Logo
শিরোনাম

“ইসরাইলি গণহত্যা রুখতে ইসলামিক আর্মি গঠন সময়ের অনিবার্য দাবী”

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৮ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৬ মে ২০২৫ |

Image

ইসরাইলি গণহত্যা রুখতে নতুন করে মুসলিম জাতিসংঘ ও  ‘অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশন’ (ওআইসি) ভুক্ত ৫৭টি মুসলিম দেশ নিয়ে ইসলামিক আর্মি গঠন করা সময়ের অনিবার্য দাবী বলে মন্তব্য করেছেন মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফের বর্তমান পীর, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) চেয়ারম্যান ও পার্লামেন্ট অব ওয়ার্ল্ড সুফিজ প্রেসিডেন্ট হযরত শাহসুফি ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল হাসানী ওয়াল হোসাইনী আল মাইজভান্ডারী মাদ্দাজিল্লুহুল আলী। সোমবার (৭ই এপ্রিল) চট্টগ্রামের পটিয়া কোলাগাঁও ছবির মার্কেট সংলগ্ন ফরচুন শীপ ইয়ার্ড ময়দানে কোলাগাঁও সুন্নী সমাজ কল্যাণ পরিষদ আয়োজিত সুন্নী মহাসম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। তিনি বলেন, “সর্বজনবিদিত যে, ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত বর্বরোচিত হামলায় প্রতিদিন অসংখ্য নিরীহ নারী, শিশু ও বেসামরিক মানুষ নিহত এবং আহত হচ্ছেন—যা বিশ্ব বিবেককে স্তব্ধ করে দিয়েছে। শুধুমাত্র গত এক বছরে গাজায় শহীদ হয়েছেন ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ—এটি নিঃসন্দেহে ইতিহাসের ভয়াবহতম মানবাধিকার লঙ্ঘনের একটি দৃষ্টান্ত। অথচ মানবাধিকারের বুলি আউড়ানো যুক্তরাষ্ট্র নির্লজ্জভাবে সন্ত্রাসী ইসরাইলকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। এ পর্যন্ত জাতিসংঘও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি।” 

“বিশ্বব্যাপী মুসলিম জাতিসত্তা নিধনে কট্টরপন্থী ইহুদী নাসারারা গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত জানিয়ে সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভান্ডারী বলেন, ফিলিস্তিনের মজলুম গাজাবাসীর ওপর সন্ত্রাসী ইজরাইলের আগ্রাসন ও নারকীয় গণহত্যা রুখে দিতে হলে নতুন করে মুসলিম জাতিসংঘ ও  ‘অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশন’ (ওআইসি) ভুক্ত ৫৭টি মুসলিম দেশ নিয়ে ইসলামিক আর্মি গঠন করা সময়ের অনিবার্য দাবী।” 

“বাংলাদেশ সরকার কে অবিলম্বে ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিষয়টি ওআইসি-তে জোরালোভাবে উত্থাপন করে এবং আনুষ্ঠানিকভাবে এর নিন্দা জানানোর দাবী জানিয়ে বিএসপি চেয়ারম্যান বলেন,   আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর প্রতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আহ্বান জানাতে হবে যাতে তারা গাজায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে আরও সক্রিয় হন এবং ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক আদালতের আওতায় আনার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। একইসাথে বাংলাদেশে ইসরায়েলি সব পণ্য রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধ ও বয়কটেরও আহবান জানান তিনি।” 

দক্ষিণ চট্টগ্রামের লোহাগাড়া সুখ শুকছড়ি দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীন পীরে তরিকত আল্লামা নাছেরুল হক চিশতির সভাপতিত্বে সুন্নী মহাসম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন, দাওয়াতে ঈমানী বাংলাদেশের চেয়ারম্যান আল্লামা মুফতি মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দীন তাহেরী। বিশেষ বক্তা ছিলেন, রাউজান গহিরা এফ.কে জামেউল উলুম কামিল মাদ্রাসার মোহাদ্দেস মাওলানা ফখরুদ্দীন আল কাদেরী, কর্ণফুলী সৈন্যারটেক হযরত সিদ্দিকে আকবর (রা.) আল কুরআন একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মাওলানা মুহাম্মদ এনামুল হক এনাম কাদেরী, কোলাগাঁও গাউছিয়া তৈয়্যবিয়া সুন্নীয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা মুহাম্মদ নেজাম উদ্দীন আল কাদেরী, শিক্ষক মাওলানা নূরুল ইসলাম সাইদারীসহ আরো অনেকেই। মিলাদ কিয়াম শেষে মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ, দেশ ও বিশ্ববাসীর শান্তি-সমৃদ্ধি কামনায় আখেরী মুনাজাত পরিচালনা করেন শাহ্সূফী মাওলানা সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী মাইজভান্ডারী।


