Logo
শিরোনাম

কপোতাক্ষের ভাঙনে ডুবছে খুলনার রাড়ুলী জেলে পল্লি

প্রকাশিত:সোমবার ১৮ জুলাই ২০২২ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

কপোতাক্ষ নদের পূর্ণিমার জোয়ারের পানিতে রাতে ও দিনে প্রতিদিন ডুবছে খুলনার পাইকগাছার রাড়ুলী জেলে পল্লি। এ অবস্থায় ঝুঁকি নিয়ে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে ওই পল্লির ১৫০টি পরিবার। তাদের বাড়িঘর রক্ষায় নেই কোনো টেকসই বেড়িবাঁধ। চলতি বর্ষার শুরুতে নতুন করে ভাঙনের হাত থেকে বাঁচতে দীর্ঘমেয়াদী টেকসই বেঁড়িবাধ প্রকল্প বাস্তবায়ন ও পরিকল্পিত নদী শাসনের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ ইউনিয়নবাসী।

জেলে পল্লির মনোরঞ্জন বিশ্বাস অভিযোগ করেন, পূর্বপুরুষসহ এখানে আমাদের প্রায় ২০০ বছরের বসবাস। এখানকার পল্লিতে আমরা প্রায় ৫০০ পরিবার বসবাস করতাম, কিন্তু কপোতাক্ষের ভাঙনে ৩৫০টি পরিবার গৃহহীন হয়ে এলাকা ছেড়ে চলে গেছে। এদের মধ্যে কেউ রাস্তার পাশে সরকারি জমিতে আবার কেউ সরকারের আবাসনে ঠাঁই পেয়েছেন। এবার ভেঙেছে আমার ঘরও। এমতাবস্থায় পরিবার নিয়ে সরকারি রাস্তার পাশর একটি টোঙ ঘরে বসবাস করছি। বর্তমানে ভাঙন সঙ্গী করেও ১৫০টি পরিবার এখানে বসবাস করছি।

একই এলাকার বাবুরাম বিশ্বাস বলেন, কপোতাক্ষ নদের ভাঙনে আমি তিনবার ভিটা হারিয়েছি। বর্তমানে যে ঘরটিতে আছি সেটিও ভাঙনের পথে। রান্না ঘর ভেসে গেছে পানিতে, থাকার ঘরটি কোনো রকম টিকে থাকলেও নদের কিনারায় ঝুলছে। জোয়ারের পানিতে রাত দিন দুইবার ডুবছে আমাদের ঘরবাড়ি। এ সময় পরিবার নিয়ে ভয়ে রাত জেগে পাহারা দেই, কখন যে ঘরখানা পানিতে ভাসিয়ে নিয়ে যায় এই ভয়ে।

বর্তমানে পূর্ণিমার অতিরিক্ত পানি বাড়ায় আমাদের ঘরবাড়ির উঠানে থইথই পানি। ভাটা হলে দুপুরের রান্না হবে। অনেক সময় সেটাও করা যায়। পরে শুকনা খাবার খেয়ে জীবন ধারণ করি। নদের পাশে বাড়িঘর রক্ষার বাঁধ থাকলে জোয়ারের পানি উঠতো না।

ওই এলাকার মান্দার বিশ্বাস বলেন, কপোতাক্ষের পাড়ে আমাদের পূর্বপুরুষরা বসবাস করে আসছে। প্রায় এক কিলোমিটার জায়গা কপোতাক্ষ নদের ভাঙনে চলে গেছে। বিপরীত পাড়ে চর জেগেছে। ওইখানে যদি আমাদের জায়গা দিত তাহলে আমরা বসবাস করতে পারতাম। ভাঙন দেখতে শুধু জনপ্রতিনিধিরা আসে কিন্তু কোনো কাজ হয় না।

এ বিষয়ে পাইকগাছা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রাজু হাওলাদার বলেন, রাড়ুলীর কপোতাক্ষ নদের ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করে এ বছরের চাহিদা পাঠিয়েছি। বরাদ্দ হলে কাজ শুরু করা হবে।

এ ব্যাপারে ইউএনও মমতাজ বেগম বলেন, ভাঙন এলাকায় গিয়েছি, কিন্তু ভাঙনের কারণে জেলেপল্লি রক্ষা বাঁধ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানিয়েছি।


আরও খবর



নওগাঁর সীমান্তে গুলিতে নিহত যুবকের মৃতদেহ ফেরত দিলো বিএসএফ

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টার :

