Logo
শিরোনাম

ডলারের বদলে রুপিতে বাণিজ্য

প্রকাশিত:শুক্রবার ২১ এপ্রিল ২০২৩ | হালনাগাদ:বুধবার ২৬ মার্চ ২০২৫ |

Image

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক লেনদেন ডলারের পরিবর্তে রুপিতে করার বিষয়ে দুই দেশ নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

তবে ডলারের দাম ওঠানামার ওপর ভিত্তি করে দুই দেশের মুদ্রার মান নির্ধারণ করা হবে। কিভাবে এই প্রক্রিয়া কাজ করবে সেটি নির্ধারণের জন্য দুই দেশের ব্যাংকগুলোর চুক্তিও করতে হবে।

সেজন্য রুপিতে বাণিজ্যের বিষয়টি খুব সহসাই শুরু হচ্ছে না। অন্তত ছয় মাস সময় লাগতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক।

তিনি বলেন, 'আমরা নীতিগতভাবে রাজি হয়েছি। এ বিষয়ে যাবতীয় প্রক্রিয়া চলছে। যদি ব্যাংকগুলো দেখে যে সব ঠিকঠাক আছে তাহলে তারা এই কার্যক্রম হাতে নেবে। শুরু হওয়ার পর বোঝা যাবে সুবিধা অসুবিধা।

ব্যবসায়ী ও নিয়মিত ভ্রমণকারীদের দাবি, টাকা ও রুপিতে বাণিজ্য হলে উভয় দেশই লাভবান হবে।তবে বিশ্লেষকদের মত, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বড় ধরণের বাণিজ্য ঘাটতি থাকায় রুপিতে লেনদেনে বাংলাদেশ ঝুঁকিতে পড়তে পারে।

গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-এর গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বিবিসি বাংলাকে বলেন, 'রুপি যেহেতু বৈশ্বিক মুদ্রা হিসেবে স্বীকৃত না এ কারণে ডলারের বিপরীতে ভারতীয় মুদ্রার দর ঘন ঘন ওঠানামা করবে যা প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের সাথে লেনদেনে।

কোন পদ্ধতিতে হবে লেনদেন?
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে মার্কিন ডলারের দর ব্যাপক উর্ধ্বমুখী হওয়ায় বাংলাদেশ ও ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে টান পড়েছে। বাড়তি দামেও ডলার পাওয়া যাচ্ছে না।

এমন অবস্থায় ডলারের ওপর চাপ কমাতে সরাসরি টাকা ও রুপির মাধ্যমে আমদানি-রফতানির বিষয়ে ভাবছে ঢাকা-দিল্লি।

নিজস্ব মুদ্রায় লেনদেনের এই উদ্যোগ এক দশক আগেই নেয়া হয়েছিল। ওই সময় নানা ঝুঁকি বিবেচনায় প্রস্তাবটি আর আলোর মুখ দেখেনি। তবে গত বছরের ডিসেম্বরে দুই দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে রুপিতে বাণিজ্যিক লেনদেন করার প্রস্তাব ওঠে। মার্চে বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের বৈঠকে বিষয়টি উত্থাপন করা হয়।

এ বিষয়ে আলোচনা করতে গত ১১ এপ্রিল বাংলাদেশে সফরে আসে ভারতের একটি প্রতিনিধি দল। তারা বাংলাদেশের ব্যাংকারদের সাথে বৈঠক করে টাকা ও রুপিতে দুই দেশের বাণিজ্যিক লেনদেনের পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, পাইলট প্রোগ্রাম হিসেবে প্রাথমিকভাবে চারটি ব্যাংকের মাধ্যমে এই লেনদেন চালু হওয়ার কথা রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে- বাংলাদেশের সোনালী ব্যাংক ও ইস্টার্ন ব্যাংক এবং ভারতের স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া ও আইসিআইসিআই।

ভারতের দুটি ব্যাংক লেনদেনের হিসাব খুলবে বাংলাদেশের দুটি ব্যাংকে। একইভাবে বাংলাদেশের দুটি ব্যাংক, ভারতীয় দুটি ব্যাংকে তাদের লেনদেনের হিসাব খুলবে। ফলে লেনদেনের ক্ষেত্রে স্থানীয় মুদ্রা ডলারে রূপান্তর করতে হবে না। বিনিময় হার হবে সরাসরি টাকা থেকে রুপি বা রুপি থেকে টাকায়।

