Logo
শিরোনাম

হজ্জ যাত্রীদের খরচ সর্বোচ্চ ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা নির্ধারণ করুন

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৪ মার্চ ২০২৩ | হালনাগাদ:শনিবার ০১ এপ্রিল ২০২৩ | ১১১জন দেখেছেন

Image

পাশ্ববর্তী দেশ ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশীদের হজ্জে গমনের খরচ দেড়গুণ নির্ধারণ করে কোন অপশক্তির পরামর্শে আল্লাহর মেহমান হজ্জযাত্রীদের হজ্জে গমনে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে তা দেশবাসী জানতে চায় বলেছে ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম পরিষদ। 

ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম পরিষদ সভাপতি শহিদুল ইসলাম কবির আজ ১ মার্চ, বুধবার, গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে বলেন, হজ্জ একটি ফরজ ইবাদাত হবার কারণে দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষের ইচ্ছা থাকে চাকরি বা অন্যান্য সার্ভিস শেষে জীবনের শেষ সম্বল দিয়ে আল্লাহর ঘরে উপস্থিত হয়ে হাজিরা দিবেন বা দিচ্ছেন। কিন্তু এবছর সরকার যেভাবে হজ্জযাত্রীদের খরচ নির্ধারণ করেছে তাতে ধর্মপ্রাণ মানুষের ইচ্ছা ও প্রাক নিবন্ধন করা থাকলেও তাদের পক্ষে হজ্জে যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে। প্রাক নিবন্ধন করেও অতিরিক্ত খরচ নির্ধারণ করার কারণে হজ্জে যেতে পারবেন না বলে এমন হজ্জ যাত্রীরা এখন মনোকষ্টে ভুগছেন।

বিবৃতিতে ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম পরিষদ সভাপতি বলেন, আমাদের পাশ্ববর্তী দেশ ভারতের হজ্জ যাত্রীদের খরচ যেখানে ৪ লাখ টাকা, আর ডলারের উচ্চ মূল্যে সংকটে থাকার পরও পাকিস্তানের হজ্জ যাত্রীদের খরচ ৪ লাখ ১০ হাজার টাকা হলেও বাংলাদেশের হজ্জ যাত্রীদের খরচ ৬ লাখ ৮৩ হাজার টাকা মেনে নেবার মতো নয়। ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশের হজ্জ যাত্রীদের খরচ দেড়গুণ বেশী কেন? দেশের জনগণ সরকারের কাছে জানতে চায়। 

শহিদুল ইসলাম কবির বলেন, বাংলাদেশের হজ্জ যাত্রীদের খরচ ভারত ও পাকিস্তানের ন্যায় সর্বোচ্চ ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা নির্ধারণ করতে হবে। প্রয়োজনে হজ্জ ফ্লাইট খালি না এনে সৌদি প্রবাসীদের বিশেষ সুযোগ দিয়ে ন্যায্য খরচে দেশে আনা ও নেয়ার ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নিতে হবে। হজ্জ যাত্রা যেহেতু ইবাদাত তাই এই খরচ এর মধ্যে কোন ট্যাক্স না রেখে ট্যাক্সমুক্ত রাখতে হবে। 

তিনি বলেন, ধর্মীয় ইবাদাত হজ্জ, রমজান মাস ও কুরবানীর সময়ে যেভাবে মূল্য বৃদ্ধি হয় তা দুঃখজনক। এক্ষেত্রে সরকার আগে থেকে সেনাবাহিনী বা অন্য কোন সংস্থাকে দায়িত্ব দিলে মার্কেট পরিস্থিতি অস্বাভাবিক হবে না।


আরও খবর



সাজেকে পর্যটকবাহী জীপ খাদে পরে এক পর্যটকের মৃত্যু আহত ৭

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৩ মার্চ ২০২৩ | হালনাগাদ:শনিবার ০১ এপ্রিল ২০২৩ | ৫৬জন দেখেছেন

Image

উচিংছা রাখাইন কায়েস, রাঙ্গামাটি :

 রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ির সাজেক পর্যটন কেন্দ্রের খাসরাং রিসোর্টের পাশে পর্যটকবাহী চাঁদের গাড়ী( ময়মনসিংহ -ক ২২২) গভীর খাদে পরে ঘটনা স্থলেই ফারদিন হাছান বিশাল (৩৫) নামে  এক পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। তার বাড়ি ঢাকা শ্যামপুর বলে জানিয়েছে পুলিশ।  এসময় আরো ৭ পর্যটক গুরতর আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে ২ জনের অবস্থা আশংকা জনক।  সাজেক থানার ওসি নুরুল আলম দূর্গটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন। ৩ মার্চ শুক্রবার বিকাল ৫ ঘটিকায় কংলাক পাহাড় থেকে ফেরার পথে পর্যটকবাহী চাঁদের গাড়ী নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাহাড়ী খাদে পরেযায়। এসময় গাড়ী নিচে চাপা পরে  পর্যটক ফারদিন হাছান বিশাল  (৩৫)  মৃত্যু বরন করে। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের সহায়তায় আহতদের উদ্ধার করে দিঘীনালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। এখনো উদ্ধার তৎপরতা চলছে তৎক্ষানিক বাকী পর্যটকের পরিচয়   নিশ্চিত হওয়া যায়নি।


আরও খবর



তিল ঠাঁই নেই মসজিদে হারামে

প্রকাশিত:বুধবার ২২ মার্চ ২০২৩ | হালনাগাদ:শনিবার ০১ এপ্রিল ২০২৩ | ৯২জন দেখেছেন

Image

পবিত্র রমজান শুরুর আগেই লাখ লাখ ওমরাহ যাত্রী ভিড় করেছেন মক্কা নগরীতে। মক্কার মসজিদে হারামে প্রচণ্ড ভিড় সৃষ্টি হয়। বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে লাখো মুসল্লি এখানে জড়ো হয়েছেন ওমরাহ পালন ও তারাবিহর নামাজ আদায় করতে। এতে পবিত্র এই মসজিদে তিল ঠাঁই নেই অবস্থা।

অবশ্য হারাম শরিফের শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত পুলিশ মুসল্লিদের সারিবদ্ধভাবে নামাজ ও বায়তুল্লাহর তাওয়াফের সুযোগ করে দেয়।

আরব নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের বর্তমান সময় পর্যন্ত ৪৮ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমান ওমরাহ সম্পন্ন করেছেন। যার মধ্যে ১৫ শতাংশ সৌদি আরবের নাগরিক।

আজই সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে পবিত্র রমজানের চাঁদ দেখা যেতে পারে বলে ধারণা করা হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত এই অঞ্চলের কোথাও চাঁদ দেখা যায়নি। ফলে আজ ৩০ শাবান পূর্ণ হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় এখানে রমজানের চাঁদ দেখা যাবে এবং বৃহস্পতিবার থেকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে রোজা শুরু হবে।

মক্কায় রমজানের সব প্রস্তুতি চলছে। এখানকার আবহাওয়া রয়েছে সহনীয় মাত্রায়। আজ মক্কায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে গত কয়েক বছর ধরে হজ ও ওমরাহয় অনেক বিধিনিষেধ ছিল। অনেকে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও রমজানে ওমরাহ পালনে আসতে পারেননি। তবে এবার বিধিনিষেধ না থাকায় রমজানের আগেই ওমরাহ পালনকারীদের প্রচুর ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মক্বায় এই সময়ের ভিড় হজের সময়কেও হার মানিয়েছে।

এদিকে বাংলাদেশ থেকেও হাজার হাজার মুসল্লি ওমরা পালনের জন্য এখন মক্কায় অবস্থান করছেন। অনেকে পুরো রমজান কাটানোর প্রস্তুতি নিয়ে এসেছেন। কেউ কেউ এখানে ইতেকাফও করবেন। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বাংলাদেশের ওমরাহ যাত্রী বেশি। জানা গেছে, হজের খরচ অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ার ফলে অনেকে হজের ইচ্ছা বাদ দিয়ে ওমরা করতে ভিড় করছেন।

আগামী জুন মাসের শেষ দিকে পালিত হবে এবারের হজ। রমজানেই ওমরার শেষ সময়। শাওয়াল থেকে বিদেশিদের জন্য ওমরার সুযোগ বন্ধ রাখে সৌদি কর্তৃপক্ষ।


আরও খবর



স্বাধীনতা দিবসে কৃষকের যে উপহার

প্রকাশিত:রবিবার ২৬ মার্চ ২০২৩ | হালনাগাদ:শনিবার ০১ এপ্রিল ২০২৩ | ৫৬জন দেখেছেন

Image

মাহবুবুল আলম রিপন (স্টাফ রিপোর্টার):

মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় কৃষক মোঃ হাবিবুর রহমান বেগুনি (পার্পল লিফ রাইস) ও ফাতেমা এবং ন্যাশনাল ১ ধানের প্রজাতির ধান চারা দিয়ে ফসলের মাঠে এঁকেছেন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা আর জাতীয় স্মৃতিসৌধ।


ঢাকার আশুলিয়ার শিমুলিয়া ইউনিয়নের রায় পাড়া গ্রামে মো.হাবিবুর রহমান তার নিজের ফসলের মাঠে সবুজ ও বেগুনি রঙের (পার্পল লিফ রাইস) ধানের চারা দিয়ে তৈরি করেছেন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা আর জাতীয় স্মৃতিসৌধ। আবহমানকাল থেকে সবুজ রঙের ধান গাছ দেখে এসেছে বাংলার কৃষক, কিন্তু সবুজ ও বেগুনি রঙের সংমিশ্রণে ব্যতিক্রমী এ ধান চাষ দেখতে ভিড় করছে মানুষ। প্রতিদিনই দূর-দুরান্ত থেকে ধানের সৌন্দর্য দেখতে আসছেন অনেকে।


সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দিগন্ত মাঠজুড়ে সবুজ আর সবুজ। একটু খেয়াল করলেই দেখা যায় সবুজের মাঠে মাঝখানে বেগুনি রঙ। সবুজ ধানের বেষ্টুনির কাছে গেলে মনে হয় বেগুনি রঙের জায়গাটুকু কোনো আগাছা বা বালাই আক্রান্ত ধান। কিন্তু না, এটি এমন একটি ধানের জাত, যার পাতা ও কান্ডের রং বেগুনি। যেভাবে তৈরি করেছে দেখে নয়ন জুরায়ে যায় বাংলার স্বাধীনতার প্রতীক জাতীয় পতাকা। আবার পাশের আরেকটি ক্ষেতে দেখা যায় সবুজ ধান ও বেগুনি ধানের মিশ্রনে বাংলাদেশের জাতীয় স্মৃতিসৌধ ।


কৃষক মো.হাবিবুর রহমান বলেন, বেগুনি রঙের ‘পার্পল লিফ রাইস’ নামের এ ধান চাষে তিনি আগ্রহী হয়ে এ ধানের বীজ সংগ্রহের অনেক চেষ্টার পর, স্থানীয় এক বীজের দোকানদারের মাধ্যমে বীজ সংগ্রহ করেছেন।


তিনি আরো বলেন, ধানের ফলন কী রকম হবে, তা দেখার পর ভবিষ্যতে আবাদ বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। আর দেশের প্রতি ভালবাসা আর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে কষ্ট হলেও এঁকেছি জাতীয় পতাকা আর জাতীয় স্মৃতিসৌধ। ধান দিয়ে পতাকা আর স্মৃতিসৌধ অংকন করায় প্রতিদিন মানুষ ভিড় করছে আমার ক্ষেতে এসে। অনেক কৃষক এই ধান চাষ করতে বীজ চেয়েছে বলেও জানান তিনি।


চারদিকে বিস্তৃত সবুজ ধানক্ষেতের মধ্যে বেগুনি রঙের এই ধানগাছ দেখে থমকে যায় পথচারীরা। তারা জানার চেষ্টা করে এটি কোন জাতের ধান বা ধানের এমন অবস্থা কী করে হলো? অনেকেই এ সৌন্দর্যের ছবি তুলে। কেউ কেউ তুলে সেলফিও।


