Logo
শিরোনাম
বহুল পরিচিত পাঁচ তরিকার বিবরণ

মোজাদ্দেদিয়া তরিকা

প্রকাশিত:শুক্রবার ২১ অক্টোবর ২০২২ | হালনাগাদ:শনিবার ০১ এপ্রিল ২০২৩ | ৪৫১জন দেখেছেন

Image

মাজহারুল ইসলাম মাসুম, সিনিয়র সাংবাদিক, লেখক ও গবেষক :

নবীকুল শিরোমনি হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর বিদায় নেবার হাজার বছর পর ১৪ শাওয়াল ৯৭১ হিজরীতে সুবহে সাদেকের সময় ভারতের সেরহিন্দে ভূমিষ্ঠ হয় এক মহা পবিত্র নূর, যার নাম রাখা হয় শায়েখ আহমদ ফারূকী সেরহিন্দী (রঃ)। তিনিই হচ্ছেন তরিকতের শেষ ঈমাম হযরত আহমদ মোজাদ্দেদ আলফেসানি (রঃ)।

হযরত মোজাদ্দেদ আলফেসানি (রঃ) ছিলেন ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হযরত ওমর (রাঃ) এর বংশধর। হযরত ওমর (রাঃ) এর পুত্র বিখ্যাত সাহাবী হযরত আবদুল্লাহ (রাঃ) ঈমাম হাসান (রাঃ) এর কন্যা ফাতেমা (রাঃ) কে বিবাহ করেন। তাঁরই বংশে হযরত মোজাদ্দেদ (রঃ) এর জন্ম। তিনি ছিলেন পিতার দিক হতে ফারূকী এবং মাতার দিক হতে সৈয়দ। মোজাদ্দেদ আলফেসানি (রঃ) রাসুলেপাক (সাঃ) এর মতো খৎনা অবস্থায় জন্ম গ্রহণ করেছিলেন। তিনি সাধারণ শিশুদের মতো ক্রন্দন করতেন না। তার শরীর ও পোশাক মুবারক কখনও অপবিত্র হতো না। মোজাদ্দেদ অর্থ নবায়নকারী, পুনর্জীবন দানকারী ও সংস্কারক।

 ইসলামী পরিভাষায় মোজাদ্দেদ হচ্ছেন মহান আল্লাহর এমন বান্দা যিনি রাসুল (সাঃ) এর উত্তরাধিকারী হিসেবে দ্বীন ইসলামকে পুনর্জীবিত করেন। আলফঅর্থ হাজার আর সানিঅর্থ দ্বিতীয়। শায়খ আহমদ (রঃ) হচ্ছেন দ্বিতীয় হাজার বছরের জন্য মোজাদ্দেদ, যার নূরের বরকতময় উসিলায় কেয়ামত পর্যন্ত সত্যসন্ধানী মানুষ বেদাত-কুফরীর অন্ধকার হতে পরিত্রান পেতে থাকবেন। মহাপুরুষগণের আগমনের বার্তা আগে থেকেই ঘোষিত হতে থাকে। রাসুলেপাক (সাঃ) এর আখেরী নবী হিসেবে আগমনের বার্তা যেমন পূর্ববর্তী নবী-রাসুল (আঃ) গণ বর্ণনা করেছিলেন, তেমনি ভাবে মোজাদ্দেদ আলফেসানি (রঃ) এর আগমনের সংবাদও অলি-আল্লাহ (রঃ) গণ কর্তৃক বর্ণিত হয়েছিলো। স্বয়ং নবী করীম (সঃ) দ্বিতীয় হাজার বছরের মোজাদ্দেদের আবির্ভাবের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। দয়াল নবী (সঃ) ইরশাদ করেছেন, হিজরী একাদশ শতাব্দীর শুরুতে মহান আল্লাহ এমন এক ব্যক্তিকে প্রেরণ করবেন যিনি এক বৃহৎ নূর! তার নাম হবে আমার নামের অনুরূপ। দুই অত্যাচারী বাদশাহর মধ্যবর্তী সময়ে তিনি অবির্ভূত হবেন এবং তাঁর শাফায়াতে অসংখ্য ব্যক্তি বেহেশতে প্রবেশ করবে।

বড় পীর (রঃ) এমন আদেশ দেন কারণ একদিন তিনি মুরাকাবায় বসলে এভাবে এলহাম প্রাপ্ত হন যে, “তোমার পাঁচশ বছর পরে পৃথিবী শিরক-বেদাতের তমসায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়বে। সেই সময়ে রাসুল (সঃ) এর উম্মতের মধ্যে থেকে একজন অদ্বিতীয় অলি-আল্লাহ জন্মগ্রহণ করবেন এবং শিরক, বেদাত ও নাস্তিকতাকে ধ্বংস করবেন। স্পর্শমনি তুল্য হবে তার সহবত। তার সাহেবজাদা ও খলিফাগণ আল্লাহর খাস দরবারের মেহমান হবে।এছাড়া তরিকতের ঈমাম খাজা মঈনুদ্দিন চিশতী (রঃ), বাহাউদ্দিন নক্শবন্দ (রঃ) সহ অসংখ্য অলি-আল্লাহ (রঃ) গণ শেষ তরিকতের শেষ ঈমাম মোজাদ্দেদ আলফেসানি (রঃ) এর আগমনী বার্তা ঘোষনা করে গেছেন তাদের জীবদ্দশায়। হিজরী ১০১০ সালের ১০ রবিউল আউয়াল শুক্রবার সোবহে সাদেকের সময় যখন শায়েখ আহমদ (রঃ) নির্জনে ধ্যানরত এমন সময় মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) তাশরীফ আনলেন। সঙ্গে সকল নবীরাসুল (আঃ), আউলিয়া কেরাম (রঃ) এবং অসংখ্য ফেরেশতা (আঃ)। রাসুলেপাক (সঃ) তাঁর পবিত্র হাতে হযরত শায়েখ আহমদ (রঃ) কে একটি অমূল্য বৈশিষ্ট্যপূর্ণ খেরকা মুবারক পরিয়ে দিয়ে বললেন, শায়খ আহমদ! মোজাদ্দেদ এর প্রতীক স্বরূপ এই বিশেষ খিলআততোমাকে পরিয়ে দেয়া হলো।

এখন থেকে তুমি মোজাদ্দেদ আলফেসানি অর্থাৎ দ্বীন ইসলামের সংস্কারক। আমার উম্মতের দ্বীন ও দুনিয়ার যাবতীয় দায়িত্ব আজ হতে তোমার উপর অর্পিত হলো। জন্ম হলো ইসলামের ইতিহাসের শেষ তরিকা তরিকায়ে মোজাদ্দেদিয়াআর যার ঈমাম হলেন হযরত মোজাদ্দেদ আলফেসানি (রঃ)।

মোজাদ্দেদ (রঃ) পূর্ববর্তী সকল তরিকতের ঈমাম (রঃ) গণের খলিফা এবং পূর্ববর্তী সকলের কাছ থেকেই তাঁদের স্ব স্ব নেসবতের কামালত রূহানীতে তার উপর অবধারিত ভাবে সমর্পিত হয়েছিলো এবং এ জন্য তিনি এবং তার সিলসিলার খলিফাগণ কেয়ামত পর্যন্ত সকল তরিকার পক্ষেই খেদমত করে যাবেন এবং পূর্ববর্তী সকলেই মোজাদ্দেদ আলফেসানি (রঃ) এর কাছ থেকে পারিশ্রমিক পেতে থাকবেন। কিন্তু যেহেতু নবী (আঃ) গণের পরে শ্রেষ্ঠ মানব হযরত সিদ্দীকে আকবর (রাঃ) হতে নক্শবন্দিয়া তরিকার উৎপত্তি এবং এতে দৃঢ়তার সাথে সুন্নতের অনুসরণ ও বেদাত বর্জন করা হয় তাই ইসলামের সংস্কারের বিশেষ খেদমত সম্পাদনের ক্ষেত্রে মোজাদ্দেদিয়া তরিকা সর্বাপেক্ষা যোগ্যতাপূর্ণ। এ জন্য শায়খ আহমদ (রঃ) এর তরিকাকে নক্শবন্দি মোজাদ্দেদিয়া তরিকা বলেও অভিহিত করা হয় এবং নি:সন্দেহে এ কারণে অন্যান্য তরিকা হতে এ তরিকা শ্রেষ্ঠ।