আরও খবর



রাষ্ট্র সংস্কারের যে সুযোগ তৈরি হয়েছে, তা যেন বেহাত না হয়

প্রকাশিত:শনিবার ২৬ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৫ মে ২০২৫ |

Image

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, রাষ্ট্র সংস্কারের যে সুযোগ তৈরি হয়েছে তা যেন বেহাত না হয়, এজন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগ শুধুমাত্র সরকারের নয়, দেশের সব নাগরিকের।

শনিবার সকালে জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে রাষ্ট্র সংস্কার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপের শুরুতে তিনি এসব কথা বলেন।

আলী রীয়াজ বলেন, আমরা এক ঐতিহাসিক মুহূর্তে আছি। আমাদের এই সুযোগ যারা তৈরি করে দিয়েছেন, বীর শহীদরা, তাদের কাছে আমাদের ঋণ আছে। যাতে কোনো অবস্থাতেই এই সুযোগ হাতছাড়া না হয়ে যায়। যেন এ সুযোগকে কেন্দ্র করে আমরা এমন এক বাংলাদেশ তৈরি করতে পারি, যেখানে কোনো অবস্থাতেই কাউকে নিপীড়নের মুখে না পড়তে হয়, বিচার বা বিচার বর্হিভূত ব্যবস্থার মধ্যে যেন তাকে মোকাবিলা করতে না হয়৷ সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই আমাদের যাত্রা।

তিনি বলেন, গত ১৬ বছর ধরে যখন ফ্যাসিবাদী শাসনের নিপীড়ন বাংলাদেশকে জর্জরিত করে ফেলেছিল, সে সময় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা জীবন বাজি রেখে লড়াই করেছেন, গণতান্ত্রিক সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছেন। বিচারিক এবং বিচারিক প্রক্রিয়ার বাইরে বিচার বর্হিভূতভাবে আপনাদের (জামায়াতে ইসলামী) নেতাকর্মীরা নিপীড়ন, অত্যাচারের শিকার হয়েছেন। তারপরও আপনারা সাহসিকতার সঙ্গে সঙ্গে তা মোকাবিলা করেছেন, সেই সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছেন। সেজন্য আপনাদের অভিনন্দন। আপনাদের প্রতি আমাদের সবার সমর্থন থাকছে।

এ সময় চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে যে নতুন বাংলাদেশের সৃষ্টি হয়েছে তা যেন ব্যার্থ না হয় সেজন্য ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে জামায়াতের নায়েবে আমির আব্দুল্লাহ মো. তাহের বলেন, জাতি এক নতুন বাংলাদেশ চায়। ৫৪ বছরের বাংলাদেশের ব্যাপারে অনেকের মধ্যে হতাশা রয়েছে। এ লক্ষ্যে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ নির্বাচন প্রত্যাশা করে।

তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে নিরন্তর সংগ্রামে আপনাদের (জামায়াতে ইসলামী) আবদান নিঃসন্দেহে সবার স্মরণে থাকবে। দেশ এবং জাতি নতুন করে আবার পুর্নগঠিত হবে, যখনই আমরা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠন করতে পারবো সেখানেও আপনাদের ভূমিকা থাকবে, এটা আমরা আশা করি।

রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেই উদ্যোগ সরকারের উদ্যোগ নয়, এটি বাংলাদেশের মানুষের দীর্ঘদিনের আকাঙক্ষার ফল। এরই অংশ হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। রাষ্ট্র সংস্কারের প্রয়োজন এবং তাগিদ রাজনৈতিক দল, জনসমাজ, ছাত্র, সাধারণ মানুষের কাছ থেকে এসেছে। সেই প্রক্রিয়ায় আপনারা (জামায়াতে ইসলামী) আন্তরিকভাবে অংশগ্রহণ করায় আপনাদের ধন্যবাদ জানাই।

