Logo
শিরোনাম

পুরোনো সংবিধান রেখে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব নয়

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৪ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ৩০ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

পুরোনো সংবিধান এবং শাসন কাঠামো রেখে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম।

সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন। নাহিদ ইসলাম বলেন, শুধু সরকার পরিবর্তন করে প্রকৃত গণতন্ত্র বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।

তিনি আরও বলেন, নতুন প্রজাতন্ত্র গড়ার জন্য গণপরিষদ নির্বাচন এবং নতুন সংবিধান প্রয়োজন। মুক্তিযুদ্ধসহ সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আকাঙ্ক্ষা পূরণে কাজ করবে নাগরিক পার্টি।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক বলেন, নিবন্ধন নিতে শর্তাবলী পূরণ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে আগাবো। গঠনতন্ত্র প্রণয়নের কাজ চলছে।

এ সময় নাগরিক পার্টির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক হান্নান মাসুদসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে, সোমবার (৩ মার্চ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মঙ্গলবার সকালে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতারা মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মরণে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তারা রাজধানীর রায়েরবাজারে সকাল ১০টায় চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শহীদদের কবর জিয়ারত করবেন।

দুটি কর্মসূচিতেই জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম ও সদস্য সচিব আখতার হোসেনের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন।

এদিকে, এই কর্মসূচির মাধ্যমে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) তাদের রাজনৈতিক যাত্রার আনুষ্ঠানিক সূচনা করছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

প্রসঙ্গত, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে বিশাল সমাবেশের মধ্যদিয়ে নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে জাতীয় নাগরিক পার্টি। পরে ২১৭ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়।


আরও খবর



বাংলাদেশের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করল ভারত

প্রকাশিত:বুধবার ০৯ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ৩০ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

ভারতীয় স্থল শুল্ক স্টেশন ব্যবহার করে বন্দর এবং বিমানবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৃতীয় দেশে পণ্য রফতানির জন্য বাংলাদেশকে দেওয়া দীর্ঘদিনের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করেছে ভারত।

দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে বাংলাদেশের এই সুবিধা বাতিল করেছে। ভারতের বার্তাসংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, এই সুবিধার ফলে ভুটান, নেপাল এবং মিয়ানমারের মতো দেশে বাংলাদেশের রফতানির জন্য বাণিজ্য প্রবাহ বাধাহীন ছিল। ভারত ২০২০ সালের জুনে বাংলাদেশকে পণ্য রফতানির এই সুবিধা দিয়েছিল।

এর আগে, ভারতের রফতানিকারকরা বিশেষ করে পোশাক খাতের প্রতিবেশী বাংলাদেশকে দেওয়া এই সুবিধা প্রত্যাহারের জন্য নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন।


আরও খবর

সবজিতে আর স্বস্তি নেই

মঙ্গলবার ২৯ এপ্রিল ২০২৫




পর্যটকদের বরণে প্রস্তুত প্রকৃতিকন্যা সিলেট

প্রকাশিত:বুধবার ০৯ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ৩০ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

পর্যটনের আদর্শ স্থান হিসেবে পরিচিত সিলেট। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি খ্যাত এই অঞ্চলে বিশেষ ছুটি ছাড়াও প্রায় সারা বছর দর্শনার্থীদের আগমন ঘটে। এবারে ঈদে লম্বা ছুটি আর ভারতীয় ভিসা বন্ধের সুযোগে সিলেটে রেকর্ড সংখ্যক পর্যটক সমাগমের আশা সংশ্লিষ্টদের।

পর্যটক বরণে এরই মধ্যে ব্যাপক প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। নিরাপদ ও ভোগান্তিমুক্ত চলাচল নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর রয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সিলেট প্রশাসন পর্যটকদের জন্য কন্ট্রোল রুম খোলার কথাও জানিয়েছে।

জানা গেছে, এরই মধ্যে সিলেটের পর্যটন স্পটগুলোতে সাজ সাজ রব বিরাজ করছে। পর্যটক বরণে স্পটগুলোতে শেষ সময়ের প্রস্ততি চলছে। ভ্রমণ পিপাসুদের নজর কাড়তে শেষ হয়েছে ধোয়ামোছা ও সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ।

