Logo
শিরোনাম

প্যারিস, প্রেম ও ভালোবাসার শহর

প্রকাশিত:রবিবার ২৪ নভেম্বর 20২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২২ জানুয়ারী ২০২৫ |

Image

প্যারিস হল ফ্রান্সের রাজধানী এবং সর্বাধিক জনবহুল শহর।  এটি 

আইফেল টাওয়ার এবং আরও অনেক কিছুর জন্য বিশ্বের বিখ্যাত শহর। প্যারিস খুব ব্যয়বহুল শহর। সপ্তদশ শতাব্দী থেকে প্যারিস ইউরোপের অন্যতম অর্থ কেন্দ্র, কূটনীতি, বাণিজ্য, ফ্যাশন, বিজ্ঞান এবং চারুকলা কেন্দ্রগুলির একটি। 

প্যারিস বিশ্বের অন্যতম ট্যুরিস্ট স্পট। কাজেই আপনারা যারা ঘুরতে পছন্দ করেন , সবাই ফ্রান্স  ভিসা জন্য আবেদন করতে পারেন। বাংলাদেশেই ফ্রান্স দূতাবাস আছে।  আপনার ডকুমেন্টস ঠিক থাকলে আপনাকে ভিসা দিবে। 

প্যারিসের ট্যুরিস্ট স্পট সমূহ


আইফেল টাওয়ার

আইফেল টাওয়ারটি প্যারিস এমনকি ফ্রান্সের প্রতীকী আইকন। ইঞ্জিনিয়ার গুস্তাভে আইফেলের নামানুসারে এর নামকরণ করা হয়েছে, যার সংস্থা টাওয়ারটি ডিজাইন করে তৈরি করেছিল। আইফেল টাওয়ারটি ১৮৮৭ থেকে ১৮৮৯ সালের মধ্যে নির্মিত হয়েছিল এটি ফ্রান্সের একটি বিশ্বব্যাপী সাংস্কৃতিক আইকন এবং বিশ্বের অন্যতম স্বীকৃত কাঠামো । আইফেল টাওয়ার বিশ্বে পর্যটকদের জন্য সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান। প্রতি বছর বিশ্বের বহু দম্পতি এখানে আসে এবং আইফেল টাওয়ারের সামনে ছবি তুলেন। 

নটরডেম ক্যাথিড্রাল

নটরডেম দে প্যারিস, নটর ডেম নামেও পরিচিত, রোমান ক্যাথলিক ক্যাথেড্রাল ইল দে লা সিটির পূর্ব অর্ধে অবস্থিত। এটি মধ্যযুগের গথিক ক্যাথেড্রালগুলির মধ্যে সর্বাধিক বিখ্যাত এবং এর আকার, প্রাচীনত্ব এবং স্থাপত্য আগ্রহের জন্য আলাদা করা হয়। এটি পর্যটকদের কাছে খুবই আকর্ষণীয় স্থান। 

ল্যুভরে জাদুঘর 

ল্যুভরে বিশ্বের সবচেয়ে পরিদর্শন করা আর্ট মিউজিয়াম যা শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। জাদুঘরটি ল্যুভর প্রাসাদে অবস্থিত, মূলত দ্বিতীয় ফিলিপের অধীনে দ্বাদশ থেকে ১৩ শতকের শেষদিকে ল্যুভর  দুর্গ হিসাবে নির্মিত।  এই সংগ্রহশালাটি বিভিন্ন বিভাগে বিভক্ত - মিশরীয় প্রত্নতাত্ত্বিকতা, প্রাচ্য প্রত্নতত্ত্ব, ইসলামী শিল্প, গ্রীক এবং রোমান শিল্প, চিত্রকর্ম, শিল্পের বস্তু, মধ্যযুগীয় ভাস্কর্য । 

সেইন নদী

ফ্রান্সের উত্তরে প্যারিস অববাহিকার মধ্যে সেইন নদী একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক নৌপথ। এই নদীটি প্যারিসের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন স্থান। সেইন নদী  ভ্রমন আপনি কখনই ভুলতে পারবেন না। 

ডিজনিল্যান্ডে

মিকির ভক্তরা ডিজনিল্যান্ড প্যারিসে যেতে পারবেন যা মধ্য প্যারিস থেকে ৩২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। মূলত ইউরো ডিজনি রিসর্ট নামে পরিচিত, প্যারিসে দেখার জন্য সর্বাধিক বিখ্যাত এই জায়গাগুলি সুপার মজাদার রাইড, শো, অ্যানিমেশন সিনেমা, সমাবেশ এবং আপনার প্রিয় চরিত্রগুলির সাথে মিলিত হওয়ার আকর্ষণীয় মুহুর্তের জন্য পরিচিত।


আরও খবর



ধলেশ্বরী টোল প্লাজায় বাসচাপা : চালক গ্রেপ্তার

প্রকাশিত:শনিবার ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২২ জানুয়ারী ২০২৫ |

Image

যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় একই পরিবারের চার জনসহ মোট ছয় জন নিহত হওয়ার ঘটনায় বাসচালক মোহাম্মদ নুরুদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে ধলেশ্বরী টোল প্লাজায় বাস দুর্ঘটনা ঘটে।

শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) রাতে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে র‌্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং থেকে এক বার্তায় জানানো হয়েছে।

শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে এক্সপ্রেসওয়েতে টোল পরিশোধের জন্য দাঁড়িয়ে থাকা মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকারকে পেছন থেকে ঢাকা-কুয়াকাটা রুটের ব্যাপারী পরিবহনের একটি বাস ধাক্কা দেয়। এতে সামনে থাকা গাড়িগুলো দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এ সময় প্রাইভেটকারের ভেতরে আটকা পড়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন একজন। বাকিদের ঢাকা নেওয়ার পথে মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনার পর বাসটিকে জব্দ করা গেলেও চালক ও সহকারীরা পালিয়ে যান।


আরও খবর



গুম কমিশনে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ, ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে নেয় ২২ কোটি টাকা

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২১ জানুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ২২ জানুয়ারী ২০২৫ |

Image

নগদ অর্থ ও জমি লিখে নেওয়ার তথ্য ফাঁস করায় ফের গুম করা হয় এক ব্যবসায়ীকে, ১০ বছরেও যিনি ফিরে আসেননি।এদিকে এখন পর্যন্ত গুম কমিশনে এক হাজার সাতশ অভিযোগ জমা পড়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে বেশিরভাগ র‌্যাবের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। গুম, অপহরণে পুলিশও কম হাত পাকায়নি। কেউ এখনো চাকরিতে বহাল আছেন, কেউ হয়েছেন গ্রেফতার। আবার পালিয়ে গেছেন বেশ কয়েকজন। 


গুমসংক্রান্ত কমিশনের সভাপতি হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, ‘আমরা ইনকোয়ারি (অনুসন্ধান) অব্যাহত রেখেছি। এটা তো এক দিনের ব্যাপার নয়। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাদের আমরা তলব করছি, ওদের কথা শুনছি। দরকার হলে যারা অভিযোগ করেছেন তাদের কথাও দ্বিতীয়বার শোনা হবে। অনেক সময় উভয়পক্ষকে মুখোমুখি করছি। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা অনেক সময় ডিনাই (অস্বীকার) করছে। আমাদের অবশ্যই সত্যটা খুঁজে বের করতে হবে। আমাদের কাজই হলো সত্য অনুসন্ধ্যান।’ মার্চ বা এপ্রিলে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে বলেও তিনি জানান। 


কেস স্টাডি-১ : গুমসংক্রান্ত কমিশনে ৬ জানুয়ারি অভিযোগ করেন খান মো. আক্তারুজ্জামান নামের এক ব্যবসায়ী। অভিযোগে বলা হয়, পারিবারিকভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত তিনি। গ্রামের বাড়ি মাগুরা জেলার শ্রীপুর থানায়। বিএনপির স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা ছিল। এ কারণে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের রোষানলে পড়ে শেখ হাসিনার আজ্ঞাবহদের দ্বারা গুমের শিকার হন। 


ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে নেয় ২২ কোটি টাকা

নগদ অর্থ ও জমি লিখে নেওয়ার তথ্য ফাঁস করায় ফের গুম করা হয় এক ব্যবসায়ীকে, ১০ বছরেও যিনি ফিরে আসেননি

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে টার্গেটকৃত ব্যক্তিদের শুধু গুম করেই ক্ষ্যান্ত হননি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা, অনেককে ক্রসফায়ারে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। আবার নগদ অর্থ ছাড়াও জমিও লিখে নেন। এছাড়া যারা ছাড়া পেয়ে বিষয়টি প্রকাশ করে বিচার চেয়েছেন তাদের ফের গুম করা হয়। এ রকম অনেকে আজও ফিরে আসেননি। গুম কমিশনের কাছে দেওয়া ভুক্তভোগীদের অভিযোগ থেকে চাঞ্চল্যকর এ রকম তথ্য পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী এবং গুম কমিশন সূত্রে এ বিষয়ে বেশ কয়েকটি কেস স্টাডি পাওয়া গেছে। 


এদিকে এখন পর্যন্ত গুম কমিশনে এক হাজার সাতশ অভিযোগ জমা পড়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে বেশিরভাগ র‌্যাবের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। গুম, অপহরণে পুলিশও কম হাত পাকায়নি। কেউ এখনো চাকরিতে বহাল আছেন, কেউ হয়েছেন গ্রেফতার। আবার পালিয়ে গেছেন বেশ কয়েকজন। 


গুমসংক্রান্ত কমিশনের সভাপতি হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, ‘আমরা ইনকোয়ারি (অনুসন্ধান) অব্যাহত রেখেছি। এটা তো এক দিনের ব্যাপার নয়। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাদের আমরা তলব করছি, ওদের কথা শুনছি। দরকার হলে যারা অভিযোগ করেছেন তাদের কথাও দ্বিতীয়বার শোনা হবে। অনেক সময় উভয়পক্ষকে মুখোমুখি করছি। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা অনেক সময় ডিনাই (অস্বীকার) করছে। আমাদের অবশ্যই সত্যটা খুঁজে বের করতে হবে। আমাদের কাজই হলো সত্য অনুসন্ধ্যান।’ মার্চ বা এপ্রিলে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে বলেও তিনি জানান। 


কেস স্টাডি-১ : গুমসংক্রান্ত কমিশনে ৬ জানুয়ারি অভিযোগ করেন খান মো. আক্তারুজ্জামান নামের এক ব্যবসায়ী। অভিযোগে বলা হয়, পারিবারিকভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত তিনি। গ্রামের বাড়ি মাগুরা জেলার শ্রীপুর থানায়। বিএনপির স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা ছিল। এ কারণে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের রোষানলে পড়ে শেখ হাসিনার আজ্ঞাবহদের দ্বারা গুমের শিকার হন। 



ঘটনার বিবরণ দিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘লে. কর্নেল আজাদ ২০১৫ সালের ১৮ ডিসেম্বর ধানমন্ডি ২৭ নম্বর থেকে আমাকে চোখ বেঁধে তৎকালীন র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখার প্রধানের নেতৃত্বে একটি কালো গাড়িতে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যান। চোখ বাঁধা থাকায় আমি স্থান চিনতে পারিনি। তবে পরবর্তীতে বুঝতে পারি, র‌্যাব হেডকোয়ার্টার্সের বহুল আলোচিত ‘আয়নাঘরে ৩ দিন বন্দি ছিলাম। সেখানে থাকাবস্থায় ক্রসফায়ারে হত্যার ভয় দেখিয়ে আমার কাছে ৩০ (ত্রিশ) কোটি টাকা ও জমি দাবি করেন র‌্যাবের সংশ্লিষ্ট পদস্থ কর্মকর্তা। এরপর র‌্যাবের নজরদারিতে থেকে কয়েক দফায় নগদ ২২ কোটি টাকা দিয়ে জীবন ভিক্ষা পেয়েছিলাম। আমার কোম্পানির এজিএম অ্যাকাউন্টস মো. শহিদুল্লাহ ও ম্যানেজার মোহাম্মদ আলী শুভকে সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন ধাপে কোম্পানির ব্যাংক লোন থেকে টাকা তুলে দেই। এছাড়া আমার ও আমার স্ত্রীর নামে থাকা জমি বিক্রি করে টাকাগুলো দিয়েছিলাম। কিন্তু এরপরও তারা থেমে থাকেনি। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে ভয় দেখিয়ে আমার বেশ কিছু জমিও রেজিস্ট্রি করে দিতে বাধ্য করে। সে সময় আমার ওপর চালানো হয় অমানবিক নির্যাতন। আমার শরীরে ইলেকট্রিক শক দেওয়া হয়। যার ক্ষত এখনো বয়ে বেড়াচ্ছি। নির্যাতনের যন্ত্রণা থেকে বাঁচতে নিয়মিত থেরাপি নিতে হচ্ছে।’ র‌্যাব কর্মকর্তাকে টাকা দেওয়ার অডিও রেকর্ড, সিসিটিভি ফুটেজের কিছু তথ্য-প্রমাণ অভিযোগের সঙ্গে যুক্ত করে দিয়েছেন ব্যবসায়ী আক্তারুজ্জামান।


ব্যবসায়ী আক্তারুজ্জামান যুগান্তরকে বলেন, ‘গুমের শিকার হয়ে টাকা দেওয়ার পর থেকে আমার কোম্পানি অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে এবং ব্যাংকের ঋণগুলো খেলাপিতে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে কোম্পানি দেউলিয়া হওয়ার পথে। অথচ আমাকে তুলে নেওয়া র‌্যাবের সেই কর্মকর্তার নামে-বেনামে প্রচুর সম্পত্তি রয়েছে।’ 


কেস স্টাডি-২ : রাজধানীর মিরপুরের পল্লবী থানা এলাকা থেকে ২০১৪ সালের ১ জানুয়ারি অপহরণ হন ব্যবসায়ী মো. কুদ্দুসুর রহমান চৌধুরী। গুমসংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারিতে গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর অভিযোগপত্র জমা দেন ব্যবসায়ী কুদ্দুসের মেয়ে ফারজানা আক্তার টুম্পা। অভিযোগে বলা হয়, ২০১৩ সালে কর্নেল (অব.) পদমর্যাদার এক কর্মকর্তার নেতৃত্বে র‌্যাব-৪ এর একজন কর্নেল, একজন ক্যাপ্টেন চোখ বেঁধে কুদ্দুসুর রহমানকে উঠিয়ে নিয়ে যান। ইলেকট্রিক শক দিয়ে ৪টি গাড়ি, ৯ কোটি ৬০ লাখ টাকার চেক, ২ লাখ টাকা এবং জমির দলিলে সই নেন। পরবর্তীতে এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন কুদ্দুসুর রহমান। হাইকোর্টে রিট পিটিশনও দায়ের করেন তিনি। মামলা চলমান থাকা অবস্থায় ২০১৪ সালের ১ জানুয়ারি মিরপুর জান্নাতুল মাওয়া কবরস্থানের সামনে থেকে সাদা মাইক্রোবাসে জোরপূর্বক উঠিয়ে নিয়ে যায় কুদ্দুসুর রহমানকে। এভাবে তুলে নেওয়ার ১০ বছর পার হলেও তিনি আর ফিরে আসেননি। তার ভাগ্যে কী হয়েছে সেটিও পরিবারের সদস্যরা আজও জানতে পারেননি। 


