Logo
শিরোনাম

ঘূর্ণিঝড় রেমালে ২০ জেলায় ক্ষতি ৭ হাজার কোটি টাকা

প্রকাশিত:রবিবার ০২ জুন 2০২4 | হালনাগাদ:রবিবার ২০ এপ্রিল ২০25 |

Image

বিডি টু ডে  রিপোর্ট:

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে দেশের ২০ জেলায় ৬ হাজার ৮৮০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।


রোববার দুপুরে সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে ঘূর্ণিঝড় রেমালের সার্বিক বিষয় নিয়ে আন্ত:মন্ত্রণালয় সভা শেষে ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান।


প্রতিমন্ত্রী বলেন, গত ২৬ মে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড় রেমাল আঘাত হানে। এর প্রভাবে উপকূলীয় বেশকিছু এলাকায় জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি হয়। যার ফলে এসব এলাকা পানিতে নিমজ্জিত হয়।



 এ ছাড়া ১৬ জনের প্রাণহানি ঘটে। বেশকিছু রাস্তাঘাট, বেড়িবাঁধ, ঘরবাড়ি ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মন্ত্রণালয়গুলো থেকে আগামী ৯ জুনের মধ্যে সব হিসাব পেয়ে জানানো হবে।


তিনি বলেন, আমরা গত কয়েকদিন থেকেই দুর্যোগ প্রস্তুতির জন্য নানা কার্যক্রম গ্রহণ করেছি। সরকারের সব বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় রেখে দুর্যোগপূর্ণ কার্যক্রম পরিচালনা করেছি। 


এখন দুর্যোগ পরবর্তী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছি। ঘূর্ণিঝড় রেমাল আঘাত হানার পরদিন আমি ব্যক্তিগতভাবে উপকূলীয় জেলার সংসদ সদস্যদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে স্থানীয়দের খোঁজখবর নিয়েছি।

ঘূর্ণিঝড়ে পায়রা বন্দরের পাশে পায়রা নদীর চলমান ড্রেজিং কাজ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আশপাশ থেকে পলি এসে নদীর ড্রেজিং কাজ ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। একইভাবে অনেক দিনের পুরোনো বেড়িবাঁধগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন আধুনিক বেড়িবাঁধ নির্মাণে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সুপারিশ করা হবে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ পর্যন্ত ১৯ জেলায় ক্ষতিগ্রস্তদের অনুকূলে ত্রাণকার্যে নগদ পাঁচ কোটি ৭৫ লাখ টাকা, পাঁচ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন চাল, ৯ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার, ২০০ বান্ডিল ঢেউটিন, গো-খাদ্যের জন্য দুই কোটি ৪৫ লাখ টাকা এবং শিশু খাদ্য কেনার জন্য দুই কোটি ৪৫ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের বিভাগ, দপ্তর-সংস্থা, স্থানীয় প্রশাসন, বিভিন্ন স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ আওয়ামী লীগের এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন দুর্গতদের পাশে দাঁড়িয়েছে।

 ঘূর্ণিঝড়ের পরপরই আমি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা খুলনার কয়রা, ভোলার চরফ্যাশন এবং পটুয়াখালীর কলাপাড়া ও রাঙ্গাবালী পরিদর্শন করেছি এবং ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ত্রাণ ও জরুরি সেবা পৌঁছানো নিশ্চিত করেছি।


প্রতিমন্ত্রী বলেন, গত ৩০ জুন প্রধানমন্ত্রী ঘূর্ণিঝড় রেমাল এলাকা পরিদর্শনের জন্য পটুয়াখালীর কলাপাড়া পরিদর্শন করেন এবং ঘূর্ণিঝড়ে আক্রান্তদের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেন।


তিনি বলেন, গত কয়েকদিন ধরে সিলেট, সুনামগঞ্জ ও দিনাজপুর জেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। বন্যার্তদের সাহায্যে সিলেট জেলায় ২০ লাখ টাকা নগদ অর্থ, ৫০০ মে. টন চাল, ১০ লাখ টাকার গো-খাদ্য এবং ১০ লাখ টাকার শিশু খাদ্য বিতরণ করা হয়েছে।



