Logo
শিরোনাম

ইসলামপন্থী দলগুলোর উচিৎ বিএনপির সাথে বিরোধ সৃষ্টি না করা

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৩ জানুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৭ মার্চ ২০২৫ |

Image

পলাশ রহমান, সিনিয়র সাংবাদিক :

বেগম খালেদা জিয়া একবার বলেছিলেন, বিএনপির অবস্থান ডানপন্থীদের ডানে এবং বামপন্থীদের বামে। অর্থাৎ বিএনপি একটি উদার মধ্যপন্থী গণতান্ত্রিক দল। বিএনপির রাজনৈতিক আদর্শ 'ইসলাম' নয়, কিন্তু ইসলামী মূল্যবোধের সাথে বিএনপির সম্পর্ক গভীর। কারণ বাংলাদেশের গণমানুষ ইসলামী মূল্যবোধের প্রতি সংবেদনশীল।

কোনো রাজনৈতিক দলকে জনপ্রিয় করতে হলে সবার আগে জাতীর পার্লস বুঝতে হয়। জাতীর ধর্ম, সভ্যতা, সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হয়। যা বাংলাদেশের বাম ধারার রাজনীতিকরা কখনো বোঝেননি। তারা জাতীর বড় অংশের ধর্ম চেতনার প্রতি উদাসীনতা/তাচ্ছিল্য দেখিয়েছেন। এর ফলাফল আমাদের সামনে পরিস্কার। বাম রাজনীতি বাংলাদেশে সব সময় 'রাজনৈতিক এতিম' থেকে গেছে।

ইতালির রাজনীতিতে বামপন্থীরা বড় দুই শক্তির একটি। অতীতে তারা ক্ষমতায় ছিলো। এখন প্রধান বিরোধী দলে আছে। কই, তারা তো ইতালিয় গণমানুষরে ধর্ম চেতনার প্রতি তাচ্ছিল্যা দেখায় না! গির্জার বিরুদ্ধে, ভ্যাটিকানের বিরুদ্ধে কথা বলে না! মানুষের ধর্ম চর্চা নিয়ে অযাচিত নাক গলায় না!

আমরা সবাই জানি ইতালি ক্যাথলিক অধ্যুষিত দেশ। মোটা দাগে ধর্মকর্ম মানে এরা মূলত উৎসবকেই বোঝে। কিন্তু কোনো রাজনৈতিক দলকে বলেন তো- ভ্যাটিকানের বিরুদ্ধে, পোপের বিরুদ্ধে বা গির্জা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে টু-শব্দ করতে! তাদের কোনো সুযোগ সুবিধায় হস্তক্ষেপ করতে! করবে না। কারণ তারা তাদের জাতীর ধর্ম চেতনার খবর রাখে।

বিএনপির সাথে দেশের ইসলাপন্থী দলগুলোর দূরত্ব বাড়ছে। এই দূরত্বকে শত্রুতার পরিণত করছেন বিএনপিরই কিছু নেতা। তারা হঠাৎ ইসলামের সংস্কৃতি, প্রবাহমান ধর্মীয় আচার বিধির বিরুদ্ধে কথা বলতে শুরু করেছেন। বিএনপিকে ইসলামের রাজনৈতিক দর্শন বিরোধী দল হিসাবে উপস্থাপনের চেষ্টা করছেন প্রথম সারির নেতারা। এর ফল কী ভালো হবে? বিএনপিকে তো কেউ ইসলামী দল মনে করে না। বিএনপির রাজনৈতিক আদর্শ ইসলাম নয়, এটা সবাই জানে। বিএনপিকে কেনো গলা বাড়িয়ে এসব কথা বলতে হচ্ছে? বিএনপি কী দেশের গণমানুষের ধর্ম চেতনার প্রতি শ্রদ্ধা হারিয়ে ফেলছে? বিএনপি কী ইসলাম বিদ্ধেষী আওয়ামীলীগের প্রক্সি দেয়ার চেষ্টা করছে? নাকী ভারতকে খুশি করার জন্য এসব বলছে? নাকী বিএনপির কাঁধে বামের ভুত ভর করেছে?

