Logo
শিরোনাম

এমপি আনার হত্যার বিচারের দায়িত্ব ভারতের : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশিত:সোমবার ১০ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১২ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image



নিজস্ব প্রতিবেদক:



স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল

ভারতের কলকাতায় ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যায় দুই দেশ সম্পৃক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।



তিনি বলেন, যেহেতু হত্যাটি ভারতে সংঘটিত হয়েছে, তাই এর বিচার করার দায়িত্বও ভারতের। তবে এ ব্যাপারে বাংলাদেশের সার্বিক সহযোগিতা থাকবে।


সোমবার (১০ জুন) দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।


এমপি আনার হত্যার মূল অভিযুক্ত শাহীন যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে গেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে দেশটি বন্দিবিনিময় চুক্তি আছে। সুতরাং শাহীনকে তারা নিশ্চয় ফিরিয়ে আনবে।



এদিকে ভারতে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন কলকাতার নিউ টাউনের সঞ্জীবা আবাসনের সেফটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার হওয়া পচে যাওয়া মাংসের টুকরোগুলো মানুষের।


অপরদিকে আনার হত্যায় গ্রেপ্তার সিয়াম হোসেনকে নিয়ে তল্লাশি অভিযানে কৃষ্ণমাটির বাগজোলা খাল থেকে বেশ কিছু হাড়গোড় উদ্ধার করেছে কলকাতার গোয়েন্দারা। ধারনা করা যাচ্ছে, ওই হাড়গুলো এমপি আনারের।


তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, উদ্ধার মাংসের টুকরো ও হাড়গুলো এমপি আনারের মরদেহের কি না তা ডিএনএ টেস্ট করে নিশ্চিত হওয়া যাবে।


আরও খবর



নারায়ণগঞ্জে কারখানায় বিস্ফোরণে ১১ শ্রমিক দগ্ধ

প্রকাশিত:রবিবার ২৪ নভেম্বর 20২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

নারায়ণগঞ্জের মেঘনাঘাট এলাকায় একটি কারখানায় বিস্ফোরণে ১১ শ্রমিক দগ্ধ হয়েছেন। দগ্ধদের জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। রবিবার সকালে সাড়ে ১০টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

দগ্ধদের মধ্যে ১০ জনের পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন বিপ্লব (২৮), আরিফ (১৭), হাসান (২২), শাওন (২৪), হোসাইন (১৮), চঞ্চল (২৬), তামজিদ শেখ (৪০), তন্ময় (২৫), নুর ইসলাম (২৩) এবং আল-আমিন (২৪)।

শ্রমিকরা জানান, সকালে কারখানার ইউনিট ওয়ানে অ্যারোসল ও এয়ার ফ্রেশনার তৈরির কাজ করছিলেন শ্রমিকরা। হঠাৎ সেখানে বিস্ফোরণ হয়। এতে আশপাশে থাকা ১১ শ্রমিক দগ্ধ হন। সঙ্গে সঙ্গে কারখানার অগ্নিনির্বাপণ কর্মীরা আগুন নিভিয়ে ফেলেন।

কারখানার সিকিউরিটি ইনচার্জ মোর্শেদ আলম বলেন, এয়ার ফ্রেশনারের বোতলে গ্যাস ভরার সময় অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। এতে ১১ শ্রমিক দগ্ধ হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে।

বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক ডা. মো. শাওন বিন রহমান জানান, দগ্ধদের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। কার কত শতাংশ পুড়ে গেছে, তা কিছুক্ষণ পর জানানো যাবে।


আরও খবর



শুধু নির্বাচন দেওয়া অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ নয়

প্রকাশিত:সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বললেন, শুধু নির্বাচন আয়োজন করা অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ নয়। তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার কেয়ারটেকার সরকার নয়। তাই শুধু নির্বাচন দেওয়াই এই সরকারের কাজ নয়। ইতিমধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের জন্য বিভিন্ন কমিশন গঠন করা হয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার শেষে নির্বাচন দেওয়া হবে।

সোমবার ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মন্ত্রণালয়ের অফিসকক্ষে কমনওয়েলথের সহকারী মহাসচিব অধ্যাপক লুইস ফ্রান্সেচির সঙ্গে সাক্ষাতে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

