Logo
শিরোনাম

হৃদরোগীর রোজা পালনের ক্ষেত্রে করণীয়

প্রকাশিত:রবিবার ০২ মার্চ 2০২5 | হালনাগাদ:বুধবার ৩০ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

অধ্যাপক ডা. আবদুল্লাহ শাহরিয়ার : হৃদরোগীরা রোজা পালন করতে পারবেন কিনা, রোজা এলেই হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের প্রতিনিয়ত প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। হৃদরোগীদের রোজা রাখতে তেমন সমস্যা নেই। রোজা রাখলে বরং শরীরের জন্য আরও ভালো। গবেষণায় দেখা গেছে, রোজা পালন করলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রিত হয়। সেই সঙ্গে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রিত হয়। সে হিসেবে রোজা পালন কিন্তু শরীরের জন্য খারাপ নয় বরং উপকারী। উচ্চ রক্তচাপ রোজা পালনে কোনো প্রতিবন্ধক নয়।

তবে উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের রোজা পালনের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের মাধ্যমে ওষুধের ডোজ পরিবর্তন করে নিতে হবে। যেসব ওষুধ দিনে তিনবার খেতে হয় সেগুলো বাদ দিয়ে দিনে একবার খেলেই চলে এমন ওষুধ খেতে পারেন। চিকিৎসককে বললে আপনাকে দিনে একবার খেলেই চলে এমন ওষুধ প্রেসক্রাইব করে দেবেন।

অ্যানজাইনা পেকটোরিস, হার্ট অ্যাটাকের রোগী এমনকি যাদের হৃদপিণ্ডের রক্তনালিতে রিং লাগানো আছে তারাও রোজা রাখতে পারবেন। এজন্য আপনাকে ওষুধের ডোজ পরিবর্তন করে নিতে হবে। আপনাকে যদি অ্যাসপিরিন সেবন করতে হয় তবে তা সেহরির সময় সেবন করবেন। যদি এসিডিটির সমস্যা দেখা দেয় তাহলে ওমিপ্রাজল খেতে পারেন।

এখন দেশের আর্দ্রতা অনেক বেশি। এজন্য আমাদের ঘাম হয় বেশি। অনেক হৃদরোগীকেই ডাইইউরেটিক যেমন ফ্রুসেমাইড, স্পাইরোনোল্যাকটোন, টোলাজেমাইড ইত্যাদি ওষুধ খেতে হয়। এ ওষুধগুলো দেহে থেকে পানি বের করে দেয়। ঘামের সঙ্গে সঙ্গে এ ওষুধ দেহ থেকে বেশি পরিমাণে পানি বের করে দেওয়ায় সমস্যা দেখা দিতে পারে। আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে রোজার সময় এ ওষুধ সেবন না করাই ভালো। যদি সেবন করতেই হয় তবে ওষুধের ডোজ কমিয়ে দিতে হবে। এ জাতীয় ওষুধগুলো সন্ধ্যার পর সেবন করুন।

রোজা পালন করতে গিয়ে যদি হঠাৎ করে সিস্টোলিক রক্তচাপ ১৮০ মিলিমিটার পারদ চাপের বেশি ও ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ ১১০ মিলিমিটার পারদ চাপের বেশি হয় তবে রোজা ভেঙে ফেলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শমতো ওষুধ সেবন করতে হবে।

রোজা রাখলে যদি শ্বাসকষ্ট ও বুকে বেশি ব্যথা অনুভূত হয় তবে রোজা না রাখাই ভালো। যদি উচ্চ রক্তচাপের সঙ্গে কিডনির সমস্যা থাকে তবে রোজা রাখতে হলে একজন কিডনি রোগের বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।

বুকের দুধ পান করাচ্ছেন এমন উচ্চ রক্তচাপের রোগীরা রোজা পালনে কোনো সমস্যা নেই।

হৃদরোগীরা ইফতারিতে ভাজা-পোড়া খাবেন না। অতিরিক্ত খাবার খাবেন না। প্রচুর ফলমূল ও শাকসবজি খান। রোজার ফল খেজুর খেতে পারেন বেশি করে। পানি পান করুন বেশি করে। একটা কথা না বললেই নয় সেটি হলো, কোনো ওষুধেরই ডোজ নিজে নিজে পরিবর্তন করবেন না। চিকিৎসক যদি মনে করেন রোজা পালনে আপনার জীবন ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে বা অসুখ মারাত্মক আকার ধারণ করার আশঙ্কা থাকে, তবে রোজা না রাখাই শ্রেয়। পরবর্তী সময় রোজাগুলো আদায় করতে পারেন বা বদলি রোজাও পালন করতে পারেন।

লেখক : শিশু হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ এবং অধ্যাপক

জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল

শেরেবাংলানগর, ঢাকা


আরও খবর



হজ অ‍্যাপ ‘লাব্বাইক’ উদ্বোধন

প্রকাশিত:সোমবার ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ৩০ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

হজযাত্রীদের সেবা সহজীকরণের জন্য প্রস্তুতকৃত মোবাইল অ্যাপ লাব্বাইক উদ্বোধন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।এ সময় তিনি বলেছেন, হজযাত্রীরা যাতে নির্বিঘ্নে ধর্মকর্ম পালন করতে পারেন, সে জন্য এই অ‍্যাপ বিরাট ভূমিকা রাখবে।

সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রথমবারের মতো নির্মিত অ‍্যাপটি উদ্বোধন করে হজযাত্রীদের এটি ব্যবহারের আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা।