বাংলাদেশের মানুষের ধর্ম চেতনা, ধর্ম সংস্কৃতি বিরোধী আর ভারতের মোসাহেবি বা গোলামির রাজনীতি মানুষ পছন্দ করে না। গণমানুষের চেতনার বাইরে গিয়ে ভারতকে খুশি করে ক্ষমতায় থাকা যায় না। এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ হলো শেখ ফ্যাসিনা।

একদিকে বিএনপি খেলাফত মসলিসের সাথে মিটিং করছে, অন্যদিকে বিএনপির নেতারা ইসলামী মূল্যবোধে আঘাত করে বক্তৃতা করছেন। এটা ভয়ঙ্কর ক্ষতির লক্ষণ। বিএনপি বহুদলীয় গণতন্ত্রের দল। বিএনপি বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের দল। বিএনপি ইসলামী মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল দল। বিএনপি ইসলামপন্থীদের আস্থার দল। বিএনপির নেতা তারেক রহমান জাতীয় ঐক্যমতের সরকার গঠনের স্বপ্ন দেখেন। এই মুহুর্তে বিএনপির আরো সতর্ক হওয়া দরকার। ভারতনীতিতে পরিস্কার অবস্থান থাকা দরকার। দেশের মানুষের পার্লস বুঝে রাজনীতি করা দরকার। বিএনপির নেতারা যখন প্রবাহমান ইসলামী সংস্কৃতির বিরুদ্ধে কথা বলেন, কিন্তু কাঁটাতারের বিষয়ে নিরব থাকেন, তখন সাধারণ মানুষের কাছে ভিন্ন বার্তা যায়। এই বিষয়গুলো বিএনপিকে আমলে নিতে হবে। এগুলো বাইপাস করে বিএনপি রাজনীতি করতে চাইলে ভুল হবে, অনেক বড় ভুল।

দেশের ইসলামপন্থী দলগুলোরও উচিৎ বিএনপির সাথে বিরোধ বৃদ্ধি না করা। দূরত্বের পারদ আপাতত উপরে উঠতে না দেয়া। বিএনপির সাথে রাজনৈতিক বিরোধে জড়ানোর সময় এখনো আসেনি। এখন বিএনপির সাথে বিরোধে জড়ানো মানে ২৪ এর চেতনাকে দূর্বল করে দেয়া। বিএনপিকে বিপথে ঠেলে দেয়া। সুড়ুৎ বাম এবং ভারতকে সুযোগ করে দেয়া।


আরও খবর



ছুটিতে এটিএম সেবা সবসময় চালু রাখতে নির্দেশ

প্রকাশিত:বুধবার ২৬ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৭ মার্চ ২০২৫ |

Image

ঈদের টানা ৯ দিনের ছুটিতে ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা সার্বক্ষণিকভাবে খোলা থাকবে। এর মধ্যে এটিএম বুথ, অনলাইন ব্যাংকিং ও মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু থাকবে। গ্রাহকদের সুবিধার্থে এটিএম বুথগুলোতে পর্যাপ্ত টাকা রাখার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

একই সঙ্গে অনলাইন ও মোবাইল ব্যাংকিং সেবা যাতে সার্বক্ষণিকভাবে চালু থাকে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি এটিএম বুথের নিরাপত্তার সঙ্গে ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেও বলা হয়েছে। ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ে কোনো সাইবার হামলার বার্তা পেলে সঙ্গে সঙ্গে গ্রাহকদের সতর্ক করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে একটি সার্কুলার জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে এটি সব মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস প্রোভাইডার, পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার ও পেমেন্ট সার্ভিস অপারেটরদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

সাপ্তাহিক ছুটি, ঈদের ছুটি ও বিশেষ ছুটি মিলে এবারের ঈদে টানা ৯ দিনের ছুটি থাকছে। আগামী শুক্রবার থেকে শুরু হবে ঈদের ছুটি। চলবে টানা ৫ এপ্রিল পর্যন্ত। এ হিসাবে আজ মঙ্গলবার ২৫ মার্চ ও আগামী বৃহস্পতিবার ২৭ মার্চ ব্যাংকগুলোতে স্বাভাবিক লেনদেন হবে।


