Logo
শিরোনাম

নওগাঁয় ট্রাক,বাস ও প্রাইভেটকার সংঘর্ষে দু' জনের মৃত্যু

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৪ জুন ২০২৫ |

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টার :

নওগাঁয় ড্রাম ট্রাক, যাত্রীবাহী বাস ও প্রাইভেটকার সংঘর্ষে 

মাহিন আহমেদ সাগর (২৭) ও আলভী রাব্বানী জিহান (৩২) নামের দু'জনের মর্মান্তিকভাবে মৃত্যু হয়েছে।

এদূর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো দু'জন। সোমবার ৯ ডিসেম্বর বিকেলে নওগাঁ টু রাজশাহী মহাসড়কের মান্দা উপজেলার শাহারপুকুর নামক স্থানে মর্মান্তিক এ সড়ক দূর্ঘটনাটি ঘটেছে। 

নিহত মাহিন আহমেদ সাগর নওগাঁর সাপাহার উপজেলার চৌধুরী পাড়া গ্রামের আঃ জব্বারের ছেলে ও নিহত আলভী রাব্বানী জিহান একই এলাকার এনামুল হকের ছেলে বলে প্রাথমিকভাবে জানাগেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নওগাঁ অভিমুখি একটি প্রাইভেটকার ও একটি যাত্রীবাহী বাসকে রাজশাহীগামী একটি ড্রাম ট্রাক ধাক্কা দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। এসময় প্রাইভেটকারটি দুমড়ে মুচরে যায় এবং বাসের সামনের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে ঘটনা স্থলেই প্রাইভেটকারে থাকা দু'জনের মৃত্যু হয় এবং দু'জন আহত হয়। তাৎক্ষণিকভাবে আহতদের উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। 

সড়ক দূর্ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ মনসুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় দু' জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে মৃতদেহ হস্তান্তর করা হবে।


আরও খবর



পুতিন সম্পূর্ণ উন্মাদ হয়ে গেছেন : ট্রাম্প

প্রকাশিত:সোমবার ২৬ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:সোমবার ২৩ জুন ২০২৫ |

Image

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ওপর ‘খুশি নন’। ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় আকাশ হামলার পর এমন মন্তব্য করলেন তিনি। ২৬ মে রাতে নিউ জার্সিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় পুতিনকে ‘উন্মাদ’ বলে অভিহিত করেন তিনি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

ট্রাম্প বলেন, ‘তার কী হয়েছে? তিনি অনেক মানুষ হত্যা করছেন। পুতিন সম্পর্কে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি তাকে অনেকদিন ধরে চিনি, সব সময় তার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক ছিল। কিন্তু এখন সে শহরে রকেট ছুড়ছে এবং মানুষ হত্যা করছে, এটা আমার একদম পছন্দ নয়।

এর কিছুক্ষণের মধ্যেই ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল পোস্টে লেখেন, পুতিন ‘সম্পূর্ণ উন্মাদ হয়ে গেছেন’।

ট্রাম্প আরো বলেন, ‘আমি সব সময়ই বলেছি, সে পুরো ইউক্রেন চায়, কেবল একটা অংশ নয় এবং হয়তো সেটাই প্রমাণিত হচ্ছে, কিন্তু যদি সে সেটা করে, তাহলে সেটি রাশিয়ার পতনের কারণ হবে!

এর আগে সাম্প্রতিক রুশ হামলা নিয়ে ওয়াশিংটনের ‘নীরবতা’ পুতিনকে উৎসাহিত করছে বলৈ মন্তব্য করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি মস্কোর ওপর ‘জোরালো চাপ’ বা আরো কঠোর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার আহ্বান জানান।

এমন কথা বলায় জেলেনস্কিকে নিয়েও কঠোর মন্তব্য করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্প বলেন, ‘তিনি যেভাবে কথা বলছেন, তাতে তিনি নিজের দেশের কোনও উপকার করছেন না।

জেলেনস্কি সম্পর্কে ট্রাম্প আরো বলেন, ‘তার মুখ থেকে যা কিছু বের হয়, তা সমস্যার কারণ হয়। আমি এটা পছন্দ করি না এবং এটা বন্ধ হওয়া উচিত।


আরও খবর



ঝালকাঠিতে সাংবাদিককে হত্যার হুমকির অভিযোগ

প্রকাশিত:বুধবার ১১ জুন ২০২৫ | হালনাগাদ:রবিবার ২২ জুন ২০২৫ |

Image

হাসিবুর রহমান,ঝালকাঠি প্রতিনিধি :