দেশের স্বার্থ রক্ষা হয়, এমন যেকোনো কাজ করতে অন্তর্বর্তী সরকার প্রস্তুত জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে যে গণহত্যা হয়েছে, তার বিচারপ্রক্রিয়া চলমান। এ বিচার নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করতে কমনওয়েলথের সহযোগিতা প্রয়োজন। পাশাপাশি নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার সারা পৃথিবী থেকে সমর্থন পেয়েছে, যা এখনো অব্যাহত আছে।

কমনওয়েলথের সহকারী মহাসচিব লুইস ফ্রান্সেচি নির্বাচনী প্রক্রিয়া সংস্কারসহ সরকারের চলমান সংস্কার উদ্যোগে কমনওয়েলথের সমর্থনের আশ্বাস দেন।

তিনি বৈষম্যমুক্ত, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করার জন্য কমনওয়েলথের অঙ্গীকারের ওপর জোর দেন। বাংলাদেশের পাশে তারা আছেন জানিয়ে বলেন, শিক্ষা, তথ্যপ্রযুক্তি, গণমাধ্যম, সাইবার নিরাপত্তা ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী কমনওয়েলথ।

সাক্ষাৎকালে উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. মুশফিকুর রহমান, তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব মুহম্মদ মেহেদী হাসান, কমন‌ওয়েলথের অ্যাডভাইজার অ্যান্ড হেড অব এশিয়া দিনুসা নিহারাসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।


আরও খবর



আ’লীগ আমলে বছরে ১৪ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে

প্রকাশিত:শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১২ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির খসড়া প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের গত ১৫ বছরের শাসনামলে প্রতি বছর গড়ে প্রায় ১৪ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে। তবে প্রতিবেদনের বিস্তারিত জানা সম্ভব হয়নি।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ২৮ আগস্ট দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক চিত্র জানতে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি গঠিত হয়। ৯০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয় এই কমিটিকে।

ইতোমধ্যে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, আগামী রোববার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন দেবে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি। আগামী সোমবার প্রতিবেদনটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। একই দিন সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাবে কমিটি। অর্থনৈতিক খবরের সাবস্ক্রিপশন

জানা যায়, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি, সরকারি নথি ও বৈশ্বিক প্রতিবেদন ব্যবহার করে অর্থ পাচারের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে শ্বেতপত্রে। তবে সময় স্বল্পতার কারণে অর্থ পাচারের প্রকৃত পরিমাণ নির্ধারণ করতে পারেনি কমিটি। কীভাবে অর্থ পাচার হয় এবং কীভাবে তা বন্ধ করা যায় সে বিষয়ে পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়েছে প্রতিবেদনে।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচার নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য জানা যায় না। তবে গবেষণা ও ধারণাভিত্তিক কিছু তথ্য দিয়ে আসছে বিভিন্ন সংস্থা। সম্প্রতি রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বিভিন্ন ঘটনার ভিত্তিতে ধারণা করা যায়, বাংলাদেশ থেকে বছরে গড়ে ১২ থেকে ১৫ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা সংস্থা গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির তথ্য অনুযায়ী, কর ফাঁকি দিতে ব্যবসায়ীদের আমদানি-রপ্তানি পণ্যের ভুল চালানের কারণে ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত গড়ে প্রায় ৮ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার হারিয়েছে বাংলাদেশ।

শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, শ্বেতপত্রে দেশের অর্থনীতির প্রকৃত চিত্রটিই তুলে ধরা হয়েছে। ‘বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থা নিয়ে শ্বেতপত্র’ শীর্ষক ২৫০ পৃষ্ঠার এই প্রতিবেদনে থাকছে অর্থনীতির নানা দিক নিয়ে ২২টি অধ্যায়।

এতে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি, ব্যাংক খাত, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের পরিস্থিতি, বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্য, সরকারের ঋণ, পরিসংখ্যানের মান, বাণিজ্য, রাজস্ব আয়, ব্যবসার পরিবেশ, দারিদ্র্য ও বৈষম্যসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে। পদ্মা সেতু, রেল সংযোগ, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্র, কর্ণফুলী টানেলসহ মেগা প্রকল্পগুলোর ওপরও থাকছে বিশ্লেষণধর্মী পর্যবেক্ষণ।


