Logo
শিরোনাম
বহুল পরিচিত পাঁচ তরিকার বিবরণ

চিশতিয়া তরিকা

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৭ অক্টোবর ২০২২ | হালনাগাদ:বুধবার ২১ মে ২০২৫ |

Image

মাজহারুল ইসলাম মাসুম , সিনিয়র সাংবাদিক, লেখক ও গবেষক :

চিশতিয়া তরিকার প্রতিষ্ঠাতা ইমাম সুলতানুল হিন্দ খাজায়ে খাজেগান গরীবে নেওয়াজ হযরত খাজা মঈন উদ্দীন হাসান চিশতী সানজরী রহ.। কাদেরিয়া ও চিশতিয়া এই উভয় তরিকারই উদ্ভব ঘটিয়াছে হযরত আলী রা. হইতে। চিশতিয়া তরিকার শাজারা অনুযায়ী রাসূলুল্লাহ সা. হইতে শুরু করিয়া হযরত আলী রা. হইতে হযরত খাজা মঈন উদ্দীন চিশতী রহ. খেলাফত প্রাপ্তির সপ্তদশ খলিফা।

হযরত খাজা মঈন উদ্দীন চিশতী রহ. শরিয়তের সকল বিধি নিষেধ পালনের প্রতি সর্বদা সজাগ থাকিতেন। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কোন ভাবেই শরিয়তের কোন ব্যত্যয় তিনি সহ্য করিতেন না। তিনি ভক্ত-অনুসারীদিগকে শরিয়তে পাবন্দ থাকিবার জন্য কঠোর নির্দেশ দিতেন। এমন কি চিশতিয়া তরিকার অনুসারীগণ যেন কখনও শরিয়তের বরখেলাপ না করিতে পারে, সেই জন্য আহলে চিশতের পরিপালনীয় একটি অজিফা রচনা করিয়া হযরত খাজা কুতুব উদ্দীন বখতিয়ার কাকী রহ.কে প্রদান করিয়াছিলেন; যাহা হযরত কাকী রহ.-এর স্ব-রচিত দলিলুল আরেফীনগ্রন্থের অষ্টম অধ্যায়ে বিধৃত হইয়াছে।

আহলে চিশতের জন্য প্রদত্ত এই অজিফা দান কালে তিনি বলেন, “বুজুর্গানে দ্বীন হইতে আমি যে অজিফা লাভ করিয়াছি, তাহা পালনে সুদৃঢ় রহিয়াছি। মনে রাখিও, রাসূল সা. বলিয়াছেন: তারিকুল বিরদি মালউন অর্থাৎ অজিফা ত্যাগকারী অভিশপ্ত।

একই ভাবে তিনি তাহাদিগকে সূফী দর্শনের গূঢ় রহস্য পূর্ণ বিষয় গুলি সম্পর্কেও দীক্ষা প্রদান করিতেন। চিশতিয়া তরিকায় নিজকে জানিবার বা দেহ তত্ত্বের তালিম গ্রহণের বিশেষ গুরুত্ব রহিয়াছে। এই তালিমের চূড়ান্ত পর্য্যায়ে উন্নীত না হওয়া পর্য্যন্ত কেহ এই তরিকায় কামালিয়ত অর্জন করিতে পারে না বা তাহার পক্ষে সূফী-দরবেশ পর্য্যায়ে পৌঁছানো সম্ভব হয় না। দেহ তত্ত্বের প্রধান সাধনা হইল আনাসির-এ-খামসা বা পঞ্চভূত (পঞ্চ উপাদান)। এই সাধনার গুরু হযরত মুহাম্মদ সা.। তাঁহার নিকট হইতে হযরত আলী রা., হযরত আলী রা. হইতে হযরত হাসান বসরী রহ. এই তালিম লাভ করেন। সিনা-ব-সিনা চলিয়া আসা এই তালিম হযরত ওসমান হারুনী রহ.ও লাভ করেন। এই তালিম গুলি লিপিবদ্ধ ছিল না। হযরত খাজা মঈন উদ্দীন চিশতী রহ. তালিম গুলি সু-শৃঙ্খল ভাবে সাজাইয়া গুছাইয়া লিপিবদ্ধ করেন।

