Logo
শিরোনাম

কোভিশিল্ডের পর এবার কোভ্যাক্সিনেও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া!

প্রকাশিত:রবিবার ১৯ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২১ মে ২০২৫ |

Image

অ্যাস্ট্রাজেনেকার পর এবার প্রশ্নের মুখে ভারতীয় ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি ভারত বায়োটেকের তৈরি করোনা টিকা কোভ্যাক্সিন। নতুন এক গবেষণায় জানা গেছে, যারা কোভ্যাক্সিন নিয়েছিলেন, তাদের এক তৃতীয়াংশেরই এক বছর পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। শ্বাসকষ্ট থেকে শুরু করে চর্মরোগ ও রক্ত জমাট বাধার মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে কোভ্যাক্সিনে।

সম্প্রতিই এক গবেষণায় জানা গেছে, ব্রিটিশ-সুইস ওষুধ নির্মাতা কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি কোভিড ভ্যাক্সিনে বিরল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হচ্ছে। ভারতে সেরাম ইনস্টিটিউট অ্যাস্ট্রাজেনেকার সঙ্গেই তৈরি করেছিল এই ভ্যাক্সিনটি। অ্যাস্ট্রাজেনেকার পক্ষ থেকে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার বিষয়টি স্বীকার করে নেওয়ার পরই যারা অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নিয়েছিলেন, তারা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ভয়ে ভুগছিলেন। তখন স্বস্তিতে ছিলেন যারা কোভ্যাক্সিন নিয়েছিলেন। এবার কোভ্যাক্সিনেও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা জানা গেল।

স্প্রিঙ্গলার লিঙ্ক নামক একটি প্ল্যাটফর্মে প্রকাশিত গবেষণাতেই বলা হয়েছে, ভারত বায়োটেকের তৈরি কোভ্যাক্সিনে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে। বিশেষ করে কিশোরীদের মধ্যে, যাদের অ্যালার্জির সমস্যা রয়েছে, তাদের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

কী কী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে?

জানা গেছে, ভারতের বেনারসের হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সমীক্ষা করা হয়েছিল। মোট ১ হাজার ২৪ জন এই সমীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন, এর মধ্যে ৬৩৫ জন সদ্য কৈশোরে পা দিয়েছেন এবং ২৯১ জন প্রাপ্তবয়স্ক ছিলেন। এক বছর ধরে এই সমীক্ষা গবেষণা করা হয়। এতে দেখা যায়, ৩০৪ জন কিশোর-কিশোরী (৪৭.৯ শতাংশ) এবং ১২৪ জন প্রাপ্তবয়স্কের (৪২.৬ শতাংশ) শ্বাসযন্ত্রে ভাইরাল সংক্রমণ দেখা দিয়েছিল।

গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত ৬৩৫ জন কিশোর-কিশোরীর মধ্যে ১০.৫ শতাংশেরই ত্বকের রোগ দেখা দেয়। ৪.৭ শতাংশ কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে স্নায়ুর রোগ দেখা দিয়েছে এবং ১০.২ শতাংশ কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে সাধারণ রোগ দেখা গিয়েছে। ২৯১ জন প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যেও একই সমস্যা দেখা গিয়েছে।

প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে সাধারণ ব্যাধিগুলির শতাংশ ছিল ৮.৯ শতাংশ। পেশি এবং হাড় সম্পর্কিত রোগ ৫.৮ শতাংশের মধ্যে এবং স্নায়ু সম্পর্কিত রোগ ৫.৫ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে দেখা গিয়েছে। নারীদের ক্ষেত্রে কোভ্যাক্সিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আরও মারাত্মক।

গবেষণায় অংশগ্রহণকারী ৪.৬ শতাংশ নারীদেরই ভ্যাকসিন নেওয়ার পর ঋতুস্রাব বা পিরিয়ড সম্পর্কিত সমস্যা বা অস্বাভাবিকতা দেখা গেছে। ২.৭ শতাংশের চোখের সমস্যা এবং ০.৬ শতাংশ নারীদের মধ্যে হাইপোথাইরয়েডিজমের সমস্যা দেখা গেছে। ০.৩ শতাংশের স্ট্রোক এবং ০.১ শতাংশের মধ্যে গুইলেন-বেরি সিন্ড্রোম দেখা গিয়েছে। জিবিএস হল এমন একটি বিরল রোগ যেখানে দেহ ধীরে ধীরে প্যারালাইজড হয়ে যায়।

সমীক্ষায় বলা হয়েছে, দুটি ডোজ গ্রহণকারী প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় কোভ্যাক্সিনের তিনটি ডোজ গ্রহণকারী প্রাপ্তবয়স্কদের ঝুঁকি চার গুণ বেশি।

কোভ্যাক্সিন নেওয়ার পর কতজনের মৃত্যু হয়েছে?

গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে, চারজন প্রাপ্তবয়স্কের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে তিনজন নারী ও একজন পুরুষ ছিলেন। চারজনেরই ডায়াবেটিস ছিল। তিনজন প্রাপ্তবয়স্কেরও উচ্চ রক্তচাপেরও সমস্যা ছিল। চারজনের মধ্যে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে স্ট্রোকের কারণে।

একটি মৃত্যু কোভিড-পরবর্তী রাইনোসেরিব্রাল মিউকোরমাইকোসিসের জেরে হয়েছিল। এটি একটি বিরল রোগ যা প্রধানত নাক, প্যারানাসাল সাইনাস এবং মস্তিষ্ককে প্রভাবিত করে।

চতুর্থ মৃত্যু একজন নারীর, যিনি টিকা দেওয়ার পরে বেশ কয়েকবার অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলেন। যদিও তার অজ্ঞান হওয়ার কারণ জানা যায়নি।


আরও খবর



সংস্কার ও নির্বাচনের সমন্বিত রোডম্যাপ ঘোষণা করুন

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৫ এপ্রিল 20২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২০ মে ২০25 |

Image

রাষ্ট্রীয় রাজনীতির মৌলিক সংস্কার ও জাতীয় নির্বাচন প্রশ্নে একটি রোডম্যাপ ঘোষণা করুন। সাংবিধানিক সংস্কারসহ জাতীয় ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে জাতীয় সনদ প্রণয়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ। এ লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সকল দল ও সমাজশক্তি তথা শ্রমজীবী, কর্মজীবী ও পেশাজীবী সংগঠনসমূহের সাথে আলোচনা করে ব্যাপকভিত্তিক ঐক্যমত প্রতিষ্ঠা আবশ্যক বলে মন্তব্য করেন অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব।

জাতীয় সনদ নির্বাচনের আবশ্যিক শর্ত পূরণ করবে জানিয়ে তিনি বলেন, সংস্কার ও নির্বাচন পারস্পরিক পরিপূরক বিধায় সংস্কার ও নির্বাচনের সমন্বিত রোডম্যাপ ঘোষণা করা আবশ্যক। এই পদক্ষেপ গ্রহণের মধ্য দিয়ে জাতীয় রাজনীতি একটি সুস্পষ্ট লক্ষ্যে ধাবিত হবে। সংস্কার ও নির্বাচন কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। জাতীয় রাজনীতির মৌলিক প্রশ্নে ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তির অনৈক্য বা বিভেদ পরিস্থিতিকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলবে।

আজ শুক্রবার উত্তরাস্থ বাসভবনে জেএসডির স্থায়ী কমিটির সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সভার শুরুতে ক্যাথলিক গুরু ফ্রান্সিস পোপের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়।

সভায় দেশের সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন— দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, স্থায়ী কমিটির সদস্য মিসেস তানিয়া বর, অ্যাডভোকেট ছানোয়ার হোসেন তালুকদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ সিরাজ মিয়া, মোহাম্মদ তৌহিদ হোসেন, অ্যাডভোকেট কে এম জাবির ও কামাল উদ্দিন পাটোয়ারী প্রমুখ।


আরও খবর



ডায়াবেটিস ॥ ভুল ধারণা ও প্রকৃত সত্য

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২০ মে ২০25 | হালনাগাদ:বুধবার ২১ মে ২০২৫ |

Image

অধ্যাপক (ডাঃ) এ বি এম আব্দুল্লাহ:

ডায়াবেটিসকে বলা হয় নীরব ঘাতক। বিশ্বের বহু মানুষ এ রোগে আক্রান্ত। মানুষের মাঝে এ রোগ নিয়ে একাধিক ভুল ধারণা প্রচলিত রয়েছে। আসল সত্য তুলে ধরেন।

(১) ভুল ধারণা- ডায়াবেটিস কোনদিনও ভাল হয় না :

* প্রকৃত সত্য- ডায়াবেটিসকে বলা হয় চিরজনমের রোগ। তবে কিছু কিছু রোগের কারণে ডায়াবেটিস দেখা দিতে পারে, তাকে বলে সেকেন্ডারি ডায়াবেটিস। যেমন-এক্রোমেগালি, থাইরোটক্সিকোসিস, প্যানক্রিয়াটিক ডিজিজ, কুশিং সিনড্রোম। এ সমস্ত রোগের চিকিৎসা করলে ডায়াবেটিস ভাল হতে পারে। কিছু কিছু ওষুধ ব্যবহারে ডায়াবেটিস হয়। যেমন- অনেকদিন ধরে স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ খেলে। এগুলো ছেড়ে দিলে আবার ডায়াবেটিস ভাল হয়ে যায়। নিয়মশৃঙ্খলা মেনে চললে এবং প্রয়োজনে ওষুধ নিয়মিত খেলে ডায়াবেটিস সেরে যেতে পারে।

(২) ভুল ধারণা- ভাত বা কার্বোহাইড্রেট একেবারেই খাওয়া যাবে না :

* প্রকৃত সত্য- অনেকেই মনে করেন ডায়াবেটিস হলে আর ভাত খাওয়া যাবে না। কথাটা একেবারেই সত্য নয়। ভাত বা কার্বোহাইড্রেট পরিমাণ মতো খাওয়া যাবে। সাধারণত সকালে- রাতে গমের রুটি খেতে বলা হয় এবং দুপুরে পরিমাণ মতো মেপে ভাত খেতে দেয়া হয়।

(৩) ভুল ধারণা- কৃত্রিম চিনি ইচ্ছামতো ব্যবহার করা যাবে :

* প্রকৃত সত্য- ডায়াবেটিস রোগীদের কোন প্রকার মিষ্টান্ন খাওয়া উচিত নয় বলে ভাবেন অনেকে। এটি ভুল ধারণা। সাধারণ চিনি না খেয়ে কৃত্রিম চিনি ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে সেটাও হতে হবে পরিমিত। ইচ্ছে মতো অতিরিক্ত কৃত্রিম চিনি ব্যবহার করা উচিত না।

(৪) ভুল ধারণা- ডায়াবেটিস রোগীরা ফল খেতে পারেন না:

* প্রকৃত সত্য- এটাও একটা ভুল ধারণা। ডায়াবেটিস রোগীরা যে কোন ফল খেতে পারবেন। যেমন- কলা, আপেল, কমলা, আঙ্গুর ইত্যাদি। তবে তা যেন হয় পরিমিত।

(৫) ভুল ধারণা - মিষ্টি খেলেই ডায়াবেটিস হয় :

* প্রকৃত সত্য- মিষ্টি খেলেই ডায়াবেটিস হয়- এ কথাটা ঠিক নয়। সরাসরি মিষ্টি খাওয়ার সঙ্গে ডায়াবেটিস হওয়ার কোন যোগসূত্র নেই। মিষ্টি বেশি না খেলেও ডায়াবেটিস হতে পারে। আসলে পারিবারিক ইতিহাস, ওজন বৃদ্ধি, অস্বাস্থ্যকর খাবার, শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা বা পরিশ্রমবিহীন অলস জীবন যাপন ইত্যাদি ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই বলে ইচ্ছে মতো চিনি বা মিষ্টি কোনক্রমেই বেশি খাওয়া উচিত নয়।

(৬ ) ভুল ধারণা- মিষ্টিজাতীয় ওষুধ খেলে ডায়াবেটিস বাড়বে :

* প্রকৃত সত্য- কিছু কিছু সিরাপ জাতীয় ওষুধ বেশ মিষ্টি, যেগুলোতে সামান্য সুগার বা স্যাকারিন দেয়া হয়। অনেক ডায়াবেটিস রোগীর ধারণা এগুলো খেলে ডায়াবেটিস বেড়ে যেতে পারে। আসলে তা ঠিক নয়। কারণ, এই সিরাপগুলোতে খুব সামান্য পরিমাণ স্যাকারিন মিশ্রিত থাকে। রোগের কারণে ওষুধটাই জরুরী। এগুলো সেবনে ডায়াবেটিস বাড়ার তেমন কোন ঝুঁকি নেই।

(৭) ভুল ধারণা- ডায়াবেটিস ছোঁয়াচে হতে পারে :

* প্রকৃত সত্য- ডায়াবেটিস কোন ছোঁয়াচে রোগ নয়। বরং জেনেটিক বা বংশগত কারণে হতে পারে। যেমন- বাপ-মা, ভাই-বোন, নিকটাত্মীয় কারও ডায়াবেটিস থাকলে অন্যদেরও হতে পারে।

(৮) ভুল ধারণা- হোমিওপ্যাথিক বা হার্বাল মেডিসিনে ডায়াবেটিস ভাল হয় :

