Logo
শিরোনাম

চট্টগ্রাম মেডিকেলে চিকিৎসা নয়, চলছে পরীক্ষার প্রহসন

প্রকাশিত:শনিবার ১৯ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৬ মে ২০২৫ |

Image

আমি পপি আক্তার—একজন সংবাদকর্মী। কিন্তু আজ আমি কোনো চায়ের কাপ হাতে টেবিলে বসে রিপোর্ট লিখছি না। লিখছি বিছানায় শুয়ে, ব্যথায় কাতর শরীর নিয়ে। জায়গাটা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। আজ আমি রোগী। আমার কণ্ঠে আজ হাজারো রোগীর আর্তনাদ, যাদের চিকিৎসা না পেয়ে চোখে জল, মনে ক্ষোভ, মুখে নীরবতা। গত এক সপ্তাহ ধরে আমি গুরুতর অসুস্থ। ভর্তি হয়েছি চট্টগ্রাম মেডিকেলের জরুরি বিভাগে। প্রথমদিন সাংবাদিক ভাই মো. কামাল উদ্দিন হাসপাতালে এসে আমাকে দেখে সেবা নিশ্চিত করার অনুরোধ করেন। কর্তৃপক্ষ তার উপস্থিতিতে কিছুটা সাড়া দেয়, কয়েকজন ডাক্তার-প্রফেসরও আমাকে পরীক্ষা করেন। কিন্তু তারপর? নীরবতা, উপেক্ষা, উদাসীনতা। আজও আমার চিকিৎসা সুনির্দিষ্ট নয়। এক ওয়ার্ড থেকে অন্য ওয়ার্ডে ঠেলাঠেলি, এক পরীক্ষা থেকে আরেক পরীক্ষায় পিষে যাওয়া আমার মতো শত শত রোগীর গল্প একই। পরীক্ষাই যেন এখানে একমাত্র চিকিৎসা। শুধু টেস্ট, আর টেস্ট। ওষুধ নেই, পরিকল্পনা নেই, করুণা নেই।

পেশার মেশিনও নেই, খাবার আসে বিকেলে- বলেন তো, একটা সরকারি হাসপাতালের ওয়ার্ডে যদি পেশার মেশিনই না থাকে, তাহলে উচ্চ রক্তচাপের রোগী কিভাবে বাঁচবে? পেশার মাপতে বললে আয়ারা বলেন—মেশিন নাই! গায়ে জ্বর, মাথা ঘোরে, বুক ধড়ফড় করে—তবুও সাড়া নেই। দুপুরের খাবার আসে ৩টা বা ৪টায়। সেই খাবারও রোগীর নয়—বিনাভাবে অভিভাবক খায়, কারণ রোগী এতক্ষণে অজ্ঞান বা নি:শেষ।

নারী ওয়ার্ডে পুরুষদের অনুপ্রবেশ, রাতে ঘুমায় পাশেই! সবচেয়ে লজ্জাজনক ঘটনা, মহিলা ওয়ার্ডেও রক্ষা নেই। পুরুষরা দিনের বেলায় যেমন ঘোরাঘুরি করে, রাতেও এসে পাশেই শুয়ে পড়ে। নারীর ব্যক্তিগত সুরক্ষা এখানে এক ভিন্নরকম ব্যঙ্গ। হাসপাতালের নিরাপত্তা যেন নিছক কল্পকাহিনি। বাথরুমে আলো নেই, কল ভাঙা, পানি পড়ে না। নারী ওয়াশরুমেও পুরুষ! ওয়াশরুমের অবস্থা বর্ণনাতীত। একটামাত্র আলো, তাও কাঁপছে। পানির কল সব ভাঙা। গন্ধে দম বন্ধ হয়ে আসে। নারী ওয়াশরুমেও পুরুষের অবাধ প্রবেশ, যেন নারীত্বের লজ্জা কেউ দেখে না, বোঝেও না।ডাক্তাররা থাকেন সকালে—তারপর নিখোঁজ- সকাল বেলা হয়তো দু’একজন ডাক্তার আসেন। কিন্তু তারপর গোটা দিন ওয়ার্ড যেন জনশূন্য। রোগী অসুস্থ হয়ে পড়ে থাকে, জ্বর গায়ে উঠে, ব্যথায় কাতরায়—কিন্তু চিকিৎসা নেই, চিকিৎসক নেই, কেবল দয়া-ভিক্ষার ভরসা। টেস্ট করতে হয় টাকার বিনিময়ে, সিরিয়াল ভেঙে, তাও চিকিৎসা মেলে না

