পটুয়াখালী সংবাদদাতাঃ পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) মেধাবী ছাএ দেবাশীষ মন্ডল নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হবার স্বপ্ন দেখেছিলেন। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস পবিপ্রবির তৎকালীন দুর্নীতিবাজ ভিসি ড. মোঃ হারুনর রশীদের নিয়োগ বানিজ্য সিন্ডিকেটের নির্মমতার শিকার হয়ে এই মেধাবী তরুণটি অকালে প্রাণ হারায়। পবিপ্রবির মেধাবী ছাএ দেবাশীষ মন্ডল আত্মহত্যার আজ ৪ বছর পুর্ন হতে চললেও আত্মহত্যায় প্ররোচনাকারীরা ধরাছোয়ার বাইরে। দেবাশীষের পরিবার এবং পবিপ্রবির ছাএ, শিক্ষক, এলাকার সুশীল সমাজসহ অধিকাংশের দাবী এটি আত্নহত্যা নয়, একটি হত্যাকান্ড।
জানা যায়, বর্তমান ভিসি ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত দায়িত্ব নেয়ার পরে বিভিন্ন মহল থেকে এই ঘটনার তদন্তের জোরালো দাবী উঠে এবং বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় পএিকায় ব্যাপকভাবে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এমনকি মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোঃ জাহাঙ্গীর হোসাইন গত ৩০ মে ২০২১ ইং সালে বর্তমান ভিসিসহ ৭ জনকে লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করলেও ভিসি ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত কোন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ না করে অভিযুক্তদের পক্ষ নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন সিনিয়র শিক্ষক জানান "বর্তমান ভিসি স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত বিদায়ী ভিসি ড. হারুনের বিশ্বস্থ অনুসারী হওয়ায় হারুনের পুর্নমেয়াদে ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত রেজিষ্ট্রারের দায়িত্ব পালন করে বিভিন্ন সুবিধা নিয়েছেন। তাই ড. হারুনের অপকর্মে ও দেবাশীষ হত্যার দায় বর্তমান ভিসি কোনভাবেই এড়াতে পারেননা"। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য একটি সুত্র জানায় "বর্তমান ভিসি ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত তৎকালীন রেজিষ্ট্রারের দায়িত্বে থাকার কারনে দেবাশীষের নিয়োগ বোর্ডের সাথে সংশ্লিষ্ট ছিলেন এবং মৌখিক পরীক্ষার বোর্ড শেষে তিনিই দেবাশীষকে বোর্ডের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন। দেবাশীষ ইস্যুতে বর্তমান ভিসি ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত এবং দেবাশীষের পরিবারের সাথে যোগাযোগ রক্ষাকারী কয়েকজন শিক্ষক ফেঁসে যাবার ভয় থেকে বর্তমান প্রশাসন কোনভাবেই এই ঘটনার তদন্ত চাচ্ছেননা"।
অনুসন্ধানে জানাযায়, খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার কাঁঠালিয়া গ্রামের দরিদ্র বাবা পরিমল মন্ডলের ছেলে দেবাশীষ মন্ডল পবিপ্রবির কৃষি অনুষদ থেকে অনার্সে মেধাতালিকায় ৩য় স্থান (৩.৮২ স্কেল ৪.০০ এর মধ্যে) এবং মৃওিকা বিজ্ঞান বিভাগ থেকে মাস্টার্সে মেধা তালিকায় ১ম স্থান অর্জন করে। পবিপ্রবির শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির অপেক্ষায় ক্যাম্পাসে বছর দেড়েক অবস্থান করার কিছুদিন পর কুষ্টিয়াস্থ বেসরকারি রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকুরী করার মাঝেই ২০১৮ ইং সালের এপ্রিলে পবিপ্রবির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি হলে দেবাশীষ মন্ডল মৃওিকা বিজ্ঞান বিভাগে প্রভাষক পদে আবেদন করেন। পরবর্তীতে ঐ বছরের ১২ মে মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে দেবাশীষ মন্ডল অনার্স-মাস্টার্সে সর্বোচ্চ রেজাল্ট নিয়ে মৌখিক পরীক্ষাতেও ভালো করেছিলেন কিন্তুু তৎকালীন দুর্নীতিবাজ ভিসি মোঃ হারুনর রশীদ নিয়োগ বোর্ডের সদস্যদের মতামত উপেক্ষা করে অধিকতর কম যোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থী, অনার্সে মেধাতালিকায় ১৫ তম (সিজিপিএ ৩.