* প্রকৃত সত্য- আসলে এর কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের মূল চাবিকাঠি তিনটা ‘ডি’-

* প্রথম ডি-ডায়েট কন্ট্রোল বা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ। ৬০ থেকে ৮০ ভাগ রোগী এতেই ভাল থাকেন।

* দ্বিতীয় ডি- ডিসিপ্লিন বা শৃঙ্খলা। সুশৃঙ্খল জীবনযাপন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের মূল চাবিকাঠি।

* তৃতীয় ডি- ড্রাগ বা ওষুধ, খুব অল্প সংখ্যক রোগীর ওষুধের প্রয়োজন পড়বে।

(৯) ভুল ধারণা- তিতা জাতীয় জিনিস যেমন- করলা, মেথি বা নিমপাতা খেলে ডায়াবেটিস সেরে যায় :

* প্রকৃত সত্য- তিতা স্বাদযুক্ত খাবার রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ হ্রাস করে বলে মনে করেন অনেকেই। এ কারণে করলা বা নিম বা অন্যান্য তিতা খাবার খান। এটা একটি ভুল ধারণা। তিতা খেলে ডায়াবেটিস রোগে উপকার হয়, এ রকম ধারণা কমবেশি প্রচলিত থাকলেও বিজ্ঞানসম্মত এর কোন প্রমাণ নেই যে, এগুলো রক্তে গ্লুকোজের নিয়ন্ত্রণ করে।

(১০) ভুল ধারণা- সাধারণ চিনিমুক্ত খাবার বা পানীয় ইচ্ছেমতো খাওয়া যায় :

* প্রকৃত সত্য- এ কথাও সত্য নয়। বাজারে ‘ডায়াবেটিক’ পানীয় যেমন- কোক, পেপসি, সেভেন আপ ইত্যাদি এমনকি ডায়াবেটিক সন্দেশ, বিস্কুট, জ্যাম, চকলেট পাওয়া যায়। এসব খাবারের গায়ে চমকপ্রদ কিছু লেখা আর চটকদার বিজ্ঞাপন দেখে স্বাভাবিকভাবেই একজন ডায়াবেটিস রোগীর খেতে মন চায়। ডায়াবেটিক রোগীরা মাঝেমধ্যে মিষ্টির বদলে এগুলো খেতে পারেন। তবে সব সময় খাওয়া উচিত না।

(১১) ভুল ধারণা- ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীরা প্রয়োজনে কাউকে রক্তদান করতে পারবেন না :

* প্রকৃত সত্য- ডায়াবেটিসে আক্রান্তরা কখনও অন্য মানুষকে রক্তদান করতে পারেন না, এমনটাই ধারণা অনেকের। তবে এ ধারণা সম্পূর্ণ সঠিক নয়। শারীরিকভাবে সুস্থ থাকলে বা অন্য কোন সমস্যা না থাকলে রক্তদানে কোন সমস্যা নেই।

(১২) ভুল ধারণা- নিয়ন্ত্রণে এলে অনেকেই শারীরিক সমস্যা হচ্ছে না মনে করে ওষুধ বন্ধ করে দেন। মনে করেন ওষুধ না খেলেও চলে :

* প্রকৃত সত্য- কোন কোন রোগী একবার সুগার নিয়ন্ত্রণে এসে গেলেই ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে দেন। কিন্তু বাস্তবে ওষুধের কারণেই সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকে। ওষুধ বন্ধ করা হলে সুগারের মাত্রা আবার বাড়তে থাকে। তাই নিয়ন্ত্রণে এলেই ওষুধ বন্ধ করা মোটেও ঠিক নয়।

(১৩) ভুল ধারণা- ডায়াবেটিক রোগীরা ওষুধ খাওয়ার পরে যত খুশি মিষ্টি খেতে পারেন :

* প্রকৃত সত্য- এ ধারণাটা মোটেই ঠিক নয়। হয়ত মাঝেমধ্যে একটু আধটু মিষ্টি খাওয়া যেতে পারে। তার মানে যত খুশি তত মিষ্টি খাওয়া কোনক্রমেই উচিত হবে না। তবে অনেকেই ডায়াবেটিস অতিরিক্ত কন্ট্রোল করতে গিয়ে স্বাভাবিক খাওয়া-দাওয়া একেবারেই কমিয়ে দেন বা ছেড়ে দেন। তা মোটেও ঠিক নয়। অবশ্যই পরিমিত পুষ্টিকর বিশুদ্ধ খাওয়া চালিয়ে যেতে হবে।

(১৪) ভুল ধারণা- ডায়াবেটিস সারা জীবনের সঙ্গী। এটি থেকে আর কোনদিন পরিত্রাণ পাওয়া যায় না :

