Logo
শিরোনাম

কেজিতে ৩০ টাকা বেড়েছে গরু ও মুরগির মাংসের দাম

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০১ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৬ মে ২০২৫ |

Image

ঈদুল ফিতরে সরবরাহ ঘাটতির প্রভাব পড়েছে বাজারে। যে কারণে ক্রেতা কমলেও কমেনি মাংস, সবজির দাম। কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা করে বেড়েছে গরুর মাংস ও মুরগির দাম। তবে দুটি বাজার খুঁজেও মেলেনি খাসির মাংস। পেঁয়াজ রসুনে স্বস্তি মিললেও গরুর মাংস আর মুরগির দামে অস্বস্তি প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা।

রাজধানীর মিরপুরের উত্তর ও মধ্য পীরেরবাগের একাধিক মাংসের দোকানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কেজিতে অন্তত ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়েছে গরুর মাংসের দাম। কোনো দোকানে আরেকটু বেশি।

মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর মিরপুর-২ উত্তর পীরেরবাগ ছাপড়া মসজিদ কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, সবজি, মাছ ও গরুর মাংসের দোকানে ক্রেতাদের ভিড়।

মরিয়ম গোস্ত বিতানের বিক্রেতা বাবুল মিয়া বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে প্রচুর গরু কাটছি। চাহিদা অনুযায়ী বিক্রিও ছিল বেশি। আজকে আর গরু কাটি নাই। তবে চাহিদা থাকায় মিরপুর-১ থেকে একমণ মাংস এনেছি। আর ৫ কেজি বিক্রি বাকি আছে।

তিনি বলেন, গতকালও ৭৮০ টাকায় মাংস বিক্রি করছি। আজ ৮০০ টাকা বিক্রি করছি।

তবে কাদের গোশত বিতানে গরুর মাংসের দাম আরও ২০ টাকা বেশি, অর্থাৎ সেখানে ৮২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস। পাইকারি এই দোকানে মুরগি ডিমসহ নিত্যপণ্য বিক্রি করা হয়।

কাদের গোশত বিতানের বাদশা মিয়া বলেন, আজও সবচেয়ে বেশি মাংসের চাহিদা। ঈদের আগের দিন থেকে এখানে ৮২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস। দেশি মুরগি ৬০০ টাকা, ব্রয়লার ২৩০ টাকা, লেয়ার মুরগি বাজারে নেই। পাকিস্তানি কক ৩৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে ডিম মিলছে কমেই, ১২০ টাকা ডজন।

উত্তর পীরেরবাগ এলাকার একটি আবাসিক ভবনের এক বাসিন্দা বলেন, হাসপাতালে চাকরি করি। এ ঈদে ছুটি মেলেনি। বাসায় রাতে কিছু অতিথি আসবে। গরুর মাংস কিনতে এসে দেখি কেজি প্রতি ৪০ টাকা বেশি চাওয়া হচ্ছে। গত ৩ দিন আগেও গরুর মাংসের কেজি ছিল ৭৮০ টাকা। আজকে নিলো ৮২০ টাকা।

নির্মাণ শ্রমিক ফরহাদ গরুর মাংসের দাম শুনে কপালে ভাঁজ নিয়ে মুরগির দাম জানতে চান। সেখানেও বাড়তি দাম। বাধ্য হয়ে ৩৩০ টাকায় একটি পাকিস্তানি কক কিনে ফেরার পথে ফরহাদ বলেন, গরুর মাংস আমগো নাগালের না, মুরগিও দেখতাছি দাম বাড়তাছে। খামু কি? ৩৩০ টাকায় কক কিনে আমগো পোষায় না। কি করমু। ব্রয়লার আর কতো! একটা দিন তো কক খাইতে মন চায়।

মরিয়ম গোশত বিতানের মালিক বাবুল শিকদার বলেন, গরুই বেচতেছিলাম, খাসির মাংসের বাড়তি দাম, তাই দোকানেই তুলি নাই।

ব্রয়লার মুরগি কিনে মুসলিমা বেগম বলেন, কক ৩৩০ টাকা কেজি। কেমনে খামু কন! ব্রয়লারও যে খুব কম তা না, তবে দেড় কেজি ব্রয়লার কিনে যা বাঁচবে তা দিয়ে কিন্তু সবজি কেনা যায়। তাই কক বাদ দিয়ে ব্রয়লারই কিনতে হলো।