নওগাঁর পোরশা নিতপুর সীমান্তে ভারতের অভ্যন্তরে বিএসএফ এর গুলিতে নিহত বাংলাদেশি যুবক আল আমিন (৩৮) এর মৃতদেহ ফেরত দিয়েছে বিএসএফ। বুধবার দিবাগত রাত পৌনে ৯টারদিকে ১৬ বিজিবি হাঁপানিয়া বিওপি সংলগ্ন কৃষ্ণসদা এলাকায় সীমান্তের শূন্যরেখায় উভয় দেশের পুলিশ সদস্য ও বিজিবি-বিএসএফ সদস্যদের উপস্থিতিতে মৃতদেহ পৌছে দেয় বিএসএফ সদস্যরা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাঁপানিয়া বিওপি’র নায়েক সুবেদার আবু তালেব। তিনি জানান, বুধবার দিবাগত রাত ৮টারদিকে কৃষ্ণসদা সীমান্তের ২৩৬ মেইন পিলারের কাছে বিজিবি ও বিএসএফ কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পরে রাত পৌনে ৯টার দিকে নিহতের পরিবারের কাছে মৃতদেহ হস্তান্তর করা হয়। এসময় পোরশা ও সাপাহার থানা পুলিশ উপস্থিত ছিলেন।                  নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, সোমবার দিবাগত রাতে আল আমিন আরো কয়েক জনের সাথে নওগাঁর পোরশা উপজেলার নীতপুর সীমান্ত এলাকার ২৩২ নম্বর পিলার এলাকা দিয়ে ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশ করেন। পরে গরু নিয়ে নিতপুর সীমান্তের নীলমারি এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে ফেরার সময় মঙ্গলবার ভোর ৪টারদিকে ভারতের দাল্লাপাড়া কাঠের ব্রীজ নামক স্থানে পৌঁছালে বিএসএফ ১৫৯ ব্যাটালিয়নের কেদারীপাড়া ক্যাম্পের সদস্যরা তাদের ধাওয়া করেন। এ সময় অন্যরা পালিয়ে গেলেও আল আমিন গুলিবিদ্ধ হোন। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের শুন্যরেখা থেকে ১ কিলোমিটার ভারতের অভ্যন্তরে এ ঘটনা ঘটে। পরে বিএসএফ সদস্যরা আল আমিনের মৃতদেহ নিয়ে যায়।    মঙ্গলবার দুপুরে হাঁপানিয়া সীমান্ত ফাঁড়ি এলাকায় বিএসএফ ও বিজিবি কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠকে মৃতদেহ ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। স্থানীয় পুলিশ সূত্র জানায়, ভারতীয় পুলিশ ময়না তদন্তের পরই মৃতদেহ ফেরত দিয়েছে।নিহতের শরীরে গুলিবিদ্ধ হওয়ার চিহ্ন ছিলো।


আরও খবর



মেঘনায় ঢাকাগামী লঞ্চে আগুন

প্রকাশিত:শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24 | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

ভোলা থেকে রাজধানী সদরঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া যাত্রীবাহী লঞ্চ কর্ণফুলী-৩ এ আগুন লাগার খবর পাওয়া গেছে। এ সময় হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে ৭ যাত্রী আহত হয়েছেন। অনেকে আতঙ্কে নদীতে লাফিয়ে পড়েন। পরে লঞ্চটি চাঁদপুরের হাইমচর সংলগ্ন আবাল বিল নামে একটি চরে নোঙর করা হয়।

শনিবার (২০ এপ্রিল) সকাল ১০টা ১৫ মিনিটের দিকে হাইমচর সংলগ্ন আবাল বিল চর এলাকার মেঘনা নদীতে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

কর্ণফুলী-৩ লঞ্চের সহকারী মাস্টার মো. রইচ উদ্দিন সুমন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কয়েক শ যাত্রী নিয়ে লঞ্চটি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। সকাল ১০ টা ১৫ মিনিটের দিকে লঞ্চটির ইঞ্জিনরুমে হঠাৎ করে আগুন লেগে যায়। আগুন নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে লঞ্চটি আবাল বিল চরে নোঙর করে যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়া হয়। বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি।

সহকারী মাস্টার আরও জানান, আগুন লাগার পরই তা পুরো ইঞ্জিনরুমে ছড়িয়ে পড়ে। জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করে ফায়ার সার্ভিস ও কোস্টগার্ডের সহায়তা চাওয়া হয়। চরে নামিয়ে দেওয়া যাত্রীদের কর্ণফুলী-৪ লঞ্চ ঢাকায় নিয়ে যাবে বলে জানান তিনি।