* প্রকৃত সত্য- এই বিষয়টি সত্যি নয়। সঠিক নিয়ম ও উপায় অবলম্বন করে খুব সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস মুক্ত হওয়া যায়।

(১৫) ভুল ধারণা- একবার ডায়াবেটিসের ওষুধ শুরু করলে আর কোন সময়ই তা বন্ধ করা যাবে না :

* প্রকৃত সত্য- এ ধারণা মোটেও ঠিক নয়। স্থূলকায় ব্যক্তিদের ওজন নিয়ন্ত্রণ, ডায়েট কন্ট্রোল এবং নিয়মিত ব্যায়াম করলে ডায়াবেটিস অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। প্রয়োজনে ওষুধ বন্ধ করা যেতে পারে।

(১৬) ভুল ধারণা- ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীরা তাড়াতাড়ি মারা যায় :

* প্রকৃত সত্য- এ ধারণা মোটেও ঠিক নয়। শৃঙ্খলা মেনে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করলে অবশ্যই জীবনযাত্রা স্বাভাবিক থাকবে। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসে অনেক ধরনের জটিলতা হতে পারে।

(১৭) ভুল ধারণা- ডায়াবেটিসে ইনসুলিন সর্বশেষ চিকিৎসা :

* প্রকৃত সত্য- ইনসুলিন একজন ডায়াবেটিস রোগীর জীবনে যে কোন সময়ই লাগতে পারে। বিশেষ করে গর্ভাবস্থায়, যে কোন অপারেশনের সময়, কোন গুরুতর রোগে হাসপাতালে থাকাকালীন। যেমন- হার্ট এ্যাটাক, স্ট্রোক বা মারাত্মক কোন সংক্রমণের সময়, কিডনি বা যকৃতের জটিলতায় ইনসুলিনই সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ও নিরাপদ। এ ছাড়া কোন কারণে রক্তে গ্লুকোজ অনেক বেড়ে গেলেও ইনসুলিন দরকার হবে। ব্যাপারটা এমন নয় যে, ইনসুলিন দেয়া হচ্ছে মানে অবস্থা খুব জটিল বা মরণাপন্ন। তবে অবস্থার উন্নতি হলে ইনসুলিন বন্ধ করা যেতে পারে এবং মুখে খাওয়ার ওষুধ ব্যবহার করা যাবে। তার মানে ইনসুলিন সর্বশেষ চিকিৎসা নয়।

(১৮) ভুল ধারণা - একবার ইনসুলিন ব্যবহার করলে সারা জীবনই তা নিতে হবে :

* প্রকৃত সত্য- বিষয়টা আসলে তা নয়। নানা কারণে ইনসুলিনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিতে পারে। আবার পরে তা পরিবর্তন করে বা বন্ধ করে ওষুধ খাওয়াও যেতে পারে। যেমন- গর্ভাবস্থা কেটে যাওয়ার পর বা অস্ত্রোপচারের ঘা শুকিয়ে যাওয়ার পর একসময় ইনসুলিন বন্ধ করে আবার ওষুধ খাওয়া যায়। তবে টাইপ ১ ডায়াবেটিস, কিডনি ও যকৃতের গুরুতর সমস্যা এবং সর্বোচ্চ মাত্রায় ওষুধ ব্যবহার করেও যদি গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রিত না হয়, এসব ক্ষেত্রে সব সময়ের জন্য ইনসুলিন ব্যবহার করতে হবে।

(১৯) ভুল ধারণা- ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মায়ের গর্ভধারণ করা ঠিক নয়, এমনকি বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানো যাবে না:

* প্রকৃত সত্য- এ ধারণাটা মোটেও ঠিক নয়। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকলে গর্ভধারণে কোন নিষেধ নেই, এমনকি বাচ্চাকে দুধ খাওয়ালেও বাচ্চার কোন ঝুঁকি নেই।

(২০) ভুল ধারণা- ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীরা কখনোই রোজা রাখতে পারবেন না :

* প্রকৃত সত্য- এই ধারণা মোটেও ঠিক নয়। ডায়াবেটিসের চিকিৎসার মূলমন্ত্র হলো খাদ্য নিয়ন্ত্রণ এবং নিয়মিত ব্যায়াম করা। রোজা একটা সুবর্ণ সুযোগ, যা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকলে রোগীরা অবশ্যই রোজা রাখতে পারবেন। প্রয়োজনে ওষুধ ব্যবহার করা যাবে। এমনকি রোজা রেখে দিনের বেলায় রক্তের সুগার মাপা যাবে, প্রয়োজনে রোজা রেখে ইনসুলিন ইনজেকশন দেয়া যাবে। এতে রোজা ভঙ্গ হবে না।

(২১) ভুল ধারণা- ডায়াবেটিস রোগীরা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে ওরস্যালাইন খেতে পারবেন না :

* প্রকৃত সত্য - অনেকে মনে করেন ওরস্যালাইনের মধ্যে গ্লুকোজ থাকে। তাই ডায়াবেটিসের রোগীর ডায়রিয়া হলে ওরস্যালাইন খাওয়া উচিত নয়। এ ধারণাটা মোটেও ঠিক নয়। কারণ ওরস্যালাইনে সামান্য গ্লুকোজ থাকে। এতে ডায়াবেটিসের ততটা ক্ষতি হয় না।

সুতরাং যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, তাদের এসব ভ্রান্ত ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ডায়াবেটিসকে ভয় না পেয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত।



আরও খবর



এই প্রজন্মই দেশের সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ

প্রকাশিত:শনিবার ১০ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২০ মে ২০25 |

Image

এই প্রজন্মই দেশের সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে ‘কয়েকটি কথা’ শিরোনামে দেওয়া এক পোস্টে এ মন্তব্য করেন।

মাহফুজ আলম লিখেছেন, একটি দলের অ্যাক্টিভিস্টরা বারবার লীগ নিষিদ্ধের আইনি প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে ছাত্ররা রাজি ছিল না, এটা বলে বেড়াচ্ছেন। মিথ্যা কথা। ক্যাবিনেটে প্রথম মিটিং ছিল আমার। আমি স্পষ্টভাবে এই আইনের অনেকগুলো ধারা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলাম। নাহিদ-আসিফও আমার পক্ষে ছিল স্বভাবতই।

তিনি আরও লিখেছেন, দল হিসেবে বিচারের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরা হলে একজন প্রবীণ উপদেষ্টার জবাব ছিল ন্যুরেমবার্গ ট্রায়ালের মতো পশ্চাৎপদ উদাহরণ আমরা আমলে নিতে পারি কি না। পরবর্তীতে দল হিসেবে লীগকে নিষিদ্ধ করার কয়েকটা আইনি পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা হয় এবং প্রাথমিক ঐকমত্য হয় যে, ফ্যাসিবাদ দূর করতে ও ন্যায়বিচারের লক্ষ্যে আমরা সেগুলো অনুসরণ করব। গতকাল বিকালে কথা হয়েছে। দল হিসেবে লীগের বিচারের প্রভিশন অচিরেই যুক্ত করার আশ্বাস দিয়েছেন আইন উপদেষ্টা। উনাকে ধন্যবাদ।

অন্তর্বর্তী সরকারের এই উপদেষ্টা লিখেছেন, মিথ্যা বলা বন্ধ করুন। ঘোষণাপত্র নিয়ে আপনাদের দুই মাস টালবাহানা নিয়ে আমরা বলব। ছাত্রদের দল ঘোষণার প্রাক্কালে আপনারা দলীয় বয়ানের একটি ঘোষণাপত্র নিয়ে আলোচনা শুরু করেছিলেন। সমস্যা নেই, আমরাও চাই সবাই স্বীকৃত হোক। কিন্তু, এখন সেটাও হতে দেবেন না। দোষ আমাদেরও কম না। আমরা আপনাদের দলীয় প্রধানের আশ্বাসে আস্থা রেখেছিলাম।

তিনি লিখেছেন, পুনশ্চ: আমরা নির্বাচন পেছাতে চাইনা। ডিসেম্বর টু জুনের মধ্যে নির্বাচন হবেই। আপনারা যদি মনে করেন, ছাত্ররা নিজেদের আদর্শ ও পরিকল্পনা নিতে পারে না বরং এখান থেকে ওখান থেকে অহি আসলে আমরা কিছু করি, তাহলে আপনারা হয় ছাত্রদের খাটো করে দেখছেন, নয়তো ছাত্রদের ডিলেজিটিমাইজ করার পরিকল্পনায় আছেন।

মাহফুজ আলম লিখেছেন, সেই আগস্ট থেকেই আমরা জাতির জন্য যা ভালো মনে করেছি, সবার পরামর্শ নিয়েই করেছি। বরং, উক্ত দলকেই আমরা বেশি ভরসা করেছি। সবার আগে উনাদের সঙ্গেই পরামর্শ করেছি। ভরসার বিনিময়ে পেয়েছি অশ্বডিম্ব। সব দোষ এখন ছাত্র উপদেষ্টা নন্দঘোষ!

