এইচ এম মিলন, কালকিনি (মাদারীপুর):
মাদারীপুরের কালকিনিতে আড়িয়াল খাঁ নদীর তান্ডবে স্বামীর পৈত্রিক ভিটা হারিয়ে ও শেষ সম্বল সরকার থেকে পাওয়া জমিটুকু প্রভাবশালী কর্তৃক দখল হয়ে যাওয়ায় ঝুমকি বেগম নামে এক অসহায় পরিবার পুরোপুরিভাবে এখন নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। বর্তমানে মাথার গোজার কোন ঠাই মিলছে না ওই পরিবারের। তবে সরকার থেকে পাওয়া ওই জমি বেদখল মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন দ্বারে-দ্বারে ঘুরছেন এখন অসহায় ঝুমকি বেগম ও তার পরিবার।
সরেজমিন ও ভুক্তভোগী পরিবার সুত্রে জানাগেছে, উপজেলার পুর্বএনায়েতনগর এলাকার আলীপুর গ্রামের ঝুমকি বেগমের স্বামী হামিদ আকনের ১৩৪ নং বাশগাড়ি মৌজার ১৬১৮ নং দাগের ৪ একর ৮১ শতাংশ জমির উপর বসতবাড়ি ছিল। কিন্তু নিয়তির নিষ্ঠুর আঘাতে গত দুই বছর আগে অব্যহত ভাঙ্গনে আড়িয়াল খা নদী গর্ভে সকল জমি ও বসবাড়িটি সম্পুর্নরুপে বিলিন হয়ে যায়। এ নদী ভাঙ্গনে ঝুমকি বেগম ও তার পরিবার পুরোপুরি নিঃস্ব হয়ে যায়। এ ঘটনায় ঝুমকি বেগম নিরুপায় হয়ে নদীর পাড়ে পরিবার পরিজন নিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করে। পরে এ বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসলে মানবিক বিবেচনায় ভুমিহীন হিসেবে ঝুমকি ও তার স্বামী হামিদ আকনের নামে ওই এলাকায় ২৬ শতাংশ জমি কবুলিয়ত দলিল মুলে প্রদান করে সরকার। এ সুত্র মতে হামিদ আকন ওই জমিতে বেশ কিছু গাছ রোপন করেন এবং একটি ঝুপড়ি ঘর তুলে পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। কিন্তু সরকারের দেয়া ওই জমি হামিদ আকনকে আনুষ্ঠানিকভাবে বুঝিয়ে দিতে বিলম্ব করলে তিনি হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন। উক্ত রিট অনুযায়ী গত ০৭-০২-২২ তারিখে রুল ইস্যু করা হয়। এ মামলা চলমান অবস্থায় সরকার থেকে পাওয়া হামিদ আকনের ওই জমির বিভিন্ন প্রকার রোপনকৃত গাছ কেটে নিয়ে জমি অবৈধভাবে জোর পুর্বক দখল করে নেয় ফাসিয়াতলা গ্রামের কবির খা, হাবি মালত, নজু মালত, আরিফ মালত ও ফারুক মালতসহ বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী। অসহায় হামিদ আকন ওই ঘটনার কোন প্রতিবাদ করতে না পেরে প্রভাবশালীদের বিচারের দাবিতে বিভিন্নস্থানে গিয়েও কোন সঠিক বিচার পাচ্ছে বলে অভিযোগ সুত্রে জানাগেছে।
অসহায় হামিদ আকন ও তার স্ত্রী ঝুমকি বেগম আক্ষেপ করে বলেন, আমাদের ভিটামাটি সব চলে গেল রাক্ষুসে আড়িয়াল খার পেটে। এখন আবার সরকারের দেয়া আমাদের শেষ সম্বল জমিটুকু চলে যাচ্ছে প্রভাবশালীদের পেটে। আমাদের জমি আমাদের ভোগ থেকে বিতারিত করা হচ্ছে। আমরা এখন কোথায় গিয়ে বাচবো। অনেক জায়গায় গিয়েছি সঠিক বিচারের জন্য কিন্তু তা পাচ্ছি না। আমাদের এখন আত্নহত্যা করা ছাড়া কোন উপায় পাচ্ছি না।
তবে অভিযুক্ত কবির খা ও হাবি মালত ঘটনার অস্বিকার করেন।
পুর্বএনায়েত নগর ইউপি চেয়ারম্যান নেয়ামুল আকন বলেন, আমি বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করবো।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পিংকি সাহা জানান, হামিদ আকনের বিষয়টির ব্যাপারে জেনে ব্যবস্থা নেয়া হবে।