Logo
শিরোনাম

মোরেলগঞ্জে ডিসি, ইউএনও এসিল্যান্ডসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৪ নভেম্বর ২০২২ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৩ |

Image

এম.পলাশ শরীফ, নিজস্ব প্রতিবেদকঃ 

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে একটি স-মিলের মালিকানাধীন জমি নিয়ে জেলা বিজ্ঞ সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে ৪ জনকে বিবাদী করে বুধবার মামলা দায়ের করেছেন মিল মালিক আবুল বাশার শেখ ( মামলা নং-দেওয়ানি ৩৮৮/২০২২)। 

এ মামলায় বিবাদী করা হয়েছে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক, মোরেলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও মোরেলগঞ্জ ভূমি অফিসের সার্ভেয়ারকে। বিজ্ঞ আদালত বিবাদীগনকে আগামী ২১ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য আদেশ প্রদান করেছেন। 

  মামলার বিবরনে জানাগেছে, উপজেলার পুটিখালী ইউনিয়নের মঙ্গলেরহাট এলাকার “জনতা রাইস এন্ড স-মিল” মালিক মো. আবুল বাশার শেখ পুটিখালী মৌজার এসএ ৩৫৩ খতিয়ানে ১৪৫১, ১৪৫২ ও ১৪৫৩ দাগের বিআরএস ৩৪৫২ দাগের ০.৫২ একর জমি গত ১৫.১০.২০১২ ইং তারিখে ৫৭৭১ নং দলিলে ইসাহাক আলী হাওলাদারের কাছ থেকে ক্রয় করে ভোগ দখল করে আসছেন। জমির এক অংশে তিনি স-মিল স্থাপন করে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। 

গত ১৩ নভেম্বের উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার কোন প্রকার নোটিশ না দিয়ে জমির মালিক এ মামলার বাদী আবুল বাশারের অনুপস্থিততে জমিতে লাল নিশান টানিয়ে দেন এবং তার স-মিলটি সরিয়ে নেয়ার জন্য বলেন। কারণ হিসেবে বলেন, 'তার স’মিলটি চরের সরকারি জমিতে স্থাপিত'।

 পরের দিন জমির মালিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে স্বাক্ষাৎ করে জানা, তার জমি সিএস রেকর্ডীয় দাগে রয়েছে। যা বিআরএস ৩৪৫২ দাগে পূর্বের মালিক ইসাহাক আলী হাওলাদারের নামে ৭৯৩ নং খতিয়ানে রেকর্ড হয়। 

এক পর্যায়ে আবুল বাসার তার ক্রয়কৃত জমি পরিমাপ করে সঠিক সিমানা নির্ধারনের জন্য নির্বাহী কর্মকর্তাকে অনুরোধ করেন। কিন্তু নির্বাহী কর্মকর্তা সে বিষয় কর্নপাত না করে স-মিলটি সরিয়ে নিতে বলেন এবং বিদুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য পল্লীবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। 

এতে নিরুপায়  হয়ে জমির মালিক আবুল বাশার শেখ বাগেরহাট বিজ্ঞ সহকারী জজ আদালতে জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও সার্ভেয়ারকে বিবাদী করে আদালতে মামলা দায়ের করেন।

বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে বাদির আবেদনের প্রেক্ষিতে বিবাদী গনের বিরুদ্ধে তফসিল বর্নিত জমিতে মামলা চলাকালিন কেন অস্থায়ী ও অর্ন্তবর্তীকালীন নিশেধাজ্ঞার আদেশ প্রদান করা হবে না তা অত্র নোটিশ প্রাপ্তির ২১ দিনের মধ্যে বিবাদী পক্ষকে কারণ দর্শানোর জন্য আদেশ প্রদান করেন। 

এ সর্ম্পকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পুটিখালী মঙ্গলেরহাট এলাকায় এসএ রেকর্ড অনুযায়ী উক্ত স-মিলের জমিতে পূর্বে খাল ছিলো। খালটি ভরাট করে বে-দখল করে নিয়েছে, খালের জমি কখনও মালিকানাধীন হতে পারে না।  বিআরএস রেকর্ড কারো নামে হয়ে থাকলে তা কর্তন করা হবে। 


আরও খবর



পোশাক কারখানায় নিয়োগ বন্ধ

প্রকাশিত:শুক্রবার ১০ নভেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:বুধবার ২৯ নভেম্বর ২০২৩ |

Image

দেশের সব পোশাক কারখানায় সব ধরনের নিয়োগ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজিএমইএ বৃহস্পতিবার এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সদস্যদের কারখানার গেটে নিয়োগ বন্ধ নোটিশ টাঙানোর নির্দেশনা দিয়েছে বিজিএমইএ

বৃহস্পতিবার বিজিএমইএ কার্যালয়ে পোশাক শিল্প মালিকদের সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত এক সমন্বয় সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসানের সভাপতিত্বে সভায় আরও তিনটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এসব সিদ্ধান্তের কথা বিজিএমইএ চিঠি দিয়ে জানিয়েছে সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে

সমন্বয় সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, যেসব কারখানায় আগুন দেওয়া, ভাঙচুর বা মারামারির ঘটনা ঘটেছে, সেসব কারখানা কর্তৃপক্ষকে প্রমাণ হিসেবে ছবি ভিডিও ফুটেজ নিয়ে নিকটস্থ থানায় মামলা করতে হবে। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের নাম জানা না থাকলে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করা যাবে। মামলার পর এর একটি কপি তাদের সিনিয়র অতিরিক্ত সচিবকে পাঠাতে বলা হয়েছে

সমন্বয় সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, যেসব কারখানার শ্রমিকরা কারখানায় গিয়েও কাজ করা থেকে বিরত থাকবেন বা কারখানা ছেড়ে বেড়িয়ে যাবেন, সেসব কারখানার মালিকরা বাংলাদেশ শ্রম আইনের ১৩ () ধারা অনুযায়ী, কারখানা বন্ধ করে দেবেন

সভায় অন্যদের মধ্যে বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী বিজিএমইএর সিনিয়র সহসভাপতি এস এম মান্নান (কচি) এবং সহসভাপতি পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন


আরও খবর

কমছে সবজি ও ব্রয়লারের দাম

শুক্রবার ২৪ নভেম্বর ২০২৩




নওগাঁয় দু'জনকে হত্যা' জড়ীত দু'জন আটক

প্রকাশিত:রবিবার ১৯ নভেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:বুধবার ২৯ নভেম্বর ২০২৩ |

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টার :

নওগাঁয় একজন ব্যবসায়ীকে হাতুড়ি দিয়ে একাধীক আঘাত করে হত্যা'র পর মহাসড়কের ধারে জঙ্গলের ভেতর ফেলে যাওয়ার ঘটনায় হত্যার সাথে জড়ীত ট্রাক চালক ও চালকের সহকারি হেলপাড় কে আটক পূর্বক আটককৃতদের কাছে থেকে নিহত ব্যবসায়ীর ছিনতাইকৃত নগদ ১ লাখ ৩৮ হাজার টাকা ও হত্যা কাজে ব্যবহারীত হাতুড়ি জব্দ সহ আটককৃতদের দেখানো মতে স্থান থেকে ব্যবসায়ীর মৃতদেহ উদ্ধার করেছেন নওগাঁর মহাদেবপুর থানা পুলিশ। অপরদিকে নওগাঁ জেলা সদর শহরে প্রকাশ্যে হেলমেট বাহিনীর আক্রমনে ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে একজন বিএনপি নেতা খুন হয়েছেন। এপৃথক দুটি হত্যা কান্ডের ঘটনাটি ঘটে রবিবার পূর্বরাতে নওগাঁর মহাদেবপুর থানাধীন নওহাটামোড় পুলিশ ফাঁড়ি এলাকার নওগাঁ টু রাজশাহী মহাসড়কের ফয়েজ উদ্দিন কোল্ড স্টোরেজ এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় ও শনিবার দিনগত রাত ১০ টারদিকে নওগাঁ শহরের ইয়াদালীর মোড় নামক স্থানে। 

হাতুড়ির আঘাতে হত্যার শিকার ব্যবসায়ী হলেন, নওগাঁ জেলা সদর উপজেলার কুমরিয়া গ্রামের মৃত আলেফ এর ছেলে কংক্রিটের পোল ব্যবসায়ী মামুন হোসেন (৩৫) এবং হেলমেট বাহিনীর আক্রমনে ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নিহত বিএনপি নেতা হলেন, নওগাঁ জেলা শহরের রজাকপুর এলাকার বাসিন্দা কামাল হোসেন (৫২)।

পুলিশ ও স্থানিয় সুত্রে জানাগেছে, নওগাঁ জেলা সদর উপজেলার কুমরিয়া গ্রামের মৃত আলেফ এর ছেলে কংক্রিটের পোল ব্যবসায়ী মামুন হোসেন পূর্বের ন্যায় তার প্রতিবেশি একই গ্রামের দুলাল হোসেন এর ছেলে ট্রাক চালক সুমন হোসেন (২৫) এর ট্রাক যোগে শনিবার কংক্রিটের তৈরি পোল নিয়ে চাপাইনবাবগঞ্জ যান এবং সেখানে বিক্রি করে ঐ ট্রাক যোগেই পূর্বের ন্যায় বাড়িতে ফিরছিলেন। কিন্তু রাত পেরিয়ে সকাল হওয়ার পরও ব্যবসায়ী মামুন বাসায় না ফেরায় এবং তার মুঠোফোন বন্ধ থাকায় পরিবার দিশেহারা হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে ট্রাকের চালক সুমন হোসেন ও হেলপাড় নওগাঁ সদর উপজেলার উল্লাসপুর গ্রামের সানাউল্লার ছেলে সুজিত হোসেন (২৬) এর সন্দেহজনক চলাফেরার কারনে মামুন এর পরিবার ঘটনাটি পুলিশকে জানালে নওগাঁর সুযোগ্য জেলা পুলিশ সুপার মহোদয় এর সার্বিক নির্দেশনায় নওগাঁর অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার ও মহাদেবপুর সার্কেল এর নের্তৃত্বে মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোজাফ্ফর হোসেন সঙ্গীয় অফিসার পুলিশ ফোর্স সহ ঘটনায় অভিযান চালিয়ে রবিবার বেলা ১১টারদিকে প্রথমে সন্দেহজনক ভাবে ট্রাক চালক সুমন ও হেলপাড় সুজিত কে নওগাঁ সদর উপজেলার জবার মোড় এলাকা থেকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদকালে তারা টাকা ছিনতাই করার জন্য ব্যবসায়ী মামুন কে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা সহ মৃতদেহ সড়কের ধারে জঙ্গলের মধ্যে ফেলে দেওয়ার কথা শিকার করলে এসময় তাদেরকে আটক পূর্বক ছিনতাইকৃত ১ লাখ ৩৮ হাজার টাকা উদ্ধার সহ আটককৃতদের দেখানো মতে হত্যায় ব্যবহারীত হাতুড়ি জব্দ সহ আটককৃতদের সাথে নিয়ে নওগাঁ-রাজশাহী সড়কের আলু স্টোরেজ এলাকায় পৌছে রবিবার দুপুর ১টারদিকে তাদের দেখানো মতে সড়কের ধারের জঙ্গলের ভেতর থেকে ব্যবসায়ী মামুনের মৃতদেহ উদ্ধার পূর্বক ময়না তদন্তের জন্য নওহাটামোড় পুলিশ ফাঁড়ি হেফাজতে নিয়েছেন।

মৃতদেহ উদ্ধার সহ জড়ীত ট্রাক চালক ও হেলপাড়কে আটকের সত্যতা নিশ্চিত করে মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মোজাফফর হোসেন প্রতিবেদক কে জানান, টাকা ছিনতাই করার জন্যেই ব্যবসায়ী মামুনকে হত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে আটককৃতরা পুলিশকে জানিয়েছেন। ইতি মধ্যেই ছিনতাইকৃত টাকা সহ হত্যায় ব্যবহারীত হাতুড়ি ও একটি ট্রাক জব্দ করা হয়েছে এবং উদ্ধারকৃত মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরন সহ আইনানুগ পদক্ষেপ চলমান রয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

অপরদিকে শনিবার দিনগত রাত ১০টারদিকে নওগাঁ শহরের ইয়াদালীর মোড় নামক স্থানে মুখোশধারী হেলমেট বাহিনীর আক্রমনে ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে কামাল হোসেন (৫২) নামে এক বিএনপি নেতা খুন হয়েছেন। নিহত কামাল হোসেন নওগাঁ শহরের রজাকপুর এলাকার বাসিন্দা। তিনি নওগাঁ পৌর এলাকার ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ছিলেন। এছাড়া তিনি নওগাঁ নজরুল একাডেমির সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস) নওগাঁ জেলা কমিটির সদস্য ছিলেন বলেও জানা গেছে। স্থানিয় সুত্র জানায়, ঘটনার সময় সড়কের পাশে কামাল মোটরসাইকেলের উপর বসে মোবাইল ফোনে কথা বলছিলেন। এসময় হঠাৎ করেই মুখোশধারী ও মাথায় হেলমেট পড়া ৫ থেকে ৭ জন যুবক চাপাতি ও দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রকাশ্যে কুপিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর রক্তাক্ত অবস্থায় কামাল হোসেন কে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নেয়া হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন।

এব্যাপারে নওগাঁ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ফায়সাল বিন আহসান জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে আলামত সংগ্রহ করেছে এবং ঘটনার সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করা সহ আটকের জন্য তৎপর রয়েছে পুলিশ। এছাড়া ময়না তদন্তের পর স্বজনদের কাছে মৃতদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।


আরও খবর



পেটের দায়ে পেশা বদলাচ্ছে পরিবহণ শ্রমিকরা

প্রকাশিত:রবিবার ১৯ নভেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৮ নভেম্বর ২০২৩ |

Image

মইনুল ইসলাম মিতুল : চলমান অবরোধ-হরতালে যানবাহনে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আতঙ্কে নিরূপায় হয়ে পেশা পরিবর্তন করছেন পরিবহণ শ্রমিকরা। এর মধ্যে দূরপাল্লার বাসের শ্রমিকদের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। জীবন বাঁচাতে বহু শ্রমিক ইতোমধ্যেই পরিবহণের চাকরি ছেড়ে হোটেলে, গার্মেন্টস, গ্যারেজ ও কৃষি কাজে যোগ দিয়েছেন। অনেকে দিনমজুরের কাজও করছেন। অস্থায়ীভাবে বিভিন্ন পেশায় জড়িয়ে পড়া শ্রমিকদের সংখ্যা হাজারো হতে পারে। পরিবহণের শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

ঢাকার মহাখালী বাস টার্মিনালে শিপন (২৩) নামের এমনই এক পরিবহণ শ্রমিকের সঙ্গে কথা হচ্ছিল। তিনি বলেন, অভাবের তাড়নায় বাসের হেলপার হিসেবে কাজ শুরু করি। দুই মাস আগে ঢাকা-ময়মনসিংহ-ঢাকা রুটে যাতায়াতকারী সৌখিন পরিবহণের হেলপার হিসেবে যোগ দেই। দিনে একটি ট্রিপ দেওয়া যায়। আবার রাতে আরেকটি ট্রিপ দেই। দুটি ট্রিপে ৮০০ টাকা পাই। এর মধ্যে খাওয়া-দাওয়াসহ অন্যান্য খরচ আছে। সব শেষে কোনো কোনো দিন ৩০০ বা ৪০০ টাকা থাকে। সবদিনই রোজগার সমান হয় না। প্রতিমাসে গড়ে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত থাকে। এই দিয়েই সংসার চলে।

এরই মধ্যে রাজনৈতিক দলের হরতাল অবরোধ শুরু হলে একেবারে বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়। দূরপাল্লার বাস যাতায়াত করে না বললেই চলে। আর বাস না চললে টাকা রোজগার বন্ধ। কারণ পরিবহণ শ্রমিকরা দিন হাজিরা অনুযায়ী টাকা পায়। ট্রিপ নাই, টাকাও নাই। অবরোধ-হরতালে মালিকরা গাড়ি বের করেন না। উল্টো গাড়ি ভালোভাবে পাহারা দিতে বলেন। অথচ দিন হাজিরার কোনো টাকাও দেন না। শুধু সামান্য দুই বেলা খাওয়ার জন্য মানবিক কারণে টাকা দেন। আবার কোনো কোনো মালিক তাও দেন না বলে পরিচিত অনেক হেলপারের কাছে শুনেছি।