আমরা উক্ত দলকে বিশ্বাস করতে চাই উল্লেখ করে উপদেষ্টা আরও লিখেছেন, উক্ত দলের প্রধানকে আমরা বিশ্বাস করতে চাই। উনি আমাদের বিশ্বাসের মূল্য দিয়ে লীগ নিষিদ্ধ প্রশ্নে ও ঘোষণাপত্র প্রকাশে দেশপ্রেমিক ও প্রাগমাটিক ভূমিকা রাখবেন বলেই আস্থা রাখি। উক্ত দলকে নিয়ে কে কি বলবে জানি না। কিন্তু আমরা চাই উক্ত দল ছাত্রদের সঙ্গে নিয়ে দেশের পক্ষে, অভ্যুত্থানের শত্রুদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ঐকমত্যের নেতৃত্ব দিক। দেশপ্রেমিক ও সার্বভৌমত্বের পক্ষের শক্তি হিসেবে নেতৃত্ব দিলে ছাত্ররা রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় উনাদের সঙ্গে চলবেন।

সবশেষে তিনি লিখেছেন, ঐক্যবদ্ধ হোন। নেতৃত্ব দিন। এই প্রজন্মকে হতাশ করবেন না। এই প্রজন্ম দেশের সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ।

প্রসঙ্গত, মাহফুজ আলম ২০২৪ এর জুলাইয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালীন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। বর্তমানে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।


আরও খবর



পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের আন্দোলন সাময়িক স্থগিত

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২২ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২০ মে ২০25 |

Image

ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং (পলিটেকনিক) শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবিতে চলমান আন্দোলন সাময়িক স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের (আইডিইবি) অন্তর্বর্তীকালীন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব কাজী সাখাওয়াত হোসেন সাংবাদিকদের কাছে এই বার্তা পাঠান।

তিনি জানান, সামগ্রিক প্রেক্ষাপট নিয়ে সোমবার আইডিইবির আহ্বায়ক মো. কবীর হোসেন ও সদস্য সচিব কাজী সাখাওয়াত হোসেনের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. খ. ম. কবীরুল ইসলামের সঙ্গে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের যৌথ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় শিক্ষার্থীদের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন মো. হাবিবুর রহমান, লিমন হাসান, মাশরাফি বিন মাফি, জুবায়ের পাটোয়ারী, রহমত উল আলম শিহাব, আশরাফুল ইসলাম মিশান, রমজান আলী, সাব্বির আহমেদ, শিহাবুল ইসলাম শিহাব।

আলোচনায় শিক্ষা সচিব জানান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের উদ্যোগে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদোন্নতি বিষয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হলে আদালত রায়টি স্থগিত করেন। এছাড়া শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ননটেক অধ্যক্ষকে তার পদ থেকে ইতোমধ্যে বদলি করা হয়েছে।

সচিব ড. খ. ম. কবীরুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবি বাস্তবায়নে আইডিইবি ও শিক্ষার্থী প্রতিনিধিকে অন্তর্ভুক্ত করে শিগগিরই উচ্চপর্যায়ের আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করা হবে এবং কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে সব দাবি পূরণ করা হবে। তিনি আগামী ২৭ এপ্রিল প্রধান উপদেষ্টার মাধ্যমে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা সপ্তাহ-২০২৫-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সামগ্রিক বিষয়টি তার নজরে আনা হবে মর্মে আশ্বাস দেন। তারপর সচিব প্রধান উপদেষ্টার প্রতি সম্মান জানিয়ে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থীদের চলমান ছয় দফা দাবির আন্দোলন স্থগিত রাখার জন্য অনুরোধ জানান।

এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য আইডিইবি আহ্বায়ক মো. কবীর হোসেনের সভাপতিত্বে গতকাল সন্ধ্যায় আইডিইবি ভবনে শিক্ষার্থীদের নিয়ে আলোচনা সভা হয়। আলোচনায় সামগ্রিক বিষয় পর্যালোচনা করে চলমান আন্দোলনের কর্মসূচি সাময়িকভাবে স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়।


আরও খবর



পৃথিবীর জন্য আশার বাতিঘর হতে চায় বাংলাদেশ

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২২ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২০ মে ২০25 |

