Logo
শিরোনাম

রাজাকার বলার প্রতিবাদে উত্তাল বশেমুরবিপ্রবির ক্যাম্পাস

প্রকাশিত:সোমবার ১৫ জুলাই ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৫ মে ২০২৫ |

Image

মোঃ ছিপু মোল্যা - বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি::

মধ্যরাতে, তুমি কে? আমি কে? রাজাকার রাজাকার-স্লোগানে মুখরিত গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়(বশেমুরবিপ্রবি) ক্যাম্পাস। কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে বিক্ষোভ মিছিল করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা বিরোধী শিক্ষার্থীরা। এতে অংশ নেয় নারী শিক্ষার্থীরাও।

রবিবার(১৪জুলাই) রাত ১২টার দিকে আবাসিক হলের ছাত্ররা লিপুস ক্যান্টিন থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। এসময় কয়েক হাজার শিক্ষার্থী বিক্ষোভ মিছিলে অংশগ্রহন করে। এরপর রাত ১ঃ৩০ ঘটিকায় মেয়েদের আবাসিক হল থেকে আরো একটি বিক্ষোভ মিছিল করা হয়।

বিক্ষোভ মিছিলগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন চত্ত্বর ঘুরে এসে প্রধান ফটকের সামনে শেষ হয়। এসময় শিক্ষার্থীরা 'তুমি কে? আমি কে? রাজাকার রাজাকার' 'চেয়েছিলাম অধিকার হয়ে গেলাম রাজাকার' স্লোগান নিয়ে বিক্ষোভ মিছিলে অংশগ্রহন করে।

জানা যায়, গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হয় 'শিক্ষার্থীদের কোটা বিরোধী আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন কথায় মুক্তিযোদ্ধাদের  আপমানিত হচ্ছেন এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা আপনার কাছে তারা সমাধান চায়'। এমন প্রশ্নের উত্তর তিনি বলেন, আমরা কোটা রেখেছি নারী পুরুষের সমন্বয় করার জন্য। সংবাদ সম্মেলনের এক পর্যায়ে তিনি বলেন যারা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে দেশ স্বাধীন করেছে কোটা তাদের নাতি নাতনিরা পাবে না তো কি রাজাকারদের নাতি নাতনিরা পাবে।

প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের উপর ভিত্তি করে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাজপথে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। বশেমুরবিপ্রবিতেও মধ্যরাতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে কোটা বিরোধী শিক্ষার্থীরা।

হাবিবুর রহমান নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা কোটা সংস্কারের দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী আমাদের দাবি মেনে না নিয়ে আমাদেরকেই রাজাকার বানিয়ে দিলেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা যৌক্তিক দাবি নিয়ে রাস্তায় নেমেছিলাম। আমরা আমাদের অধিকার চেয়েছিলাম। কিন্তু বিনিময়ে রাজাকারের ট্যাগ পেলাম।


আরও খবর



৫ সংগঠনের আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি

প্রকাশিত:সোমবার ২১ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ১৪ মে ২০২৫ |

Image

পাঁচটি সংগঠনের নেতারা বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুলের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন। স্মারকলিপিতে তারা জুলাই গণহত্যার বিচার, ফ্যাসিবাদী অপরাধের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। সচিবালয়ে আইন উপদেষ্টার বরাবর এই স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।

জুলাই রেভল্যুশনারি অ্যালায়েন্স; অ্যান্টি ফ্যাসিস্ট কোয়ালিশন; প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ; স্টুডেন্ট অ্যালায়েন্স ফর ডেমোক্রেসি; জাবি, জবি, ঢাবি, ঢাকা কলেজ এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিনিধিরা এই স্মারকলিপি দেন।

স্মারকলিপিতে তারা জানিয়েছেন, সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে, অনতিবিলম্বে আওয়ামী লীগ এবং তাদের অঙ্গসংগঠনকে নির্বাহী আদেশে নিষিদ্ধ করতে হবে এবং আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল করতে হবে। আওয়ামী লীগ, তার অঙ্গসংগঠন এবং ১৪ দলের যেসব নেতা বিগত তিন নির্বাচনে ক্ষমতায় ছিলেন তাদের অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে হবে।

আগামী ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে জুলাই অভ্যুত্থানে সংগঠিত গণহত্যার বিচার, শাপলায় সংঘটিত গণহত্যা, পিলখানা, ২৮ ফেব্রুয়ারি এবং ২৬ মার্চসহ সব হত্যাকাণ্ডের দ্রুত নিরপেক্ষ তদন্ত ও দৃশ্যমান বিচার কার্যক্রম শুরু করার দাবি জানিয়েছেন পাঁচ সংগঠনের নেতারা।