 


আরও খবর

রুহ এবং মানুষ : একটি তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ

রবিবার ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩




মোরেলগঞ্জে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে জখমের প্রতিবাদে মানববন্ধন

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০২ মার্চ 2০২3 | হালনাগাদ:শনিবার ০১ এপ্রিল ২০২৩ | ৬৬জন দেখেছেন

Image

এম.পলাশ শরীফ,নিজস্ব  প্রতিবেদক:

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে ব্যবসায়ীকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে জখমের ঘটনায় হামলাকারীদেরকে গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। (২ মার্চ বৃহস্পতিবার) বিকেল ৫ টার দিকে সাইনবোর্ড-বগী আঞ্চলিক মহাসড়কে পল্লীমঙ্গল বাজারের ব্যবসায়ীরা মানববন্ধন করেন। 

 উল্লেখ্য, বুধবার দুপুরে পল্লীমঙ্গল বাজরের ব্যবসায়ী মো. সুমন বয়াতীকে(৩০) ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে রাস্তায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায় মোটরশ্রমিক আব্দুর রহমান খান(৩৮) ও তার সহযোগীরা। পাওনা টাকা চাওয়ায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত সুমন খানক খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। 

এ ঘটনায় সুমনের বড় ভাই রুবেল বয়াতী বাদি হয়ে আব্দুর রহমান সহ ৩ জনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনার পর থেকে রহমান পলাতক রয়েছে। পুলিশ এখনো তাকে গ্রেফতার করতে পারনি।

মানববন্ধনে বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সহসভাপতি মহিউদ্দিন মন্টু, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম হাওলাদার, মাষ্টার জালাল হাওলাদার, শফিকুল ইসলাম বয়াতী, যুবলীগ নেতা নাজিব হাওলাদার প্রমুখ বক্তৃতা করেন। 


আরও খবর



নিষিদ্ধ হচ্ছে ইমরানের দল!

প্রকাশিত:সোমবার ২০ মার্চ ২০23 | হালনাগাদ:শনিবার ০১ এপ্রিল ২০২৩ | ১১১জন দেখেছেন

Image

পাকিস্তানে আর্থিক সংকটের সঙ্গে রাজনৈতিক সংকটও চরমে। ক্ষমতার লড়াইয়ে রাজনৈতিক পক্ষগুলোর মধ্যে বাড়ছে উত্তেজনা। এরমধ্যেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দলকে নিষিদ্ধের চিন্তা করছে সরকার।

রবিবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু এ তথ্য জানিয়েছে। আগেরদিন পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ বলেন, প্রাথমিকভাবে কোনো দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা একটি বিচারিক প্রক্রিয়া। বিষয়টি নিয়ে আইনি দলের সাথে পরামর্শ করা হবে। মূলত লাহোরে ইমরানের বাসভবন থেকে অস্ত্র ও পেট্রোল বোমা উদ্ধারের দাবির পর একথা বলেন তিনি। এছাড়া, পিটিআইকে জঙ্গি সংগঠন বলেছেন পিএমএলএন-এর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মরিয়ম নওয়াজ। তাতে একমত প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফক। শাহবাজ বলেন, পিটিআই চেয়ারম্যানের গত কয়েকদিনের কর্মকাণ্ড তার ফ্যাসিবাদী এবং জঙ্গি প্রবণতাকে প্রকাশ করেছে।


আরও খবর



সাজেকের উদয়পুর সীমান্ত সড়কে ঢ্রাম ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিহত ১ আহত ১৩

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৭ মার্চ ২০২৩ | হালনাগাদ:শনিবার ০১ এপ্রিল ২০২৩ | ৭১জন দেখেছেন