এবার জাফলং, ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর, বিছনাকান্দি ও রাতারগুলে পর্যটক ভিড় জমবে। প্রকৃতি কন্যা খ্যাত সিলেটের উঁচু-নিচু পাহাড় আর ঢেউ খেলানো চা-বাগান পর্যটকের আকর্ষণের অন্যতম উপলক্ষ্য।

এছাড়াও হযরত শাহজালাল (রহ.) ও শাহপরান (রহ.) মাজার জিয়ারতের জন্য অধিকাংশ পর্যটকের পছন্দের গন্তব্য সিলেট।

এই অঞ্চলের অন্যান্য পর্যটন স্পটের মধ্যে রয়েছে, লালাখাল, শ্রীপুর, পান্তুমাই, মায়াবতি ঝর্ণা, জৈন্তিয়া রাজবাড়ী, ডিবির হাওর, লোভাছড়া, বড়লেখার মাধবকুণ্ড, জকিগঞ্জে তিন নদী সুরমা-কুশিয়ারা-বরাক মোহনা, তাহিরপুরের টেকেরঘাট, শিমুলবাগান, বর্ষার অন্যতম আকর্ষণ টাঙ্গুয়ার হাওর, মৌলভীবাজারের হাকালুকি, শ্রীমঙ্গলের চা বাগান, হবিগঞ্জের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান, মাধবপুর লেক।

সিলেট নগরে এছাড়াও দেখার মতো অনেক স্থাপনাও রয়েছে। কিনব্রিজ, আলী আমজাদের ঘড়ি, চাঁদনি ঘাটের সিঁড়ি, জিতু মিয়ার বাড়ি, খাদিমনগর জাতীয় উদ্যান, শাহী ঈদগাহ, রাজা গৌর গোবিন্দের টিলা, লাক্কাতুরা ও মালনীছড়া চা বাগান। শিশুদের বিনোদনের জন্য ওসমানী শিশু উদ্যান ও এম সাইফুর রহমান শিশু পার্কের নগরজুড়ে গড়ে ওঠা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রিজেন্ট পার্কসহ বিভিন্ন পার্কে ভিড় করেন স্থানীয় দর্শনার্থীরা। স্থানীয়দের পর্যটনের নতুন আকর্ষণ হিসেবে যোগ হয়েছে গোলাপগঞ্জের উঁচু-নিচু টিলাভূমিতে বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে তোলা আনারস বাগান।

এবার ঈদের ছুটি সিলেটে রেকর্ড সংখ্যক পর্যটক সমাগমের আশা পর্যটন ব্যবসায়ীদের। তারা বলছেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার বিপুল সংখ্যক পর্যটকের আগমন ঘটবে।

এদিকে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকার পূর্বাভাসও দিয়েছে সিলেট আবহাওয়া অফিস। সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজিব হোসাইন বাসসকে জানিয়েছেন, এবার আবহাওয়া অনেকটা পর্যটকদের অনুকূলে থাকবে। 

ঈদ পরবর্তী এক সপ্তাহ সিলেটে বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। তবে, তাপমাত্রা বাড়তে পারে বলে জানান তিনি।

হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ঈদের এক সপ্তাহ আগে থেকে অগ্রিম বুকিং দিতে শুরু করেছেন পর্যটকরা। এরই মধ্যে ৫০ ভাগ হোটেল অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে। এপ্রিলে ৮-৯ তারিখ পর্যন্ত কেউ কেউ বুকিং দিয়ে রাখছেন।

সিলেট নগরের হোটেল মেট্রো ইন্টারন্যাশনালের ম্যানেজার আবু তাহির জানান, এরই মধ্যে সাড়া পাচ্ছেন তারা। এপ্রিলের ২ তারিখ থেকে বুকিং কনফার্ম করেছেন অনেকে। কেউ কেউ যোগাযোগ করে হোটেলের সুযোগ-সুবিধা ও ভাড়া জেনে নিচ্ছেন। তিনি আশা করছেন, তার হোটেলের কোনো কক্ষ খালি থাকবে না।

সিলেট হোটেল এন্ড গেস্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি সুমাত নূরী জুয়েল বলেন, সবসময়ই ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের পছন্দের গন্তব্য সিলেট। কক্সবাজারের এবং সিলেটকে বেছে নেন সারাদেশের পর্যটকরা। তবে, বড় একটি অংশ ভারতের কলকাতা কিংবা সেভেন সিস্টার্সের দিকে ঝুঁকে থাকেন। এবার ভারতীয় ভিসা বন্ধ থাকা এবং সরকারি লম্বা ছুটির কারণে এইসব পর্যটক সিলেট কিংবা কক্সবাজারে যাবেন। তাই, অন্য যে কোনো বছরের চেয়ে এবার সিলেটে পর্যটক বেশি হবে বলে আশা আমাদের।