আরও খবর

প্রবাসী আয়ে নতুন রেকর্ড

বুধবার ২৬ মার্চ ২০২৫




হিন্দুদের ওপর হামলা ধর্মীয় নয় রাজনৈতিক

প্রকাশিত:বুধবার ১৯ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৭ মার্চ ২০২৫ |

Image

দেশের প্রতিটি নাগরিকের বর্ণ, ধর্ম, জাতি এবং লিঙ্গ নির্বিশেষে মানবাধিকার রক্ষায় তার সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। গত বছরের আগস্টে ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর সংখ্যালঘুদের বিশেষ করে হিন্দুদের ওপর যে আক্রমণ হয়েছে তা ধর্মীয়ভাবে নয়, রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিল। তবে তার সরকার দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে বলে মন্তব্য করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে মার্কিন সিনেটর গ্যারি পিটার্স (ডি-এমআই) সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি এসব কথা জানান।

ড. ইউনূস মার্কিন সিনেটরকে বাংলাদেশের বিভিন্ন শহর ও শহর পরিদর্শন করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ধর্মীয় সম্প্রীতির প্রকৃত তথ্য জানতে দেশটি সফর করার জন্য অন্যান্য মার্কিন রাজনৈতিক নেতা, সাংবাদিক এবং কর্মীদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

ঘণ্টাব্যাপী এই সাক্ষাৎকালে দুই নেতা পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় এবং দুই বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও গভীর করার উপায় নিয়ে আলোচনা করেছেন।

সিনেটর পিটার্স অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার উদ্যোগ, গুরুত্বপূর্ণ কমিশনের প্রতিবেদন এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য পরিকল্পনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো কম সংস্কারে সম্মত হলে সরকার ডিসেম্বরে নির্বাচন অনুষ্ঠান করবে।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। এটি উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের দিন বড় বড় উদযাপন হবে, যেমনটি আমরা অতীতে দেখেছি। আর প্রধান কমিশনগুলো প্রস্তাবিত সংস্কারগুলোতে সম্মত হওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলো জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে। জুলাই সনদ দেশের ভবিষ্যৎ গতিপথ নির্ধারণ করবে।

পিটার্স সরকারের সংস্কার কর্মসূচির প্রশংসা করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে একটি মসৃণ গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।

সিনেটর পিটার্স বলেন, মিশিগানে তার নির্বাচনী এলাকায় অনেক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মানুষ বাস করেন, যার মধ্যে ডেট্রয়েট শহরও রয়েছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তিনি বলেন, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা নিয়ে ব্যাপক ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়েছে। এই ভুল তথ্যের কিছু অংশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও ছড়িয়ে পড়েছে, যা সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে।

জবাবে ড. ইউনূস বলেন, আমাদের আপনার সাহায্য প্রয়োজন। দয়া করে আপনার বন্ধুদের বাংলাদেশে ভ্রমণ করতে বলুন। এইভাবে আমরা ভুল তথ্য প্রচারণার বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারি।

দুই নেতা সামাজিক ব্যবসা, দারিদ্র্যমুক্ত পৃথিবী এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং বিশ্বের অন্যান্য স্থানে দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের হাতিয়ার হিসেবে ক্ষুদ্র ঋণ নিয়েও আলোচনা করেছেন।


আরও খবর



বাম্পার ফলনেও মুখে হাসি নেই আলুচাষীদের

প্রকাশিত:বুধবার ১২ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ২৬ মার্চ ২০২৫ |

Image

এ বছর আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে দাম কমে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে কৃষক। এক একর জমিতে আলু চাষে কৃষকের খরচ হয় প্রায় দুই লাখ টাকা। আলুর বাজারদর অনুসারে কৃষক এখন দেড় লাখ টাকাও উঠাতে পারছেন না। ফলে বর্তমান সময়ে প্রতি একর জমিতে কৃষকের ক্ষতির মুখে প্রায় ৫০ হাজার টাকা। প্রতি কেজি আলু উৎপাদনে কৃষকের ক্ষতি হচ্ছে প্রায় ৭-৮ টাকা।