এ সময় কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি মো. এমদাদুল হক,ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।


আরও খবর



ঐক্যের চেতনা ধারণ করে আমাদের অগ্রসর হতে হবে

প্রকাশিত:রবিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৩ মে ২০২৫ |

Image

জনসাধারণের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় ফ্যাসিবাদী শাসক পালাতে বাধ্য হয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। ঐক্যের চেতনাকে ধারণ করে আমাদের অগ্রসর হতে হবে। এটা শুধুমাত্র আমাদের অঙ্গীকার নয়, এটা আমাদের দায়।

জাতীয় সংসদের এলডি হলে গণসংহতি আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে আয়োজিত বৈঠকের প্রারম্ভিক বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

সংস্কার কমিশনগুলোর প্রস্তাবের বিষয়ে আলী রীয়াজ বলেন, যেগুলো দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে যে পুঞ্জীভূত সংকট মোকাবিলা করার চেষ্টা। শুধু সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন বাস্তবায়ন যথেষ্ট নয়, সে জন্য দরকার দরকার একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের কাঠামো তৈরি করা, গণতন্ত্রের চর্চা করা, গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোকে একত্রিত থাকা।

তিনি বলেন, জনসাধারণের ঐকবদ্ধ প্রচেষ্টায় ফ্যাসিবাদী শাসককে পলায়নে বাধ্য করেছে। এ ঐক্য বজায় রেখে, ঐক্যের চেতনাকে ধারণ করে আমাদের অগ্রসর হতে হবে। এটা শুধুমাত্র আমাদের অঙ্গীকার নয়, এটা আমাদের দায়।

তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে জুলাই আন্দোলনে যারা প্রাণ দিয়েছেন, লড়াই করেছেন, যারা আহত-নিহত হয়েছেন, তারও আগে গত ১৬ বছর ধরে সমস্ত রকম জুলুম নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াই করেছন, গত ৫৩ বছর ধরে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক, জবাবদিহিতামূলক রাষ্ট্র, সবার অংশগ্রহণমূলক রাষ্ট্র, নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করার মতো রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছেন, তাদের সবার কাছে আমাদের দায়।

সংস্কারের বিষয়ে সংলাপকে আলোচনার অগ্রগতি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা সামান্য হলেও অগ্রগতি অর্জন করতে পেরেছি। সেটা ধরে রাখতে না পারলে, বিকশিত করতে না পারলে সমস্ত সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যাবে। সেটা যাতে না হয়, সে জন্য সবার প্রচেষ্টা। আমরা একত্রিতভাবে অর্জনের চেষ্টা করছি। যে অর্জন শুধু আমাদের জন্য নয়, পরবর্তী প্রজন্মের জন্য এবং বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য একটি নতুন গণতান্ত্রিক জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র তৈরি করার জন্য।

সবাইকে একমত হয়ে দ্রুততার সঙ্গে জাতীয় সনদ তৈরি করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

প্রতিষ্ঠার লগ্ন থেকে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের সংগ্রামে যুক্ত ছিল গণসংহতি আন্দোলন উল্লেখ করে আলী রীয়াজ বলেন, তারা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে, অংশগ্রহণ করেছে।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় বৈঠকে উপস্থিত রয়েছেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান।


আরও খবর



ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এলো এপ্রিলে

প্রকাশিত:সোমবার ০৫ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৫ মে ২০২৫ |

Image

দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে সদ্য গত হওয়া এপ্রিল মাসে। গত মাসে ২ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন বা ২৭৫ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে) যার পরিমাণ ৩৩ হাজার ৫৫০ কোটি টাকার বেশি। সে হিসেবে প্রতিদিন রেমিট্যান্সে এসেছে ৯ কোটি ডলারের বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য জানিয়েছেন।

এর আগে ইতিহাসের সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল গত মার্চ মাসে। মার্চের পুরো সময়ে রেমিট্যান্স এসেছে ৩.২৯ বিলিয়ন (৩২৯ কোটি ডলার) ডলারের রেমিট্যান্স। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে) যার পরিমাণ ছিল ৪০ হাজার ১৩৮ কোটি টাকা। সে হিসাবে প্রতিদিন এসেছিল প্রায় ১০.৬১ কোটি ডলার বা ১২৯৫ কোটি টাকা করে।

তথ্য বলছে, গত বছরের এপ্রিল মাসের পুরো সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৪৫ কোটি ডলার। সে হিসাবে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে সদ্য বিদায়ী এপ্রিলে ৩০ কোটি ডলার বেশি এসেছে। আর চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) রেমিট্যান্স এসেছে দুই হাজার ৪৫৩ কোটি ডলার। যা গত অর্থবছরে একই সময়ে এসেছিল দুই হাজার ৪৪ কোটি ডলার। সে হিসাবে গত অর্থবছরে একই সময়ের চেয়ে ৪০৯ কোটি ডলার বেশি এসেছে।

এর আগে গত ডিসেম্বরে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল। সে রেকর্ড ভেঙে নতুন ইতিহাস গড়ে গত মার্চ মাস। আর এ নিয়ে অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস আগস্ট থেকে টানা ৯ মাস দুই বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করছে।

চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স আসে। এর পরের মাস আগস্টে এসেছিল ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে এসেছে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ, অক্টোবরে এসেছে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার, নভেম্বর মাসে এসেছে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে এসেছে ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়া‌রি‌তে ২১৯ কোটি ডলার এবং ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলার ও মার্চে মার্চে এলো ৩২৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পা‌ঠি‌য়েছেন প্রবাসীরা। আর সবশেষ এপ্রিলে এলো ২৭৫ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়। যা দেশের ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

এদিকে দেশে দীর্ঘদিন ধরেই উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। তবে এবার তা ২৭ বিলিয়ন ছাড়িয়েছে। দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সাথে সাথে রিজার্ভের পরিমাণ বাড়তে থাকে। প্রবাসী আয়ের ইতিবাচক ধারায়সেই রিজার্ভ ২৭ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে।

গত ৩০ এপ্রিল পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ২৭ দশমিক ৪১ বিলিয়ন ডলার। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী দেশের রিজার্ভ রয়েছে ২২ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন ডলার।

২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ২১ বিলিয়নে নেমে যায় বিপিএম-৬ রিজার্ভ। এরপর ধারাবাহিক কমে ১৮ বিলিয়নে নামে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অর্থপাচার কমে আসায় রিজার্ভ বাড়তে শুরু করে। ধীরগতিতে বেড়ে ১৯ মাস পর ২২ বিলিয়ন অতিক্রম করল রিজার্ভ। আর মোট রিজার্ভ ছাড়ায় ২৭ বিলিয়ন ডলার।


আরও খবর



বিশ্ববাজারের সঙ্গে দেশে স্বর্ণের দরে হের ফের

প্রকাশিত:রবিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ১৪ মে ২০২৫ |

Image

দেশের বাজারে বেশ ঘন ঘন ওঠানামা করছে স্বর্ণের দাম। তবে যে পরিমাণ কমে, তার চেয়ে বেশি বাড়ে। এভাবে গেল এক বছরে ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেট প্রতি ভরি স্বর্ণের দর বেড়েছে প্রায় ৬০ হাজার টাকা। স্থানীয় বাজারে স্বর্ণের দামের এমন ঊর্ধ্বগতি মূলত বিশ্ববাজারের কারণে ঘটছে বলে দাবি করছেন এ খাতের ব্যবসায়ীরা। তাদের ভাষ্য, দাম বাড়ার কারণে বেচাকেনায় ভাটা পড়েছে। বিক্রি কমে অর্ধেকে নেমেছে।

বিশ্ববাজারের তুলনায় কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভরিতে ৬০ হাজার টাকারও ব্যবধান রয়েছে। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, বাংলাদেশে কোন যুক্তিতে বা মানদণ্ডের ভিত্তিতে স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হয়? অর্থনীতিবিদরাও বলছেন, বিশ্ববাজারের সঙ্গে দেশের বাজারে দাম কীভাবে সমন্বয় করা হয়, তা অস্পষ্ট। এতে মূলত ব্যবসায়ীরা লাভবান হলেও ক্রেতারা ঠকছেন। এই পরিস্থিতিতে দাম নির্ধারণের সুনির্দিষ্ট কাঠামো দাঁড় করানো এবং আমদানির ক্ষেত্রে কার্যকর নীতিমালা প্রণয়নের পরামর্শ দেন তারা।