সিলেট চেম্বারের সাবেক সভাপতি ও রেইনবো হোটেল এন্ড গেস্ট হাউজের স্বত্বাধিকারী খন্দকার সিপার আহমদ বলেন, আমার জানামতে এরই মধ্যে বেশির ভাগ হোটেলের ৫০ ভাগ কক্ষ অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে। অনুকূল পরিবেশ থাকলে এবার সিলেটে রেকর্ডসংখ্যক পর্যটকের আগমন ঘটবে।

আগত পর্যটকদের জন্য কী সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা যায় তা নিয়ে প্রশাসনও উদ্যোগী হয়েছে। গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রতন কুমার অধিকারী বাসসকে বলেছেন, অন্যান্য বছরের ন্যায় এবারও জাফলংয়ে পর্যটকদের সমাগম বেশি হবে। আগের তুলনায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় সেখানে কয়েক লাখ পর্যটকের সমাগম ঘটবে বলে আশা করছি।

এছাড়া পর্যটকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলে তিনি জানান। 

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজুন্নাহার বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ট্যুরিস্ট পুলিশ, থানা-পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা একযোগে তৎপরতা চালাবেন। পর্যটকরা যাতে হয়রানির শিকার না হন সেজন্য উপজেলায় পরিবহণ, ঘাট ইজারাদার ও পর্যটন কেন্দ্রের ফটোগ্রাফারদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক হয়েছে। সে ব্যাপারে তাদেরকে সচেতন করা হয়েছে।

দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) ফয়েজ হাসান ফেরদাউস বলেন, এবার লম্বা ছুটি হওয়াতে অন্য বছরের তুলনায় বেশি সংখ্যক পর্যটক সমাগম হবে। ভারতের ভিসা বন্ধ থাকায় এবার চাপ আরো বাড়বে।

তিনি বলেন, এরই মধ্যে হোটেল-মোটেলগুলো ৬০-৭০ শতাংশ বুক হয়ে গেছে। আশা করছি এবার ভালো ব্যবসা হবে। এতে করোনা পরবর্তী বিগত বছরগুলোর ক্ষতি পুষিয়ে ওঠতে পারবেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।

ট্যুরিস্ট পুলিশ সিলেট অঞ্চলের পরিদর্শক (নিরস্ত্র) গোলাম দস্তগীর আহমেদ বলেন, সিলেটে ব্যাপক পর্যটক উপস্থিতির বিষয়টি মাথায় রেখে নিরাপত্তার জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশ সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে। পোশাকধারী ছাড়াও সাদাপোশাকেও তৎপরতা চালাবে ট্যুরিস্ট পুলিশ।

সিলেট জেলা পুলিশের মিডিয়া ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা মো. সম্রাট তালুকদার জানান, এবার ঈদে পর্যটকদের নিরাপত্তায় প্রতিটি স্পটে থাকবে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ট্যুরিস্ট পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে জেলা পুলিশ। পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্য মোতায়েন করতে হবে।

সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ বলেন, ইতোমধ্যে পর্যটন এলাকাগুলোয় প্রশাসনের তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। পর্যটকদের নির্বিঘ্নে যাতায়াত ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও ট্যুরিস্ট পুলিশ একযোগে কাজ করবে।

তিনি বলেন, প্রতিবছর সিলেটে পর্যটকদের আগমন ঘটে। ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের নিরাপত্তা ও সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনা এড়াতে দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকাগুলো চিহ্নিত করে সাইন বোর্ড লাগানো হয়েছে। পর্যটন এলাকায় অতিরিক্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ট্যুরিস্ট পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হবে।

শের মাহবুব মুরাদ আরো বলেন, আবাসিক হোটেল ও রেস্টুরেন্টে যাতে অতিরিক্ত টাকা না নেয় সেজন্য নিদের্শনা প্রদান করা হয়েছে। পাশাপাশি পর্যটকরা যাতে এই এলাকায় নকল পণ্য ও কসমেটিকস কিনে প্রতারিত না হয় সেজন্য অভিযান পরিচালনা করা হবে। বিভিন্ন বিষয়ে সমন্বয় রক্ষার লক্ষ্যে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এসময়ে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হবে।


