মির্জা হৃদয় সাগর, জেলা প্রতিনিধি (নেত্রকোনা) :
নেত্রকোনায় ২৮ লাখ টাকার চোরাই ইলিশসহ এক গাড়ি চালককে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার সকালে জেলার কলমাকান্দার বিষমপুর গ্রামে থেকে ইলিশ মাছের ৫৬ টি ককশিট বক্স জব্দ করে এবং হাসান মিয়া(২৮) নামে এক ব্যক্তিকে আটক করে সিধলী তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ।
বুধবার বিকেলে জেলা পুলিশের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজের মাধ্যমে এই তথ্য নিশ্চিত করে জেলা পুলিশ।
আটককৃত হাসান মিয়া কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেনপুর উপজেলার গনমানপুরুরা গ্রামের আব্দুল মোতালেবের ছেলে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার রাতে চিটাগাং এর একটি মাছের আড়ত থেকে প্রতিবারের মত বাজার জাত করার জন্য ইলিশ মাছের একটি চালান নিয়ে যাত্রাবাড়ীর উদ্দেশ্যে রওনা দেন হাসান মিয়া। পথে হাসানের সহযোগী শান্ত মিয়া, হক মিয়া ও তাহের মিয়ার সাথে মেবাইলে যোগাযোগ করে মাছের চালান চুরির পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মাফিক মাছের চালান যাত্রাবাড়ীর পরিবর্তে গাজীপুরে এসে গাড়ি পরিবর্তন করে মাছগুলো নিয়ে চলে আসেন সীমান্তবর্তী উপজেলা কলমাকান্দার বিষমপুর গ্রামে তাহের মিয়ার বাড়িতে। লোক চোখ আড়াল করতে রাতের আঁধারে বাড়ির পাশে মাছের বক্সগুলো লুকিয়ে রাখেন হাসান মিয়া। সকালে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে সেখান থেকে মাছের বক্সগুলো জব্দ করে। জব্দকৃত মাছের বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ২৮ লাখ ৭০ হাজার টাকা বলে জানায় পুলিশ। বুধবার সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কলমাকান্দার বিষমপুর গ্রামে প্লাস্টিক টেপ পেপারে মোড়ানো বেশকিছু ককশিট বক্সের সন্ধান পায় পুলিশ। পরে ওই গ্রামের হক মিয়ার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ বাক্সগুলো জব্দ করে। এ সময় বক্সগুলো খুলে প্রতিটি বক্সেই ইলিশ মাছ পাওয়া যায়। পরে ওই বাড়িতে অবস্থানরত স্থানীয় এক মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদে একপর্যায়ে মাছগুলো হাসান মিয়ার বলে জানান। এদিকে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ঐগ্রাম অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত হাসান মিয়াকে আটক করে সিধলী তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ।
সিধলী তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মোঃ এনামুল হক জানান, আমরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিষমপুর গ্রামে তাহের মিয়ার বাড়ির পিছনে কিছু সন্দেহজনক ককশিটে বক্সের সন্ধান পাই। পরে ওই অভিযান চালিয়ে বাক্স গুলো জব্দ করে, তার ভিতরে ইলিশ মাছে দেখতে পাই। তারপর তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় হাসান মিয়া নামে এক গাড়ি চালককে আটক করা সম্ভব হয়। আটককৃতকে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে জানায় মাছগুলো তিনি চট্টগ্রাম থেকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে পৌঁছে দেওয়ার কথা থাকলেও মাছের চালান তিনি কলমাকান্দার বিষমপুর গ্রামে নিয়ে আসে। আমরা ইতিমধ্যে মাছের যে প্রকৃত মালিকের সাথে কথা বলেছি। অভিযুক্ত হাসান মিয়া নিয়মিতই মাছের চালান নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করতেন এরই মাঝে তিনি মাছগুলি চুরির পরিকল্পনা করেন।
তিনি আরো জানান, আটককৃত হাসান মিয়া আমাদের হেফাজতে রয়েছে। মাছের যে প্রকৃত মালিক তিনি গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানায় মাছ চুরির বিষয়ে একটি অভিযোগ করেছে। অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্তা নেওয়া হচ্ছে। আমরা আসামি এবং আলামত তাদের কাছে হস্তান্তর করব।