করোনা অতিমারির পর থেকে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম বাড়তে থাকে। কয়েক বছর ধরে স্বর্ণের দাম বেশ ওঠানামা করছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দর ওঠানামা করছে অস্বাভাবিকভাবে। বিশ্ববাজারে দাম বাড়ার কারণে বাংলাদেশেও অস্থির হয়ে উঠছে মূল্যবান ধাতুটির বাজার। ফলে দাম এত বাড়ছে কেন, আর কত দিন বাড়তে পারে, শেষ পর্যন্ত দাম কোথায় গিয়ে ঠেকবে এমন নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে স্বর্ণপ্রেমীদের মনে। আবার যারা বিনিয়োগ নিয়ে ভাবছেন, তারাও রয়েছেন দোলাচলে। বৈশ্বিক এই পরিস্থিতিতে এখন বিনিয়োগ করার উত্তম সময় কিনা, হঠাৎ আবার দাম পড়ে যাবে কিনা, এমন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তবে দেশে অস্বাভাবিক দাম বাড়া নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।

দেশে এক বছরে দাম কত বাড়ল

গত এক বছরে বেশ কয়েকবার উত্থান-পতন ঘটেছে দামের। তবে যতবার দাম কমেছে, অর্থাৎ যে পরিমাণ কমেছে, তার চেয়ে বেশি বেড়েছে। দেখা গেছে, দুই দফায় পাঁচ হাজার টাকা বাড়ার পর কমেছে এক বা দেড় হাজার টাকা। এভাবে গত এক বছরে দাম বেড়ে এখন ১ লাখ ৭২ হাজার টাকায় উন্নীত হয়েছে। সেই হিসাবে, এক বছরে প্রতি ভরিতে প্রায় ৬০ হাজার টাকা দাম বেড়েছে।

বিশ্ববাজারের চেয়ে দেশে স্বর্ণের দাম বেশি

দেশে ভালো মানের স্বর্ণের দাম ইতিহাসের সর্বোচ্চে উঠেছে গত ২২ এপ্রিল। বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) ওই দিন দুপুরে ২২ ক্যারেট মানের প্রতি ভরি স্বর্ণের (১১.৬৬৪ গ্রাম) দাম ঘোষণা করে ১ লাখ ৭৭ হাজার টাকা। তবে ওই  দিনই সন্ধ্যায় ফের দাম কমে দাঁড়ায় ১ লাখ ৭২ হাজার ৫৪৬ টাকা। এখন পর্যন্ত এই দরে বিক্রি হচ্ছে স্বর্ণের ভরি।

আন্তর্জাতিক বাজারদর পর্যালোচনায় দেখা গেছে, বাজুস নির্ধারিত স্বর্ণের এ দাম শুধু দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ নয়, বর্তমান আন্তর্জাতিক দরকেও ছাড়িয়েছে। এমনকি প্রতিবেশী ভারতের তুলনায়ও স্বর্ণের এ দর অনেক বেশি।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের স্পট মার্কেটে সর্বশেষ প্রতি আউন্স (২৮.৩৪৯৫ গ্রাম) ২২ ক্যারেট স্বর্ণ সর্বনিম্ন ৩ হাজার ৩৩৪ ডলারে কেনাবেচা হয়েছে। ডলারের বিনিময় মূল্য ১২২ টাকা দরে প্রতি ভরি স্বর্ণ ১ লাখ ৬৭ হাজার ৩৫১ টাকা দরে কেনাবেচা হয়েছে। অর্থাৎ দেশে প্রতি ভরি স্বর্ণ অন্তত ৫ হাজার টাকা বেশি দরে কেনাবেচা হচ্ছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনজেলওয়ান বাংলার অনলাইন পোর্টালের খবর অনুযায়ী, সে দেশের জুয়েলার্স সমিতির বেঁধে দেওয়া বাজারদর অনুযায়ী, গতকাল প্রতি গ্রাম ২২ ক্যারেট স্বর্ণ কেনাবেচা হয়েছে ৯ হাজার ৮৯ রুপিতে। রুপির বিনিময় মূল্য ১ টাকা ৪৩ পয়সা হিসাবে প্রতি ভরির দাম ভারতে ১ লাখ ৫২ হাজার ৬৬১ টাকা। এই হিসাবে বাংলাদেশে ভারতের চেয়ে ভরিতে প্রায় ২০ হাজার টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে স্বর্ণ।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের খালিজ টাইমসের তথ্যমতে, দুবাইয়ে বর্তমানে প্রতি গ্রাম ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দর ৩৬৭ দশমিক ৭৫ দিরহাম। প্রতি দিরহামের বিনিময় মূল্য ৩৩ দশমিক ৩৪ টাকা হিসাবে প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম দাঁড়ায় ১ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। অর্থাৎ বিশ্ববাণিজ্য কেন্দ্র দুবাইয়ে বাংলাদেশের চেয়ে প্রতি ভরি স্বর্ণের দর কম প্রায় ২৯ হাজার টাকা। বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, তিনটি দেশেই স্বর্ণের দর বাংলাদেশের চেয়ে অনেক কম। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, বাংলাদেশে কোন মানদণ্ডে স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হচ্ছে? 