কৃষকরা বলছেন, চলতি মৌসুমে আলুর উৎপাদনে আলুবীজের তীব্র সংকট ছিল। সেই সংকটের কারণে বেশি দামে বীজ কিনতে হয়েছে। এতে উৎপাদন খরচ বেড়েছে।

এ ছাড়া হিমাগারের খরচ বেড়েছে। সব মিলিয়ে উৎপাদন খরচ প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। কিন্তু আলুর দাম ৬০ শতাংশ পর্যন্ত কমে গেছে।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার রায়গঞ্জের কৃষক আব্দুল করিম বলেন, এবার সাড়ে ছয় একর জমিতে আলু আবাদ করেছি। ফলনও হয়েছে ভালো। তবে তার কপালে চিন্তার ভাঁজ। লাভ তো দূরের কথা, কীভাবে লোকসান কমানো যায় তা নিয়ে ভাবছি। প্রতি কেজিতে লোকসান সাত-আট টাকা।

এবারে বীজের খরচ বেশি হয়েছে জানিয়ে একই অঞ্চলের কৃষক সুকারু চন্দ্র দাস বলেন, ‘প্রতি কেজি আলুর বীজ কিনছি ১১০-১১৫ টাকায়। গতবারের চেয়ে অনেক বেশি। এক একর জমি ৪০ হাজার টাকা দিয়ে লিজ নিয়ে আলু আবাদ করছি। বেশি দাম দিয়ে সার কেনা লাগছে। কেজির হিসাবে আলু রাখতে বস্তাপ্রতি আমাদের খরচ বেড়েছে ১০০ টাকা করে। কোল্ড স্টোরেজে আলু রাখার জায়গা নেই। সব দিক দিয়েই কৃষকের বিপদ। সরকার কোল্ড স্টোরের দর ঠিক করি দেয়। আলুর দরও ঠিক করি দেউক। আমরা আলুর ন্যায্যমূল্য চাই।’

ঠাকুরগাঁওয়ের আলু চাষি আহসানুর রহমান হাবিব বলেন, ‘ফলন ভালো হওয়ায় আমাদের খুশি হওয়ার কথা ছিল, অথচ তার বদলে এখন আহাজারি করতে হচ্ছে। আলু চাষ করে এমন লসের মুখে পড়ছি।’ তিনি বলেন, ‘বীজ, সার, লেবার কস্টিং মিলায়ে বিঘাপ্রতি আমার খরচ পড়েছে লাখের ওপরে। আর এখন আলু বিক্রি করে পাচ্ছি গড়ে ৬৫ হাজার। বিঘায় ৩৫ হাজার টাকা লস।’

বাম্পার ফলন হওয়ার পরও হাবিবের মতো হাজারো মানুষ এ বছর আলু চাষ করে লোকসানের মুখে পড়েছেন। অথচ মাত্র কয়েক মাস আগেই দেশের বাজারে ৮০ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি হতে দেখা গেছে। দাম নিয়ন্ত্রণে রীতিমতো হিমসিম খাওয়ার একপর্যায়ে ভারত থেকে আলু আমদানির সিদ্ধান্তও নিতে হয়েছে সরকারকে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, প্রতিবছর পর্যাপ্ত উৎপাদন হওয়ার পরও সংরক্ষণের অভাবে দেশের আলুর বাজারে অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে।

গত মৌসুমে প্রতি কেজি আলুর দাম উঠেছিল ৬০-৮০ টাকার মধ্যে। এতে লাভবান হওয়ায় এবার বেশি জমিতে আবাদ করেছেন তারা। এবার মৌসুমের শুরুতেই প্রতি কেজি বিক্রি হয় ৭০-৮০ টাকায়। সেই আলু এখন মাঠে বিক্রি হচ্ছে ১৩-১৪ টাকায়।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রংপুরের উপপরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন বলেন, চাষিরা যদি ন্যায্যমূল্য না পান, তাহলে লোকসান গুনতে হবে। সে ক্ষেত্রে আলু চাষে আগ্রহ হারাবেন তারা।