এদিকে লঞ্চটিতে থাকা মনিরুল ইসলাম রুবেল নামে এক যাত্রী জানান, আগুন লাগার খবরে যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তবে এতে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ইঞ্জিনরুমসহ লঞ্চের নিচতলা ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে গেছে।

ভোলা জেলা প্রশাসকের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলমগীর হোসাইন জানান, ঘটনাটি জানার পর তিনি কোস্টগার্ডকে বিষয়টি অবগত করেছেন। চাঁদপুরের একটি কোস্টগার্ড টিম ঘটনাস্থলে যাবে।

তিনি আরও জানান, যেহেতু ঘটনাস্থল ভোলার বাইরে, সেজন্য এখনো নিশ্চিত করে ঘটনার বিস্তারিত কিছু বলা সম্ভব না।


আরও খবর

তাপমাত্রা আরও বাড়ার আশঙ্কা

বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪




অগ্নিনির্বাপন বিধিমালা মানছে না কেউ

প্রকাশিত:রবিবার ৩১ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ |

Image

সম্প্রতি ভয়াবহ কয়েকটি অগ্নিকাণ্ডের মুখোমুখি হয়েছে দেশবাসী। কোনও ঘটনা থেকেই পরবর্তী দুর্ঘটনা রোধে তেমন উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি কর্তৃপক্ষকে। সর্বশেষ গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সমালোচনার পর নড়েচড়ে বসেছে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো। যথাযথ অগ্নিপ্রতিরোধব্যবস্থা না রাখায় রাজধানীর অনেক প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়েছে এসব সংস্থা। বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা পাওয়ায় সিলগালাসহ তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিয়েছে।

কোনও অগ্নিকাণ্ডে ব্যাপক হতাহত হওয়ার পর অভিযানে নামে সিটি করপোরেশন ও রাজউক। কয়েক দিন চলার পর এসব অভিযান বন্ধ হয়ে যায়। গত বছর বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের পর ফায়ার সার্ভিস, সিটি করপোরেশন বিভিন্ন ভবনে মার্কেটে অভিযান চালিয়েছে। অগ্নিকাণ্ড নীতিমালা যারা মানেনি, তাদের সতর্ক করে নোটিশ দিয়েছিল। কয়দিন পর অভিযান বন্ধ করে দেয়।

এবার আবার বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডের দুই দিন পর একযোগে আবার অভিযানে নামে বিভিন্ন সংস্থা। তিন দিন অভিযান চালিয়ে বন্ধ হয়ে গেছে। এখন আর কোনও সাড়াশব্দ নেই। এভাবেই একটা ঘটনা ঘটে আর সংস্থাগুলো তৎপর হয়; তা-ও খুব অল্প সময়ের জন্য।

ফায়ার সার্ভিস বলছে, বিভিন্ন ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের তদন্ত প্রতিবেদন ও সুপারিশ আমলে নেয় না রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্টরা। রাজধানীতে দুর্ঘটনা ঘটলেই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়, ক্ষতিগ্রস্ত ভবন-মার্কেটের অনুমোদন না থাকা বা ঝুঁকিপূর্ণ থাকার বিষয়টি সামনে আনে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো।

তারা বলছে, ফায়ার সার্ভিস সরেজমিনে অগ্নি-সতর্কতা নোটিশ দিলেও তা আমলে নিতে চান না অধিকাংশ মার্কেট দোকান মালিক প্রতিষ্ঠান ও ভবনের মালিকরা। নানাভাবে ম্যানেজ করে অগ্নিনির্বাপণব্যবস্থা ছাড়াই ভবনগুলোয় কার্যক্রম রাখা হচ্ছে বছরের পর বছর ধরে।

ফায়ার সার্ভিসের সূত্র বলছে, যথাযথ জবাবদিহি ও সতর্কতার অভাবেই ঘটছে ভয়াবহ এসব অগ্নিকাণ্ড। সংস্থাটি জানায়, তাদের কাজ হলো, কোনও ভবনে প্রয়োজনীয় অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থা না রাখা হলে নীতিমালা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে নোটিশ দেওয়া। এরপরও যদি ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে ফের নোটিশ দেয় ফায়ার সার্ভিস।

তবে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, কেউ যদি নীতিমালা অমান্য করে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে সরাসরি কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার এখতিয়ার ফায়ার সার্ভিসের নেই। ফলে সংস্থাটি যেন নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত চালাতে পারে, এ জন্য স্থায়ী ব্যবস্থা করা উচিত।

২০২৩ সালে রাজধানীর ৫৮টি বিপণিবিতান পরিদর্শন করে ফায়ার সার্ভিস। পরিদর্শন শেষে তাদের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, সব কটি বিপণিবিতানই অগ্নিঝুঁকিপূর্ণ। এর মধ্যে ৯টি বিপণিবিতান অগ্নিকাণ্ডের জন্য অতি ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করে ফায়ার সার্ভিস। বাকি ৪৯টির মধ্যে ৩৫টি ঝুঁকিপূর্ণ এবং ১৪টি মাঝারি মাত্রায় ঝুঁকিপূর্ণ।

গত বছরের ৪ এপ্রিল বঙ্গবাজার মার্কেটে আগুন লেগে প্রায় পাঁচ হাজার দোকান পুড়ে যায়। সেই আগুন ছড়িয়ে পড়েছিল পাশের মার্কেট মহানগর কমপ্লেক্স পর্যন্ত। এমন ভয়াবহু অগ্নিকাণ্ডের পরও ওই মার্কেটের ব্যবসায়ীরা এখনও সতর্ক হননি। টিন আর কাঠ দিয়ে তৈরি করা দ্বিতীয় তলাবিশিষ্ট ওই মার্কেটটিতে অগ্নিঝুঁকি নিয়েই ব্যবসা করে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। মার্কেটিতে যেমন রয়েছে সরু পথ, তেমনি নেই কোনও ধরনের অগ্নিনির্বাপণব্যবস্থা। এ ছাড়া বঙ্গবাজারে এনেক্সকো টাওয়ারের বেসমেন্টে দোকান খুলে এখনও দেদার চলছে ব্যবসা।

শুধু মহানগর কমপ্লেক্স, এনেক্সকো টাওয়ারই নয়, সরেজমিনে দেখা যায়, অগ্নিঝুঁকি নিয়ে ব্যবসা করছে রাজধানীর আরও কয়েকটি মার্কেট। এর মধ্যে রয়েছে নিউ মার্কেটের নূর ম্যানশন ও গাউছিয়া মার্কেট। দোকান খুলে ব্যবসা করছে নিউ মার্কেটের গ্লোব শপিং সেন্টারের আন্ডারগ্রাউন্ডেও।

জানতে চাইলে এনেক্সকো টাওয়ারে নিচতলার আকসান ফাহিম ফ্যাশনের ব্যবস্থাপক সোলেমান বাদশা  বলেন, এত বড় অগ্নিকাণ্ডের পরও অগ্নিঝুঁকি বিষয়ে কোনও প্রশিক্ষণ আমাদের দেওয়া হয়নি। অগ্নি প্রতিরোধের তেমন কোনও ব্যবস্থা আমরা পাইনি। আমি প্রতি মাসে সার্ভিস চার্জ দিচ্ছি। তাহলে আমি কেন সুবিধাটা পাচ্ছি না? আমরা সব হারিয়ে এখন নতুন দোকান শুরু করেছি। এসব দায়িত্ব তো মার্কেট সমিতির!

এ বিষয়ে এনেক্সকো টাওয়ারের পরিচালক আল-মামুন বলেন, অগ্নিকাণ্ডের পর মার্কেটে অনেক কাজ করা হয়েছে। বসানো হয়েছে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র। তবে আমাদের এখনও সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আরও কী কী সুবিধা বাড়ানো যায়, মার্কেটকে কীভাবে নিরাপদ রাখা যায়, সে জন্য আমরা কাজ করছি। সম্প্রতি ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম আমাদের মার্কেট এসে ভিজিট করে গিয়েছে। তারা প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে গেছে। সে অনুযায়ী আমরা কাজ করছি। প্রশিক্ষণের বিষয়ে যেটি বলা হচ্ছে, সেটিও আমরা দ্রুত ব্যবস্থা করবো।

শুধু কমিটির দোষ দিলেই হবে না মন্তব্য করে প্রশ্ন রাখেন তিনি, কতজন দোকানদার অগ্নি বিষয়ে সচেতন? কোটি কোটি টাকার ব্যবসা করবে, অথচ সামান্য টাকা দিয়ে দোকানে একটি অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র বসাবে না? সেটির ব্যবস্থা রাখবে না তারা?

রাজধানীর কয়েকটি মার্কেটের ব্যবসায়ীর ও কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের মধ্যেও অগ্নিনিরাপত্তা বিষয়ে আগ্রহ কম। এ বিষয়ে অনেকের জ্ঞান শূন্য। বছর পর বছর ব্যবসা করছে, অথচ অনেক দোকানমালিক ও কর্মচারীর অগ্নি প্রশিক্ষণের বিষয়ে কোনও ধারণাই নেই। এমনই দুজন মহানগর কমপ্লেক্সের রিম গার্মেন্টসের মালিক মো. মামুন ও গাউছিয়া মার্কেটের ফিমা ফ্যাশনের পরিচালক নাসিরু উদ্দিন বাবু।

নাসিরু উদ্দিন বাবু বলেন, সব মার্কেটের একই অবস্থা। কোনও কিছু ঠিক নেই। প্রশিক্ষণ কারা দেবে? আমরা এ বিষয়ে কিছুই জানি না। সব তো মার্কেট সমিতির কাজ।

এ প্রসঙ্গে ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (মিডিয়া) শাজাহান শিকদার বলেন, ফায়ার সার্ভিসের কাজ হলো কোনও ভবনে প্রয়োজনীয় অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থা না রাখা হলে নীতিমালা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে নোটিশ দেওয়া। এরপরও যদি ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে ফের নোটিশ দেওয়া হয়। তবে কেউ যদি নীতিমালা না মানে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার এখতিয়ার নেই সংস্থাটির।

ফলে যেহেতু বাধ্যবাধকতা নেই, সেই সুযোগটাই নিচ্ছেন ভবনমালিকরা মন্তব্য করে তিনি বলেন, তাদের মধ্যে অগ্নিনীতিমালা মানার উদাসীনতা রয়েছে। আমরা বারবার ভবন পরিদর্শন যাচ্ছি, নোটিশ দিচ্ছি; যারা না মানছে, তাদের বিরুদ্ধে সরাসরি কোনও ব্যবস্থা চাইলেও নিতে পারছি না। তবে মাঝেমধ্যে প্রশাসনের অনুমোদন নিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। সেটিও অল্প সময়ের জন্য।

মানবাধিবার কমিশন চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, রাষ্ট্রীয় সংস্থা হিসেবে রাজউক, ফায়ার সার্ভিস, সিটি করপোরেশন তাদের ভূমিকা কি কেবল নোটিশ দেওয়া? বেইলি রোডের ভবনটিতে বাণিজ্যিক অনুমোদন নেওয়ার ক্ষেত্রেও প্রভাবশালী মহলের চাপ ছিল বলে শোনা যাচ্ছে। যে কারণে ভবনটিকে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনায় শর্ত সাপেক্ষে অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে বাণিজ্যিক ব্যবহার ও রেস্তোরাঁ পরিচালনা দুটি ভিন্ন ব্যবহার। যেখানে মাত্র একটি সিঁড়ি, এমন একটি ভবনে রেস্তোরাঁ চলতে পারার কথা নয়।

ধারাবাহিক অগ্নিকাণ্ডে সংশ্লিষ্টদের গাফিলতি মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, যারা প্রভাবশালী, তারা কি এতগুলো মানুষের জীবনের চেয়েও প্রভাবশালী? তারা কীভাবে দিনের পর দিন এগুলোর পুনরাবৃত্তি করছে? এত দুর্ঘটনার পরও কি রাষ্ট্রের টনক নড়বে না?

এদিকে ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) বলছে, ইস্যু করার ক্ষেত্রে যেসব নথিপত্র প্রয়োজন হয়, তার ভিত্তিতেই ট্রেড লাইসেন্স দেওয়া হয়। পরে ব্যবসায়ীরা নিজেদের সুবিধামতো ব্যবসার শ্রেণি পরিবর্তন করলেও তা আর জানায় না।

ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, অনেক ক্ষেত্রে ট্রেড লাইসেন্স নেওয়ার সময় ব্যবসায়ীরা যে ঠিকানা ও ব্যবসার শ্রেণি উল্লেখ করে, পরে তা পরিবর্তন করে ফেলে। নিয়মিত অভিযান চালালেও সব ক্ষেত্রে তা আমাদের নজরে আসে না।

ফায়ার ও দুর্যোগ বিশেষজ্ঞ মেজর এ কে এম শাকিল নেওয়াজ বলেন, অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধ করতে হলে সংশ্লিষ্ট সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। শুধু ফায়ার সার্ভিস একা তা পারবে না। ফায়ার সার্ভিসের নিজস্ব কোনও আইন নেই। অগ্নিনীতিমালা তাদের সুপারিশ যেন মানতে বাধ্য হয়, সেই ক্ষমতা ফায়ার সার্ভিসকে দিতে হবে। যারা অনিয়ম করবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।

তিনি আরও বলেন, সংশ্লিষ্ট সংস্থা যেমন সিটি করপোরেশন, রাজউক, এফবিসিসিআই, ব্যাংকসবাই যদি তাদের কাজটি যথাযথভাবে পালন করে, ভবন নির্মাণের ছাড়পত্র, ব্যবসার লাইসেন্স ও ব্যাংকঋণ দেওয়ার আগে ভবন বা ওই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান অগ্নিনীতিমালা মানছে কি না, এসব যাচাই-বাছাই করে তারপরই অনুমতি দিতে হবে। এককথায় ভবন মালিকদের নিয়মের জালে আনতে হবে। তাহলেই অগ্নিকাণ্ড কমানো সম্ভব।


আরও খবর

তাপমাত্রা আরও বাড়ার আশঙ্কা

বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪




আগামী বছর থেকে শনিবার স্কুল খোলা রাখার ইঙ্গিত

প্রকাশিত:বুধবার ২৭ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ |

Image

রমজানের ছুটি সমন্বয় করতে আগামী বছর থেকে প্রয়োজনে শনিবার স্কুল খোলা রাখা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী।

রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে শিক্ষা মন্ত্রণালয় আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সব মতের মানুষের বিশ্বাস ও চিন্তা-চেতনার প্রতি সম্মান রেখে পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নসহ সব বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকবে মন্ত্রণালয়।

এ বছর রমজানে স্কুল ছুটির আদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। তবে স্কুল খোলা রাখার সিদ্ধান্তে অনড় ছিল মন্ত্রণালয়। রমজানের আগের দিন তারা আপিল করে বসে। সোমবার বিকেলের দিকে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে করা আবেদনের শুনানি হয়। শুনানিতে স্কুল খোলা রাখার বিষয়ে সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তের কথা জানান রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা এএম আমিন উদ্দিন।

এ সময় চেম্বার বিচারপতি প্রশ্ন রাখেন, এই কদিন বিদ্যালয় বন্ধ থাকলে কী এমন অসুবিধা হবে? পরে উচ্চ আদালতের আদেশ স্থগিত না করে মঙ্গলবার আপিল বিভাগে শুনানির দিন ধার্য করা হয়। পরে রমজানে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধের বিষয়ে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করেন আপিল বিভাগ।

 


আরও খবর



সাভারে লরি উল্টে আগুন : নিহত বেড়ে ২

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০২ এপ্রিল 2০২4 | হালনাগাদ:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ |

Image

সাভারের হেমায়েতপুরে একটি তেলের লরি উল্টে আগুন লাগার ঘটনায় নিহত বেড়ে দুজনে দাঁড়িয়েছে।

মঙ্গলবার ভোর ৫টায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভারের জোরপুল এলাকায় সড়ক বিভাজকের সাথে ধাক্কা লেগে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তেলের লরিটি উল্টে প্রাইভেটকারসহ পাঁচটি ট্রাকে ছড়িয়ে পড়ে। এতে ইকবাল নামে এক ব্যক্তি ঘটনাস্থলে অগ্নিদগ্ধ হয়ে নিহত হন। তিনি যশোরের চৌগাছা থানার বাসিন্দা।


পরে দগ্ধ অবস্থায় আটজনকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নেয়া হলে নজরুল ইসলাম নামে একজনকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। বাকিদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

 

বিষয়টি নিশ্চিত করেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক ডা. তরিকুল ইসলাম।

তিনি জানান, আজ সকালে সাভারের হেমায়েতপুর থেকে আটজনকে দগ্ধ অবস্থায় জরুরি বিভাগে আনা হয়। এদের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নজরুল ইসলাম নামে একজনের মৃত্যু হয়। বাকি সাত জনকে জরুরি বিভাগে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তাদের ড্রেসিং সম্পন্ন না হলে দগ্ধের পরিমাণ জানা সম্ভব হচ্ছে না। দগ্ধদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলেও জানান তিনি।

দগ্ধ সাতজন হলেন মিম (১০), আল-আমিন (৩৫), নিরাঞ্জন (৪৫), মিলন মোল্লা (২২), ট্রাকের হেলপার সাকিব (২৪), ট্রাকের ড্রাইভার হেলাল (৩০) ও আব্দুস সালাম (৩৫)।


আরও খবর

তাপমাত্রা আরও বাড়ার আশঙ্কা

বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