ব্যবসায়ীদের একটি সূত্র জানিয়েছে, পুরান ঢাকার তাঁতীবাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা মূলত তেজাবি স্বর্ণের বাজার নিয়ন্ত্রণ করেন। তারা নতুন ও পুরোনো স্বর্ণ কেনেন। নিয়ন্ত্রণ মূলত তাদের হাতে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শীর্ষ স্বর্ণ ব্যবসায়ী বলেন, বর্তমানে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের স্বর্ণের বাজার ওঠানামা করছে। কলকাতার ব্যবসায়ীরা সাধারণত দুপুরের দিকে স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করে থাকেন। এরপর পুরান ঢাকার ব্যবসায়ীরা স্থানীয় দর নির্ধারণ করেন। এই দাম অলংকার ব্যবসায়ীদের জন্য, খুচরা ক্রেতাদের জন্য নয়। ওই দরের ওপর ভিত্তি করেই বাজুস স্বর্ণের দাম ঘোষণা করে। 

বাজুসের সহসভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, বিশ্ববাজারে দাম বাড়লে দেশে এর প্রভাব পড়ে। মূলত তেজাবি স্বর্ণের দাম বাড়লে বাজুস দাম বাড়ায়। এখানে বাজুসের কোনো কৌশল নেই। বরং দাম বাড়ার কারণে গত কয়েক বছরে বিক্রি কমে অর্ধেকে নেমেছে। তবে স্বর্ণ আমদানিতে এলসি জটিলতা, করহারসহ নানা সমস্যা রয়েছে বলেও জানান তিনি।

বিশ্ববাজারে দাম কেন বাড়ছে

অর্থনীতিবিদ এবং অলংকার ব্যবসায়ীদের মতে, বিশ্বব্যাপী ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ, বিভিন্ন দেশের রপ্তানির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি শুল্ক আরোপ, ডলারের দর কমে যাওয়াসহ নানা কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে এক ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। সাধারণত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো ডলার মজুত রাখে। গত তিন বছরের মধ্যে ডলারের দাম এখন সর্বনিম্ন। বৈশ্বিক এই অস্থিরতার কারণে দর আরও পড়ে যেতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো ডলারের পরিবর্তে স্বর্ণের মজুত বাড়াচ্ছে। দাম বাড়ার পেছনে এটি অনুঘটক হিসেবে কাজ করছে। বিশেষ করে চীনের ওপরে যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক বাড়ানোর কারণে চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারের পরিবর্তে ধারাবাহিকভাবে স্বর্ণ কিনছে। 

বিশ্ববাজারে আরও বাড়ার পূর্বাভাস

মার্কিন বিনিয়োগ ব্যাংক গোল্ডম্যান স্যাকস সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে মন্দার আশঙ্কা ৩৫ শতাংশে পৌঁছানোর পূর্বাভাস দিয়েছে, যা আগে ছিল ২০ শতাংশ। সংস্থাটি বলছে, মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ (ফেড) সুদহার কমাতে পারে, যা স্বর্ণের চাহিদা আরও বাড়িয়ে দেবে। 

এই ধারণা থেকে সংস্থাটি স্বর্ণের দাম নিয়ে তাদের আগের পূর্বাভাস আবার সংশোধন করেছে। প্রতিষ্ঠানটি আগে স্বর্ণের দাম আউন্সপ্রতি ৩ হাজার ৩০০ ডলার পর্যন্ত উঠবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছিল। নতুন বিশ্লেষণে তারা বলছে, প্রতি আউন্সের দাম ৩ হাজার ৬৫০ থেকে ৩ হাজার ৯৫০ ডলারের মধ্যে ওঠানামা করতে পারে। বছর শেষে এটি গড়ে ৩ হাজার ৭০০ ডলারে স্থির হতে পারে। 

দেশে স্বর্ণের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে একটি নিয়ম বা কাঠামো প্রণয়ন করা দরকার বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) ও অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ বুঝে না ঠিক কী পদ্ধতিতে দেশে স্বর্ণ বেচাকেনা কিংবা দাম নির্ধারণ করা হয়। অনিয়মতান্ত্রিকভাবে কিছুদিন পরপর দেশে দাম বাড়ানো হচ্ছে। বিশ্ববাজারের কথা বলে দাম বাড়ানো হলেও বিশ্ববাজারের সঙ্গে দামের ব্যাপক ফারাক থাকে। তাহলে কীসের ভিত্তিতে আসলে দেশে স্বর্ণের দাম বাড়ে বা কমে তা স্পষ্ট নয়। 

হঠাৎ দাম বাড়লে ক্রেতা বিপাকে পড়েন বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ। উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, কেউ হয়তো পরিকল্পনা করছেন আগামী সপ্তাহে তিনি এক ভরির গহনা কিনবেন। এক সপ্তাহ পর কিনতে গিয়ে দেখা গেছে ভরিতে চার-পাঁচ হাজার টাকা বেড়ে গেছে। তখন দেখা যায় তাঁর গহনা কেনার পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে। এমনটা নিয়মিতই ঘটছে। তাই কোন কোন যুক্তি বা মানদণ্ডে দেশে স্বর্ণের দাম নির্ধারিত হচ্ছে, বৈশ্বিক দামের সঙ্গে দেশের দর কতটা সংগতিপূর্ণ, সেসব বিষয় খতিয়ে দেখা খুবই জরুরি। 

ড. সায়মা হক বিদিশা বলেন, এখন হয়তো ব্যাগেজ রুলে বা বিভিন্ন উপায়ে বিদেশ থেকে স্বর্ণ আসে। বৈধ পথে আমদানির জন্য নির্দিষ্ট নীতিমালা থাকা দরকার, তাহলে বৈধ চ্যানেলে আমদানি বাড়বে। তখন দর সম্পর্কে সবাই অবগত থাকবে। একই সঙ্গে এতে অবৈধ পথে স্বর্ণ চোরাচালান কমে আসবে। তা ছাড়া দেশে কী পরিমাণ চাহিদা রয়েছে, কী পরিমাণ আমদানি হচ্ছে, সে বিষয়ে হালনাগাদ তথ্য থাকা উচিত বলে মনে করেন তিনি। 

বিশ্ববাজারের সঙ্গে বাংলাদেশের দরে সমন্বয়হীনতা থাকে উল্লেখ করে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, বৈশ্বিক অস্থিরতা, পুঁজিবাজারে মন্দাসহ নানা কারণে স্বর্ণে বিনিয়োগমুখী হন বিনিয়োগকারীরা। এতে স্বর্ণের দাম বাড়ে ঠিক, কিন্তু বাংলাদেশে দাম বাড়ানো কতটা যৌক্তিক, তা বিবেচনা প্রয়োজন। বিশ্ববাজারের দরের সঙ্গে কতটা সমন্বয় হয়েছে, তা দেখতে হবে।


আরও খবর



নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েনে একমত ইসি

প্রকাশিত:শুক্রবার ০২ মে 2০২5 | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৫ মে ২০২৫ |

Image

জাতীয় নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েনের ব্যাপারে সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবের সঙ্গে একমত পোষণ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিভাগে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞায় পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, র্যাব, আনসার ও বিজিবি কোস্টগার্ডের সঙ্গে প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগসমূহ সংযোজন হতে যাচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের একাধিক সূত্র বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করেছে।