পথচারী যুবক বাবুল হোসেন বলেন, ‘এত সুন্দর করে ধানের আবাদ করায় এ কৃষককে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমরাও এ ধরনের চাষ করব। আমি ছবি তুলে রাখছি। একটি সেলফিও নিলাম।


স্থানীয় শিমুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান এ.বি.এম আজাহারুল ইসলাম সুরুজ বলেন, ‘দেশের প্রতি ভালোবাসা না থাকলে এ কাজ কোনো ভাবেই করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, ধানক্ষেতটি দেখলে মন-প্রাণ জুড়িয়ে যায়।


’সাভার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাজিয়াত আহমেদ বলেন, দেশের প্রতি ভালোবাসা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বুকে লালন করে কৃষক মো.হাবিবুর রহমান বেগুনি (পার্পল লিফ রাইস) জাতের ধান দিয়ে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা লাল বৃত্ত এবং ন্যাশনাল ১ জাতের ধান দিয়ে পতাকার সবুজ অংশ অংকন করেন। পাশের আরও একটি ধান ক্ষেতে এই দুই জাতের ধান দিয়ে একেঁছেন জাতীয় সৃতিসৌধ। তার এই আবাদি জমিতে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা ও জাতীয় সৃতিসৌধ অংকনে সাভার উপজেলা উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বীজ থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত সার্বিক সহযোগিতা, পরামর্শ ও তত্ত্বাবধান করে আসছে। এই ধানের পুষ্টিমান বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ চালের ভাত খেতেও সুস্বাদু। এই ধান ডায়াবেটিস রোগীদের বেশ উপকারী। ফলন ভালো হলে উৎপাদিত ধানগুলো বীজ আকারে রাখা হবে। এ ছাড়া ভবিষ্যতে ধানের আবাদ বৃদ্ধির চিন্তা করা হচ্ছে।’


আরও খবর



২৫ মার্চ ভয়াল গণহত্যা দিবস

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৪ মার্চ ২০২৩ | হালনাগাদ:শনিবার ০১ এপ্রিল ২০২৩ | ৬৬জন দেখেছেন

Image

ভয়াল ২৫ মার্চ, গণহত্যা দিবস। বাঙালি জাতির জীবনে ১৯৭১ সালের এইদিন শেষে এক বিভীষিকাময় ভয়াল রাত নেমে এসেছিল। এদিন মধ্যরাতে বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের পূর্ব পরিকল্পিত অপারেশন সার্চ লাইটের নীলনকশা অনুযায়ী বাঙালী জাতির কণ্ঠ চিরতরে স্তব্ধ করে দেয়ার ঘৃণ্য লক্ষ্যে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে নিরস্ত্র বাঙালীদের ওপর অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে।

এদিন সকাল সাড়ে ৯টায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে গণহত্যা দিবসের ওপর আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও সারাদেশে গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গীতিনাট্য এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। ঢাকাসহ সকল সিটি কর্পোরেশনের মিনিপোলগুলোতে গণহত্যার ওপর দুর্লভ আলোকচিত্র ও প্রামাণ্যচিত্র প্রচার করা হবে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এদিন বাদ জোহর দেশের সকল মসজিদে বিশেষ মোনাজাত এবং অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়গুলোতে সুবিধাজনক সময়ে প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে।

বাঙালীর স্বাধীনতার আকাক্সক্ষা মুছে দেওয়ার চেষ্টায় ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ গণহত্যা শুরু করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। তারপর নয় মাসের সশস্ত্র যুদ্ধের মধ্য দিয়ে এসেছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ দিবাগত রাতে ব্যাপক গণহত্যা চালিয়ে বাঙালি জাতিকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী যে সশস্ত্র অভিযান পরিচালনা করে, তারই নাম অপারেশন সার্চলাইট।

এই অভিযানের নির্দেশনামা তৈরি করে পাকিস্তানের দুই সামরিক কর্মকর্তা মেজর জেনারেল খাদিম হোসেন রাজা ও মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী। নির্দেশনামার কোনো লিখিত নথি রাখা হয়নি। গণহত্যার সেই পুরো নির্দেশ মুখে মুখে ফরমেশন কমান্ডার বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জানানো হয়। অনেক পরে, ২০১২ সালে, মেজর জেনারেল খাদিম হোসেন রাজা ‘এ স্ট্রেঞ্জার ইন মাই ওন কান্ট্রি’ নামে আত্মজীবনী প্রকাশ করেন। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস প্রকাশিত সে আত্মজীবনীতে প্রথমবারের মতো অপারেশন সার্চলাইট সম্পর্কে কিছু তথ্য প্রকাশিত হয়।

অপারেশন সার্চলাইট কীভাবে পরিকল্পিত হয়, ১৯৭১ সালের সেই স্মৃতিচারণ করে রাজা লিখেছেন, ‘১৭ মার্চ, সকাল প্রায় ১০টা বাজে। টিক্কা খান আমাকে ও মেজর জেনারেল ফরমানকে কমান্ড হাউসে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে খবর পাঠান। খবর পেয়ে আমরা দুজন টিক্কা খানের সঙ্গে দেখা করি। গিয়ে দেখি, সেখানে জেনারেল আবদুল হামিদ খানও রয়েছেন। টিক্কা খান আমাদের বলেন, প্রেসিডেন্টের সঙ্গে শেখ মুজিবের সমঝোতা আলোচনা ইতিবাচক দিকে এগোচ্ছে না।

প্রেসিডেন্ট চান আমরা যেন সামরিক অভিযানের প্রস্তুতি গ্রহন করি এবং সে অনুযায়ী একটা পরিকল্পনা তৈরি করি। এ ছাড়া আর কোনো মৌখিক বা লিখিত নির্দেশনা আমরা পাইনি। আমাদের বলা হয়, পরদিন ১৮ মার্চ বিকেলে আমরা দুজন যেন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে ওই পরিকল্পনা চূড়ান্ত করি।’ পরদিন সকালেই খাদিম হোসেন রাজা তাঁর কার্যালয়ে রাও ফরমান আলীকে নিয়ে বসেন। তারাই গণহত্যার এ অভিযানের নাম দেন অপারেশন সার্চলাইট।

মার্কিন সাংবাদিক রবার্ট পেইন ২৫ মার্চ রাত সম্পর্কে লিখেছেন, ‘সেই রাতে ৭০০০ মানুষকে হত্যা করা হয়, গ্রেফতার করা হল আরো ৩০০০ লোক। ঢাকায় ঘটনার শুরু মাত্র হয়েছিল। সমস্ত পূর্ব পাকিস্তান জুড়ে সৈন্যরা বাড়িয়ে চললো মৃতের সংখ্যা। জ্বালাতে শুরু করলো ঘর-বাড়ি, দোকান-পাট। লুট আর ধ্বংস যেন তাদের নেশায় পরিণত হল। রাস্তায় রাস্তায় পড়ে থাকা মৃতদেহগুলো কাক-শেয়ালের খাবারে পরিণত হল। সমস্ত বাংলাদেশ হয়ে উঠলো শকুন তাড়িত শ্মশান ভূমি।

পাইকারি এই গণহত্যার স্বীকৃতি খোদ পাকিস্তান সরকার প্রকাশিত দলিলেও রয়েছে। পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্কট সম্পর্কে যে শ্বেতপত্র পাকিস্তান সরকার মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে প্রকাশ করেছিল, তাতে বলা হয় : ‘১৯৭১ সালের পয়লা মার্চ থেকে ২৫ মার্চ রাত পর্যন্ত ১ লাখেরও বেশি মানুষের জীবননাশ হয়েছিল।’

১৯৭০-এর সাধারণ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে জয়লাভ করা সত্ত্বেও আওয়ামী লীগের কাছে পাকিস্তানি জান্তা ক্ষমতা হস্তান্তর না করার ফলে সৃষ্ট রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনের প্রক্রিয়া চলাকালে পাকিস্তানি সেনারা কুখ্যাত ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ নাম দিয়ে নিরীহ বাঙালি বেসামরিক লোকজনের ওপর গণহত্যা শুরু করে। তাদের এ অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল আওয়ামী লীগসহ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রগতিশীল রাজনৈতিক নেতা-কর্মীসহ সকল সচেতন নাগরিককে নির্বিচারে হত্যা করা। এদিন দুপুরের পর থেকেই ঢাকাসহ সারাদেশে থমথমে অবস্থা বিরাজ করতে থাকে। সকাল থেকেই সেনা কর্মকর্তাদের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মত। হেলিকপ্টারযোগে তারা দেশের বিভিন্ন সেনানিবাস পরিদর্শন করে বিকেলের মধ্যে ঢাকা সেনানিবাসে ফিরে আসে।