ড. ইউনূস বলেন, ধর্মকর্ম পালনে সহায়ক হওয়ায় এবং স্বাস্থ্য সেবাসহ নানা ফিচার থাকায় এই অ‍্যাপ হাজিদের একাগ্রচিত্তে হজ পালনে মস্তবড় অবদান রাখবে।

চলতি বছর পবিত্র হজব্রত পালনের শুরু থেকে হজযাত্রীরা এই অ‍্যাপ ব্যবহার করতে পারলেও আগামী বছর থেকে যেন মানুষ হজে যাওয়ার চিন্তা-ভাবনার পর্যায় থেকে এই অ‍্যাপ ব্যবহার করে হজযাত্রাকে সহজ করতে পারে সে লক্ষ্যে কাজ করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে নির্দেশনা দেন প্রধান উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, হজ ব্যবস্থাপনায় যেসব দেশ আমাদের দেশের চেয়ে উন্নত তাদের কাছ থেকে অভিজ্ঞতা গ্রহণ এবং যেসব দেশ এ ধরনের ব্যবস্থা নেই সেসব দেশকে বিনা মূল্যে আমাদের অ্যাপটির কারিগরি দিক প্রদানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।ভবিষ্যতে এই অ‍্যাপকে আরো সহজ এবং ত্রুটিমুক্ত করার পরামর্শও দেন তিনি।

এই অ‍্যাপটি চালু হওয়ার হজযাত্রীদের ধর্মকর্ম পালন সহজতর করার পাশাপাশি সৌদি আরব গিয়ে চলা ফেরায় দুশ্চিন্তা মুক্ত হবে। অ‍্যাপটি তৈরির সঙ্গে জড়িত সবাইকে ধন্যবাদ জানান প্রধান উপদেষ্টা।

এই অ‍্যাপটির পাশাপাশি হজ প্রিপেইড কার্ড ও হজ রোমিং প‍্যাকেজ সুবিধার উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টা।

এ সময় অন‍্যদের মধ‍্যে উপস্থিত ছিলেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন, সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়‍্যব, হাব মহাচিব ফরিদ আহমেদ মজুমদার।


আরও খবর



নাকের ব্ল্যাকহেডস দূর করার উপায়

প্রকাশিত:সোমবার ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ৩০ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

ব্ল্যাকহেডস বা হোয়াইট হেডসের সমস্যা কম বেশি সবারই বেশি আছে। নাকের দুপাশে এই কালো কালো দানার মতো স্পট দেখা যায়। এগুলোই ব্ল্যাকহেডস। তবে এই ব্ল্যাকহেডস দূর করতে যেতে হবে না পার্লরে। ঘরে বসেই দূর করা সম্ভব এই ব্ল্যাকহেডস।

প্রতিদিন নিয়ম করে নিতে হবে ত্বকের যত্ন। কারণ প্রতিদিন বাইরে বের হলে দূষণ, ধুলা ময়লা ছাড়াও কারণে ত্বকের বারোটা বাজে। আমাদের নাকের দুপাশে ভরে যায় ব্ল্যাকহেডস। কারো কম বা কারো আবার বেশি হয়। এই সমস্যা সবারই আছে। ঘরে বসেই এই ব্ল্যাকহেডস দূর করা সম্ভব। জেনে নিন তেমনই ৪ সহজ উপায়।

ব্যবহার করুন দুধ

দুধে রয়েছে এনজাইম, প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ উপাদান। তাই ব্ল্যাকহেডস দূর করতে খুবই কাজে দেয় এই উপাদানটি। এছাড়া ত্বকের কোলাজেন উৎপাদন বাড়িয়ে আপনার বলিরেখাও মলিন করে তোলে। কিন্তু ব্ল্যাকহেডস সরাতে কীভাবে এই দুধ ব্যবহার করবেন? জেনে নিন।

একটি বাটিতে ২ টেবিল চামচ দুধ এবং ১ টেবিল চামচ লেবুর রস নিন। তাতে সামান্য পরিমাণে দানা দানা লবণ মিশিয়ে নিন। এবার মিশ্রণটি ব্ল্যাকহেডসের উপর লাগিয়ে সামান্য ঘষে নেবেন। তবে জোরে চাপ দিয়ে ঘষবেন না। এরপর ধুয়ে ফেলুন। এতেই দূর হবে ব্ল্যাকহেডসের সমস্যা।

কাজে লাগবে ওটস

ব্ল্যাকহেডস দূর করতে আপনি কয়েকটি ঘরোয়া উপাদান ব্যবহার করতে পারেন। তার মধ্যে ওটস অন্যতম। এর সঙ্গে মধু মিশিয়ে বানিয়ে নিতে পারেন পেস্ট। কীভাবে ব্যবহার করবেন? ব্ল্যাকহেডস দূর করতে কীভাবে কাজে লাগাবেন এই ওটসকে?