২০২২-২৩ অর্থবছরে আলুর উৎপাদন ছিল এক কোটি চার লাখ ৩২ হাজার টন, যা গত অর্থবছরে ছিল এক কোটি ছয় লাখ এক হাজার ১৮২ টন। ফলে এক বছরের ব্যবধানে আলুর উৎপাদন বেড়েছে মাত্র ১.৬২ শতাংশ। চলতি বছরে আলুর ফলন এখনো পর্যন্ত বেশ ভালো। তবে গত বছরের তুলনায় দাম কমেছে প্রায় ৬০ শতাংশ পর্যন্ত। এখন রপ্তানি বাজারে সম্ভাবনা থাকলেও রোগবালাইয়ের কারণে সেখানেও উপেক্ষিত বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা। আলুতে ব্রাউনরট রোগের উপস্থিতি শনাক্ত হওয়ায় ২০১৪ সাল থেকে বাংলাদেশ থেকে আলু রপ্তানিতে রাশিয়া নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। আলু ব্যাকটেরিয়ামুক্ত ও নিরাপদ করতে বাংলাদেশ সরকার অনেকগুলো পদক্ষেপ গ্রহণ করায় ২০২২ সালের মার্চে রাশিয়া এ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়।

এদিকে কুড়িগ্রামের কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের বাবর কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডের ম্যানেজার শামীম আল মাসুদ বলেন, ‘আমাদের কোল্ড স্টোরেজের ধারণক্ষমতা ১১ হাজার টন, যা পুরোপুরি বুকড। গত বছর এই সময়ে আমাদের কাছে আলু এসেছিল ৩০ হাজার টন। এ বছর এসেছে ৮০ হাজার টন। গতবারের তুলনায় এ বছর আলুর চাপ অনেক বেশি।

হিমাগার মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকেও সম্প্রতি একই দাবি করা হয়।

সম্প্রতি সংবাদ সম্মেলন করে সংগঠনটির সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, হিমাগারের রক্ষণাবেক্ষণের খরচ বেড়ে গেছে। বিদ্যুতের খরচ দিতেই তো সাত টাকা চলে যায়। এ পরিস্থিতিতে ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান হিমাগার মালিকরা।

বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য মো. আবু আব্দুল্লাহ বলেন, প্রতিবছর আমরা লস দিবো, সেটা তো হয় না। যাদের কথা ভেবে আমরা এতদিন লস দিয়েছি, তারাই তো কয়েক মাস আগে ৮০ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করে মোটা টাকা আয় করেছে। তাহলে কোল্ড স্টোরেজের ভাড়া দিতে অসুবিধিা কোথায়?

তবে কৃষকদের দাবির মুখে সরকারের পক্ষ থেকে সম্প্রতি হিমাগারের ভাড়া পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। ঘোষিত মূল্য অনুযায়ী, এখন থেকে হিমাগারে আলু রাখতে প্রতি কেজিতে চাষিদের ছয় টাকা ৭৫ পয়সা করে গুনতে হবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. ছাইফুল আলম বলেন, এবার আলুর ভালো ফলন হয়েছে। এবারে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আলুর উৎপাদন বেশি হবে। উৎপাদন খরচ কিছুটা বেড়েছে। তবে দাম কম থাকায় কৃষকের মধ্যে উদ্বেগ আছে। মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে কাজ করা হচ্ছে।


আরও খবর



আমতলীতে মাজার ভেঙে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধরা

প্রকাশিত:সোমবার ১৭ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৭ মার্চ ২০২৫ |

Image

বরগুনার ইসমাইল শাহ মাজারে বাৎসরিক ওরশ চলাকালে মাজার ভেঙে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে তৌহিদি জনতা। প্রায় দুই ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে এনেছে ফায়ার সার্ভিস। আগুনে মাজারের ভিতরের সামিয়ানা ও দুইটি বৈঠকখানা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। বিক্ষুব্ধ তৌহিদি জনতার হামলায় অন্তত ১৮/২০জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে কয়েক জনকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