Image

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মঙ্গলবার বিশ্ববাসীর উদ্দেশে বলেছেন, বাংলাদেশ এখন এমন এক অবস্থায় দাঁড়িয়ে, যেখানে একটি নতুন সামাজিক চুক্তি করার সুযোগ এসেছে। এটি এমন এক চুক্তি যেখানে রাষ্ট্র ও জনগণ, বিশেষ করে যুবসমাজ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবস্থা, ঐতিহ্য, ন্যায়বিচার, মর্যাদা এবং সুযোগের ভিত্তিতে একটি ভবিষ্যৎ একত্রে গড়ে তুলবে।

তিনি বলেন, ‘আমরা পৃথিবীর জন্য আশার এক বাতিঘর হিসেবে দাঁড়াতে চাই এবং আমাদের বন্ধু ও অংশীদারদের আহ্বান জানাই অন্তর্ভুক্তিমূলক সামাজিক চুক্তি পুনর্লিখনের জন্য, পাশাপাশি সামাজিক ব্যবসা, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এবং মাইক্রোফাইন্যান্সের ভূমিকা অন্বেষণ করতে, যা প্রান্তিক জনগণের জন্য টেকসই উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সুযোগ সৃষ্টিতে সহায়ক।

প্রধান উপদেষ্টা আজ কাতারের দোহায় ‘আর্থনা শীর্ষ সম্মেলন ২০২৫’-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, এটি এমন এক সামাজিক চুক্তি যেখানে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও প্রান্তিক জনগণের ক্ষমতায়ন মৌলিক বিষয় হিসেবে বিবেচিত হবে।

প্রধান উপদেষ্টা তার বক্তব্যে একটি সহনশীল, সমৃদ্ধ এবং টেকসই ভবিষ্যতের স্বপ্নের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, তবে এখন এমন নানা হুমকি রয়েছে যা আমাদের উন্নয়নকে বিপথে ঠেলে দিতে পারে।

তিনি বলেন, ‘আমরা এমন একসময় পার করছি যেখানে বহুপাক্ষিকতা হুমকির মুখে, জলবায়ু পরিবর্তন দ্রুততর হচ্ছে, ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ছে এবং মানবিক সংকট গভীরতর হচ্ছে। নতুন নতুন নীতিমালা, প্রযুক্তি এবং শাসন পদ্ধতি আমাদের পৃথিবীকে দ্রুত রূপান্তরিত করছে, যা অতীতের অনেক অনুমানকে অচল করে দিচ্ছে।

এমন প্রেক্ষাপটে সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘এখন আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সহযোগিতার পুনরুজ্জীবনের প্রয়োজন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আসুন আমরা সাহসী হই। একটি এমন পৃথিবী গড়ি, যেখানে কেউ এতটা দরিদ্র না হয় যে সে স্বপ্ন দেখতে না পারে এবং কোনো স্বপ্ন এত বড় না হয় যে তা অর্জন করা যায় না।

তিনি আরো যোগ করেন, ‘ভবিষ্যৎ এমন কিছু নয় যা আমরা উত্তরাধিকার হিসেবে পাই। এটি এমন কিছু যা আমরা তৈরি করি। এবং আমাদের প্রত্যেকেরই এতে একটি করে ভূমিকা রয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা আরো বলেন, সামনে যে চ্যালেঞ্জগুলো রয়েছে, তা নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আমাদের উদ্ভাবন, সহমর্মিতা এবং সম্মিলিত কর্মকাণ্ডের সক্ষমতাও ব্যাপক।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, কাতার যেভাবে আর্থনা শীর্ষ সম্মেলনের উদ্যোগ নিয়েছে, তা দেখাচ্ছে কীভাবে একটি দেশ উদ্ভাবন, ঐতিহ্য ও অংশীদারিত্বের মাধ্যমে জলবায়ু সংকট, সামাজিক বৈষম্য এবং কর্মসংস্থানের ভবিষ্যৎ মোকাবিলা করতে পারে।

অধ্যাপক ইউনূস তার মূল বক্তব্যে সামাজিক ব্যবসা, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এবং মাইক্রোফাইন্যান্সের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য টেকসই উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সুযোগ তৈরির ওপর গুরুত্ব দেন।

তিনি কাতার ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন শেখ মোজা বিনতে নাসের এবং ভাইস চেয়ারপারসন ও সিইও শেখ হিন্দ বিনতে হামাদ আল থানিকে সময়োপযোগী ও চমৎকার এই শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানান।

দোহায় আজ শুরু হওয়া দুদিনব্যাপী আর্থনা শীর্ষ সম্মেলনের প্রতিপাদ্য হচ্ছে— ‘আমাদের উত্তরাধিকার গড়ে তোলা: স্থায়িত্ব, উদ্ভাবন ও ঐতিহ্যবাহী জ্ঞান’


আরও খবর