স্মারকলিপিতে এখনো গুম থাকা ব্যক্তিদের সন্ধান দিতে হবে এবং আয়নাঘর ও গুমের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তির ব্যাপারে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।

গত জুলাই আন্দোলনে করা ষড়যন্ত্রমূলক মামলাগুলোসহ গত ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনামলে করা ষড়যন্ত্র, প্রহসন এবং রাজনৈতিক হয়রানিমূলক সব মামলা বাতিল করতে হবে। একই সঙ্গে ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর ক্ষতিপূরণ, পুনর্বাসন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছে স্মারকলিপিতে।


আরও খবর



নওগাঁয় স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ মামলায় দু'জনের যাবজ্জীন

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৯ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৫ মে ২০২৫ |

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টার :

নওগাঁয় ৮ম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক ছাত্রীকে পালাক্রমে গণধর্ষণের মামলায় দু'জন যুবককে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে তাদের এক লাখ টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম ও ৬ মাসের সশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মোঃ মেহেদী হাসান তালুকদার এ রায় দেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রেজাউল করিম যাবজ্জীবন কারাদন্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রাপ্তরা হলেন, নওগাঁর পোরশা উপজেলার সুরানন্দ গ্রামের নাজিম উদ্দিনের ছেলে সাকিল (২৪) ও আলাদিপুর গ্রামের রবুর ছেলে আব্দুল আলীম (৩০)। রায়ের সময় আসামীরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ২০২১ সালের ৮ মার্চ রাতে ১৪ বছর বয়সী স্কুল ছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভনে সুরানন্দ গ্রামের হাবিবুল্লাহ শাহ্ এর আম বাগানের দো-চালা ঘরে নিয়ে যায় সাকিল। সেখানে সাকিল ও আব্দুল আলীম ঐ ছাত্রীকে জোর পূর্বক পলাক্রমে ধর্ষণ করেন। পরে ছাত্রী নিজেই থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা পেলে আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে। শুনানি শেষে আজ ১০ জন সাক্ষীর বক্তব্যের ভিত্তিতে আদালত দু'জনকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেন। এসময় জরিমানার টাকা ধর্ষণের শিকার ছাত্রীকে দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারক। 

এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সন্তোষ প্রকাশ করলেও আসামী পক্ষ উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানান।


আরও খবর



নিঃসন্দেহে আমরা ঐতিহাসিক মুহূর্তে আছি

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২২ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৫ মে ২০২৫ |

Image

নিঃসন্দেহে আমরা একটি ঐতিহাসিক মুহূর্তে উপস্থিত আছি। বিএনপির সঙ্গে আলোচিত বিষয়ে কিছু সামঞ্জস্য ও মতনৈক্য উভয় আছে। আশা করি, আজ আলোচনার সমাপ্তি টানতে পারবো বলে মন্তব্য করেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিএনপির তৃতীয় দফা বৈঠকের সূচনা বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।

এসব বৈঠকের আলোচিত বিষয়গুলো প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করা হচ্ছে এবং তিনি এ বিষয়ে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন বলেও জানান অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি আরও বলেন, ‘বিভিন্ন নতুন প্রস্তাব এসেছে, সেসব নিয়ে আমরা ঐকমত্য কমিশন নিজেদের সঙ্গে আলাপ শুরু করেছি। এখন সব রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যা আলোচনা হচ্ছে, তা প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনা।’ দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনায় ঐকমত্যে পৌঁছানো যাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন কমিশনের সহ-সভাপতি।

বিএনপি স্থায়ী কমিটি সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আজ বিচার বিভাগ, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার জনপ্রশাসন ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার নিয়ে আলোচনা হবে। রাষ্ট্রের বিষয় তাই তাড়াহুড়ো করে নয়, ধীরে-সুস্থে আলোচনা করছি।‘

যেসব সিদ্ধান্ত জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে গৃহীত হবে, তা জাতীয় জীবনে মহান ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেও উল্লেখ করেন বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, স্প্রেডশিট নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হওয়ায় তা নিয়ে আলোচনা করা হয়নি। দফা-ওয়ারি বিস্তারিত আলোচনা করছি। সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ সংক্রান্ত অধ্যাদেশ যা হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করেছে ও সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় গঠন করার কথা বলা হচ্ছে। এটা সহ-বিচার বিভাগের সব স্বাধীনতায় আমরা বিশ্বাস করি। কিন্তু সব কিছু যেন আইনানুগ ও সাংবিধানিকভাবে হয়। কোনও কিছু যেন অসাংবিধানিকভাবে না হয়।