একটি পাত্রে পরিমাণমতো ওটস নিয়ে গুঁড়া করে নিতে হবে। খেয়াল রাখবেন ওটস যেন সামান্য দানা দানা থাকে। এর সঙ্গে সামান্য পানি আর মধু মিশিয়ে নিন। ওটস আপনার ত্বককে এক্সফোলিয়েট করবে। আর মধু আপনার ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখবে। ব্ল্যাকহেডসের উপর এই প্যাক লাগিয়ে সামান্য ঘষে নিন। তারপর ধুয়ে ফেলুন।

তেল নিয়ন্ত্রণে ডিমের সাদা অংশ

ত্বকের অতিরিক্ত তেল নিঃসরণ থেকেই দেখা দেয় নানা সমস্যা। এতে বাড়তে পারে ব্ল্যাকহেডস। আর দেখা দিতে পারে ব্রণ সমস্যা। তাই আপনার মুখের অতিরিক্ত তেল নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এই কাজটি জন্য আপনাকে সাহায্য করতে পারে ডিমের সাদা অংশ। এটি ত্বকের অতিরিক্ত তেল নিঃসরণ রোধ করে। সেই সঙ্গে ধুলা-ময়লা থেকে ত্বককে সুরক্ষিত রাখে। তাই ব্ল্যাকহেডস হওয়ার সম্ভাবনাও অনেকটা কমে যায়।

একটি পাত্রে ডিমের সাদা অংশ নিন। তাতে যোগ করুন এক চা চামচ মধু। তারপর খুব ভালো করে ফেটিয়ে নিন। এবার আপনার মুখে যেখানে ব্ল্যাকহেডস আছে, সেখানে এটি ভালো করে লাগিয়ে নিন। কিছুক্ষণ পর মুখ ধুয়ে ফেলুন। কয়েকদিনেই পার্থক্য চোখে পড়বে।

ব্যবহার করুন পেট্রোলিয়াম জেলি

সবার বাড়িতে নিশ্চয় পেট্রোলিয়াম জেলি আছে। এটি ব্যবহার করেই ব্ল্যাকহেডস দূর করতে পারেন। আপনার নাকের দুপাশে যেখানে ব্ল্যাকহেডস আছে, তার উপর পেট্রোলিয়াম জেলি লাগিয়ে নিন। এবার গরম পানিতে ভিজানো তোয়ালে ভালো করে নিংড়ে নিন। সেটি আপনার মুখের উপর দিয়ে রাখুন। বেশ কিছুক্ষণ মুখের উপর রাখতে হবে। এতে মুখের রক্ত সঞ্চালন ভালো হবে। এবার তোয়ালে সরিয়ে ওয়াইপস বা টিস্যু দিয়ে পেট্রোলিয়াম জেলি মুছে নিন।


আরও খবর

কখন কীভাবে দই খাবেন

সোমবার ২১ এপ্রিল ২০২৫




আমাকে হোটেল থেকেও বের হতে দেয়নি

প্রকাশিত:বুধবার ৩০ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ৩০ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালীন রাজধানীর মিরপুরে গুলিতে বিএনপি কর্মী মাহফুজ আলম শ্রাবণ হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অভিনেতা ইরেশ যাকেরসহ ৪০৮ জনকে এজাহারনামীয় আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আর এই অভিনেতার বিরুদ্ধে হত্যা মামলার খবর সামনে আসতেই ক্ষোভে ফুসছে শোবিজ দুনিয়া।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পক্ষে থাকার পরও কেন ইরেশ যাকেরের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা- জানতে চেয়েছেন নেটিজেনরাও। এই অভিনেতার হয়ে কথা বলেছেন অনেকেই। সেই তালিকায় আছেন উপস্থাপক ও অভিনেতা শাহরিয়ার নাজিম জয়ও।

ইরেশ যাকেরের বিরুদ্ধে মামলার ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছে তুলে ধরেছেন নিজের জীবনের কথাও। তিনি জানিয়েছেন, মাসখানেক আগে তার বিরুদ্ধে যখন মামলা হয় তখন কিভাবে হেনস্তার শিকার হতে হয়েছিল তাকে।

আজ সোমবার এক ফেসবুক পোস্টে জয় লিখেছেন, অভিনেতা ইরেশ যাকেরের নামে মামলা দেওয়ায় সকল শিল্পী সমাজের সাথে আমিও তীব্র প্রতিবাদ জানাই। আজ থেকে আট মাস আগে আমার বিরুদ্ধেও এরকম একটি হয়রানিমূলক মামলা হয়েছিল। একমাত্র আশফাক নিপুণ ছাড়া আর কাউকে পাশে পাইনি। বরং বাদ পড়েছি বিভিন্ন কাজ থেকে।

তিনি আরও বলেন, আমেরিকায় শো করতে গিয়ে দুই একজন অতি উৎসাহী কলিগের কারণে মঞ্চে উঠা তো দূরের কথা আমাকে হোটেল থেকেও বের হতে দেয়নি। মামলার কারণে সামাজিকভাবে হেনস্তা হয়েছি। অনেক অতি উৎসাহী আত্মীয় আত্মীয়তা ভঙ্গ করেছে। অনেক কলিগ ফোনও ধরেনি। যোগাযোগ করেনি।

জয়ের বিরুদ্ধে যে ব্যক্তি মামলা করেছেন তিনি বর্তমানে থানায় আছেন জানিয়ে অভিনেতা বলেন, শুনেছি, আমার বিরুদ্ধে যে মামলা করেছিল সেই বাদী এখন থানায় আটক আছে। বিভিন্ন জনের নামে মামলা দিয়ে টাকা খাওয়ার অপরাধে। আমার বিরুদ্ধে পুলিশ সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করে আমার কোনো সম্পৃক্ততা পায়নি। পুলিশ এবং রাষ্ট্র কোনো হয়রানি করেনি। বরং হয়রানি করেছে আমার পরিচিত কাছের স্বজনেরা এবং চিরকালের বন্ধুরা।