অর্থাৎ, বাংলাদেশ থেকে যারা ভারতে যাবেন বা ভারত থেকে পণ্য আমদানি করবেন, তারা ওই ব্যাংক হিসাবে ভারতীয় রুপি যোগ করতে পারবেন। একইভাবে কোনো ভারতীয় বাংলাদেশে ভ্রমণের সময় বা বাংলাদেশ থেকে পণ্য কিনতে ব্যাংক হিসাবে টাকা যোগ করতে পারবেন।ভারতের সাথে ব্যবসার ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি অনুসরণ করা হলে ব্যবসায়ীরাও দ্রুততম সময়ের মধ্যে লেনদেন করতে পারবেন বলে আশা করছেন।

ভারত বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমদ জানান, 'ব্যবসায়ীরা চাইলে টাকা রুপি যে কোনোটায় এলসি খুলতে পারেন। যেহেতু ভারত মূল রপ্তানিকারক সেজন্য রুপিতে এলসি খুললে বিনিময় মূল্যে তারতম্য কম হয়। ডলারের পরিবর্তে ভারতীয় রুপিতে লেনদেন করলে রফতানি খরচ কিছুটা হলেও সাশ্রয় হবে।

ঝুঁকির আশঙ্কা বিশ্লেষকদের
বিশ্লেষকদের মত, দুই দেশের বাণিজ্যে বাংলাদেশ যেখানে ঘাটতিতে আছে, সেখানে রুপি ও টাকার লেনদেনের প্রস্তাব তত্ত্বগতভাবে ঠিক মনে হলেও বাস্তবে ভারত লাভবান হবে এবং বাংলাদেশ ঝুঁকিতে পড়তে পারে।

অর্থনীতিবিদ খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেমের মতে, ভারতে এমন অনেক পণ্য আছে যার কাঁচামাল তাকে ডলারে অন্য দেশ থেকে আমদানি করতে হয়। ওই ধরণের পণ্য বাংলাদেশে রফতানি করতে গেলে রফতানিকারকরা বেশি দাম নির্ধারণ করতে পারে।

এতে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের জন্য এই লেনদেন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠবে বলে মনে করেন মোয়াজ্জেম। ফলে ডলার সঙ্কটের কারণে যে উদ্দেশ্যে ভারতীয় মুদ্রায় লেনদেনের কথা বলা হচ্ছে সেটি দিনশেষে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের জন্য লাভজনক থাকবে কিনা সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।এছাড়া একবার রুপি-টাকায় লেনদেনে গেলে এক পর্যায়ে সেটি একপক্ষীয় মুদ্রা বা রূপি-ভিত্তিক বিনিময় কাঠামোয় উপনীত হতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন মোয়াজ্জেম। এমনটা হলে বাংলাদেশের ওপর অধিক হারে ভারতীয় মুদ্রা ব্যবহারের চাপ তৈরি হবে।

এ ব্যাপারে মোয়াজ্জেম বলেন, 'বাণিজ্যিক ঘাটতি থাকা অবস্থায় লেনদেনে গেলে ভারতের ওপর নির্ভরশীলতা বেড়ে যেতে পারে। বাংলাদেশে যেহেতু চাহিদা মাত্র ১২ থেকে ১৩ শতাংশ রুপি আছে। সেক্ষেত্রে ভারত থেকে ঋণ করে কিংবা অন্যদেশের সাথে বাণিজ্য কমিয়ে অথবা ডলারকে রুপিতে রূপান্তর করে ওই বাণিজ্য অব্যাহত রাখার প্রবণতা দেখা যাবে। তখন দেখা যাবে ভারত থেকে ঋণের সুদের চাপ থাকবে আবার ডলার ভাঙালে লোকসান হবে।

সব মিলিয়ে এই দুই দেশের বড় আকারে স্থানীয় মুদ্রায় বাণিজ্যে যাওয়ার তেমন সুযোগ তিনি দেখছেন না।

তার আশঙ্কা, যদি রুপি-টাকায় লেনদেন একবার শুরু হয় তাহলে এটি শুধুমাত্র স্থানীয় পণ্যের বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ থাকবে না বরং বিভিন্ন সেবামূলক বাণিজ্য যেমন ভ্রমণ, চিকিৎসা, শিক্ষা ইত্যাদি ক্ষেত্রেও ছড়িয়ে পড়বে, যা বাংলাদেশকে ঝুঁকিতে ফেলবে।

এমন অবস্থায় ডলারে লেনদেন করাই নিরাপদ ও স্বস্তিদায়ক বলে তিনি মনে করছেন। কেননা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ডলার সর্বাধিক ব্যবহৃত মুদ্রা হওয়ায় ডলারে লেনদেনের ঝুঁকি সবচেয়ে কম।