হরতাল-অবরোধ শুরুর আগে গাড়ি যদি টার্মিনালের ভেতরে নিরাপদ জায়গায় পার্কিং করে রাখা যায়, তাহলে তো কথাই নেই। মালিক একেবারে নিশ্চিন্ত থাকেন। কোনো কোনো মালিক সত্যি সত্যিই গাড়ি ভেতরে রাখা হয়েছে কিনা, তা এসে দেখে যান। মালিক বুঝে যান, তার গাড়ি যেহেতু নিরাপদ জায়গায় আছে, সেহেতু গাড়িতে ভাংচুর বা অগ্নিসংযোগের কোনো সম্ভাবনা নেই। এমন পরিস্থিতিতে অধিকাংশ মালিকই গাড়ি তালা দিয়ে চাবি নিয়ে শ্রমিকদের বাড়ি চলে যেতে বলেন। কারণ হেলপার, সুপারভাইজার ও চালক থাকলে মানবিক কারণে তাদের টাকা দেয়ার বা হাত খরচ দেয়ার বিষয় থাকে। মালিকরা গাড়ি বন্ধ তো সবই বন্ধ। অর্থাৎ পরিবহণ শ্রমিকদের পেছনে বাড়তি টাকা খরচ করতে রাজি নন। এমন পরিস্থিতিতে পরিবহণ শ্রমিকরা বাধ্য হয়ে অন্য গাড়িতে করে ভেঙে ভেঙে বাড়ি চলে যেতে বাধ্য হন। এছাড়া আর কোনো উপায়ও থাকে না। কারণ থাকলেই খরচ।

 সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের সভাপতি হানিফ খোকন বলেন, পেটের দায়ে অনেক পরিবহণ শ্রমিক হোটেলের বয় হিসেবে কাজ নিয়েছেন। অনেকেই গ্যারেজে কাজ নিয়েছেন। এছাড়া যেসব শ্রমিকের গ্রামের বাড়িতে জমি আছে, তারা কৃষি কাজ করছেন। অনেকেই আবার দিনমজুর হিসেবে কাজ করছেন। এমন অনেক সুপার ভাইজার ও চালককে দেখেছি এই পেশা ছেড়ে আপাতত গ্রামে গিয়ে কৃষি কাজ করছেন। অনেকেই দিনমুজুর বা অটো চালাচ্ছেন। কারণ অনেকের সঙ্গেই পেশাগত কারণে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ হয়। তারা কে কোথায় কেমন আছে বা কি করছে তা কথা প্রসঙ্গে জানা যায়।

সুপার ভাইজার ও চালকদের এছাড়া আর কোনো উপায়ও নেই। কারণ একজন সুপার ভাইজার সিঙ্গেল দুই বার আপ-ডাউন করলে সর্বোচ্চ এক হাজার টাকা পায়। আর চালক পায় ১৪শ টাকা। গাড়িই যেহেতু চলে না, সে ক্ষেত্রে পরিবহণ শ্রমিকদের রোজগার বন্ধ। এজন্য তাদের অনেকেই গ্রামের বাড়িতে চলে গেছেন। এছাড়া আর কোনো উপায় নেই। কারণ ঢাকায় বিভিন্ন বাসের ভেতরে থাকার সুযোগ থাকায় টাকা লাগে না। তবে খাওয়া দাওয়া করতে অনেক টাকা ।

হানিফ খোকনের ভাষ্য মতে, বহু শ্রমিক পরিবহণ সেক্টরের পেশা ছেড়েছেন। কারণ একদিকে রোজগার নেই। আরেক দিকে প্রাণের মায়া। সম্প্রতি যাত্রাবাড়িতে পার্কিং করে রাখা একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে বাসের ভেতরে থাকা হেলপার জীবন্ত পুড়ে মারা যান। সবারই প্রাণের মায়া আছে। দূরপাল্লার বাসে ভয় আরও বেশি। কারণ রাতে বাস চলাচল করে। কে কোথা থেকে অন্ধকারের মধ্যে বাসে আগুন বোমা ছুড়ে মারবে, তার কোনো হদিস নেই। বাস মালিকের বাস পুড়ে যাবে। আর যাত্রী, হেলপার, সুপারভাইজার ও চালকের জীবন যাবে। চোরাগোপ্তা হামলা করে বাসে আগুন দেওয়ার কারণে পরিবহণ মালিকরা রাস্তায় বাস বের করতে চান না। আর শ্রমিকরাও জীবনের মায়ায় যানবাহন চালানোর সাহস পাচ্ছেন না।

অনেকটা কষ্টেই হানিফ খোকন বলছিলেন, সবারই তো জীবনের মায়া আছে! যাত্রীরা প্রাণের ভয়ে বাসে উঠেন না। বেঁচে থাকলে কিছু না কিছু করে জীবন পার করতে পারবে। ঘরে পিতা-মাতা ভাই বোন আছে।