আরও খবর

দাম বাড়ল সয়াবিন তেলের

সোমবার ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪




আইপিএলের নিলামে ১২ বাংলাদেশির নাম

প্রকাশিত:রবিবার ১৭ নভেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

২০২৫ সালের আইপিএলের মেগা নিলামের জন্য চূড়ান্ত তালিকায় ১২ জন বাংলাদেশি ক্রিকেটার জায়গা পেয়েছেন। শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) নিলামে উঠতে যাওয়া ক্রিকেটারদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করে আইপিএল কর্তৃপক্ষ।

এর আগে আইপিএল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল বাংলাদেশের ১৩ জনসহ সর্বমোট বিশ্বের ১ হাজার ৫৮৪ জন নিবন্ধন করে। যাচাই-বাছাই শেষে ৫৭৪ জনের নাম প্রকাশ করে আইপিএল কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে ৩৬৬ জন ভারতীয় এবং ২০৮ জন বিদেশি।

আইসিসির সহযোগী সদস্য দেশগুলো থেকেও ৩ জন ক্রিকেটার আছেন। নিলামে আছেন অভিষেক না হওয়া ৩১৮ জন ভারতীয়, অভিষেক না হওয়া ১২ জন বিদেশি ক্রিকেটার। ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো ২০৪ জন ক্রিকেটার কিনতে পারবে, যেখানে বিদেশিদের জন্য জায়গা আছে ৭০টি।

বাংলাদেশের হয়ে আইপিএলে দীর্ঘদিন প্রতিনিধিত্ব করা সাকিব ও মুস্তাফিজ রয়েছেন ১২ জনের চূড়ান্ত তালিকায়। ৯ মৌসুম সাকিব আইপিএল মাতিয়েছেন। এর মধ্যে কলকাতার জার্সি গায়ে তুলেছেন (২০১১ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত) সাত মৌসুম। এ সময়ের মধ্যে ২০১২ ও ২০১৪ সালে কলকাতাকে চ্যাম্পিয়ন করার পথে ২২ গজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন সাকিব। বাকি দুই মৌসুম খেলেন সানরাইজার্স হায়দরাবাদে।

অন্যদিকে বাঁ-হাতি পেসার মুস্তাফিজ ২০১৬ সাল থেকেই আইপিএলের নিয়মিত মুখ। এই দু’জন ছাড়া আইপিএলে আগে খেলা ক্রিকেটারদের মধ্যে আছেন লিটন দাস। তিনি ২০২৩ সালে কলকাতার হয়ে এক ম্যাচে মাঠে নেমেছিলেন।

এ ছাড়া চূড়ান্ত তালিকায় থাকা অন্য ক্রিকেটাররা হলেন রিশাদ হোসেন, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, তাওহিদ হৃদয়, মেহেদি হাসান মিরাজ, তানজিম হাসান, মেহেদি হাসান, নাহিদ রানা ও হাসান মাহমুদ। তাদের কারোরই আইপিএলে খেলার অভিজ্ঞতা নেই। তাসকিনের প্রতি আইপিএলের কয়েকটি দলের আগ্রহ থাকলেও কোনো না কোনো কারণে শেষ পর্যন্ত খেলা হয়নি।

প্রসঙ্গত, সৌদি আরবের জেদ্দায় আগামী ২৪ ও ২৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে আইপিএলের ১৮তম আসরের মেগা নিলাম।


আরও খবর

বাংলাদেশে আসবেন ফিফা প্রেসিডেন্ট

মঙ্গলবার ১২ নভেম্বর ২০২৪




নির্মাণ মৌসুমেও কমছে রড-সিমেন্টের দাম

প্রকাশিত:শনিবার ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১২ ডিসেম্বর ২০২৪ |

Image

চলতি বছরের শুরুর দিকে অবকাঠামো নির্মাণের প্রধান পণ্য রড-সিমেন্টের দাম হঠাৎ অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। গত আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ডলার ব্যাংকে তারল্য সংকটের পাশাপাশি ঋণপত্র (এলসি) খুলতে অনীহাসহ বিভিন্ন কারণে এলসি মার্জিন সুবিধা কমে যায়। এতে ব্যাহত হয় আমদানি বাণিজ্য। এদিকে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর কিছুটা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে সরবরাহ উৎপাদন। তবে পর্যাপ্ত আমদানি সত্ত্বেও চাহিদা না থাকায় দাম নিম্নমুখী রয়েছে। চলতি নির্মাণ মৌসুমে সংকট কাটিয়ে বাজারে স্থিতিশীলতা ফেরার আশা থাকলেও সরকারি নির্মাণ প্রকল্পে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়ায় সংকটে পড়েছে ইস্পাত সিমেন্ট খাত।

