রাজধানীর বাজারে এবার এক থেকে দেড় লাখ টাকায় যে গরু বিক্রি
হয়েছে সে সব গরুর চামড়া মৌসুমি ক্রেতারা ৫০০ টাকার বেশি দাম দিতে নারাজ।
বিক্রেতারা প্রতি বর্গফুট চামড়ার দাম পাচ্ছেন ২০ থেকে ২৫ টাকা।
বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) ঈদের সকালে রাজধানীতে এক দিকে যেমন
পশু কোরবানি হচ্ছে,
অপরদিকে এক শ্রেণির মৌসুমি ব্যবসায়ী নেমে পড়েছেন চামড়া কিনতে।
ছাগলের চামড়ার প্রতি কারও নজর না থাকলেও গরুর চামড়া কিনতে মরিয়া তারা।
নগর ঘুরে দেখা গেছে, মৌসুমি ব্যবসায়ীরা নামমাত্র দামে চামড়া
কেনার চেষ্টা করছেন। একেকটি চামড়ার দাম বলছেন, ৫০০ থেকে ৬০০
টাকা।
লাখ টাকার গরুর চামড়ার এমন দামে অসন্তুষ্ট স্থানীয়রা। এ
বিষয়ে জানতে চাইলে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম বলেন, চামড়ার টাকা তো আমি নেই না।
গরিব মানুষকে দিয়ে দেই। কিন্তু ৫০০ টাকা কিভাবে? চামড়ার
যেভাবে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে, তাতে তো চামড়ার দাম আরও বেশি
হয়।
শফিকুল ইসলামের কথায় একাগ্রতা প্রকাশ করেছেন মিনহাজ উদ্দিন।
পেশায় চিকিৎসক মিনহাজ জানান, এবার গরু কিনেছেন দেড় লাখ টাকায়। তিনি গরুর
চামড়ার টাকা দিয়ে দেন তার বাসার দারোয়ানকে। কিন্তু মৌসুমি ব্যবসায়ীরা চামড়ার দাম
বলছেন একেবারেই কম।
নগরীর মোহাম্মদপুর, মিরপুর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, একেকটি চামড়ার জন্য পাঁচ থেকে ছয়শ টাকার বেশি দিতে নারাজ মৌসুমি
ব্যবসায়ীরা।
এদিকে এবার সরকার লবণযুক্ত চামড়ার যে দাম নির্ধারণ করে
দিয়েছে, তাতে
প্রতি বর্গফুট চামড়ার দাম হওয়ার কথা ৫০ থেকে ৫৫ টাকা।
এক থেকে দেড় লাখ টাকায় যে গরু বিক্রি হয়েছে, সে সব গরুর চামড়ার আয়তন ২৫
থেকে ৩০ বর্গফুট। ৫০ টাকা করে দাম ধরলেও একেকটি চামড়ার দাম হওয়ার কথা এক হাজার ২৫০
টাকা থেকে দেড় হাজার টাকা।
মৌসুমি ব্যবসায়ীদের দাবি, তারা যেহেতু চামড়া কিনে আবার
ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করেন, তাই এখানে মৌসুমি
ব্যবসায়ীদের একটি লাভ যুক্ত হয়। এরপর ট্যানারি মালিকরা এ চামড়ায় লবণ দেন। সেখানেও
রয়েছে একটি খরচ। ফলে তৃণমূল পর্যায় থেকে কম দামেই চামড়া কিনতে হয় তাদের।
এছাড়া বিগত কয়েক বছরের লোকসানের বিষয়টিও মাথায় রেখেছেন
তারা। সব দিক বিবেচনা করে এরপর চামড়া কিনছেন বলে জানিয়েছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা।