কারিগরি জটিলতা কাটিয়ে দোতলা পদ্মা সেতুর নিচতলা দিয়ে শুরু
হয়েছে পাথরবিহীন রেললাইন বসানোর কাজ। ১ ডিসেম্বর রাতে মূল সেতুতে রেললাইনের ঢালাই
কাজ শুরু হয়েছে। জাজিরা প্রান্ত থেকে প্রতিদিন গড়ে ৫০ মিটার করে হচ্ছে ঢালাই। ১৫
ডিসেম্বরের মধ্যে মাওয়া প্রান্ত থেকেও ঢালাইয়ের কাজ শুরু করার কথা জানিয়েছে
কর্তৃপক্ষ।
আগামী ৬ মাসের মধ্যে পুরো সেতুতে রেলের পাত বসানোর কাজ শেষ
হবে। ২০২৩ সালের জুনে ঢাকা-ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮২ কিলোমিটার রেলপথে চলবে ট্রেন। পদ্মা
সেতু রেলসংযোগ প্রকল্পের কর্তৃপক্ষ জানায়, চলতি বছরের ২০ আগস্ট শুরু হওয়ার কথা ছিল
পদ্মা সেতুতে রেললাইন ঢালাইয়ের কাজ। কিন্তু এলিভেশন সমন্বয় নিয়ে দেখা দেয় জটিলতা।
দীর্ঘ প্রায় ৩ মাসের প্রচেষ্টায় জটিলতার সমাধান করা হয়।
গত ৩০ নভেম্বর সেতু জাজিরা প্রান্তের ৪২ নাম্বার পিলার থেকে
শুরু হয় পাথরবিহীন রেলপথ ঢালাইয়ের কাজ। এর আগে উভয় প্রান্তের ভায়াডাক্টের
উপরিভাগের ঢালাইয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ভাঙ্গা থেকে সেতুর জাজিরা প্রান্ত পর্যন্ত
৩২ কিলোমিটার রেলপথ পুরোপুরি প্রস্তুত। এরই মধ্যে ট্রাক-কার চালিয়ে এই অংশটুকু
উদ্বোধন করা হয়েছে। সেতুর ওপর দিনভর রড বাইন্ডিং, ঝালাই, সিøপার বসানো ও সেন্টারিং কাজ চলমান। সূর্য ডুবে সন্ধ্যা নেমে এলেই শুরু হয়
ঢালাইয়ের প্রস্তুতি। তাপমাত্রা যখন সহনীয় পর্যায়ে চলে আসে ঠিক তখনই তখনই ব্যস্ত
হয়ে পড়েন শ্রমিক প্রকৌশলীরা না।
এদিকে জাজিরা প্রান্ত থেকে প্রতিদিন ৫০ মিটার করে ঢালাই করা
হচ্ছে বলে জানা গেছে। পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের প্রকৌশলী সাদমান শাহরিয়ার
বলেন, সম্পূর্ণ
পাথরবিহীন রেললাইন নির্মাণ এটাই বাংলাদেশে প্রথম। এই রেলপথ দিয়ে কোনো ধরনের
ঝাঁকুনি ছাড়াই দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলবে ট্রেন। সম্পূর্ণ আধুনিক পদ্ধতিতে যন্ত্রের
সাহায্যে মান বজায় রেখেই রেলপথের কাজ চলছে।
প্রকল্প ব্যবস্থাপক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাঈদ আহমেদ বলেন, চলতি বছরের আগস্ট মাসে মূল
সেতুতে রেললাইন বসানোর উদ্বোধন করা হয়েছিল। কিন্তু সেতুর ওপরে যেহেতু ব্যালাটলেস
রেলপথ নির্মাণ হচ্ছে সেহেতু এটা একেবারে স্থায়ী রিপেয়ার করা খুবই দুরূহ। তাই
কারিগরি সব বিষয় নিখুঁতভাবে বিশ্লেষণ করতে তিন মাস সময় লেগে গেছে। সব ধরনের জটিলতা
কাটিয়ে মূল ব্রিজের রেলপথ নিখুঁতভাবে নির্মাণ করা হচ্ছে। জাজিরা এবং মাওয়া প্রান্ত
মিলে প্রতিদিন ১০০ মিটারের উপরে রেলপথ নির্মাণ করা হবে। আশা করি আগামী ছয় মাসের
মধ্যেই মূল সেতুর কাজ শেষ হবে। এবং প্রকল্পের নির্ধারিত ২০২৩ সালের জুনে
ঢাকা-ভাঙ্গা রেলপথ পুরোপুরি চালু হওয়ার ক্ষেত্রে আমরা আশাবাদী।