এদিকে ঘটনার ১ মাস পর পল্লবী থানায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ৬ সদস্যের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন কুদ্দুসুর রহমানের স্ত্রী মোছা. জোসনা বেগম। মামলাটি থানা পুলিশের পর পুলিশের বিশেষায়িত দুটি সংস্থা তদন্ত করে। কিন্তু কোনো হদিস মেলেনি তার। এছাড়া অভিযুক্তদের আইনের আওতায়ও আনা যায়নি।


নিখোঁজ কুদ্দুসুর রহমানের পরিবারের দাবি, রিয়েল এস্টেট কোম্পানির সঙ্গে জমিজমাসংক্রান্ত বিরোধের জেরে গুম হন কুদ্দুস। আর ওই রিয়েল এস্টেট কোম্পানির মালিকানায় আছেন সাবেক এক প্রভাবশালী সেনা কর্মকর্তা। ফলে মামলা করলেও আওয়ামী লীগ আমলে প্রভাব খাটিয়ে সঠিক তদন্ত করতে দেওয়া হয়নি।


কুদ্দুসুর রহমানের মেয়ে ফারজানা আক্তার টুম্পা বলেন, ‘বাবাকে প্রথমে র‌্যাব তুলে নিয়ে গুম করে নগদ টাকা ও গাড়ি নিয়েছিল। এ বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশ করায় ফের গুম হন। আজও বাবাবে খুঁজে পাইনি। আমরা এখনো আশা করছি বাবা বেঁচে আছেন।’ 


গুম কমিশন সূত্র বলছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ভুক্তভোগীদের বর্ণনার সঙ্গে ঘটনার মিল রয়েছে। তবে ভুক্তভোগীদের অভিযোগের বিষয়ে চাক্ষুষ প্রমাণ খুব কম পাওয়া যাচ্ছে। নিরপেক্ষ সাক্ষীও পাওয়ার সুযোগ নেই। গুমের সঙ্গে জড়িত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা কাজটি এমনভাবে করেছেন যাতে এগুলো পরবর্তীতে শনাক্ত করা না যায়। 


বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরই প্রকাশ্যে আসতে থাকে গুমের লোমহর্ষক কাহিনী। ফলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে গুমসংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারি। গুমের অভিযোগ জমার ক্ষেত্রে বেঁধে দেওয়া সময় শেষ হলেও এখনো একে একে জমা পড়ছে অভিযোগ। সেসব অভিযোগের অনুসন্ধান করছে কমিশন।


এদিকে অভিযোগ পর্যালোচনা ও অনুসন্ধ্যান করে সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে ‘আনফোল্ডিং দ্য ট্রুথ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে কমিশন। ৭৫৮ জনের অভিযোগ যাচাই-বাছাই করে বিস্তারিত জানানো হয়েছে প্রধান উপদেষ্টাকে। গুমসংক্রান্ত বেশিরভাগ অভিযোগ উঠেছে এলিট ফোর্স র‌্যাবের বিরুদ্ধে। ইতোমধ্যে গুমসংক্রান্ত কমিশন র‌্যাব বিলুপ্তির সুপারিশও করে। 


গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানে গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর গঠিত হয় পাঁচ সদস্যের গুমসংক্রান্ত কমিশন। কমিশনের সভাপতি করা হয়, হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীকে। ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত গুমের ঘটনা তদন্তের জন্য কমিশনের বিবেচনায় আনা হয়েছে। কমিশন গঠনের পর কয়েক দফা অভিযোগ জমা দেওয়ার সময় বাড়ানো হয়। সর্বশেষ ৩১ অক্টোবর অভিযোগ দায়েরের সময় শেষ হয়েছে। তবে এখনো অভিযোগ নিয়ে আসছেন ভুক্তভোগীরা।


আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে টার্গেটকৃত ব্যক্তিদের শুধু গুম করেই ক্ষ্যান্ত হননি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা, অনেককে ক্রসফায়ারে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। আবার নগদ অর্থ ছাড়াও জমিও লিখে নেন। এছাড়া যারা ছাড়া পেয়ে বিষয়টি প্রকাশ করে বিচার চেয়েছেন তাদের ফের গুম করা হয়। এ রকম অনেকে আজও ফিরে আসেননি। গুম কমিশনের কাছে দেওয়া ভুক্তভোগীদের অভিযোগ থেকে চাঞ্চল্যকর এ রকম তথ্য পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী এবং গুম কমিশন সূত্রে এ বিষয়ে বেশ কয়েকটি কেস স্টাডি পাওয়া গেছে। 

ঘটনার বিবরণ দিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘লে. কর্নেল আজাদ ২০১৫ সালের ১৮ ডিসেম্বর ধানমন্ডি ২৭ নম্বর থেকে আমাকে চোখ বেঁধে তৎকালীন র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখার প্রধানের নেতৃত্বে একটি কালো গাড়িতে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যান। চোখ বাঁধা থাকায় আমি স্থান চিনতে পারিনি। তবে পরবর্তীতে বুঝতে পারি, র‌্যাব হেডকোয়ার্টার্সের বহুল আলোচিত ‘আয়নাঘরে ৩ দিন বন্দি ছিলাম। সেখানে থাকাবস্থায় ক্রসফায়ারে হত্যার ভয় দেখিয়ে আমার কাছে ৩০ (ত্রিশ) কোটি টাকা ও জমি দাবি করেন র‌্যাবের সংশ্লিষ্ট পদস্থ কর্মকর্তা। এরপর র‌্যাবের নজরদারিতে থেকে কয়েক দফায় নগদ ২২ কোটি টাকা দিয়ে জীবন ভিক্ষা পেয়েছিলাম। আমার কোম্পানির এজিএম অ্যাকাউন্টস মো. শহিদুল্লাহ ও ম্যানেজার মোহাম্মদ আলী শুভকে সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন ধাপে কোম্পানির ব্যাংক লোন থেকে টাকা তুলে দেই। এছাড়া আমার ও আমার স্ত্রীর নামে থাকা জমি বিক্রি করে টাকাগুলো দিয়েছিলাম। কিন্তু এরপরও তারা থেমে থাকেনি। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে ভয় দেখিয়ে আমার বেশ কিছু জমিও রেজিস্ট্রি করে দিতে বাধ্য করে। সে সময় আমার ওপর চালানো হয় অমানবিক নির্যাতন। আমার শরীরে ইলেকট্রিক শক দেওয়া হয়। যার ক্ষত এখনো বয়ে বেড়াচ্ছি। নির্যাতনের যন্ত্রণা থেকে বাঁচতে নিয়মিত থেরাপি নিতে হচ্ছে।’ র‌্যাব কর্মকর্তাকে টাকা দেওয়ার অডিও রেকর্ড, সিসিটিভি ফুটেজের কিছু তথ্য-প্রমাণ অভিযোগের সঙ্গে যুক্ত করে দিয়েছেন ব্যবসায়ী আক্তারুজ্জামান।


ব্যবসায়ী আক্তারুজ্জামান যুগান্তরকে বলেন, ‘গুমের শিকার হয়ে টাকা দেওয়ার পর থেকে আমার কোম্পানি অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে এবং ব্যাংকের ঋণগুলো খেলাপিতে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে কোম্পানি দেউলিয়া হওয়ার পথে। অথচ আমাকে তুলে নেওয়া র‌্যাবের সেই কর্মকর্তার নামে-বেনামে প্রচুর সম্পত্তি রয়েছে।’ 


কেস স্টাডি-২ : রাজধানীর মিরপুরের পল্লবী থানা এলাকা থেকে ২০১৪ সালের ১ জানুয়ারি অপহরণ হন ব্যবসায়ী মো. কুদ্দুসুর রহমান চৌধুরী। গুমসংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারিতে গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর অভিযোগপত্র জমা দেন ব্যবসায়ী কুদ্দুসের মেয়ে ফারজানা আক্তার টুম্পা। অভিযোগে বলা হয়, ২০১৩ সালে কর্নেল (অব.) পদমর্যাদার এক কর্মকর্তার নেতৃত্বে র‌্যাব-৪ এর একজন কর্নেল, একজন ক্যাপ্টেন চোখ বেঁধে কুদ্দুসুর রহমানকে উঠিয়ে নিয়ে যান। ইলেকট্রিক শক দিয়ে ৪টি গাড়ি, ৯ কোটি ৬০ লাখ টাকার চেক, ২ লাখ টাকা এবং জমির দলিলে সই নেন। পরবর্তীতে এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন কুদ্দুসুর রহমান। হাইকোর্টে রিট পিটিশনও দায়ের করেন তিনি। মামলা চলমান থাকা অবস্থায় ২০১৪ সালের ১ জানুয়ারি মিরপুর জান্নাতুল মাওয়া কবরস্থানের সামনে থেকে সাদা মাইক্রোবাসে জোরপূর্বক উঠিয়ে নিয়ে যায় কুদ্দুসুর রহমানকে। এভাবে তুলে নেওয়ার ১০ বছর পার হলেও তিনি আর ফিরে আসেননি। তার ভাগ্যে কী হয়েছে সেটিও পরিবারের সদস্যরা আজও জানতে পারেননি। 


এদিকে ঘটনার ১ মাস পর পল্লবী থানায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ৬ সদস্যের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন কুদ্দুসুর রহমানের স্ত্রী মোছা. জোসনা বেগম। মামলাটি থানা পুলিশের পর পুলিশের বিশেষায়িত দুটি সংস্থা তদন্ত করে। কিন্তু কোনো হদিস মেলেনি তার। এছাড়া অভিযুক্তদের আইনের আওতায়ও আনা যায়নি।


নিখোঁজ কুদ্দুসুর রহমানের পরিবারের দাবি, রিয়েল এস্টেট কোম্পানির সঙ্গে জমিজমাসংক্রান্ত বিরোধের জেরে গুম হন কুদ্দুস। আর ওই রিয়েল এস্টেট কোম্পানির মালিকানায় আছেন সাবেক এক প্রভাবশালী সেনা কর্মকর্তা। ফলে মামলা করলেও আওয়ামী লীগ আমলে প্রভাব খাটিয়ে সঠিক তদন্ত করতে দেওয়া হয়নি।


কুদ্দুসুর রহমানের মেয়ে ফারজানা আক্তার টুম্পা বলেন, ‘বাবাকে প্রথমে র‌্যাব তুলে নিয়ে গুম করে নগদ টাকা ও গাড়ি নিয়েছিল। এ বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশ করায় ফের গুম হন। আজও বাবাবে খুঁজে পাইনি। আমরা এখনো আশা করছি বাবা বেঁচে আছেন।’ 


গুম কমিশন সূত্র বলছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ভুক্তভোগীদের বর্ণনার সঙ্গে ঘটনার মিল রয়েছে। তবে ভুক্তভোগীদের অভিযোগের বিষয়ে চাক্ষুষ প্রমাণ খুব কম পাওয়া যাচ্ছে। নিরপেক্ষ সাক্ষীও পাওয়ার সুযোগ নেই। গুমের সঙ্গে জড়িত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা কাজটি এমনভাবে করেছেন যাতে এগুলো পরবর্তীতে শনাক্ত করা না যায়। 


বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরই প্রকাশ্যে আসতে থাকে গুমের লোমহর্ষক কাহিনী। ফলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে গুমসংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারি। গুমের অভিযোগ জমার ক্ষেত্রে বেঁধে দেওয়া সময় শেষ হলেও এখনো একে একে জমা পড়ছে অভিযোগ। সেসব অভিযোগের অনুসন্ধান করছে কমিশন।


এদিকে অভিযোগ পর্যালোচনা ও অনুসন্ধ্যান করে সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে ‘আনফোল্ডিং দ্য ট্রুথ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে কমিশন। ৭৫৮ জনের অভিযোগ যাচাই-বাছাই করে বিস্তারিত জানানো হয়েছে প্রধান উপদেষ্টাকে। গুমসংক্রান্ত বেশিরভাগ অভিযোগ উঠেছে এলিট ফোর্স র‌্যাবের বিরুদ্ধে। ইতোমধ্যে গুমসংক্রান্ত কমিশন র‌্যাব বিলুপ্তির সুপারিশও করে। 


গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানে গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর গঠিত হয় পাঁচ সদস্যের গুমসংক্রান্ত কমিশন। কমিশনের সভাপতি করা হয়, হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীকে। ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত গুমের ঘটনা তদন্তের জন্য কমিশনের বিবেচনায় আনা হয়েছে। কমিশন গঠনের পর কয়েক দফা অভিযোগ জমা দেওয়ার সময় বাড়ানো হয়। সর্বশেষ ৩১ অক্টোবর অভিযোগ দায়েরের সময় শেষ হয়েছে। তবে এখনো অভিযোগ নিয়ে আসছেন ভুক্তভোগীরা।


আরও খবর



বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৪.১ শতাংশে নামবে

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৭ জানুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ২২ জানুয়ারী ২০২৫ |

Image

বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ১ শতাংশে নামতে পারে। এই অর্থবছরে উল্লেখযোগ্য সংকটের মুখোমুখি হবে দেশের অর্থনীতি।

আজ শুক্রবার বিশ্বব্যাংকের ‘গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টাস’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ পূর্বাভাস তুলে ধরা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক বাণিজ্যে মন্দা, আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি এবং ঋণসেবা ব্যয়ের চাপসহ অভ্যন্তরীণ ও বৈশ্বিক নানা কারণ এই সংকটের জন্য দায়ী। কোভিড-১৯ মহামারি পরবর্তী ধাক্কা এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করেছে।

বিশ্বব্যাংক বলছে, বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্যের প্রধান চালিকাশক্তি তৈরি পোশাকশিল্প। কিন্তু ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার ক্রেতাদের চাহিদা কমে যাওয়ায় রপ্তানি আয় হ্রাস পাচ্ছে। দেশের মূল্যস্ফীতি ক্রয়ক্ষমতা কমিয়ে দিয়েছে এবং টাকার অবমূল্যায়নের ফলে আমদানি ব্যয় বেড়েছে।

এদিকে রাজস্ব ঘাটতির কারণে বাজেট বাস্তবায়ন কঠিন হয়ে পড়ছে। অবকাঠামো উন্নয়ন ও সামাজিক সুরক্ষায় সরকারি বিনিয়োগ কমে গেছে। গ্রামীণ অর্থনীতি দুর্বল হওয়ায় দরিদ্র জনগোষ্ঠী আরও বেশি সংকটে পড়ছে।

সংকট কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশ সরকারের জন্য কয়েকটি সুপারিশ করেছে বিশ্বব্যাংক। এর মধ্যে আছ রাজস্ব ব্যবস্থায় সংস্কার, রপ্তানি পণ্যে বৈচিত্র্য আনা, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি কার্যকর করা, অবকাঠামো উন্নয়নে বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থান বাড়ানো।

বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ইন্দরমিত গিল বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি সংকটময় অবস্থায় রয়েছে। নীতিনির্ধারকদের উচিত দ্রুত কার্যকর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা, যাতে অর্থনীতির গতিশীলতা পুনরুদ্ধার করা যায়। বাংলাদেশ সরকার ইতিমধ্যে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং রাজস্ব বাড়ানোর জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তবে স্বল্পমেয়াদে সংকট মোকাবিলায় জরুরিভিত্তিতে পদক্ষেপ প্রয়োজন।