সবশেষ জয় লিখেছেন, যাক আমি কারো প্রতি দোষারোপ করছি না। সকলকে ক্ষমা করে দিয়েছি। আমার নিজের ছোটখাটো ভুলের জন্য বারবার ক্ষমা চেয়েছি। বড় অপরাধী এবং অপরাধকে ছোট করে ফেলে এই ধরনের মামলা। যেখানে এমন একজন সেলিব্রেটির নাম ঢুকিয়ে দেওয়া হয় যে মামলার চেয়ে সেলিব্রেটিকে নিয়ে চর্চা হয় বেশি। তখন আসল অপরাধীরা মুচকি হাসে। মামলাটাকে হাস্যকর মনে করে। এতে বিচার প্রক্রিয়া পিছিয়ে যায়। আমরা চাই অপরাধীর বিচার হোক। যে যার জায়গা থেকে নতুন বাংলাদেশে ভুল সংশোধন করে নতুন করে বাচুক। সকলে সকলের প্রতি সহানুভূতিশীল হোক।


আরও খবর

মডেল মেঘনার জামিন মেলেনি

রবিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৫

সমাজে নারীর প্রেম নিয়েই সমস্যা

বুধবার ২৩ এপ্রিল ২০২৫




স্নিগ্ধ সাজে নতুন বছরকে বরণ

প্রকাশিত:বুধবার ০৯ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ৩০ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

বাঙালীর প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। বিশ্বজুড়ে কোটি বাঙালি এই দিনটি উৎসবে-আনন্দে পালন করেন। নতুন পোশাক এবং সাজ-গোজ যেন সেই আনন্দের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়। বৈশাখে বাঙালিরা সাধারণত শহরে কিংবা গ্রামের আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু, প্রতিবেশিদের সঙ্গে বর্ষবরণের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন।বাঙালীর প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। বিশ্বজুড়ে কোটি বাঙালি এই দিনটি উৎসবে-আনন্দে পালন করেন। নতুন পোশাক এবং সাজ-গোজ যেন সেই আনন্দের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়। বৈশাখে বাঙালিরা সাধারণত শহরে কিংবা গ্রামের আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু, প্রতিবেশিদের সঙ্গে বর্ষবরণের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন।

বৈশাখের সাজের ক্ষেত্রে আবহাওয়া ও সংস্কৃতি কেমন সে বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। বৈশাখে সাজ ভারী হলেও ন্যাচারাল লুক যেন বজায় থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। পহেলা বৈশাখের আগের রাতে কিংবা সকালে উঠেই মেহেদি দিতে হবে। মেহেদি সব উৎসবে বাড়তি আনন্দ যোগ করে। পোশাকের দিকে খেয়াল রেখে স্কিন টোনের সঙ্গে মিলিয়ে মেকআপ করতে হবে।

বৈশাখের দিন সকালে গোসলের সময় চুলে শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে এরপর সিরাম লাগাতে হবে।

সকালে সাজলেও বাসায় ফিরতে ফিরতে দুপুর কিংবা বিকেল হতে পারে। এজন্য অবশ্যই ত্বকে সানক্রিন লাগাতে হবে। এতে সারাদিন রোদে ঘুরে বেড়ালেও ত্বক ভালো থাকবে।

ত্বক টোনার দিয়ে পরিষ্কার করার পর কিছুক্ষণ সিরাম লাগিয়ে রাখতে হবে। এরপর ময়েশ্চারাইজ লাগিয়ে বিবি ক্রিম লাগাতে হবে। এরপর ড্যাব ড্যাব করে ফাউন্ডেশন লাগিয়ে ফেস পাউডার ব্যবহার করতে পারেন। হালকা করে ব্লাশন লাগাতে হবে।

ভ্রু একে নিতে হবে। পোশাকের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে চোখে আইশ্যাডো দিতে হবে। চোখের সাজের ক্ষেত্রে হাইলাইটার ব্যবহার করলে সাজ গর্জিয়াস দেখাবে। চোখে চিকন কিংবা মোটা করে আই লাইনার ও মাশকারা লাগাতে হবে। ঠোটে লিপস্টিক কিংবা লিপগ্লস লাগিয়ে নিতে হবে। নখে নেইলপলিশ লাগাতে পারেন।

দিনের বেলায় মেকআপের ক্ষেত্রে ন্যাচারাল লুক বেশ ভালো লাগবে। চুল খোলা রাখতে পারেন। ফ্রেঞ্চ বেণি অথবা চুলে ক্লিপ লাগাতে পারেন। শাড়ি পরলে খোপা করে ফুল গুজে দিলেও বেশ ভালো লাগবে।

বিউটিবক্স ওমেন্স পার্লারের বিউটি এক্সপার্ট ফাতেমা আক্তার বলেন, পহেলা বৈশাখের দিন সকালের সাজ খুব হালকা হতে পারে। প্রথমে ময়েশ্চারাইজার এরপর মেকআপ লং লাস্টিং রাখার জন্য প্রাইমার ব্যবহার করবো। তারপর প্রত্যেক মানুষের স্কিনশেড অনুযায়ী একশেড ব্রাইট ফাউন্ডেশন নির্বাচন করতে হবে। কনসিলার দিতে হবে। তারপর (ফেস পাউডার বা লুস পাউডার) দিয়ে মেকআপ সেট করে নিতে হবে। তারপর আই ভ্রু একে নিয়ে নিজস্ব ড্রেস কালার অনুযায়ী আইমেকআপ করে নিতে পারে। মাশকারা, আইলাইনার, কাজল, ব্লাশন, হাইলাইটার, লিপস্টিক। মেক আপ ধরে রাখার জন্য সেটিংস স্প্রে ব্যবহার করতে হবে। এতে মেকআপ লং লাস্টিং হবে।