পরিবহণ শ্রমিক লীগের তথ্য মতে, সারা দেশে পরিবহণ শ্রমিকের সংখ্যা এক কোটির উপরে। দূরপাল্লার প্রতিটি বাসে কমপক্ষে তিনজন করে শ্রমিক থাকেন। চালক, সুপারভাইজার ও হেলপার। তবে মালবাহী যানবাহনে শ্রমিকের সংখ্যা আরও বেশি। আর লেগুনা, হিউম্যান হলারে দুজন করে শ্রমিক থাকেন।

গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাবেশে ব্যাপক নাশকতার ঘটনা ঘটে। ওইদিন অনেক যানবাহন ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের কবলে পড়ে। এরপর থেকে বিএনপি-জামায়াত দেশব্যাপী অবরোধ ও হরতালের মতো কর্মসূচি পালন করছে। এসব কর্মসূচিতে যানবাহনে চোরাগোপ্তা হামলার ঘটনা ঘটছে। যাত্রীবাহী বাস বা মালবাহী কাভার্ড ভ্যান ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের যানবাহন হামলাকারীদের মূল টার্গেটে পরিণত হয়েছে। এখন পর্যন্ত আড়াই শতাধিক যানবাহন ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের কবলে পড়েছে। হতাহত হয়েছেন যাত্রী, চালক, সুপারভাইজার, হেলপারসহ পরিবহণ সংশ্লিষ্ট অনেকেই। এমন পরিস্থিতিতে পরিবহণ মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে রীতিমত আতঙ্ক বিরাজ করছে। যে কারণে অবরোধ বা হরতালের দিন দূরপাল্লার বাস বা অন্যান্য যানবাহন চলাচল করছে না বললেই চলে। যেসব যানবাহন চলাচল করছে, তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিতান্তই পেটের দায়ে যানবাহন নিয়ে রাস্তায় বের হচ্ছেন।

পরিবহণ সংশ্লিষ্টরা জানান, পুলিশ ও র‌্যাবের তরফ থেকে দূরপাল্লার যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নিশ্চয়তা দিলেও পরিস্থিতির তেমন একটা উন্নতি হয়নি। আতঙ্কে পরিবহণ মালিকরা যেমন রাস্তায় যানবাহন বের করছেন না, তেমনি পরিবহণ শ্রমিকরাও জীবনের মায়ায় রাস্তায় যানবাহন নিয়ে বেরুতে সাহস পাচ্ছেন না।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) তথ্য মতে, চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত সারা দেশে নিবন্ধিত যানবাহনের সংখ্যা প্রায় ৫৭ লাখ ৪২ হাজার। অনিবন্ধিত যানবাহনের সংখ্যা লাখ লাখ। যার সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই। যদিও ২০২১ সালে জাতীয় সংসদে সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানিয়েছিলেন, ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে ফিটনেসবিহীন গাড়ির সংখ্যা ছিল প্রায় ৫ লাখ। সারা দেশে ১১ হাজার ৭০৮ কিলোমিটার মহাসড়ক রয়েছে। মহাসড়কে নিয়মিত যাতায়াতকারী দূরপাল্লার যানবাহনের সংখ্যা ২১ লাখের বেশি।


আরও খবর

নির্বাচনে সেনা মোতায়েন করা হবে

বুধবার ২৯ নভেম্বর ২০২৩




বায়ুদূষণ মারাত্মক রূপ নিচ্ছে ঢাকায়

প্রকাশিত:শনিবার ২৫ নভেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:বুধবার ২৯ নভেম্বর ২০২৩ |

Image

বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় ২৫ নভেম্বর সকালে ঢাকার অবস্থান দ্বিতীয়। সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) স্কোর ২৫১ নিয়ে রাজধানীর বাতাসের মান খুব অস্বাস্থ্যকর।

১০১ থেকে ২০০ এর মধ্যে একিউআই স্কোরকে সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর বলে মনে করা হয়। ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে থাকা একিউআই স্কোরকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর ৩০১ থেকে ৪০০ এর এর মধ্যে থাকা একিউআইকে ঝুঁকিপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

ভারতের দিল্লি ও কলকাতা যথাক্রমে ৩০৩ ও ২৩৮ একিউআই স্কোর নিয়ে প্রথম ও তৃতীয় স্থানে আছে।

