
শুল্কছাড়ের
চাল আমদানি, আমনের ভরা মৌসুম বাজারে চালের চাহিদা বেড়েছে কয়েকগুণ। তাতেও দেশের মানুষের
খাদ্যের প্রধান উপকরণ চালের দামের অস্থিরতা কমেনি। উল্টো ব্যবসায়ী ও মিলার সিন্ডিকেটের
কারসাজিতে চালের বাজারে অস্থিরতা বেড়েই চলেছে। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা
বেড়ে সরু চাল সর্বোচ্চ ৯০-৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এতে মৌসুমেও চাল কিনতে বিড়ম্বনায়
পড়ছেন ভোক্তা।
বাজার ঘুরে
ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সপ্তাহ দুয়েকের ব্যবধানে সরু চালের কেজিপ্রতি
১০ টাকা বেড়েছে। সরু চাল ছাড়াও মধ্যবিত্তের একমাত্র ভরসার মোটা জাতের চালের দামেও লেগেছে
বাড়তি দামের হাওয়া। ব্যবসায়ীদের দাবি, যদিও বিগত বছরগুলোতে এ সময়ে চালের দাম কম ছিল।
কিন্তু বাজারে চালের সংকট না থাকলেও মিলপর্যায়ে কেজিপ্রতি ৫ থেকে ৬ টাকা দাম বাড়িয়েছে
মিলমালিকরা। ফলে পাইকারি ও খুচরা বাজারে এর প্রভাবে চালের বাজারে দামের অস্থিরতা বেড়েছে।
রাজধানীর
বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, চালের দামের ব্যবধান গড়েছে অন্তত ৮ থেকে ১০ টাকা। ১০
থেকে ১৫ দিন আগে প্রতি কেজি সরু চালের দাম ছিল ৭৫ টাকা, যা বর্তমানে ৮২ থেকে ৮৫
টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সরু চালের পর সব থেকে বেশি দামের পরিবর্তন হয়েছে নাজিরশাইল
চালের। দুই সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি নাজিরশাইল ছিল ৭০ থেকে ৭৮ টাকা। তবে গতকাল তা ৭৬
থেকে ৮৬ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। অর্থাৎ প্রতি কেজি নাজিরশাইলের দাম বেড়েছে ৬
থেকে ৮ টাকা।
এর আগে গত বছর নভেম্বরে চাল আমদানির
ওপর ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর রেখে বাকি আমদানি শুল্ক ও নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক প্রত্যাহার
করে নিয়েছে এনবিআর। তবুও আমদানি করা চালের দামে কোনো প্রভাব পড়েনি। আমদানি করা
মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকার ওপর।
এ বিষয়ে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন বলেন, প্রতিযোগিতামূলক বাজার গড়ার দায়িত্ব মূলত প্রতিযোগিতা কমিশনের। কিন্তু তাদের কার্যক্রম দেখে মনে হচ্ছে তারা নিজেরাই বাজার থেকে হারিয়ে গেছে। সরকারের বাজার মনিটরিং সংস্থাগুলোর তদারকি নিয়ে সমালোচনা করে তিনি আরও বলেন, বাজারে একাধিক সংস্থা তদারকি করে। কিন্তু ভোক্তা এ থেকে কোনো সুফল পাচ্ছে না। পণ্যের দাম বাড়লেই কর্মকর্তারা অভিযান পরিচালনা করেন। কিন্তু যে স্তরে কারসাজি হয়েছে, সেই স্তরে মনিটরিং হয় না। ফলে অসাধুরা এ সুযোগে ভোক্তাকে বেশি করে নাজেহাল করে তোলে।