সূত্র জানায়, নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব এবং লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক সচিবের কাছে এসব প্রস্তাবনা পাঠিয়েছেন। এতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংজ্ঞায় নতুন সংযোজনসহ বেশ কিছু প্রস্তাব রাখা হয়েছে। সরকারের কাছে সংস্কার কমিশনের আশু বাস্তবায়নযোগ্য প্রস্তাবের নির্ধারিত ছকে এসব প্রস্তাব পাঠানো হয়।

নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের অনেক সুপারিশের সঙ্গে ভিন্নমত ছিল নির্বাচন কমিশনের। গত ১৮ মার্চ দ্বিমত জানিয়ে ঐকমত্য কমিশনে চিঠি পাঠানো হয়। পরে সরকারের তরফ থেকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মন্ত্রণালয়গুলোর কাছে প্রস্তাব চাওয়া হয়। এরই অংশ হিসেবে নির্বাচন কমিশনেও চিঠি দেয় সরকার। সেখানে সংস্কার কমিশনের আশু বাস্তবায়নযোগ্য প্রস্তাবগুলোর ব্যাপারে মতামত চাওয়া হয়।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, ২০০১ সালের আগে নির্বাচনে সেনা মোতায়েন সংক্রান্ত কোনো বিধান আরপিওতে ছিল না। তারপরও ১৯৭৩ থেকে এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদেরও জেলা/থানা/উপজেলা পর্যায়ে পাঠানো হয়। ২০০১ সালের এক অধ্যাদেশে নির্বাচনে এনফোর্সিং এজেন্সির সংজ্ঞায় ডিফেন্স সার্ভিস অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কিন্তু ২০০৯ সালে তা বাদ দেওয়া হয়।

নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের মতে, সংজ্ঞায় প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগ যুক্ত করা হলে ভোটে সশস্ত্র বাহিনীকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হিসেবে মোতায়েনের পথ প্রশস্ত হবে। ফলে নির্বাচনে সেনা মোতায়েনে কারও সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করতে হবে না। এতে ভোটের প্রতি মানুষের আস্থা তৈরি হবে।

সূত্র জানায়, সংস্কার কমিশনের আশু বাস্তবায়নযোগ্য সুপারিশগুলোর মধ্যে ইসি, লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের নয়টি বিষয় রয়েছে, যেসব বিষয়ে নির্বাচনের কমিশনের কাছে মতামত চায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এগুলো হলোগণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ (সংশোধন), নির্বাচন কমিশন সচিবালয় আইন, ২০০৯ (সংশোধন), নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯১ সংশোধন, নির্বাচন পর্যবেক্ষণ ও গণমাধ্যম নীতিমালা (স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক) পর্যবেক্ষণ ও সাংবাদিক নীতিমালা (সংশোধন), রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮ সংশোধন, হলফনামার খসড়া, ভোটার তালিকা হালনাগাদকরণ (অভ্যন্তরীণ ও প্রবাসী), পোস্টাল ব্যালট পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন এবং রাজনৈতিক ও নির্বাচনী অর্থায়নে স্বচ্ছতা ও শুদ্ধাচার চর্চা নিশ্চিত করা।

সরকারের কাছে পাঠানো চিঠিতে সংস্কার কমিশনের সুপারিশের আলোকে ইসির মতামতও তুলে ধরা হয়।

এ বিষয়ে সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, আরপিও সংস্কার প্রস্তাবের মধ্যে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংজ্ঞায় সশস্ত্র বাহিনীকে যুক্ত করার বিষয়টি রয়েছে। এর মাধ্যমে আরপিওর আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞায় পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, র্যাব, আনসার, বিজিবি কোস্টগার্ডের সঙ্গে প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগসমূহ সংযোজন হবে। সরকারের সায় পেলে এর মাধ্যমে ১৫ বছর পর আরপিওতে এ সংস্কার আসবে।

ইসি সচিব বলেন, সুনির্দিষ্ট করে সব বলা সম্ভব নয়। ব্যালট পেপারে জলছাপের কথা (সুপারিশ)। এর সঙ্গে আর্থিক সংশ্লেষ রয়েছে। তাই এটা আমরা আশু বাস্তবায়নযোগ্য মনে করি না।


আরও খবর