আল্ট্রাসোনোগ্রাফি, এক্স-রে—প্রতিটি পরীক্ষার পেছনে টাকা গুনতে হয়। সিরিয়ালের তোয়াক্কা না করে ডাক্তাররা বলেন, ‘ইমারজেন্সি’। দেরি হলে ফাইল ফেলে দেন। একজন রোগী তো বলেই ফেললেন—"সিস্টেম নাই, আল্লাহর উপর ভরসা রাখেন!" এই কি আমাদের রাষ্ট্রের স্বাস্থ্যব্যবস্থা? আমি লিখছি, কারণ আমি সাংবাদিক। কিন্তু আমার পাশের বেডে যে নারীটি শুয়ে আছেন, যিনি চট্টগ্রামের কোনো প্রত্যন্ত গ্রামের স্কুলশিক্ষিকা, তার কণ্ঠ নেই, কলম নেই। তার চিৎকার কে শুনবে? আজ আমি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

মাননীয় উপদেষ্টা Asif Mahmud Shojib Bhuyain স্যার, আপনি দেখুন এই হাসপাতালে কী ভয়াবহ পরিস্থিতি চলছে।

চিকিৎসা নয়, এখানে মানুষ শুধু প্রহসনের শিকার হচ্ছে। এখানে শুয়ে থেকে আমি দেখেছি, কিভাবে মানুষ চিকিৎসা না পেয়ে মরে যাচ্ছে, আর কর্তৃপক্ষ নীরব দর্শক।

এই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কি মৃত্যুর এক কারখানা হয়ে যাচ্ছে?

একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে, একজন নারী হিসেবে, একজন রোগী হিসেবে এবং একজন সংবাদকর্মী হিসেবে আমি অনুরোধ জানাই—এই অব্যবস্থাপনার পরিবর্তন হোক। মানুষ যেন অন্তত সরকারি হাসপাতালে এসে সুস্থ হওয়ার আশায় মরতে না হয়। আমি চাই, এই লিখন একটি জবাব পাক। শুধু আমার জন্য নয়, আমার মতো হাজারো কণ্ঠহীন রোগীর জন্য। চট্টগ্রাম মেডিকেলের প্রতিটি অসংগতি যেন আজ সরকারের চোখে পড়ে।


আরও খবর



বিশ্বে প্রথম রাফাল যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করল পাকিস্তান!

প্রকাশিত:বুধবার ০৭ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৫ মে ২০২৫ |

Image

ভারত পেহেলগামে হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার সময় তাদের তিনটি দাসো রাফাল যুদ্ধবিমান ধ্বংসের দাবি করেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। ফ্রান্সের তৈরি এই যুদ্ধবিমানগুলো ফোর পয়েন্ট ফাইভ প্রজন্মের অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে ঠাসা।

পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) বলছে, বিশ্বে পাকিস্তানই প্রথম দেশ যারা কোনো রাফাল যুদ্ধবিমান ধ্বংস করল। এটি পাকিস্তান বিমান বাহিনীর একটি বিরল কৃতিত্ব। বুধবার (৭ মে) পাকিস্তান ট্রিবিউন এ তথ্য জানায়।

