শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, স্টাফ রিপোর্টার :
নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার আগ্রাদ্বিগুন বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের উপবৃত্তির তালিকায় থাকা তিন শিক্ষার্থীর টাকা আত্মসাৎ করার লক্ষ্যে ঐ বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষকসহ সহকারী দু' শিক্ষকের মোবাইল নাম্বার দেওয়া হয়েছে। গত ২০২২ সালের জুন ও ডিসেম্বর মাসে দুই কিস্তির টাকা আসে তাদের মোবাইলে। এঘটনা জানাজানি হলে শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা ও আঃ মান্নান নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, দূর্নীতি দমন কমিশন, নওগাঁ জেলা শিক্ষা অফিসার সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগ দায়েরের পর ঘটনাটি গোপন রাখতে দুই শিক্ষার্থীর অভিভাবককে ২৪শ' টাকা করে আর এক অভিভাবক কে ১২ হাজার টাকা দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়গেছে, প্রধান শিক্ষক মোঃ বেনজীর আহমেদ নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে গরীব দুঃস্থ ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট্রের টাকা তার নিজের ও অন্যান্য শিক্ষকদের মোবাইল একাউন্ট ব্যবহার করে ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের উপবৃত্তির টাকা আত্মসাৎ করেন। উপবৃত্তির তালিকায় থাকা ৬ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থী স্থানীয় ইউনুস আলীর ছেলে আরশাত এর অভিভাবকের নাম্বারের স্থানে সহকারী মৌলভী নুরনবীর মোবাইল নাম্বার। একই শ্রেণীর শিক্ষার্থী সুনিল উরাও এর ছেলে সুজান উরাও এর টাকা আসে সহকারী শিক্ষক (কৃষি) দেলোয়ার হোসেন এর মোবাইল নাম্বারে এবং ঐ শ্রেণীর আরো এক শিক্ষার্থী শুকরা উরাও এর মেয়ে ঝরনা উরাও এর টাকা আসে প্রধান শিক্ষক বেনজির আহমেদ এর নাম্বারে। তারা এই টাকাগুলো উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ঐ শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা বলেন, প্রথমে আমরা জানতাম না আমাদের সন্তানদের নামে উপবৃত্তি হয়েছে এবং তাদের নামে প্রধানমন্ত্রীর অনুদানের টাকা আসছে। তারা গত বছরের টাকা তুলেছেন। এটা জানার পর আমরা বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। অভিযোগ দায়ের এর ৫মাস পরে গত শুক্রবার প্রধান শিক্ষক বাড়িতে এসে টাকা দেন এবং এ বিষয়ে কাউকে কিছু না বলতে নিষেধ করেন। এর মধ্যে শিক্ষার্থী আরশাতের বাবা ইউনুস আলী বলেন, অভিযোগের পর আমাকে টাকা দিতে চাইলেও আমি নেইনি। পরে রাতে প্রধান শিক্ষক আমার বাড়িতে গিয়ে আমার ছেলে ও ছেলের মাকে অনেক বুঝিয়ে ১২ হাজার টাকা দিয়ে এসেছেন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে কৃষি শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, অফিস থেকে আমার নাম্বার দেয়। পরবর্তীতে টাকা এলে শিক্ষার্থীদের দিয়ে দেওয়া হয়েছে। জানতে চাইলে ইসলাম শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক নুরনবী এবিষয়ে কোন মন্তব্য না করে প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলতে বলে ফোন কেটে দেন।
এব্যাপারে জানার জন্য প্রধান শিক্ষক বেনজির আহমেদ এর মুঠোফোনে একাধিক বার কল দিলেও সেটি বন্ধ থাকায় তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন নওগাঁ জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ লুৎফর রহমান।