Logo
শিরোনাম
উত্তরায় মাভাবিপ্রবি টেক্সটাইল অ্যালামনাই এসোসিয়েশন এর ইফতার মাহফিল নওগাঁয় গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগে স্বামী, শাশুড়ী ও দেবরকে আটক করেছে র‌্যাব নওগাঁয় হত্যার দায়ে যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ধামরাইয়ে অগ্নিকাণ্ডে এক পরিবারের ৪ জন অগ্নিদগ্ধ নড়িয়ায় জমিজমা সংক্রান্ত জের ধরে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ ভেনিস বাংলাদেশ প্রেস ক্লাবের ইফতার মাহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত রামগড়ে বিজিবি'র উদ্যোগে ইফতার ও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ নওগাঁয় মাটি ব্যবসায়ীদের নতুন কৌশল, রাতের আধারে কাটছে মাটি মাদক সেবনরত অবস্থায় ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী গ্রেফতার মাভাবিপ্রবিতে দোল পূর্ণিমা উদযাপিত

ইতিহাসের এক জ্বলন্ত সাক্ষী মহররম মাস

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৫ আগস্ট ২০২২ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ |

Image

মাহমুদুল হক আনসারী : চার সম্মানিত মাসের প্রথম মাস মহররম, যাকে আরবের অন্ধকার যুগেও বিশেষ সম্মান ও মর্যাদার চোখে দেখা হতো। আবার হিজরি সনের প্রথম মাসও মহররম। শরিয়তের দৃষ্টিতে যেমন এ মাস অনেক তাৎপর্যপূর্ণ, তেমনি এই মাসে সংঘটিত ঐতিহাসিক ঘটনার বিবরণও অনেক দীর্ঘ। আমরা দেখতে পাই, ইতিহাসের এক জ্বলন্ত সাক্ষী মহররম মাস। ইসলামের অনেক ঐতিহাসিক ঘটনার সূত্রপাত হয় এ মাসে। শুধু উম্মতে মুহাম্মদিই নয়, বরং পূর্ববর্তী অনেক উম্মত ও নবীদের অবিস্মরণীয় ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল এই মাসে।

নামকরণ থেকেই প্রতীয়মান হয় এ মাসের ফজিলত। মহররম অর্থ মর্যাদাপূর্ণ, তাৎপর্যপূর্ণ। যেহেতু অনেক ইতিহাস-ঐতিহ্য ও রহস্যময় তাৎপর্য নিহিত রয়েছে এ মাস ঘিরে, সঙ্গে সঙ্গে এ মাসে যুদ্ধবিগ্রহ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ ছিল, এসব কারণেই এ মাস মর্যাদাপূর্ণ। তাই এ মাসের নামকরণ করা হয়েছে মহররম বা মর্যাদাপূর্ণ মাস। মহররম সম্পর্কে (যা আশহুরে হুরুমের অন্তর্ভুক্ত তথা নিষিদ্ধ মাস) পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহর বিধান ও গণনায় মাসের সংখ্যা ১২। যেদিন থেকে তিনি সব আসমান ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন। তন্মধ্যে চারটি হলো সম্মানিত মাস। এটাই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান। সুতরাং তোমরা এ মাসগুলোর সম্মান বিনষ্ট করে নিজেদের প্রতি অত্যাচার করো না’- (সূরা তওবা : ৩৬)। অর্থাৎ সৃষ্টির সূচনালগ্ন থেকে আল্লাহতায়ালা ১২টি মাস নির্ধারণ করে দেন। তন্মধ্যে চারটি মাস বিশেষ গুরুত্ব ও তাৎপর্য বহন করে। ওই চারটি মাস কী কী? এর বিস্তারিত বর্ণনা হজরত আবু হুরায়রা (রা.) সূত্রে বর্ণিত, হাদিসে উল্লিখিত হয়েছে, নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেন, ‘এক বছরে ১২ মাস। এরমধ্যে চার মাস বিশেষ তাৎপর্যের অধিকারী। এরমধ্যে তিন মাস ধারাবাহিকভাবে (অর্থাৎ জিলকদ, জিলহজ ও মহররম) এবং চতুর্থ মাস মুজর গোত্রের রজব মাস’- (সহিহ বোখারি : ৪৬৬২ ও মুসলিম : ১৬৭৯)।

