
জলবায়ু পরিবর্তন-স্বাস্থ্যঝুঁকিসহ জীবনযাত্রাকে দুর্বিষহ করে তুলছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে মানবাধিকার লঙ্ঘন, বেকারত্ব, উৎপাদনশীলতা হ্রাস, বাল্যবিবাহ, শিশুশ্রম ও স্বাস্থ্যঝুঁকি দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে দাবি করছেন পরিবেশবিদরা।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল বলেন, প্রকৃতিনির্ভর ব্যবস্থাপনা সঠিকভাবে ব্যবহার না হওয়ায় জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে। এ অধিকার যাদের লঙ্ঘন হচ্ছে তাদের কথাগুলো নীতি-নির্ধারকদের কাছে যাচ্ছে না। আমাদের দেশ পানি দুষ্প্রাপ্যের দেশ। শুকনো মৌসুমে মাত্র ২০ ভাগ পানি আসে।
শরীফ জামিল বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে যাদের অবদান বেশি তাদের সমস্যা সমাধানে বেশি এগিয়ে আসতে হবে। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে আমাদের বেশি ক্ষতি হচ্ছে। এজন্য আমাদের সচেতন হতে হবে। দেশ রক্ষা করা মানুষের মানবাধিকার। কিন্তু এটি রক্ষা করা হচ্ছে না।
দেশের উন্নয়ন কার্যক্রমে স্বচ্ছতা না থাকা এবং ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ পর্যন্ত উন্নয়ন না পৌঁছানোর কারণে এ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব আরো বেশি ভোগান্তি সৃষ্টি করছে। এ পরিবর্তনের কারণে মানুষের জীবনযাত্রা ও জীবিকার পরিবর্তন আসছে। দুর্যোগে অধিকমাত্রায় বেশি বঞ্চনার শিকার হন নারীরা। দুর্যোগকালে নারীদের প্রাত্যহিক কাজের পাশাপাশি স্বামী বাইরের কাজেও সহায়তা করতে হয়।
বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তন ও এর প্রভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের গবেষণার ফলাফল বাংলাদেশে সফররত ইউএনএইচসিআরের জলবায়ু ও মানবাধিকার দূত ড. ইয়ান ফ্রাইকে এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণের আহ্বান জানান। বাংলাদেশে তিনটি অঞ্চল মোংলা, রাজশাহী ও শরীয়তপুর এ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে গবেষণা করা হয়।
গবেষণায় দেখা গেছে, আকস্মিক দুর্যোগ, লবণাক্ততার কারণে এসব অঞ্চলের ২০০টি পরিবার ৯ কোটি ২৪ লাখ ৯৮ হাজার প্রত্যক্ষ আর্থিক ক্ষতির শিকার হয়েছেন। এছাড়া তারা স্বাস্থ্য সংকট, বাস্তুচ্যুতি, সামাজিক ও যৌন হয়রানি, পানিসংকট, স্কুল থেকে ঝরে পড়া, শিশুশ্রম, বাল্যবিবাহ, সহিংসতা, মানসিক বিপর্যয়সহ নানা সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে।