
পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সুবিধাভোগীদের একজন অধ্যক্ষ আনিসুর রহমান সোহাগ। মানুষ ঠকিয়েই শতকোটি টাকার মালিক হয়েছেন তিনি। প্রতারণা যেন তার পারিবারিক ঐতিহ্য! ভাগ্য তার এতটাই সুপ্রসন্ন যে, উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেই তিনি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের অধ্যক্ষ। মিষ্টভাষী সোহাগের বহুমুখী প্রতারণায় সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন তারই ব্যবসায়িক অংশীদারসহ গ্রামের সহজ-সরল অনেক মানুষ। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এপিএস হাফিজুর রহমান লিকু, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আমির হোসেন আমুর সঙ্গে সখ্যের সুযোগে বিগত সরকার আমলে বেপরোয়া ছিলেন সোহাগ। পরিবর্তিত পরিস্থিতির পরও হাফিজুর রহমান লিকুর রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসিলার মধু সিটির ১০ তলা বাড়ির দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন এই সোহাগ। অভিযোগ রয়েছে, লিকুর সব অবৈধ সম্পদের দেখভালের পাশাপাশি নগদ টাকাও গচ্ছিত রয়েছে সোহাগের কাছে। জাল ও ভুয়া সনদে অধ্যক্ষ হওয়ার বিষয় স্বীকার করে বিগত সময়ে গণমাধ্যমের কাছে ক্ষমা চাওয়ার পরও ক্ষমতার দাপটে শিক্ষা বোর্ড, শিক্ষা অধিদপ্তর, ইউজিসি কেউই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেনি। এমনকি ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে হত্যা ও হত্যাচেষ্টার একাধিক মামলার আসামি হয়েও প্রকাশ্যে ঘুরছেন সোহাগ।
রাষ্ট্রক্ষমতার পালাবদল হলে রাতারাতি ভোল পালটান প্রতারক সোহাগ। কৌশলে রাজনৈতিক পরিচয় লুকিয়ে তিনি বর্তমান সরকারের কাছের রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে সখ্য গড়ে দাপট দেখানো অব্যাহত রেখেছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বন্ধ করে দেওয়া একটি স্কুল পুনরায় অনুমোদনের জন্য আবেদন করেন তিনি। অথচ স্কুলটির প্রকৃত মালিকরা প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন পুনরায় চালু করার। সোহাগ ও তার সহযোগীদের থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে কোনোরকম পরিদর্শন ছাড়াই ত্বরিতগতিতে একটি রেস্টুরেন্টের ঠিকানায় স্কুলটির অনুমোদন দিয়েছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। ইসলামপন্থি কয়েক নেতাকে নিয়ে সোহাগ এই স্কুল ঘিরে হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার মহাপরিকল্পনা করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। রাজধানীসহ সারা দেশে স্কুলটির শাখা খুলে প্রতিটি শাখা থেকে অনুদানের নামে এ টাকা আত্মসাতের ফন্দি এঁটেছেন সোহাগ।