আরও খবর



দেশজুড়ে ট্রান্সকমের পণ্য বর্জনের ডাক

প্রকাশিত:সোমবার ০৭ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ৩০ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতার প্রতিবাদে রাজধানীসহ সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে। বিভিন্ন ব্যানারে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেছেন জনতা। এসময় সমাবেশ ও বিক্ষোভ থেকে দেশে ইসরায়েলি পণ্য সরবরাহকারী গ্রুপ ট্রান্সকমের পণ্য বর্জনের ডাক দেওয়া হয়েছে। বিক্ষোভ মিছিল থেকে কেএফসি, পিৎজা হাট, পেপসি ও সেভেন আপের মতো কিছু পণ্যের আউটলেটে ইট-পাটকেল ছোড়া হয়েছে।

সোমবার সারা বিশ্বে ‘দ্য ওয়ার্ল্ড স্টপস ফর গাজা’ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। 'নো ওয়ার্ক, নো স্কুল' কর্মসূচি হিসেবে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছেন বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

সিলেট

সিলেট নগরের মিরবক্সটুলা এলাকায় কেএফসিতে ভাঙচুর চালিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠান দাবি করে সেখানে দুই দফা হামলা ও ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। এসময় কেএফসিতে থাকা কোমল পানীয় দুতলা থেকে রাস্তায় ছুড়ে ফেলা হয়। পরে সেগুলো ফাটানো হয়।

এ বিষয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি মডেল থাকার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিয়াউল হক বলেন, ‘ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’

নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের বর্বরতম গণহত্যার প্রতিবাদে ডাকা বৈশ্বিক ধর্মঘটে সংহতি জানিয়ে সিলেটে বিক্ষোভ করেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান। ইসরায়েলি পণ্য বর্জনের ডাক দিয়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্লাস পরীক্ষাও বন্ধ রয়েছে।

চট্টগ্রাম

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলার প্রতিবাদে সোমবার চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করছেন সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীরা। এসব সমাবেশ থেকে ইসরায়েলি পণ্য বয়কটের ডাক দেওয়া হয়। এসময় চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি এলাকায় পিৎজা হাট ও কেএফসিতে ইট-পাটকেল ও জুতা নিক্ষেপ করেছেন বিক্ষুব্ধ জনতা। এতে প্রতিষ্ঠান দুটির সামনের অংশের কাচ ভেঙে যায়। এছাড়া মিছিল থেকে রাস্তার পাশের বিভিন্ন দোকানে থাকা কোকা কোলা ও পেপসিকো কোম্পানির সাইনবোর্ড ভাঙচুর করা হয়।

এদিন বিকাল সাড়ে ৩টার দুই নম্বর গেট বিপ্লব উদ্যান থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল বের করে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। বিকাল সোয়া ৪টার দিকে মিছিলটি নাসিরাবাদ অতিক্রম করার পরপরই সানমার ওশান সিটির পাশে থাকা কেএফসিতে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ও জুতা নিক্ষেপ করে তারা। এতে রেস্তোরোর কাচ ভেঙে যায়। এছাড়া চট্টগ্রামের জিইসি এলাকায় থাকা পিৎজা হাটের একটি শাখার সামনের কাঁচাও ভাঙচুর করেছে বিক্ষোভে আসা মানুষজন। এরপর জিইসি মোড়ে অবস্থিত হোটেল জামানে কোকা কোলার সাইনবোর্ড থাকায় সেখানে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। এতে হোটেলটির সামনের অংশের কাচ ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। পরে তারা পিৎজা হাটেও ভাঙচুর চালায়।

অন্য আরেক মিছিল থেকে নগরীর লালখান বাজার এলাকায় স্পোর্টস ব্র্যান্ড পুমার সাইনবোর্ড, বাটার সাইনবোর্ড ভাঙচুর করা হয়। এ ছাড়া নগরীর কাজির দেউড়ী মোড় থেকে জামালখান অভিমুখী আরেকটি মিছিল থেকে রাস্তার পাশের বিভিন্ন দোকানে থাকা কোকা কোলা ও পেপসিকো কম্পানির ফ্রিজ ও সাইনবোর্ড ভাঙচুর করা হয়। এসময় বিক্ষুব্ধ জনতা ফ্রিজে থাকা পেপসি, সেভেন আপসহ বিভিন্ন কোমল পানীয় রাস্তায় ছিটিয়ে দেয়।

