Logo
শিরোনাম

কুয়েটের ভিসির পদত্যাগ দাবিতে গর্জে উঠলো মাভাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত:বুধবার ২৩ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৬ মে ২০২৫ |

Image

মো:হ্নদয় হোসাইন, মাভাবিপ্রবি প্রতিনিধি 

মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (মাভাবিপ্রবি) কুয়েটের উপাচার্য ড. মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

আজ মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় একাডেমিক ভবনের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে প্রধান ফটকে গিয়ে শেষ হয়। কর্মসূচিতে অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থী।

সাধারণ শিক্ষার্থীরা এক বিবৃতিতে বলেন, কুয়েট প্রশাসনের স্বৈরাচারী আচরণ শুধু শিক্ষার পরিবেশকেই কলুষিত করছে না, বরং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও মৌলিক অধিকারও হুমকির মুখে ফেলছে। তারা কুয়েট প্রশাসনের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও দমনমূলক আচরণের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেন।

মাভাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা কুয়েট শিক্ষার্থীদের গণ-অনশনের সাথে সংহতি জানিয়ে একাত্মতা প্রকাশ করে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের সিদ্ধান্তও গ্রহণ করেছেন। বিক্ষোভ চলাকালে তারা “কুয়েট ভিসির গদিতে আগুন জ্বালো একসাথে”, “দফা এক দাবি এক, কুয়েট ভিসির পদত্যাগ”, “শিক্ষা ও সন্ত্রাস একসাথে চলে না”—এমন বিভিন্ন স্লোগানে ক্যাম্পাস মুখর করে তোলেন।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, কুয়েটের উপাচার্য ড. মাছুদ স্বৈরাচারী ও কর্তৃত্ববাদী মনোভাব নিয়ে পরিচালনা করছেন বিশ্ববিদ্যালয়, যা মুক্ত চিন্তা ও গণতান্ত্রিক পরিবেশের পরিপন্থী। তার প্রশাসন একটি দমন-পীড়নের সংস্কৃতি তৈরি করেছে বলেও তারা উল্লেখ করেন।

শিক্ষার্থীরা বলেন, “গণতান্ত্রিক শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় প্রশাসনের জবাবদিহিতা এবং শিক্ষার্থীদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা অপরিহার্য। ড. মাছুদের মতো উপাচার্যের মাধ্যমে তা কখনোই সম্ভব নয়।

তারা কুয়েট ভিসির অবিলম্বে পদত্যাগ দাবি করে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌথ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

উল্লেখ্য, কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়, যাতে আহত হন অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী। পরবর্তীতে একের পর এক বিক্ষোভ, হল বন্ধ, শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার এবং সিন্ডিকেট সভার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণের পরিপ্রেক্ষিতে আন্দোলন আরও তীব্র হয়ে ওঠে।বর্তমানে কুয়েটের পরিস্থিতি থমথমে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।


আরও খবর



প্লাস্টিক দূষণে বছরে এক লাখ সামুদ্রিক প্রাণীর মৃত্যু

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২২ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৫ মে ২০২৫ |

Image

বিশ্ব ধরিত্রী দিবস আজ। প্রকৃতি, পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষার মাধ্যমে ধরিত্রীকে টিকিয়ে রাখার লক্ষ্যে এবং এ সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়াতে প্রতি বছর ২২ এপ্রিল বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দিবসটি পালিত হয়।

এ বছরের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে— ‘আমাদের শক্তি, আমাদের পৃথিবী’। পরিবেশ রক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন রোধ এবং প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখার অঙ্গীকারে বিশ্বের নানা প্রান্তে পালিত হচ্ছে এ বিশেষ দিনটি।

বিশ্ব এখন জলবায়ু পরিবর্তন, জীববৈচিত্র্যের ক্ষয়, বন উজাড়, প্লাস্টিক দূষণ ও অতিরিক্ত কার্বন নির্গমনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, প্লাস্টিক দূষণে বছরে প্রায় এক লাখ সামুদ্রিক প্রাণীর মৃত্যু হচ্ছে।