আরও খবর



রাজাপুরে অপপ্রচারের প্রতিবাদে জাতীয় নাগরিক কমিটির সংবাদ সম্মেলন

প্রকাশিত:বুধবার ১৫ জানুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ২২ জানুয়ারী ২০২৫ |

Image

হাসিবুর রহমান, ঝালকাঠি প্রতিনিধি :

ঝালকাঠির রাজাপুরে জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যদেরকে বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি হুমকি ও তাদের নামে অপপ্রচারের প্রতিবাদে জাতীয় নাগরিক কমিটির সংবাদ সম্মেলন করেছেন। মঙ্গলবার বেলা ১২ টায় রাজাপুর সাংবাদিক ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জাতীয় নাগরিক কমিটির রাজাপুর থানা প্রতিনিধি সদস্য তাইমুল হায়দার সজীব বলেন,   গত ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশের জনগণ একটি নজিরবিহীন ফ্যাসিবাদী ও মাফিয়া শাসনের অধীনে চরম জুলুম ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। অবৈধ আওয়ামীলীগ সরকার জনগনের সকল অধিকার কেড়ে নিয়েছিলো। রাজনৈতিক দল সহ সাধারণ জনগণ ও শিক্ষার্থীদের জীবনে নেমে এসেছিল ঘোরতর এক বিপর্যয়। আর তার থেকে পরিত্রান পেতেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ছাত্র জনতা ও সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহনে গত ০৫ আগষ্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে উৎখাত করতে সক্ষম হয়। পরবর্তিতে এ অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানকে টিকিয়ে রাখতে জাতীয় নাগরিক কমিটি গঠিত হয়। তারই ধারাবাহিকতায় সারা দেশের ন্যায় রাজাপুর উপজেলায় তৎকালীন আন্দোলনরত ছাত্র জনতার সমন্বয়ে তাদের পরামর্শক্রমে ১০৮ সদস্যের তালিকা করে কেন্দ্রে পাঠানো হলে কেন্দ্র থেকে রাজাপুর থানা প্রতিনিধি কমিটি হিসেবে গত ৮ জানুয়ারী অনুমোদন দেয়। এ প্রতিনিধি কমিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশ হলে স্থানীয় একটি কুচক্রী মহল বিভিন্নভাবে এর বিরোধীতা করতে থাকে। কেননা তারা মনে করছেন জাতীয় নাগরিক কমিটি থাকলে ওই কুচক্রি মহল টেন্ডারবাজি, চাদাবাজি, দখলবানিজ্য করতে পারবে না। তাই ওই কুচক্রিমহল বিভিন্ন কৌশলে আমাদের কয়েকজন সদস্যকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে এবং কিছু সদস্যের নাম তাদের লোকজনের নামের সাথে মিলে যাওয়ায় তাদের দ্বারা সংবাদ সম্মেলন করিয়ে পদত্যাগের ঘোষনা দেওয়ানো হয়। তারা এমনও বলেন, আমাদের এ কমিটিতে নাকি ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোষররা রয়েছেন। ইহা একদম মিথ্যে, বানোয়াট ও ভিক্তিহীন কথা। তারা আমাদের ঐক্যে ফাটোল ধরানোর জন্য এখনও মিথ্যে কর্মকান্ড করে যাচ্ছেন। তাদের এমন কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সংবাদ সম্মেলনে রাজাপুর থানা প্রতিনিধি সদস্য তাইমুর হায়দার সজীব আরও বলেন, আমরা ইতোমধ্যে আরও একটি বিষয় লক্ষ করেছি। আমাদের রাজাপুরের কৃতি সন্তান জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সংগঠক মশিউর রহমানের বরাত দিয়ে রাজাপুর কমিটি থেকে কয়েকজন সদস্যের পদত্যাগের বিষয়ে লেখা হয়েছে। আদৌ কেন্দ্রীয় সংগঠক মশিউর রহমান মিডিয়ায় এমন কোন বক্তব্য দেননি এবং কোন সাংবাদিক এ বিষয়ে তার কাছে জানতে চায়নি। রাজাপুর উপজেলা জাতীয় নাগরিক কমিটিকে প্রশ্নবিদ্ধ ও আমাদেরকে সমাজে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য কিছু কুচক্রি মহল মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট তথ্যদিয়ে আপনাদের সহযোগিতা নিচ্ছে। এমন ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। পাশাপাশি আপনাদের সহযোগীতা ও লিখনীর মাধ্যমে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি আমাদের এ উপজেলাকে চাদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও দখলবানিজ্যসহ বিভিন্ন অপরাধমুক্ত করতে প্রশাসন ও সাংবাদিকদের সহযোগীতা কামনা করেছেন। এ বিষয়ে রাজাপুর থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুল মালেক জানান, এ বিষয়ে তাদের কাছে কেহ কোন অভিযোগ করা হয়নি বা কেহ জানায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।  


আরও খবর



কুবিতে তিন দপ্তরে 'বিশৃঙ্খলার' অভিযোগ শিক্ষার্থীদের

প্রকাশিত:সোমবার ১৩ জানুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ২২ জানুয়ারী ২০২৫ |

Image

কুবি প্রতিনিধি :