গত দুই সপ্তাহে দেশের বাজারে রডের দাম টনপ্রতি - হাজার টাকা কমেছে। সর্বশেষ গত দুই দিনে কমেছে প্রায় হাজার টাকা। রডের পাশাপাশি সিমেন্টের দামও বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) ১০-১৫ টাকা কমেছে। চাহিদা না বাড়লে রড-সিমেন্টের দাম আরো কমবে বলে আশঙ্কা করছেন মিল মালিকরা।

খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের অবকাঠামো খাত সবচেয়ে নাজুক সময় পার করছে। চলমান প্রকল্পের কাজে ধীরগতির পাশাপাশি বিগত ছয় মাসে নতুন কোনো মেগা প্রকল্পের অনুমোদন হয়নি। আগের প্রকল্পগুলোয় বিক্রি করা পণ্যের দামও মেটাতে পারছে না অনেক প্রতিষ্ঠান। আগস্ট-পরবর্তী প্রেক্ষাপটে অনেক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের খোঁজ মিলছে না। আবার সরকারি প্রকল্পের বিল আটকে থাকায় পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের বকেয়া পরিশোধ করতে পারছেন না অনেকে।

এদিকে গত এক বছর ডলারের মূল্য ক্রমাগত বৃদ্ধির কারণে বাড়তি দামে কাঁচামাল সংগ্রহ করতে হচ্ছে। অথচ দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে কম দামে পণ্য বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন উৎপাদকরা। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম খাত ইস্পাত শিল্পকে নিয়ে বিশেষ উদ্যোগ নেয়া না হলে এর সঙ্গে যুক্ত বিনিয়োগকারীরা বড় ধরনের সংকটে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানতে চাইলে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার মেসার্স ডালিয়া ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মো. সাহাদাত হোসাইন বলেন, ‘শীত মৌসুমে মূল্যবৃদ্ধির কথা থাকলেও গত ১০ দিনের ব্যবধানে প্রায় সব ধরনের রডের দাম টনপ্রতি - হাজার টাকা পর্যন্ত কমেছে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার টনপ্রতি দাম কমেছে হাজার টাকা। মিল মালিকরা সরবরাহ বাড়ানোর কারণে মিলগেট থেকে সংগ্রহ মূল্য টনপ্রতি হাজার টাকা কমিয়েছেন।দাম আরো কমে যাওয়ার আশঙ্কায় অনেক ব্যবসায়ী সংগ্রহ মজুদ কমিয়ে দিচ্ছেন। এতে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বলে মনে করছেন তিনি।

জানা গেছে, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দেশে নির্মাণ খাতে ধস নেমেছে। আওয়ামী লীগসংশ্লিষ্ট ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম একেবারে স্তিমিত হয়ে গেছে। মিল-কারখানাগুলো কোনো রকমে উৎপাদন চালু রাখলেও নির্মাণাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজ কার্যত বন্ধ রয়েছে। ব্যক্তি পর্যায়ে ভবন নির্মাণে জড়িত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজেও মন্দা ভাব দেখা দিয়েছে। তাছাড়া বিগত এক বছর দেশে সরকারি বড় অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পের অনুমোদন কম থাকায় রড-সিমেন্টের বাজারে মন্দা ভাব দেখা দিয়েছে। আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বর্তমান সরকার বেছে বেছে সরকারি প্রকল্পের অনুমোদন দিচ্ছে।

বিএসআরএম স্টিল লিমিটেডের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন সেনগুপ্ত প্রসঙ্গে বলেন, ‘দেশের ইস্পাত খাত সংকটময় সময় পার করছে। বৃহৎ উৎপাদন সক্ষমতার প্লান্ট স্থাপনে বিশাল বিনিয়োগ করলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে উৎপাদন কমাতে বাধ্য হচ্ছে কারখানাগুলো। এতে পণ্যের উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবার চাহিদা না থাকায় কম দামে পণ্য বিক্রি করতে হচ্ছে। অবস্থা থেকে দ্রুত উত্তরণ ঘটাতে না পারলে ইস্পাত খাতের উদ্যোক্তারা বড় ধরনের লোকসানের মধ্যে পড়বেন বলে আশঙ্কা করছেন তিনি।

সিমেন্ট খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, গ্রেড ওয়ানভুক্ত কোম্পানিগুলোর সরবরাহ করা সিমেন্টের বস্তাপ্রতি দাম ছিল ৫০০ টাকা। তবে গত কয়েক দিন সিমেন্ট ক্রয়ে ডিলারদের বিশেষ ছাড় দিচ্ছে উৎপাদকরা। যার কারণে বস্তাপ্রতি দাম ১০-১৫ টাকা কমে লেনদেন করতে পারছেন পাইকারি খুচরা বিক্রেতারা। তবে দেশে উৎপাদিত অন্যান্য কোম্পানির সিমেন্ট ৪৬০-৪৭০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। চাহিদা কম থাকায় প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে দাম আরো নিম্নমুখী হতে পারে বলেও জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

চট্টগ্রামভিত্তিক ডায়মন্ড সিমেন্টের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ হাকিম আলী বলেন, ‘সিমেন্ট খাতের উৎপাদন সরকারি নির্মাণ প্রকল্পের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। দেশের বিভিন্ন মেগা উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ। যেসব প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে, সেগুলো গত আগস্টের পর থেকে বন্ধ রয়েছে। যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে সিমেন্ট খাতে।বিশ্ববাজার থেকে আমদানি, ডলার সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যা কেটে গেলেও ব্যবহারজনিত চাহিদা বৃদ্ধি না পেলে খাত ঘুরে দাঁড়াতে সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

উৎপাদকরা বলছেন, এতদিন ঋণপত্র (এলসি) খুলতে ব্যাংকে ব্যাংকে ধরনা দিতে হতো। ডলার সংকটে অনেকে বাধ্য হয়ে ছোট আকারের এলসি খুলতেন। বর্তমানে চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত ডলার সরবরাহের কারণে পর্যাপ্ত আমদানি হচ্ছে। যার কারণে দেশে রড-সিমেন্ট উৎপাদনে কাঁচামালের সংকট নেই। বরং বাড়তি আমদানির কারণে স্ক্র্যাপের বাজারও কমে গেছে। উৎপাদন ধারাবাহিকভাবে বাড়লেও চাহিদা কম থাকায় দামে প্রভাব পড়েছে।

বাংলাদেশ স্টিল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্যানুসারে, দেশের ইস্পাত কোম্পানিগুলোর রড উৎপাদনে সক্ষমতা কোটি ২০ লাখ টন। বছরে সর্বোচ্চ ৬৫ লাখ টনের চাহিদা রয়েছে। যার মধ্যে ৬০ শতাংশই ব্যবহার হয় সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পে। বাকি ৪০ শতাংশ বেসরকারি উদ্যোক্তা ব্যক্তিগত অবকাঠামো নির্মাণে ব্যবহার হয়। বর্তমানে চাহিদা কমে ৫০ শতাংশের নিচে নেমে গেছে। সবচেয়ে বেশি চাহিদা কমেছে সরকারি প্রকল্পে। নির্মাণকাজে ধীরগতির কারণে রডের চাহিদা ২০ শতাংশেরও নিচে নেমে আসায় দাম ধারাবাহিকভাবে কমছে।

বাংলাদেশ স্টিল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব রানী রি-রোলিং স্টিল মিলসের নির্বাহী পরিচালক সুমন চৌধুরী বলেন, ‘দেশে ইস্পাত পণ্যের প্রধান ক্রেতা সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো। সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতাসহ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে সরকারি প্রকল্পের অনুমোদন কার্যত বন্ধ রয়েছে। চলমান প্রকল্পগুলোর কাজের গতিও শূন্যের কোঠায়। যার ফলে রডের বাজারে ক্রেতা চাহিদা ৫০ শতাংশেরও বেশি কমেছে। অবকাঠামো নির্মাণ খাতের উন্নয়নে অন্তর্বর্তী সরকার চেষ্টা করছে। উদ্যোক্তারা বিভিন্ন প্রকল্পে বিনিয়োগের পরও সংকটময় পরিস্থিতিতে বিল পাচ্ছেন না। ফলে নানামুখী সংকটের কবলে পড়েছে দেশের ইস্পাত সিমেন্ট খাত।

 


আরও খবর