বড় প্লাস্টিক চোখে দেখা যায়। এ কারণে পরিবেশ ও স্বাস্থ্যগত বিপদ কেমন হতে পারে– সে ধারণা কম-বেশি সবারই জানা। তবে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণা প্রাণ-প্রকৃতিতে নীরবে বিষ ঢাললেও এর ভয়াবহতা থেকে যাচ্ছে আড়ালেই। বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণ মিলেছে– লবণ, আটা, চিনি, মাছ, মাটি, বাতাস, নদী, সমুদ্র এমনকি খাবার পানিতেও রয়েছে মাইক্রোপ্লাস্টিকের অস্তিত্ব।

বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, ঘন ঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং গ্রীষ্মকালীন তাপমাত্রার অতিরিক্ত বৃদ্ধি আমাদের ভবিষ্যতের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।


আরও খবর



পুরো বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে ছোঁ'য়া'চে রো'গ ‘স্ক্যা'বি'স’

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০৮ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৫ মে ২০২৫ |

Image

স্ক্যাবিস (SCABIES) একটি ছোঁয়াচে ত্বকের রোগ। এটি Sarcoptes scabiei নামক ক্ষুদ্র মাকড়সার (MITE) কারণে হয়ে থাকে। এই মাকড়সা ত্বকের উপরিভাগে গর্ত তৈরি করে এবং ডিম পাড়ে, যার ফলে ত্বকে তীব্র চুলকানি এবং ফুসকুড়ি দেখা দেয়।

স্ক্যাবিসের প্রধান লক্ষণগুলো হলো:

 * তীব্র চুলকানি: বিশেষ করে রাতে চুলকানি বাড়ে।

 * ফুসকুড়ি: ছোট ছোট লালচে দানা বা ফোস্কার মতো দেখা যায়।

 * গর্তের চিহ্ন: ত্বকের উপর ছোট, আঁকাবাঁকা, ধূসর বা সাদা রঙের সরু রেখা দেখা যেতে পারে, যা মাকড়সার তৈরি করা গর্ত।

স্ক্যাবিস সাধারণত নিম্নলিখিত স্থানগুলোতে বেশি দেখা যায়:

 * আঙুল ও পায়ের আঙুলের মাঝে

 * কবজি

 * কনুই ও হাঁটুর ভাঁজে

 * বগলের নিচে

 * কোমর

 * নিতম্ব

স্ক্যাবিস অত্যন্ত ছোঁয়াচে এবং সরাসরি চামড়ার সংস্পর্শে আসা, অথবা আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহার করা কাপড়, বিছানা ইত্যাদির মাধ্যমে ছড়াতে পারে।

যদি আপনার মনে হয় আপনার স্ক্যাবিস হয়েছে, তাহলে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। ডাক্তার সাধারণত শারীরিক পরীক্ষা এবং প্রয়োজনে ত্বকের নমুনা নিয়ে রোগ নির্ণয় করতে পারেন। স্ক্যাবিসের চিকিৎসার জন্য বিশেষ ধরনের ক্রিম বা লোশন পাওয়া যায় যা মাকড়সা এবং তাদের ডিম ধ্বংস করে। পরিবারের সকল সদস্য এবং ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদেরও একই সময়ে চিকিৎসা করানো উচিত, এমনকি তাদের লক্ষণ না থাকলেও। এছাড়া, ব্যবহৃত কাপড় ও বিছানা গরম পানিতে ধুয়ে বা ভালোভাবে পরিষ্কার করে জীবাণুমুক্ত করা জরুরি।


আরও খবর



পাকিস্তানের সাইবার হামলায় ভারতে বিদ্যুৎ বিভ্রাট!

প্রকাশিত:শনিবার ১০ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৬ মে ২০২৫ |

Image

‘অপারেশন বুনইয়ানুম মারসূসের’ অংশ হিসেবে শুরু হওয়া একটি সাইবার আক্রমণের শিকার হয়েছে ভারতের বিদ্যুৎ গ্রিড বলে দাবি করেছে পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম পিটিভি নিউজ।

১০ মে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে আলজাজিরা। এই বিষয়ে ভারতের গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। শনিবার সকালে প্রকাশিত ভারতীয় গণমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে পাকিস্তানের গণমাধ্যমের ওই খবর সত্য নয়।

পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র সংরক্ষণাগারগুলোতে অভিযান চালিয়েছে। এই অভিযানে ফাতেহ-১ মধ্যম-পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রসহ একাধিক অস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে এবং ভারতের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থাপনাগুলো লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।

পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী আরও জানিয়েছে, ৭ মে ভারতের হামলায় কয়েকজন পাকিস্তানি বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার পর এই প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