ঝালকাঠির কাঠলিয়ায় ঢাকা ক্যানভাসের জেলা প্রতিনিধি এম এ আজিজকে সংবাদ সংগ্রহের কারনে হত্যার হুমকির অভিযোগ উঠেছে। মো ময়নুল হাওলাদার (৩০) এর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠে। ময়নুল উপজেলার উত্তর বলতালা এলাকার আলমগীর হাওলাদারের ছেলে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আজিজ কাঠালিয়া উপজেলায় সংবাদ কর্মী হিসেবে দীর্ঘদিন যাবৎ কাজ করিয়া আসিতেছি। ময়নুল একজন চিহ্নিত বখাটে প্রকৃতির লোক হওয়ায় সংবাদ সংগ্রহ সংক্রান্ত বিষয় নিয়া আজিজকে ভয় ভীতি প্রদান করিয়া আসিতে থাকে।

তারই ধারাবাহিকতায় গত ৯ তারিখ সোমবার সকাল অনুমানিক সাড়ে নয়টার সময় আজিজ ০৫ নং শৌলজালিয়া ইউনিয়নের ০৪ নং ওয়ার্ডের উত্তর বলতলার দোগনাহাট বাজারে আঃ মন্নান আকন এর খাবার হোটেলে সকালের নাস্তা করতে গেলে, ময়নুল আজিজকে দেখে পূর্ব বিরোধের জের ধরে অশ্লীল ভাষায় কথা বার্তা বলা শুরু করে। আজিজ ময়নুলকে অশ্লীল ভাষায় কথা বার্তা বলিতে নিষেধ করলে, ময়নুল উত্তেজিত হয়ে আজিজকে বিভিন্ন ভয় ভীতি ও খুন জখমের হুমকী দেয়।

এ বিষয় জানতে অভিযুক্ত মায়নুল এর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

কাঁঠালিয়া থানার এসআই সজল খান বলেন, এ বিষয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি  করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরও খবর



রোহিঙ্গা সংকট আঞ্চলিক নিরাপত্তায় হুমকি হতে পারে

প্রকাশিত:শুক্রবার ২০ জুন ২০25 | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৪ জুন ২০২৫ |

Image

রোহিঙ্গা সমস্যার টেকসই সমাধান না হলে দ্রুতই এই সংকট আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকির কারণ হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ‘আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার ওপর দারিদ্র্য, উন্নয়নঘাটতি ও সংঘাতের প্রভাব’ শীর্ষক উচ্চপর্যায়ের আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বিগত আট বছরের বেশি সময় ধরে ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বাংলাদেশ মানবিক দায়িত্ববোধ থেকে আশ্রয় দিয়ে আসছে। কিন্তু দীর্ঘসূত্রিতার কারণে এই সংকট এখন আর শুধু মানবিক বিষয় নয়; এটি অর্থনৈতিক, পরিবেশগত এবং ক্রমবর্ধমানভাবে একটি নিরাপত্তা ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে।

নিজ দেশ মিয়ানমারে নির্মম নির্যাতনের কারণে বাস্তুচ্যুত এই জনগোষ্ঠীকে পূর্ণ নিরাপত্তা ও অধিকারের সঙ্গে প্রত্যাবাসনের জন্য অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান তিনি।

তারুণ্যের গৌরবের প্রসঙ্গ টেনে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে তরুণরা বারবার পরিবর্তনের অগ্রভাগে থেকেছে।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ, অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশন এবং সম্প্রতি গঠিত পিস বিল্ডিং কমিশনের মধ্যে সমন্বয় বাড়ানোর আহ্বান জানান, যাতে শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগগুলো বাস্তবভিত্তিক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।

নিরাপত্তা পরিষদের এই বৈঠকে বাংলাদেশ ছাড়াও সুইডেন, উরুগুয়ে ও পূর্ব তিমুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, জার্মানির পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন।


আরও খবর

ভাতা পাবেন চব্বিশের আহতরা

মঙ্গলবার ২৪ জুন ২০২৫




ইসরায়েলি হামলায় আইআরজিসি প্রধান ও দুই পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৩ জুন ২০২৫ | হালনাগাদ:সোমবার ২৩ জুন ২০২৫ |