মহররম মাস সম্মানিত হওয়ার মধ্যে বিশেষ একটি কারণ হচ্ছে আশুরা (মহররমের ১০ তারিখ)। এ বসুন্ধরার ঊষালগ্ন থেকে আশুরার দিনে সংঘটিত হয়েছে অনেক ঐতিহাসিক ঘটনা ও হৃদয়বিদারক কাহিনি। অনেকেই না বুঝে অথবা ভ্রান্ত প্ররোচনায় পড়ে আশুরার ঐতিহ্য বলতে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর প্রিয়তম দৌহিত্র, জান্নাতের যুবকদের সরদার হজরত হুসাইন (রা.)-এর শাহাদাত ও নবী পরিবারের কয়েকজন সম্মানিত সদস্যের রক্তে রঞ্জিত কারবালার ইতিহাসকেই বুঝে থাকে। তাদের অবস্থা ও কার্যাদি অবলোকন করে মনে হয়, কারবালার ইতিহাস ঘিরেই আশুরার সব ঐতিহ্য, এতেই রয়েছে আশুরার সব রহস্য। আসলে বাস্তবতা কিন্তু এর সম্পূর্ণ বিপরীত। বরং আশুরার ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে প্রাচীনকাল থেকেই। হজরত হুসাইন (রা.)-এর মর্মান্তিক শাহাদাতের ঘটনার অনেক আগ থেকেই আশুরা অনেক তাৎপর্যপূর্ণ ও রহস্যঘেরা দিন। কারণ কারবালার যুদ্ধ সংঘটিত হয় ৬১ হিজরির ১০ মহররম। আর আশুরার রোজার প্রচলন চলে আসছে ইসলাম আবির্ভাবেরও বহুকাল আগ থেকে। তবে এ কথা অনস্বীকার্য যে, আবহমানকাল থেকে আশুরার দিনে সংঘটিত বিভিন্ন ঘটনা যেমন অপরিসীম গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি হিজরি ৬১ সনে আশুরার দিন কারবালার ময়দানের দুঃখজনক ঘটনাও মুসলিম জাতির জন্য অতিশয় হৃদয়বিদারক ও বেদনাদায়ক। প্রতি বছর আশুরা আমাদের এই দুঃখজনক ঘটনাই স্মরণ করিয়ে দেয়। তবে এও বাস্তব যে, এ ঘটনাকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে না পেরে আজ অনেকেই ভ্রষ্টতা ও কুসংস্কারের অন্ধকারে নিমজ্জিত। যারা কারবালার মর্মান্তিক ঘটনাকে ব্যথাভরা অন্তরে স্মরণ করে থাকেন, তারা কোনো দিনও চিন্তা করেছেন যে, কী কারণে হজরত হুসাইন (রা.) কারবালার ময়দানে অকাতরে নিজের মূল্যবান জীবন বিলিয়ে দিয়েছিলেন। তাইতো অনেকেই মনে করেন যে, জারি মর্সিয়া পালনের মধ্যেই কারবালার তাৎপর্য! হায়রে আফসোস! কী করা উচিত! আর আমরা করছি কী? হজরত হুসাইন (রা.)-এর উদ্দেশ্য ও আদর্শ বাস্তব জীবনে অনুসরণ করাই হবে এ ঘটনার সঠিক মর্ম অনুধাবনের বহিঃপ্রকাশ। হজরত হুসাইন (রা.)-ও রাসুলে করিম (সা.)-এর প্রতি মহব্বত ও আন্তরিকতার একমাত্র পরিচায়ক।

মহররম মাসে রোজা রাখা সম্পর্কে অনেক বিশুদ্ধ হাদিস বর্ণিত হয়েছে। বিশেষভাবে আশুরা অর্থাৎ মহররমের ১০ তারিখে রোজা রাখার ফজিলত সম্পর্কে অনেক হাদিস বর্ণিত হয়েছে। একটি হাদিস থেকে প্রতীয়মান হয়, ‘রমজান মাসের রোজা ফরজ হওয়ার আগে আশুরার রোজা উম্মতে মুহাম্মদির ওপর ফরজ ছিল। পরবর্তী সময়ে অবশ্যই ওই বিধান রহিত হয়ে যায় এবং তা নফলে পরিণত হয়। হাদিস শরিফে হজরত জাবের (রা.) সূত্রে বর্ণিত আছে, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের আশুরার রোজা রাখার নির্দেশ দিতেন এবং এর প্রতি উৎসাহিত করতেন। এ বিষয়ে নিয়মিত তিনি আমাদের খবরাখবর নিতেন। যখন রমজানের রোজা ফরজ করা হলো, তখন আশুরার রোজার ব্যাপারে তিনি আমাদের নির্দেশও দিতেন না এবং নিষেধও করতেন না। আর এ বিষয়ে তিনি আমাদের খবরাখবরও নিতেন না’ (সহিহ মুসলিম শরিফ : ১১২৮)। ওই হাদিসের আলোকে আশুরার রোজার শ্রেষ্ঠত্ব প্রতীয়মান হয়। এমনকি ওই সময়ে তা ফরজ ছিল। বর্তমানে এই রোজা যদিও নফল, কিন্তু অন্যান্য নফল রোজার তুলনায় অধিক গুরুত্বপূর্ণ। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) আশুরা ও রমজানের রোজা সম্পর্কে যে রূপ গুরুত্ব প্রদান করতেন, অন্য কোনো রোজা সম্পর্কে সেরূপ গুরুত্বারোপ করতেন না’- (সহিহ বোখারি ও মুসলিম)। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) এই রোজা নিজে পালন করেছেন এবং উম্মতকে রাখার প্রতি উৎসাহিত করেছেন। তাই এর পূর্ণ অনুসরণ ও আনুগত্যের মধ্যেই নিহিত রয়েছে উম্মতের কল্যাণ। এ ছাড়া অসংখ্য হাদিসে আশুরার রোজার ফজিলত বর্ণিত হয়েছে।

মুসলিম শরিফে হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘মহানবী (সা.) যখন আশুরার দিনে রোজা রাখেন এবং অন্যদেরও রোজা রাখার নির্দেশ প্রদান করেন, তখন সাহাবিরা অবাক হয়ে বলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! ইহুদি-নাসারারা তো এই দিনটিকে বড়দিন মনে করে। আমরা যদি এই দিনে রোজা রাখি, তাহলে তো তাদের সঙ্গে সামঞ্জস্য হবে। তাদের প্রশ্নের উত্তরে রাসুল (সা.) বললেন, ‘(তারা যেহেতু এদিন একটি রোজা পালন করে) আগামী বছর ইনশাআল্লাহ আমরা এই ১০ তারিখের সঙ্গে ৯ তারিখ মিলিয়ে দুই দিন রোজা পালন করব’ (সহিহ মুসলিম : ১১৩৪)।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) সূত্রে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি আশুরার দিনে আপন পরিবার-পরিজনের মধ্যে পর্যাপ্ত খানাপিনার ব্যবস্থা করবে, আল্লাহপাক পুরো বছর তার রিজিকে বরকত দান করবেন’ (তাবরানি : ৯৩০৩)। উল্লিখিত হাদিস সম্পর্কে আল্লামা ইবনুল জাওযিসহ অনেক মুহাদ্দিস আপত্তিজনক মন্তব্য করলেও বিভিন্ন সাহাবি থেকে ওই হাদিসটি বর্ণিত হওয়ায় আল্লামা জালালুদ্দিন সুয়ুতিসহ অনেক মুহাক্কিক আলেম হাদিসটিকে গ্রহণযোগ্য ও আমলযোগ্য বলে মন্তব্য করেছেন।

অতএব যদি কেউ উপরোক্ত হাদিসের ওপর আমল করার উদ্দেশ্যে ওইদিন উন্নত খানাপিনার ব্যবস্থা করে, তাহলে শরিয়তে নিষেধ নেই। তবে স্মরণ রাখতে হবে, কোনোক্রমেই যেন তা বাড়াবাড়ি ও সীমালঙ্ঘনের স্তরে না পৌঁছে।

লেখক : প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট [email protected]


আরও খবর



দাপ্তরিক কাজে দক্ষ ও স্মার্ট প্রশাসন গড়ে তুলতে হবে

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৫ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ |

Image

 পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি বলেছেন, জনস্বার্থের কাজগুলো অগ্রাধিকারভিত্তিতে গতিশীল রাখতে হবে। দাপ্তরিক কাজের ফাইলগুলো দীর্ঘ সময় আটকে রাখা যাবে না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কখনও জনদুর্ভোগ পছন্দ করেন না।

তিনি সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশ্যে বলেন, দাপ্তরিক নথিপত্রগুলো মুভমেন্টের দীর্ঘসূত্রতা নিরসন করে দক্ষ ও স্মার্ট প্রশাসন গড়ে তোলার মনমানসিকতা প্রত্যেকেরই থাকতে হবে। সরকারের উন্নয়ন কাজে কোনোরকম স্থিতিশীলতা নয়, গতিশীলতা থাকতে হবে বলে মন্তব্য করেন পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি।

সোমবার (৪ মার্চ) সকালে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জনাব কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি বাংলাদেশ সচিবালয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অফিস ঝটিকা পরিদর্শন শেষে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব প্রদীপ কুমার মহোত্তম এনডিসির অফিস কক্ষে তাৎক্ষণিক এক মতবিনিময় আলোচনায় সংশ্লিষ্টদের এ নির্দেশ দেন।

