মইনুল ইসলাম মিতুল ঃ
এন্টিবায়োটিক রেজিস্টেন্সের জন্য খুচরা বিক্রি একটা বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা এবিএম খুরশিদ আলম বলেছেন, জ্বর হলেই সাধারণ ওষুধের সাথে দেখা যায় এন্টিবায়োটিক ট্যাবলেট ২ -৩ টা নিয়ে যাচ্ছে। এটা সাধারণ মানুষের মাঝে এন্টিবায়োটিক রেজিস্টেন্সের জন্য বড় কারন। এজন্য নিয়ম করা প্রয়োজন কেউ এন্টিবায়োটিক কিনলে ফুল ডোজ কিনতে হবে, নাহয় কিনবেনা।
রোববার (২৭ নভেম্বর) রাজধানীর গুলশানের লেকশোর হোটেলে আয়োজিত অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স সমস্যা প্রতিরোধ গড় সবাই মিলে শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় তিনি মাইক্রোবিয়াল সমস্যাসহ দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার নানা সমস্যার কথা তুলে ধরেন।
অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশিদ আলম জানান, রোগীদের পকেটের খরচ বেড়ে যাচ্ছে। এর সাথে যেই স্ট্যান্ডার্ড মেনে হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে তা ঠিক হচ্ছে কিনা সেটাও একটা বড় ইস্যু। আমরা যদি আন্তর্জাতিক মানের সাথে তুলনা করি প্রধানত আমাদের অপারেশন থিয়েটার কিংবা বেড থেকে সংক্রমন হওয়ার ই কথা না, এটি আন্তর্জাতিক ভাবে গ্রহনযোগ্য নয়। কিন্তু সেটা আমাদের এখানে হচ্ছে। আমাদের লোকজন বেশি আমাদের সুযোগ-সুবিধা কম। প্রতিদিন আমাদের অপারেশন থিয়েটার গুলো থেকে জীবানুর সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। আমরা থিয়েটারের নিয়ম-কানুন আমরা মানছিনা। আমাদের ওয়ার্ড বয়, সিস্টার, লোকজন, রোগী এমনকি চিকিৎসকরাও মানছেন না। লোকজন সরাসরি ডুকে যাচ্ছে গাউন পরছেনা, বাহিরের কাপড় নিয়ে ডুকে যায়। এই বিষয়গুলো সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিৎ।
তিনি বলেন, এছাড়া রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহারিত যন্ত্রপাতি সঠিকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছেনা। অপারেশনের যন্ত্রপাতি সঠিকভাবে ব্জীবানু মুক্ত না করে বার বার ব্যবহার করা হচ্ছে এতে সংক্রমন হয়ে থাকে। রোগীদের গ্যাস নয়ার পাইপ থেকে শুরু করে বিভিন্ন সেবা একই জিনিস থেকে ব্যবহার করছে অনেকে। এতে এক জনের মুখের জীবানু ছড়াচ্ছে আরেকজনের কাছে। অনেক জীবানু আছে যেটা গরম পান দিয়ে বয়েল করার পরও মারা যায়না। এ জীবানু ও যাতে না থাকে সেটার জন্য ও ব্যবস্থা নিতে হবে।
ভর্তি রোগীদের মাঝে সংক্রমণ রোধে প্রতিকার তুলে ধরে তিনি বলেন, যখন কোনো একটি মেডিকেলে কোনো সংক্রমণ হচ্ছে তখন সেখান থেকে স্যাম্পল নিলাম, যেমন, হাসপাতালের বেড থেকে, অপারেশন থিয়েটার থেকে, সেখান কার টয়লেট থেকে এবং প্রয়োজনীয় জায়গা থেকে স্যাম্পল নিয়ে আমাদের বের করা উচিৎ কোন ধরনের বিষয়গুলো সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। তখন আমরা বুঝতে পারবো এই হাসপাতালে রোগী আসলে আমরা প্রথমে কোন এন্টিবায়োটিকটা দিবো। এটি সব হাসপাতালের জন্য এক ধরনের হবেনা। এটি হবে এক হাসপাতালের জন্য এক ধরনের পলিসি।
আমাদের হাসপাতালের বর্জ্য ব্যবস্থাপনাও একটা বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা ময়লা পেলার জন্য আলাদা আলাদা বিন করে দিয়েছি, যে এখানে নরমাল বর্জ্য এখানে সংক্রামক ধরনের ময়লা ফেলা হবে। কিন্তু দেখা যায় সব হাসপাতালের এই বিন গুলোর ময়লাকে নিয়ে সব একই জায়গায় পেলে দেয়া হয়। এতে সেখান থেকে পরিবেশ, মাটি, পানি এবং শস্য খেতেও জায়গায় জীবানু সংক্রমিত হচ্ছে। এছাড়া হাসপাতালে ভর্তি রোগীরা একই বিচানায় ৩ জন ও থাকছে। এই রোগীরা যে টয়লেট ব্যবহার করছে কিংবা যেখানে থাকছে সেখান থেকে জীবানুর সংক্রমিত হচ্ছে কিনা সেটাও একটা বড় বিষয়। এই বিষয়গুলো আমাদের চিন্তা করতে হবে।
এন্টিবায়োটিক ব্যবহারে আইন প্রয়োজন, সাথে আইন প্রয়োগকারী ও প্রয়োজন। এছাড়া দেখা যায় ফার্মাসিস্ট কোম্পানিরা ইনসেনটিভ তো ডাক্তারকে দিচ্ছে সাথে কোয়াকদের ও দেয়া হচ্ছে। আমরা ডাক্তারকে বন্ধ করলেও কোয়াককে তো আইনে আনা যাবেনা। ওজন্য শুধু আইন দিয়েও ব্যবস্থা হবেনা।