎসবে পিঠালীর আয়োজন করা হয়।
মালিবাগ মোড়ে পিঠালী বিক্রেতা মিনাল বলেন,শখের বসে পিঠালী রান্না করে বিক্রি করতে এসেছেন। গরুর মাংস-চালের গুড়ো আর নানা মসলা দিয়ে তৈরি পিঠালী ২শ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মুহুর্তেই প্রায় ৬০ কেজি তরকারি বিক্রি হয়ে গেছে।
বকশীগঞ্জ মধ্যবাজার হোটেল গুলশানের সামনে প্রায় প্রতি সপ্তাহে একবার পিঠালী বিক্রি করেন পুটল মিয়া নামে একজন। তার সাথে আরো ৫/৬ জন রয়েছেন। তিনি বলেন,মহিষের মাংস ও চালের গুড়ো দিয়ে রান্না করা পিঠালীর মজাই আলাদা। শীতকালে পিঠালীর চাহিদা বেশ। ২শ থেকে ২৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়। চাহিদা বেশি থাকায় মুহর্তেই সব শেষ হয়ে যায়।
পৌর শহরের বাসিন্দা আবদুল লতিফ বলেন,এ অঞ্চলে পিঠালীর জুড়ি নেই। পিঠালী মানেই বিশেষ কিছু। সব সময় বাসায় রান্না করা সম্ভব হয়না। তাই বাজার থেকে কিনে নিয়ে যাই। দামে কম হলেও স্বাধের কমতি নেই।