মধ্য পীরেরবাগ বিসমিল্লাহ গোশত বিতানে গিয়ে দেখা যায়, ক্রেতা ভিড় করেও ফিরে যাচ্ছেন। মাংস শেষ। মালিক মো. জাহাঙ্গীর বলেন, প্রতি রমজানের ঈদে অন্তত ২০টা গরু কাটি। গতকালও ২টা কাটছি। আজ একটা, তা সকাল সকালই শেষ হয়ে গেছে।

মাছের সরবরাহ কমেছে বাজারে। যা আছে তাও ক্রেতা কম।

নদীর চিংড়ির কেজি ৭০০ টাকা, তবে লাল ও অন্য সাদা চিংড়ি ৬৬০ টাকায় মিলছে। রুই মাছ যেন ছুলেই দাম। ৪৬০ টাকা কেজি হাঁকিয়ে বেচা হচ্ছে ৪২০ টাকায়। তেলাপিয়া ১৮০ টাকা। নলা মাছ ১৬০ টাকা। ইলিশ ৭৬০ থেকে ১৩০০ টাকার মধ্যে আকার অনুযায়ী বিক্রি হচ্ছে।

মাছ বিক্রেতা তরিকুল ইসলাম বলেন, বাজারে মাছের সরবরাহ কম। ক্রেতাও কম। যা পাইছি তাই বেচতাছি। ক্রেতারা তো মাছের চেয়ে মাংসই বেশি কিনতাছে।

ছাপড়া মসজিদ কাঁচাবাজারে গিয়ে জানা যায়, কিছু সবজিতে বেড়েছে দাম। দামে কাঁচা মরিচের ঝাঁজ নেই। কেজিতে টমেটোর দাম বেড়েছে ২০ টাকা। টমেটো ৬০ টাকা ও গাজর বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়।

আলু ২০-২৫ টাকায় মিলছে। তবে পটল ও শশায় অসন্তুষ্ট ক্রেতারা।

ছাপড়া মসজিদ কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা সেলিম মিয়া বলেন, বেগুন গত সপ্তাহে কিনেছি ৮০ টাকায়। গত সপ্তাহেও ঢেঁড়শ ছিল ৫০ টাকা, আজ তা ৬০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে, কেজি বাড়তি ১০ টাকা। গত সপ্তাহেও শশার দাম ছিল ৬০টাকা, আজ ৮০ বেচতে হচ্ছে।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, লাউ ৫০ থেকে ৭০ টাকা পিস, কচুরলতি ৮০ টাকা কজি, ১০ টাকা বাড়তিতে করলা বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা। ৫০০ গ্রাম ওজনের ছোট পাতা কপির পিস ৫০ টাকা, ঝিঙা ৭০, চিচিঙ্গা ৭০, কাঁচা কলার হালি ৩০ টাকা। পেঁপে আর পটলে বিরক্ত ক্রেতারা। পটল ৮০, পেঁপে ৬০ টাকা।

হুসাইন আল মামুন নামে ক্রেতা বলেন, গরুর মাংসের সঙ্গে আলু আর পটল ভাল লাগে। আলুটার দাম ঠিক আছে। পটল যে ৮০! আর গরুর মাংসের দাম তো জানেনই ৮২০ টাকা! আমাদের মতো মধ্যবিত্তের ৬ সদস্যের পরিবারের জন্য এটা বেশিই।

ধনেপাতার ১০০ গ্রাম ২৫ টাকায় বিক্রি হলেও লেবুর দাম ফের বেড়েছে। ছোট ছোট লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়।

সবজি বিক্রেতা আলমগীর বলেন, টমেটো ও গাজরের দাম বাড়তি। পেঁপে ও পটলে বিরক্ত ক্রেতারা। কিন্তু কিছু করার নাই। কেনাই তো বাড়তি আমাদের।


আরও খবর



রাণীনগরে মহান মে দিবস পালিত

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০১ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৫ মে ২০২৫ |

Image

কাজী আনিছুর রহমান,রাণীনগর (নওগাঁ): 

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায় যথাযোগ্য মর্যাদা ও নানা কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে মহান মে দিবস এবং জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি দিবস পালিত হয়েছে। দিবস উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার উপজেলা প্রশাসন ও বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেন। কর্মসচির প্রথমেই সকালে উপজেলা প্রশাসন ও থানা গৃহ নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের যৌথ উদ্যোগে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালিটি উপজেলা সদরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বরেন্দ্র গেইটে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় থানা গৃহ নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের আহবায়ক মো. আবু বক্কর সিদ্দিকের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাকিবুল হাসান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন, রাণীনগর থানার ওসি আব্দুল হাফিজ মো. রায়হান, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোসারব হোসেন।