প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়া ও দারিদ্র্যবিমোচনের দিকটিকে অধিকতর গুরুত্বের সাথে দেখছেন। তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে দারিদ্র্যবিমোচন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, রাস্তাঘাটের উন্নয়ন, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছানো, আধুনিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার মাধ্যমে শিক্ষার হার বাড়ানোসহ সকল উন্নয়ন কাজ অব্যাহত রেখে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আমাদের কাজ করতে হবে। তিনি সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিকতার সাথে দেশের উন্নয়ন কাজে শরীক থাকার আহ্বান জানান।

প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা আরও বলেন, অনেকে অভিযোগ করেন দাপ্তরিক নথিপত্র চালাচালির দীর্ঘসূত্রতার কারণে সরকারের উন্নয়ন কাজের ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। কাজেই আমি চাই, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনী ইশতেহার ও নির্দেশনা অনুযায়ী পার্বত্যবাসীর কল্যাণে উন্নয়ন কাজগুলো স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে দ্রুত সম্পন্ন করার।

এসময় অন্যান্যের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব প্রদীপ কুমার মহোত্তম এনডিসি, যুগ্মসচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম এনডিসি, যুগ্মসচিব সজল কান্তি বনিক, উপসচিব মো. আলাউদ্দিন চৌধুরী ও সাবেক তথ্য কমিশনার সুদত্ত চাকমাসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।


আরও খবর



বার বার অবস্থান বদলাচ্ছে আব্দুল্লাহ

প্রকাশিত:রবিবার ১৭ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ |

Image

২৩ নাবিকসহ ভারত মহাসাগরে ছিনতাইয়ের শিকার হওয়া বাংলাদেশী জাহাজটির অবস্থান বারবার বদল করছে জলদস্যুরা।

গত মঙ্গলবার জলদস্যুরা জাহাজটির দখল নেয়ার পর নোঙ্গর করার পরও অন্তত তিনবার স্থান বদলেছে এমভি আব্দুল্লাহ। জলদস্যুরা বর্তমানে জাহাজটিকে সরিয়ে সোমালিয়ার গদবজিরান উপকূলে নোঙ্গর করেছে।

আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিক থেকে ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে আরব আমিরাত যাওয়ার পথে গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগরের সোমালি জলদস্যুদের কবলে পড়ে এমভি আবদুল্লাহ। জলদস্যুরা জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ২৩ নাবিকের সবাইকে জিম্মি করে।

দুদিন পর জাহাজটিকে নিয়ে যাওয়া হয় সোমালিয়া উপকূলে। সেখানে একদিন অবস্থান করেছিল জাহাজটি। পরে বৃহস্পতিবার দুপুরে আবার জাহাজটিকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

এমভি আবদুল্লাহকে বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে গ্যারাকাড উপকূলে নোঙর করা হয়েছিল। পরে সেখানে আরেকটা সশস্ত্র গ্রুপের হাতে তাদেরকে সোপর্দ করা হয়। এখন সেখান থেকে নাবিকসহ জাহাজটিকে অন্যদিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

শুক্রবার আরেক দফা স্থান পরিবর্তনের পর বর্তমানে জাহাজটি সোমালিয়ার গদবজিরান শহর থেকে ৪ নটিক্যাল মাইল দূরে অবস্থান করছে জাহাজটি।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএমওএ) স্যাটেলাইট ইমেজ ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে জাহাজটির সর্বশেন অবস্থান পর্যবক্ষেণ করছে গত মঙ্গলবার থেকে।

জাহাজটির এই গতিপথ ও অবস্থান দেখে বিএমএমওএ বলছে, জাহাজটি জলদস্যুদের নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার পর প্রথমেই তারা বাংলাদেশী পতাবাহী জাহাজটিকে দেড় দিনের মাথায় সোমালিয়া উপকূলের কাছাকাছি নিয়ে।

জলদস্যুদের কবলে পড়ার পরদিন বুধবার এটি ছিল সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিসু উপকূলের কাছাকাছি অবস্থানে। পরবর্তীতে সেটিকে আরো উত্তর দিকে সরিয়ে প্রথমে নেয়া হয় গারদাকে। এরপরই ভারতীয় নৌবাহিনী জাহাজটি ঘিরে নজরদারি বাড়ালে সেটি আবারো সরিয়ে নেয়া হয় গদজিরান উপকূলে।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএমওএ) সভাপতি ক্যাপ্টেন আনাম চৌধুরী বলেন, চারদিকে নেভাল সার্ভিলেন্স বাড়িয়ে দেয়ার কথা তারা শুনেছে। এ কারণে তারাও তাদের ক্ষমতা প্রদর্শন করছে এবং একেবার জাহাজের স্থান পরিবর্তন করে ফেলছে।

জলদস্যুদের ছবি প্রকাশ করেছে ভারতীয় নৌবাহিনী


এমভি আব্দুল্লাহ জলদস্যুদের কবলে পড়ার পর থেকে এবং এরপর সোমালিয়া উপকূলে প্রবেশের আগ পর্যন্ত কাছাকাছি দূরত্বে থেকে অনুসরণ করছিল ভারতীয় নৌবাহিনীর একটি যুদ্ধ জাহাজ।

এই তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটারে) প্রকাশ করে ভারতীয় নৌবাহিনী।

শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টায় ভারতীয় নৌবাহিনীর মুখপাত্র এক্স একাউন্ট থেকে যে ছবিটি প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যাচ্ছে এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজে চারজন অস্ত্রসহ টহল দিচ্ছে। তাদের সবার অবস্থাই ছিল জাহাজের মাস্টার কেবিনের ছাদে।

টুইটারের এই পোস্টে ভারতীয় নৌবাহিনী জানায়, গত ১২ মার্চ এমভি আব্দুল্লাহ থেকে সাহায্যের সিগন্যাল পেয়ে তারা একটি মেরিটাইম পেট্রোল এয়ারক্র্যাফ্ট-এলআরএমপি পাঠিয়েছিল। কিন্তু ভারতীয় বিমানটি পরে আর এমভি আব্দুল্লাহর সাথে কোনো ধরনের যোগাযোগ করতে পারেনি।

তারা জানায় পরবর্তীতে ভারতীয় নৌবাহিনী একটি যুদ্ধ জাহাজ মোতায়েন করে। যেটি ভারত মহাসাগরের সামুদ্রিক নিরাপত্তায় কাজ করছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে এই জাহাজটি এমভি আব্দুল্লাহকে নজরদারি শুরু করেছে।

ভারতীয় নৌবাহিনীর ওই পোস্টে আরো বলা হয়েছে সশস্ত্র জলদস্যুদের হাতে পণবন্দী বাণিজ্যিক জাহাজের ক্রুদের নিরাপত্তায় খেয়াল রাখছে তারা। জাহাজটি সোমালিয়া জলসীমায় পৌঁছানো পর্যন্ত ভারতীয় নৌবাহিনী নিরাপত্তা নিশ্চিতের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে বলেও জানানো হয় ওই পোস্টের মাধ্যমে।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ক্যাপ্টেন আনাম চৌধুরী বলেন,ওরা লং রেঞ্জ সার্ভিলেন্সের জন্য হেলিকপ্টার পাঠিয়ে ছবিটি নিয়েছে। কোনো দেশের জলসীমায় এ ধরনের ঘটনা ঘটলে সে দেশের নৌবাহিনী এসেসমেন্টের জন্য ফ্লাইট পাঠিয়ে এমন ছবি নিয়ে থাকে।

ভারতীয় নৌবাহিনীর এই ছবি দেখে নিজেদের জাহাজ বলে নিশ্চিত করেছেন মালিক প্রতিষ্ঠান কেএসআরএম গ্রুপ।

শনিবার কেএসআরএম গ্রুপের মিডিয়া অ্যাডভাইজর মিজানুল ইসলাম বলেন,ভারতীয় নৌবাহিনী তাদের টুইটার একাউন্টে যে ছবি প্রকাশ করেছে সেটি আমাদের এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজের ছবি।

অপারেশন আটলান্টার তথ্য


শুধু ভারতীয় নৌবাহিনী নয়, জলদস্যুদের হাতে আটক জাহাজটিতে নজর রাখছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন নেভাল ফোর্স-ইইউএনএভিএফওআর। জাহাজটি দস্যুদের কবলে পড়ার দুই দিন পর গত বৃহস্পতিবার এ নিয়ে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সংস্থাটি।

এই বিজ্ঞপ্তিতে তারা হেলিকপ্টার দিয়ে জাহাজটি পর্যবেক্ষণের একটি ছবিও প্রকাশ করেছে। যেখানে বলা হয়, এমভি আব্দুল্লাহকে পর্যবেক্ষণে রেখেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন নেভাল ফোর্স।

সমুদ্রে জলদস্যুতা এবং সশস্ত্র ডাকাতি দমনে প্রয়োজনীয় পদ্ধতি ব্যবহার করে ইউএস-নেতৃত্বাধীন টাস্ক ফোর্স ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের যে যৌথ কার্যক্রম রয়েছে, তার নাম অপারেশন আটলান্টা।

অপারেশন আটলান্টা থেকে বাংলাদেশী জাহাজ এমভি আবব্দুলাহর ওপর নজর রাখা হচ্ছে বলে সংস্থাটি এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে।

এতে বলা হয়, সামুদ্রিক নিরাপত্তায় সবচেয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বাংলাদেশ ও সোমালিয়া এই অঞ্চলের অংশীদারদের সাথে যোগাযোগ করছে।