বর্ষবরণে সাজের সঙ্গে পোশাক নির্বাচনে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। তাই চাইলে সুতি পাতলা কাপড়ের পাশাপাশি যেকোন কাপড়ের পোশাক পরা যেতে পারে। নারীরা থ্রি-পিস, শাড়ি কিংবা লেহেঙ্গা পরতে পারেন। ছেলে শিশুরা শার্ট-প্যান্ট, পায়জামা ও পাঞ্জাবি পরতে পারে। মেয়ে শিশুরা ফ্রক, টপস, থ্রি-পিস, লেহেঙ্গা পরতে পারে। তবে বৃদ্ধদের পোশাকের ক্ষেত্রে আরামের বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। ঢিলেঢালা নরম ও পাতলা কাপড়ের পোশাক নির্বাচন করতে হবে।

বিশ্বরঙ এর সত্ত্বাধিকারী বিপ্লব সাহা বলেন, দেশীয় ঐতিহ্যের সঙ্গে আন্তর্জাতিক চলের সংমিশ্রণ ঘটিয়ে বাহারি নকশা ও বৈচিত্রময়তায় উপস্থাপন করা হয়েছে পোশাকে। উৎসবের রঙে বাড়তি মাত্রা যোগ করতে বরাবরের মতোই দেশীয় কাপড়, উপকরণ ব্যাবহার করে বিশ্বরঙ। এবারের বর্ষবরণের আয়োজনে পোশাকে ট্রেন্ডি এবং ট্রেডিশনাল লুকের নান্দনিকতা উপস্থাপন করেছে। দেশের আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখে আরামদায়ক কাপড় যেমন সুতি, ধুপিয়ান সিল্ক, তসর সিল্ক, লিলেন, কাতান, জ্যাকার্ড কাপড় ব্যবহার করেছে, রঙের ব্যবহারেও কনট্রাস্ট কালারের পাশাপাশি রঙের ম্যাচিউরড টোন এর পরিমিত ব্যবহার লক্ষ্যনীয়।

তিনি বলেন, এবারের বর্ষবরণে কাজের মাধ্যম হিসাবে রয়েছে স্ক্রিন প্রিন্ট, ব্লক, ডিজিটাল প্রিন্ট, মেশিন এমব্রয়ডারী, কম্পিউটার এমব্রয়ডারী, হ্যান্ড এমব্রয়ডারী, কারচুপি, নকশী কাঁথা জারদৌসীসহ মিশ্র মাধ্যমের নিজস্ব বিভিন্ন কৌশল। উৎসবে বিশ্বরঙ প্রতিটি শ্রেণীর মানুষের জন্যই ভিন্ন কিছু যোগ করেছে। বাচ্চাদের জন্য এনেছে নান্দনিক সব কালেকশন সেই সাথে প্রাপ্ত বয়স্ক এবং নারীদের জন্য আছে ঐতিহ্য ও আভিজাত্যের ছোঁয়া। স্বাধ ও সাধ্যের সমন্ময়ে প্রিয়জনকে খুশি করতে বিশ্বরঙ নিয়ে এসেছে ১০০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকার মধ্যে আকর্ষনীয় শাড়ী।

দেশীয়ার সত্ত্বাধিকারী রবিন মুশফিক বলেন, এবার বৈশাখী পোশাকের রঙ নির্বাচনের ক্ষেত্রে কালারফুল রাখার চেষ্টা করেছি। সব রঙের পোশাক তৈরি করলেও পোশাকে বেশি ব্যবহার করা হয়েছে লাল, সাদা, বেগুনি, নীল, হলুদ, গ্রীন, ম্যাজেন্ডা, পেস্ট।

তিনি বলেন, পোশাকের ক্ষেত্রে কাটিংয়ে নতুনত্ব এসেছে। মেয়েদের ওয়ানপিস পোশাকে পকেট কুর্তি রয়েছে। ছেলে শিশু, তরুণ ও প্রবীণদের জন্য পাঞ্জাবি ও পায়জামা রয়েছে। নারী ও তরুণীদের জন্য শাড়ি, ওয়ান পিস ও থ্রিপিস রয়েছে। এছাড়া মেয়ে শিশুদের জন্য থ্রিপিস, ওয়ান পিস, সারারা, ঢোল সালোয়ার, ধুতি সালোয়ার ও স্কার্ট রয়েছে।

শিশু ও বৃদ্ধদের পোশাক ও জুতার ক্ষেত্রে আরামের বিষয় খেয়াল রাখতে হবে।

যুগে-যুগে, কালে-কালে নতুন বছর আসে আনন্দের বার্তা নিয়ে। কিন্তু সবার ঘরে একইভাবে উৎসবের আনন্দের বার্তা পৌঁছায় না। গরীব-দুঃখী, বস্তিবাসী, তাদের ঘরের হাড়িশূন্য। উনুনে ভাতের হাড়ি উঠে না। হা-ভাতে, জীর্ণবস্ত্রে মানবেতর জীবন কাটায়। উৎসবের বার্তা ঘোষিত হয় আমরা সকলে সমান। একে অপরের পরমাত্মীয়। নীতিকথায় মানবতার কথা উঠে আসলেও বাস্তবে সামাজিক চিত্র ভিন্ন। তখনই নতুন বছরের আনন্দ অর্থবহ হয়ে ওঠবে, সার্থক হবে; যখন সবাই একই কাতারে সামিল হয়ে উপভোগ করতে পারবো উৎসবের আনন্দ।