এছাড়া র‌্যালিতে উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মেজবাউল হক লিটন, সাখাওয়াত হোসেন, শ্রমিক ইউনিয়নের সকল সদস্য, উপজেলা বিএনপি ও তার অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

অপর দিকে রাণীনগর উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন মহান মে দিবস পালন উপলক্ষ্যে র‌্যালি ও শ্রমিক সমাবেশের আয়োজন করেন। বেলা ১১টায় রাণীনগর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি নাছির উদ্দিন, জেলা পরিবহন সভাপতি আসলাম হোসেন, উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের প্রধান উপদেষ্টা মোস্তফাা ইবনে আব্বাস, উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির আনজির হোসেন, সেক্রেটারি শামিনুর ইসলাম শামীম প্রমুখ।

সমাবেশ শেষে সেখান থেকে বিশাল এক র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালিটি প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।


আরও খবর



গেজেট প্রকাশের পর আ.লীগের নিবন্ধন নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে

প্রকাশিত:রবিবার ১১ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৫ মে ২০২৫ |

Image

গেজেট প্রকাশের পরই আওয়ামী লীগের নিবন্ধন নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। রবিবার গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান তিনি।

সিইসি বলেন, সরকারের গেজেট প্রকাশের পরই আওয়ামী লীগের নিবন্ধন নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে। গেজেট প্রকাশ হলে আমরা নির্বাচন কমিশন বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসবো। কমিশনের আলোচনার পরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কারণ আমাদের বর্তমান বাংলাদেশের স্পিরিট বুঝেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যদি কাল গেজেট হয় তাহলে কালই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

গত ৭ মে মধ্যরাতে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ থাইল্যান্ডে গেলে নতুন করে কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামে জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপি। এর সঙ্গে যোগ দেয় বিভিন্ন সংগঠন ও দল।

গত দুদিন ধরে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধসহ তিন দাবিতে রাজধানী এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করেছেন ছাত্র-জনতা। শনিবার রাতে গণদাবির পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। সোমবার এ বিষয়ে গেজেট প্রকাশ করা হবে বলে গত রাতে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।


আরও খবর



ট্রাম্পকে ‘উড়ন্ত প্রাসাদ’ উপহার দিচ্ছে কাতার

প্রকাশিত:সোমবার ১২ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৫ মে ২০২৫ |

Image

বিলাসবহুল ডাইনিং, বেডরুম, বোর্ডরুম, লাইব্রেরি, কী নেই বিমানে! তাই এর নাম ‘ফ্লাইং প্যালেস।’ বাংলায় যাকে বলে ‘উড়ন্ত প্রাসাদ’। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এমনই একটি বিলাসবহুল বোয়িং ৭৪৭-৮০০ উড়োজাহাজ উপহার দিচ্ছে কাতারের রাজপরিবার।

উড়োজাহাজটির দাম বাংলাদেশি টাকায় চার হাজার ৮৮০ কোটি টাকা। সব কিছু ঠিক থাকলে মার্কিন সরকারের বিদেশি কোনো রাষ্ট্রের কাছ থেকে পাওয়া সবচেয়ে দামি উপহার হবে এটি। খবর নিউইয়র্ক টাইমসের।

যুক্তরাষ্ট্রের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উপহারটি গ্রহণ করতে রাজি হয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। উড়োজাহাজটিকে প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত ভ্রমণের কাজে ব্যবহৃত ‌‘এয়ারফোর্স ওয়ানের’ পদমর্যাদায় উন্নীত করা হতে পারে।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিজস্ব ব্যক্তিগত উড়োজাহাজের নাম ‘ট্রাম্প ফোর্স ওয়ান’। এটা একটি পুরনো ৭৫৭ বোয়িং জেট। ২০১১ সালে এই উড়োজাহাজটি কিনেছিলেন তিনি।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, একটি বাণিজ্যিক বোয়িং ৭৪৭-৮ মডেলের উড়োজাহাজের দাম প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলার (বাংলাদেশি টাকায় চার হাজার ৮৮০ কোটি টাকা)।

একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই বিমান এখন কাতার থেকে আমেরিকায় পাঠানোর জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। এয়ার ফোর্স ওয়ান হিসেবে এতে আরও কিছু আপগ্রেড করা হবে। বিশেষ করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং অন্যান্য প্রযুক্তি ইনস্টল করা হবে। তাই কিছুটা সময় লাগতে পারে।