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) গত ১২ জানুয়ারি গণিত বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা অর্ণব সিংহ রায়কে মারধরের পর পুলিশে সোপর্দ করা হয়। উক্ত ঘটনায় 'বিশৃঙ্খলার' অভিযোগ এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন দপ্তরে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে গণিত বিভাগের শিক্ষার্থীরা। তবে, উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে দপ্তর প্রধানরা মন্তব্য করতে নারাজ।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দপ্তর, প্রক্টর দপ্তর এবং ছাত্র পরামর্শক ও নির্দেশনা দপ্তরে এই অভিযোগপত্র জমা দেন তারা। অভিযোগপত্রের বিষয় জানতে দপ্তর প্রধানদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা 'এ বিষয় কোনো মন্তব্য করতে পারবেন না' বলে জানান।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, গত ১২ জানুয়ারি ক্যাম্পাসে লোকপ্রশাসন বিভাগের ১৪তম আবর্তনের মাহফুজ অন্তর, মার্কেটিং বিভাগের ১৫ তম আবর্তনের শাহাদাত তানভীর রাফি, ফার্মেসী বিভাগের ১৫তম আবর্তনের সাদী, ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের ১৬তম আবর্তনের মোহাম্মদ রাফি দ্বারা 'গণিত বিভাগের টিচার্স রুম ভাঙচুরের হুমকি, সাংবাদিকদের পা চাটা গোলাম বলে আখ্যায়িত এবং তাদের প্রাণনাশের হুমকির' মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনায় শিক্ষার্থীরা উদ্বিগ্ন।

এছাড়া অভিযোগপত্রে উল্লেখিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পূর্বেও হলের সামনে জ্বালাও পোড়াও, প্রশাসনিকভাবে দেখে নেওয়ার হুমকি, সিনিয়র পেটানোর মনোভাব, গণিত বিভাগ ও ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের খেলায় মারামারির মূল হোতাসহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে।

পাশাপাশি অভিযোগপত্রে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধ করে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবি জানায় তারা।

অভিযোগপত্রের বিষয় গণিত বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী হুজাইফা হামিম বলেন, 'জুলাই বিপ্লবের উদ্দেশ্য ছিল বৈষম্য দূর করা। আইনের সুসংহত প্রয়োগ করা। কিন্তু এই ঘটনার পর মনে হচ্ছে নতুন করে একটি দল সাধারণ ছাত্র নাম ধরে সেই পুরনো ক্ষমতা প্রয়োগের খেলায় মেতে উঠেছে। ক্যাম্পাসে রাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও তাদের মধ্যে যেরকম ঔদ্ধত্য দেখা গেল, এর বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যাবস্থা না নিলে সামনে আরও খারাপ কিছু হয়তো অপেক্ষা করছে। বিচার নিশ্চিত করার নামে একটা মব জাস্টিস বলি বা এটাক বলি, আমরা যেন তারই প্রতিচ্ছবি দেখলাম। যা হতাশাজনক।

গণিত বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী ফরহাদুল ইসলাম নাঈম বলেন, 'গতকাল যে ধরণের ঘটনা ঘটেছে তা অনাকাঙ্ক্ষিত। এর সুষ্ঠু বিচার না হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ কখনো শিক্ষার্থীদের অনুকূলে থাকবে না। আমরা এখানে মারামারি দেখতে আসি নাই। কেউ যদি অপরাধী হয়ে থাকে তাহলে তার বিচারের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রয়েছে। নিজের হাতে আইন তুলে ক্ষমতার অপব্যবহার পূর্বেও কেউ মেনে নেয়নি, বর্তমানেও কেউ মেনে নিবে না।

গণিত বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী উম্মে হাবিবা শান্তা বলেন, 'গতকাল বাইরের বিভাগ থেকে কয়েকজন গণিত বিভাগের অভ্যন্তরে টিচার্স রুমে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করে বিভাগের শিক্ষকদের সাথে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছে। এমনকি নানান পোস্টে শিক্ষকদের নাম ধরে উনাদের নিয়ে বাজে মন্তব্য করা হয়েছে। একজন গণিত বিভাগের সাধারণ শিক্ষার্থী হয়ে আমি এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং যারা এই স্পর্ধা দেখিয়েছে তাদের বিচার এর আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের নিকট অনুরোধ করছি।

এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শক ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক ও গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আবদুল্লাহ আল মাহবুব বলেন, 'আমার কাছে একটি অভিযোগ পত্র দিয়েছে। এটা যদি শৃঙ্খলা বিরোধী কিছু হয় তাহলে প্রক্টর স্যারের কনসার্ন লাগবে। আমি ব্যক্তিগতভাবে ঐরকম মন্তব্য করতে পারব না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোঃ আবদুল হাকিম বলেন, 'আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি অভিযোগপত্র পেয়েছি। এ বিষয়ে আমরা একটা মিটিং করব তারপর আমরা সিদ্ধান্ত নিব।

 উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, 'আমি এখন ঢাকায় আছি। এই মূহুর্তে অভিযোগপত্র না পাওয়ায় আমি কোনো মন্তব্য করতে পারছি না। আগামীকাল অফিসে গিয়ে অভিযোগপত্র দেখে মন্তব্য করতে পারব।


আরও খবর

মেডিকেল কলেজে আসন বাড়ছে না

শুক্রবার ১৭ জানুয়ারী ২০২৫