চিশতিয়া তরিকা মতে আব, আতশ, খাক, বাদ ও নূর যথাক্রমে পানি, আগুন, মাটি, বায়ু এবং নূরকে আনাসির-এ-খামসা বা পঞ্চ উপাদান নামে অভিহিত করা হয়। সমুদয় সৃষ্টি জগতের মূল উৎস এই পঞ্চ উপাদান। সমুদয় জড় বস্তু ও প্রাণী দেহে আনাসিরে আরবায়াবা চার উপাদান যেমন পানি, আগুন, মাটি ও বায়ুর সংমিশ্রণ ঘটিয়াছে। আর চার উপাদানের মূলে রহিয়াছে নূর বা এক জ্যোতির্ম্ময় সত্তা। প্রত্যেক উপাদানে রহিয়াছে পাঁচটি গুণ বা সিফাত।

উহা আবার তিন শ্রেণীতে বিভক্ত। যথা:

১. আহাদিয়াত : এই স্তরে মহিমান্বিত আল্লাহ আপনাতেই বিদ্যমান এবং অতি সূক্ষ্মাতি সূক্ষ্ম দরিয়া রূপে রহিয়াছেন। এই পর্য্যায়ে তিনি একক ও অদ্বৈত।

২. ওয়াহিদাত : এই স্তরে তিনি তাঁহার ইরাদা বা আকাক্সক্ষা বা এশক (প্রেম) হইতে নূরে মুহাম্মদী সা. সৃষ্টি করেন।

৩. ওয়াহেদিয়াত : এই স্তরে নূরে মুহাম্মদী সা. হইতে তিনি নিজেকে বিশ্ব চরাচর সৃষ্টির সঙ্গে আহমদরূপে প্রকাশ করেন। এই কারণেই কুরআনের পূর্বে সকল ধর্ম্ম গ্রন্থে হযরত মুহাম্মদ সা.কে আহমদউল্লেখ করা হইয়াছে।

হযরত সুরেশ্বরী রহ. তাঁহার রচিত আধ্যাত্মিক ঊর্দু গ্রন্থ সিররেহক্ক জামেনূর”- লেখকের ভূমিকায় লিখেছেন আহাদএবং আহমাদএর মধ্যে মীমএর পার্থক্য কেবল হামদ্ ও নাতের জন্য।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কাব্য পংক্তিতে সেই সুরই ধ্বনিত হইয়াছে এই ভাবে

আহমদের ঐ মীমের পর্দা উঠিয়ে দেখ মন
আহাদ সেথায় বিরাজ করে হেরে গুণীজন ॥

যে চিনতে পারে রয় না ঘরে হয় সে উদাসী
সে সকল ত্যাজি ভজে শুধু নবীজীর চরণ ॥

এই তালিমকে মান আরাফা নাফসাহুএর তালিমও বলা হয়। এই তালিম রপ্ত না করা পর্যন্ত কেহই প্রকৃত সূফী বা চিশতিয়া তরিকার পীর হইবার যোগ্য নহে।

চিশতিয়া তরিকায় সামা প্রচলিত রহিয়াছে। মাঝে মাঝে এই তরিকা পন্থীগণ সামার অনুষ্ঠান করেন। ইহাতে তাহারা জজবার হালতে পৌঁছেন। সামার দ্বারা আল্লাহর প্রেম বর্ধিত হয়। তাই চিশতিয়া তরিকার মাশায়েখগণ সামাকে রুহানী গেজা বা আত্মার খোরাকবলেন।

একই ভাবে চিশতিয়া তরিকায়ও কালেমা তাইয়্যেবা লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহযথা : লাম, আলিফ, আলিফ, লাম, হা, আলিফ, লাম, আলিফ, আলিফ, লাম, লাম, হা নোক্তা বিহীন এই বারোটি বর্ণের খাস তালিমের বিধান রহিয়াছে। এই তরিকার প্রধান দুইটি উপ তরিকা হইল: প্রধান খলিফা সুলতানুল মাশায়েখ হযরত নিজাম উদ্দিন রা.-এর নামানুসারে নিজামিয়াও অন্যতম খলিফা হযরত মখদুম আলী কালিয়ারী রা.-এর নামানুসারে সাবেরিয়াপৃথিবীতে অদ্যাবধি রহিয়াছে।


আরও খবর



ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এলো এপ্রিলে

প্রকাশিত:সোমবার ০৫ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ২১ মে ২০২৫ |

Image

দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে সদ্য গত হওয়া এপ্রিল মাসে। গত মাসে ২ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন বা ২৭৫ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে) যার পরিমাণ ৩৩ হাজার ৫৫০ কোটি টাকার বেশি। সে হিসেবে প্রতিদিন রেমিট্যান্সে এসেছে ৯ কোটি ডলারের বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য জানিয়েছেন।

এর আগে ইতিহাসের সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল গত মার্চ মাসে। মার্চের পুরো সময়ে রেমিট্যান্স এসেছে ৩.২৯ বিলিয়ন (৩২৯ কোটি ডলার) ডলারের রেমিট্যান্স। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে) যার পরিমাণ ছিল ৪০ হাজার ১৩৮ কোটি টাকা। সে হিসাবে প্রতিদিন এসেছিল প্রায় ১০.৬১ কোটি ডলার বা ১২৯৫ কোটি টাকা করে।

তথ্য বলছে, গত বছরের এপ্রিল মাসের পুরো সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৪৫ কোটি ডলার। সে হিসাবে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে সদ্য বিদায়ী এপ্রিলে ৩০ কোটি ডলার বেশি এসেছে। আর চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) রেমিট্যান্স এসেছে দুই হাজার ৪৫৩ কোটি ডলার। যা গত অর্থবছরে একই সময়ে এসেছিল দুই হাজার ৪৪ কোটি ডলার। সে হিসাবে গত অর্থবছরে একই সময়ের চেয়ে ৪০৯ কোটি ডলার বেশি এসেছে।

এর আগে গত ডিসেম্বরে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল। সে রেকর্ড ভেঙে নতুন ইতিহাস গড়ে গত মার্চ মাস। আর এ নিয়ে অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস আগস্ট থেকে টানা ৯ মাস দুই বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করছে।

চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স আসে। এর পরের মাস আগস্টে এসেছিল ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে এসেছে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ, অক্টোবরে এসেছে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার, নভেম্বর মাসে এসেছে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে এসেছে ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়া‌রি‌তে ২১৯ কোটি ডলার এবং ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলার ও মার্চে মার্চে এলো ৩২৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পা‌ঠি‌য়েছেন প্রবাসীরা। আর সবশেষ এপ্রিলে এলো ২৭৫ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়। যা দেশের ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

এদিকে দেশে দীর্ঘদিন ধরেই উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। তবে এবার তা ২৭ বিলিয়ন ছাড়িয়েছে। দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সাথে সাথে রিজার্ভের পরিমাণ বাড়তে থাকে। প্রবাসী আয়ের ইতিবাচক ধারায়সেই রিজার্ভ ২৭ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে।

গত ৩০ এপ্রিল পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ২৭ দশমিক ৪১ বিলিয়ন ডলার। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী দেশের রিজার্ভ রয়েছে ২২ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন ডলার।

২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ২১ বিলিয়নে নেমে যায় বিপিএম-৬ রিজার্ভ। এরপর ধারাবাহিক কমে ১৮ বিলিয়নে নামে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অর্থপাচার কমে আসায় রিজার্ভ বাড়তে শুরু করে। ধীরগতিতে বেড়ে ১৯ মাস পর ২২ বিলিয়ন অতিক্রম করল রিজার্ভ। আর মোট রিজার্ভ ছাড়ায় ২৭ বিলিয়ন ডলার।


আরও খবর



আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি

প্রকাশিত:সোমবার ১২ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ২১ মে ২০২৫ |