পাকিস্তান বিমান বাহিনী বলছে, তারা এই কৃতিত্ব অর্জন করেছে তাদের কোনো জে-টেন সি (J-10C) বা জেএফ সেভেন্টিন (JF-17) বিমান খোয়ানা ছাড়াই। অর্থাৎ ভারতের যুদ্ধবিমান ধ্বংসের সময় পাকিস্তান বিমানবাহিনীর কোনো বিমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।

এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (ISPR) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আহমেদ শরীফ নিশ্চিত বলেছেন, পাকিস্তান বিমান বাহিনী সফলভাবে ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে তিনটি রাফাল (Rafale) যুদ্ধবিমান, একটি মিগ-২১ (MiG-21) এবং একটি সুখোই সু-৩০ (Sukhoi Su-30)। ভারত সরকার এখনো রাফাল যুদ্ধবিমান হারানোর কোনো বিষয় নিশ্চিত করেনি।

বর্তমানে পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ রয়েছে এবং উভয় দেশ উচ্চ সতর্কতায় রয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানানো হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার রাত ১টার পর পাকিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত। এতে এখন পর্যন্ত ২৬ জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছে পাকিস্তান।


আরও খবর



মডেল মেঘনার জামিন মেলেনি

প্রকাশিত:রবিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৬ মে ২০২৫ |

Image

মডেল মেঘনা আলমের জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। রাজধানীর ধানমন্ডি থানার প্রতারণা ও চাঁদাবাজির অভিযোগে করা মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে রয়েছেন তিনি। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুমা রহমানের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, আসামি মেঘনার পক্ষে তার আইনজীবী মহসিন রেজা, আইনজীবী মহিমা বাঁধন ও ব্যারিস্টার সাদমান সাকিব জামিন শুনানি করেন। শুনানিতে তারা বলেন, মেঘনা আলমের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ নেই। যেই অভিযোগ আনা হয়েছে, তা ভিত্তিহীন। শুধু হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এই মামলা দায়ের করা হয়েছে। তিনি মহিলা বিবেচনায় জামিন পেতে পারেন। যেকোনও শর্তে তার জামিন প্রার্থনা করছি।

এর আগে গত ১৭ এপ্রিল এ মামলায় ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম মিয়ার আদালত শুনানি শেষে তাকে গ্রেফতার দেখান।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, মেঘনা আলম, দেওয়ান সমিরসহ অজ্ঞাতনামা ২ থেকে ৩ জন একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা বিভিন্ন সুন্দরী মেয়েদের দিয়ে বাংলাদেশে কর্মরত বিভিন্ন বিদেশি রাষ্ট্রের কূটনীতিক বা প্রতিনিধি ও দেশিয় ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপন করে। পরে বিভিন্ন উপায়ে অবৈধ পন্থা অবলম্বনের মাধ্যমে তাদের সম্মানহানীর ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করে চক্রটি। দেওয়ান সমির কাওয়াই গ্রুপ নামের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সিইও এবং সানজানা ইন্টারন্যাশনাল নামক একটি ম্যানপাওয়ার প্রতিষ্ঠানের ফার্মের মালিক মর্মে জানা যায়।

অভিযোগে আরও বলা হয়, এছাড়া আগে মিরআই ইন্টারন্যাশনাল ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড নামক একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিল। বিভিন্ন আকর্ষণীয়, স্মার্ট মেয়েদের তার প্রতিষ্ঠানে ব্রান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে নিয়োগ দিয়ে বিদেশি কূটনীতিক ও ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদের কাছে সহজে যাতায়াত নিশ্চিত করতো এবং দেওয়ান সমির তার ম্যানপাওয়ার ও অন্যান্য ব্যবসাকে অধিকতর লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে দাঁড় করানোর জন্য চক্রান্তের অংশ হিসেবে অসৎ উদ্দেশে তার সহযোগী আসামিদের সহায়তায় ও অসৎ উদ্দেশে বিভিন্ন কুটনীতিকদের টার্গেট করে ব্লাকমেইল করে বড় অঙ্কের টাকা চাঁদা হিসেবে দাবি করে আদায় করে থাকে।


