Logo
শিরোনাম
নওগাঁর সীমান্তে গুলিতে নিহত যুবকের মৃতদেহ ফেরত দিলো বিএসএফ মোরেলগঞ্জে প্রকাশ্যে ফিল্মি স্টাইলে গৃহিনীকে রাস্তায় ফেলে মারপিট: ইমাম আটক সুনামগঞ্জে বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক সাংসদ নজির হোসেনের দাফন সম্পন্ন উত্তরায় মাভাবিপ্রবি টেক্সটাইল অ্যালামনাই এসোসিয়েশন এর ইফতার মাহফিল নওগাঁয় গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগে স্বামী, শাশুড়ী ও দেবরকে আটক করেছে র‌্যাব নওগাঁয় হত্যার দায়ে যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ধামরাইয়ে অগ্নিকাণ্ডে এক পরিবারের ৪ জন অগ্নিদগ্ধ নড়িয়ায় জমিজমা সংক্রান্ত জের ধরে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ ভেনিস বাংলাদেশ প্রেস ক্লাবের ইফতার মাহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত রামগড়ে বিজিবি'র উদ্যোগে ইফতার ও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ

পবিপ্রবির মেধাবী ছাত্র দেবাশীষ মন্ডল হত্যার ৪ বছরেও হয়নি বিচার কার্যকর

প্রকাশিত:শনিবার ১৪ মে ২০২২ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ |

Image

পটুয়াখালী সংবাদদাতাঃ পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) মেধাবী ছাএ দেবাশীষ মন্ডল নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হবার স্বপ্ন দেখেছিলেন। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস পবিপ্রবির তৎকালীন দুর্নীতিবাজ ভিসি ড. মোঃ হারুনর রশীদের নিয়োগ বানিজ্য সিন্ডিকেটের নির্মমতার শিকার হয়ে এই মেধাবী তরুণটি অকালে প্রাণ হারায়। পবিপ্রবির মেধাবী  ছাএ দেবাশীষ মন্ডল আত্মহত্যার আজ ৪ বছর পুর্ন হতে চললেও আত্মহত্যায় প্ররোচনাকারীরা ধরাছোয়ার বাইরে। দেবাশীষের পরিবার এবং পবিপ্রবির ছাএ, শিক্ষক, এলাকার সুশীল সমাজসহ অধিকাংশের দাবী এটি আত্নহত্যা নয়, একটি হত্যাকান্ড। 

জানা যায়, বর্তমান ভিসি ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত দায়িত্ব নেয়ার পরে বিভিন্ন মহল থেকে এই ঘটনার তদন্তের  জোরালো দাবী উঠে এবং বিভিন্ন  জাতীয় ও স্থানীয় পএিকায় ব্যাপকভাবে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এমনকি মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার  মোঃ জাহাঙ্গীর হোসাইন গত ৩০ মে ২০২১ ইং সালে বর্তমান ভিসিসহ ৭ জনকে  লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করলেও ভিসি ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত কোন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ না করে  অভিযুক্তদের পক্ষ নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন সিনিয়র শিক্ষক জানান "বর্তমান ভিসি স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত বিদায়ী ভিসি ড. হারুনের বিশ্বস্থ অনুসারী হওয়ায় হারুনের পুর্নমেয়াদে ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত রেজিষ্ট্রারের দায়িত্ব পালন করে বিভিন্ন সুবিধা নিয়েছেন। তাই ড. হারুনের অপকর্মে ও দেবাশীষ হত্যার দায় বর্তমান ভিসি কোনভাবেই এড়াতে পারেননা"। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য একটি সুত্র জানায় "বর্তমান ভিসি ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত তৎকালীন রেজিষ্ট্রারের দায়িত্বে থাকার কারনে দেবাশীষের নিয়োগ বোর্ডের সাথে সংশ্লিষ্ট  ছিলেন এবং মৌখিক পরীক্ষার বোর্ড শেষে তিনিই  দেবাশীষকে বোর্ডের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন। দেবাশীষ ইস্যুতে বর্তমান ভিসি ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত এবং দেবাশীষের পরিবারের সাথে যোগাযোগ রক্ষাকারী কয়েকজন   শিক্ষক  ফেঁসে যাবার ভয় থেকে বর্তমান প্রশাসন কোনভাবেই এই ঘটনার তদন্ত  চাচ্ছেননা"।