ঢাকার ইপিআর সদর দফতর পিলখানাতে অবস্থানরত ২২তম বালুচ রেজিমেন্টকে পিলখানার বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিতে দেখা যায়। মধ্যরাতে পিলখানা, রাজারবাগ, নীলক্ষেত আক্রমণ করে পাকিস্তানি সেনারা। হানাদার বাহিনী ট্যাঙ্ক ও মর্টারের মাধ্যমে নীলক্ষেতসহ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা দখল নেয়। সেনাবাহিনীর মেশিনগানের গুলিতে, ট্যাঙ্ক-মর্টারের গোলায় ও আগুনের লেলিহান শিখায় নগরীর রাত হয়ে উঠে বিভীষিকাময়।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খান এবং লেফটেন্যান্ট জেনারেল এএকে নিয়াজীর জনসংযোগ অফিসারের দায়িত্বে থাকা সিদ্দিক সালিকের ‘উইটনেস টু সারেন্ডার’ গ্রন্থেও এ সংক্রান্ত একটি বিবরণ পাওয়া যায়। সিদ্দিক সালিক বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় জেনারেল নিয়াজীর পাশেই ছিলেন। বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে অনুগত পাকিস্তানি হিসাবে পাক সামরিক জান্তার চক্রান্ত তিনি খুব কাছে থেকেই দেখেছেন। ২৫ মার্চ, অপারেশন সার্চ লাইট শুরুর মুহূর্ত নিয়ে তিনি লিখেন ‘নির্দিষ্ট সময়ের আগেই সামরিক কার্যক্রম শুরু হয়ে যায়। এমন আঘাত হানার নির্ধারিত মুহূর্ত (এইচ-আওয়ার) পর্যন্ত স্থির থাকার চিহ্ন বিলুপ্ত হয়ে গেল। নরকের দরজা উন্মুক্ত হয়ে গেল।’

পাকিস্তানি হায়েনাদের কাছ থেকে রক্ষা পায়নি রোকেয়া হলের ছাত্রীরাও। ড. গোবিন্দ চন্দ্র দেব ও জ্যোতির্ময় গুহ ঠাকুরতা, অধ্যাপক সন্তোষ ভট্টাচার্য, ড. মনিরুজ্জামানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ৯ জন শিক্ষককে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়। ঢাবির জগন্নাথ হলে চলে নৃশংসতম হত্যার সবচেয়ে বড় ঘটনাটি। এখানে হত্যাযজ্ঞ চলে রাত থেকে সকাল পর্যন্ত।

প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান অপারেশন সার্চ লাইট পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সকল পদক্ষেপ চূড়ান্ত করে গোপনে ঢাকা ত্যাগ করে করাচি চলে যান। সেনা অভিযানের শুরুতেই হানাদার বাহিনী বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তাঁর ধানমন্ডির বাসভবন থেকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের আগে ২৬ মার্চ (২৫ মার্চ মধ্যরাতে) বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং যে কোন মূল্যে শত্রুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

বঙ্গবন্ধুর এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাঙালী পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং দীর্ঘ ৯ মাস সশস্ত্র লড়াই শেষে একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর পূর্ণ বিজয় অর্জন করে। বিশ্বের মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশের।

সূত্র : বাসস।


আরও খবর

বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ মডেল

শনিবার ০১ এপ্রিল ২০২৩




করোনায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত প্রান্তিক শিশুরা

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৭ মার্চ ২০২৩ | হালনাগাদ:শনিবার ০১ এপ্রিল ২০২৩ | ৯১জন দেখেছেন