কক্সবাজার

‘দ্য ওয়ার্ল্ড স্টপস ফর গাজা’ কর্মসূচির সঙ্গে সংহতি রেখে কক্সবাজার শহর থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি সাগর পাড়ের হোটেল-মোটেল জোন সড়কের কাছে গেলে বিক্ষুব্ধ জনতা দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকার মালিক ট্রান্সকম গ্রুপের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান কেএফসি ও পিৎজা হাটের আউটলেটে ভাঙচুর চালায়।

বিক্ষুব্ধ জনতা ‘এগুলো ইসরায়েলের দোসর’ বলে উল্লেখ করেন। এসময় সেভেন আপের সাইনবোর্ড দেখেও ভাঙচুর চালানো হয়।

মিছিল শেষে কলাতলি গোল চত্বরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বিক্ষোভকারীরা এখন থেকে ইসরায়েল ও ইসরায়েলের দোসরদের পণ্যসামগ্রীও বয়কটের ঘোষণা দেন। কেএফসি, পিৎজা হাট, পেপসি, সেভেন আপের মতো কিছু ইসরায়েলি পণ্যের বাংলাদেশি সরবরাহকারী ট্রান্সকম গ্রুপ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘ইসরায়েলের এমন অমানবিক কর্যক্রমের বিরুদ্ধে বিশ্ব নেতাদের চুপ থাকা লজ্জাজনক। আজ থেকে ইসরায়েল সম্পৃক্ত সব পণ্য বয়কট করা হবে।

তারা আরো বলেন, ‘সেই সঙ্গে যত দিন পর্যন্ত ফিলিস্তিন স্বাধীন হবে না, তত দিন নিরীহ ফিলিস্তিনিদের পাশে থাকবে কক্সবাজারের সর্বস্তরের জনতা।

বগুড়া

বগুড়ায় ইসরায়েলি পণ্য বাটা শো-রুমসহ দেশটির কোমল পানীয় রাখা দোকানে ভাঙচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ সোমবার শহরের সাতমাথা এলাকায় ভাঙচুর চালান বিক্ষোভকারীরা।

এর আগে সকালে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংস হামলার প্রতিবাদে বগুড়ায় ফুঁসে ওঠে তৌহিদি ছাত্র-জনতা। শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে রাস্তায় নেমে আসে হাজার হাজার মানুষ।

বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মঈনুদিন জানান, বিক্ষোভ মিছিল থেকে দু-একজন বাটার শো-রুমের কাচে ঢিল ছুড়ে মারে। এতে কিছু কাচ ভেঙে যায়। তবে সার্বিক পরিবেশ শান্ত ও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

বরিশাল

যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে বরিশালে গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজা কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এ সময় বিক্ষুব্ধরা ইসরায়েলকে অর্থ সহায়তা দেওয়া কেএফসির বরিশাল ব্রাঞ্চে ভাঙচুর চালান। ছাত্র-জনতা কেএফসির কার্যক্রম বরিশাল থেকে সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানায়।

সোমবার সকাল ১১টায় নগরীর অশ্বিনী কুমার হলের সামনের সড়কে ছাত্র-জনতার ব্যানারে কর্মসূচি শুরু হয়। সড়ক অবরোধ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করার পর বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে কবি জীবনানন্দ দাশ সড়কে কেএফসির সামনে বিক্ষুব্ধ জনতা অবস্থান নেয়। তারা অভিযোগ করেন, কেএফসি ইসরায়েলকে অর্থ সহায়তা করে। যে অর্থের একাংশ যুদ্ধে ব্যবহৃত হচ্ছে। জনতা কেএফসি বন্ধ করে দেওয়ার দাবি জানায়।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সেনাবাহিনী উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। বিক্ষোভকারীরা কেএফসির সামনের সড়কে জোহরের নামাজ আদায় করেন। একইস‌ঙ্গে মোনাজাতে গাজাবাসীর জন্য দোয়া প্রার্থনা করেন।

বিকাল সোয়া ৩টার দিকে কয়েকজন বিক্ষোভকারী প্রতিষ্ঠানটির ছাদে উঠে কেএফসির লোগো ভেঙে ফেলেন। পাশাপা‌শি ব্যানার নিয়ে যান। এছাড়া দেয়ালে বয়কট কেএফসি লিখে দেন তারা।

