
নিজস্ব প্রতিবেদক :
নওগাঁর মান্দায় ক্লাসে পড়া না হওয়ায় ২০-২৫ জন শিক্ষার্থীকে বেধড়ক পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করার অভিযোগ উঠেছে নন এমপিও স্কুলের নামে পরীক্ষা দেওয়ানো সেই প্রধান শিক্ষক মোঃ ইদ্রিস আলীর বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার মান্দা উপজেলার চক গোপাল উচ্চ বিদ্যালয়ে।
ঘটনাটি স্থানীয়দের মাধ্যমে জানার সাথে সাথেই বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন মান্দা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শাহ আলম শেখ।
এঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের পক্ষে ১০ শ্রেণিতে পড়ুয়া ছাত্র ইকবাল মঙ্গলবার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
শিক্ষার্থীর অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, অন্যান্য দিনের মতো সোমবার বিদ্যালয়ে যাওয়ার পর ৩য় ঘন্টার গণিত ক্লাসে পড়া না পারার জন্য ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বেধড়ক পিটিয়ে শরীর রক্তাক্ত জখম করেছেন প্রধান শিক্ষক ইদ্রিস আলী। তিনি শিক্ষার্থী ইকবালকে প্রায় ৫০ থেকে ৬০টি বেতের আঘাত করে বলে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করে বলে এতে আমার পুরো শরীর রক্তাক্ত হয়ে যায়। এভাবে আমাদের ক্লাসের ২০ থেকে ২৫ জন ছাত্রকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করা হয়। তাৎক্ষনিকভাবে আমি নিজের প্রান বাঁচানোর তাগিদে স্কুলে বাহিরে চলে যাই। বিষয়টা এলাকাবাসিকে জানালে তারা উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে জানায়। পরে উপজেলা শিক্ষা অফিসার সরেজমিনে বিষয়টা পর্যবেক্ষণ করেন এবং আমাকে সহ আমার সহপাঠীদের রক্তাক্ত অবস্থায় দেখে যায়। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের রক্তাক্ত শরীরের ছবি ও ভিডিও অভিযোগের সাথে জমা দেন বলেও জানায় সে।
প্রতিবেদকের হাতে থাকা ভিডিও ও ছবিতে দেখা যায় ইকবাল, মাহফুজুর, মুজাহিদ, সাকলাইন, মাহি, রাকিব, সাকিব, রনি, আরাফাত সহ ২০থেকে ২৫ জন শিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারপিট করা রক্তাক্ত শরীর। তারা সেই ভিডিওতে দাবি করেন প্রধান শিক্ষক ইদ্রিস আলী তাদের এমন নির্মমভাবে নির্যাতন করেছেন।
এবিষয়ে জানার জন্য প্রধান শিক্ষক মোঃ ইদ্রিস আলীর মুঠোফোনে কল দিলে সে বিভিন্ন বিষয়ে ব্যস্ততা দেখিয়ে পড়ে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন।
মারপিটের সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শাহ আলম শেখ বলেন, মারপিটের ঘটনা ঘটার পর স্থানীয়রা আমাকে জানান। আমি জানার সাথে সাথেই বিদ্যালয়ে গিয়ে সরেজমিনে দেখে সত্যতা পেয়েছি। আর ঐ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আমার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এব্যাপারে জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ লুৎফর রহমান বলেন, আমি ঘটনাটি জানিনা বা আমাকে এই বিষয়ে কেউ জানায় নি। আপনার মাধ্যমেই প্রথম জানলাম। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখতে বলছি। ক্লাসে পড়া না পারলে কোন শিক্ষার্থীকে কি শারীরিক নির্যাতন করা যাবে? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, শারীরিক নির্যাতন তো দূরের কথা শিক্ষার্থী মনোকষ্ট পাবে এমন কথাও বলা যাবেনা।