পাকিস্তান সরকার দাবি করেছে, যেসব স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে, সেগুলো ভারত ব্যবহার করছিল পাকিস্তানি নাগরিকদের ওপর হামলার জন্য।

ভারত পাকিস্তানের মসজিদ, উপাসনালয় এবং বেসামরিক স্থাপনায় হামলায় যেসব সামরিক ঘাঁটি ব্যবহার করেছে- সেখানে হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে, এতে দাবি করা হচ্ছে ভারতের মিসাইল হামলায় পাকিস্তানের নূর খান ঘাঁটি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ভিডিওতে ঘাঁটি সদৃশ একটি জায়গায় বিশাল বিস্ফোরণ ঘটতে দেখা যায়। তবে ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি। পাকিস্তানের নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, হামলায় বিমান থেকে মিসাইল ছুড়ে ঘাঁটি ধ্বংসের চেষ্টা চালিয়েছে ভারতীয় বাহিনী।

পাকিস্তানের ডিজিএফআইয়ের মহাপরিচালক দাবি করেছেন, ভারতের কিছু মিসাইল তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে বিমানঘাঁটির কাছে আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছে।

কিন্তু ঘাঁটির কোনো সম্পদ (বিমান বা অন্যান্য জিনিস) ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি বলে দাবি করেন তিনি। ভারতের এ হামলার পর পর পাকিস্তানের পুরো আকাশসীমা শুক্রবার মধ্যরাত থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

তিনি হুমকির সুরে বলেন, এখন ভারত আমাদের হামলা প্রত্যক্ষ করবে। গত ২২ এপ্রিল ভারতশাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন প্রাণ হারায়। এই হামলার দায় পাকিস্তানের ওপর চাপিয়ে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে দেশটিতে 'অপারেশন সিঁদুর' নামে সামরিক অভিযান শুরু করে ভারত।

এতে পাকিস্তানে বেশ কয়েকজন হতাহতের ঘটনা ঘটে। এর প্রতিশোধে পালটা হামলা চালিয়ে ভারতের বেশ কয়েকটি বিমান এবং ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে বলে দাবি করেছে পাকিস্তান।


আরও খবর



অসুস্থ শিক্ষার্থীর চিকিৎসা সহায়তায় পাশে দাঁড়ালেন সমাজকর্মী ও শিক্ষকবৃন্দ

প্রকাশিত:রবিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৬ মে ২০২৫ |

Image

গজারিয়া প্রতিনিধি :

মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার ভবেরচর ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের কৃতি সন্তান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রবাসী সমাজকর্মী মোঃ ইউসুফ আলী দেওয়ান তার ব্যক্তিগত অর্থায়নে ভবেরচর ইউনিয়নের স্থানীয় একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীতে পড়ুয়া মেধাবী শিক্ষার্থী দুরূহ ব্যাধিতে আক্রান্ত স্বর্ণা আক্তারের চিকিৎসা সহায়তায় এগিয়ে আসেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিক্ষার্থী স্বর্ণা আক্তার দীর্ঘদিন পেপটিক আলসার রোগে অসুস্থতায় ভুগছে। এতে করে একাধারে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে। পারিবারিক অসচ্ছলতায় কারনে তার চিকিৎসা ব্যয়ভার চালানো তার পরিবারের পক্ষে অত্যান্ত কষ্টকর বলে জানা যায়। সরেজমিনে দেখা যায়, অপরিমিত চিকিৎসায় ফলে ধীরে ধীরে শিক্ষার্থীর স্বর্ণা'র রোগ ভয়াবহ হয়ে উঠছে। 

 বাংলাদেশ ইউনাইটেড যুব ফোরামের সাধারন সম্পাদক, সমাজকর্মী ইঞ্জি. সৈয়দ মোহাম্মদ শাকিল এর বরাতে শিক্ষার্থীর ব্যাধির ভয়াবহতার খবর পেয়ে অসুস্থ শিক্ষার্থী স্বর্ণাকে দেখতে ছুটে আসেন সমাজ সেবক মোঃ ইউসুফ আলী দেওয়ান। তার সঙ্গে সহমর্মিতা প্রকাশ করে অসুস্থ  শিক্ষার্থী স্বর্ণাকে দেখতে আরও ছুটে আসেন ভবেরচর ইউনিয়ন এর মানবিক সকল শিক্ষকবৃন্দ।