তারা রেস্টুরেন্টটির ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করলেও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। পরে সোমবার বিকাল ৫টার দিকে বরিশালে কেএফসির একমাত্র শাখাটি বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ।

কোতয়ালী মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, গাজায় ইসরায়েলি নৃশংসতার প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধরা কেএফসির সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। কেএফসির লোগো ভেঙে ফেললেও বড় কোনো ক্ষতি হয়নি। বর্তমানে পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

খুলনা

খুলনায় ইসরায়েল বিরোধী মিছিল থেকে নগরীর ময়লাপোতা মোড়ের কেএফসি ভাঙচুর করা হয়েছে। এ সময় বিক্ষোভকারীরা কেএফসি থেকে ইসরায়েলি পণ্য ও বিভিন্ন কোমল পানীয় বের করে রাস্তায় এনে ভেঙে ফেলে। পরে মিছিলকারীরা আবারো শিববাড়ির দিকে চলে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ময়লাপোতাসহ নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল যেতে থাকে শিববাড়ি মোড়ের দিকে। এ সময় ময়লাপোতা থেকে একাধিক মিছিল যাওয়ার সময় কে বা কারা কেএফসিকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। মুহূর্তের মধ্যেই সেখানে অন্যান্যরাও হামলা করে। এ সময় মিছিলের নেতৃত্বে থাকা ব্যক্তিরা চেষ্টা করেও হামলা থেকে কেএফসিকে রক্ষা করতে পারেননি। এক পর্যায়ে কেএফসির মধ্য থেকে কোমল পানীয় বের করে এনে ভেঙে গুড়িয়ে ফেলা হয়। এ সময় রাস্তা পানিময় হয়ে যায়। পরে মিছিলকারীরা আবারো শিববাড়ির দিকে যেতে থাকে।


আরও খবর



সীমানা নির্ধারণের প্রস্তাবে এখনও অনুমোদন পাইনি

প্রকাশিত:সোমবার ০৭ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৯ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

সীমানা নির্ধারণের একটা প্রস্তাব আমরা মন্ত্রিপরিষদে পাঠিয়েছিলাম। এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ মিটিং করেছে। কিন্তু আমরা কেবিনেট থেকে এখনও অনুমোদন পাইনি। কেবিনেটের অনুমোদন না পেলে বিদ্যমান আইনেই নির্বাচন হবে বলে মন্তব্য করেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আনোয়ারুল ইসলাম সরকার। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

ইসি আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, আজকে আমরা আচরণ বিধিমালার খসড়া করার জন্য বসেছিলাম। প্রায় চূড়ান্ত হয়েছে। চূড়ান্ত করে কমিশনে প্লেস করবো। এরপর কমিশন চূড়ান্ত করবে। সংস্কার কমিশন যে প্রস্তাব দিয়েছে, আমাদের স্থানীয় সরকার নির্বাচন ও নতুন নতুন বিষয় অন্তর্ভূক্ত করবো। আশা করি চমৎকার আচরণবিধি হবে।

তিনি বলেন, নির্বাচনী ব্যয় ন্যূনতম রেখে শৃঙ্খলা যাতে বিঘ্নিত না হয় গ্রামীণ পর্যায়ে একেবারে লেবেল প্লেয়িং ফিল্ডে যেন প্রচার-প্রচারণা করতে পারে। সে ধরনের একটা মনোভাব নিয়ে করতে চাচ্ছি। এক্ষেত্রে আরপিও যেখানে সংশোধন করার প্রযোজন হবে সেখানে সংশোধন করা হবে।

পোস্টার রাখতে চাচ্ছেন না, এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব এরকমই। সে প্রস্তাবকে ভালোই মনে করছি। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারের বিষয়টিও আছে। গুজব যাতে নিয়ন্ত্রণে থাকে সেগুলোও ভাবছি। আমরা সর্বোচ্চ কঠোরতার জন্য যে টুলসগুলো আছে, সেগুলোকে শক্তিশালী করবো। দুইশ টাকা, পাঁচশ টাকা জরিমানার বিষয়গুলো আরও বাড়ানো চিন্তা-ভাবনা চলছে। আচরণ বিধির বাইরেও পেনাল কোড আছে।