ঘটনা ঘটেছে আমতলী পৌর শহরের বটতলা এলাকায় রবিবার রাত সোয়া ১২ টার দিকে। ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা দুই ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে রাত পৌনে তিনটায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

জানা গেছে, আমতলী পৌর শহরের বটতলা এলাকায় ১৯৯৬ সালে ইসমাইল শাহ মাজার স্থাপন করা হয়। ওই সময় থেকে মাজার কর্তৃপক্ষ দুইদিন ব্যাপী ওরশ উৎযাপন করে আসছেন। ২৮তম ওরশ রবিবার সন্ধ্যায় শুরু হয়। ওইদিন তৌহিদি জনতা মাওলানা ওমর ফারুক জেহাদী নেতৃত্বে তাদের শতশত সর্মাথক তৌহিদি জনতা এসে মাজার পুজা ও গান বাজনা বন্ধ করতে বলেন।

কিন্তু মাজারের খাদেম অ্যাড. মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল ওরশ বন্ধে অপরগতা প্রকাশ করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্য দ্বন্দ্ব হয়। এক পর্যায় তৌহিদি জনতা লাঠি সোটা নিয়ে মাজার ভাংচুর করে এবং আগুন দেয়। এতে ওই ওরশে আসা শতশত ভক্ত ও স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। মানুষ এদিক ওদিক ছুটাছুটি করতে থাকেন।

ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা দুই ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ততক্ষণে মাজারের দুইটি বৈঠকখানা ও মাজারের মধ্যে সামিয়ানা পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এতে অন্তত ১৮/২০ জন আহত হয়েছে।

আহতদের মধ্যে সোলায়মান (৩৮), রেজাউল (১৮), বাদল মৃধা (৪০), দুলাল মৃধা (৪২), আবু বকর (২৯), আবুল হোসেন (২৮), আব্দুল্লাহ আল নোমান (২৮), মো. মামুন (৪৩), আবুল কালাম (৪২), জোবায়ের (১৯) ও ফজলুল করিম (২৭) কে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অপর আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বলেন, শতশত তৌহিদি জনতা­ লাঠি সোঠা নিয়ে এসে মাজার ভাংচুর করে। পরে মাজারে আগুন দেয়। এ সময় ওরশে আসা শতশত ভক্তবৃন্দ ও স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আগুন ধাউ ধাউ করে জ্বলতে থাকে। মানুষ দিক বেদিক ছুটাছুটি করতে থাকেন।

ইসমাইল শাহ মাজারের খাদেম অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল বলেন, মাওলানা ওমর ফারুক জেহাদীর নেতৃত্বে তাদের শতাধিক সমর্থক লাঠি সোঠা নিয়ে এসে অতর্কিতভাবে মাজারে হামলা চালায় এবং আগুন দেয়। এতে মাজারের ভিতরের গিলাব এবং দুটি বৈঠকখানা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

তিনি আরো বলেন, তারা ভক্তবৃন্দকে মারধর করেছে। আমি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি দাবি করছি।

মুফতি ওমর ফারুক জেহাদী বলেন, এ মাজারটি ভন্ডের আস্তানা। এখানে ওরশের নামে গানবাজনা ও গাজা মাদক সেবন ও নারীর আসর বসে। আর মাজারটির ভক্তবৃন্দ মহিলারা পীরের কবরে ও প্রধান খাদেম অ্যাড. মোস্তাফিজুর রহমান বাবুলের পায়ে সেজদা দেয়। ওরসে নারী পুরুষদের গান বাজনাও চলে প্রকাশ্যে। যা সম্পুর্ণ ইসলাম বিরোধী। আমার মাজারের খাদেম মোস্তাফিজুর রহমান বাবুলকে এই রমজান মাসে অনৈতিক কাজ থেকে বিরত থাকতে বলেছিলাম কিন্তু তিনি তা না শুনে তার নির্দেশে তার ভক্তবৃন্দেরা আমার লোকজনের ওপর হামলা করেছে। এই ভন্ড মাজারের খাদেম বাবুল ও তার দোসরদের শাস্তি দাবী করছি।