৬৬) মোঃ রফিক উদ্দীনকে নিয়োগ প্রদান করেন। মৌখিক পরীক্ষার বোর্ডে সর্বোচ্চ রেজাল্টধারী এবং মেধা তালিকায় ৩য় স্থান প্রাপ্ত দেবাশীষ মন্ডল নিয়োগ বঞ্চিত হওয়ায় সে খুব উদ্বিগ্ন ও মানসিকভাবে ভেঙে পরে কর্মস্থল কুষ্টিয়াতে গিয়ে ১৪ মে আত্মহত্যা করলে তৎকালীন ধুরন্ধর ভিসি ড. হারুন অর রশীদ দেবাশীষ মন্ডলের পরিবার থেকে পবিপ্রবিতে একজনকে চাকুরী দিবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে দেবাশীষের পরিবারকে মামলা মোকদ্দমা থেকে বিরত রেখে তখন পরিস্থিতি সামাল দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে দেবাশীষ মন্ডলের ছোট ভাই আশিষ মন্ডল ল্যাব টেকনিশিয়ান পদে আবেদন করলেও ভিসি হারুন অর রশীদ তার প্রতিশ্রুতি রাখেননি। বরং ভিসির অপকর্মের সহযোগী মৃওিকা বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক শাহীন হোসেন গং সন্ত্রাসী দিয়ে দেবাশীষ মন্ডলের পরিবারকে প্রতিনিয়ত হুমকি প্রদান অব্যাহত রাখতো যাতে করে দেবাশীষ মন্ডলের আত্মহত্যার জন্য ভিসি ও তার সহযোগীরা ভবিষ্যতে নিরাপদ থাকতে পারে। ভিসি হারুন বিদায় নেয়ার ঠিক পুর্বমুহূর্তে ছোটভাই আশিষকে এ্যাডহক ভিওিতে চাকুরী দিবার প্রলোভন দেখিয়ে দেবাশীষ পরিবারের কাছ থেকে একটি অংগীকারনামায় (৩০০ টাকা স্ট্যাম্প) স্বাক্ষর করিয়ে নেন যাতে ভবিষ্যতে হারুন গং এই হত্যাকান্ডের দায় থেকে বাঁচতে পারেন।
অভিযোগ রয়েছে, বিদায়ী ভিসি ড. হারুনর রশীদের মেয়াদকালে একটি সিন্ডিকেট বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগবানিজ্য নিয়ন্ত্রন করতো। এই নিয়োগবানিজ্য সিন্ডিকেটের সদস্য ভিসির সাবেক পিএস মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোঃ শাহীন হোসেন, ভিসির ঘনিষ্ঠজন খ্যাত কৃষিতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নওরোজ জাহান লিপি এবং তার স্বামী কৃষিরসায়ন বিভাগের অধ্যাপক মোঃ মনিরুজ্জামান। অভিযোগ রয়েছে, মোঃ শাহীন হোসেন ও নওরোজ জাহান লিপি জুনিয়র শিক্ষক হয়েও ভিসি হারুনের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হওয়ায় এতটা বেপরোয়া ছিল যে সিনিয়ররা তাদের ভয়ে আতংকে থাকতেন। শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী কেহ তাদের সমালোচনা করলেই তাদের উপর শাস্তির খড়গ নেমে আসতো। এমনকি কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে চাকুরীচ্যুত করা হয়েছে। মোঃ শাহীন হোসেন ও নওরোজ জাহান লিপির বিরুদ্ধে পবিপ্রবির কর্মচারী আব্দুল করীম হত্যারও গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে শাহীন হোসেন ও নওরোজ জাহান লিপির রোশানলে পরে চাকুরী হারিয়ে দিশোহারা কর্মচারী আব্দুল করীম, স্ত্রী সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করার এক পর্যায়ে স্ট্রোক করে ক্যাম্পাসে মারা যান। শুধু তাই নয়, দেবাশীষ ইস্যু নিয়ে বিভিন্ন পএিকায় সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় জনসংযোগ বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অপসারন করা হয়। ২০১৮ ইং সালের এপ্রিলে পবিপ্রবিতে শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলে দেবাশীষ মন্ডল মৃওিকা বিজ্ঞান বিভাগে প্রভাষক পদে দরখাস্ত করে। তৎকালীন ভিসি ড. হারুনর রশীদ পূর্বপরিচিত হওয়ায় তার সাথে দেখা করলে ভিসি দেবাশীষকে জানায় সবার চেয়ে ভালো রেজাল্ট হলেও তাকে নিয়োগ দিতে পারবেননা কারন পটুয়াখালীর আওয়ামীলীগের নেতা এড. শাজাহান মিয়ার নাতনীকে নিয়োগ দেয়ার জন্য চাপ আছে। কিছু সময় চুপ থেকে ভিসি নিজেই দেবাশীষকে জানিয়ে দেয় তাকে নিয়োগ দেয়া সম্ভব হবে টাকা খরচ করতে পারলে এবং দশ (১০) লাখ টাকা জোগাড় করে দেখা করতে বলেছিলেন। দেবাশীষ মন্ডল ভিসির সাথে তার কথোপকথন ওর পরিবার ছাড়াও কয়েকজন শুভাকাংখী সিনিয়র ভাইদের সাথেও শেয়ার করেছিলেন।জানাযায়, আওয়ামীলীগ নেতা শাজাহান মিয়ার নাতনীর প্রচারনা এবং দেবাশীষ মন্ডলকে দশ (১০) লাখ টাকা জোগাড় করতে বলা সবকিছুই ছিল ধুরন্ধর ভিসি ড. হারুনের চতুরতার কৌশল। জানা যায়, ঐ প্রার্থী এড. শাজাহান মিয়ার কোন আত্মীয়তো নয়ই বরং ঐ প্রাথীর আপন চাচা জেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শাহাদাত হোসেন মৃধা। তৎকালীন ভিসি ড. হারুনের নিয়োগ বানিজ্য সিন্ডিকেটের মনোনীত প্রার্থী মোঃ রফিক উদ্দীন থেকে সকলের নজর অন্য দিকে সরিয়ে রাখার জন্য আওয়ামালীগ নেতার নাতনী প্রচারনা চালানো এবং দেবাশীষ মন্ডলকে টাকা জোগাড় করতে বলে ব্যস্ত রেখে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও ছাএলীগের কর্মী হিসেবে তদবীর আনা থেকে বিরত রাখার কৌশল।
অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, পবিপ্রবিতে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয়ার আগেই শিক্ষক মোঃ শাহীন হোসেন ভিসির নিয়োগ বানিজ্য সিন্ডিকেটের পক্ষে চাকুরী প্রত্যাশীদের সাথে ১৫-২৫ লাখ টাকা করে চুক্তি করে ক্লিয়ারেন্স দিলেই কেবল ঐ সব বিভাগেই ভিসি হারুন বিজ্ঞপ্তি করতেন। প্রাথীর সাথে চুক্তি অনুযায়ী অর্ধেক টাকা বিজ্ঞপ্তির আগেই সিন্ডিকেটকে পরিশোধ করতে হতো এবং বাকীটা মৌখিক পরীক্ষার আগে। সবকিছু গোপন রাখার শর্তে শিক্ষক মোঃ শাহীন হোসেন চুক্তিবদ্ধ প্রার্থীদেরকে কোরআন হাতে দিয়ে শপথ করাতেন। চাকুরী প্রার্থীর সাথে শাহীন হোসেনের মাধ্যমে লেনদেন হয়ে ভিসির ঘনিষ্ঠজন নওরোজ জাহান লিপি ও তার স্বামী মনিরুজ্জামান হয়ে ভিসির কাছে চলে যেত। পরবর্তীতে এই টাকা তাদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা হতো।
অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, মৃওিকা বিজ্ঞান বিভাগে বিজ্ঞপ্তি হবার আগেই ভিসি হারুনের নিয়োগ বানিজ্য সিন্ডিকেটের সদস্য মৃওিকা বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক মোঃ শাহীন হোসেনের সাথে মোঃ রফিক উদ্দীনের ১৫ লাখ টাকার চুক্তি হয়েছিল এবং চুক্তি অনুযায়ী মৌখিক পরীক্ষার আগেই শাহীন হোসেনের সাথে মোঃ রফিক উদ্দীনকে লেনদেন সম্পন্ন করতে হয়েছিল। জানাযায়, তৎকালীন মৃওিকা বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোঃ ফজলুল হক ও অন্য সিনিয়র শিক্ষকরা ভালো ও মেধাবী ছাএ হিসেবে দেবাশীষ মন্ডলের নিয়োগ প্রত্যাশা করায় ভিসির নিয়োগ বানিজ্য সিন্ডিকেটের সদস্য, মোঃ শাহীন হোসেন দেবাশীষ মন্ডলকে বিভিন্ন কথা বলে মানসিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতেন যাতে দেবাশীষ মন্ডল পবিপ্রবির চাকুরির চেষ্টা থেকে বিরত থাকে। দেবাশীষের ঘনিষ্ঠ মহল বলেছে মৌখিক পরীক্ষার ২ দিন আগে ভিসির সাথে দেখা করে ১০ লাখ জোগাড় করেছে জানালে ভিসি হারুন তাকে জানায় ১০ লাখ টাকায় হবেনা ১৫ লাখ টাকা লাগবে। কারন পিএম দফতর ম্যানেজ করে তাকে নিতে হবে। এরপর দেবাশীষ তার পরিবারকে যেকোনভাবে আরো ৫ লাখ টাকা জোগাড় করতে বলেন। এরই মধ্যে