Image

বাঘাইছড়ি প্রতিনিধি : রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক সিজুগ ছড়া উদয়পুর সীমান্ত সড়কের দাড়ি পাড়া এলাকায় ঢ্রাম ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ঘটনা স্থলে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায়  গুরতর আহত হয়েছে আরো ১৩ জন। সবাই সীমান্ত সড়কের কাজে নিয়োজিত ছিলো বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে তাৎক্ষণিক ভাবে কারো পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ১৩ মার্চ সোমবার রাত ৯ ঘটিকায় এই দূর্গটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই সেনাবাহিনী ও পুলিশের একটি টীম আহতদের   উদ্ধার করে চাঁদের গাড়ী যোগে  দিঘীনালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায়। সাজেক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর দূর্গটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন শ্রমিকরা সীমান্ত সড়কের কাজ শেষে ঢ্রাম ট্রাকে করে ফেরার পথে উঁচু  পাহাড় উঠতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিচে পড়ে যায়। ফলে ঘটনা স্থলে একজনের মৃত্যু হয়। আহতদের অবস্থাও আশংকা জনক মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে। ঢ্রাম ট্রাকটিতে ৩১ জন শ্রমিক ছিলো।


আরও খবর



আইভীর জন্য হাতজোড় করে ক্ষমা চাইলেন: শামীম ওসমান

প্রকাশিত:বুধবার ১৫ মার্চ ২০২৩ | হালনাগাদ:শনিবার ০১ এপ্রিল ২০২৩ | ১২০জন দেখেছেন

Image

নিজস্ব প্রতিবেদক :নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, আমরা জানি আমরা নৌকার জন্য ভোট চেয়েছিলাম। আমি নারায়ণগঞ্জের একজন সামান্য কর্মী। আমরা বঙ্গবন্ধুকে চিনেছি তার আদর্শকে চিনেছি। তুই তুকারি আল্লাহ পছন্দ করে না। আমাদের প্রশ্নবিদ্ধ করবেন না। যাদের বলা হয়েছে চাকরি খেয়ে দেবো, আমি তাদের সবার কাছে হাতজোড় করে ক্ষমা চাইছি।

সাংবাদিক ভাইয়েরা আমাকে প্রশ্ন করেন আপনাদের নৌকা মার্কার একজন মেয়রের কাছে পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা গিয়েছিলেন। তাদের বলা হলো ভাত খেতে পাস না, ফোন কিনিস কীভাবে। এটার উত্তর আমি দেব না, আমি উত্তর দেই, আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশে কোথাও কেউ ভাত না খেয়ে নেই শেখ হাসিনার আমলে। ইনকাম ট্যাক্সের ফাইলে টাকা নেই, এত বাড়ি কোথা থেকে হলো সে প্রশ্ন কে করবে।

বুধবার সন্ধ্যায় কানাইনগর সোবহানিয়া উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের নবীনবরণ ও বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।  

তিনি বলেন, পুলিশকে গালি দেন যারা তাদের পুলিশের পাহারায় থাকতে হয়। আমাদের ওসামানীয় সাম্রাজ্য বলা হয়। আমার দাদা এমপি ছিল, বাবা এমপি ছিল। আমরা তিন ভাই এমপি হয়েছি। আমরা সাম্রাজ্য কায়েম করেছি সত্যি।  কারো জমি দখল করে করিনি। মানুষের মনে জায়গা করে সাম্রাজ্য গড়েছি।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান চন্দ্রন শীল, বক্তাবলি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম শওকত আলীসহ আওয়ামী লীগ এবং দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।


আরও খবর



অবৈধ বিশ হাজার সিএনজি ঢাকায়

প্রকাশিত:শনিবার ০৪ মার্চ ২০২৩ | হালনাগাদ:শনিবার ০১ এপ্রিল ২০২৩ | ২৬২জন দেখেছেন

Image

নুর মোহাম্মদ মিঠু :

মিটার নেই, নেই রুট পারমিট, এমনকি বাণিজ্যিকভাবে চলাচলের অনুমতিও নেই Ñএরকম ২০ হাজার অবৈধ সিএনজি অটোরিকশা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ঢাকার সড়ক। ঢাকা মহানগরীর বৈধ সিএনজিগুলো মিটারে না চললে শাস্তির মুখোমুখি হলেও অবৈধ এসব সিএনজি বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজ করে চলছে বহাল তবিয়তে। দীর্ঘদিন ধরেই এর নেপথ্যে রয়েছে শক্তিশালী একটি দালালচক্র। যে চক্রের মাধ্যমে অবৈধ সেসব সিএনজি অটোরিকশায় নগরীতে বাড়ছে বিশৃঙ্খলা, যানজট, চুরি, ছিনতাই ও রাহাজানি। জানা গেছে, মেট্রোর কালার পরিবর্তন করেই ঢাকা মহানগরীতে চলছে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদী ও মুন্সিগঞ্জ জেলার ২০ হাজার অবৈধ সিএনজি অটোরিকশা। এদের দাপটে অনেকটাই কোনঠাঁসা ঢাকায় বাণিজ্যিকভাবে চলাচলের জন্য অনুমোদিত পনের হাজার সিএনজি অটোরিকশার মালিক-চালকরাও। যদিও রহস্যজনক কারণে সেই দালাল চক্রের বিরুদ্ধে নেয়া হচ্ছে না কোনো ব্যবস্থা। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন বৈধ চালক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতারা। এ নিয়ে বৈধ চালকদের মধ্যে ক্ষোভ থাকলেও বিআরটিএ বলছে,......।

সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারের দপ্তরে পৃথক দুটি অভিযোগ করে নিবন্ধিত শ্রমিক সংগঠন ঢাকা অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা ও ঢাকার আশপাশের বেশকটি জেলার সিএনজি অটোরিকশা ঢাকা মহানগরীতে চলাচলের জন্য অনুমোদিত নয়। অননুমোদিত হলেও এমন ২০ হাজার সিএনজি অটোরিকশা ঢাকায় চলাচল করছে শুধুমাত্র দালাল চক্রের নেতৃত্বে। যে চক্রের নেতৃত্ব দিচ্ছেন যাত্রাবাড়ী এলাকার বিদ্যুৎ গলির তাছলি। চক্রের সক্রিয় সদস্য রয়েছেন বাড্ডার ৩৯৫ স্বাধীনতা স্বরনীর জাহাঙ্গীর আলম, জয়নাল আবেদীন বাবু ও বাড্ডার বাগানবাড়ী এলাকার তোফাজ্জাল। এছাড়াও ওই চক্রে রয়েছেন আনোয়ার ভান্ডারী, আকাশ, শাহিন, বাড্ডার স্বপন চৌধুরী, রনি, রুবেল, বাড্ডার গোলাম মোয়াজ্জেম ও একই এলাকার বিল্লাল হোসেন। চক্রটির যোগসাজসেই ঢাকার বাইরের সিএনজি অটোরিকশায় ঢাকা মেট্রোর রং করে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে মহানগরীর সড়ক। জানা গেছে, অবৈধভাবে চলাচল করা ২০ হাজার সিএনজি অটোরিকশার কারণে ঢাকা মহানগরীতে প্রাণহানিসহ অসংখ্য ঘটনাও ঘটেছে। তবুও ঢাকার সড়ক থেকে অবৈধ সেসব সিএনজি অটোরিকশা উৎখাতে নেই কোনো উদ্যোগ। 

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, অবৈধ এসব সিএনজি অটোরিকশা থেকে মাসিক হারে চাঁদা আদায় করছে দালালচক্রটি। সিএনজি প্রতি পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকা চাঁদা আদায় করছে চক্রটি। বিনিময়ে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার মামলা, জরিমানার বিষয়গুলো সমাধান করছে তারা। চক্রটির আঁতাত রয়েছে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাদের সাথেও। এসব গাড়ি আটক করা মাত্রই তাদের তদবির বাণিজ্য শুরু হয়ে যায়। কখনো কখনো নিজেদের পেশাদার চালক হিসেবেও পরিচয় দেন তারা। বিভিন্ন  কৌশলে আইনি জটিলতা মোকাবিলা করার পরও ওই চক্রের সদস্যরা সিএনজি চুরির নাটক সাজিয়ে সহজ সরল চালকদের কাছ থেকেও হাতিয়ে নিচ্ছে অর্থ। সূত্র বলছে, ওই চক্রের সদস্যদের গোপন আঁতাত রয়েছে সিএনজি অটোরিকশা চোর সিন্ডিকেটের সঙ্গেও। কোন এলাকা থেকে কারা সিএনজি চুরি করে সেই তথ্যও তাদের কাছে থাকে। গত ৫ জানুয়ারি এমনই একটি ঘটনা ঘটে। সেদিন ঢাকায় (ঢাকা মেট্রো থ ১৩-৭৫৯২) নম্বরের একটি সিএনজি চুরির ঘটনা ঘটে। কিন্তু সিএনজির চালক হান্নান গ্যারেজ পর্যন্ত পৌঁছানোর আগেই দালাল চক্রের সদস্য এবং ওই সিএনজির মালিক জাহাঙ্গীর চোরের সাথে যোগাযোগ করে সিএনজি ফেরত নিয়ে আসে। যদিও চালক হান্নানের কাছ থেকে এই ঘটনায় জরিমানা হিসেবে ১১ হাজার টাকা আদায় করে জাহাঙ্গীর। শুধু তাই নয়- এ চক্রের সদস্যরা সরাসরি সিএনজি চুরির সঙ্গেও জড়িত। ঢাকায় দাপিয়ে বেড়ানো ওই দালাল চক্রের একজন তফাজ্জল। যার নামে টাঙ্গাইলসহ দেশের একাধিক থানায় সিএনজি চুরির মামলা রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ চক্রের বিরুদ্ধে এখনি যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে ঢাকায় চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা বন্ধ হবে না।