মি. মোয়াজ্জেম পরামর্শ দিয়েছেন, সরকারের সর্বতোভাবে চেষ্টা করা দরকার ডলারের মাধ্যমে বিনিময় টিকিয়ে রাখা। ভারতীয় মুদ্রাকে কম ব্যবহার করা। সেই সাথে সরকার এখন যেমন সীমিত আমদানি করে ডলারের ব্যবহার কিভাবে কমিয় আনছে এই কাঠামোতেই চলার ওপর জোর দিয়েছেন তিনি।

ব্যবসায়ীদের দাবি লাভ হবে
বাংলাদেশি নাগরিকরা ভারতে চিকিৎসা, পর্যটন ও কেনাকাটা বাবদ প্রচুর ব্যয় করেন। পরিসংখ্যান বলছে, বাংলাদেশের মোট আমদানির ১৪ শতাংশ হয় ভারত থেকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশ ভারতে ২০০ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি করেছে। এর বিপরীতে বাংলাদেশ ভারত থেকে পণ্য আমদানি করেছে এক হাজার ৬১৯ কোটি ডলারের। ঘাটতির পরিমাণ এক হাজার ৪১৯ কোটি ডলার।

বাণিজ্য ঘাটতি এবং বাংলাদেশের হাতে যেহেতু যথেষ্ট পরিমাণ রুপি নেই, এ কারণে দুই দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ ২০০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ রুপিতে বাণিজ্যিক লেনদেন করা সম্ভব হবে।

অর্থাৎ ২০০ কোটি ডলারের যে রপ্তানি আয় বাংলাদেশ করছে, সে পরিমাণ বাণিজ্য ভারতীয় মুদ্রায় করার কথা ভাবা হচ্ছে। এর বেশি পণ্য রুপিতে কেনা যাবে না, কারণ রফতানি ছাড়া রুপি পাওয়ার সুযোগ নেই।

ফলে বাংলাদেশকে আমদানি মূল্যের বাকি অংশ অর্থাৎ ১৪ শ' কোটি ডলারের আমদানি ব্যয় আগের মতোই মার্কিন ডলারে পরিশোধ করতে হবে।

রুপিতে লেনদেনের ফলে বাংলাদেশের যে ২০০ কোটি ডলার বেঁচে যাবে সেটা দিয়ে সরকার অন্য দেশ থেকে প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি করতে পারবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ-ভারত চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমদ। তার মতে, এতে উভয় দেশই লাভবান হবে। বাণিজ্য ২০০ কোটিতে বেঁধে দেয়ায় কোনো ঝুঁকিও থাকবে না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হকের দাবি, এই লেনদেন যেহেতু দ্বিপক্ষীয় আলোচনার ভিত্তিতে হবে সে কারণে বার বার মুদ্রা রূপান্তর করার খরচ কমবে। বিনিময় মূল্যে আমরা সাশ্রয় করতে পারবো। আবার বাংলাদেশ থেকে ভারতে নিয়মিত ভ্রমণকারীরাও একে লাভজনক উপায় বলে মনে করছেন।

বাংলাদেশ থেকে কেউ যদি ভারতে ভ্রমণে যান তাহলে তার পাসপোর্টে ডলার এনডোর্স করতে হয়। ওই ডলার ভারতে গিয়ে রুপিতে ভাঙিয়ে খরচ করতে হয়। দুবার মুদ্রা বিনিময়ের কারণে লোকসানে পড়ার কথা জানান ভ্রমণকারীরা।

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন ডলারের বিনিময় মূল্য ১০৬ টাকা থেকে ১১০ টাকার মধ্যে ওঠানামা করছে। ওই হিসেবে ১০০ ডলার কিনতে খরচ পড়ছে ১০ হাজার ছয় শ' থেকে ১১ হাজার টাকার মতো।

এই ১০০ ডলারের বিনিময়ে ভারতীয় রুপি পাওয়া যায় আট হাজার দুই শ' থেকে আট হাজার তিন শ'র মতো। কিন্তু এই লেনদেন যদি সরাসরি টাকা ও রুপিতে হতো তাহলে একই পরিমাণ টাকায় ভারতীয় রুপি পাওয়া যেত ১৩ হাজার থেকে সাড়ে ১৪ হাজারের মতো। বেশ বড় অঙ্কের ফারাক।


সূত্র : বিবিসি

 


আরও খবর



চাঁদা না পেয়ে অটোচালকের বসতঘরে হামলা, লুটপাট আহত ৬

প্রকাশিত:সোমবার ১৭ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৫ মার্চ 20২৫ |

Image

লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি :

লক্ষ্মীপুরের বশিকপুরে দাবি করা চাঁদার টাকা না পাওয়ায় অটোচালকের বসতঘরে হামলা চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। এ সময় সন্ত্রাসীদের বাধাদিতে গিয়ে নারী-পুরুষসহ ৬ জন আহত। স্থানীয় আহতদের উদ্ধার করে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। রাতে  সদর উপজেলার বশিকপুর ৭ নম্বর ওয়াডে এ ঘটনা ঘটে। সন্ত্রাসীরা ওই বাড়ী থেকে নগদ ৮ লাখ টাকাসহ ১২ লক্ষ টাকার মালামাল ছিনিয়ে নিয়েছে অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্তদের   ।

জানা গেছে, ত্রাসের জনপথ সদর উপজেলার বশিকপুরে সন্ত্রাসী বাহিনীদেরকে নতুন করে পাকা ঘর তুলতে দিতে হয় চাঁদা। স্বৈরাচার সরকার পতনের পর এসব আওয়ামী পন্থী চাঁদাবাজ গা ঢাকা দিয়েছিল।এতোদিন অনেকেই ভয়ে বাড়ি-ঘর না তুলল্লেও চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীরা নেই এমন বিশ্বাসে পাকা ঘর তৈরি কাজ ধরেন সদর উপজেলার বশিকপুর গ্রামের শাহাবুদ্দিন ও তার সন্তান অটোচালক শাফায়াত। সন্ত্রাসীদের নজরে আসলে তারা এলাকায় ফিরে এসে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চাঁদা দাবী করে এমন দাবী ক্ষতিগ্রস্তসহ এলাকাবাসীর।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রাতে বেশি ভয়ংকর হয়ে ওঠে বশিকপুর। তাই সন্ধ্যার মধ্যে ঘরে ফেরার তাড়া থাকে সবার। এখন সন্ধ্যার পর থেকে বের হতে পারেন না তারা। বাজার জমজমাট থাকত রাত ১টা পর্যন্ত। এখন সন্ধ্যার পর দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। সবার মধ্যে চাপা আতঙ্ক কাজ করে, কখন কী হয়!


হামলায় আহত নাসির উদ্দিন জানান,  অন্য বাহিনীর মতো কাজ করছে সন্ত্রাসী জাহাঙ্গীর শাহাদাত মাকসুদ বাহিনী । এতোদিন এ বাহিনীর  লোকজন চাঁদা আদায় করতো । কিছু দিন তাদের সন্ন্ত্রাসী কর্মকান্ড বন্ধ থাকলে ও কয়েকনি ধরে তারা নতুন করে এলাকায় এ বাহিনী ও সদস্যরা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড শুরু করে দিয়েছে । নীজ জায়গায় পাকা ঘর তুলেতেই তাদের নজরে আসে তাদের। সন্ত্রাসী জাহাঙ্গীর শাহাদাত মাকসুদ বাহিনী দাবী করেন  ৫০ হাজার টাকা চাঁদা । দিতে অস্বীকার করাতে ক্ষিপ্ত হয় এ বাহিনীসদস্যরা। তাদের হামলায় তিনিসহ তার বাবা শাহাবুদ্দিন ,ভাই শাফায়াত,মা শিরিন আক্তারসহ তাদের পরিবারের ৬ জন আহত হয়।  

হামলাকারীরা ভাড়ি ঘর ভাংচুরসহ অটোরিকসাটিও ভাংচুর করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালায় সন্ত্রাসীরা । জাহাঙ্গীর শাহাদাত মাকসুদ এলাকার এক নম্বর ত্রাস। তার রয়েছে  ২০/২৫ জনের সন্ত্রাসী বাহিনী।  সন্ধ্যার পর  বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে সন্ত্রাসী জাহাঙ্গীর শাহাদাত মাকসুদ বাহিনী তাদের ঘরে থাকা নগদ টাকা১২ লাখ টাকার মালামালসহ মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে যায় তারা। বাধাঁদিতে দিতে গিয়ে হামলা ও মাধরের শিকার হন তারা। এ ঘটনায় শুষ্টু বিচার দাবী করেছেন তারা।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, তিন দশক ধরে ত্রাসের রাজত্ব চলছে বশিকপুরে। মানুষ দিনের পর দিন নৃশংস ঘটনা দেখে অনেকটাই বোবা হয়ে গেছে। তারা অনেক কিছু দেখেও দেখত না। শুনেও শুনত না। তবে সম্প্রতি জোড়া খুনের পর বশিকপুরের মানুষ মুখ খুলতে শুরু করেছে। অনেকে মুখ না খুললেও চাইছেন এই অরাজকতার অবসান।

লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও সমাজকর্মী মাইন উদ্দিন পাঠান বলেন, ‘বিভিন্ন সময় ক্ষমতাধর রাজনীতিকেরা নিজেদের প্রয়োজনে বাহিনীগুলো তৈরি করেছেন। এই সমস্যা নিরসনের জন্য রাজনৈতিক অঙ্গীকার দরকার। রাজনৈতিক দলগুলো শুদ্ধ না হলে প্রশাসনের কিছু করার থাকে না।’

 এদিকে হামলা ও মালামাল লুটের ঘটনায় অস্বীকার করেছেন জাহাঙ্গীর, শাহাদাত ও  মাকসুদ। 

চন্দ্রগঞ্জ থানার ওসি কায়সার হামিদ বলেন,ঘটনাটি তিনি শুনে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছেন। পারিবারিক বিরোধে না সন্ত্রাসী কর্মকান্ড দত্তপাড়া পুলিশের তদন্তটিম কাজ করছে। আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। রাতে ও দিনে ওই এলাকায় পুলিশ টহল জোরদার রয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মামলা হয়নি বলে জানান তিনি।  


আরও খবর



তুরস্কে এরদোয়ানের পদত্যাগের দাবি

প্রকাশিত:রবিবার ২৩ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ২৬ মার্চ ২০২৫ |

Image

ইস্তানবুলের মেয়র একরেম ইমামোলুর গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে উত্তাল তুরস্ক। দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, এবার এরদোয়ানের পদত্যাগের দাবি উঠেছে।

গত ১৯ মার্চ, দুর্নীতি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ইমামোলুসহ বেশ কয়েকজন বিরোধী দলীয় নেতাকে গ্রেপ্তার করে তুরস্কের পুলিশ। এরপরই রাজধানী ইস্তানবুলসহ বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

বিশ্লেষকদের মতে, এটি ২০১৩ সালের পর তুরস্কে সবচেয়ে বড় সরকারবিরোধী আন্দোলন। সেবার বিক্ষোভ চলাকালে অন্তত আটজন নিহত হয়েছিলেন।

বিক্ষোভ দমনে কঠোর অবস্থান

বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে ইস্তানবুলের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। আন্দোলন ছড়িয়ে পড়া শহরগুলোতে সব ধরনের জনসমাগমের ওপর পাঁচ দিনের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, আঙ্কারা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে একটি মেট্রো স্টেশনও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) জানায়, শুক্রবার ইস্তানবুলে বিক্ষোভ দমনে পুলিশ পেপার স্প্রে, কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়ে। রাজধানী আঙ্কারা ও ইজমিরেও বলপ্রয়োগ করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করা হয়।

বিক্ষোভকারীরা সরকারের কঠোর অবস্থানের তোয়াক্কা না করেই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। অনেকেই এরদোয়ানের শাসনকে ‘ফ্যাসিবাদী শাসন’ বলে অভিহিত করে তার পদত্যাগের দাবি তুলেছেন।

বিক্ষোভের কারণ কী?

সাম্প্রতিক সময়ে তুরস্কের অর্থনৈতিক সংকট আরও প্রকট হয়েছে। ফলে দেশের নাগরিকদের একটি বড় অংশ অভিবাসনের চিন্তা করছেন। বিশ্লেষকদের মতে, এই অর্থনৈতিক দুরবস্থাই বিক্ষোভের অন্যতম কারণ।

২০২৩ সালে পরিচালিত এক জরিপ অনুযায়ী, ১৮ থেকে ২৫ বছর বয়সী দুই-তৃতীয়াংশ তরুণ সুযোগ পেলে তুরস্ক ছাড়তে চান।

বিক্ষোভকারীরা বলছেন, দেশের সংসদীয় গণতন্ত্র ঠিকভাবে কার্যকর নেই। অন্যদিকে, ইমামোলুর বক্তব্যে তারা আশার আলো দেখছেন। তাই তার গ্রেফতারের পর রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও বেড়েছে।

বিরোধী নেতাদের ধরপাকড়

দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলি ইয়ারলিকায়া জানিয়েছেন, সারা দেশে অভিযান চালিয়ে এখন পর্যন্ত ৯৭ জনকে আটক করা হয়েছে।

সমালোচকদের দাবি, ২০২৮ সালের জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখেই বিরোধী দলীয় নেতাদের দমন করা হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আনাদোলু জানিয়েছে, ইস্তানবুলের মেয়রসহ ১০০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

ইমামোলু তুরস্কের জনপ্রিয় বিরোধী নেতা এবং এরদোয়ানের সম্ভাব্য প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী। অভিযোগ উঠেছে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তাকে অযোগ্য করতে তার বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ বাতিল করা হয়েছে।

তুরস্কের আইন অনুসারে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি থাকা আবশ্যক।

আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ

ইস্তানবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠনের এক মুখপাত্র বলেছেন, “ইমামোলুর গ্রেপ্তার ও তার সনদ বাতিল গণতন্ত্রের ওপর সরাসরি আঘাত।”

তবে প্রশাসন এসব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলছে, তুরস্কের বিচার ব্যবস্থা সম্পূর্ণ স্বাধীন।

দেশটির শীর্ষ গণমাধ্যম জুমহুরিয়েত-এর খবরে বলা হয়েছে, ইমামোলুকে চার ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তিনি তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

এরদোয়ানের হুঁশিয়ারি

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেছেন, “দেশে দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের বিরুদ্ধে কেউ বিক্ষোভ করলে তা সহ্য করা হবে না। আন্দোলন কঠোর হাতে দমন করা হবে।”

তিনি বিরোধীদের ‘সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রমে’ জড়িত থাকার অভিযোগও করেছেন।

নতুন কৌশলে বিরোধীরা

ইমামোলুকে রিপাবলিকান পিপলস পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করার কয়েক দিন আগেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বিরোধী দলের নেতা ওজগুর ওজেল দেশবাসীকে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেন, “সাংবিধানিকভাবে ইমামোলুকে হারাতে না পেরে আদালতকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।”

তবে ইমামোলুর গ্রেফতার সত্ত্বেও প্রাথমিক নির্বাচন পূর্বনির্ধারিত সময়েই অনুষ্ঠিত হবে।

বিক্ষোভ দমনে প্রশাসনের সম্ভাব্য পদক্ষেপ

বিশ্লেষকদের ধারণা, তুরস্ক সরকার ইমামোলুকে মেয়র পদ থেকে সরিয়ে তার স্থানে ট্রাস্টি নিয়োগ করতে পারে।

এর কারণ, তুরস্ক ও তার পশ্চিমা মিত্ররা কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টিকে (পিকেকে) সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে গণ্য করে। প্রশাসন যদি ইমামোলুকে এই সংগঠনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দাবি করে, তাহলে তাকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে।

এদিকে, বিরোধীরা জানিয়েছেন, ৬ এপ্রিল একটি বাহ্যিক কংগ্রেস ঘোষণা করা হবে। সেখানে নতুন রাজনৈতিক পরিকল্পনার ঘোষণা আসতে পারে।


আরও খবর

হিথ্রো বিমানবন্দর বন্ধ ঘোষণা

শুক্রবার ২১ মার্চ ২০২৫




চার দফা দাবিতে ঝালকাঠিতে ডিপ্লোমা চিকিৎসকদের সংবাদ সম্মেলন

প্রকাশিত:বুধবার ০৫ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৫ মার্চ 20২৫ |

Image

হাসিবুর রহমান ঝালকাঠি প্রতিনিধি :

শূন্য পদে নিয়োগ ও নতুন পদ সৃষ্টিসহ বিভিন্ন দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ঝালকাঠিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে জেলা বিডিএমএ, বেকার ডিপ্লোমা চিকিৎসক ও সম্মিলিত ম্যাটসের শিক্ষার্থীরা।

বুধবার সকালে ঝালকাঠি প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, বিডিএমএ এর ঝালকাঠি জেলা শাখার সভাপতি প্রবীর রঞ্জন হালদার। 

এসময় সংগঠনে জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মানিক হালদার এবং

শিবব সংকর সহ অন্যন্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, গত ১৪ বছর ধরে নিয়োগ বন্ধ রয়েছে তাই অনতিবিলম্বে শূন্য পদে নিয়োগ এবং কমিউনিটি ক্লিনিকসহ সরকারি বেসরকারি হাসপাতালে নতুন পদ সৃষ্টি করা। প্রতিষ্ঠান ও কোর্সের নাম পরিবর্তন করে অসংগতিপূর্ণ কোর্স কারিকুলাম সংশোধন করে ইন্টার্নশিপে লগবুক চালু করা। বিএমএন্ডডিস স্বীকৃত ক্লিনিক্যাল বিষয়ে উচ্চশিক্ষার অধিকার প্রদান করা। প্রস্তাবিত এলাইড হেলথ প্রফেশনাল বোর্ড খসড়া আইনের নাম পরিবর্তন করে "মেডিকেল এডুকেশন বোর্ড অব বাংলাদেশ' নামকরণ সহ প্রস্তাবিত ধারায় সংশোধনীসহ বাস্তবায়ন করার দাবি জাননো হয়।

কিছু কুচক্রী মহল বর্তমানের তাদের চলমান যৌক্তিক ৪ দফা আন্দোলন নিয়ে স্বৈরশাসকের দালাল গ্রেজুয়েট চিকিৎসকের উসকানিতে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সংগঠন তাদের নিয়ে বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও বিবৃতিতে বিভিন্ন মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার প্রচারণা করছে। এতে ডিএমএফ ডিগ্রিধারী উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারদের অর্জিত সুনাম নষ্ট হচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে এসব অপপ্রচার বন্ধের দাবি জানানো হয়। 


আরও খবর



ব্যাংক আমানতে ফিরছে সুদিন

প্রকাশিত:বুধবার ১২ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৫ মার্চ 20২৫ |

Image

পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে নজিরবিহীন লুটপাট হয়েছে দেশের ব্যাংকখাতে। এতে দীর্ঘদিন ধরেই আস্থা সংকটে ভুগছিল ব্যাংকগুলো। তবে সম্প্রতি আস্থা ফিরতে শুরু করেছে ব্যাংক খাতে। টানা চার মাস পর জানুয়ারিতে ব্যাংকখাতে আমানতে প্রবৃদ্ধি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়ে ৮ শতাংশ ছাড়িয়েছে। অর্থাৎ গত জানুয়ারি শেষে ব্যাংকখাতে মোট আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৭ লাখ ৮১ হাজার ২৮৭ কোটি টাকা। আগের বছর একই সময় এই পরিমাণ ছিল ১৬ লাখ ৪৫ হাজার ৪৭ কোটি টাকা। এ হিসাবে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ দশমিক ২৮ শতাংশ।বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।

তথ্য বলছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের সেপ্টেম্বর থেকে ব্যাংক খাতে আমানতে প্রবৃদ্ধি কমতে থাকে, যা ৭ দশমিক ২৬ শতাংশে নেমে যায়। পরবর্তীতে অক্টোবরে তা সামান্য বেড়ে হয় ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ। নভেম্বরে আরও কিছুটা বেড়ে হয় ৭ দশমিক ৪৬ শতাংশ এবং ২০২৪ সালে ডিসেম্বরে তা দাঁড়ায় ৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ।

এর আগে ব্যাংকখাতে আমানতে এত কম প্রবৃদ্ধি দেখা গিয়েছিল ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। তখন ৬ দশমিক ৮৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। সবশেষ চার মাসে ব্যাংকগুলোতে আমানতের প্রবৃদ্ধি ছিল ৮ শতাংশের নিচে। এর পেছনে উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও তারল্য হ্রাসের পাশাপাশি রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সাথে সাথে ব্যাংক খাতের ভঙ্গুর অবস্থার চিত্র সামনে আনা হলে লোকজন ব্যাংকে টাকা জমা রাখা কমিয়ে দেওয়া দিয়েছি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, ব্যাংকগুলোতে আমানতের প্রবৃদ্ধি স্বাভাবিকভাবেই ১০ শতাংশের ওপর থাকা উচিত। জুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। তার আগে থেকেই ডলার সংকট, রিজার্ভের পতন, রেমিটেন্স কমে যাওয়াসহ অর্থনীতিতে বিভিন্ন ধরনের সংকট ছিল। আন্দোলনের ধাক্কা সামলে উঠতে অন্তর্বর্তী সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ নিলেও অর্থনীতিতে গতি কম। সরকার পতনের মাস অগাস্টে দেশে ব্যাপক সহিংসতা, বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতেও ব্যাংক আমানতে ৯.৫০ শতাংশ প্রবৃদ্ধির তথ্য দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। মাঝে কিছুটা কমে তা আবারও বাড়ছে যা ইতিবাচক।


আরও খবর



আমতলীতে মাজার ভেঙে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধরা

প্রকাশিত:সোমবার ১৭ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৫ মার্চ 20২৫ |

Image

বরগুনার ইসমাইল শাহ মাজারে বাৎসরিক ওরশ চলাকালে মাজার ভেঙে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে তৌহিদি জনতা। প্রায় দুই ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে এনেছে ফায়ার সার্ভিস। আগুনে মাজারের ভিতরের সামিয়ানা ও দুইটি বৈঠকখানা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। বিক্ষুব্ধ তৌহিদি জনতার হামলায় অন্তত ১৮/২০জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে কয়েক জনকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

ঘটনা ঘটেছে আমতলী পৌর শহরের বটতলা এলাকায় রবিবার রাত সোয়া ১২ টার দিকে। ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা দুই ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে রাত পৌনে তিনটায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