এতে জানানো হয়েছে, ছিনতাই হওয়া জাহাজের নাবিকেরা এখন পর্যন্ত সুস্থ আছে।

প্রাথমিকভাবে জাহাজটি ছিনতাই হওয়ার সময় ২০ জন জলদস্যু থাকলেও এখন ১২ জন জলদস্যু থাকার বিষয়টি তারা বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিশ্চিত করেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সোমালি উপকূলের উত্তর, দক্ষিণ ও মধ্য অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় জলদস্যুরা সাধারণত তিনটি ক্যাম্প ব্যবহার করে। এই ক্যাম্পগুলো ঘিরেই চলে তাদের ছিনতাই কার্যক্রম। ঠিক এই অঞ্চলেএমভি রুয়েন নামের আরেকটি জাহাজও ছিনতাই করে জলদস্যুরা। ওই দলের সদস্যরাই এমভি আবদুল্লাহর ঘটনার সাথে জড়িত থাকতে পারে বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

এই বিজ্ঞপ্তিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন নেভাল ফোর্স জানিয়েছে এমভি আব্দুল্লাহর ওপর নজর রাখতে ইইউ'র একটি জাহাজ মোতায়েন করা হয়েছে।

জলদস্যুদের ফোনের অপেক্ষায় মালিকপক্ষ


গত মঙ্গলবার ভারত মহাসাগরে সোমালি জলদস্যুরে হাতে ছিনতাইয়ের শিকার হওয়ার পর কয়েক দফায় স্থান পরিবর্তন করে এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজটি। প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে সোমালিয়ার গদবজিরান উপকূলে নোঙ্গর করে আছে জাহাজটি।

এর আগে দফায় দফায় স্থান পরিবর্তন করলেও জলদস্যুদের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের মুক্তিপণ দাবি করা হয়নি।

সর্বশেষ গত শুক্রবার সন্ধ্যায় জাহাজের নাবিকদের তাদের পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলতে দেয়া হয় খুব অল্প সময়ের জন্য। এসময় তারা শারীরিকভাবে সুস্থ থাকার কথা জানিয়েছে।

জাহাজে থাকা চীফ অফিসার আতিকুল্লাহ খানের ছোট ভাই মোহাম্মদ আসিফ খানের সাথে সর্বশেষ শুক্রবার তার ভাইয়ের কথা হয়।

শনিবার সন্ধ্যায় আসিফ খান বলেন,গতকাল সন্ধ্যায় আর হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করতে দেয়া হয়নি। সন্ধ্যায় আমার সাথে কথা হয়েছে স্যাটেলাইট ফোনে। সর্বোচ্চ দেড় মিনিট কথা বলেছি। খুব বিস্তারিত জানতে পারিনি।

জাহাজটির মালিক প্রতিষ্ঠান কেএসআরএম গ্রুপ আশা করছে, খুব তাড়াতাড়ি জলদস্যুরা তাদের সাথে যোগাযোগ শুরু করবে।

কেএসআরএম গ্রুপের মিডিয়া অ্যাডভাইজর মিজানুল ইসলাম জানান, এ ধরনের পরিস্থিতিতে জলদস্যুরা একটা নিরাপদ স্থান খুঁজে তারপর যোগাযোগ শুরু করে মালিকপক্ষের সাথে। একই সাথে পরিবারের সদস্যদের সাথেও তারা কথা বলার সুযোগ দেয়।

মিজানুল ইসলাম বলেন,যতক্ষণ পর্যন্ত জলদস্যুদের কাছ থেকে কোনো ধরনের অফার না পাওয়া যাচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা যোগাযোগ রক্ষা করে যাচ্ছি। কিন্তু দস্যুদের পক্ষ থেকে এখনো কোনো ধরনের অফার পাওয়া যায়নি।


আরও খবর



১৬৩ টাকায় তেল বিক্রির ব্যত্যয় ঘটলে ব্যবস্থা নেয়া হবে: ভোক্তার মহাপরিচালক

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ |

Image

আগামী পহেলা মার্চ সারা দেশে ১৬৩ টাকায় বোতলজাত তেল বিক্রি শুরু হবে যারা এর ব্যত্যয় করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান। বুধবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের নগরীর নিতাইগঞ্জে এক অভিযানে তিনি এ কথা বলেন।  