অনুসন্ধানে জানাযায়, খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার কাঁঠালিয়া গ্রামের দরিদ্র বাবা পরিমল মন্ডলের ছেলে দেবাশীষ মন্ডল পবিপ্রবির কৃষি অনুষদ থেকে অনার্সে মেধাতালিকায় ৩য় স্থান (৩.৮২ স্কেল ৪.০০ এর মধ্যে) এবং মৃওিকা বিজ্ঞান  বিভাগ থেকে মাস্টার্সে মেধা তালিকায় ১ম স্থান অর্জন করে।  পবিপ্রবির শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির অপেক্ষায় ক্যাম্পাসে বছর দেড়েক অবস্থান করার কিছুদিন পর কুষ্টিয়াস্থ বেসরকারি রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকুরী করার মাঝেই ২০১৮ ইং সালের এপ্রিলে পবিপ্রবির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি হলে দেবাশীষ মন্ডল মৃওিকা বিজ্ঞান বিভাগে প্রভাষক পদে আবেদন করেন। পরবর্তীতে ঐ বছরের ১২ মে মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে দেবাশীষ মন্ডল অনার্স-মাস্টার্সে সর্বোচ্চ রেজাল্ট নিয়ে মৌখিক পরীক্ষাতেও ভালো করেছিলেন কিন্তুু তৎকালীন  দুর্নীতিবাজ ভিসি মোঃ হারুনর রশীদ নিয়োগ বোর্ডের সদস্যদের মতামত উপেক্ষা করে অধিকতর কম যোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থী, অনার্সে মেধাতালিকায় ১৫ তম (সিজিপিএ ৩.৬৬)  মোঃ রফিক উদ্দীনকে নিয়োগ প্রদান করেন।  মৌখিক পরীক্ষার বোর্ডে সর্বোচ্চ রেজাল্টধারী এবং মেধা তালিকায় ৩য় স্থান প্রাপ্ত  দেবাশীষ মন্ডল নিয়োগ বঞ্চিত হওয়ায় সে খুব উদ্বিগ্ন ও মানসিকভাবে ভেঙে পরে কর্মস্থল কুষ্টিয়াতে গিয়ে ১৪ মে আত্মহত্যা করলে তৎকালীন ধুরন্ধর ভিসি ড. হারুন অর রশীদ দেবাশীষ মন্ডলের পরিবার থেকে পবিপ্রবিতে একজনকে চাকুরী দিবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে দেবাশীষের পরিবারকে মামলা মোকদ্দমা থেকে বিরত রেখে তখন পরিস্থিতি সামাল দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে দেবাশীষ মন্ডলের ছোট ভাই আশিষ মন্ডল ল্যাব টেকনিশিয়ান পদে আবেদন করলেও  ভিসি হারুন অর রশীদ তার প্রতিশ্রুতি রাখেননি। বরং ভিসির অপকর্মের সহযোগী মৃওিকা বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক শাহীন হোসেন গং সন্ত্রাসী দিয়ে দেবাশীষ মন্ডলের পরিবারকে প্রতিনিয়ত হুমকি প্রদান অব্যাহত রাখতো যাতে করে দেবাশীষ মন্ডলের আত্মহত্যার জন্য  ভিসি ও তার সহযোগীরা ভবিষ্যতে নিরাপদ থাকতে পারে। ভিসি হারুন বিদায় নেয়ার ঠিক পুর্বমুহূর্তে ছোটভাই আশিষকে এ্যাডহক ভিওিতে চাকুরী দিবার প্রলোভন দেখিয়ে দেবাশীষ পরিবারের কাছ থেকে একটি অংগীকারনামায় (৩০০ টাকা স্ট্যাম্প)  স্বাক্ষর করিয়ে নেন যাতে ভবিষ্যতে হারুন গং এই হত্যাকান্ডের দায় থেকে বাঁচতে পারেন।

অভিযোগ রয়েছে, বিদায়ী ভিসি ড. হারুনর রশীদের মেয়াদকালে  একটি সিন্ডিকেট বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগবানিজ্য নিয়ন্ত্রন করতো। এই নিয়োগবানিজ্য  সিন্ডিকেটের সদস্য ভিসির সাবেক পিএস মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোঃ শাহীন হোসেন, ভিসির ঘনিষ্ঠজন খ্যাত কৃষিতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নওরোজ জাহান লিপি এবং তার স্বামী কৃষিরসায়ন বিভাগের অধ্যাপক মোঃ মনিরুজ্জামান। অভিযোগ রয়েছে, মোঃ শাহীন হোসেন ও নওরোজ জাহান লিপি জুনিয়র শিক্ষক হয়েও ভিসি হারুনের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হওয়ায় এতটা বেপরোয়া ছিল যে সিনিয়ররা তাদের ভয়ে আতংকে থাকতেন। শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী কেহ তাদের সমালোচনা করলেই তাদের উপর শাস্তির খড়গ নেমে আসতো।  এমনকি কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে  চাকুরীচ্যুত করা হয়েছে। মোঃ শাহীন হোসেন ও নওরোজ জাহান লিপির বিরুদ্ধে পবিপ্রবির কর্মচারী আব্দুল করীম হত্যারও গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।  অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে শাহীন হোসেন ও নওরোজ জাহান লিপির রোশানলে পরে চাকুরী হারিয়ে দিশোহারা কর্মচারী আব্দুল করীম, স্ত্রী সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করার এক পর্যায়ে স্ট্রোক করে ক্যাম্পাসে মারা যান।  শুধু তাই নয়, দেবাশীষ ইস্যু নিয়ে বিভিন্ন পএিকায় সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় জনসংযোগ বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অপসারন করা হয়। ২০১৮ ইং সালের এপ্রিলে পবিপ্রবিতে শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলে  দেবাশীষ মন্ডল মৃওিকা বিজ্ঞান  বিভাগে প্রভাষক পদে দরখাস্ত করে। তৎকালীন ভিসি ড. হারুনর রশীদ পূর্বপরিচিত হওয়ায় তার সাথে দেখা করলে ভিসি দেবাশীষকে জানায় সবার চেয়ে ভালো রেজাল্ট হলেও তাকে নিয়োগ দিতে পারবেননা কারন পটুয়াখালীর আওয়ামীলীগের নেতা এড. শাজাহান মিয়ার নাতনীকে নিয়োগ দেয়ার জন্য চাপ আছে। কিছু সময় চুপ থেকে ভিসি নিজেই দেবাশীষকে জানিয়ে দেয় তাকে নিয়োগ দেয়া সম্ভব হবে টাকা খরচ করতে পারলে এবং দশ (১০) লাখ টাকা জোগাড় করে দেখা করতে বলেছিলেন। দেবাশীষ মন্ডল ভিসির সাথে তার কথোপকথন ওর পরিবার ছাড়াও কয়েকজন শুভাকাংখী সিনিয়র ভাইদের সাথেও শেয়ার করেছিলেন।জানাযায়, আওয়ামীলীগ নেতা শাজাহান মিয়ার নাতনীর প্রচারনা এবং দেবাশীষ মন্ডলকে দশ (১০) লাখ টাকা জোগাড়  করতে বলা সবকিছুই ছিল ধুরন্ধর ভিসি ড. হারুনের চতুরতার কৌশল। জানা যায়, ঐ প্রার্থী এড. শাজাহান মিয়ার কোন আত্মীয়তো নয়ই  বরং ঐ প্রাথীর আপন চাচা জেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শাহাদাত হোসেন মৃধা। তৎকালীন ভিসি ড. হারুনের নিয়োগ বানিজ্য সিন্ডিকেটের মনোনীত প্রার্থী মোঃ রফিক উদ্দীন থেকে সকলের নজর অন্য দিকে সরিয়ে রাখার জন্য আওয়ামালীগ নেতার নাতনী প্রচারনা চালানো এবং দেবাশীষ মন্ডলকে টাকা জোগাড় করতে বলে ব্যস্ত রেখে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও ছাএলীগের কর্মী হিসেবে তদবীর আনা থেকে  বিরত রাখার কৌশল।

অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, পবিপ্রবিতে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয়ার আগেই  শিক্ষক মোঃ শাহীন হোসেন ভিসির নিয়োগ বানিজ্য সিন্ডিকেটের পক্ষে চাকুরী প্রত্যাশীদের সাথে ১৫-২৫ লাখ টাকা করে চুক্তি করে ক্লিয়ারেন্স দিলেই কেবল ঐ সব বিভাগেই ভিসি হারুন বিজ্ঞপ্তি করতেন। প্রাথীর সাথে চুক্তি অনুযায়ী অর্ধেক টাকা বিজ্ঞপ্তির আগেই সিন্ডিকেটকে পরিশোধ করতে হতো এবং বাকীটা মৌখিক পরীক্ষার আগে। সবকিছু গোপন রাখার শর্তে শিক্ষক মোঃ শাহীন হোসেন চুক্তিবদ্ধ প্রার্থীদেরকে কোরআন হাতে দিয়ে শপথ করাতেন। চাকুরী প্রার্থীর সাথে শাহীন হোসেনের মাধ্যমে লেনদেন হয়ে ভিসির ঘনিষ্ঠজন নওরোজ জাহান লিপি ও তার স্বামী মনিরুজ্জামান হয়ে ভিসির কাছে চলে যেত। পরবর্তীতে এই টাকা তাদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা হতো। 

অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, মৃওিকা বিজ্ঞান বিভাগে বিজ্ঞপ্তি হবার আগেই ভিসি  হারুনের নিয়োগ বানিজ্য সিন্ডিকেটের সদস্য মৃওিকা বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক মোঃ শাহীন হোসেনের সাথে মোঃ রফিক উদ্দীনের ১৫ লাখ টাকার চুক্তি হয়েছিল এবং চুক্তি অনুযায়ী মৌখিক পরীক্ষার আগেই শাহীন হোসেনের সাথে মোঃ রফিক উদ্দীনকে লেনদেন সম্পন্ন করতে হয়েছিল। জানাযায়, তৎকালীন মৃওিকা বিজ্ঞান  বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক  মোঃ ফজলুল হক ও অন্য সিনিয়র শিক্ষকরা ভালো ও মেধাবী ছাএ হিসেবে দেবাশীষ মন্ডলের নিয়োগ প্রত্যাশা করায় ভিসির নিয়োগ বানিজ্য সিন্ডিকেটের সদস্য,  মোঃ শাহীন হোসেন দেবাশীষ মন্ডলকে বিভিন্ন কথা বলে মানসিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতেন যাতে দেবাশীষ মন্ডল পবিপ্রবির চাকুরির চেষ্টা থেকে বিরত থাকে। দেবাশীষের ঘনিষ্ঠ মহল বলেছে মৌখিক পরীক্ষার ২ দিন আগে ভিসির সাথে দেখা করে ১০ লাখ জোগাড় করেছে জানালে ভিসি হারুন তাকে জানায় ১০ লাখ টাকায় হবেনা ১৫ লাখ টাকা লাগবে। কারন পিএম দফতর ম্যানেজ করে তাকে নিতে হবে। এরপর দেবাশীষ তার পরিবারকে যেকোনভাবে আরো ৫ লাখ টাকা জোগাড় করতে বলেন। এরই মধ্যে দেবাশীষ বিভিন্ন সূএে নিশ্চিত হয় যে ভিসির নিয়োগ বানিজ্য সিন্ডিকেটের সদস্য মোঃ শাহীন হোসেন ও নওরোজ জাহান লিপির সাথে প্রার্থী মোঃ রফিক উদ্দীনের ১৫ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে তাই দেবাশীষের সাথে ভিসি যা বলতেছে এগুলো ছলচাতুরী।  পরবর্তীতে মৌখিক পরীক্ষা শেষে  রাতে ক্যাম্পাসে চাউর হয় মৃওিকা বিজ্ঞান বিভাগে রফিককে নেয়া হয়েছে। এ খবর শুনে ১৩ই মে সকাল  সাড়ে ৭ টায় শিক্ষক শাহীন হোসেনের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষক কোয়ার্টারে  দেখা করে তার পা ধরে কান্নাকাটি করে ভিসিকে প্রয়োজনে দুই (২) জনকে নেওয়ার অনুরোধ করলে উল্টো শাহীন হোসেন দেবাশীষকে ধমকের সূরে বলে ভালো রেজাল্ট হলেই নিয়োগ দিতে ভিসি বাধ্য নয় এবং রফিকের নিয়োগ দেয়া হয়েছে এ নিউজ কিভাবে জেনেছে তা নিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন।  কথাবার্তার একপর্যায়ে শাহীন হোসেন নওরোজ জাহান লিপির স্বামী প্রফেসর মনিজ্জামানকে ফোন করিলে তিনি সেখানে উপস্থিত হন। একপর্যায়ে প্রফেসর মনিরুজ্জামান দেবাশীষকে রফিকের নিয়োগ নিয়ে কথা না বলার পরামর্শ দেনযে ভিসির বিরুদ্ধে কথা বললে এখানে চাকুরীতো হবেইনা বরং অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকুরী পাবার সুযোগটাও বন্ধ হবে। কারণ ভিসি স্যার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি পরিষদের সভাপতি। শাহীন ও মনিরুজ্জামান এসব নিয়ে দেবাশীষকে সাংবাদিক বা কারো সাথে কথা বলতে নিষেধ করেছিল ও দ্রুত ক্যাম্পাস ত্যাগ করিবার জন্য শাসিয়ে দিয়েছিলেন। এতে দেবাশীষ মন্ডল নিশ্চিত  হয়েছিল যে পবিপ্রবিতে তার চাকুরী হয়নি। তখন দেবাশীষ মন্ডল মানসিকভাবে খুব ভেঙে পড়েছিল।  এসব তার ছোট ভাই আশিষ মন্ডল ও ঘনিষ্ঠ এক সিনিয়র ভাইকে জানিয়েছিল। এসব নিয়ে দেবাশীষ বিমর্ষ হয়ে পবিপ্রবি ক্যাম্পাস ত্যাগ করে ১৪ মে কুষ্টিয়ার ভাড়া বাসায় আনুমানিক দুপুর সোয়া ৩ টায় আত্মহত্যা করেছিলো। এরপরে কুষ্টিয়ার সদর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়ে সব ধামাচাপা পড়ে। অভিযোগ রয়েছে, এটাকে অপমৃত্যু মামলা হিসেবে রেকর্ড করাতেও ভিসি হারুনের  হস্তক্ষেপ ছিলো। 

অনুসন্ধানে আরও জানাযায়, নিয়োগবাণিজ্য সিন্ডিকেট সদস্য নওরোজ জাহান লিপি ও তার স্বামী মনিরুজ্জামান বরিশাল শহরের বাংলা বাজারে প্রায় তিন কোটি  টাকা ব্যয়ে জমি ক্রয় করা ছাড়াও ব্যাংক এফডিআরসহ পার্টনারশিপে বিভিন্ন ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। নওরোজ জাহান লিপির অন্যতম সহযোগী মোঃ শাহিন হোসেন তার ভাই শাহাবুদ্দীনকে (সলিম) ১ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা দিয়ে  কসমেটিকসের ব্যবসা করাচ্ছেন যিনি ৩-৪ বছর আগেও একটা কসমেটিকস কোম্পানিতে সেলসম্যান পদে চাকুরী করতেন। এখন শাহাবুদ্দিন (সলিম) ছোট ভাইয়ের অবৈধ টাকা বিনিয়োগ করে নিজেই চায়না থেকে কসমেটিকসের কাঁচামাল আমদানিসহ বৃহৎ আকারে ব্যবসা করে যাচ্ছেন। শাহীন হোসেন ভিসি হারুনকে দিয়ে তার আপন বোন কামরুন্নাহারের চাকুরী ভাগিয়ে নেন।