 শিক্ষকবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ভবেরচর ওয়াজীর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আলমগীর হোসেন (ইংরেজি), সহকারি শিক্ষক মো. মোস্তফা কামাল (একাউন্টটিং), সহকারি শিক্ষক শাহাদাত হোসেন সরকার (ব্যবস্থাপনা), ভবেরচর ওয়াজীর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর অভিভাবক  মনিরুজ্জামান লিটন।

এসময় উপস্থিত সকল শিক্ষক, অভিভাবক সদস্য, সমাজকর্মী, মানবিক নেতৃবৃন্দ সকলেই অসুস্থ শিক্ষার্থী স্বর্ণা'র আরোগ্য কামনা করে। সে যেনো দ্রুত সুস্থ হয়ে আবার ক্লাস কার্যক্রমে ফিরে পারে এমনটাই সকলে প্রত্যাশা করেন।


আরও খবর



শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার বাড়াচ্ছে কিশোরী মা

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৯ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৫ মে ২০২৫ |

Image

কয়েক বছরের ধারাবাহিক অগ্রগতির পর গত দুই বছরে বাংলাদেশে মাতৃমৃত্যু উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে শিশুমৃত্যুর হারও। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাতৃ ও শিশুমৃত্যুর বড় কারণ বাল্য ও কিশোরী বিয়ে। অল্প বয়সে বিয়ে ও গর্ভধারণের কারণে সন্তান প্রসব করার সময় রক্তক্ষরণ বেশি হয়, যে কারণে তাদের মৃত্যুর হার বেশি। এছাড়া কিশোরী মায়েদের বিভিন্ন সমস্যার প্রভাব শিশুর স্বাস্থ্যের ওপরও পড়ে। ফলে শিশুর মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে বেশি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষণা অনুযায়ী, এখনো বিশ্বে প্রতি বছর তিন লাখ নারী গর্ভাবস্থায় বা প্রসবের পর পরই মারা যান। বছরে ২০ লাখ শিশু জন্মের প্রথম মাসেই মারা যায়। আর মৃত শিশু জন্ম নেয় ২০ লাখেরও বেশি। অর্থাৎ প্রতি ৭ সেকেন্ডে একটি এমন শিশু মারা যায়, যার মৃত্যু প্রতিরোধ সম্ভব।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মেটারনাল অ্যান্ড পেরিনেটাল ডেথ সার্ভিলেন্স অ্যান্ড রেসপন্সের (এমপিডিএসআর) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত দেশে ধারাবাহিকভাবে মাতৃমৃত্যু কমলেও গত দুই বছর আবার বাড়তে শুরু করেছে। ২০২২ সালে প্রতি লাখে মাতৃমৃত্যু হার ছিল ৬২ জন। ২০২৩ সালে এ সংখ্যা ছিল লাখে ৭৫। ২০২৪ সালে তা বেড়ে ৯০-এ পৌঁছেছে। গত বছর মাতৃমৃত্যু সবচেয়ে বেশি ছিল সিলেট বিভাগে। এ বিভাগে লাখে ১১ জন নারী মারা যান।

যদিও বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ২০২৩ সালের হিসাব অনুসারে, প্রতি ১ লাখ জীবিত শিশু জন্ম দিতে গিয়ে ১৩৬ জন মা মারা যান। আগের বছর এ সংখ্যা ছিল ১৫৩। ২০২১ সালে মাতৃমৃত্যুর হার ছিল ১৬৮।

নিউট্রিশন ইন্টারন্যাশনালের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে কিশোরীদের গর্ভধারণের হার বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি। ১৯ বছর বয়সের আগে প্রতি হাজারে ১১৩ কিশোরী গর্ভধারণ করে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিশোরী অবস্থায় বিয়ে ও গর্ভধারণের হার বেড়ে যাওয়ায় মাতৃমৃত্যু বাড়ছে।