জনগণের স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমাতে দ্রæত সময়ের মধ্যে ভোজ্য তেল বোতল ও প্যাকেট জাত করে সরবরাহ করা হবে জানিয়ে মহাপরিচালক বলেন, আগামীতে শতভাগ তেল বোতল ও প্যাকেট জাত করা হবে। এতে দুই-তিন টাকা খরচ বাড়লেও কমবে মৃত্যু ঝুঁকি। কারণ ভোজ্য তেল ক্রয়-বিক্রয়ে অনিরাপদ ড্রাম ব্যবহার করা হয়। অস্বাস্থ্য তেল খাওয়ার পর মানুষের হার্ট অ্যাটাক হয়। এছাড়া  ড্রামে নানা ধরনের ক্যামিকেল থাকায় কিডনির ক্ষতি হয়। এ কারণে অল্পবয়সীরাও কিডনি রোগে ভুগছে। তাই জনগণের স্বাস্থ্য ঝুকি কমাতে সব ধরনের তেল বোতল ও প্যাকেট জাত করা হবে। 

আগামী কাল থেকে সারা দেশের ডায়াগনস্টিক ও ক্লিনিকে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর অভিযান পরিচালনা করবে বলে জানান মহাপরিচালক। অভিযানে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাসহ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। 

এর আগে দিন ব্যাপী ভোজ্যতেল ক্রয়-বিক্রয়ে অনিরাপদ ড্রাম ব্যবহার বন্ধে ব্যবসায়ীদের অংশ গ্রহনে দিনব্যাপী কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয় নারায়ণগঞ্জে।


আরও খবর



অযত্নে নষ্ট হচ্ছে আড়াই হাজার কোটি টাকার ইভিএম

প্রকাশিত:সোমবার ০৪ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ |

Image

গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ভোট প্রয়োগে মেশিন বা ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি অনুসৃত হয় বলে সামগ্রিক প্রক্রিয়াটি ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নামে পরিচিত। বাংলাদেশে প্রথম ইভিএম ব্যবহার হয় ২০১১ সালে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) ১ লাখ ৫০ হাজার ইভিএমের মালিক। তবে এই দেড় লাখ মেশিনের মধ্যে ১ লাখ ১০ হাজার, অর্থাৎ ৯৬.১৯ শতাংশ মেশিনই নষ্ট হয়ে গেছে। যার মূল্য প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা।

এদিকে বাকি ৪০ হাজারও অকেজো হওয়ার পথে। এই মেশিনগুলোর আয়ু ১০ বছর হলেও ৫ বছরেই সবগুলোই মৃতপ্রায়। সরকারি সম্পদ, এই ইভিএম মেশিনগুলো পড়ে রয়েছে অনাদরে-অবহেলায়।

জানা গেছে, ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে প্রতিটি ২ লাখ ৩৫ হাজার টাকা দামে প্রায় দেড় লাখ ইভিএম কেনা হয়। সেসময় নির্বাচন কমিশন (ইসি) খরচ করে ৩ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। তবে ওই নির্বাচনে মাত্র ৬টি আসনে ইভিএমে ভোট হয়েছিল। এরপর ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৫০টি আসনে ইভিএমে ভোট করতে ইসি প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েছিল। কিন্তু টাকা না পাওয়ায় ইভিএমে ভোটও হয়নি। এ পর্যন্ত সংসদ, স্থানীয় ও উপনির্বাচন মিলে প্রায় ১৪০০ নির্বাচন হয়েছে ইভিএমে। আর ভোট দিয়েছে প্রায় আড়াই কোটি ভোটার।

চলতি বছরের জুনে শেষ হচ্ছে ইভিএম প্রকল্প। তাই মেশিনগুলো নিয়ে কারো কোনো নড়চড় নেই। হাজার হাজার কোটি টাকার মেশিন নিয়ে ভাবছে না ইসি বা প্রকল্প কর্মকর্তারাও। নষ্ট ইভিএমগুলো আর টেনে নিতে চায়না নির্বাচন কমিশনও। শেষ পর্যন্ত চার হাজার কোটি টাকার সম্পদ ভাগাড়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) প্রকল্প পরিচালক কর্নেল সৈয়দ রাকিবুল হাসান এ বিষয়ে বলেন, এই ১ লাখ ১০ হাজার ইভিএম নষ্ট হওয়ার কারণ হচ্ছে সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ না করা। দশ বছর মেয়াদ থাকলেও সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা না হলে ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসে নানা কারণে ত্রুটি দেখা দিতে পারে।

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে বরাদ্দ চেয়েও পাওয়া যায়নি, নষ্ট ইভিএম দিয়ে তো কিছু করার নেই। তবে ভবিষ্যতে নতুন করে ইভিএম কেনা নিয়ে কমিশনের তেমন কোনো পরিকল্পনা নেই।


আরও খবর



গণমাধ্যমকে মজবুত ভিতের ওপর প্রতিষ্ঠা করতে প্রস্তুত সরকার: তথ্য প্রতিমন্ত্রী

প্রকাশিত:শনিবার ০২ মার্চ 2০২4 | হালনাগাদ:বুধবার ২৭ মার্চ ২০২৪ |

Image

গণমাধ্যমকে আরো শক্তিশালী ও মজবুত ভিতের ওপর প্রতিষ্ঠা করতে সরকার প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।