পবিপ্রবির ছাত্র-শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী, অভিভাবকবৃন্দ ও এলাকাবাসীর দাবী জানিয়েছেন,  বাংলাদেশ পুলিশের চৌকস তদন্তকারী সংস্থা পিবিআইকে দিয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মেধাবী ছাএ দেবাশীষ মন্ডল আত্মহত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও আত্মহত্যায় প্ররোচনাকারীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক। 


আরও খবর



বিপজ্জনক অ্যাপ সরিয়ে নিলো গুগল

প্রকাশিত:শনিবার ০২ মার্চ 2০২4 | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ |

Image

গুগলে আসল অ্যাপের রূপে ঘাপটি মেরে থাকে অনেক নকল ও বিপজ্জনক অ্যাপ। যা ব্যবহারকারীদের ফোনের তথ্য চুরি করে। এসব তথ্য ডার্ক ওয়েবে বিক্রি করে আবার কখনো সরাসরি ব্যবহারকারীকে ব্ল্যাকমেইল করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। এবার আরও ১০ অ্যাপ প্লে স্টোর থেকে সরিয়ে নিলো গুগল।

গাইডলাইন অমান্য করেছে। এমন অভিযোগেই জনপ্রিয় ১০টি অ্যাপকে প্লে স্টোর থেকে সরিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে গুগল।গুগলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ১০টি অ্যাপের বিরুদ্ধে নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগ তোলে গুগল। প্লে স্টোরের পরিষেবার জন্য এই ডেভেলপাররা গুগলকে কোনোরকম অর্থ দেয়নি। বকেয়া মেটানোর জন্য তাদের অতিরিক্ত সময়ও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেও পর কোনো সাড়া দেয়নি অ্যাপগুলো। আর সেকারণেই এবার নাকি চরম সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন সংস্থা।

গুগল একটি পোস্ট করে জানিয়েছে, বর্তমানে গুগল প্লে স্টোরের সঙ্গে যুক্ত দুই লাখেরও বেশি ভারতীয় ডেভেলপার। তারা প্রত্যেকেই আমাদের পলিসি মেনে চলে। আমরা যে একটি নিরাপদ প্ল্যাটফর্ম, সেই সত্যতা বজায় রাখতেই এই পলিসি মেনে চলতে বলা হয়। কিন্তু অতিরিক্ত সময় দেওয়ার পরও ১০টি কোম্পানি প্লে স্টোরকে কোনো বকেয়া অর্থ দেয়নি। যদিও অন্য অ্যাপ স্টোরের পেমেন্ট পলিসি মেনেই কাজ করেছে তারা।

এরপরই গুগল জানায়, এই ডেভেলেপারদের তিন বছরেরও বেশি সময় দেওয়া হয়েছে যাতে তারা গাইডলাইন মেনে চলে। তা সত্ত্বেও নিয়ম মানেনি তারা। সেই কারণেই এধরনের সিদ্ধান্তের পথে এগোতে হচ্ছে।


আরও খবর



তিতাসের অভিযানে গজারিয়া উপজেলার সকল অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন

প্রকাশিত:শনিবার ১৬ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৬ মার্চ ২০২৪ |

Image

শাহাদাত হোসেন সায়মন :অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় অভিযান চালাচ্ছে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ। গত কয়েক মাসের অভিযানে গজারিয়া উপজেলার ১১ হাজার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে বলে তিতাস কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে।

শনিবার (১৬ মার্চ) সকাল ১১টা থেকে গজারিয়া উপজেলার বাউশিয়া পুরাতন ফেরি ঘাট এলাকা থেকে অভিযান শুরু করে তিতাস। অভিযানের শুরুতে কাজী ফার্মস লিমিটেড সংলগ্ন অবৈধ একটি ঢালাই লোহা কারখানার গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। তারপর পুরান ব্যবসা এলাকায় এবং ভবেরচর বাজারে,   চরপাথালীয়া অভিযান চালায় তিতাস কর্তৃপক্ষ।

তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, বৈধ সংযোগের তুলনায় অবৈধ সংযোগ বেশি হওয়ায় ওই এলাকাগুলোতে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রেখেছে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ।

অভিযানের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার এন.এম. আবদুল্লাহ-আল-মামুন।

অভিযানে উপস্থিত ছিলেন তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. হারুনুর রশীদ মোল্লাহ্, তিতাস গ্যাসের সোনারগা আঞ্চলিক বিপণন বিভাগের  উপ-মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী সরুজ আলম,মেঘনা আঞ্চলিক বিপণন অফিসের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান,সোনারগাঁ আঞ্চলিক বিপণন বিভাগের ব্যবস্থাপক (মিটার এন্ড ভিজিল্যান্স) আতিকুল ইসলাম।