আরও খবর



আট মাসে প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা জব্দ দুদকের

প্রকাশিত:রবিবার ০৪ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৫ মে ২০২৫ |

Image

অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে দুর্নীতিবাজদের ধরপাকড়ে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ক্রোক ও অবরুদ্ধ করার ক্ষেত্রে রেকর্ড সাফল্য দেখিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত বছরের আগস্ট থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত মাত্র আট মাসে দেশে ও বিদেশে অবস্থান করা দুর্নীতিবাজ, অর্থপাচারকারী, সরকারি অর্থ লোপাটকারী ও ঋণখেলাপিসহ অন্তত শতাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ১৩ হাজার কোটি টাকার বেশি স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক ও ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছে। তাদের মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন রেহানা সিদ্দিকের পরিবারের সদস্যরাও রয়েছেন।

২০২৪ সালের পুরো সময়ে ক্রোক ও অবরুদ্ধ করা সম্পদের পরিমাণ ছিল মাত্র ৩৬১ কোটি টাকা। ২০২০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে সম্পদের পরিমাণ ছিল প্রায় তিন হাজার ৪৫০ কোটি টাকা। অর্থাৎ গেল আট মাসে সম্পদ ক্রোক ও ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার ক্ষেত্রে নতুন রেকর্ড স্থাপন করেছে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি।

দুদকে দায়ের হওয়া বিভিন্ন দুর্নীতির মামলার পরিপ্রেক্ষিতে গত আট মাসে (আগস্ট-মার্চ) আদালতের নির্দেশনায় এসব সম্পদ ক্রোক বা অবরুদ্ধ করা হয়েছে বলে দুদক সূত্রে জানা গেছে।

আদালত ও দুদকের সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ সূত্রে জানা যায়, দেশের ভেতরে গত আট মাসে প্রায় ১২ হাজার ১৩৮ কোটি ৭৭ লাখ ২০ হাজার ৭৭০ টাকার সম্পদ ক্রোক করেছে দুদক। এ সময়ের মধ্যে আদালতের আদেশে ৭৭৩ কোটি ৬২ লাখ ৫৪ হাজার ৪০৩ টাকা অবরুদ্ধ করেছে সংস্থাটি। অন্যদিকে, দেশের বাইরে ১২০ কোটি ৪৪ লাখ ২৪ হাজার ৬৮ টাকা মূল্যের সম্পদ ক্রোক এবং ৪৫ কোটি ১৭ লাখ ৪১ হাজার ৪১৯ টাকা অবরুদ্ধ করা হয়েছে।

ক্রোক করা সম্পদের মধ্যে রয়েছে- ১৯১ একর জমি, বিদেশে ৫৮২টি ফ্ল্যাট, দেশে ২৮টি বাড়ি, ৩৮টি ফ্ল্যাট, ১৫টি প্লট, ২৩টি গাড়ি, ২৩টি কোম্পানির আট লাখ ৮৮ হাজার ডলার, ৮৬ লাখ ২০ হাজার ৪৮০ ইউরো, তিনটি কোম্পানি ও তিনটি জাহাজ। এছাড়া এক হাজার ১০টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছে। এসব হিসাবে গচ্ছিত টাকার পরিমাণ ৮১৭ কোটি ১৪ লাখ। অবরুদ্ধ করা হয়েছে আট হাজার ৭১৩ কোটি টাকার শেয়ার, ৬৬০ গ্রাম সোনা, এক লাখ ৬৯ হাজার ৩০০ ডলার, ৫৫ হাজার ইউরো এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নয়টি বিও হিসাবে নয় কোটি ১৭ লাখ ৫২ হাজার টাকা স্থিতি। ব্যাংক স্থিতি সাত লাখ ১৩ হাজার ডলার ও ২৮ লাখ ৬৯ হাজার ৪৮০ ইউরো। সবমিলিয়ে গত আট মাসে ক্রোক ও অবরুদ্ধ সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকারও অনেক বেশি।