 অন্যদিকে সুনামগঞ্জ জেলায় ১৫ লাখ টাকা নগদ অর্থ, ৫ লাখ টাকার গো-খাদ্য এবং ৫ লাখ টাকার শিশু খাদ্য বিতরণ করা হয়েছে। একইভাবে দিনাজপুর জেলায় ১৫ লাখ টাকার নগদ অর্থ এবং ৩ লাখ টাকার শুকনো ও অন্যান্য খাবার বরাদ্দ করা হয়েছে।


আরও খবর



ঈদের দিন থাকবে তাপপ্রবাহ

প্রকাশিত:শনিবার ২৯ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:সোমবার ১৪ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

ঈদের দিন সরাদেশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। আবহাওয়াবিদ আফরোজা সুলতানা এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ঈদের দিন সারাদেশে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ থাকার সম্ভাবনা আছে। সর্বোচ্চ ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা উঠতে পারে।

ঈদের দিন কোনো ঝড় হওয়ার সম্ভাবনা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপাতত ঘূর্ণিঝড় বা কোনো ঝড় হওয়ার সম্ভাবনা নাই। তবে ঈদের দুই-এক জায়গাতে হতে পারে; তাও না হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ঈদের দিন আবহাওয়া শুষ্ক থাকার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। তবে অস্থায়ীভাবে দেশের দুই এক-জায়গায় কালবৈশাখী ঝড় হতে পারে বলে জানিয়েছেন এ আবহাওয়াবিদ।

আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। ঢাকা, ফরিদপুর, রাজশাহী, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, লক্ষীপুর ও ফেনী জেলাসহ খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত ও বিস্তার লাভ করতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

আগামী রোববার (৩০ মার্চ) অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।


আরও খবর



সব বিদেশী মুদ্রায় হিসাব খুলতে পারবেন প্রবাসীরা

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৫ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:শনিবার ১৯ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

এখন থেকে সব ধরনের বিদেশী মুদ্রায় হিসাব খুলতে পারবেন প্রবাসীরা। সেই সঙ্গে প্রবাসীদের নামে খোলা বৈদেশিক হিসাবের সুদের হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেয়া হয়েছে। ফলে এখন থেকে ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে সুদের হার নির্ধারিত হবে। রোববার বাংলাদেশ ব্যাংক এ-সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, এতদিন শুধু অনুমোদিত চারটি বৈদেশিক মুদ্রা ডলার, পাউন্ড, ইউরো ও ইয়েনে প্রবাসীদের হিসাব খোলার সুযোগ ছিল। এখন অনুমোদিত মুদ্রার পাশাপাশি ব্যবহারযোগ্য সব বৈদেশিক মুদ্রায় হিসাব খুলতে পারবেন প্রবাসীরা। এ সুযোগ দেয়ায় দেশে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, অনাবাসী বাংলাদেশীরা অনুমোদিত বিদেশী মুদ্রার পাশাপাশি ব্যবহারযোগ্য বিদেশী মুদ্রায় প্রাইভেট ফরেন কারেন্সি (পিএফসি) হিসাব এবং নন-রেসিডেন্ট ফরেন কারেন্সি ডিপোজিট (এনএফসিডি) হিসাব খুলতে পারবেন। পিএফসি ও এনএফসিডি হিসাবের বিপরীতে সুদের নির্ধারিত হারও প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ফলে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে সুদের হার নির্ধারণ করতে পারবে ব্যাংকগুলো।


আরও খবর

মালয়েশিয়ায় ১৬৫ বাংলাদেশি আটক

শুক্রবার ১৮ এপ্রিল ২০২৫




পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু খালেদা জিয়ার

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০৩ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:রবিবার ২০ এপ্রিল ২০25 |

Image

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু করেছে লন্ডন ক্লিনিকের চিকিৎসকরা। লন্ডনে অবস্থানরত খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন গণমাধ্যমকে এই তথ্য দেন।

জাহিদ হোসেন বলেন, ‘বুধবার থেকে ম্যাডামের পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু হয়েছে। আগামী চার দিন উনার বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা হবে। উনার ডাক্তাররা (লন্ডন ক্লিনিকের ডাক্তারগণ) বাসায় উনাকে দেখতে আসবেন। কিছু পরীক্ষা করার জন্য হয়তো উনাকে লন্ডনে ক্লিনিকেও নিয়ে যাওয়া হবে। আগামী কয়েকটি দিন বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা আছে, যা চিকিৎসকদের পরামর্শক্রমে করা হচ্ছে।’

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক বলেন, খালেদা জিয়ার পরীক্ষার রিপোর্ট পর্যালোচনা করে চিকিৎসকরা পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেবেন কত দ্রুত ছুটি দেওয়া যায়।

চিকিৎসক প্যাট্টিক কেনেডি ও জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধায়নে তারেক রহমানের বাসায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ নানা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন।

কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার-অ্যাম্বুলেন্সে গত ৭ জানুয়ারি লন্ডনের হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পৌঁছান বেগম খালেদা জিয়া। সেখানে অধ্যাপক জন প্যাট্রিক কেনেডির তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা চলছে বিএনপি প্রধানের।


আরও খবর



মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন

প্রকাশিত:শুক্রবার ১১ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:শনিবার ১৯ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদের আয়োজনে রাজধানীতে বাংলা নববর্ষের যে শোভাযাত্রা বের হয়, তার নতুন নামকরণ করা হয়েছে। এই শোভাযাত্রার নতুন নাম হবে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’। আগে নাম ছিল ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়। পহেলা বৈশাখ ও বাংলা নববর্ষ-১৪৩২ উদযাপনের বিভিন্ন দিক জানাতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান, বাংলা নববর্ষ-১৪৩২ উদযাপনের কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক ও প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক এম জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, বাংলা নববর্ষ-১৪৩২ উদযাপনের কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির সদস্য-সচিব ও চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আজহারুল ইসলাম শেখ, শোভাযাত্রার উপকমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক এ এ এম কাওসার হাসান, প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমদ এবং কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটি ও উপকমিটিগুলোর সদস্যরা।


আরও খবর



চট্টগ্রাম মেডিকেলে চিকিৎসা নয়, চলছে পরীক্ষার প্রহসন

প্রকাশিত:শনিবার ১৯ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:রবিবার ২০ এপ্রিল ২০25 |

Image

আমি পপি আক্তার—একজন সংবাদকর্মী। কিন্তু আজ আমি কোনো চায়ের কাপ হাতে টেবিলে বসে রিপোর্ট লিখছি না। লিখছি বিছানায় শুয়ে, ব্যথায় কাতর শরীর নিয়ে। জায়গাটা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। আজ আমি রোগী। আমার কণ্ঠে আজ হাজারো রোগীর আর্তনাদ, যাদের চিকিৎসা না পেয়ে চোখে জল, মনে ক্ষোভ, মুখে নীরবতা। গত এক সপ্তাহ ধরে আমি গুরুতর অসুস্থ। ভর্তি হয়েছি চট্টগ্রাম মেডিকেলের জরুরি বিভাগে। প্রথমদিন সাংবাদিক ভাই মো. কামাল উদ্দিন হাসপাতালে এসে আমাকে দেখে সেবা নিশ্চিত করার অনুরোধ করেন। কর্তৃপক্ষ তার উপস্থিতিতে কিছুটা সাড়া দেয়, কয়েকজন ডাক্তার-প্রফেসরও আমাকে পরীক্ষা করেন। কিন্তু তারপর? নীরবতা, উপেক্ষা, উদাসীনতা। আজও আমার চিকিৎসা সুনির্দিষ্ট নয়। এক ওয়ার্ড থেকে অন্য ওয়ার্ডে ঠেলাঠেলি, এক পরীক্ষা থেকে আরেক পরীক্ষায় পিষে যাওয়া আমার মতো শত শত রোগীর গল্প একই। পরীক্ষাই যেন এখানে একমাত্র চিকিৎসা। শুধু টেস্ট, আর টেস্ট। ওষুধ নেই, পরিকল্পনা নেই, করুণা নেই।

পেশার মেশিনও নেই, খাবার আসে বিকেলে- বলেন তো, একটা সরকারি হাসপাতালের ওয়ার্ডে যদি পেশার মেশিনই না থাকে, তাহলে উচ্চ রক্তচাপের রোগী কিভাবে বাঁচবে? পেশার মাপতে বললে আয়ারা বলেন—মেশিন নাই! গায়ে জ্বর, মাথা ঘোরে, বুক ধড়ফড় করে—তবুও সাড়া নেই। দুপুরের খাবার আসে ৩টা বা ৪টায়। সেই খাবারও রোগীর নয়—বিনাভাবে অভিভাবক খায়, কারণ রোগী এতক্ষণে অজ্ঞান বা নি:শেষ।