Image

ইরানের রাজধানী তেহরানে চালানো ইসরায়েলি হামলায় ইসলামি বিপ্লবী গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) প্রধান মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি নিহত হয়েছেন। হামলায় দেশটির দুই শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী মোহাম্মদ মাহদি তেহরানচি ও ফারেইদুন আব্বাসিও নিহত হয়েছেন।

শুক্রবার ভোররাতের এই হামলা পরিচালনা করে ইসরায়েলি বাহিনী। তেহরানের একাধিক আবাসিক ভবন এই হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল। এতে বহু বেসামরিক নাগরিকের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে।

মোহাম্মদ মাহদি তেহরানচি ছিলেন ইসলামি আজাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট। ফারেইদুন আব্বাসি ইরানের পরমাণু শক্তি কমিশনের সাবেক প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর আক্রমণে এই দুই বিজ্ঞানীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

হামলার কারণে তেহরানের ইমাম খোমেইনি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সব ফ্লাইট সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, এই হামলার মাত্র দুই দিন পর ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পারমাণবিক আলোচনা শুরু হওয়ার কথা ছিল। ফলে অনেকেই ধারণা করছেন, সেই সময়টিকেই টার্গেট করে এই হামলা চালানো হয়েছে।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো জানায়, এই হামলায় শুধু আইআরজিসি প্রধান বা বিজ্ঞানীরাই নন, আরও গুরুত্বপূর্ণ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিশেষজ্ঞদের প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১২ জুন) থেকেই গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সম্ভাব্য হামলার ব্যাপারে সতর্ক করেছিল। অবশেষে শুক্রবার ভোরে তা বাস্তবে রূপ নেয়।


আরও খবর



মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ নগরবাসী

প্রকাশিত:শুক্রবার ২০ জুন ২০25 | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৪ জুন ২০২৫ |

Image

মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ রাজধানীবাসী। সকাল-বিকাল-সন্ধ্যা-রাত-মধ্যরাত সারাক্ষণই শুধু মশা, মশা আর মশা। শত শত মশা, লাখ কোটি মশা। মশা নিধনের যেন কোনো কর্তৃপক্ষ নেই। একমাত্র কর্তৃপক্ষ সিটি করপোরেশন নির্বিকার। মশা দিব্যি চালিয়ে যাচ্ছে তাদের কামড়ানো আর রক্তচুষার কাজ। 

গুলশানের লেকপাড় এলাকার বাসিন্দা নাহিদ হাসান একটি অ্যাপার্টমেন্টের ছয়তলায় থাকেন। সেখানে মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ। বললেন, মশা দিনের বেলায়ও গুনগুন করে। ছয়তলার ফ্ল্যাটে দরজা-জানালা বন্ধ করলেও মশার যন্ত্রণায় দিনের বেলায় স্প্রে করতে হয়। তার পরও মশার গান থামে না।

পল্লবীর রূপনগর এলাকায় মুদি দোকান করেন মফিজুর রহমান। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত দোকান খোলা থাকে। সমকালকে তিনি বলেন, সকালে দোকান খোলার সঙ্গে সঙ্গে কয়েল জ্বালিয়ে রাখতে হয়। তার পরও নিস্তার নেই। অবস্থাটা এমন, যেন কয়েলের ওপরেই মশা বসে থাকে।

পল্লবীর আরেক বাসিন্দা বিকাশ চন্দ্র রায় বলেন, বিকেল হতেই মশা জেঁকে বসে। সাততলার ওপরেও মশা। মশক কর্মীদের এখন তেমন দেখাই যায় না।

বস্তি এলাকার চিত্র আরও খারাপ। কড়াইল বস্তির রাসেল মিয়া বলেন, শীত শেষ হতেই মশার যন্ত্রণা বেড়েছে। দিনে মশা। যখন সাহ্রি খাইতে উঠি, তখনও মশা। বস্তিতে তো কয়েল সব সময় লাগানো যায় না; কখন কী হয়! তাই ঘরে থাকলে মশারির মধ্যেই থাকতে হয়।

রাজধানীর অধিকাংশ এলাকার চিত্র এমনই। এর মধ্যে শনির আখরা, রায়েরবাগ, যাত্রাবাড়ী, কমলাপুর, মাণ্ডা, মুগদাপাড়া, খিলগাঁও, পুরান ঢাকার কিছু এলাকা, মিরপুর, গাবতলী, মোহাম্মদপুর, শ্যামলী, আদাবর ও রামপুরার পরিস্থিতি বেশি খারাপ।