Image

রোকসানা মনোয়ার : করোনার কারণে স্কুল বন্ধ থাকার সময় প্রতি পাঁচজন শিশুর মধ্যে একজনেরও কম (১৮ দশমিক ৭ শতাংশ) দূরশিক্ষণ কার্যক্রমে অংশ নেয়। করোনা মহামারির কারণে বিশ্বের যেসব দেশে দীর্ঘ সময় ধরে স্কুল বন্ধ ছিল সেগুলোর একটি হলো বাংলাদেশ। এই বন্ধের কারণে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রান্তিক পর্যায়ের শিশুরা, যাদের ইন্টারনেট ও টেলিভিশন ব্যবহারের সুযোগ সীমিত এবং যাদের বাড়িতে কম্পিউটার বা স্মার্টফোনের মতো সহায়ক ডিভাইসের অভাব রয়েছে। তা ছাড়া শহর এলাকার শিশুদের (২৮ দশমিক ৭ শতাংশ) তুলনায় গ্রামীণ এলাকায় কমসংখ্যক শিশু (১৫ দশমিক ৯ শতাংশ) দূরশিক্ষণ ক্লাসে অংশ নেয়।

ন্যাশনাল সার্ভে অন চিলড্রেনস এডুকেশন ইন বাংলাদেশ-২০২১ শীর্ষক জরিপ প্রতিবেদনে শিশুদের লেখাপড়ার ওপর স্কুল বন্ধ থাকার প্রভাব ওঠে এসেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ও ইউনিসেফ যৌথভাবে জরিপটি পরিচালনা করে।

বড় ধরনের ভৌগোলিক বৈষম্যের বিষয়টিও জরিপে দেখা গেছে, দূরশিক্ষণ কার্যক্রমে অংশগ্রহণের হার সবচেয়ে বেশি ছিল খুলনায় ২৩ দশমিক ৪ শতাংশ এবং ঢাকায় ২৩ দশমিক ১ শতাংশ। সবচেয়ে কম ছিল ময়মনসিংহে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ। সবচেয়ে কম বয়সি শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছে। দূরশিক্ষণ ক্লাসে অংশগ্রহণের হার মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের (নিম্ন মাধ্যমিকে ২০ দশমিক ৩ শতাংশ ও উচ্চমাধ্যমিকে ২৩ দশমিক ৭ শতাংশ) তুলনায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের ক্ষেত্রে (১৩ দশমিক ১ শতাংশ) ছিল কম।

বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, শিশুদের ওপর মহামারির প্রভাব দেশজুড়ে এখনো একই রকম। শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরো বেশি মাত্রায় অভিঘাত সহনশীল করতে ডিজিটাল বৈষম্যের অবসান ঘটাতে হবে। উদ্ভাবনী প্রতিকারমূলক শিক্ষাসহ পড়াশোনার ক্ষতি দূর করতে ইউনিসেফ বাংলাদেশ সরকারকে কারিগরি সহায়তা প্রদান করছে।

জরিপে বাল্যবিবাহ সম্পর্কিত মহামারি-পরবর্তী প্রাথমিক উপাত্ত অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। জরিপটি এ ক্ষেত্রে নিম্নমুখী প্রবণতা নির্দেশ করে, যা সতর্কতার সঙ্গে আশাবাদী হওয়ার কারণ। শিশুদের পরিস্থিতির ওপর দেশের বৃহত্তম এবং সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য জরিপ ২০১৯ সালের বাংলাদেশ মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভে (এমআইসিএস) অনুসারে, ৫১ দশমিক ৪ শতাংশ মেয়ের বিয়ে হয়েছে তাদের বয়স ১৮ বছর হওয়ার আগে। ২০২৪ সালে হতে যাওয়া পরবর্তী এমআইসিএস নিশ্চিত করবে যে ন্যাশনাল সার্ভে অন চিলড্রেনস এডুকেশন ইন বাংলাদেশ ২০২১ জরিপে নির্দেশিত বাল্যবিবাহ ইতিবাচক নিম্নগামী প্রবণতা টিকে আছে কি-না।


আরও খবর

বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ মডেল

শনিবার ০১ এপ্রিল ২০২৩