জানা গেছে, আমতলী পৌর শহরের বটতলা এলাকায় ১৯৯৬ সালে ইসমাইল শাহ মাজার স্থাপন করা হয়। ওই সময় থেকে মাজার কর্তৃপক্ষ দুইদিন ব্যাপী ওরশ উৎযাপন করে আসছেন। ২৮তম ওরশ রবিবার সন্ধ্যায় শুরু হয়। ওইদিন তৌহিদি জনতা মাওলানা ওমর ফারুক জেহাদী নেতৃত্বে তাদের শতশত সর্মাথক তৌহিদি জনতা এসে মাজার পুজা ও গান বাজনা বন্ধ করতে বলেন।

কিন্তু মাজারের খাদেম অ্যাড. মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল ওরশ বন্ধে অপরগতা প্রকাশ করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্য দ্বন্দ্ব হয়। এক পর্যায় তৌহিদি জনতা লাঠি সোটা নিয়ে মাজার ভাংচুর করে এবং আগুন দেয়। এতে ওই ওরশে আসা শতশত ভক্ত ও স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। মানুষ এদিক ওদিক ছুটাছুটি করতে থাকেন।

ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা দুই ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ততক্ষণে মাজারের দুইটি বৈঠকখানা ও মাজারের মধ্যে সামিয়ানা পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এতে অন্তত ১৮/২০ জন আহত হয়েছে।

আহতদের মধ্যে সোলায়মান (৩৮), রেজাউল (১৮), বাদল মৃধা (৪০), দুলাল মৃধা (৪২), আবু বকর (২৯), আবুল হোসেন (২৮), আব্দুল্লাহ আল নোমান (২৮), মো. মামুন (৪৩), আবুল কালাম (৪২), জোবায়ের (১৯) ও ফজলুল করিম (২৭) কে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অপর আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বলেন, শতশত তৌহিদি জনতা­ লাঠি সোঠা নিয়ে এসে মাজার ভাংচুর করে। পরে মাজারে আগুন দেয়। এ সময় ওরশে আসা শতশত ভক্তবৃন্দ ও স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আগুন ধাউ ধাউ করে জ্বলতে থাকে। মানুষ দিক বেদিক ছুটাছুটি করতে থাকেন।

ইসমাইল শাহ মাজারের খাদেম অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল বলেন, মাওলানা ওমর ফারুক জেহাদীর নেতৃত্বে তাদের শতাধিক সমর্থক লাঠি সোঠা নিয়ে এসে অতর্কিতভাবে মাজারে হামলা চালায় এবং আগুন দেয়। এতে মাজারের ভিতরের গিলাব এবং দুটি বৈঠকখানা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

তিনি আরো বলেন, তারা ভক্তবৃন্দকে মারধর করেছে। আমি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি দাবি করছি।

মুফতি ওমর ফারুক জেহাদী বলেন, এ মাজারটি ভন্ডের আস্তানা। এখানে ওরশের নামে গানবাজনা ও গাজা মাদক সেবন ও নারীর আসর বসে। আর মাজারটির ভক্তবৃন্দ মহিলারা পীরের কবরে ও প্রধান খাদেম অ্যাড. মোস্তাফিজুর রহমান বাবুলের পায়ে সেজদা দেয়। ওরসে নারী পুরুষদের গান বাজনাও চলে প্রকাশ্যে। যা সম্পুর্ণ ইসলাম বিরোধী। আমার মাজারের খাদেম মোস্তাফিজুর রহমান বাবুলকে এই রমজান মাসে অনৈতিক কাজ থেকে বিরত থাকতে বলেছিলাম কিন্তু তিনি তা না শুনে তার নির্দেশে তার ভক্তবৃন্দেরা আমার লোকজনের ওপর হামলা করেছে। এই ভন্ড মাজারের খাদেম বাবুল ও তার দোসরদের শাস্তি দাবী করছি।

আমতলী ফায়ার ষ্টেশনের ওয়ার হাউস ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ হানিফ বলেন, দুই ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে রাত ২ টা ৩৫ সময় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। আগুনে মাজারের ভেতরের সামিয়ানা ও দুই ঘর পুড়ে গেছে।

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. রাসেদ মাহমুদ রোকনুজ্জামান বলেন, আহতদের যথাযথ চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আমতলী থানার ওসি মো. আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে অঅইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

খবর পেয়ে আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) তারেক হাসান ও ওসি মো. আরিফুল ইসলাম আরিফ রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন। তারা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তারা বলেন আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরও খবর