আরও খবর



হাইকোর্টে জামিন পেলেন চিন্ময় কৃষ্ণ দাস

প্রকাশিত:বুধবার ৩০ এপ্রিল ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৫ মে ২০২৫ |

Image

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় ইসকনের সাবেক নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। আজ বুধবার বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমান ও বিচারপতি মো. আলী রেজার হাইকোর্ট বেঞ্চ তাকে এ জামিন দেন।

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় জামিন চেয়ে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট গত ৪ ফেব্রুয়ারি রুল দিয়েছিলেন।তাকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, তা ওই রুলে জানতে চেয়েছিলেন হাইকোর্ট।

এর আগে গত ২৩ এপ্রিল হাইকোর্ট রুল শুনানির জন্য ৩০ এপ্রিল দিন ধার্য করেন। এর ধারাবাহিকতায় শুনানি নিয়ে রুল অ্যাবসলিউট (যথাযথ) ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট।

গত বছরের ২৫ অক্টোবর চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের নেতৃত্বে চট্টগ্রামে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সমাবেশ আয়োজন করে সনাতন জাগরণ মঞ্চ নামের একটি সংগঠন। এ সংগঠনের মুখপাত্র হিসেবে সামনে আসেন চিন্ময় কৃষ্ণ দাস। ওই সমাবেশের পর গত বছরের ৩১ অক্টোবর তার বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা হয়। চিন্ময় ছাড়াও মামলায় আরও ১৮ জনকে আসামি করা হয়।

পরে গত বছরের ২২ নভেম্বর চিন্ময়ের নেতৃত্বে রংপুরে আরও একটি বড় সমাবেশ হয়। এরপর রাষ্ট্রদ্রোহের সেই মামলায় চিন্ময় দাসকে গত বছরের ২৫ নভেম্বর রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

পরদিন ২৬ নভেম্বর জামিন আবেদন করা হলে তা নামঞ্জুর করে চিন্ময়কে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট। আদালত চিন্ময়কে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিলে সেদিন চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের সঙ্গে চিন্ময়ের অনুসারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এ সময় আইনজীবীর সাইফুল ইসলাম আলিফকে আদালত চত্বরের বাইরে কুপিয়ে হত্যা করে তার অনুসারীরা।

গ্রেপ্তারের পর থেকেই কারাগারে আছেন চিন্ময়। গত ২ জানুয়ারি তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন চট্টগ্রামের মহানগর দায়রা জজ আদালত। এরপর হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন তিনি। 


আরও খবর



ভারত যুদ্ধ চাইলে চূড়ান্ত জবাব দেবে পাকিস্তানও!

প্রকাশিত:রবিবার ০৪ মে ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ১৪ মে ২০২৫ |

Image

ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলাকে ঘিরে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে। ঘটনার পর থেকে পরস্পরের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষামূলক বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে দুদেশ। পাল্টাপাল্টি অভিযোগ আর হুমকি-ধমকিতে ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে পরিস্থিতি। এরই মধ্যে কয়েক দফায় কাশ্মীর সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ রেখায় (এলওসি) গোলাগুলির ঘটনাও ঘটেছে দুই দেশের সেনাদের মধ্যে।

এ অবস্থায় ভারতকে একটি স্পষ্ট এবং জোরালো বার্তা দিয়েছে পাকিস্তানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তারা। তারা বলেছেন, প্রতিবেশী দেশ যদি যুদ্ধ চাপিয়ে দেওয়ার কোনোরকম চেষ্টা করে, তবে পাকিস্তানের দিক থেকেও চূড়ান্ত জবাব দেওয়া হবে। খবর দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের।

পাকিস্তানি গণমাধ্যমটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, পেহেলগাম হামলা ঘিরে ভারতের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার মধ্যে রাওয়ালপিন্ডিতে জেনারেল সদর দপ্তরে একটি বিশেষ কর্পস কমান্ডারদের বৈঠক ডেকেছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল সৈয়দ আসিম মুনির।

এরপরই পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মিডিয়া শাখার জারি করা এক বিবৃতিতে বলা হয়, বিরাজমান ভূ-কৌশলগত পরিবেশ নিয়ে একটি বিস্তৃত পর্যালোচনা করেছেন শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা, বিশেষ করে বর্তমান পাকিস্তান-ভারত অচলাবস্থা এবং বৃহত্তর আঞ্চলিক নিরাপত্তা যাচাইয়ের উপর জোর দিয়েছেন তারা।