বাংলাদেশে একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের ৫টি বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে, সেগুলো হলো বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ এবং ওজোন (ও৩)।

দীর্ঘদিন ধরে বায়ুদূষণে ভুগছে ঢাকা। এর বাতাসের গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায় এবং বর্ষাকালে কিছুটা উন্নত হয়।

একই সময়ে সবচেয়ে নির্মল বায়ুর শহরের তালিকায় শীর্ষ তিনে রয়েছে ইতালির মিলানো, জাপানের নাগোয়া ও অস্ট্রেলিয়ার সিডনি। এর মধ্যে সকালে মিলানো ও নাগোয়ার স্কোর ছিল ৪। আর সিডনির স্কোর ছিল ১০।


আরও খবর

অবরোধেও রাজধানীতে গাড়ির চাপ

বুধবার ২৯ নভেম্বর ২০২৩

১৩ দিনে ঢাকায় ৬৪ গাড়িতে আগুন

শুক্রবার ১০ নভেম্বর ২০২৩




বায়ুদূষণে আজ বিশ্বে চতুর্থ ঢাকা

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৮ নভেম্বর ২০২৩ |

Image

১৬নভেম্বর সকাল পৌনে ১০টার দিকে বায়ুদূষণে বিশ্বের ১১০টি শহরের মধ্যে শীর্ষ পাঁচটি শহরই ভারত, পাকিস্তান বাংলাদেশের আইকিউএয়ারের বাতাসের মানসূচক (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স-একিউআই) থেকে তথ্য পাওয়া গেছে

সকাল পৌনে ১০টার দিকে সবচেয়ে দূষিত বায়ুর শহরের তালিকার শীর্ষে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর। লাহোরের স্কোর ৩৪৩। এরপর রয়েছে ভারতের দিল্লি, স্কোর ২৫৬। ২০৩ স্কোর নিয়ে পাকিস্তানের আরেক শহর করাচি রয়েছে তৃতীয় অবস্থানে। এরপরের অবস্থানে রয়েছে ঢাকা, স্কোর ১৭৫। ১৭০ স্কোর নিয়ে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে ভারতের আরেক শহর মুম্বাই

একই সময়ে বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে নির্মল বাতাস ছিল রাশিয়ার ক্রাসনোয়ার্সকে তারপর রয়েছে নরওয়ের অসলো স্লোভাকিয়ার ব্রাতিসলাভা তিন শহরের স্কোর যথাক্রমে , ১০

বায়ুদূষণের পরিস্থিতি নিয়মিত তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা লাইভ বা তাৎক্ষণিক একিউআই সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটা নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় এবং সতর্ক করে

আইকিউএয়ারের দেওয়া আজকের তালিকায় বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই (পিএম .) দূষণের প্রধান উৎস। আজ ঢাকার বাতাসে যতটা এই বস্তুকণা আছে, তা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মানদণ্ডের চেয়ে ২০ গুণের বেশি

আইকিউএয়ারের বায়ু নিয়ে তৈরি প্রতিবেদনে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। দূষণ থেকে রক্ষা পেতে আজ ঢাকাবাসীর জন্য পরামর্শ, বাইরে বের হলে মাস্ক পরে বের হবেন, সেটি দূষণ থেকে আপনাকে সুরক্ষা দিতে পারে

আইকিউএয়ারের মানদণ্ড অনুযায়ী, স্কোর ৫১ থেকে ১০০ হলে তাকেমাঝারিবাগ্রহণযোগ্যমানের বায়ু হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরকেসংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকরধরা হয়

বায়ুদূষণ বেশি হলে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকেন সংবেদনশীল গোষ্ঠীর ব্যক্তিরা। তাদের মধ্যে আছেন বয়স্ক, শিশু, অন্তঃসত্ত্বা, জটিল রোগে ভোগা ব্যক্তিরা। তাদের বিষয়ে বিশেষ যত্নবান হওয়া দরকার বলে পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের

স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তাঅস্বাস্থ্যকরবায়ু। স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে, তাকেখুবই অস্বাস্থ্যকরবায়ু ধরা হয় ৩০১ থেকে তার ওপরের স্কোরকেদুর্যোগপূর্ণবাঝুঁকিপূর্ণধরা হয়


আরও খবর

নির্বাচনে সেনা মোতায়েন করা হবে

বুধবার ২৯ নভেম্বর ২০২৩