Image

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। সোমবার এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এ তথ্য জানিয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগের সব ধরনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন এরই মধ্যে হয়ে গেছে। অধ্যাদেশ অনুসারে বিষয়টি বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব আমাদের।

জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকার যুক্তিসঙ্গতভাবে মনে করে সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ এবং সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯ এর ধারা-১৮(১) অনুযায়ী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সব অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত দলটি এবং এর সব অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা দরকার।

এ অবস্থায় আওয়ামী লীগ এবং এর সব অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের যেকোনো ধরনের প্রকাশনা, গণমাধ্যম, অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যেকোনো ধরনের প্রচারণা, মিছিল, সভা-সমাবেশ, সম্মেলন আয়োজনসহ যাবতীয় কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো।

এতে আরও বলা হয়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ ও এর সব অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সদস্য ও ভিন্নমতের মানুষের ওপর হামলা, গুম, খুন, হত্যা, নির্যাতন ও ধর্ষণসহ বিভিন্ন নিপীড়নমূলক ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সারাদেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে।

এছাড়া, আওয়ামী লীগ ও এর সব অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের বিরুদ্ধে গত ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে গুম, খুন, পুড়িয়ে মানুষ হত্যা, গণহত্যা, বেআইনি আটক, অমানবিক নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, সন্ত্রাসী কাজ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের সুস্পষ্ট অভিযোগ রয়েছে এবং এসব অভিযোগ দেশি ও আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

উল্লিখিত অপরাধের অভিযোগে আওয়ামী লীগ ও এর সব অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এবং দেশের ফৌজদারি আদালতে বহু মামলা বিচারাধীন রয়েছে বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।

এসব মামলার বিচারে প্রতিবন্ধকতা তৈরি, জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি, বাংলাদেশের সংহতি, জননিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করতে গত ৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগ এবং এর সব অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-জনতার ওপর হামলা, উসকানিমূলক মিছিল, রাষ্ট্রবিরোধী লিফলেট বিতরণ এবং অন্যদেশে পলাতক তাদের নেতাসহ অন্য নেতাকর্মী সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে অপরাধমূলক বক্তব্য প্রদান, ব্যক্তি ও প্রজাতন্ত্রের সম্পত্তির ক্ষতিসাধনের চেষ্টাসহ আইন-শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকাণ্ড পরিলক্ষিত হয়েছে।

এসব কর্মকাণ্ডে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে, দলটি এবং এর সব অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার বাদী ও সাক্ষীদের মনে ভীতির সঞ্চার করা হয়েছে ও এভাবে বিচার বিঘ্নিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে এবং সার্বিকভাবে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।

এছাড়া, সরকারের কাছে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ আছে যে, আওয়ামী লীগ এবং এর সব অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল ও অকার্যকর করতে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকাসহ জনমনে ভীতি সঞ্চারের উদ্দেশ্যে সন্ত্রাসী সংগঠনের মতো বিভিন্ন বেআইনি কার্যকলাপ ও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।

এ অবস্থায় সরকার মনে করে সন্ত্রাসবিরোধী অধ্যাদেশ ২০২৫ এবং সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯ অনুযায়ী আওয়ামী লীগ ও এর সব অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিচারকাজ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দলটি এবং এর সব অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা উচিত।


আরও খবর



মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় ফিরবেন খালেদা জিয়া

প্রকাশিত:রবিবার ০৪ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২০ মে ২০25 |

Image

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া লন্ডন থেকে ঢাকায় পৌঁছাবেন মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায়। বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান রবিবার সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। কাতারের আমিরের দেওয়া বিশেষ বিমানে (এয়ার অ্যাম্বুলেন্স) দেশে ফিরবেন তিনি। সোমবার লন্ডন থেকে রওনা দেবেন, ঢাকায় পৌঁছাবেন মঙ্গলবার সকালে।

এর আগে বিএনপির মিডিয়া উইং থেকে শনিবার রাত পৌনে ১২টায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় জানানো হয়, খালেদা জিয়া মঙ্গলবার ঢাকায় ফিরবেন। তবে ঠিক কখন ফিরবেন, তা জানানো হয়নি।

বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ বলেন, খালেদা জিয়া বিশেষ বিমান এয়ার এম্বুলেন্সে সোমবার লন্ডন থেকে রওনা হবেন। ঢাকায় পৌঁছাবেন মঙ্গলবার।

প্রস্তুত ফিরোজা : খালেদা জিয়ার ঢাকায় ফেরা উপলক্ষে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের বাসা ফিরোজাকে প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান। তিনি বলেন, ম্যাডামের বাসভবন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে।

গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়া লন্ডনে যান। কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতার কথা জেনে রাজকীয় বহরের বিশেষ বিমান দিয়েছেন। ওই বিশেষ বিমানে (বিশেষ ধরনের এয়ার অ্যাম্বুলেন্স) করে তিনি লন্ডনে যান।


আরও খবর



নওগাঁয় ছাত্রীকে ধর্ষণ মামলায় প্রধান শিক্ষক আটক

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০১ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২০ মে ২০25 |

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টার :

নওগাঁয় ছাত্রীকে ধর্ষণ মামলায় প্রধান শিক্ষক আটক।

নওগাঁর মান্দা উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা মেমোরিয়াল বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেন বাল্যবিবাহ করার অপরাধ থেকে নিজেকে বাঁচাতে সারে ১৬ বছর বয়সী নিজ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী ঐ ছাত্রীকে বিয়ে করার পর বিয়ে অস্বীকার করলে ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে বুধবার বিকেলে মান্দা থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। সে মামলায় র‍্যাব ও মান্দা থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে বৃহস্পতিবার বিকেলে নাটোরের বনপাড়ার এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে তাকে আটক করা হয়েছে।

আটককৃত প্রধান শিক্ষক আকরাম মন্ডল মান্দা উপজেলার হাজীগোবিন্দপুর ফকিরপাড়া গ্রামের আফসার মন্ডলের ছেলে। মামলা সূত্রে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেন একজন দুশ্চরিত্র প্রকৃতির লোক। তার পূর্বের ২টি স্ত্রী আছে। এরপরও ভিকটিম ছাত্রী স্কুলে অবস্থানকালে সে তাকে তার কক্ষে ডাকিয়া নিয়া বিভিন্ন সময়ে কু-প্রস্তাব দিত। সে তার প্রস্তাবে রাজি না হলে সে তাকে পরীক্ষায় ফেল করানোসহ বিভিন্ন ধরনের ভঁয়ভীতি ও হুমকী দিত। এ গুলো ঘটনা পরিবারকে জানালে তার বাবা স্থানীয় লোকজনসহ তাকে একাধিকবার নিষেধ করেছে। কিন্তু সে নিষেধ না মেনে ঐ ছাত্রীকে আরো বেশি উত্যক্ত করতে থাকে। 