চাঁদপুর প্রেসক্লাব চত্বরে প্রেসক্লাবের ২০২৪ সালের কার্যনির্বাহী পরিষদের অভিষেক অনুষ্ঠান উদ্বোধনকালে প্রতিমন্ত্রী এ কথা জানান।

চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি শাহাদাত হোসেন শান্তর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ও টিভি টুডে-এর প্রধান সম্পাদক মনজুরুল আহসান বুলবুল, চাঁদপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ওচমান গণি পাটোয়ারী, চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায়, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বশির আহমেদ, ঢাকা পোস্টের সম্পাদক মহিউদ্দিন সরকার, চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মো: জিল্লুর রহমান জুয়েল প্রমুখ।

আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অণুজীববিজ্ঞানী ড. সেঁজুতি সাহা, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী মো: দেলোয়ার হোসেন মজুমদার এবং জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত গীতিকার কবির বকুলকে অনুষ্ঠানে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।

এ সময় প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, গণমাধ্যম এখন শিল্প। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও বিকাশ ছাড়া গণতন্ত্র পূর্ণতা পাবে না। এরকম বাস্তবতায় সরকার গণমাধ্যমকে পূর্ণাঙ্গভাবে সকল সহায়তা দিতে প্রস্তুত আছে। গণমাধ্যমকে আরও শক্তিশালী অবস্থায় মজবুতভাবে প্রতিষ্ঠা করতে সরকার প্রস্তুত। সে ক্ষেত্রে সরকার সাংবাদিকদের কাছ থেকে একই ধরনের সহযোগিতা চায়।

তিনি বলেন, গণমাধ্যম ও সরকারের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে গণমাধ্যমের পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা সুনিশ্চিত করা এবং গণমাধ্যম শিল্পকে আরো শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড় করানোর জন্য আমরা চেষ্টা করতে পারি। গণমাধ্যম কিভাবে সরকার বা কর্তৃপক্ষের জন্য সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে জবাবদিহি আনতে পারে, এমনকি সমালোচনা করতে পারে, সে কাজগুলোও আমরা করতে পারি।

তিনি এ সময় আরো বলেন, পেশাদার সাংবাদিকদের মধ্যে সাংবাদিকতায় শৃঙ্খলা আনার একটি দাবি রয়েছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার সাংবাদিকতাকে এভাবে উন্মুক্ত ও অবারিত করেছেন, এমনভাবে স্বাধীনতা দিয়েছেন সেটা নিয়ন্ত্রণের কথা এখন সাংবাদিকরাই বলছেন। সরকার নিয়ন্ত্রণ করতে চায় না। তবে যেকোনো পেশায় কিছু অপেশাদার মানুষ চলে আসে। সেসব ক্ষেত্রে নিশ্চয়ই কিছু না কিছু শৃঙ্খলা আনার প্রয়োজন আছে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো এই শৃঙ্খলা ও পেশাদারিত্ব নিশ্চিত করে। গণমাধ্যম সেক্টরে সরকার যা কিছু করবে তা এর সাথে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সাথে আলাপ-আলোচনা ও পরামর্শের ভিত্তিতে করবে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, গণমাধ্যমের সামাজিক দায়বদ্ধতার পাশাপাশি বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক দিক আছে। বাণিজ্যিক দিক থেকে লাভবান করা না গেলে গণমাধ্যম অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়ে। এজন্য কোনো গণমাধ্যমকে আমরা যদি সরকারি বিজ্ঞাপন বা ক্রোড়পত্রের উপর নির্ভরশীল করতে চাই, তাহলে সেটি দীর্ঘ মেয়াদে টিকে থাকা মুশকিল হবে। এক্ষেত্রে সংবাদপত্রকে আরো উদ্ভাবনী হওয়ার চেষ্টা করতে হবে, সৃজনশীলতা আনতে হবে কিভাবে পাঠকের কাছে পৌঁছানো যায়, কিভাবে সফল হওয়া যায়।

তিনি আরো বলেন, সাংবাদিকদের সাথে নিয়েই সরকার গুজব ও অপতথ্যকে মোকাবেলা করতে চায়। গণতন্ত্রকে সফল করার জন্য গণমাধ্যমের স্বাধীনতা জরুরি। তবে অপতথ্য ও গুজবের বিস্তার গণতন্ত্রকে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত করবে, তেমনি গণমাধ্যম ও পেশাদার সাংবাদিকতাকেও ক্ষতিগ্রস্ত করবে।


আরও খবর