রাজধানীতে ভয়াবহভাবে মশার উৎপাত বাড়লেও দুই সিটি কিংবা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নির্বিকার। কার্যকর তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ নগরবাসীর। রাজধানীর শনির আখরা বাসিন্দা রোকন মিয়া বলেন, আগে মশার ওষুধ না দিলে কাউন্সিলর অফিসে যাইতাম। এখন মশার ওষুধ দেয় না। কোথায় যাব, সেটাও জানা নাই। 
মিরপুরের বাসিন্দা দিদার একই কথা বললেন,
আগে প্রতি সপ্তাহে মশার ওষুধ ছিটানো হতো। কিন্তু এখন নিয়মিত দেওয়া হচ্ছে না।

৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে পালিয়ে যান সিটি করপোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলররা। পরে অন্তর্বর্তী সরকার মেয়র ও কাউন্সিলরের স্থলাভিষিক্ত করে আমলাদের। তবে ছয় মাসেও শৃঙ্খলা ফেরেনি নগর ভবনে। আগে মেয়র ও কাউন্সিলররা নগরীর মশক নিধন এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম দেখভাল করতেন। এখন প্রশাসক ও আঞ্চলিক কর্মকর্তাদের ঘাড়ে এই মহাকর্মের ভারে এ কার্যক্রম অনেকটাই স্থবির। জনপ্রতিনিধি না থাকায় ওয়ার্ড পর্যায়ে মশক নিধন কার্যক্রমে মাঠে নেই মশক কর্মীরাও। 

এরই মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের এক গবেষণায় দেখা গেছে, গত চার মাসে কিউলেক্স মশার ঘনত্ব বেড়েছে। জানুয়ারিতে প্রতিদিন গড়ে তিন শতাধিক প্রাপ্তবয়স্ক মশা ফাঁদে ধরা পড়েছে, যা অক্টোবর ও নভেম্বরে ছিল দুইশর কম। মশার ঘনত্ব বেশি পাওয়া গেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উত্তরা, দক্ষিণখান ও মিরপুর এলাকায়।

বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এ ধারা অব্যাহত থাকলে বেড়ে চরমে পৌঁছাবে। তারা বলছেন, মশা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার কারণে গত বছর এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গুতে দুই সিটিতে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা ২২ বছরের রেকর্ড ভেঙে দেয়।  মাসের মাঝামাঝি থেকে তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে মশা জন্মানোর হারও বেড়েছে। তাই অতি জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ না নিলে মার্চ মাসেই ভয়াবহ আকার ধারণ করতে শুরু করবে। 

গত জানুয়ারিতে প্রতিদিন গড়ে ৩০০ মশা গবেষণার জন্য রাখা ফাঁদে ধরা পড়ছে। রাজধানীর চার এলাকার পাঁচ স্থানের মধ্যে উত্তরায় মশা সবচেয়ে বেশি।

সেখানে জানুয়ারিতে প্রতিদিন গড়ে ৪৫০ মশা ফাঁদে ধরা পড়েছে। ডিসেম্বরে একই ফাঁদে মশার সংখ্যা ছিল ৩০০। ফেব্রুয়ারিতে এ সংখ্যা আরও বেড়েছে বলে জানিয়েছেন গবেষক। উত্তরার পর সবচেয়ে বেশি দক্ষিণখানে ৪১০টি এবং মিরপুরে ৩৫০টি প্রাপ্তবয়স্ক মশা ধরা পড়ছে। 

কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক কবিরুল বাশার বলেন, মার্চে কিউলেক্স মশার ঘনত্ব অনেক বেশি হবে। এ ছাড়া তাপমাত্রা বাড়লে মশা জন্মানোর হারও বাড়বে। তিনি বলেন, অনেক দিন ধরে বৃষ্টিপাত না থাকায় মশা জন্মানোর স্থান যেমন ড্রেন, ডোবা, নালা-নর্দমায় জৈব উপাদান বেড়ে যায়। এগুলো মশার লার্ভার খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এতে বংশবিস্তার বেড়ে যায়। তাই অতি জরুরি ভিত্তিতে মশা জন্মানোর স্থানগুলো পরিষ্কার করে লার্ভা মারার জন্য কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে।