অভিযোগ সূত্রে আরও জানা গেছে, মিটারে চালিত সিএনজি অটোরিকশা চালকদের কাছ থেকে মাসিক এক হাজার টাকা করেও চাঁদা আদায় করছে চক্রটি। চালকদের বলা হচ্ছে, ঢাকায় মিটার ছাড়া গাড়ি চালানো, নো পার্কিংসহ অন্য কোনো মামলার সম্মুখীন হতে হবে না তাদের। এক হাজার টাকা মাসোহারায় এসব জক্কিঝামেলা মেটানোর দায়িত্বও নিচ্ছে তারাই। এছাড়াও নগরীতে সিএনজির দরজা লাগানোর বিধান না থাকলেও ওই দালালচক্রের দাপটেই দরজা লাগিয়ে ভাড়ায় চলাচল করছে অবৈধ সেসব সিএনজি। 

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ শ্রমিক লীগের সভাপতি মোহাম্মদ হানিফ খোকন আমার সংবাদকে বলেন, সিএনজি অটোরিকশা সেক্টরে যদি শৃঙ্খলা ফেরাতে হয় তাহলে দালাল চক্রের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নিতে হবে। বিগত ২০০২ সালে ঢাকার সড়ক থেকে ৩৭ হাজার বেবিট্যাক্সি উচ্ছেদ করা হয়। এরস্থলে নিবন্ধন দেয়া হয় ভাড়ায় চালিত ১৫ হাজার সিএনজি অটোরিকশা। অথচ এতোদিনে ঢাকার পরিধি বেড়েছে চারগুণ, জনসংখ্যাও বেড়েছে কয়েকগুণ। এ বিবেচনায় ২০০৭ সালে সরকার ঢাকায় চলাচলের জন্য বৈধ পাঁচ হাজার থ্রি-হুইলার বরাদ্ধ দেয়। এ সংক্রান্তে একটি মামলাও করে ঢাকা অটোরিকশা মালিক সমিতি। মালিক সমিতির পক্ষে রায়ও হয়। তিনি আরও বলেন, ঢাকায় চলাচলরত অবৈধ গাড়িগুলো উচ্ছেদ করলে বৈধ গাড়িগুলোও মিটারে চালাতে আর কোনো সমস্যা থাকবে না। যদিও ইতোমধ্যে গ্যাস, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির উচ্চমূল্যের প্রভাবে বেড়েছে জীবনযাত্রার ব্যয়। এক্ষেত্রে মিটারের ভাড়াও না বাড়ায় দিনশেষে খালি হাতে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে চালকদের। কারন ভাড়ায় চালিত গাড়ির মালিকরা দু-শিপটে দৈনিক জমা নিচ্ছে ১ হাজার ৬০০ টাকা। দিনশেষে চালকদের কিছুই থাকছে না। তিনি আরও বলেন, এসব অবৈধ গাড়ির বিরুদ্ধে গ্যারেজে গ্যারেজে অভিযান পরিচালনা করতে হবে। অন্যথায় এদের নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয় এবং ঢাকায়ও শৃঙ্খলা ফেরানো সম্ভব নয়।


আরও খবর

বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ মডেল

শনিবার ০১ এপ্রিল ২০২৩