আমতলী ফায়ার ষ্টেশনের ওয়ার হাউস ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ হানিফ বলেন, দুই ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে রাত ২ টা ৩৫ সময় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। আগুনে মাজারের ভেতরের সামিয়ানা ও দুই ঘর পুড়ে গেছে।

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. রাসেদ মাহমুদ রোকনুজ্জামান বলেন, আহতদের যথাযথ চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আমতলী থানার ওসি মো. আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে অঅইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

খবর পেয়ে আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) তারেক হাসান ও ওসি মো. আরিফুল ইসলাম আরিফ রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন। তারা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তারা বলেন আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরও খবর



ব্যাংক আমানতে ফিরছে সুদিন

প্রকাশিত:বুধবার ১২ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৭ মার্চ ২০২৫ |

Image

পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে নজিরবিহীন লুটপাট হয়েছে দেশের ব্যাংকখাতে। এতে দীর্ঘদিন ধরেই আস্থা সংকটে ভুগছিল ব্যাংকগুলো। তবে সম্প্রতি আস্থা ফিরতে শুরু করেছে ব্যাংক খাতে। টানা চার মাস পর জানুয়ারিতে ব্যাংকখাতে আমানতে প্রবৃদ্ধি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়ে ৮ শতাংশ ছাড়িয়েছে। অর্থাৎ গত জানুয়ারি শেষে ব্যাংকখাতে মোট আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৭ লাখ ৮১ হাজার ২৮৭ কোটি টাকা। আগের বছর একই সময় এই পরিমাণ ছিল ১৬ লাখ ৪৫ হাজার ৪৭ কোটি টাকা। এ হিসাবে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ দশমিক ২৮ শতাংশ।বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।

তথ্য বলছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের সেপ্টেম্বর থেকে ব্যাংক খাতে আমানতে প্রবৃদ্ধি কমতে থাকে, যা ৭ দশমিক ২৬ শতাংশে নেমে যায়। পরবর্তীতে অক্টোবরে তা সামান্য বেড়ে হয় ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ। নভেম্বরে আরও কিছুটা বেড়ে হয় ৭ দশমিক ৪৬ শতাংশ এবং ২০২৪ সালে ডিসেম্বরে তা দাঁড়ায় ৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ।

এর আগে ব্যাংকখাতে আমানতে এত কম প্রবৃদ্ধি দেখা গিয়েছিল ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। তখন ৬ দশমিক ৮৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। সবশেষ চার মাসে ব্যাংকগুলোতে আমানতের প্রবৃদ্ধি ছিল ৮ শতাংশের নিচে। এর পেছনে উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও তারল্য হ্রাসের পাশাপাশি রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সাথে সাথে ব্যাংক খাতের ভঙ্গুর অবস্থার চিত্র সামনে আনা হলে লোকজন ব্যাংকে টাকা জমা রাখা কমিয়ে দেওয়া দিয়েছি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, ব্যাংকগুলোতে আমানতের প্রবৃদ্ধি স্বাভাবিকভাবেই ১০ শতাংশের ওপর থাকা উচিত। জুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। তার আগে থেকেই ডলার সংকট, রিজার্ভের পতন, রেমিটেন্স কমে যাওয়াসহ অর্থনীতিতে বিভিন্ন ধরনের সংকট ছিল। আন্দোলনের ধাক্কা সামলে উঠতে অন্তর্বর্তী সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ নিলেও অর্থনীতিতে গতি কম। সরকার পতনের মাস অগাস্টে দেশে ব্যাপক সহিংসতা, বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতেও ব্যাংক আমানতে ৯.৫০ শতাংশ প্রবৃদ্ধির তথ্য দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। মাঝে কিছুটা কমে তা আবারও বাড়ছে যা ইতিবাচক।


আরও খবর