তবে কিছু আইনি জটিলতার মুখেও পড়তে হতে পারে ট্রাম্পকে। কারণ আমেরিকার সংবিধান অনুযায়ী, বিদেশি সরকারের কাছ থেকে উপহার গ্রহণে কিছু বিধিনিষেধ আছে। রাষ্ট্রপতি বা অন্যান্য ফেডারেল কর্মকর্তারা বিদেশি সরকার থেকে কোনও উপহার বা আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করতে পারেন না, যদি না আমেরিকার কংগ্রেসের অনুমোদন থাকে। এই বিমানটি যদি উপহার হিসেবে গ্রহণ করা হয়, তবে কংগ্রেসের অনুমোদন প্রয়োজন।


আরও খবর



আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে উত্তাল শাহবাগ

প্রকাশিত:শনিবার ১০ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৬ মে ২০২৫ |

Image

রাজধানীর শাহবাগ মোড় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠেছে। হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের পার্শ্ববর্তী সড়ক থেকে সমাবেশ শেষে আন্দোলনকারীরা শাহবাগ মোড় অবরোধ করলে এক অভূতপূর্ব পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এই অবরোধে যেন ফিরে এসেছে ২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়ের উত্তাল দিনগুলো, যা ‘জুলাই আন্দোলন’ নামে পরিচিত।

এ সমাবেশে জাতীয় নাগরিক পার্টির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের সরব উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। দলটির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আহমেদ এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক তালাত মাহমুদ রাফিসহ এনসিপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এদিন বিকেল সাড়ে চারটার পর থেকেই জামায়াত-শিবির, হেফাজতে ইসলাম, গণঅধিকার পরিষদ, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ ছাত্র-জনতা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিতে শুরু করেন। তাদের কণ্ঠে ছিল আওয়ামী লীগ বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান।

তার মধ্যে ‘ব্যান করো ব্যান করো, আওয়ামী লীগ ব্যান করো’, ‘দিল্লি না, ঢাকা, ঢাকা-ঢাকা’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘গোলামি না আজাদী, আজাদী আজাদী’ ‘নাহিদ, আক্তার আসছে, রাজপথ কাঁপছে’, ‘একটা একটা ছাত্রলীগ ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর’, ‘আওয়ামী লীগের আস্তানা, ভেঙে দাও ঘুরিয়ে দাও’, ‘২৪ বাংলায়, আওয়ামী লীগের ঠাঁই নাই’, ‘লীগ ধর, জেলে ভর’, প্রভৃতি বলে স্লোগান দেওয়া হচ্ছে।

আন্দোলনকারীদের হাতে দেখা যায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে লেখা প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন।

এদিকে অবরোধের ফলে শাহবাগের চারপাশের রাস্তায় যানজট সৃষ্টি হয়েছে। সায়েন্সল্যাব, টিএসসি এবং বাংলামোটরের দিকে যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। তবে আন্দোলনকারীরা তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

শাহবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খালিদ মনসুর বলেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে আন্দোলনকারীরা শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন। ঘটনাস্থলে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে।

এর আগে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উদ্যোগে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের পার্শ্ববর্তী সড়কে একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সেই সমাবেশ শেষে এই অবরোধ কর্মসূচি শুরু করে আন্দোলনকারীরা।

প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনের বিরুদ্ধে জনঅসন্তোষ থেকে জন্ম নেওয়া ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর রাজনৈতিক পালাবদলের এক নতুন অধ্যায় শুরু হয়। তবে সময় গড়াতেই আবারও সরব হয়ে ওঠে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সংগঠন।

অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে ব্যবস্থাপনা চললেও, আওয়ামী লীগের ‘সাংগঠনিক অপরাধ ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের’ অভিযোগ তুলে এবার দলটিকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে রাজপথে নেমেছে এনসিপিসহ বিভিন্ন সংগঠন। ৯ মাস আগের আন্দোলনের সূত্র ধরে নতুন করে গতি পেয়েছে এই প্রতিবাদ, যা রাজধানীর রাজপথে ফের চাঙ্গা করেছে রাজনৈতিক উত্তাপ।


আরও খবর



ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: শেয়ারবাজারে পতন

প্রকাশিত:বুধবার ০৭ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৬ মে ২০২৫ |