লালকুঠি মা ও ‍শিশু হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. শাহনাজ খান বলেন, যে হারে মা ও নবজাতক মৃত্যুহার কমার কথা ছিল তা কমছে না। যারা অপ্রাপ্ত বয়সে গর্ভধারণ করে তাদের নানা ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকে। যেমন খিঁচুনি, উচ্চ রক্তচাপ, পায়ে পানি আসা। মায়েদের এ ধরনের সমস্যা থাকলে সেটার প্রভাব শিশুর স্বাস্থ্যের ওপরও পড়ে। ফলে শিশুর মৃত্যুর ঝুঁকি দেখা দেয়। কিশোরী অবস্থায় বিয়ে হলে যে সমস্যাগুলো দেখা দেয় তার মধ্যে অন্যতম প্রসব-পরবর্তী রক্তক্ষরণ। যে কারণে মাতৃমৃত্যুর ঘটনা বেশি ঘটছে। এমপিডিএসআরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে সন্তান জন্মদানের সময় যেসব নারী মারা গেছেন তাদের মধ্যে প্রায় ৪৬ শতাংশের মৃত্যু হয়েছে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে। ২০২২ ও ২০২৩ সালে এ হার ছিল যথাক্রমে ৩১ দশমিক ৮ ও ৪১ দশমিক ৮ শতাংশ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে যেসব নারী মারা যান তাদের বেশির ভাগই প্রসব-পরবর্তী রক্তক্ষরণের কারণে মৃত্যুবরণ করেন। তাদের একটি বড় অংশ আবার গ্রাম পর্যায়ের। প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার অভাবে তারা গর্ভবতী নারী ও গর্ভে থাকা শিশুর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে অবগত থাকেন না। প্রসবের আগে চিকিৎসকের অধীনও হন না। তাদের মধ্যে এখনো সচেতনতার অভাব রয়েছে। প্রচার-প্রচারণাও আরো বাড়ানো জরুরি।

অন্যদিকে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী দেশে শিশুমৃত্যুর হার বেড়েছে। গত বছর প্রকাশিত বিবিএসের বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস প্রতিবেদনে (২০২৩) বলা হয়েছে, ২০২২ সালে দেশে এক বছরের কম বয়সী শিশুর মৃত্যুহার ছিল হাজারে ২৫ জন, যা ২০২৩ সালে বেড়ে হয়েছে ২৭। পাঁচ বছর আগে এ সংখ্যা ছিল ২১।

অন্যদিকে এক মাসের কম বয়সী নবজাতকের মৃত্যুহার হঠাৎ বেড়ে গেছে। ২০২৩ সালে প্রতি এক হাজার জীবিত নবজাতকের মধ্যে ২০ জন মারা যায়। ২০২২ সালে এ সংখ্যা ছিল ১৬। পাঁচ বছর আগে ছিল ১৫। এছাড়া ২০২৩ সালে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুর মৃত্যুহার প্রতি হাজারে ৩৩ জন। ২০২২ সালে ছিল ৩১ জন। পাঁচ বছর আগে ছিল আরো কম, ২৮ জন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এমরান কবির চৌধুরী বলেন, নিরাপদ পানি না পাওয়া ও ভেজালযুক্ত খাবারে কারণে শিশু ও মাতৃমৃত্যু বাড়ছে। এছাড়া শিশু ও মাতৃমৃত্যু বৃদ্ধির অন্যতম কারণ বাল্য ও কিশোরী বিয়ে। যে কিশোরী গর্ভধারণ করে স্বাভাবিকভাবেই তারা নিজের ও শিশুর স্বাস্থ্য নিয়ে খুব একটা সচেতন থাকে না। তাদের পুষ্টির অভাব থাকে, রক্তশূন্যতা দেখা দেয়।

২০২৩ সালে ইউনিসেফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাল্যবিবাহের দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান সারা বিশ্বে অষ্টম ও দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম। ২০-২৪ বছর বয়সী নারীদের ওপর পরিচালিত ইউনিসেফের জরিপে দেখা যায়, ৫১ শতাংশ নারীর বয়স ১৮ বছর হওয়ার আগেই বিয়ে হয়ে যায়। এছাড়া বাংলাদেশে প্রায় ৪8 লাখ পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু খর্বাকৃতির শিকার। যার অন্যতম কারণ মায়ের অল্প বয়সে বিয়ে ও গর্ভধারণ, ‍শিক্ষা ও পুষ্টির অভাব। বাংলাদেশে ১২ থেকে ৪৯ বছরের নারীদের মধ্যে ১২ শতাংশেরই ওজন তাদের বয়স ও উচ্চতার তুলনায় কম। এছাড়া বাংলাদেশে গর্ভবতী নয় এমন প্রজননক্ষম নারীদের মধ্যে উচ্চমাত্রার পুষ্টিহীনতা রয়েছে।


আরও খবর