অভিযানে উপজেলার গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের নতুনচর চাষি, বলুরচর, এলাকয় বাউশিয়া ইউনিয়নের পুরান বাউশিয়া, ভবেরচর ইউনিয়নের কলেজ রোড,  ভবেরচর বাজার এলাকায়  ১১কিলোমিটার এলাকা জুরে ১ হাজার ৫'শ আবাসিক সংযোগ,২টি ঢালাই কারখানা, এবং একাধিক চা স্টলের গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন তিতাস গ্যাস  মেঘনা অঞ্চলিক বিপনণ অফিসের ব্যাবস্থাপক প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান পলাশ।


আরও খবর



অপহরণের ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই কিশোরী উদ্ধার সহ অভিযুক্ত যুবক আটক

প্রকাশিত:শনিবার ০২ মার্চ 2০২4 | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ |

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টার :

যুবক কর্তৃক ১৪ বছর বয়সি এক কিশোরী কে অপহরণের মাত্র ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই ভিকটিম কিশোরীকে উদ্ধার সহ অভিযুক্ত যুবক কে আটক করেছে র‌্যাব-৫, সিপিসি-৩, জয়পুরহাট কাম্পের চৌকস অভিযানিক দল। সত্যতা নিশ্চিত করে র‌্যাব-৫, জয়পুরহাট ক্যাম্প থেকে প্রতিবেদক কে জানানো হয়,

গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে, র‌্যাব-৫, সিপিসি-৩, জয়পুরহাট এর চৌকস অপারেশনাল দল শুক্রবার পূর্বরাতে অভিযান চালিয়ে 

ভিকটিম কিশোরী (১৪) কে উদ্ধার সহ অপহরণকারী মানিক হোসেন (২০) নামে যুবক কে আটক করা হয়। আটককৃত মানিক হোসেন হলেন, জয়পুরহাট জেলা সদরের খাসপাহুনন্দা এলাকার মামুনুর রশিদ এর ছেলে।

র‌্যাব আরো জানায়,

জয়পুরহাট জেলা সদরের ভিকটিম (১৪) বুধবার বিকেলে জয়পুরহাট সদর থানাধীন চকবরকত ইউনিয়ন এর খাস পাহুনন্দা এলাকা থেকে নিখোঁজ হয়। নিখোঁজ হওয়ার পর অনেক খোঁজা-খুজি করেও তাকে না পেয়ে  তার বাবা রবিউল ইসলাম থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। সাধারণ ডায়েরী করার পর থেকেই র‌্যাব-৫, সিপিসি-৩ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল অপহরনকারী মানিক কে গ্রেফতারের জন্য বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে অবশেষে মাত্র ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই শুক্রবার পূর্বরাতে জয়পুরহাট জেলা সদর থানাধীন কাশিয়াবাড়ী এলাকা হতে ভিকটিম কিশোরী (১৪) কে উদ্ধার সহ অভিযুক্ত অপহরণকারী মানিক কে আটক করতে সক্ষম হয়।

পরে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আটককৃত যুবক কে জয়পুরহাট সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও নিশ্চিত করেন র‌্যাব।


আরও খবর



মাধবদীতে মিষ্টির কারিগর খুন মোবাইলের সূত্র ধরে হত্যাকারী গ্রেপ্তার

প্রকাশিত:রবিবার ১০ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ |

Image

নরসিংদী প্রতিনিধি : নরসিংদীর মাধবদীতে নিজের বসতঘরে নির্মল দেবনাথ (৪৫) নামে এক মিষ্টির কারিগর খুনের ঘটনার প্রায় ৪ মাস পর রহস্য উদঘাটন করেছে নরসিংদীর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। খুনের সময় নির্মল দেবনাথের খোয়া যাওয়া বাটন মোবাইলটি চারজনের হাতবদল হয়ে ঠাকুরগাঁওয়ে গিয়ে সচল হয়। এক এক করে সর্বশেষ ব্যক্তির কাছে পৌঁছাতেই বেরিয়ে আসে এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য। আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে পিবিআই সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন পিবিআইয়ের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. এনায়েত হোসেন মান্নান।

নিহত নির্মল দেবনাথ মাধবদী পৌর শহরের জলখাবার মিষ্টি দোকানের কারিগর ও কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের সরারচর কোতালিয়া এলাকার রঞ্জিত দেবনাথের ছেলে। তিনি দক্ষিণ বিরামপুরে নিজ মালিকানাধীন একটি একতলা বাড়িতে স্ত্রী সন্তান নিয়ে বসবাস করতেন।

অতিরিক্ত ডিআইজি মো. এনায়েত হোসেন মান্নান জানান, গত ১৪ নভেম্বর মঙ্গলবার ভাই ফোটা উপলক্ষে সন্তানদের নিয়ে শিবপুরের শাষপুর এলাকায় বাবার বাড়িতে বেড়াতে যান নির্মল দেবনাথ এর স্ত্রী মনি দেবনাথ। ঐ রাতে তারা বাড়ি না ফেরায় নির্মল দেবনাথ নিজ বাড়িতে একাই ছিলেন। পরীক্ষা থাকায় তাঁর ছেলে স্কুলছাত্র অর্থ দেবনাথ পরদিন বুধবার সকাল সাড়ে ৯ টায় বাড়ি ফিরে আসে। বাড়ি ফিরে সে ঘরের দরজা খোলা অবস্থায় দেখতে পায় এবং খাটে পিতা নির্মল দেবনাথের গলাকাটা রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে। এসময় ঘরের বিভিন্ন জিনিসপত্র এলোমেলো অবস্থায় পাওয়া যায়।

কে বা কারা নির্মল দেবনাথকে খুন করে তার ব্যবহৃত সিম্ফোনি বাটন মোবাইলটি নিয়ে যায়। এঘটনায় ভুক্তভোগীর ছেলে দুর্জয় দেবনাথ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে মাধবদী থানায় মামলা করেন। পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে গত ৩১ ডিসেম্বর মামলাটি পিবিআইতে হস্তান্তর করা হয়।

এনায়েত হোসেন মান্নান বলেন, ‘মামলাটির তদন্তে নেমে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ভুক্তভোগী নির্মল দেবনাথের মোবাইল ফোন উদ্ধারের চেষ্টা শুরু করা হয়। একপর্যায়ে জানা যায় মোবাইলটি ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর থানা এলাকায় সচল রয়েছে। গত ১ মার্চ দুপুরে ঠাকুরগাঁও থেকে লাইলী খাতুন নামে একজনকে ওই মোবাইলসহ আটক করা হয়।

তিনি আরও বলেন, ‘মোবাইলের বিষয়ে লাইলী জানায় মাধবদী এলাকায় চাকরি করার সময় শাকিল নামের এক ছেলের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। শাকিল তাঁকে মোবাইলটি দিয়েছিল। পরে শাকিলকে নরসিংদী থেকে আটক করা হলে সে জানায়, রবিন নামে একজনের কাছ থেকে ২৫০ টাকায় মোবাইলটি কিনেছিল সে। একপর্যায়ে রবিনকে আটক করলে সে জানায়, প্রায় তিন মাস আগে মোবাইলটি তার ফুফাতো ভাই মাসুম বিল্লা তাকে বিক্রির জন্য দেয়। পরে পিবিআই নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও নরসিংদীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালায়। গত ৬ মার্চ মাধবদী থেকে মাসুম বিল্লাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার মাসুম বিল্লা জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি স্বীকার করে।’

মাসুম বিল্লার দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ভিত্তিতে পিবিআইয়ের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. এনায়েত হোসেন বলেন, ‘গত ১৪ নভেম্বর রাত তিনটার দিকে চুরির উদ্দেশ্যে বাড়ির ছাদে উঠে গেট দিয়ে নির্মল দেবনাথের বাড়িতে প্রবেশ করে। এসময় ঘুমন্ত নির্মলের মোবাইল ও মানিব্যাগটি নিয়ে নেয় সে। একপর্যায়ে ঘুম ভেঙে গেলে নির্মল বটি নিয়ে চোরকে ধাওয়া করে। ধারালো বটি হাতে মাসুম বিল্লার দিকে এগিয়ে গেলে, সে তার হাত ধরে ফেলে। এরপর তাদের মধ্যে প্রায় ২০ মিনিট ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে মাসুম বিল্লা নির্মলের হাতে থাকা বটি কেড়ে নেয় এবং এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়।


আরও খবর



রমজানে যুদ্ধবিরতি হলো না গাজায়

প্রকাশিত:সোমবার ১১ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ |

Image

গতকাল রোববার চাঁদ দেখা যাওয়ার পর সোমবার থেকে রোজা শুরু হয়েছে ফিলিস্তিনসহ গোটা মধ্যপ্রাচ্যে; কিন্তু রমজানের চাঁদ রাতেও ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় বোমাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছিল ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।

গত অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে এখন অবধি পেরিয়েছে ৬ মাস। এ ছয় মাসে গাজায় ব্যাপক বোমা বর্ষণের পাশাপাশি ত্রাণ ও মানবিক সহায়তা পণ্যের সরবরাহেও বাধা দিচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, বিশেষ করে খাদ্য ও চিকিৎসা পণ্যের অভাবে মৃত্যুর মিছিল শুরু হয়েছে গাজায়।

গাজার ভৌগলিক আয়তন ৩৬৫ বর্গকিলোমিটার। এ উপত্যকার উত্তর ও পশ্চিমে ইসরায়েল সীমান্ত, দক্ষিণে মিসর সীমান্ত এবং পূর্বদিকে ভূমধ্যসাগর অবস্থিত। ২০০৫ সালে হামাস ক্ষমতা দখলের পর থেকে উপত্যকার উত্তর ও পশ্চিম সীমান্ত সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ইসরায়েলের হাতে। এতদিন পর্যন্ত উপত্যকায় খাদ্য-ত্রাণ ও মানবিক সহায়তার সরবরাহ দক্ষিণে মিসরীয় সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করতো; কিন্তু এখন সেই সীমান্তপথটিও কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে ইসরায়েলি বাহিনী।

ওপেন আর্মস নামের স্পেনভিত্তিক একটি দাতব্য সংস্থা ভূমধ্যসাগর পথে সম্প্রতি ২০০ টন খাদ্য ও ওষুধবাহী একটি জাহাজ গাজা উপত্যকার উদ্দেশে পাঠিয়েছে। গতকাল এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানিয়েছে, ত্রাণবাহী জাহাজটি বর্তমানে ভূমধ্যসাগরীয় দেশ সাইপ্রাসের দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দরশহর লারাঙ্কায় রয়েছে, সোমবারের মধ্যে সেটি গাজার উপকূলের কাছাকাছি থাকবে। গাজার উপকূলে পৌঁছানোর পর যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক দাতব্য সংস্থা ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনের কর্মীদের তত্ত্বাবধানে এসব ত্রাণপণ্য খালাস করা হবে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে ওপেন আর্মস।

খাদ্যের অভাবে মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়া গাজা উপত্যকায় সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র, জর্ডান, কানাডা ও অন্যান্য দেশ বিমান থেকে ত্রাণের বস্তা ফেলা শুরু করেছিল, কিন্তু জাতিসংঘের ত্রাণ ও মানবিক সহায়তা বিভাগ জানিয়েছে, উপত্যকায় বসবাসকারী প্রায় ২৪ লাখ ফিলিস্তিনি জনগণের সবার কাছে ত্রাণ পৌছানোর জন্য বিমানের চেয়ে সড়ক পথ বেশি উপযোগী।

গাজায় সাম্প্রতিক যুদ্ধের শুরু থেকে উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস এবং ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার মধ্যে মধ্যস্থতার ভূমিকায় রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিসর। চলতি মার্চের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ঘোষণা দিয়েছিলেন যে আসন্ন রমজানে ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি হতে যাচ্ছে গাজায়। এই বিরতির সময় উপত্যকায় ত্রাণ সরবরাহে কোনো বাধা দেবে না ইসরায়েলি বাহিনী এবং তার পরিবর্তে নিজেদের হাতে থাকা জিম্মিদের মধ্যে থেকে ১০০ জনকে মুক্তি দেবে হামাস।

কিন্তু বহু আকাঙিক্ষত সেই যুদ্ধবিরতি চুক্তি আর হয়নি; আর চুক্তি না হওয়ার জন্য ইসরায়েলের এবং হামাস উভয়ই পরস্পরকে দায়ী করছে। হামাসের দাবি ছিল যে যুদ্ধবিরতির সময় ইসরায়েলকে অবশ্যই গাজা উপত্যকা থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। এই দাবির প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা বলেছে, হামাস যুদ্ধবিরতির সুযোগ নিয়ে ইসরায়েলের ভূখণ্ডে পুনরায় হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।

গতকাল চাঁদরাতে ইসরায়েলি বাহিনীর স্থল ও বিমান অভিযানে গাজার মধ্যাঞ্চল গাজা সিটিতে ১৩ জন এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসে গাজা উপত্যকায় ১৭ জন নিহত হয়েছেন। রোববার এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, মধ্যস্থতাকারীরা যুদ্ধবিরতির যেসব শর্ত দিয়েছিল, হামাস সেসবের বিপক্ষে। তাই বর্তমানে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর যে সর্বাত্মক অভিযান চলছে, তা রমজানেও অব্যাহত থাকবে।

এদিকে শনিবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম এমএসএনবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, হামাসকে নির্মূল করার অধিকার ইসরায়েলের রয়েছে, তবে গাজায় যে হারে বেসমারিক লোকজন হতাহত হচ্ছেন তাতে দিন দিন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর ওপর অধৈর্য হয়ে উঠছেন তিনি।

তিনি বলেন, ইসরায়েলি বাহিনী যেভাবে অভিযান পরিচালনা করছে, তা ইসরায়েলকে সহায়তার পরিবর্তে ক্ষতি করছে বেশি। গাজার বেসামরিক লোকজনের প্রাণহানি ঠেকাতে ইসরায়েলি বাহিনীর আরও মনযোগ দেওয়া প্রয়োজন।

সাক্ষাৎকারে বাইডেন আরও জানান, ইসরায়েলি পার্লামেন্ট নেসেটে বক্তব্য দেওয়ার মাধ্যমে ইসরালের জনগণের সঙ্গে এ ইস্যুতে তিনি সরাসরি মতবিনিময় করতে আগ্রহী।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা এএফপিকে জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতির চুক্তি স্বাক্ষর না হলেও সব পক্ষের মধ্যে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে এবং চুক্তিতে স্বাক্ষরের জন্য ইসরায়েল ও হামাসের ওপর কূটনৈতিক চাপ অব্যাহ রয়েছে।

আমরা আশা করছি রমজানের মাঝামাঝি এ ইস্যুতে একটি মীমাংসায় পৌঁছানো সম্ভব হবে, এএফপিকে বলেন ওই কর্মকর্তা।

সূত্র : এএফপি


আরও খবর