নগরবাসীর অভিযোগ, আগে সপ্তাহে একবার মশার ওষুধ ছিটালেও এখন এক মাসেও তাদের দেখা যায় না। তবে দুই সিটি করপোরেশন দাবি করছে, তারা প্রতিদিন মশার ওষুধ ছিটাচ্ছে। কিন্তু যে হারে মশার উপদ্রব বাড়ছে, তা নিধনে সিটি করপোরেশনকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

উত্তর সিটির স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, চলতি অর্থবছরে মশা নিধনে প্রায় ১১০ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। এর মধ্যে মশা নিধনে কীটনাশক কিনতে রাখা হয় ৬৫ কোটি টাকা। বাকি অর্থ ফগার, হুইল, স্প্রে মেশিন, পরিবহন, ব্লিচিং পাউডার ও জীবাণুনাশক এবং মশা নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রপাতি কিনতে বরাদ্দ রাখা হয়। এ টাকা দিয়ে ডিএনসিসির ৫৪টি ওয়ার্ডে মশক নিধন কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। 

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ভাষ্য একই রকম। কিন্তু বাস্তবে এর প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না।

নগরীতে পাঁচ শতাধিক খাল-ডোবা রয়েছে। এসব নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। আবার যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ফেলে পরিবেশকে নোংরা করে রাখা হয়। এসব থেকেও জন্ম নেয় নতুন মশা। মিরপুরের রূপনগর খাল, বাইশটেকি, মোহাম্মদপুরের রামচন্দ্রপুর খালসহ রাজধানীর বেশ কয়েকটি খাল ও জলাশয় ঘুরে দেখা যায়, ময়লা-আবর্জনা, প্লাস্টিক, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ফেলে খালগুলো ভরে ফেলা হয়েছে।

রূপনগর খালে পড়েছে আশপাশের এলাকার কয়েকটি ড্রেন। এসব ড্রেনও ময়লা-আবর্জনায় পূর্ণ। তাতে জন্ম নিয়েছে লার্ভা। মেথর প্যাসেজ এলাকা ময়লা-আবর্জনায় ভর্তি। সেখানেও জন্ম নিচ্ছে মশা। মশক কর্মীরা সেখানে লার্ভিসাইডিং করলেও তাদেরই ঘিরে ধরে মশা। আবার এক দিন পরিষ্কার করে গেলে পরদিন একই অবস্থা।

উত্তর সিটি করপোরেশনের একজন মশক কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমরা বাসাবাড়ির আশপাশে ফগিং আর সকালে মশা যেখানে জন্মায়, সেখানে লার্ভিসাইডিং করি। কিন্তু এক ভবন থেকে আরেক ভবনের মাঝখানে যে মেথর প্যাসেজের গলি থাকে, সেখানে প্রবেশ করা যায় না। সেখানে ময়লা ফেলে স্তূপ করে রাখা হয়। তাতে মশার ওষুধ দিলেও কাজ হয় না। আবার খোলা ড্রেনে ওষুধ দিলেও কিন্তু বক্স কালভার্টে দেওয়ার উপায় নেই। সেখানে ড্রেনের পিট খুললে হাজার হাজার মশা বের হয়। সেখানে এত পরিমাণ ময়লা ফেলা হয়, প্রবেশ করাই যায় না।

ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, মশা নিধনে আমরা নিয়মিত ক্রাশ প্রোগ্রাম, লার্ভিসাইড বা কীটনাশক প্রয়োগ করছি। কিন্তু তা তেমন কাজে আসছে না। 

তিনি বলেন, ড্রেন, ডোবা, নর্দমা, বিল-ঝিল-খালে পানির প্রবাহ নেই। এসব স্থানে দীর্ঘদিন মানুষ ময়লা-আবর্জনা ফেলছে। এখানে লার্ভিসাইডিং ও ফগিং কোনো কাজে আসে না। একদিকে খাল-নর্দমা পরিষ্কার করলে আরেক দিকে ভরে যায়। এ ক্ষেত্রে নগরবাসীর সচেতনতা ছাড়া মশক নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।

দক্ষিণ সিটির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ডা. নিশাত পারভীন বলেন, কিউলেক্স মশা আগের চেয়ে বেড়েছে, এটা ঠিক। তবে মশা যাতে কমিয়ে আনা যায়, সে বিষয়ে আমরা কাজ করছি।


আরও খবর