নারী ওয়ার্ডে পুরুষদের অনুপ্রবেশ, রাতে ঘুমায় পাশেই! সবচেয়ে লজ্জাজনক ঘটনা, মহিলা ওয়ার্ডেও রক্ষা নেই। পুরুষরা দিনের বেলায় যেমন ঘোরাঘুরি করে, রাতেও এসে পাশেই শুয়ে পড়ে। নারীর ব্যক্তিগত সুরক্ষা এখানে এক ভিন্নরকম ব্যঙ্গ। হাসপাতালের নিরাপত্তা যেন নিছক কল্পকাহিনি। বাথরুমে আলো নেই, কল ভাঙা, পানি পড়ে না। নারী ওয়াশরুমেও পুরুষ! ওয়াশরুমের অবস্থা বর্ণনাতীত। একটামাত্র আলো, তাও কাঁপছে। পানির কল সব ভাঙা। গন্ধে দম বন্ধ হয়ে আসে। নারী ওয়াশরুমেও পুরুষের অবাধ প্রবেশ, যেন নারীত্বের লজ্জা কেউ দেখে না, বোঝেও না।ডাক্তাররা থাকেন সকালে—তারপর নিখোঁজ- সকাল বেলা হয়তো দু’একজন ডাক্তার আসেন। কিন্তু তারপর গোটা দিন ওয়ার্ড যেন জনশূন্য। রোগী অসুস্থ হয়ে পড়ে থাকে, জ্বর গায়ে উঠে, ব্যথায় কাতরায়—কিন্তু চিকিৎসা নেই, চিকিৎসক নেই, কেবল দয়া-ভিক্ষার ভরসা। টেস্ট করতে হয় টাকার বিনিময়ে, সিরিয়াল ভেঙে, তাও চিকিৎসা মেলে না

আল্ট্রাসোনোগ্রাফি, এক্স-রে—প্রতিটি পরীক্ষার পেছনে টাকা গুনতে হয়। সিরিয়ালের তোয়াক্কা না করে ডাক্তাররা বলেন, ‘ইমারজেন্সি’। দেরি হলে ফাইল ফেলে দেন। একজন রোগী তো বলেই ফেললেন—"সিস্টেম নাই, আল্লাহর উপর ভরসা রাখেন!" এই কি আমাদের রাষ্ট্রের স্বাস্থ্যব্যবস্থা? আমি লিখছি, কারণ আমি সাংবাদিক। কিন্তু আমার পাশের বেডে যে নারীটি শুয়ে আছেন, যিনি চট্টগ্রামের কোনো প্রত্যন্ত গ্রামের স্কুলশিক্ষিকা, তার কণ্ঠ নেই, কলম নেই। তার চিৎকার কে শুনবে? আজ আমি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

মাননীয় উপদেষ্টা Asif Mahmud Shojib Bhuyain স্যার, আপনি দেখুন এই হাসপাতালে কী ভয়াবহ পরিস্থিতি চলছে।

চিকিৎসা নয়, এখানে মানুষ শুধু প্রহসনের শিকার হচ্ছে। এখানে শুয়ে থেকে আমি দেখেছি, কিভাবে মানুষ চিকিৎসা না পেয়ে মরে যাচ্ছে, আর কর্তৃপক্ষ নীরব দর্শক।

এই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কি মৃত্যুর এক কারখানা হয়ে যাচ্ছে?

একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে, একজন নারী হিসেবে, একজন রোগী হিসেবে এবং একজন সংবাদকর্মী হিসেবে আমি অনুরোধ জানাই—এই অব্যবস্থাপনার পরিবর্তন হোক। মানুষ যেন অন্তত সরকারি হাসপাতালে এসে সুস্থ হওয়ার আশায় মরতে না হয়। আমি চাই, এই লিখন একটি জবাব পাক। শুধু আমার জন্য নয়, আমার মতো হাজারো কণ্ঠহীন রোগীর জন্য। চট্টগ্রাম মেডিকেলের প্রতিটি অসংগতি যেন আজ সরকারের চোখে পড়ে।


আরও খবর