এরমধ্যে গত ২৬ মার্চ সকাল অনুমান সারে ৮ টারদিকে ভিকটিম ছাত্রী স্কুলের ২৬ শে মার্চ উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়। স্কুলে অবস্থানকালে সকাল অনুমান ১০ টারদিকে প্রধান শিক্ষক ছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভনে তার বাড়ীতে নিয়ে যায়। সেদিন থেকে তাকে তার বাড়ীতে রেখে তাকে বিয়ের প্রলোভনে জোর করে ধর্ষণ করেন। পরে তাকে বিয়ের জন্য অনুরোধ করলে সে বিয়ে করবে বলে আশ্বাস দিয়া তার বাড়ীতে রেখে বার বার ধর্ষন করে। এক পর্যায়ে ২৯ এপ্রিল সন্ধ্যা অনুমান সোয়া ৬ টারদিকে বিয়ের জন্য বললে সে বিয়ে করতে পারবে না বলে অস্বীকার করিয়া বাড়ী থেকে বের করে দেয়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভিকটিম ছাত্রীর বাবা এমদাদুল প্রতিবেদককে বলেন, আমি অশিক্ষিত মানুষ। আমাদের এলাকার মুনসুর কাজীর সহযোগী আলম এসে বিয়ে রেজিস্টারি করে আমাকে যেখানে স্বাক্ষর দিতে বলে সেখানে আমি স্বাক্ষর দিই। এরপর আমি কয়েক বার তার কাছে গিয়ে বিয়ের নকল চাইলে বিভিন্ন ভাবে তালবাহানা করে আমাকে নকল দেননি। এরমধ্যে স্থানীয়দের করা অভিযোগের জন্য গতকাল আমাকে ডাকলে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে তদন্ত কর্মকর্তাদের কাছে আমার মেয়েকে বিয়ে দিইনি বলতে বাধ্য করে। আমার মেয়েকে যদি বিয়ে না করে তাহলে সে তাকে ধর্ষণ করেছে। তাই আমি তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছি। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ মুনসুর রহমান বলেন, মামলার পর থেকে সে পলাতক ছিলো। তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে তার অবস্থান নিশ্চিত হয়ে থানা পুলিশ ও র‍্যাবের যৌথ অভিযানে নাটোরের বনপাড়া থেকে তাকে আটক করা হয়েছে।


আরও খবর



যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলাম তা উদ্বুদ্ধ করবে

প্রকাশিত:বুধবার ৩০ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ২১ মে ২০২৫ |

Image

গত বছরের আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে বন‍্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন‍্য বিশেষ আবাসন প্রকল্পের কাজ সঠিক সময়ে সম্পন্ন করায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, এটি একটি ছোট প্রকল্প। ৩শ ঘর নির্মাণ, কিন্তু এর মাধ্যমে সঠিকভাবে কাজ করার যে দৃষ্টান্ত আমরা স্থাপন করলাম তা আমাদের উদ্বুদ্ধ করবে।

বুধবার সকালে প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয় থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে গৃহ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। 

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, যারা বাড়ি পেয়েছেন সবাইকে অভিনন্দন। দেশের মানুষ আপনাদের পাশে দাঁড়িয়ে যে সাহস জুগিয়েছে সে সাহস সবসময় মনের মধ্যে ধারণ করবেন।

প্রকল্প বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, এই কাজে যারা নিরলস পরিশ্রম করে গৃহহীন পরিবারের মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিয়েছেন বিশেষ করে স্থানীয় প্রশাসন, সশস্ত্রবাহিনী বিভাগের সদস্যগণ, এলজিইডির প্রকৌশলীগণ ও আশ্রয়ণ প্রকল্পের কর্মকর্তাগণ তাদের প্রত্যেককে আন্তরিক ধন্যবাদ।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদানকালে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, ভবিষ্যতেও এ ধরনের দায়িত্ব দেওয়া হলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তা পালন করার জন্য সবসময় প্রস্তুত থাকবে।

তিনি জানান, প্রকল্পের আওতায় ২৯৮টি ঘর ইতোমধ্যে নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। ভূমি সংক্রান্ত জটিলতায় দুটি ঘর নির্মাণ করা যায়নি, সেগুলো খুব শিগগিরই নির্মাণ হয়ে যাবে।

গৃহ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম কামরুল হাসান।

উল্লেখ্য, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বিশেষ আবাসন প্রকল্পে নির্মিত মোট ৩শটি ঘর ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম জেলায় বিতরণ করা হয়। এর মধ্যে ফেনী জেলায় ১১০টি, নোয়াখালী জেলায় ৯০টি, কুমিল্লা জেলায় ৭০টি ও চট্টগ্রাম জেলায় ৩০টি ঘর প্রদান করা হয়।

ফেনী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা জেলার চারজন উপকারভোগী ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে অনুষ্ঠানে তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন।অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের পরিচালক মো. মনিরুল ইসলাম পাটোয়ারী।


আরও খবর