ক্রোক ও অবরুদ্ধ করা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে- সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন রেহানা সিদ্দিকের পরিবারের সম্পদ, শিকদার গ্রুপ, এস আলম গ্রুপ, নাবিল গ্রুপ ও সালমান এফ রহমানসহ আওয়ামী সরকারের শীর্ষ মন্ত্রী-এমপি ও আমলা। আরও আছেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক সদস্য মতিউর রহমানসহ অন্তত শতাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বলেন, ‘গত আট মাসে যে পরিমাণ সম্পদ ক্রোক ও অবরুদ্ধ করা হয়েছে তার পরিমাণ নিঃসন্দেহে বিপুল। এর আগে এত কম সময়ে এত পরিমাণ সম্পদ ক্রোক ও অবরুদ্ধ করার রেকর্ড নেই।’ এসব সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের সম্পদ ব্যবস্থাপনা ইউনিট বিষয়টি দেখছে। পাশাপাশি ক্রোক ও অবরুদ্ধ করা সম্পদের ধরন অনুযায়ী বিভিন্ন ডিপার্টমেন্ট এটি নিয়ে কাজ করছে।’

সাধারণত আদালতের ভিন্ন কোনো নির্দেশনা না থাকলে ক্রোক বা অবরুদ্ধ করা সম্পদের দেখভালের দায়িত্ব পালন করে দুদকের ব্যবস্থাপনা ইউনিট। ২০১৯ সাল থেকে কমিশনের স্বতন্ত্র ইউনিট হিসেবে সম্পদ ব্যবস্থাপনা ইউনিট যাত্রা শুরু করে।

বর্তমানে ওই ইউনিটের অধীনে ২০২৪ সালে আদালতের আদেশে ১৭০ কোটি ৫৫ লাখ ৩২ হাজার ৩৩ টাকার সম্পত্তি ক্রোক এবং ১৯০ কোটি ৯০ লাখ ১১ হাজার ১৪০ টাকা অবরুদ্ধ করা হয়। ২০২৩ সালে ২৮৩ কোটি ৪২ লাখ ৩৬ হাজার ৮৪৫ টাকার সম্পদ ক্রোক এবং ১৩২ কোটি এক লাখ ৯৩ হাজার ১০০ টাকা অবরুদ্ধ করা হয়।

একইভাবে ২০২২ সালে ৫৮৫ কোটি ৯২ লাখ ৫৮ হাজার ১৫৬ টাকার সম্পত্তি ক্রোক এবং ২২৪ কোটি ৭৯ লাখ ৭৫ হাজার ১৬৬ টাকা ও ২৭ হাজার ৯৫৪ মার্কিন ডলার অবরুদ্ধ করা হয়। ২০২১ সালে ৩২৬ কোটি ৭১ লাখ ৪৬ হাজার ৬২৮ টাকার সম্পত্তি ক্রোক এবং এক হাজার ১৬১ কোটি ৫৮ লাখ ১৪ হাজার ৪৮০ টাকার পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা (পাউন্ড, কানাডিয়ান ডলার, অস্ট্রেলিয়ান ডলার) অবরুদ্ধ করা হয়। ২০২০ সালে আদালতের আদেশে ১৮০ কোটি ১১ লাখ ৯১ হাজার ৭৪৬ টাকার সম্পত্তি ক্রোক এবং ১৫২ কোটি ৯২ লাখ ৮৬ হাজার ৪৯৬ টাকা অবরুদ্ধ করা হয়।

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শীর্ষ রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। অনুসন্ধানে ব্যাপক অর্থপাচার ও দুর্নীতির প্রমাণ পায় সংস্থাটি।


আরও খবর



তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ১০.৮৪ শতাংশ

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৮ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৫ মে ২০২৫ |

Image

চলতি অর্থবছরের (২৪-২৫) জুলাই-মার্চ মাসে তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ১০ দশমিক ৮৪ শতাংশ। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-মার্চ মাসের দেশভিত্তিক রপ্তানি তথ্য থেকে বিষয়টি জানা গেছে।

জানা গেছে, এই সময়ে ৩০ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার পোশাক রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। যা পোশাক খাতের স্থিতিস্থাপকতা এবং সম্ভাবনা তুলে ধরে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।

তথ্য থেকে জানা যায়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখনো বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার। বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের মোট রপ্তানির ৪৯ দশমিক ৮২ শতাংশই রপ্তানি হয় ইউরোপীয় ইউনিয়নে। যার মোট বাজার মূল্য ১৫ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার।

এরপরেই রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজার। এ বাজারে মোট রপ্তানি হয়েছে ৫ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক। যা মোট রফতানির ১৮ দশমিক ৯৭ শতাংশ। যেখানে কানাডার মোট বাজার অংশ ছিল ৯৬৩ দশমিক ৮৫ মিলিয়ন ডলার। যার বাজার অংশ ৩ দশমিক ১৯ শতাংশ। যুক্তরাজ্যের বাজারও গুরুত্বপূর্ণ ছিল, যার রপ্তানি মূল্য ৩ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার। যা বাংলাদেশের মোট তৈরি পোশাক রপ্তানির ১১ দশমিক ১০ শতাংশ ।

প্রবৃদ্ধির দিক থেকে ইইউতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি বছরের পর বছর ধরে উল্লেখযোগ্যভাবে ১১ দশমিক ৩১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। উল্লেখিত সময়ে যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৭ দশমিক ২৩ শতাংশ এবং কানাডা ১৫ দশমিক ৬৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে, যুক্তরাজ্যে তৈরি পোশাক রপ্তানি ৪ দশমিক ১৪ শতাংশ এর একটি সামান্য প্রবৃদ্ধির হার প্রদর্শন করেছে।

ইইউর মধ্যে, জার্মানি একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার হিসেবে দাঁড়িয়েছে, যেখানে বাংলাদেশের রফতানির পরিমাণ ৩ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার, স্পেন ২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার, ফ্রান্স ১ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার, ইতালি ১ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলার, পোল্যান্ড ১ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলার এবং নেদারল্যান্ডস ১ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার।

প্রবৃদ্ধির হার বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ছিল- জার্মানি (১০ দশমিক ৭২ শতাংশ), ফ্রান্স (১০ দশমিক ৭৫ শতাংশ), নেদারল্যান্ডস (২৩ দশমিক ১৫ শতাংশ), পোল্যান্ড (১০ দশমিক ৩২ শতাংশ), ডেনমার্ক (১২ দশমিক ৮০ শতাংশ) এবং সুইডেন (১৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ) ।

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতেও অপ্রচলিত বাজারে প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে, সামগ্রিকভাবে ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যেখানে মোট রফতানি ৫ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা বাংলাদেশের মোট রফতানির ১৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ দখল করেছে।

এই বাজারগুলোর মধ্যে জাপান মোট ৯৬০ দশমিক ৪৫ মিলিয়ন ডলার আমদানি করে শীর্ষে রয়েছে, তারপরে অস্ট্রেলিয়া ৬৫৩ দশমিক ৬৪ মিলিয়ন ডলার এবং ভারত ৫৩৫ দশমিক ১৫ মিলিয়ন ডলার আমদানি করে।

তুরস্ক এবং মেক্সিকোর মতো দেশগুলোতেও উল্লেখযোগ্য রফতানি হয়েছে। তুরস্কে ৩৫৭ দশমিক ২২ মিলিয়ন ডলার এবং মেক্সিকোতে ২৫১ দশমিক ২২ মিলিয়ন ডলার, যা প্রশংসনীয়। উল্লেখিত সময়ে ভারতে ২০ দশমিক ৪৫ শতাংশ, জাপান ১০ দশমিক ০৬ শতাংশ, মেক্সিকো ২৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ এবং তুরস্কের ৩২ দশমিক ৫৪ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

রিপোর্টে দেখা গেছে, এই সময়কালে জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, তুরস্ক এবং মেক্সিকোতে প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক থাকলেও রাশিয়া, কোরিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং মালয়েশিয়ায় রফতানি হ্রাস পেয়েছে।

সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া এবং কোরিয়ায় নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি এই বাজারগুলোতে আরও গুরুত্বসহকারে রফতানি বাজার দেখা দরকার।

নিটওয়্যার খাত মোট ১১ দশমিক ২২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখিয়েছে। ওভেন সেক্টরেও ১০ দশমিক ৪০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যে প্রবৃদ্ধি ধীর হলেও অপ্রচলিত বাজারে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পয়েছে।

রফতানির চলমান প্রবৃদ্ধি উল্লেখযোগ্যভাবে ইইউ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভরশীল। যা বাংলাদেশের প্রধান বাজার হিসেবে অব্যাহত রয়েছে। যা এই ক্ষেত্রগুলির মধ্যে আরও সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেয়।

বিজিএমইএ’র সাবেক পরিচালক, বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং ডেনিম এক্সপার্ট লিমিটেডের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ‘এটি আমাদের মোট রপ্তানি প্রবৃদ্ধিতে প্রধান ঐতিহ্যবাহী বাজারের তাৎপর্য প্রদর্শন করে।’ তিনি আরও বলেন, অপ্রচলিত বাজারে মাঝারি প্রবৃদ্ধি এই বিভাগে আরও গবেষণা এবং মনোযোগের গুরুত্বকে তুলে ধরে, কারণ এর যথেষ্ট প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে, যা ঐতিহ্যবাহী বাজারের ওপর নির্ভরতা ভারসাম্য বজায় রাখতেও সাহায্য করবে।

রুবেল বলেন, স্থায়ী বৈশ্বিক বাণিজ্য উত্তেজনা ক্রমাগত বৈশ্বিক পরিবেশকে পুনর্গঠন করছে। এমন সুযোগ তৈরি করছে যা বাংলাদেশ সুবিধা নিতে পারে।

সূত্র : বাসস


আরও খবর



ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা : নিরাপত্তা পরিষদে বৈঠক

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৬ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৫ মে ২০২৫ |

Image

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা নিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে রুদ্ধদ্বার আলোচনা হয়েছে। এ সময় পরিষদের সদস্যদেশের প্রতিনিধিরা উত্তেজনা কমাতে ও সংলাপে বসতে দুই দেশের প্রতি আহ্বান জানান।

১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদ সভার পর কোনো বিবৃতি প্রকাশ করেনি। তবে পাকিস্তান দাবি করেছে, তাদের নিজেদের লক্ষ্যগুলোর বেশির ভাগই পূর্ণ হয়েছে। সভায় পরিষদের স্থায়ী ৫টি দেশ ও অস্থায়ী ১০ দেশের সব প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস পেহেলগামে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, হামলাকারীদের বিচারের মুখোমুখি করা উচিত। ভারত ও পাকিস্তানকে সামরিক সংঘর্ষ এড়ানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ভুল করবেন না। সামরিক সংঘর্ষ কোনো সমাধান নয় এবং আমি শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য দুই দেশের সরকারকেই সহায়তায় প্রস্তুত আছি।’

দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানের অনুরোধে নিরাপত্তা পরিষদ জরুরি ভিত্তিতে রুদ্ধদ্বার বৈঠকটি করেছে। বৈঠকে পাকিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি আসিম ইফতিখারের বক্তব্য শোনা হয়।

এক সংবাদ সম্মেলনে ইফতিখার বলেন, নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা যে ধরনের মনোযোগ ও সম্পৃক্ততা দেখিয়েছেন, তার জন্য পাকিস্তান কৃতজ্ঞ। তিনি কাশ্মীর ইস্যুকে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে ৭০ বছর ধরে চলমান একটি দীর্ঘস্থায়ী বিরোধ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।



আরও খবর