দেবাশীষ বিভিন্ন সূএে নিশ্চিত হয় যে ভিসির নিয়োগ বানিজ্য সিন্ডিকেটের সদস্য মোঃ শাহীন হোসেন ও নওরোজ জাহান লিপির সাথে প্রার্থী মোঃ রফিক উদ্দীনের ১৫ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে তাই দেবাশীষের সাথে ভিসি যা বলতেছে এগুলো ছলচাতুরী। পরবর্তীতে মৌখিক পরীক্ষা শেষে রাতে ক্যাম্পাসে চাউর হয় মৃওিকা বিজ্ঞান বিভাগে রফিককে নেয়া হয়েছে। এ খবর শুনে ১৩ই মে সকাল সাড়ে ৭ টায় শিক্ষক শাহীন হোসেনের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষক কোয়ার্টারে দেখা করে তার পা ধরে কান্নাকাটি করে ভিসিকে প্রয়োজনে দুই (২) জনকে নেওয়ার অনুরোধ করলে উল্টো শাহীন হোসেন দেবাশীষকে ধমকের সূরে বলে ভালো রেজাল্ট হলেই নিয়োগ দিতে ভিসি বাধ্য নয় এবং রফিকের নিয়োগ দেয়া হয়েছে এ নিউজ কিভাবে জেনেছে তা নিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন। কথাবার্তার একপর্যায়ে শাহীন হোসেন নওরোজ জাহান লিপির স্বামী প্রফেসর মনিজ্জামানকে ফোন করিলে তিনি সেখানে উপস্থিত হন। একপর্যায়ে প্রফেসর মনিরুজ্জামান দেবাশীষকে রফিকের নিয়োগ নিয়ে কথা না বলার পরামর্শ দেনযে ভিসির বিরুদ্ধে কথা বললে এখানে চাকুরীতো হবেইনা বরং অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকুরী পাবার সুযোগটাও বন্ধ হবে। কারণ ভিসি স্যার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি পরিষদের সভাপতি। শাহীন ও মনিরুজ্জামান এসব নিয়ে দেবাশীষকে সাংবাদিক বা কারো সাথে কথা বলতে নিষেধ করেছিল ও দ্রুত ক্যাম্পাস ত্যাগ করিবার জন্য শাসিয়ে দিয়েছিলেন। এতে দেবাশীষ মন্ডল নিশ্চিত হয়েছিল যে পবিপ্রবিতে তার চাকুরী হয়নি। তখন দেবাশীষ মন্ডল মানসিকভাবে খুব ভেঙে পড়েছিল। এসব তার ছোট ভাই আশিষ মন্ডল ও ঘনিষ্ঠ এক সিনিয়র ভাইকে জানিয়েছিল। এসব নিয়ে দেবাশীষ বিমর্ষ হয়ে পবিপ্রবি ক্যাম্পাস ত্যাগ করে ১৪ মে কুষ্টিয়ার ভাড়া বাসায় আনুমানিক দুপুর সোয়া ৩ টায় আত্মহত্যা করেছিলো। এরপরে কুষ্টিয়ার সদর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়ে সব ধামাচাপা পড়ে। অভিযোগ রয়েছে, এটাকে অপমৃত্যু মামলা হিসেবে রেকর্ড করাতেও ভিসি হারুনের হস্তক্ষেপ ছিলো।
অনুসন্ধানে আরও জানাযায়, নিয়োগবাণিজ্য সিন্ডিকেট সদস্য নওরোজ জাহান লিপি ও তার স্বামী মনিরুজ্জামান বরিশাল শহরের বাংলা বাজারে প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে জমি ক্রয় করা ছাড়াও ব্যাংক এফডিআরসহ পার্টনারশিপে বিভিন্ন ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। নওরোজ জাহান লিপির অন্যতম সহযোগী মোঃ শাহিন হোসেন তার ভাই শাহাবুদ্দীনকে (সলিম) ১ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা দিয়ে কসমেটিকসের ব্যবসা করাচ্ছেন যিনি ৩-৪ বছর আগেও একটা কসমেটিকস কোম্পানিতে সেলসম্যান পদে চাকুরী করতেন। এখন শাহাবুদ্দিন (সলিম) ছোট ভাইয়ের অবৈধ টাকা বিনিয়োগ করে নিজেই চায়না থেকে কসমেটিকসের কাঁচামাল আমদানিসহ বৃহৎ আকারে ব্যবসা করে যাচ্ছেন। শাহীন হোসেন ভিসি হারুনকে দিয়ে তার আপন বোন কামরুন্নাহারের চাকুরী ভাগিয়ে নেন।
পবিপ্রবির ছাত্র-শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী, অভিভাবকবৃন্দ ও এলাকাবাসীর দাবী জানিয়েছেন, বাংলাদেশ পুলিশের চৌকস তদন্তকারী সংস্থা পিবিআইকে দিয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মেধাবী ছাএ দেবাশীষ মন্ডল আত্মহত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও আত্মহত্যায় প্ররোচনাকারীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।