দেশে হৃদরোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত
২৩ ধরনের রিংয়ের দাম কমিয়ে নতুন মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। সে অনুযায়ী সর্বনিম্ন
২০ হাজার ও সর্বোচ্চ ৬৮ হাজার টাকায় পাওয়া যাবে রিং।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের
মহাপরিচালকের সঙ্গে বাংলাদেশে ইউরোপীয় ও অন্যান্য দেশের হার্টের রিং উৎপাদনকারী
কোম্পানির প্রতিনিধি এবং ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্টদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে
বিভিন্ন কোম্পানির হার্টের রিংয়ের দাম কমানো হয়েছে।
তবে সর্বশেষ গত বছরের
ডিসেম্বরে নির্ধারিত দামের থেকে বেশি দামে এই মূল্য নির্ধারণ করেছে অধিদপ্তর। নতুন
করে হার্টের রিংয়ের দাম নির্ধারণ করায় রিং ভেদে দাম বেড়েছে ২ হাজার থেকে প্রায় ১৫
হাজার টাকা পর্যন্ত।
ইউরোপীয় আমদানিকারকেরা
রিং সরবরাহ বন্ধ রাখায় বাজারে সংকট তৈরি হয়েছিল বলে দাম কিছুটা বাড়ানো হয়েছে বলে
জানিয়েছেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজেসের পরিচালক ও ডিজিডিএ’র
বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য ডা. মীর জামাল উদ্দিন।
তিনি বলেন, ‘গত
বছরের ডিসেম্বরে হার্ট রিংয়ের দাম কমানো হলে ইউরোপিয়ান রিং সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো
আদালতের দারস্থ হয়েছিল। রিটের মিমাংসা হওয়ার পরে তাদের প্যারেন্ট কোম্পানির প্রতিনিধিদের
নিয়ে আমরা বসেছিলাম। ওই দামে রিং বিক্রি করলে তাদের ক্ষতি হচ্ছে বলে তারা জানিয়েছে।
তাদের পক্ষে ওই দামে রিং সরবরাহ করা সম্ভব নয়।’
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে,
হার্টের রিংয়ের মূল্য হ্রাসে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
ডিজিডিএ নতুন নির্ধারিত দামের সঙ্গে ২০২১ ও ২০২২ সালের রিংয়ের দামের তুলনা করেছে।
সে হিসেবে রিংয়ের দাম কমেছে। তবে সেখানে ২০২৩ সালের ১২ ডিসেম্বরে নির্ধারণ করা
দামের উল্লেখ নেই।
অধিদপ্তরটির পরিচালক
(প্রশাসন) মো. সালাহ উদ্দিন বলেন, আমরা দীর্ঘদিন থেকে রিংয়ের দাম কমানোর চেষ্টা
করছিলাম। এর প্রেক্ষিতেই এটা করা হয়েছে। সবগুলো হাসপাতালে নতুন এই মূল্য তালিকা
টানিয়ে রাখতে হবে।
বাংলাদেশে হৃদরোগের
চিকিৎসায় বিভিন্ন দেশের তৈরি ২৬ ধরনের রিং ব্যবহার হয়ে থাকে। নতুন মূল্য তালিকায়
এগুলোর দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। মাস কয়েক আগে ৩টি স্টেন্টের দাম কমানো
হয়েছিল, যেগুলো এখন অপরিবর্তিত রয়েছে।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরে
ঔষধ প্রশাসন যখন রিংয়ের দাম নির্ধারণ করে দেয় তখন আমদানিকারকদের একটি বড় অংশ নতুন
মূল্য নিয়ে আপত্তি তুলেছিলে। যা পরবর্তীতে আদালতেও গড়িয়েছিল। তবে এবার নতুন দাম
নির্ধারণ করার পর এখন পর্যন্ত কোনো আপত্তি দেখা যায়নি।
কোন রিংয়ের কত দাম নির্ধারণ-
পোল্যান্ডের তৈরি
অ্যালেক্স প্লাস ব্র্যান্ডের দাম ৬০ হাজার টাকা, অ্যালেক্স ব্র্যান্ড ৬০ হাজার
টাকা, অ্যাবারিস ব্র্যান্ড ৬০ হাজার টাকা করা হয়েছে।
জার্মানির
করোফ্ল্যাক্স আইএসএআর ব্র্যান্ডের দাম ৫৩ হাজার টাকা, করোফ্ল্যাক্স আইএসএআর নিও
ব্র্যান্ড ৫৫ হাজার টাকা, জিলিমাস ব্র্যান্ড ৫৮ হাজার টাকা করা হয়েছে।
সুইজারল্যান্ডের
ওরসিরো ব্র্যান্ডের দাম ৬৩ হাজার টাকা, ওরসিরো মিশন ৬৮ হাজার টাকা করা হয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার তৈরি
জেনোস ডেস ব্র্যান্ডের দাম ৫৬ হাজার টাকা করা হয়েছে।
স্পেনের ইভাসকুলার
এনজিওলাইটের দাম ৬২ হাজার টাকা করা হয়েছে।
জাপানের
আল্টিমাস্টারের দাম ৬৬ হাজার টাকা করা হয়েছে।
নেদারল্যান্ডসের
অ্যাবলুমিনাস ডেস প্লাসের দাম ৬৩ হাজার টাকা করা হয়েছে।
ভারতে তৈরি মেটাফর
ব্র্যান্ডের দাম ৪০ হাজার টাকা, এভারমাইন ফিফটি ব্র্যান্ড ৫০ হাজার টাকা, বায়োমাইম
মর্ফ ৫০ হাজার টাকা, বায়োমাইম ৪৫ হাজার টাকা করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের
অ্যাফিনিটি-এমএস মিনির দাম ৬০ হাজার টাকা, ডিরেক্ট-স্টেন্ট সিরো ৬৬ হাজার টাকা এবং
ডিরেক্ট-স্টেন্ট ৩০ হাজার টাকা করা হয়েছে।
সিঙ্গাপুরের তৈরি
বায়োমেট্রিক্স নিওফ্ল্যাক্সের দাম ৬০ হাজার টাকা, বায়োমেট্রিক্স আলফা ৬৬ হাজার
টাকা এবং বায়োফ্রিডম ৬৮ হাজার করা হয়েছে।