
পৃথিবীর মতো নতুন গ্রহের সন্ধান পেল মার্কিন মহাকাশ গবেষণা
সংস্থা নাসা। এই গ্রহ আকৃতিতে পৃথিবীর ৯৫ শতাংশ। নিজের সূর্যকে ২৮ দিনেই প্রদক্ষিণ
করে এই গ্রহ। তবে নিজের অক্ষের উপর ঘোরে না একেবারেই। এ ব্যাপারে তার মিল বরং
চাঁদের সঙ্গে।
নতুন আবিষ্কৃতি গ্রহ বাসযোগ্য কি না, তা এখনই বলা না গেলেও সেখানে
পানি থাকতে পারে বলে অনুমান করছেন বিজ্ঞানীরা। কারণ নব আবিষ্কৃত গ্রহটির অবস্থান
তার ‘সূর্যে’র ‘হ্যাবিটেবল জোন’ অর্থাৎ বাসযোগ্য এলাকার
মধ্যেই।
গ্রহের নাম ‘টিওআই ৭০০ই’। পৃথিবী থেকে প্রায় ১০০ আলোকবর্ষ দূরে
ডোরাডো নক্ষত্রপুঞ্জের ঠিকানা। মহাবিশ্বের হিসাবে এই দূরত্ব খুব বেশি নয়। ‘টিওআই ৭০০’ নামের নক্ষত্রকে মাঝখানে রেখে সঙ্গী আরো
কয়েকটি গ্রহের সঙ্গে ঘুরে চলেছে ‘টিওআই ৭০০ই’।
নাসার ট্রানজিটিং এক্সোপ্ল্যানেট সার্ভে স্যাটেলাইটের (টেস)
চোখেই ধরা পড়েছে এই গ্রহ। টেসের দেওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করেই এই গ্রহের বৈশিষ্ট্য
সম্পর্কে জানতে পারে নাসার জেট প্রপালসান গবেষণাগারের বিজ্ঞানীরা। সেই বিজ্ঞানী
দলেরই প্রতিনিধি এমিলি গিলবার্ট সম্প্রতি আমেরিকার সিয়াটেল শহরে আয়োজিত
জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের বার্ষিক বৈঠকে এই নতুন গ্রহ সম্পর্কে তথ্য দিয়েছেন। যা গ্রহণও
করেছে দ্য অ্যাস্ট্রোফিজিকাল জার্নাল লেটারস নামের বিজ্ঞানবিষয়ক গবেষণা পত্রিকা।
গিলবার্ট জানিয়েছেন, ‘টিওআই ৭০০’ একটি বামন নক্ষত্র। তাকে
প্রদক্ষিণকারী আরো তিনটি গ্রহ টিওআই ৭০০ বি, সি এবং ডি-এর
খোঁজ আগেই পেয়েছিল নাসা। এবার একটি চতুর্থ গ্রহের সন্ধান পাওয়া গেছে। নাসার পাওয়া
তথ্য অনুযায়ী ‘টিওআই ৭০০ ই’-এর জমি পাথুরে। তবে তাতে
পানিও থাকতে পারে। তার কারণ, বিজ্ঞানীদের কথায় নক্ষত্রের
সঙ্গে এই গ্রহের যে দূরত্ব, সেই দূরত্বে গ্রহের পৃষ্ঠে পানি
থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
নাসার দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, নব্য আবিষ্কৃত গ্রহটি
পৃথিবীর আয়তনের ৯৫ শতাংশ। নিজের সূর্যকে ২৮ দিনেই প্রদক্ষিণ করে এই গ্রহ। তবে
নিজের অক্ষের উপর ঘোরে না টিওআই ৭০০ই। ফলে চাঁদের মতো তার একটি দিক সব সময়েই
নক্ষত্রের আলোর দিকে মুখ করে থাকে। অন্য দিকটি অন্ধকার। এর ফলে এই গ্রহ যদি
বাসযোগ্য হয়ও তবে এর একদিকে সর্বক্ষণ দিনের আলো থাকবে, অন্য
দিকে অন্তহীন রাত।
নাসা জানাচ্ছে ‘টিওআই ৭০০’-এর পরিবারের বাকি গ্রহগুলোও নিজের অক্ষে
স্থির। কোনোটির আকৃতি পৃথিবীর ৯০ শতাংশ কোনোটি আড়াই গুণ। কোনোটি ১৬ দিনে তাদের
নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করে। আবার কোনোটি ৩৭ দিনে। তবে আপাতত সেই সব গ্রহে মন না দিয়ে
‘টিওআই ৭০০ই’ সম্পর্কেই আরো জানার তোড়জোড় শুরু
করেছেন নাসার বিজ্ঞানীরা।