আরেক প্রশ্নে আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, দল নিবন্ধনের যে বিজ্ঞপ্তি এতে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন নামে একটি রিট করেছে। এটা শুধু তাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। দু’একটি দল আবেদন করেছে। এখন ২০ এপ্রিলের মধ্যে যদি অনেক দল আবেদন করে তাহলে এক রকম হবে। তবে ২০ তারিখ আসলে বোঝা যাবে সময় বাড়ানো হবে কি না। একটি দল আবেদন করেছে। আমাদের ধারণা ২০ এপ্রিলের মধ্যে বেশ কয়েকটি দল আবেদন করার জন্য প্রস্তুত। বর্তমান আইন অনুযায়ী আবেদন করতে হবে। এজন্য অংশীজনদের সঙ্গেও বসবো।


আরও খবর



পশ্চিমবঙ্গে সহিংসতা নিয়ে বাংলাদেশের মন্তব্য ‘অযৌক্তিক’

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৮ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ৩০ এপ্রিল ২০২৫ |

Image

ওয়াক্ফ আইন ঘিরে অতি সম্প্রতি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে যে সহিংসতা ঘটল, তা নিয়ে বাংলাদেশের মন্তব্যকে ‘অযৌক্তিক’ বলে মনে করে ভারত। আজ শুক্রবার এক বিবৃতিতে এ কথা বলেছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল।

পশ্চিমবঙ্গের সাম্প্রতিক সহিংসতায় উদ্বেগ জানিয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম গত ৮ এপ্রিল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, “পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘু মুসলিমদের সুরক্ষা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আমরা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার ও ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”

শফিকুল আলমের এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় আজ শুক্রবারের বিবৃতিতে রণধীর জয়সওয়াল বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের ঘটনায় বাংলাদেশের তরফ থেকে যে বক্তব্য এসেছে, তা আমরা প্রত্যাখ্যান করছি।”

“বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর চলমান নির্যাতনের বিষয়ে ভারতের উদ্বেগের সাথে তুলনা করার জন্য এটি একটি ছদ্মবেশী এবং ছলনাপূর্ণ প্রচেষ্টা, যেখানে এই ধরনের অপরাধের জন্য দায়ীরা এখনও মুক্তভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে। অযৌক্তিক মন্তব্য করা এবং সদ্গুণের পরামর্শ প্রদানের পরিবর্তে বাংলাদেশ যদি তার নিজস্ব সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষার দিকে মনোনিবেশ করে, তাহলে আরও ভাল করবে।”

গত ২ এপ্রিল গভীর রাতে ভারতের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভা এবং পরের দিন উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় পাস হয় ‘সংশোধিত ওয়াক্ফ বিল, ২০২৫’। তারপর ৫ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর স্বাক্ষরের মধ্যে দিয়ে আইনে পরিণত হয় সেই বিল এবং ৮ এপ্রিল তা কার্যকর হয়।

এদিকে আইন কার্যকর হওয়ার পরপরই ভারতের রাজধানী দিল্লি, পশ্চিমবঙ্গ, মণিপুরসহ বিভিন্ন রাজ্যে বিক্ষোভ শুরু করেন মুসলিমরা ও বিজেপিবিরোধী বিভিন্ন দলের নেতৃবৃন্দ। সবচেয়ে বেশি বিক্ষোভ হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। এই বিক্ষোভকে ঘিরে আক্ষরিক অর্থেই রণক্ষেত্রে রূপ নিয়েছিল রাজ্যের মুর্শিদাবাদ, মালদহ, নদীয়াসহ বিভিন্ন জেলা। পুলিশ-বিক্ষোভকারী সংঘাতে মুর্শিদাবাদে ৩ জন সংবাদও পাওয়া গেছে এবং গ্রেপ্তার হয়েছেন ২ শতাধিক বিক্ষোভকারী। তবে বর্তমানে মুর্শিদাবাদ ও অন্যান্য জেলার অবস্থা শান্ত।

আইন স্থগিতের দাবিতে ইতমধ্যে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়েছে এবং দেশটির প্রধান বিচারপতি সঞ্জিব খান্নার বেঞ্চে বুধবার মামলার ওপর শুনানিও শুরু হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টে মামলার শুনানি শুরু হওয়ার দিনই আইনটির কার্যকর হওয়ার সময় পিছিয়ে দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।


আরও খবর