বৈঠকে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের যেকোনো আগ্রাসন বা দুঃসাহসিকতার বিরুদ্ধে পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা বজায় রাখার জন্য নিজেদের সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করেছেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর শীর্ষ কমান্ডাররা।

পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সশস্ত্র বাহিনীর অটল পেশাদারিত্ব, দৃঢ় মনোবল এবং অপারেশনাল প্রস্তুতির প্রশংসা করেছেন সেনাপ্রধান। জেনারেল আসিম মুনির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যেকোনও মূল্যে মাতৃভূমি রক্ষার জন্য পাকিস্তানের জনগণের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছেন তিনি। এছাড়া সকল ফ্রন্টে সতর্কতা এবং সক্রিয় প্রস্তুতি বৃদ্ধির গুরুত্বপূর্ণ গুরুত্বের উপরও জোর দিয়েছেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রধান।

বৈঠকে জম্মু ও কাশ্মীরে (IIOJK) ভারতীয় নৃশংসতার তীব্রতা বাড়তে পারে বলেও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর শীর্ষ কমান্ডাররা। তাদের আশঙ্কা, পেহেলগাম হামলা ঘিরে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনাকে কাজে লাগাতে তৎপর হয়ে উঠেছে ভারত, যেমনটা ঘটেছিল ২০১৯ সালে পুলওয়ামা হামলার পর। ওই ঘটনার পরই ৩৭০ ধারা বাতিল করে জম্মু ও কাশ্মীরের ওপর কেন্দ্রের শাসন চালু করে ভারত।

পাকিস্তানের ইন্টার-সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশনস (আইএসপিআর) বলছে, ভারতীয় সন্ত্রাসী প্রক্সিগুলোকে কার্যকরভাবে শ্বাস নেওয়ার স্থান তৈরি করে দেওয়ার লক্ষ্যে এই ধরনের বিচ্যুত কৌশল কখনই সফল হবে না।

শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধির প্রতি পাকিস্তানের অবিচল প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করার পাশাপাশি পাকিস্তানি শীর্ষ কমান্ডারদের ফোরাম স্পষ্টভাবে বলেছে, যুদ্ধ চাপিয়ে দেওয়ার যেকোনও প্রচেষ্টার অবশ্যই জবাব দেওয়া হবে এবং পাকিস্তানের জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে যেকোনও মূল্যে সম্মান করা হবে।

একইসঙ্গে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনায় ভারতীয় সামরিক ও গোয়েন্দা সংস্থার সরাসরি জড়িত থাকার বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ আছে দাবি করে গভীর উদ্বেগও প্রকাশ করেছে ফোরামটি।

প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর কাশ্মীরে এটিই সবচেয়ে বড় হামলা। পরোক্ষভাবে পাকিস্তান এ হামলায় জড়িত, এমন অভিযোগ তুলে বুধবার দেশটির সঙ্গে ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করে ভারত। পাশাপাশি আরও বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয় দেশটি। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান। স্থগিত করে দেওয়া হয় ভারতের সঙ্গে সবরকম বাণিজ্যও।

এ ছাড়া সিন্ধু নদের পানি ইস্যুতে কড়া বার্তা দেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ। স্পষ্ট ভাষায় তিনি ঘোষণা দেন, যেকোনো মূল্যে নিজের পানির অধিকার রক্ষা করবে পাকিস্তান। সিন্ধু চুক্তি স্থগিতের জেরে ভারতকে হুমকি দেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) নেতা ও দেশটির সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টোও। তিনি বলেন, সিন্ধু দিয়ে হয় পানি বইবে, না হয় ভারতীয়দের রক্ত বইবে।

পাকিস্তান প্রয়োজনে পারমাণবিক হামলার জন্যও প্রস্তুত আছে বলে ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ ও রেলমন্ত্রী মোহাম্মদ হানিফ আব্বাসি।

অন্যদিকে পেহেলগাম হামলায় জড়িত ও মদতদাতাদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির হুঁশিয়ারি দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, আমরা প্রতিটি সন্ত্রাসী ও তাদের মদতদাতাদের খুঁজে বের করব এবং এমন শাস্তি দেব, যা তারা কল্পনাও করতে পারবে না। সময় এসেছে সন্ত্রাসের আশ্রয়স্থল সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করার। ১৪০ কোটি মানুষের দৃঢ় সংকল্প সন্ত্রাসের মদতদাতাদের চূর্ণ করে দেবে।


আরও খবর