আরও খবর

কখন কীভাবে দই খাবেন

সোমবার ২১ এপ্রিল ২০২৫




পাঁচ দশকে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বেড়েছে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস

প্রকাশিত:শনিবার ২৬ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৯ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

দেশে ১৯৭৬ সালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড হয় ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পর পর ২০২৩ ও ২০২৪ সালে তা ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়ায়। সে হিসাবে পাঁচ দশকের বেশি সময়ের ব্যবধানে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বেড়েছে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপের পারদ চড়ছে চলতি বছরও। পরিবেশগত বিপর্যয় ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বৈশ্বিকভাবেই তাপমাত্রা বাড়ছে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা। তবে সে তুলনায় বাংলাদেশে বৃদ্ধির হারটা একটু বেশি। এতে জনজীবনের পাশাপাশি কৃষি উৎপাদনেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এভাবে উচ্চ তাপমাত্রা অব্যাহত থাকলে ভেঙে পড়তে পারে জনস্বাস্থ্য।

 

একজন মানুষ ঠিক কতটা তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে, তা নিয়ে কানাডার ইউনিভার্সিটি অব অটোয়ার একটি গবেষণা রয়েছে। বিজ্ঞানীরা অনেকের ওপর পরীক্ষাটি চালিয়েছেন। তাদের ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ও ৫৭ শতাংশ আর্দ্রতায় টানা ৯ ঘণ্টা রেখে দেখেছেন, বেশির ভাগই অসুস্থ হয়ে পড়ে। কেউ টানা ৯ ঘণ্টা থাকতেই পারেনি, আর যারা বেশি সময় ছিল তাদের বমি, ডায়েরিয়া, ডিহাইড্রেশনের মতো সমস্যা দেখা দিয়েছে।

দেশে বিগত কয়েক বছর তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণেও স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে গেছে। বিশেষ করে তাপমাত্রার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পেরে হিট স্ট্রোক, ডায়রিয়া, ডিহাইড্রেশন বেড়ে গেছে অনেক বেশি। রাজধানী ঢাকার মতো জনবহুল শহরে মানুষের শারীরিক ও মনোজগতে বড় পরিবর্তন হচ্ছে।

তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে মানুষ ও প্রাণিকুলে মহামারীসহ নানা রোগব্যাধির প্রাদুর্ভাব ঘটবে বলে আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। এ বিষয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, ‘‌জনস্বাস্থ্যের ভাষায় স্বাস্থ্য হলো মানুষ ও প্রকৃতির সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রাখার নাম। প্রকৃতি কোথাও আক্রান্ত হলে সেটা মানুষকেও কোনো না কোনোভাবে আক্রান্ত করবেই। আমাদের তাপমাত্রা যেভাবে বেড়ে চলছে, প্রকৃতি ও পরিবেশের জন্য তো বটেই, মানবস্বাস্থ্যের জন্যও এটা হুমকি। আমরা গত কয়েক দশকে অনেক নতুন নতুন রোগ-বালাইয়ের নাম শুনেছি। তাছাড়া অনেক বিরল রোগের প্রাদুর্ভাবও বাড়তে দেখা গেছে। এগুলো সবই প্রকৃতিকে আক্রান্ত করার ফল।

বাংলাদেশে যেভাবে প্রকৃত তাপমাত্রা ও অনুভূত তাপমাত্রা বাড়ছে, এতে গোটা বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য ব্যাহত হচ্ছে উল্লেখ করে ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, আমরা বলি, মানুষ হলো প্রকৃতির সন্তান। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির একটা কারণ তো আছেই। এর বাইরে যেভাবে দ্রুত তাপমাত্রা বেড়ে চলছে, এটা চলতে থাকলে ইকোসিস্টেমে মারাত্মক প্রভাব পড়বে। এরই মধ্যে আমরা বায়ুদূষণের কারণে ভুগছি। বায়ুদূষণের কারণে যেসব রোগ-বালাই বাড়ছে, সেগুলো সামাল দেয়া যাচ্ছে না। আমরা ডেঙ্গু নিয়ে ভুগছি। ডায়রিয়ার প্রকোপও বাড়ছে। এগুলো সবই অতিরিক্ত তাপমাত্রার সঙ্গে সম্পর্কিত।

বাংলাদেশের তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রবণতা নিয়ে গত বছর একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিশ্বব্যাংক। প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে ১৯৮০ থেকে ২০২৩ সালএ পাঁচ দশকের তাপমাত্রা পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, পাঁচ দশকের বেশি সময়ের ব্যবধানে বাংলাদেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বেড়েছে ৫ ডিগ্রির বেশি। এ সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা বেড়েছে দক্ষিণাঞ্চলে, ৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। উত্তরাঞ্চলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বেড়েছে ৪ দশমিক ৯ ডিগ্রি। আর রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে।

গবেষণা প্রতিবেদনটি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ১৯৮০ সালের পর থেকে দেশের তাপমাত্রা ক্রমান্বয়েই বেড়েছে। সেই সময় থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত দেশে গড় তাপমাত্রা বেড়েছে ১ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময়ে প্রতি বছর গড়ে বেড়েছে শূন্য দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস হারে। বাংলাদেশের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে জলবায়ু পরিবর্তন, পরিবেশগত বিপর্যয়সহ নানা কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। আর ঢাকায় তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে গণপরিসর, সবুজ ও জলাশয়ের পরিমাণ ক্রমান্বয়ে কমে যাওয়াকে।

