যাত্রাবাড়ী ডেমরা শ্যামপুরে ট্রাফিক পুলিশের ট্রাক সি এন জি
অটোরিস্কা ও পরিবহন থেকে চাঁদাবাজি যেন ওপেন সিক্রেট। প্রতিদিন প্রকাশ্যে চলছে
ট্রাফিক পুলিশের বেপরোয়া চাঁদাবাজি। ফলে বিতর্কিত হচ্ছে ট্রাফিক পুলিশের ভাবমূর্তি
অন্যদিকে অবৈধ ফিটনেস বিহীন গাড়ি চলছে নিরদ্বিধায়।
সরেজমিনে
গেলে দেখা যায় যাত্রাবাড়ী ট্রাফিক পুলিশ বক্সের সামনে চৌরাস্তার মোড়ে দিন রাত ২৪
ঘন্টা চলছে প্রকাশ্য চাঁদা নেওয়ার দৃশ্য। ঐ এলাকায় ডিউটিরত ৪/৫ টি ট্রাফিক পুলিশ
টিম প্রকাশ্যে গাড়ি থেকে চাঁদা আদায় করছে দশ টাকা থেকে দুইহাজার টাকা পর্যন্ত।
রাজধানীর
যাত্রাবাড়ী রায়েরবাগসহ বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের চাঁদাবাজির মহোৎসব
চলছে। এসব পয়েন্টে পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের দায়িত্বরত সার্জেন্টগণ ফ্রি-স্টাইলে
চাঁদাবাজি করছেন। ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহনের কাগজপত্র দেখার নামে
ট্রাফিক পুলিশ ও সার্জেন্টরা গাড়ি আটকের পর মামলার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করা হচ্ছে ।
।

এ
চাঁদাবাজি দিনের চেয়ে রাতের বেলায় বেশি হচ্ছে। এজন্য দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের
অনেক সার্জেন্ট সূর্য ডোবার অপেক্ষায় থাকেন। প্রতিদিন রাত ৮টার পর থেকে ট্রাক,
কাভার্ডভ্যানসহ মালামাল বহনকারী বিভিন্ন যানবাহন আটক করে প্রকাশ্যে চাঁদা আদায়
করছেন। ব্যস্ততম এলাকার যানজট নিরসনের পরিবর্তে ট্রাফিক ও সার্জেন্টদের চাঁদাবাজির
কারণে তা আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। সার্জেন্ট বাপ্পি তার ৪/৫ জন
বেতন ভুক্ত দালাল রায়েরবাগ এলাকায় ত্রাস হয়ে উঠছে ।
নগরীর
যাত্রাবাড়ী থেকে রায়েরবাগ এলাকায় সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, প্রতিদিন সকাল ৮টার পর
থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ট্রাফিক পুলিশ ও সার্জেন্টরা যত্রতত্র যানবাহন থামিয়ে
কাগজপত্র চেক করার নামে চাঁদা আদায় করছেন। শুধু তাই নয়, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস,
সিএনজি অটোরিকশা এবং ব্যক্তিমালিকানাধীন নানা ব্রান্ডের গাড়ি কারণে-অকারণে থামিয়ে
কাগজপত্র চেকসহ বিভিন্ন অজুহাতে হয়রানি করছে। আবার অনেক গাড়ি ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটক
রাখায় যানজটেরও সৃষ্টি হচ্ছে।
গাড়ির
কাগজপত্র চেক করা নয়, সাধারণ মানুষকে হয়রানি আর টাকা আদায়ই তাদের মূল টার্গেট বলে
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন। রাস্তায় লক্কড়-ঝক্কড় মার্কা ফিটনেসবিহীন যাত্রীবাহী
বাসসহ যানবাহনগুলো তাদের চোখে পড়ছে না। এসব ফিটনেসবিহীন যানবাহনের চালক ও মালিকদের
কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা মাসোহারা নিচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ। আর দায়িত্বরত ট্রাফিক সদস্য
ও সার্জেন্টরা এসিকে চাঁদাবাজির নির্ধারিত ভাগের টাকা পরিশোধ করতে হয় বলে নাম প্রকাশ
না করার শর্তে পুলিশেরই একাধিক সদস্য জানিয়েছেন।
নাম প্রকাশ
না করার শর্তে একজন ট্রাফিক পুলিশ জানান, সার্জেন্ট বাপ্পি স্যার ও তার ৪/৫ জন
বেতন ভুক্ত দালাল এই কাজে বেশি পারদর্শী ।
গতকাল ৮মে সকাল ১১.৩০টায় রায়েরবাগ ব্রিজের পাশে পুলিশের চাঁদাবাজির শিকার একটি
প্রাইভেটকারের চালক জানান, ট্রাফিক পুলিশের চাঁদাবাজিতে তারা অতিষ্ঠ। যাত্রাবাড়ি
থেকে সাইনবোর্ড মোড় পর্যন্ত তিনটি স্থানে ট্রাফিক পুলিশের মুখোমুখি হতে হয়েছে
তাকে। কারণে-অকারণে গাড়ি থামিয়ে মামলা দেয়ার ভয় দেখানো হয়। আবার ট্রাফিক পুলিশের
এসির ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের টাকার ভয় দেখানো হয়। আর তাদের চাহিদা মতো টাকা দিলে সব
ঝামেলা চুকে যায়।
৮ মে সকাল ১১ টার দিকে সায়দাবাদ, ধোলাইপাড় মোড়ে দেখা যায়, ট্রাফিক
পুলিশ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান থামিয়ে চাঁদা আদায় করছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান,
ট্রাফিক পুলিশের এই চাঁদাবাজি নিত্যদিনের। যানজটের তোয়াক্কা না করে শুধু দিনে নয়,
রাতভর চাঁদা নিতে তৎপর এসব ট্রাফিক সদস্যরা।
প্রতিটি
ট্রাক থেকে ন্যূনতম ১০০ থেকে শুরু করে ১০০০ টাকা বা তারও বেশি টাকা চাঁদা আদায় করা
হয়। রাতের বেলায় যাত্রাবাড়ী, জুরাইন,রায়েরবাগ পোস্তাগোলা এলাকাতেও যানবাহন থামিয়ে
পুলিশকে টাকা আদায় করতে দেখা যায় প্রতিদিন। গভীর রাত পর্যন্ত কাজলা ফ্লাইওভারের
ওপর থেকে ট্রাক কভারভ্যান ও ট্যাক্সিক্যাব থামিয়ে চাঁদা আদায় করতে দেখা যায়
প্রতিনিয়ত।