Image

ভারত ও পাকিস্তান কেউই যেন কাউকে দেখতে পারে না। তাদের সম্পর্কটা এরকমই সাপে-নেউলে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা দু’দেশের চিরবৈরী মনোভাবকে আরও উসকে দিয়েছে। তারই অংশ হিসেবে বর্তমানে দেশ দুটির মধ্যে দেখা দিয়েছে সামরিক উত্তেজনা। আর সেই উত্তেজনার প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেওয়ায় ঘটেছে বড় ধরনের দরপতন।

৭ মে দুপুর ১টায় প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হওয়া সিকিউরিটিজের মধ্যে দরপতন হয় ৩৭৭টির। এর মধ্যে দর বাড়ে কেবল ৯টির এবং আগের দরে লেনদেন হয় ৭টির। এতে ডিএসইর প্রধান সূচক কমেছে ১১৬ পয়েন্ট। আর এই সময়ে লেনদেন হয়েছে ৩৫৬ কোটি ৬৯ লাখ টাকা।

অন্যদিকে দুপুর ১টা ৭ মিনিটে অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই কমেছে ২২৪ পয়েন্ট। লেনদেন হয়েছে ৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেওয়া ৭৯ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ১৬ টির, কমেছে ১৫২ টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬ টির।

জানা গেছে, ভারত ও পাকিস্তানের ক্রমবর্ধমান সামরিক উত্তেজনার মধ্যে আজ বুধবার দেশের শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হতেই অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমে যায়। ফলে লেনদেনের শুরুতেই হয় বড় ধরনের দরপতন।

শেয়ারবাজারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা এই উপমহাদেশে আতঙ্ক ছড়াবে এটাই স্বাভাবিক। তবে আগে থেকেই পতনের ধারায় থাকা দেশের শেয়ারবাজার এখন তলানিতে রয়েছে। এখান থেকে শেয়ারবাজারে বড় দরপতন না হওয়াটাই অস্বাভাবিক। সুতরাং বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত না হয়ে স্বাভাবিক আচরণ করা উচিত। তাহলে শেয়ারবাজার ঘুরে দাঁড়াবে।

ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সাবেক সভাপতি ও ডিএসইর পরিচালক রিচার্ড ডি রোজারিও বলেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া পরিস্থিতির কারণে শেয়ারবাজারে এমন দরপতন দেখা দিয়েছে।

আমাদের শেয়ারবাজার এমনিতেই এখন বটম লাইনে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, এখান থেকে বাজার খুব নিচে নামার সম্ভাবনা কম। আশা করছি, বাজার ঘুরে দাঁড়াবে।

দীর্ঘদিন ধরেই দেশের শেয়ারবাজার পতনের মধ্যে রয়েছে জানিয়ে ডিএসইর এক সদস্য বলেন, বিনিয়োগকারীদের এখন দিশেহারা অবস্থা। এর মধ্যে ভারত ও পাকিস্তানের ভেতর সৃষ্ট বর্তমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতি মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে এসেছে।

তিনি আরও বলেন, ভারত ও পাকিস্তানের পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা গণমাধ্যমে এসেছে। দুই দেশের মধ্যে সৃষ্ট এই পরিস্থিতির কারণে সবার মধ্যে এখন আতঙ্ক বিরাজ করছে। আতঙ্কে অনেক বিনিয়োগকারী কম দামে শেয়ার বিক্রির চেষ্টা করছেন। এ কারণেই লেনদেনের শুরুতে শেয়ারবাজারে ঢালাও দরপতন দেখা দিয়েছে।

বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে শেয়ার বিক্রির চাপ না বাড়ালে বাজার অচিরেই ঘুরে দাঁড়াবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ হামলায় ২৬ জন নিহত হন। যাদের অধিকাংশই ছিলেন পর্যটক। হামলার পর দিল্লি সোজাসুজি এর দায় চাপায় ইসলামাবাদের ঘাড়ে। দুই দেশ থেকে নেওয়া হয় বেশ কিছু কূটনৈতিক পদক্ষেপও।

পরে উত্তপ্ত পরিস্থিতি থামাতে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দেয় ইরান ও রাশিয়া। তবে সবকিছু উপেক্ষা করে জম্মু-কাশ্মীরে হামলার দুই সপ্তাহ পর মঙ্গলবার (৬ মে) মধ্যরাতে পাকিস্তানে হামলা চালায় ভারত।

এদিকে পাকিস্তানের দাবি, ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাবে তারাও কাশ্মীরের ভিম্বর গলি অঞ্চলে গোলা নিক্ষেপ করেছে।


আরও খবর