দেশের সবচেয়ে উষ্ণ মাস হিসেবে বিবেচনা করা হয় এপ্রিলকে। এ বছর চলতি মাসে দেশে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়, ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকালও দেশের সাত জেলায় তাপপ্রবাহ ছিল। তাপ বাড়ার এ প্রবণতা আজও অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

বাংলাদেশে যেভাবে প্রকৃত তাপমাত্রা ও অনুভূত তাপমাত্রা বাড়ছে এতে গোটা বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য ব্যাহত হচ্ছে বলে মন্তব্য করছেন বিশেষজ্ঞরা। জলাবায়ু পরিবর্তনের কারণ ছাড়াও মানবসৃষ্ট নানাবিধ কারণে দেশের তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রবণতা ব্যাপকতর হচ্ছে বলে জানান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মনিরুজ্জামান। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘‌বাংলাদেশে এপ্রিলে গরমের তীব্রতা বাড়তে থাকে। মে মাসে তীব্র গরম থাকার পর জুনে মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশে প্রবেশ করে। ধীরে ধীরে বর্ষার আগমন ঘটলে তাপমাত্রার তীব্রতা কমতে থাকে। গত বছরটা ছিল আমাদের জন্য ব্যতিক্রম। তবে চলতি বছর এখন পর্যন্ত গরম তার স্বাভাবিক মাত্রাতেই আছে।

আন্তর্জাতিক ওয়েদার বিশ্লেষণ বলছে, এ বছর তাপমাত্রা গতবারের মতো রেকর্ড ভাঙবে না। বৃষ্টিবাদলও হবেএমনটা জানিয়ে ড. মনিরুজ্জামান বলেন, এখানে সমস্যা যেটা হচ্ছে, ঢাকাসহ দেশের নগর এলাকায় মানবঘটিত কারণে গরমের তীব্রতা বেশি অনুভূত হচ্ছে। বিশেষ করে ইটভাটা, অত্যধিক কলকারখানা, আনফিট যানবাহন, বাসাবাড়ি ও অফিস-আদালতে এসির সংখ্যা বৃদ্ধি, উন্নয়ন কর্মযজ্ঞের কারণে তীব্র বায়ুদূষণ, অবৈজ্ঞানিক উপায়ে বর্জ্য পোড়ানোএসবই গরমের অনুভূতি বাড়িয়ে দিচ্ছে। ফলে তাপমাত্রা হয়তো আগের চেয়ে অল্প বেড়েছে, কিন্তু গরমের অনুভূতি ৫-৭ ডিগ্রির মতো বেশি মনে হয়। এজন্য জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানো বন্ধ করাসহ টেকসই উদ্যোগ না নিলে আগামী দিনগুলোয় বাংলাদেশের মতো এলাকায় মরুভূমির গরম অনুভূত হবে। ফলে এখানের জনস্বাস্থ্য ও কৃষি মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পানির আধার, বৃক্ষ নিধন আর কংক্রিটের আচ্ছাদনের কারণে ঢাকা পরিণত হয়েছে আরবান হিট আইল্যান্ডে। ফলে নগরীর তাপমাত্রা ৩৪-৩৬ ডিগ্রি থাকলেও তার অনুভূতি ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রিতে গিয়ে পৌঁছে। যে কারণে গরমের মৌসুমে এ নগরীর তাপমাত্রা অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছে। বিভিন্ন এলাকায় পানিরও তীব্র সংকট তৈরি হয়। বাড়ে রোগ-বালাইয়ের প্রবণতাও।

প্রায় চারদিন ধরে দেশের বিভিন্ন এলাকায় উষ্ণ তাপপ্রবাহ চলছে। এর মধ্যে কিছু এলাকায় বৃষ্টি হলেও তাতে তাপ কমেনি। আবহাওয়ার বার্তায় বলা হয়েছে, এখন যে তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে তা আজ পর্যন্তও চলতে পারে। রোববার থেকে দেশের কিছু স্থানে বৃষ্টি শুরু হতে পারে। তাতে কিছুটা কমতে পারে তাপমাত্রা।

ঢাকাসহ দেশের বড় বড় শহরে তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও উষ্ণ তাপপ্রবাহের বেশ কয়েকটি কারণ দেখছেন পরিবেশবিদরা। তারা বলছেন, এর মূলে রয়েছে ভূমি আচ্ছাদনের (সবুজ, পানি ও ধূসর বা কংক্রিট আচ্ছাদন) মাধ্যমে পরিবেশের ভারসাম্য বিনষ্ট, কংক্রিটের পরিমাণ মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধি। সেই সঙ্গে ভবনের নকশায় পরিবেশ ও জলবায়ুর ধারণা অনুপস্থিত, কাচনির্মিত ভবন ও এসিনির্ভর ভবনের নকশা তৈরি, সবুজ এলাকা নষ্ট করে অপরিকল্পিত স্থাপনা নির্মাণ, বনায়ন না করাসহ বহুবিধ কারণ রয়েছে। ময়লার ভাগাড়, ইটভাটা, যানবাহন ও শিল্প-কারখানার ধোঁয়া থেকে সৃষ্ট বায়ুদূষণে নগরের তাপমাত্রা বৃদ্ধির পাশাপাশি বায়ুদূষণে সৃষ্ট অতিক্ষুদ্র কণার কারণেও নগরে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

প্রাকৃতিকভাবেই ঢাকা শহরে কয়েক দশক আগেও নগর পরিকল্পনার মানদণ্ড অনুযায়ী পর্যাপ্ত পরিমাণ সবুজ এলাকা ও জলাশয় বিদ্যমান ছিল। কিন্তু নগর এলাকায় সরু রাস্তার পাশেই সুউচ্চ ভবন নির্মাণ, সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলোর মাধ্যমে জলাশয়-জলাধার-সবুজ এলাকা ধ্বংস করা হচ্ছে। নির্মল বাতাস, স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ, শীত ও গরমের তীব্রতা থেকে নগরবাসীকে সুরক্ষা দেয়া নগর কর্তৃপক্ষের আবশ্যিক দায়িত্ব বলে মনে করেন খোদ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ। তিনি বলেন, নগরবাসীকে পরিবেশগত ক্ষতি থেকে বাঁচাতে বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছি। প্রথমত, আমরা গণপরিসর ও জলাশয় ব্যবস্থাপনার দিকে গুরুত্ব দিচ্ছি। যেগুলো বেদখল, সেগুলো উচ্ছেদ চালিয়ে দখলমুক্ত করছি। আবার নতুন নতুন জায়গায় গণপরিসর সৃষ্টি করছি। দ্বিতীয়ত, রাজধানীর কড়াইল বস্তিতে আমরা সবুজায়নের কাজ করছি। এতে বস্তিবাসী আমাদের সঙ্গে কাজ করছে।

তাপপ্রবাহের কারণে দেশে কৃষির উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। বিভিন্ন জেলায় দেখা দিয়েছে পানির সংকট। এতে ফল ও ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। কৃষি গবেষকরা বলছেন, রোদ বা সূর্যের আলো কৃষির জন্য ক্ষতিকারক নয়, বরং উপকারী। কিন্তু অতি তাপমাত্রা বা তাপপ্রবাহ কিংবা শৈত্যপ্রবাহ কৃষির জন্য সহায়ক নয়। সেই অসহিষ্ণু পরিস্থিতির ওপর দিয়েই যাচ্ছে এখন দেশের মানুষ।

কৃষিবিদরা বলছেন, তাপপ্রবাহের কারণে পানির স্তর নিচে নেমে যায়। ভালো ফলনের জন্য ফলমূল ও ফসলের গাছের গোড়ায় পানি পৌঁছানো জরুরি। গাছের গোড়ায় পানি নিশ্চিত করা গেলে তাপমাত্রা আরো ২-৪ ডিগ্রি বৃদ্ধিতে গাছের কোনো ক্ষতি হবে না। গাছের ক্ষতি না হলে ফল ও ফসলেরও কোনো ক্ষতি হওয়ার কথা না। কিন্তু তাপপ্রবাহ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কমে যাচ্ছে বৃষ্টির প্রবণতাও। বৃষ্টি না হওয়ায় পরিস্থিতি দিন দিন অবনতির দিকে যাচ্ছে। ফলে সামনের দিনগুলোয় ফসলের উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

তাপপ্রবাহ তথা হিট শকে মাঠের বোরো ধানের ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটছে, বিশেষ করে উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে। কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে গেলে ধানে চিটা ধরার আশঙ্কা থাকে। এ অবস্থায় ধানে ফুল অবস্থায় পানি খুব গুরুত্বপূর্ণ। ধানগাছের গোড়ায় সর্বদা দুই-তিন ইঞ্চি পানি ধরে রাখা দরকার।

আম, লিচু, কাঁঠাল, জাম, জামরুলসহ সব ধরনের ফল ও ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে আম ও লিচু ঝরে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের বরাত দিয়ে কৃষিবিদরা বলছেন, তীব্র তাপপ্রবাহে বোরো ধানসহ অন্যান্য ফসলও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। বর্তমানে পোকামাকড় ও রোগ-বালাই তেমন না থাকলেও দীর্ঘমাত্রায় তাপপ্রবাহে ধান নিয়ে শঙ্কা বাড়ছে।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে পরিবেশ ও বন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, বৈশ্বিক তাপমাত্রা বাড়ছে, এতে আমাদের দেশেও তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে আমরা যেভাবে কংক্রিট আচ্ছাদন দিয়েছি, তাতে তাপমাত্রাকে সহনশীল রাখার চেষ্টা না করে আমরা তা কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছি। ঢাকা শহরে তাপমাত্রা বেশি হওয়ার কারণ মূলত অতিমাত্রায় কংক্রিটের আচ্ছাদন। সেই সঙ্গে সবুজ, জলাশয় ও গণপরিসর কমে আসা। তাপমাত্রা মোকাবেলায় স্বল্প, মধ্য আর দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থা নিতে হবে। আপাতত অতিরিক্ত তাপ থেকে স্বস্তি দিতে তীব্র গরমের দিনে ওয়ার্ক ফ্রম হোম, স্কুল বন্ধ রাখা, রাস্তায় সুপেয় পানি সরবরাহ করাসহ নানা উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে। আমরা পরিকল্পনা করছি রাজধানীতে গাছের আধিক্য কীভাবে বাড়ানো যায়। তবে এ তাপপ্রবাহ সমস্যার স্বল্পমেয়াদি কোনো সমাধান নেই। রাজধানীর ক্ষেত্রে মধ্যমমেয়াদি সমাধান হলো ঢাকাকে সবুজায়ন করা আর দীর্ঘমেয়াদি সমাধান হলো বিকেন্দ্রীকরণ, যার নীতিগত সিদ্ধান্ত এখনই নিতে হবে।



আরও খবর